Sarva Shiksha Abhiyan

Sarva Shiksha Abhiyan

Sarva Shiksha Abhiyan||সর্বশিহ্মা অভিযান

BENGALI VERSION||ENGLISH VERSION

Sarva Shiksha Abhiyan
Sarva Shiksha Abhiyan


Sarva Shiksha Abhiyan Concept, Aims And Objectives And functions,Improving Education as a result of Sarva Shiksha Abhiyan

Assignment Questions -
1. Concept Of Sarva Shiksha Abhiyan.
2. Aims And Objectives Of Sarva Shiksha Abhiyan.
3. Functions Of Sarva Shiksha Abhiyan.
4. Improving Education as a result of Sarva Shiksha Abhiyan.

BENGALI VERSION -

1. ভূমিকা -

ভারতবর্ষের সংবিধানের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিশ্রুতি হল - সংবিধান চালু হবার দশ বছরের মধ্যে প্রারম্ভিক শিক্ষা সর্বজনীন,অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক করতে হবে।শিক্ষা সব শিশুর জন্মগত অধিকার হলেও আর্থ - সমাজিক কারণ ও সার্বিক সচেতনতার অভাবে এই অধিকারকে সম্পূর্ণভাবে প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব হয় নি।2004 খ্রিস্টাব্দের সেপ্টেম্বর মাসের আন্তর্জাতিক Millennium development Goa(MDG) - এর প্রস্তাব অনুযায়ী এবং সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনের জন্য Apex court নির্দেশিত হয়ে সর্বজনীন প্রারম্ভিক শিক্ষার লক্ষ্য পূরণের জন্য ভারত সরকার ' সর্বশিক্ষা অভিযান কর্মসূচি ' গ্রহণ করে।

2. সর্বশিক্ষা অভিযানের ধারণা - 
  1. 6 - 14 বছর বয়সি সকল শিশুদের অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যের নির্দিষ্ট সময় ভিত্তিক একটি প্রকল্প।
  2. এটি কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার এবং স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন সংস্থাগুলির যৌথ উদ্যোগে পরিকল্পিত একটি প্রকল্প।
  3. সর্বশিক্ষা অভিযান নিয়মতান্ত্রিক শিক্ষা ব্যবস্থার পাশাপাশি বিকল্প বা পরিপূরক শিক্ষা ব্যবস্থার সুযোগ। 
  4. বুনিয়াদি শিক্ষা সুনিশ্চিত করণের মাধ্যমে সামাজিক ন্যায় বিচার করা। 
  5. প্রকল্পের সামগ্রিক কাজকর্মে পঞ্চায়েত,পুরসভা, বিদ্যালয় পরিচালন কমিটি ও ওয়ার্ড শিক্ষা কমিটি,অভিভাবক/শিক্ষক সমিতি ও অন্যান্য নীচু স্তরের সংস্থাগুলির অংশগ্রহণ সুনিশ্চিত করা।
  6. প্রারম্ভিক শিহ্মার সপহ্মে রাজনৈতিক সদিচ্ছার প্রকাশ ঘটানো। 
3. সর্বশিক্ষা অভিযানের লক্ষ্য  ও উদ্দেশ্যাবলী -

• লহ্ম্য -
  • 2005 সালের মধ্যে প্রতিটি শিশুর চার বছরের প্রাথমিক শিক্ষা(প্রথম শ্রেণি থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত) সুনিশ্চিত করা।
  • 2010 সালের মধ্যে প্রতিটি শিশুর চার বছরের উচ্চ প্রাথমিক শিক্ষা (পঞ্চম শ্রেণী থেকে অষ্টম শ্রেণি)সুনিশ্চিত করা।
  • জীবনের উপযোগী ও গুন মানের শিক্ষার ওপর গুরুত্ব আরোপ করা। 
  • 2006 সালের মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষা ক্ষেত্রে এবং 2010 সালের মধ্যে প্রারম্ভিক শিক্ষার ক্ষেত্রে লিঙ্গবৈষম্য সহ নানাধিক সামাজিক ব্যবধান নিরসন করা।
  • 2010 সালের 6 থেকে 14 বছর বয়সি সকল শিশুকে বিদ্যালয় ধরে রাখা সুনিশ্চিত করা।
• উদ্দেশ্যাবলী - 
  • নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে (2003 খ্রিস্টাব্দের মধ্যে) সকল শিশুর গম্যতার মধ্যে প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করা এবং সমস্ত শিশুকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি সুনিশ্চিত করা। 
  • 2005 খ্রিস্টাব্দের মধ্যে সমস্ত শিশুর প্রাথমিক শিক্ষার ব্যবস্থা করা(5 বছরের)।
  • 2010 খ্রিস্টাব্দের মধ্যে যাতে সমস্ত শিশুর চার বছরের প্রারম্ভিক শিক্ষা সম্পূর্ণ করতে পারে তা সুনিশ্চিত করা। 
  • জীবন উপযোগী ও সন্তোষজনক শিক্ষা মানের উপর গুরুত্ব আরোপ করা। 
  • প্রাথমিক ও প্রারম্ভিক শিক্ষা স্তরে লিঙ্গ ও সামাজিক শ্রেণির মধ্যে যে বৈষম্য আছে তা যথাক্রমে 2006 ও 2010 খ্রিস্টাব্দের মধ্যে দূর করা। যেমন - পশ্চিমবঙ্গে 1996 খ্রিস্টাব্দে দুটি কর্মসূচি যুক্ত হয়েছিল - DPEP(District Primary Education Programme) এবং আনন্দ পাঠ।
  • 2010 সালের মধ্যে সমস্ত শিশুকে বিদ্যালয়ে ধরে রাখা। 
               "সর্বশিক্ষা অভিযান" এ শিক্ষক,শিক্ষাকর্মী এবং সমাজের প্রত্যেকটি নাগরিকদের কাছে দেশের সংবিধানের প্রতিশ্রুতিকে (সার্বজনীন প্রারম্ভিক শিক্ষা) বাস্তবায়িত করার একটি সুযোগ এনে দিয়েছে,আশা করা হচ্ছে।শিক্ষকরা জনগণের সহযোগিতা নিয়ে এই সুযোগে সদ্ ব্যবহার করবেন।

4. সর্বশিহ্মা অভিযানের কর্মসূচি -

সর্বশিক্ষা অভিযানে যে সমস্ত কর্মসূচি গ্রহণ করা কথা বলা হয়েছে,সেগুলি চারটি শ্রেণীতে ভাগ করা যায়। -

১. সাধারণ কর্মসূচি -
  • প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরিকাঠামো বৃদ্ধি করা। 
  • স্থানীয়ভাবে প্রাতিষ্ঠানিক বিদ্যালয়ের পাশাপাশি বিকল্প বিদ্যালয় বা পরিপূরক বিদ্যালয় স্থাপন করা।
  • বালিকাদের শিক্ষার প্রতি যথাযথ গুরুত্ব আরোপ করা।
  • তপশিলি জাতি,উপজাতি ও অনগ্ৰসর জনগোষ্ঠীর শিশুদের শিক্ষার জন্য বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ। প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষা সুনিশ্চিত করার উদ্দেশ্য সমন্বিত শিক্ষা পরিকল্পনা গ্রহণ করা। 
  • ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণ নীতির ভিত্তিতে গ্রাম ও ওয়ার্ড শিক্ষা কমিটি,মাতা - শিক্ষক কমিটি ইত্যাদি গঠন ও তাদের উপর পরিকল্পনা রূপায়নের দায়িত্ব এবং ক্ষমতা অর্পণ করা।
  • জনগণকে সঙ্গে নিয়ে পরিকল্পনা গ্রহণ করা ও তার রূপায়ণ করা।
  • শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে নতুন নতুন শিহ্মন পদ্ধতির উপর শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
  • পরিকাঠামো ও পরিষেবা ব্যবস্থা বিস্তারের জন্য ' চক্র সম্পদ' গঠন করা।
  • বিদ্যালয়,গ্রাম ও ওয়ার্ড শিক্ষা কমিটির সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে গুচ্ছ সম্পদ কেন্দ্র গঠন করা। 
  • জেলার জন্য বরাদ্দকৃত বিভিন্ন উন্নয়ন খাতের টাকার একটি অংশ শিক্ষাখাতে ব্যয়ের জন্য সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণ করা।
  • গ্রাম সংসদ ও ওয়ার্ড স্তরে শিশুদের শিক্ষাসংক্রান্ত তথ্য ভান্ডার গড়ে তোলা।
  • বসতি ভিত্তিক পরিকল্পনা তৈরি করা।
২. 6 থেকে 14 বছরের সব ছেলেমেয়েদের শিক্ষার আঙিনাতে নিয়ে আসতে হতে - 
  • বেশিরভাগ ছেলেমেয়ের জন্য পর্ষদ স্বীকৃত বিদ্যালয় স্থাপন করা। 
  • এছাড়া মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্র,মুক্ত বিদ্যালয়, বেসরকারি বিদ্যালয়ের ব্যবস্থা করা। 
  • Education Guarantee Scheme (EGS) এর অধীনে বিদ্যালয় স্থাপন করা। 
  • মাঝপথে পড়াশোনা ছেড়ে যাওয়া বা কখনোই বিদ্যালয়ে না যাওয়া শিক্ষার্থীদের জন্য সেতু পাঠক্রম তৈরি করা।এই উদ্দেশ্য হল শিশুদের বয়স ও সামর্থ্য অনুসারে যোগ্যতার মান তৈরি করে তাদের বিধিবদ্ধ প্রাথমিক, উচ্চ প্রাথমিক ও বিকল্প বিদ্যালয়ে ভর্তি করা। 
৩. ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে ধরে রাখতে হবে -
  • প্রতিটি শিশুর শিক্ষার বসার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা করা।
  • প্রতিটি শিশুর শিক্ষার গুণগত মান সুনিশ্চিত করা।
  • মাতা - শিহ্মক সভার এবং শিক্ষক - অভিভাবক সভার নিয়মিত আয়োজন করা।
  • পানীয় জল ও শৌচাগারের ব্যবস্থা করা।
  • বিদ্যালয়ে সুস্থ সামাজিক পরিবেশ রহ্মা করা।
  • মাঝে মাঝে ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা।
  • স্কুলছুটদের জন্য বিশেষ শিক্ষা ব্যবস্থা করে তাদের মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনা।
৪. ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষার গুণগত মান সুনিশ্চিত করতে হবে -
  • নতুন নতুন উদ্ভাবনীমূলক বিজ্ঞানসম্মত শিক্ষা ও শিখন পদ্ধতির উপর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।
  • সময় মতো শিক্ষা উপকরণ সরবরাহ করা।
  • বিদ্যালয়ে শিক্ষার উপযুক্ত অভ্যন্তরীণ ও পারিপার্শ্বিক পরিবেশ সৃষ্টি করা ও বজায় রাখা।
  • শিক্ষা কালে শিক্ষার্থীদের নিয়মিত উপস্থিতি নিশ্চিত করা।
  • শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নিয়মিত উপস্থিতি নিশ্চিত করা।
  • মূল্যায়নের ফল নিয়ে অভিভাবকদের সঙ্গে বিশেষত মায়েদের সঙ্গে মত বিনিময় করা।
  • পিছিয়ে পড়া শিশুদের শিক্ষার অগ্রগতির দিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া।
  • এলাকায় প্রস্তাবিত গুচ্ছ সম্পদ কেন্দ্রকে ব্যবহার করে শিক্ষার সার্বিক উন্নয়নের সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণ করা।

• সর্বশিক্ষা অভিযানের ফলে শিক্ষার উন্নতি -

2001-02 সালে সর্বভারতীয় নীতির ভিত্তিতে 6 - 14 বছর বয়সি সমস্ত শিশুর প্রারম্ভিক শিক্ষা সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে সর্বশিহ্মা অভিযান কার্যক্রম শুরু হয়েছিল। এই কর্মসূচি গ্রহণে পেছনে বেশ কয়েকটি লক্ষ্য ছিল সেইগুলি হল -

  • 6 - 14 বছর বয়সি সমস্ত শিশুকে বিদ্যালয়ে ভর্তি করা। 
  • প্রতিটি শিশুর 8 বছর (প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত)প্রারম্ভিক শিক্ষা সুনিশ্চিত করা। 
  • প্রারম্ভিক শিক্ষার লিঙ্গবৈষম্য। 
  • সামাজিক বৈষম্য দূরীকরণ। 
  • সবাইকে জীবনের উপযোগী ও গুণগত মানের শিক্ষা প্রদান করা। 
  • সর্বজনীন সাফল্যের সুনিশ্চিত করা। 
               এই লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য সরকারের তরফ থেকে বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি গৃহীত হয়।এর ফলে সর্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষার যে অগ্রগতি ঘটেছে তা নিম্নে আলোচনা করা হল। -

১. সর্বজনীন সুযোগ বৃদ্ধি - 

সর্বশিক্ষা অভিযানের মাধ্যমে সর্বজনীন সুযোগের ব্যবস্থা করা হয়।অর্থাৎ 6 থেকে 14 বছর বয়সি প্রত্যেক শিশুকে বাড়ি থেকে এক কিমি দূরত্বের মধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং তিন কিমি দূরত্বের মধ্যে উচ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয় গড়ে তুলতে হবে।2011-12 সালের হিসেব অনুযায়ী প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অনুপাত হল 1:2.07।প্রতি 1000 জন 6 থেকে 14 বছর বয়সি ছাত্রের জন্য 10টি প্রাথমিক ও প্রতি 11 থেকে 14 বছর শিক্ষার্থীদের জন্য চারটি উচ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয় গড়ে ওঠে (2011-12), 2011-12 সালের হিসেবে অনুযায়ী প্রতি 10 বর্গ কিমি দূরত্বের মধ্যে 3.55টি প্রাথমিক ও 1.7 টি উচ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয় অবস্থিত।

২. ছাত্রর ভর্তির হার বৃদ্ধি -

সর্বজনীন ভর্তি সর্বশিক্ষা অভিযানের একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য।এক্ষেত্রেও অনেকটা অগ্রগতি লক্ষ্য করা যায়। 2001-02 থেকে 2010-11 এর মধ্যে প্রাথমিক স্তরে(I - V) ভর্তির হার বেড়েছে 22.32% এবং উচ্চ প্রাথমিক স্তরে(VI - VIII) বেড়েছে 20.95%।প্রারম্ভিক স্তরে( প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি) 2001-02 থেকে 2007-08 এর মধ্যে 18.1% ভর্তির হার বৃদ্ধি পেয়েছে।

৩. বিদ্যালয় ছুটি হ্রাস ও শিক্ষার্থীর ধরে রাখার হার বৃদ্ধি - 

সর্বশিক্ষা অভিযানের একটি বড়ো লহ্ম্যে ছিল 2010 সালের মধ্যে 6-14 বছর বয়সি সকল শিশুকে তথ্য শিক্ষার্থীকে বিদ্যালয়ে ধরে রাখা সুনিশ্চিত করা।

      2001-02 শিক্ষাবর্ষে দুটি প্রাথমিক স্তরে (প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত)বিদ্যালয় ছুটে হার ছিল 39% এবং 2010-11 শিহ্মাবর্ষে সেটি হ্রাস পেয়ে দাঁড়ায় 6.5%।2001-02 শিহ্মাবর্ষের উচ্চ - প্রাথমিক স্তরে (ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণী) বিদ্যালয়ে ছুটের হার ছিল 55% এবং 2010-11 শিক্ষাবর্ষে সেটি হ্রাস পেয়ে দাঁড়ায় 6.56%।2011-12 প্রাথমিক স্তরে শিক্ষার্থীদের ধারনের হার ছিল 75.98%। 

৩. নারী সাহ্মরতা - 

সাহ্মরতা ক্ষেত্রে নারীর অগ্রগতির বিষয়টি বিশেষ লক্ষণীয়।2001-11 সালের মধ্যে নারী সাক্ষরতা 10.60% বৃদ্ধি পায় এবং সাক্ষরতার ক্ষেত্রে লিঙ্গ বৈষম্য হ্রাস পেয়ে দাঁড়ায় 16.68%। 2001 সালে নারী সাক্ষরতার ক্ষেত্রে লিঙ্গবৈষম্য ছিল 21.68% এবং সেটি 2011 তে 16.68%। 

       শিক্ষার্থীর বৃদ্ধির ক্ষেত্রে 2001-02 থেকে 2011-12 এই সময়ের মধ্যে বালিকা শিক্ষার হার প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিক উভয় স্তরের বৃদ্ধি পায়।2001-02 শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিক স্তরের 100 জন বালক কিন্তু 79 জন বালিকা বালিকা ও উচ্চ প্রাথমিক স্তরের 72 জন বালিকা ভর্তি হয়েছিল এবং 2011-12 শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিক স্তরে সেটি হয় 94 জন ও উচ্চ প্রাথমিক স্তরে 95 জন। 

      2000-01 শিহ্মাবর্ষে প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিক স্তরে বালিকা স্কুল ছুটের হার ছিল যথাক্রমে 41.9% ও  57.7% এবং 2010-11 শিহ্মাবর্ষে সেটি দাঁড়ায় যথা 6.07% ও 6.08%।অর্থাৎ স্কুল ছুটের ক্ষেত্রে বালিকা শিক্ষার যথার্থ অগ্রগতি ঘটেছে।শুধু তাই নয় 2010-11 শিক্ষাবর্ষে মেয়েদের বিদ্যালয় ছুটের হার ছেলেদের থেকে ভালো।

৪. পরিকাঠামোগত উন্নয়ন -

নতুন বিদ্যালয় স্থাপন,বিদ্যালয়ে নতুন গৃহনির্মাণ,পানীয় জল ও শৌচাগারের ব্যবস্থা করা সর্বশিক্ষা অভিযানের অন্যতম অঙ্গ।সর্বশিক্ষা অভিযানের নিয়ম অনুযায়ী মোট বরাদ্দ 33% পর্যন্ত টাকা পরিকাঠামো উন্নয়নে ব্যয় করা যাবে।সর্বশিক্ষা অভিযানের ফলে 2007-08 পর্যন্ত 3 - 7 লাখ নতুন বিদ্যালয় স্থাপন,2.8 লাখ বিদ্যালয় ভবন,12.8 লাখ অতিরিক্ত শ্রেণিকক্ষ,4.5 লাখ বিদ্যালয়ে পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হয়। 

৫. শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়ন -

সর্বশিক্ষা অভিযানের একটি অন্যতম লক্ষ্য 6-14 বছর বয়সি সমস্ত শিক্ষার্থীদের জীবন উপযোগী গুণগতমান সম্পন্ন শিক্ষা প্রদান করা।সর্বশিক্ষা অভিযানের প্রায় 53% অর্থ বরাদ্দ করা হয় শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নের জন্য। বিদ্যালয়ের পরিবেশের উন্নতি,পাঠক্রম ও পাঠ্যবই এর লিঙ্গবৈষম্য মুক্তকরণ সংক্রান্ত পর্যালোচনা করা, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের চাকুরি কালীন প্রশিক্ষণ দান, শিক্ষা সহায়ক উপকরণের জন্য অর্থনৈতিক অনুদান, প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা শিহ্মনের হার বৃদ্ধির জন্য কর্মসূচি গ্রহণ,অতিরিক্ত শিক্ষক নিয়োগ প্রভৃতি ফলে শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়ন ঘটে। সর্বশিক্ষা অভিযানে 14.1 লাখ অতিরিক্ত শিক্ষক পদ অনুমোদন লাভ করে,2007-08 পর্যন্ত অতিরিক্ত 10.3% লাখ শিক্ষক প্রয়োগ করা হয় এবং শিক্ষার্থী শিক্ষক অনুপাতের অগ্রগতি ঘটেছে।

৬. প্রারম্ভিক শিক্ষার মিড ডে মিলের প্রভাব - 

1995 সালের কেন্দ্রীয় সরকার প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের পুষ্টি ও স্বাস্থ্যের উন্নয়নের জন্য মিড - ডে মিল কর্মসূচি চালু করে।এর লক্ষ্য ছিল ভর্তির হার বৃদ্ধি, পরিস্থিতির হার বৃদ্ধি,স্কুল ছুটের হার হ্রাস ও বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ধরে রাখা।প্রাথমিক পর্যায়ে এটি প্রাথমিক স্তরের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল(I - V)প্রথমে চাল দেওয়া হত। 2008 সাল থেকে রান্না করা খাবার দেওয়া হয়।2009 সালে এটি (ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণী) উচ্চ প্রাথমিক স্তরে সম্প্রসারিত হয় এবং 2008 সালের থেকে প্রারম্ভিক (প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত) স্তরে মিড ডে মিল সর্বজনীন করা হয়।বর্তমানে প্রায় 92% প্রারম্ভিক স্তরের বিদ্যালয়ের এই প্রকল্পের অধীন।2010-11 সালে 7.18 কোটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও 3.36 কোটি উচ্চ প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের লিঙ্গ নির্বিশেষে সমস্ত শিক্ষার্থীকে একসাথে মিড ডে মিলের খাবার ফলে লিঙ্গ বৈষম্য ও সামাজিক বৈষম্য অনেকটা দূরীভূত হয়।

৭. সামাজিক বৈষম্য দূরীকরণের ক্ষেত্রে অগ্রগতি -

সর্বশিক্ষা অভিযানের সমাজে পশ্চাৎপদ শ্রেণীর মধ্যে শিক্ষার বিকাশের প্রতি বিশেষ ভাবে নজর দেওয়া হয়ে ছিল এবং অনগ্রসর শ্রেণির শিক্ষাগত অগ্রগতির জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি যথা - মিড-ডে-মিল,বিনা পয়সায় পোশাক ও পুস্তক বিতরণ,প্রতিকার মূলক শিহ্মন,বিভিন্ন রকম উৎসাহ ভাতা, কস্তুরবা গান্ধী বালিকা বিদ্যালয় ইত্যাদি।এর ফলে অনগ্রসর শ্রেণির মধ্যে শিক্ষা সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি হয়।সর্বশিক্ষা অভিযানের ফলে তপশিলি জাতি,উপজাতি,অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে সাক্ষরতা হার বৃদ্ধি পায়।প্রারম্ভিক স্তরে ভর্তির,উপস্থিতির হার, শিক্ষার্থীদের হার রাখা ও শিখন প্রভৃতি হ্মেত্রে লহ্ম্যনীয় সমর্থক পরিবর্তন ঘটে। বিশেষ করে কস্তুরবা গান্ধী বালিকা বিদ্যালয় কর্মসূচির ফলে তপশিলি জাতি,উপজাতি ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও অর্থনৈতিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া পরিবারের বালিকাদের মধ্যে শিক্ষার অগ্রগতি ঘটে।


CLICK HERE -

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post