রক্তচাপ - উচ্চ রক্তচাপ এবং নিম্ন রক্তচাপ||Blood Pressure - High Blood Pressure And Low Blood Pressure

রক্তচাপ - উচ্চ রক্তচাপ এবং নিম্ন রক্তচাপ||Blood Pressure - High Blood Pressure And Low Blood Pressure

রক্তচাপ - উচ্চ রক্তচাপ এবং নিম্ন রক্তচাপ||Blood Pressure - High Blood Pressure And Low Blood Pressure

BENGALI VERSION||ENGLISH VERSION

Blood Pressure - High Blood Pressure And Low Blood Pressure


রক্তচাপ - উচ্চ রক্তচাপ এবং নিম্ন রক্তচাপ

BENGALI VERSION

(ENGLISH VERSION PDF FILE BELOW THE ARTICLE)

1. ভূমিকা -

রক্তচাপ হল রক্তনালী গুলির দেয়ালের বিরুদ্ধে রক্ত সঞ্চালনের চাপ।এই চাপের বেশিরভাগই সংবহন তন্ত্রের মাধ্যমে রক্ত পাম্প করে হৃদপিন্ডের ফলে হয়।যোগ্যতা ছাড়াই ব্যবহৃত হলে, 'রক্তচাপ' শব্দটি বৃহৎ ধমনীতে চাপকে বোঝায়। রক্তচাপ হল শ্বাস যন্ত্রের হার, হৃদস্পন্দন, অক্সিজেন স্যাচুরেশন এবং শরীরের তাপমাত্রায় সাথে একসাথে গুরুত্বপূর্ণ লহ্মণ গুলির মধ্যে একটি যা স্বাস্থ্যসেবা পেশাদাররা রোগীর স্বাস্থ্যের মূল্যায়নে ব্যবহার করেন। 

2. রক্তচাপ -

রক্তবাহের মধ্যে দিয়ে রক্ত প্রবাহিত হওয়ার সময় রক্তবাহের প্রাচীর গাত্রে যে চাপের সৃষ্টি করে।একে রক্তচাপ বলা হয়।এটি হৃদ সংবহন তন্ত্রের বিশেষ একটি শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া যা একজন মানুষকে সুস্থ ভাবে বেঁচে থাকতে সাহায্যে করে।এই রক্তচাপকে আবার চারভাগের ভাগ করা হয়।যথা -

১. সংকোচী চাপ(Systolic Pressure) -

হৃৎপিণ্ডের সংকোচনের ফলে বাম নিলয় থেকে নির্গত রক্ত যে সর্বাধিক চাপ প্রয়োগ করে তাকে বলা হয় সংকোচী রক্তচাপ।একজন প্রাপ্ত বয়স্ক সুস্থ ব্যক্তির সংকোচী চাপের গড় পরিমাণ 120 mm.Hg।

২. প্রসারী চাপ(Diastolic Pressure) -

হৃৎপিণ্ডের সম্পূর্ণ প্রসারণ অবস্থায় ধমনি তন্ত্রের যে সর্বনিম্ন চাপ লহ্ম করা যায় তাই হল প্রসারী চাপ।একজন প্রাপ্ত বয়স্ক সুস্থ ব্যক্তির গড় প্রসারী চাপ হল 80 mm.Hg।

৩. স্পন্দন চাপ(Pulse Pressure) -

সংকোচী ও প্রসারী চাপের বিয়োগ ফলকে বলা হয় স্পন্দন চাপ।এর স্বাভাবিক পরিমাণ (120mm.Hg - 80mm.Hg)/(40 mm.Hg)।

৪. গড় রক্তচাপ (Mean Blood Pressure) -

সংকোচী চাপ ও প্রসারী চাপের গাণিতিক গড়কে বলা হয় গড় রক্তচাপ। প্রসারী রক্তচাপ + স্পন্দন চাপ ÷ 3।

একজন ব্যক্তির রক্তচাপ বিভিন্ন পরিস্থিতিতে বা ব্যক্তির বিশেষ ভিন্নতা লহ্ম করা যায়।

Class Systolic BP Diastolic BP
Optimal <120 mmhg="" td=""> <80 mmhg="" td="">
Normal 120-129 mmHg 80-84 mmHg
High Normal 130-139 mmHg 85-89 mmHg
Grade 1 Hypertension 140-159 mmHg 90-99 mmHg
Grade 2 Hypertension 160-179 mmHg 100-109 mmHg
Grade 3 Hypertension ≥180 mmHg ≥110 mmHg
Isolated systolic Hypertension ≥140 mmHg <90
mmHg<90 mmhg="" td="">

Source - Task Force for the Management of arterial Hypertension of the European Society Of Cardiology (ESC) And The European Society Of Hypertension (ESH) Classification of Office Blood Pressure.

রক্তচাপের পরিমানের ভিন্নতার কয়েকটি কারণ রয়েছে,যেমন -লিঙ্গভেদ,দেহের অবস্থান,দেহ গঠন,বয়স, ব্যায়াম, উত্তেজনা, আকস্মিক দুর্ঘটনা ইত্যাদি।তাই ব্যক্তি ভেদে এর তারতম্য লহ্ম করা যায়।বিশ্বব্যাপী গড় রক্তচাপ, বয়স মান অনুযায়ী,1975 সাল থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় একই রকম রয়েছে।যথা - পুরুষদের মধ্যে 127/79 mmHg এবং মহিলাদের মধ্যে 122/77 mmHg. যদিও এই গড় ডেটা মাস্ক উল্লেখযোগ্য ভাবে আঞ্চলিক প্রবণতাকে ভিন্ন করে দেয়।

Reference Ranges For Blood Pressure (BP) in Children.

Stages Ages Systolic BP (mmHg) Diastolic BP (mmHg)
Infancy 0-12 Months 75-100 50-70
Toddlers And Pre-schoolers 1-5 Years 80-110 50-80
School Age 6-12 Years 85-120 50-80
Adolescents 13-18 Years 95-140 60-90

• স্পাইগমোম্যানোমিটার -

একজন স্বাস্থ্যসেবা কর্মী একটি অ্যানারয়েড গেজ বা পারদ টিউব স্পাইগমোম্যানোমিটার দ্বারা ধমনী যাওয়া, হৃৎপিণ্ডের কাছাকাছি অবস্থানের জন্য স্টেথোস্কাপের মাধ্যমে আস্কুলটেশন (শ্রবন) দ্বারা আক্রমনাত্মক ভাবে রক্তচাপের রিডিংয়ের জন্য সার্কুলেশনকে এখনও সাধারনত নির্ভূলভাবে সোনার মান হিসাবে বিবেচনা করে রক্তচাপ পরিমাপ করা হয়।

3. রক্তচাপের প্রকারভেদ -

ব্যক্তির দেহাভ্যন্তরে রক্তচাপের ভারসাম্য শারীরবৃত্তীয় প্রণালীকে স্বচ্ছন্দে কাজ করতে সাহায্যে করে।যখন এই সাম্যতার অনুপাতে বিচ্ছিন্নতা লহ্ম্য করা যায় তখনই ব্যক্তির রক্তচাপ জনিত অসুস্থতার কবলে পড়েন।চাপের মাত্রার উপর নির্ভর করে রক্তচাপ জনিত অসুস্থতাকে সাধারণত দুই ভাগে ভাগ করা যায়।যথা -

  1. উচ্চ রক্তচাপ
  2. নিম্ন রক্তচাপ

3.1.1. উচ্চ রক্তচাপ -

উচ্চ রক্তচাপ হল আমাদের ধমনি গাত্রে রক্তের দীর্ঘমেয়াদি অতিরিক্ত পার্শ্ব চাপ।সাধারণত একজন প্রাপ্ত বয়স্ক সুস্থ ব্যক্তির মধ্যে সংকোচী চাপ 130 mm.Hg থেকে বেশি ও প্রসারী চাপ 90 mm.Hg থেকে বেড়ে যায় তাহলে তাকে উচ্চ রক্তচাপ বলা হয়।উচ্চ রক্তচাপকে ডাক্তারি পরিভাষায় হাইপারটেনশন(Hypertension) বলে। সুতরাং উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন বলতে সংকোচী চাপ 130 mm.Hg এর বেশি এবং প্রসারী চাপ 90 mm.Hg এর বেশি বোঝায়।দেহের অভ্যন্তরে হৃৎ সংবহন তন্ত্রের মধ্যে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয় এই অসুস্থতা।সঠিক চিকিৎসা বা সচেতনতা অবলম্বন না করলে প্রাননাশ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। 

3.1.2. উচ্চ রক্তচাপের লহ্মণ -

উচ্চ রক্তচাপ বা দ্রুত ক্রম বর্ধমান রক্তচাপের কারণে নিম্নলিখিত লহ্মণ গুলি দেখা যেতে পারে।যথা -

  1. অবসাদ মাথার যন্ত্রনা।
  2. বমি বমি ভাব।
  3. মাথা ঘোরা।
  4. তড়কা।
  5. অস্পষ্ট দেখা।
  6. নাক থেকে রক্তপাত। 
  7. দ্রুত বহ্ম স্পন্দন।
  8. শ্বাসজনিত সমস্যা।
  9. বিরক্তি বোধ

3.1.3. উচ্চ রক্তচাপের কারণ -

উচ্চ রক্তচাপের কারণ পর্যালোচনা করতে গেলে দেখা যায় দুই ধরনের কারন পরিলক্ষিত হয়।যথা -

  1. প্রাথমিক উচ্চ রক্তচাপের কারণ।
  2. গৌণ উচ্চ রক্তচাপের কারণ।

১. প্রাথমিক উচ্চ রক্তচাপের কারণ -

সাধারণত প্রাপ্তবয়স্কদের হ্মেত্রে যেখানে উচ্চ রক্তচাপের কোনো শনাক্তযোগ্য কারণ থাকে না,এই ধরনের উচ্চ রক্তচাপকে প্রাথমিক বা অপরিহার্য উচ্চ রক্তচাপ বলে।এই উচ্চ রক্তচাপের কারণ গুলি হল।-

  • অধিকাংশ সময় বংশগত কারণে অর্থাৎ পিতামাতার থেকে তাদের সন্তানদের মধ্যে বিভিন্ন রোগ এবং জেনেটিক বৈশিষ্ট্য চলে আসে।
  • একটি ব্যক্তির শরীরের অভ্যন্তরে শারীরবৃত্তীয় স্বাভাবিক কর্মের মধ্যে ভারসাম্যহীনতা তৈরি হলে তাদের শারীরিক গঠন সম্পূর্ণ হয় না।ফলে তাদের মধ্যে অসুস্থতা ঘটতে পারে।
  • একটি ব্যক্তি যদি নিজের ইচ্ছায় অস্বাস্থ্যকর উদ্যামে জীবনযাপন করে তাহলে এই রোগ হতে পারে।
  • এটি অনেক বছর ধরে ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে।

২. গৌণ উচ্চ রক্তচাপের কারণ -

যে সমস্ত ব্যক্তির উচ্চ রক্তচাপ অন্তর্নিহিত কারণে সৃষ্ট হয়ে থাকে।এই ধরনের উচ্চ রক্তচাপকে কিছু মানুষের উচ্চ রক্তচাপকে গৌণ উচ্চ রক্তচাপ বলে।এটি হঠাৎ করে দেখা যায় এবং সেই কারণে উচ্চ রক্তচাপের সৃষ্টি হয়।যা প্রাথমিক উচ্চ রক্তচাপের তুলনার বেশি হয়ে থাকে।যথা -

  1. কিডনি জনিত সমস্যা।
  2. নিদ্রাহীনতা।
  3. জন্মগত হৃৎ সমস্যা।
  4. থাইরয়েড সমস্যা।
  5. ডায়াবেটিস। 
  6. চিকিৎসার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া। 
  7. অবৈধ ওষুধ ব্যবহার। 
  8. ড্রাগ,কোকেন এবং অ্যালকোহলের অপব্যবহার।
  9. ধূমপান।
  10. অ্যাড্রিনাল গ্ৰন্থির টিউমার বা স্ফীতি।
  11. মানসিক পীড়ন।
  12. খাদ্যে অধিক পরিমাণে লবণ।
  13. শারীরিক অঙ্গ সঞ্চালনের অভাব।
  14. মানসিক চাপ।

3.1.4. উচ্চ রক্তচাপের জটিলতা -

ধমনি গাত্রে অতিরিক্ত রক্তচাপের ফলে সৃষ্ট উচ্চ রক্তচাপের কারণে রক্তবাহ এমনকি দেহের বিভিন্ন অঙ্গের হ্মতি হতে পারে। দীর্ঘদিন অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপের কারণে বৃহত্তর হ্মতি হতে পারে। সেগুলি হল।-

  1. হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোক।
  2. অ্যানুরিজম বর্ধিত রক্তচাপের ফলে রক্তবাহের স্ফীতি এবং দুর্বল অবস্থা।
  3. হার্ট ফেইলিওর।
  4. কিডনির মধ্যে রক্তবাহ দুর্বল এবং সরু হয়ে যায়।
  5. চোখের রক্তবাহ ছিন্ন বা সরু এবং ঘণীভূত হয়।
  6. বিপাকীয় সিনড্রোম।
  7. স্মৃতিশক্তি জনিত সমস্যা।

3.1.5. উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসা পদ্ধতি -

উচ্চ রক্তচাপকে কমিয়ে ভারসাম্য রহ্মা করার জন্য প্রথমেই প্রয়োজন দৈনন্দিন জীবনযাত্রার নিয়ন্ত্রন।উদ্যাম জীবন প্রনালী ত্যাগ করে স্বাস্থ্য উপযোগী সক্রিয় জীবনযাপন করতে হবে। খাদ্যাভ্যাস অবসর সময়,জীবিকা কর্ম, পারিবারিক কর্মসূচি সমস্ত হ্মেত্রতেই একটা ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে। তবেই এই অসুস্থতা থেকে ধীরে ধীরে সাধারণে আসা সম্ভব। এছাড়াও কয়েকটি উপায় নীচের দেওয়া হল।-

  1. নিয়মিত শরীরচর্চায় অংশগ্রহণ করতে হবে। 
  2. অ্যালকোহল জাতীয় উপাদান ত্যাগ করতে হবে।
  3. স্বাস্থ্যকর খাবার গ্ৰহন করতে হবে। 
  4. খাবারের মধ্যে অল্প পরিমাণে লবন ব্যবহার করতে হবে। 
  5. শারীরিক ওজন উচ্চতা অনুসারে ভারসাম্য রাখতে হবে।
  6. পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম দরকার। 
  7. ধূমপানের অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে। 
  8. মানসিক চাপ বা দুশ্চিন্তা কম করা।
  9. বিভিন্ন যোগাসন ও ধ্যান অভ্যাস করতে হবে।
  10. যদি কোনো ব্যক্তির 60 বছরে বা তার বেশি বয়স হয়, তবে ওষুধের ব্যবহারের মাধ্যমে সংকোচী চাপকে কমিয়ে (140 mm.Hg এর কম) আনা যায় এবং তার জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ সেবন করতে হবে।
  11. নিজে নিজে চিকিৎসা না করে অবশ্যই ডাক্তারি পরামর্শ একান্ত প্রয়োজনীয়।

3.1.6. আকস্মিক উচ্চ রক্তচাপের প্রাথমিক চিকিৎসা -

আকস্মিক একজন প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ ব্যক্তির ঘরের ভেতরে কিংবা বাইরের যে কোনো স্থানে রক্তচাপ বৃদ্ধি পেলে নিম্নলিখিত বেশ কিছু প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া যেতে পারে। সেগুলি হল -

  1. কোনো ব্যক্তির যদি শরীর অস্থির লাগে তাকে অবশ্যই একটি শীতল স্থানে নিয়ে গিয়ে বসাতে হবে।
  2. এহ্মেত্রে অবশ্যই মাথায় জল বা বরফ দিতে পারেন,যা কিছু হলে সেই ব্যক্তিকে আরাম লাগবে।
  3. এই সময় লেবু বা তেঁতুল গোলা জল খাওয়ানো উচিৎ নয়। কারণ লেবু বা তেঁতুল গোলা জল কোনো চিকিৎসার উপসর্গ নয়।
  4. সাময়িক উপশ্রম হলে অবশ্যই নিকটবর্তী চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
  5. তবে নিজে থেকে রক্তচাপ কমানোর জন্য কোনো ওষুধ গ্ৰহন করবে না বা করাবেন না।

3.2.1. নিম্ন রক্তচাপ -

একজন সুস্থ মানুষের কোনো উপসর্গ ছাড়া নিম্ন রক্তচাপ সাধারণত উদ্বেগের কোনো বিষয় নয় এবং চিকিৎসার কোনো প্রয়োজন হয় না।সাধারণত একজন প্রাপ্ত বয়স্ক সুস্থ ব্যক্তির যদি সংকোচী চাপ 90 mm.Hg এর নীচে এবং প্রসারী চাপ 60 mm.Hg এর নীচে চলে যায় তখন তাকে বলে নিম্ন রক্তচাপ বলে।নিম্ন রক্তচাপকে ডাক্তারি পরিভাষায় হাইপোটেনশন(Hypotension) বলে। সুতরাং নিম্ন রক্তচাপ বা হাইপোটেশন বলতে সংকোচী চাপ 90 mm.Hg এর নীচে এবং প্রসারী চাপ 60 mm.Hg এর কম বোঝায়।এই ধরনের সমস্যা খুব একটা বেশি দেখা যায় না।উচ্চ রক্তচাপের তুলনার কমসংখ্যক মানুষ এই অসুস্থতার স্বীকার।এই সমস্যা খুব একটা বিশেষ হ্মতি নয় স্বাস্থ্যের জন্য কিন্তু যদি একেবারেই কমে যায় তবে তা স্বাস্থ্যের জন্য বেশ হানিকারক।ব্যক্তি বিশেষ রক্তচাপের তারতম্য লহ্ম করা যায়।তবে এই সমস্যার স্বীকার হলে চিকিৎসকের পরামর্শ ও সচেতন জীবন উভয়ের উপর গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। 

3.2.2. নিম্ন রক্তচাপের লহ্মণ -

কিছু কিছু মানুষের হ্মেত্রে নিম্ন রক্তচাপের কারণে অন্তর্নিহিত সমস্যার সংকেত দিয়ে থাকে, বিশেষ করে যখন হঠাৎ করে রক্তচাপ কমে যায়।নীচে কয়েকটি লহ্মণ ও উপসর্গ দেওয়া হল।যথা -

  1. অস্পষ্ট দৃষ্টি।
  2. বমি বমি ভাব।
  3. সংজ্ঞানাশ।
  4. বিশৃঙ্খলা।
  5. সাধারণ শারীরিক দুর্বলতা মাথা ঘোরা।
  6. অনাবস্থা।
  7. দ্রুত বহ্ম স্পন্দন।
  8. অবসাদগ্ৰস্থতা।
  9. মাথা ঘোরা বা মাথা ধরা।
  10. ঠান্ডা,আঠাযুক্ত ফ্যাকাশে ত্বক।
  11. তৃষ্ণা।
  12. অজ্ঞান।

3.2.3. নিম্ন রক্তচাপের কারণ -

সাধারণত নিম্ন রক্তচাপের কারণ সবসময় স্পষ্ট হয় না।তবুও নিম্নলিখিত কারনে নিম্ন রক্তচাপ হতে পারে।

১. প্রাথমিক নিম্ন রক্তচাপের কারণ -

সাধারণত প্রাপ্তবয়স্কদের হ্মেত্রে যেখানে নিম্ন রক্তচাপের কোনো শনাক্তযোগ্য কারণ থাকে না,এই ধরনের নিম্ন রক্তচাপকে প্রাথমিক নিম্ন রক্তচাপ বলে।এই নিম্ন রক্তচাপের কারণ গুলি হল।-

  1. বংশগত কারণে পিতামাতার থেকে আসতে পারে।
  2. অস্বাস্থ্যকর উদ্যাম জীবনযাপনের জন্য এই রোগ হতে পারে।

২. গৌণ নিম্ন রক্তচাপের কারণ -

যে সমস্ত ব্যক্তির নিম্ন রক্তচাপ অন্তর্নিহিত কারণে সৃষ্ট হয়ে থাকে।এই ধরনের নিম্ন রক্তচাপকে কিছু মানুষের নিম্ন রক্তচাপকে গৌণ নিম্ন রক্তচাপ বলে।এটি হঠাৎ করে দেখা যায় এবং সেই কারণে নিম্ন রক্তচাপের সৃষ্টি হয়।যা প্রাথমিক নিম্ন রক্তচাপের তুলনার বেশি হয়ে থাকে।যথা -

  1. আকস্মিক করে অধিক তাপ মাত্রাযুক্ত আবহাওয়ার ব্যক্তির রক্তচাপ হ্রাস পেতে পারে। 
  2. চিকিৎসা চলাকালীন কিছু ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কারনে এটি ঘটতে পারে। 
  3. শরীরের মধ্যে জলের অভাব ঘটলে নিম্ন রক্তচাপ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  4. যদি কোনো ব্যক্তি হৃৎ রোগে আক্রান্ত থাকেন তাহলে এই সমস্যা হঠাৎ করে গ্ৰাস করতে পারে।
  5. স্নায়ুরোগ অনেক সময় এই সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। 
  6. হরমোন সংক্রান্ত সমস্যা।
  7. থাইরয়েড জনিত সমস্যা।
  8. বিষন্নতা বা পারকিনসন রোগের জন্য প্রেসক্সিপশনের ওষুধ সেবন।
  9. রক্তাল্পতা জনিত সমস্যা(এটি একটি বিশেষ কারণ)। 
  10. হৃৎপিণ্ডের সঙ্গে মস্তিষ্কের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হলে হঠাৎ রক্তচাপ কমে যেতে পারে।
  11. হার্ট ফেইলিওর।
  12. অস্বাভাবিক হৃদস্পন্দন।
  13. হিট স্ট্রোক।
  14. যকৃতের রোগ।
  15. শারীরিক অসুস্থতা বা অস্ত্রোপচারের ফলে নিম্ন রক্তচাপ হতে পারে।
3.2.4. নিম্ন রক্তচাপের জটিলতা -

দীর্ঘদিন অনিয়ন্ত্রিত নিম্ন রক্তচাপের কারণে বৃহত্তর হ্মতি হতে পারে। সেগুলি হল।-

  1. নিম্ন রক্তচাপ শুধুমাত্র মাথা ঘোরা বা দুর্বলতা ঘটায় না বরং ব্যক্তি অজ্ঞান হয়ে যায় এবং এর ফলে পড়ে গুরুতর আঘাতের সৃষ্টি করাতে পারে।
  2. কোনো কারনে গুরুতর নিম্ন রক্তচাপের ফলে শরীর পর্যাপ্ত অক্সিজেন থেকে বঞ্চিত হয়।
  3. শরীর স্বাভাবিক কাজকর্ম চালিয়ে যেতে পারে না, এমনকি এর ফলে হৃৎপিণ্ড এবং মস্তিষ্ক হ্মতিগ্ৰস্ত হয়।

3.2.5. নিম্ন রক্তচাপের চিকিৎসার পদ্ধতি -

নিম্ন রক্তচাপের কারণ গুলি অনুযায়ী আমরা বোধ করতে পারি যে কোনো সময়ে হঠাৎ করে এই সমস্যা ঘটতে পারে। সুতরাং স্বাস্থ্য সচেতনতা সহ সক্রিয় জীবন প্রণালী এগুলি থেকে আমাদের মুক্তি দিতে পারে। সচেতনতার কয়েকটি উপায় নিম্নে বর্ণনা করা হল।-

  1. প্রতিদিনের খাবারের সঙ্গে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল ও লবণ গ্ৰহণ করতে হবে।
  2. যদি বোঝা যায় ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার এটি ঘটছে তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে তা পরিবর্তন করতে হবে।
  3. অ্যালকোহল থেকে দূরে থাকতে হবে। 
  4. প্রতিদিন ব্যায়াম বা শারীরিক কার্যাবলিতে অংশগ্রহণের প্রয়োজন। 
  5. অতিরিক্ত ওজন যুক্ত উপাদান বহন করা যায় না।
  6. একই ভাবে দীর্ঘহ্মন একই জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকা থেকে বিরত থাকতে হবে। 
  7. পরিমিতি ও পুষ্টিগুণ সম্পন্ন খাবার গ্ৰহণ করা দরকার।
  8. লবন যুক্ত খাবারের পরিমাণ বুদ্ধি করতে হবে।
  9. পা গরম রাখার জন্য চাপা মোজা পরতে হবে। 
  10. ঘুম থেকে ওঠার সময় ধীরে ধীরে বিছানা ত্যাগ করা দরকার। 
  11. চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী কিন্তু ওষুধ সেবন করা যেতে পারে।

3.2.6. আকস্মিক নিম্ন রক্তচাপের প্রাথমিক চিকিৎসা -

আকস্মিকভাবে কোনো প্রাপ্ত বয়স্ক সুস্থ ব্যক্তির ঘরের ভেতরে কিংবা বাইরের যে কোনো স্থানে রক্তচাপ হ্রাস পেলে নিম্নলিখিত বেশ কিছু প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া যেতে পারে। সেগুলি হল -

  1. কোনো ব্যক্তির রক্তচাপ হ্রাস পেলে প্রথমে একটি শীতল স্থানে নিয়ে গিয়ে বসাতে হবে।
  2. সেই ব্যক্তিকে নুন চিনির জল দিতে পারেন।নুনের মধ্যে সোডিয়াম ও চিনির মধ্যে শর্করা রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রন করতে সাহায্য করবে।
  3. তবে ডায়াবিটিস রোগী হলে চিনি বাদ দিয়ে বেশি করে নুন জল দিতে হবে।
  4. সেই ব্যক্তির ঘাড়ে,কানের লতির দুই পাশে ও চোখে মুখে ঠান্ডা জলের ঝাপটা দিতে হবে।এতে তিনি অনেকটাই সুস্থ বোধ করবেন এবং স্নায়ু গুলি আরাম পাবে।
  5. শরীরে প্রোটিন কমলেও রক্তচাপের উপর তার প্রভাব পড়ে।রোগীকে ডিমের কুসুম,দুধ দিতে পারেন,এহ্মেত্রে কফি খুব কার্যকরী।

CLICK HERE -

ENGLISH VERSION PDF FILE

Assignment Questions -

1. রক্তচাপ বলতে কি বোঝ। রক্তচাপের প্রকারভেদ আলোচনা কর।||What Is Blood Pressure. Discuss The Types Of Blood Pressure.

2. উচ্চ রক্তচাপ এবং নিম্ন রক্তচাপ কাকে বলে।||What Is High Blood Pressure And Low Blood Pressure.

3. উচ্চ রক্তচাপ এবং নিম্ন রক্তচাপের লহ্মণ এবং কারন বর্ণনা কর।||Write Down The Symptoms And Causes Of High Blood Pressure And Low Blood Pressure.

4. উচ্চ রক্তচাপ এবং নিম্ন রক্তচাপের চিকিৎসা পদ্ধতি আলোচনা কর।|| What Are The Process Of Treatment Of High Blood Pressure And Low Blood Pressure.

5. রাস্তাঘাটে আকস্মিক কোনো ব্যক্তি যদি উচ্চ রক্তচাপ বা নিম্ন রক্তচাপ ঘটলে আপনি কি কি প্রাথমিক চিকিৎসা বা উপসর্গ করবেন।||What First Aid Or Symptoms Would You Do If A Person Suddenly Fill High Blood Pressure Or Low Blood Pressure On The Street.


Post a Comment (0)
Previous Post Next Post