ফাস্টফুড জনিত সমস্যা||Fast Food Problems
BENGALI VERSION ENGLISH VERSION
ফাস্টফুড জনিত সমস্যা||Fast Food Problems |
ফাস্টফুড জনিত সমস্যা
BENGALI VERSION
1. ভূমিকা -
বেঁচে থাকার জন্য মানুষের শরীরে যে শক্তির প্রয়োজন হয়, তা আসে খাবার থেকে। খাদ্য বা খাদ্যাভ্যাস মানুষের স্বাস্থ্যের উপর বিশেষভাবে প্রভাব বিস্তার করে।তাই ব্যক্তির সুস্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যপ্রদ শরীর পরিমিত আহার ও পর্যাপ্ত শারীরিক সঞ্চালনের সামঞ্জস্যতা থেকে তৈরি হয়।খাদ্য বিশেষে খাবারের গুন পরিবর্তিত হয়।সব খাবারে একই গুনাগুন থাকে না।তাই দেহের উপযোগী এবং সঠিক গুন সম্পন্ন খাবার নির্ধারন করা উচিৎ।
কিন্তু বর্তমান সময়ে কর্মব্যস্ততার দরুন মানুষেরা তাদের উদ্যাম জীবনযাত্রার খাদ্যাভাসের উপর বিশেষ গুরুত্ব না দিয়ে না।তারা দেহের উপযোগিতা এবং খাবারের মাত্রা বজায় না রেখে সম্মুখে থাকা খাবার ইচ্ছে মতো খেয়ে ফেলি।ব্যক্তির কর্মব্যস্ততার ফলে প্রতি নিয়ত অপুষ্টিকর ও অস্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করে থাকে বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট, রাস্তাঘাটে হোটেলে থেকে।
2. ফাস্টফুড -
ইংরেজি প্রতিশব্দ 'Fast' শব্দটির অর্থ হল দ্রুত এবং 'Food' শব্দটির অর্থ হল খাদ্যবস্তু, অর্থাৎ যে খাবার দ্রুততার সঙ্গে করে গ্ৰাহকের সমানে পরিবেশন করা হয়,তাকে ফাস্টফুড বলা হয়। সাধারনত বাড়ির বাইরে গিয়ে বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট, রাস্তাঘাটে হোটেলে বা দোকান বা স্টলে সহজেই খুব কম সময়ে তৈরি করে দ্রুত পরিবেশন করা হয় এবং খাদ্য বস্তু গুলির অভ্যন্তরে পুষ্টিগুণ খুব কম মাত্রায় থাকে। এগুলিকে সাধারণত Fast food বলা হয়।
উদাহরণ -
- রোল (বিভিন্ন প্রকার)।
- চাওমিন (বিভিন্ন প্রকার)
- তেলেভাজা চপ।
- পকোড়া।
- স্যান্ডউইচ (বিভিন্ন প্রকার)।
- বার্গার (বিভিন্ন প্রকার)।
- পিজা (বিভিন্ন প্রকার)।
- চিপস।
- চা।
- সফট ড্রিংস।
- বিভিন্ন ফ্লেভারের পানীয়।
- মিল্ক শেখ।
- আইসক্রিম।
- ফুচকা।
- নুডলস।
- হটডগ।
- বিরিয়ানি।
- পরোটা বা কচুরি তরকারি প্রভৃতি।
3. ফাস্টফুড জাতীয় খাবারের বৈশিষ্ট্য -
ফাস্টফুড জাতীয় খাবারের যে সমস্ত বৈশিষ্ট্য দেখা যায়,তা হল -
- ফাস্টফুড খুব দ্রুত, সুবিধাজনক এবং সস্তা হয়।
- ফাস্টফুড খাবার গুলিতে সাধারনত চর্বিযুক্ত, ক্যালোরি, কোলেস্টেরল এবং সোডিয়ামের মতো নানা উপাদান অধিক পরিমাণে থাকে।
- এই ধরনের খাবার গুলি পুষ্টিগুণের মাত্রা অত্যন্ত কম হয়।
- ফাস্টফুডকে বেশি মুখরোচক ও আকর্ষণীয় করে তোলার জন্যই বিভিন্ন উপাদান অধিক পরিমাণে ব্যবহার করতে হবে।
- এই সমস্ত খাবার মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর হ্মতিকর প্রভাব ফেলে।
- এই ধরনের খাবার গ্ৰহন করলে মানুষের দৈনন্দিন অভ্যাসে পরিণত হয়ে যায়।
- বিভিন্ন ধরনের ফাস্টফুড খাবার খাওয়া ফলে মানুষের মধ্যে নানা ধরনের মারাত্মক মারন ব্যাধি আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- এই ধরনের খাবার সাধারণত বাড়িতে নয়, বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট,রাস্তাঘাটে দোকানে বা হোটেলে পাওয়া যায়।
5. ফাস্টফুড জাতীয় খাবারের প্রভাব -
অতিরিক্ত ফাস্টফুড জাতীয় খাবার গ্রহণ করার ফলে মানুষ জাতির উপর যে সমস্ত নেতিবাচক প্রভাব লহ্ম করা যায়, তা নিম্নে বর্ণনা করা হল।-
১. চর্বির ফলে কার্ডিওলাসকুলার রোগ -
অনেক ফাস্ট ফুড খাবার আছে যেগুলির খরচ কমানোর জন্য ট্রান্স ফ্যাট ব্যবহার করে এবং খাদ্য সংরক্ষণ করে ও খাদ্যকে সুস্বাস্থ্য ও আকর্ষণীয় করার জন্য বিভিন্ন ফ্লেভারের রং মিশ্রণ করে।
এই সমস্ত ফাস্টফুড রেস্টুরেন্টে প্রায়ই গভীর ভাজা খাদ্যে ট্রান্স ফ্যাট ব্যবহার করে থাকে।যা মূলত অস্বাস্থ্যকর।এর ফলে এই ধরনের খাদ্যে মনুষ্যসৃষ্ট চর্বি ব্যক্তির ভালো কোলেস্টেরলকে কমায় এবং খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি করে।এই সম্পৃক্ত চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়া ফলে ব্যক্তির হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
২. চর্বির ফলে স্থুলতা -
স্থুলতা হল বর্তমান সময়ে একটি বিশেষ স্বাস্থ্যগত সমস্যা।প্রযুক্তিগত অগ্রগতির ফলে মানুষের শারীরিক পরিশ্রম দিনের পর দিন কমে আসছে।তাহলে স্বাভাবিক ভাবেই দেখা যায় যে একজন ব্যক্তি যে পরিমাণে খাবার গ্ৰহণ করি তা থেকে প্রাপ্ত শক্তির সমস্তটা দেহের মধ্যে খরচ হয় না সেগুলি ফ্যাট আকারে আমাদের দেহের অভ্যন্তরে সঞ্চিত হতে থাকে।এরপরও যদি দেখা যায় যে ব্যক্তিটি অধিক পরিমাণে ফাস্টফুড জাতীয় খাবার গ্রহণ করে,তার ফলে ফ্যাট দেহকে খুব সহজেই সুলতার নিয়ে যায়।এই স্থূলতা অনেক সময় অনেক রোগের সঞ্চয়ের জন্য দায়ী থাকে।যেমন হৃদরোগ,উচ্চ রক্তচাপ ও শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি।
৩. পীড়ন -
ফাস্টফুড জাতীয় খাদ্যে প্রচুর পরিমাণে চর্বি থাকার ফলে মানবদেহের হৃদরোগ,লিভারের সমস্যা,রক্তনালী জনিত রোগ প্রভৃতি দেখা যায়।যার ফলে স্বরূপ মানুষের অভ্যন্তরে পীড়নের মাত্রা বাড়তে থাকে যা একজন সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ভীষণ হ্মতি কর।
৪. শর্করার ফলে ডায়াবেটিস রোগ -
ফাস্ট ফুড খাবারের মধ্যে কিছু এমন পানীয় আছে যেগুলির মধ্যে অধিক মাত্রায় শর্করা মেশানো থাকে।যেমন Soft Drinks,Milk shakes এবং অন্যান্য পানীয়।এই সমস্ত অধিক মাত্রায় শর্করা মিশ্রিত পানীয়ের কোনো পুষ্টিগত গুরুত্ব নেই। বরং ওজন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং সেই সঙ্গে হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলো।এক সমীক্ষায় প্রকাশিত হয়েছে যে অধিক শর্করা যুক্ত খাদ্যাভাসে ইনসুলিন প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে ওজন বৃদ্ধি করে ও আলজেমার রোগ এবং টাইপ টুডাইবেস রোগের প্রধান কারণ গবেষণা জানা গেছে যে কম শর্করাযুক্ত খাদ্য পাস মানুষের জীবনের দীর্ঘ আয়ু এবং জীবনের মান বৃদ্ধি করতে পারে।ডায়াবেটিসের মাত্রা যদি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় বা সচেতনতা হীন জীবনযাপন করা হয় তাহলে ব্যক্তির বুকের সমস্যা,স্নায়ু বিকল ও উচ্চ রক্তচাপ প্রকৃতি সমস্যা হতে পারে।
৫. সোডিয়ামের ফলে উচ্চ রক্তচাপ রোগ -
বর্তমানে ফাস্টফুড রেস্টুরেন্টে সোডিয়ামের গন্ধ বৃদ্ধিকারী ফ্লেভার একটি বিশেষ উপাদান।যা বিভিন্ন খাবারের সঙ্গে মিশ্রিত করা হয়।একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে খাদ্য তালিকা গত সোডিয়ামের 75% এর বেশি সোডিয়াম রেস্টুরেন্টের খাবার এবং প্যাকেটজাত খাবার থেকে আসে।অধিক মাত্রায় সোডিয়াম গ্রহণের ফলে ব্যক্তির শরীরে রক্তচাপ বৃদ্ধি পায় এবং উচ্চ রক্তচাপজনিত রোগ ও হৃদরোগ বৃদ্ধির ঝুঁকি থাকে।অন্য আর একটি গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে যে অধিক সোডিয়াম গ্ৰহণ শুধুমাত্র উচ্চ রক্তচাপ বৃদ্ধি করে না,এর ফলে স্ট্রোক, হৃদরোগ প্রাচীর পুরু হয় এবং কিডনির হ্মতি হয়।
৬. অথেরোস্ক্লেরোসিস -
ফাস্ট ফুড জাতীয় খাদ্যের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে কোলেস্টেরল এবং লবন থাকে যা হৃৎ স্বাস্থ্যের মধ্যে সমস্যা তৈরি করে। একটি গবেষণা প্রমান দিয়েছে শরীরের অতিরিক্ত সোডিয়াম প্রবেশের ফলে রক্তচাপের ওপর হ্মতিকর প্রভাব পড়ে। রক্তচাপের সমস্যা এবং করোনারি আর্টারির অভ্যন্তরের সমস্যার কারণে অথেরোস্ক্লেরোসিস হয়ে থাকে।
৭. পেপটিক আলসার -
পেপটিক আলসারকে আবার PUD(Peptic Ulser Disease) বলা হয়ে থাকে।এটি একটি সাধারণ আলসার যা গ্যাসট্রোইন্টেসটাইনাল ট্রাকে হ্মতিকর প্রভাব ফেলে।এটা খুব যন্ত্রনাদায়ক ও অস্বাভাবিক স্বাস্থ্য সমস্যা।এই রোগ সাধারণত ফাস্টফুড খাবার নেওয়ার জন্যই হয়ে থাকে।যেমন পিজ্জা,চিপস ইত্যাদি।
৮. হ্মুধামন্দা -
প্রতিনিয়ত ফাস্টফুড জাতীয় খাদ্য গ্ৰহণ করলে হ্মুধামন্দা লহ্ম করা যায়।এটি সাধারণত ব্যক্তির পরিপাকতন্ত্রের কার্য প্রতিবদ্ধকতার ফল।এই জাতীয় খাবার অনেক সময় ব্যক্তির পরিপাক প্রনালীর ভারসাম্য নষ্ট করে দেয়।
৯. প্রয়োজনীয় দৈহিক পুষ্টির অভাব -
ব্যক্তির স্বাস্থ্য উপযোগী খাদ্য সেগুলিই যে খাবার গুলির মধ্যে পুষ্টিগত সমস্ত উপাদান উপস্থিত থাকে।যেখানে ফাস্টফুড জাতীয় খাবার গুলিতে কিছু উপাদান প্রচুর পরিমাণে থাকে, আবার কিছু উপাদান একেবারেই অনুপস্থিত এবং ব্যক্তির শরীরে খাদ্যবস্তু থেকে প্রাপ্তির প্রয়োজনীয় উপাদান গুলির সাম্যতা বজায় বা পূরণ না হলে শরীরের স্বাভাবিক কার্যে ব্যাঘাত ঘটে।
১০. শ্বসনতন্ত্র জনিত সমস্যা -
অত্যাধিক ক্যালোরিয়াযুক্ত খাবার গ্ৰহনের ফলে মানুষ স্থূলতার স্বীকার হয়।স্থূলতার স্বীকার হয়।স্থূলতার ফলে শ্বসনতন্ত্র জনিত বিভিন্ন সমস্যা দেখা যায়।যেমন - Asthma, Shortness of breath প্রভৃতি। বিশেষ করে দৌড়ানো বা হাঁটার সময় শ্বাসকষ্ট লহ্ম করা যায়।
১১. স্মৃতিগত সমস্যা -
অতিরিক্ত ফাস্টফুড জাতীয় খাবার গ্রহণের ফলে উচ্চ চিনি এবং চর্বি গ্ৰহনের ফলে মানুষের মস্তিষ্কের শেখার এবং স্মৃতি গঠনের হ্মমতাকে বাধা দেয়।যখন অল্প বয়সীরা তাদের শিখর স্তরে বিকাশ করছে এবং শিখছে,তখন এই আচরণটি বিশেষভাবে হ্মতি সাধন করে।
১২. বিষন্নতার সৃষ্টি করে -
অতিরিক্ত ফাস্টফুড জাতীয় খাবার খাওয়া মানুষের মস্তিষ্কের উপর রাসায়নিক মেকআপ কে পরিবর্তন করে। ফলস্বরূপ মানুষের শরীর এই অস্বাস্থ্যকর খাবারের উপর আরও নির্ভরশীল হয়ে ওঠে তাদের প্রতি ব্যক্তিদের আকাঙ্খা বাড়ায়।মানুষদের আসক্তির মতোই প্রত্যাহার লহ্মণ থাকে।যা সাধারণত ব্যক্তির দুঃখের বা বিষন্নতার কারন হতে পারে।
6. ফাস্টফুড খাবার গ্ৰহনে ফলে সৃষ্ট ব্যাধি -
ফাস্টফুড জাতীয় খাবার গ্রহণ দৈনন্দিন অভ্যাসে পরিণত ফলে সেই ব্যক্তিটির নানা মারাত্মক মারণ রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অতিরিক্ত পরিমাণে ফাস্টফুডের ফলে একজন ব্যক্তির মধ্যে যে সমস্ত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়।তা হল -
- হৃদরোগ।
- স্ট্রোক।
- ডায়াবেটিস।
- উচ্চ রক্তচাপ।
- কার্ডিওলাসকুলার।
- অথেরোস্ক্লেরোসিস।
- পরিপাকতন্ত্রের প্রতিবদ্ধকতা।
- পেপটিক আলসার।
- স্থূলতা।
- স্নায়ু বিকল।
- হাঁপানি।
- নিঃশ্বাসের দুর্বলতা।
7. ফাস্টফুড খাবার থেকে প্রতিকার -
বর্তমানে কর্ম ব্যস্ততার জীবনে মানুষ যে হারে ফাস্টফুড জাতীয় অস্বাস্থ্যকর খাবার খাচ্ছে,তার থেকে মানুষদের প্রতিকারের জন্য যে সমস্ত পদহ্মেপ গ্ৰহন করা উচিৎ,তা হল -
১. বিভিন্ন ধরনের ফাস্টফুড খাদ্য পরিত্যাগ করা -
বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট, রাস্তাঘাটে, হোটেলে যে সমস্ত খাদ্য পাওয়া যায়,তাতে সাধারণত প্রচুর পরিমাণে চর্বি, কোলেস্টেরল, শর্করা,সোডিয়াম, ক্যালোরি প্রভৃতি থাকে।এই ধরনের খাদ্য গ্ৰহনের ফলে ব্যক্তির স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে, মানবদেহের ওজন বৃদ্ধি করে এবং নানান ব্যাধির জন্ম দেয়।তাই একটি সুস্থ ও স্বাস্থ্যবান জীবন যাপনের জন্য অবিলম্বে বিভিন্ন ধরনের ফাস্টফুড জাতীয় খাবার,যেমন - চাউমিন, রোল, চপ, পকোড়া, Soft Drinks,Milk Shakes,পিজ্জা, চিপস্ প্রভৃতি খাদ্য বস্তু অধিকমাত্রায় খাওয়া বন্ধ করতে হবে(যদি সম্ভব হয় একেবারে ছেড়ে দিলে ভালো হয়)।
২. সুষম খাদ্যাভ্যাস করা -
ফাস্টফুড জাতীয় খাবার থেকে দূরে থেকে মানব দেহ উপযোগী খাদ্য গ্ৰহন করে সুস্থতা বজায় রাখতে হবে। প্রয়োজনে স্বাস্থ্য সচেতনতা,সুষম খাদ্য সংক্রান্ত ধারনা ও সুস্থ অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।নিম্নে সুস্থ ও স্বাস্থ্যকর একটি সুষম খাদ্য তালিকায় দেওয়া হল।-
Food Groups,Indian Council of Medical Research - 1989
৩. স্বাস্থ্যকর সুপারিশ নীতি -
ফাস্টফুড জাতীয় খাবারের প্রতিকারের জন্য কিছু স্বাস্থ্যকর সুপারিশ নীতি গ্ৰহণ করা হয়েছে।যথা -
- ভারতীয় হার্ট অ্যাসোসিয়েশন (The Indian Heart Association) ব্যক্তির দৈনিক অনাধিক 2 গ্ৰাম ট্রান্স ফ্যাট এবং অনাধিক 16 গ্ৰাম সম্পৃক্ত ফ্যাট গ্ৰহনের জন্য পরামর্শ দিয়েছে।
- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকার তাদের খাদ্য তালিকাগত নির্দেশিকায় উল্লেখ করা হয়েছে যে দৈনিক অনাধিক 2300 মিলিগ্ৰাম সোডিয়াম ,যা 1 চা চামচ লবনের সমান গ্ৰহন করা যেতে পারে।
- ভারতীয় হার্ট অ্যাসোসিয়েশন মহিলাদের জন্য দৈনিক অনাধিক 25 গ্ৰাম শর্করা এবং পুরুষদের জন্য দৈনিক অনাধিক 38 গ্ৰাম শর্করা গ্ৰহনের পরামর্শ দিয়েছে। শুধুমাত্র বিশেষ অনুষ্ঠানে ফাস্টফুড খাওয়া যেতে পারে,তবে সেখানে স্বাস্থ্যসম্মত বিকল্প খাবার খেতে হবে।যেমন স্যালাত, শর্করা ছাড়া পানীয় এবং না ভাজা খাবার ইত্যাদি। সুতরাং খাদ্য সংক্রান্ত বিপজ্জনক স্বাস্থ্য পরিনতি এড়াতে স্বাস্থ্যকর বিকল্প খাবারের প্রতি মনোযোগ দিতে হবে,তবেই ব্যক্তিদের বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পেতে পারব।
৪. যোগা বিদ্যা ও শরীরচর্চা করা -
যে সমস্ত ব্যক্তি অধিক মাত্রায় ফাস্টফুড জাতীয় খাবার খেয়ে থাকেন, অবিলম্বে সেই ব্যক্তিদের যোগা বিদ্যা ও শরীরচর্চা করা উচিত। প্রতিদিন সকালে বা বিকালে নিয়ম করে হাঁটা বা Working করা উচিৎ।যোগা বিদ্যা অনুশীলন শারীরিক ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং ব্যক্তির সুস্থ ও স্বাস্থ্যবান জীবন যাপনের পহ্মে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
৫. পানীয় জল পান করা -
অতিরিক্ত ফাস্টফুড জাতীয় খাবার খাওয়া ফলে ব্যক্তির মধ্যে স্থূলতার স্বীকার হয়।তাই প্রতিদিন পরিমাণে পানীয় জল পান করলে বেশি বেশি অস্বাস্থ্যকর খাদ্যের যে প্রবণতা তা লোপ পায়, যা স্থূলতার নিয়ন্ত্রনে সাহায্যে করে।
৬. সচেতনতা বোধ -
আমাদের সমাজে এখনো অনেক ব্যক্তি আছে,যারা প্রতিদিন যা যা খাদ্য খাও তা কি পুষ্টিকর না অপুষ্টিকর তা সেই নিজেও জানে না। অতিরিক্ত ফাস্টফুড জাতীয় খাবার গ্রহণ করে থাকে এবং স্থূলতা ও নানান ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়।নিজে নিজে ডাক্তারি না করে,একজন বিশেষজ্ঞ dietician এর কাছ থেকে পরামর্শ অনুযায়ী দৈনন্দিন দিনে একটি নির্দিষ্ট সুষম খাদ্য তালিকায় তৈরি করে তা পালন উচিৎ।
৭. সুস্থ জীবনযাপন করা -
যে সমস্ত ব্যক্তিরা ফাস্টফুড অতিরিক্ত খায়, সেই সমস্ত ব্যক্তিদের জীবনযাপন মূলত অস্বাস্থ্যকর।তাই সেই সমস্ত ব্যক্তিদের সুস্থ জীবন যাপন করবার জন্য একটি তালিকা তৈরি করা উচিত।যেমন প্রতিদিন নিয়ম করে শরীরচর্চা বা ব্যায়াম করা, একটি নির্দিষ্ট সময় পায়ে হাঁটা,স্যালাড, শর্করা ছাড়া পানীয় এবং না ভাজা খাবার খাওয়া, স্বাস্থ্যকর বিকল্প খাবারের প্রতি মনোযোগ দেওয়া।যা চিহ্নিত করে একটি ব্যক্তির একটি সুস্থ জীবন যাপনকে।
8. উপসংহার -
এই কথা সত্যি যে একটি মানুষের জীবন অত্যন্ত মূল্যবান সম্পদ। বর্তমানে একদিকে প্রযুক্তির উন্নতির ফলে মানুষেরা ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। কর্ম ব্যস্ততা এবং সময়ের অভাব জন্য প্রতিনিয়ত ফাস্টফুড জাতীয় খাবার গ্রহণ করে চলেছে। মানুষের জীবনযাপনের হয়ে উঠেছে অস্বাস্থ্যকর।তাই প্রতিটি মানুষের উচিৎ পুষ্টিকর এবং স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া এবং জীবন যাপন করা।যদি প্রতিটি মানুষ নিয়মিত সুষম খাদ্য গ্রহণ করে এবং নিয়মিত শরীরচর্চা করে তাহলে মানুষের জীবন হয়ে ওঠবে সুস্থ ও স্বাস্থ্যকর।
CLICK HERE -
Assignment Questions -
1.ফাস্টফুড বলতে কী বোঝায়।||What Is Fast Food?
2. ফাস্টফুডের খাদ্য গ্ৰহনের ফলে মানব জাতির উপর কী কী প্রভাব পড়ে,তা বর্ণনা কর।||Describe The Effects Of Fast Food Consumption On The Human Life.
3. ফাস্টফুড খাদ্য থেকে প্রতিকারের উপায় গুলি কি কি।||What Are The Remedies For Fast Food.