সুস্থায়ী উন্নয়ন || Sustainable Development

সুস্থায়ী উন্নয়ন || Sustainable Development

সুস্থায়ী উন্নয়ন||Sustainable Development

BENGALI VERSION||ENGLISH VERSION

সুস্থায়ী উন্নয়ন || Sustainable Development
সুস্থায়ী উন্নয়ন || Sustainable Development

Assignment Questions -

1. সুস্থায়ী উন্নয়ন সংহ্মিপ্ত বর্ণনা কর।||Shortly Discuss About Sustainable Development.

2. সুস্থায়ী উন্নয়নের গৃহিত নীতি এবং পদহ্মেপ গুলি বর্ণনা কর।||Discuss About The Principles And Processes Of Sustainable Development.

সুস্থায়ী উন্নয়ন||Sustainable Development

BENGALI VERSION -

(ENGLISH VERSION FILE BELOW THE ARTICLE BY PDF FORMAT)

1. সুস্থায়ী উন্নয়নের ধারনা -

প্রকৃতি ও মানুষের আলোচনায় মানুষের অর্থনৈতিক জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রের সমীক্ষা করা হয়।এখানে পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের অর্থনৈতিক জীবনের গতি প্রকৃতি ও মানব উন্নয়ন বিষয়ক ধারণাটি অতি গুরুত্বপূর্ণ।এই পরিপ্রেক্ষিতে সমকালীন উন্নয়নের বিভিন্ন ধারণায় সুস্থায়ী উন্নয়ন ধারনাটি বিশেষভাবে আলোচিত হয়।সুস্থায়ী উন্নয়ন হল পরিবেশ ও সম্পদ উপলব্ধির মধ্যে সমন্বয় সাধনকারী একটি আধুনিক পরিবেশ ভিত্তিক ধারণা।একে 'স্থিতিশীল উন্নয়ন' বা 'ধারণা যোগ্য উন্নয়ন' বা 'সুস্থায়ী উন্নয়ন' বলা হয়।ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (IIED) এর প্রতিষ্ঠাতা এভা বেলফোর প্রথম "সাসটেনেবল ডেভেলপমেন্ট" শব্দটি ব্যবহার করেন। অর্থাৎ সুস্থায়ী উন্নয়ন হল প্রাকৃতিক পরিবেশের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এক দীর্ঘমেয়াদি,সামগ্রিক ও বাস্তব উন্নয়ন ব্যবস্থা।এর মাধ্যমে মানুষের সার্বিক আর্থ - সামাজিক উন্নতি সম্ভব বলে মনে করা হয়।দারিদ্র্য,শিক্ষা,বুভুক্ষা প্রভৃতি আর্থ - সামাজিক থেকে মানুষকে মুক্ত করাই এই পরিকল্পনার উদ্দেশ্য।প্রকৃতপহ্মে এ জাতীয় পরিকল্পনার সাহায্যে সম্পদের আহরণ, উৎপাদন ও ব্যবহার পরিবেশ অনুসারী হয়।সুস্থায়ী উন্নয়নের জন্য দরকার একাধারে প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য রহমান করা এবং অন্যদিকে প্রকৃত অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নতির জন্য দায়িত্বশীল পরিকল্পনা গ্ৰহন ও সেই পরিকল্পনা রূপায়নের জন্য জনগনের যথাযথ প্রচেষ্টা।

2. সুস্থায়ী উন্নয়নের সংজ্ঞা -

১. সুস্থায়ী উন্নয়ন সম্বন্ধে প্রথম বলেন Allen (1980)। তিনি তাঁর The World Conservation Strategy পুস্তকে সুস্থায়ী উন্নয়নের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলেছেন,"উন্নয়ন হচ্ছে মানুষের জীবনের গুনগত মানের এবং মানুষের চাহিদার স্থায়ী সন্তুষ্টি অর্জনের ব্যবস্থা করা।"

২. Earnest Simonis Euco (1983) এর মতে "সুস্থায়ী উন্নয়ন বলতে সেই উন্নয়ন প্রকল্পকে বোঝায়,যার মাধ্যমে দীর্ঘকাল যাবৎ প্রাকৃতিক গুনগত মান ও কার্যকারিতা অহ্মুন্ন রেখে সর্বাধিক অর্থনৈতিক সুবিধা আদায় করা যায়।"

৩. Robert Repetto তাঁর Global Possible পুস্তকে (1886) বলেছেন,"সুস্থায়ী উন্নয়ন বলতে সেই সময় উন্নয়ন পরিকল্পনাকে বোঝায়,যা দীর্ঘকাল স্থায়ী সম্পত্তি ও প্রকৃতিদত্ত সৃষ্টি ও উন্নয়নের জন্য সবধরনের প্রাকৃতিক ও মানবীয় সম্পদ গুলির এবং অর্থনৈতিক ও ভৌত সম্পত্তির সঠিক পরিচালনা করে।

৪. World Commission On Environment And Development (WCED) 1983 সালে রাষ্ট্রসংঘ দ্বারা গঠন করে।Gro. Harlem Brundtland ছিলেন WCED এর সভাপতি। তাঁর নামানুসারে WCED Brundtland Commission নামে পরিচিত লাভ করেছে। Brundtland Commission এর দেওয়া সংজ্ঞা অনুসারে "ভবিষ্যৎ প্রজন্মের প্রয়োজন মেটানোর হ্মেত্রে কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করে, বর্তমান প্রজন্মের চাহিদা মেটানোর জন্য যে পরিকল্পনা গ্ৰহন করা হয়,তাকে সুস্থায়ী উন্নয়ন বলে।"

৫. Dictionary Of Geography তে বলা হয়েছে সুস্থায়ী উন্নয়ন হল উন্নয়নের এমন একটি ধারা যার ভিত্তি সম্পদের সুবিবেচনা প্রসূত ব্যবস্থাপনা।যার ফলে দীর্ঘস্থায়ী সাফল্য আসে।

৬. Dictionary Of Ecology তে বলা হয়েছে,সুস্থায়ী উন্নয়ন হল অর্থনৈতিক উন্নয়ন যা অর্থনৈতিক কার্যাবলীর পরিবেশগত পরিণতির পূর্ণ বিবেচনা করে এবং সেইসব সম্পদের ব্যবহারের উপর ভিত্তি করে যা প্রতিস্থাপন যোগ্য ও পুনর্ভব। সুতরাং সেগুলির বিনাশ হয় না।

3. সুস্থায়ী উন্নয়নের পরিবেশগত গুরুত্ব -

World Commission On Environment And Development (WCED) 1983 সালে রাষ্ট্রসংঘ দ্বারা গঠন করে।Gro. Harlem Brundtland ছিলেন WCED এর সভাপতি। তাঁর নামানুসারে WCED Brundtland Commission নামে পরিচিত লাভ করেছে।1987 খ্রিস্টাব্দে এই কমিশন "Our Common Future" শিরোনামে তার প্রথম রিপোর্ট পেশ করে।এই রিপোর্টে পাঁচটি বিষয়ের উপর উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়।এই বিষয়গুলি হল -

  • মানুষের সামাজিক বিকাশ।
  • মানবজাতির অর্থনৈতিক শ্রীবৃদ্ধি।
  • মানব সংস্কৃতির সমৃদ্ধি।
  • পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের সুরহ্মার জন্য বাস্তুতন্ত্রের ক্রমোন্নতি।
  • ভৌগোলিক অবস্থার উন্নয়ন।
বস্তুত, সম্পদের আহরণ,ব্যবহার, জোগান, উৎপাদন, বিনিময় ও স্থায়িত্বকে সুরহ্মিত করার জন্য সুস্থায়ী উন্নয়নের পথ অনুসরণ করা দরকার।সুস্থায়ী উন্নয়নের পরিবেশগত বিভিন্ন গুরুত্ব রয়েছে,সেই গুলি হল।-
  • অতিরিক্ত চাহিদা থেকে মুক্তির জন্য প্রয়োজন প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রেখে আর্থ সামাজিক উন্নতি করা।
  • উদ্ভিদ, পশুপাখি ও মানুষ একে অপরের সঙ্গে সামঞ্জস্য বজায় রেখে বেঁচে থাকতে পারে।
  • সম্পদকে বিজ্ঞানসম্মত ভাবে সংরহ্মন করা।
  • পরিবেশের বৈশিষ্ট্য অনুসারে যেন উন্নয়নের জন্য পরিকল্পনা করা হয়।
  • পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ করা।
  • জনসংখ্যা যেন উন্নয়নের পথে অন্তরায় না হয়।
  • সামাজিক সাম্য প্রতিষ্ঠা যেন সুনিশ্চিত করা।

4. সুস্থায়ী উন্নয়নের নীতি ও পদহ্মেপ -

ক. নীতি - 

1989 খ্রিস্টাব্দে Coalition for Environmentally Responsible Economics বা CERES দশটি মূলনীতি নির্ধারণ করে।এগুলি হল -

১. জীবমন্ডলের সুরহ্মা - 

বাতাস,জল,ভূমি বা তার অধিবাসীদের পরিবেশের হ্মতি করে এমন কোনও দূষণকারী পদার্থ নির্গমন করা চলবে না।নদী-হ্রদ, জলাভূমি,উপকূল অঞ্চল এবং সামুদ্রিক পরিবেশকে অহ্মুন্ন রাখতে হবে এবং পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়ানো,ওজোন স্তরের হ্মতি সাধন,অম্লবৃষ্টি বা ধোঁয়াশা সৃষ্টিকারী পদার্থ কমাতে হবে।

২. প্রাকৃতিক উপকরণের ধারণযোগ্য ব্যবহার -

পুর্নবার ব্যবহারযোগ্য প্রাকৃতিক উপকরণ,তেমন জল,মাটি ও জঙ্গলের ধারণযোগ্য ব্যবহার করতে হবে।যেসব উপকরণ হ্ময়িভূত সেগুলিকে সু পরিকল্পিত ও দহ্মভাবে ব্যবহার করতে হবে।

৩. বর্জ্য পদার্থ কমানো ও সঠিকভাবে ফেলা -

সবরকম বর্জ্য পদার্থের পরিমাণ হ্রাস করা দরকার। বিশেষ করে বিষাক্ত বর্জ্য পদার্থ দায়িত্বশীল ভাবে ফেলা প্রয়োজন।সম্ভবপর হ্মেত্রে বর্জ্য পদার্থ পুর্নবার ব্যবহার করা।

৪. শক্তির সুব্যবহার -

পরিবেশগত ভাবে নিরাপদ এবং ধারনাযোগ্য শক্তির উপকরণ ব্যবহার, উৎপাদন পদ্ধতির সাধনের মাধ্যমে শক্তির দহরম ব্যবহার করা প্রয়োজন।

৫. ঝুঁকি কমানো -

নিরাপদ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে পরিবেশগত,স্বাস্থ্যগত এবং নিরাপত্তার ঝুঁকি কমানো দরকার।

৬. নিরাপদ দ্রব্য ও পরিষেবার বিপনন -

এমন ধরনের দ্রব্য এবং পরিষেবার বিপনন করা উচিত যার পরিবেশগত অভিঘাত ন্যূনতম এবং সাধারণ ভোক্তার কাছে নিরাপদ।

৭. পরিবেশগত হ্মতিপূরণ -

পরিবেশের হ্মতিসাধন করলে সেই হ্মতিপূরণ করে দিতে হবে এবং পরিবেশকে আগের রূপে ফিরিয়ে দেবার দায়িত্ব নিতে হবে।সেইসঙ্গে যত মানুষ হ্মতিগ্ৰস্থ হয়েছেন, তাঁদের হ্মতিপূরণ করতে হবে।

৮. সূচনা -

কিভাবে উৎপাদন প্রক্রিয়া চলছে, তার পরিবেশগত ঝুঁকি কি হতে পারে,স্বাস্থ্যের কি হ্মতি হতে পারে - এসব বিষয় সম্পর্কে আগে থেকে সূচনা দিতে হবে।

৯. পরিবেশগত ব্যবস্থাপক -

প্রতিটি কোম্পানিতে অন্ততপহ্মে একজন ব্যবস্থাপক পরিবেশগত দিকগুলির বিষয়ে দায়িত্ব নেবেন।

১০. মূল্যায়ন ও বাৎসরিক হিসাব -

প্রতিটি কোম্পানি প্রতিবছর নিয়ম করে তাদের কাজকর্মের পরিবেশগত মূল্যায়ন ও বাৎসরিক হিসাব দাখিল করবেন।

সুস্থায়ী উন্নয়ন কার্যকর করার জন্য 1992 সালে ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরো শহরে "Earth Summit" নামক অধিবেশনে যে যে বিস্তারিত নীতি গৃহিত হয়, সেগুলি হল -

  • পরিবেশের ভারসাম্যতা বজায় রাখতে হবে। বনভূমির নবীকরণ,ভূমিহ্ময় নিবারণ ও দূষণ রোধ করার উপর গুরুত্ব দিতে হবে।
  • স্বল্প জন্মহার মৃত্যু হারের মাধ্যমে সারা পৃথিবীর জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
  • শক্তি সম্পদ ব্যবহারের হ্মেত্রে দহ্মতা বাড়াতে হবে,অপচয় রোধ করে পূর্নভব সম্পদগুলি যেমন - জল, বাতাস, সৌরশক্তি,ভূতাপীয় শক্তি প্রভৃতি ব্যবহারের উপর অধিক গুরুত্ব দিতে হবে।
  • চিরাচরিত অর্থনৈতিক উন্নয়নের পরিবর্তে সুস্থিত উন্নয়নের উপর গুরুত্ব দিতে হবে।
  • গচ্ছিত প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহার কমাতে হবে। অপরদিকে অচিরাচরিত ও পরিবর্ত দ্রব্যের যেমন - পুরাতন কাগজ,স্ক্র্যাপ লোহা,প্লাস্টিক প্রভৃতির পুনব্যবহার করে ব্যবহার বাড়াতে হবে।
  • চাহিদা পূরণের হ্মেত্রে বাস্তব ও বিজ্ঞানসম্মত পদহ্মেপ নিতে হবে।
  • বিশ্বের সকল দেশগুলির মধ্যে রাজনৈতিক সুসম্পর্ক স্থাপন ও বোঝাপড়ার মাধ্যমে পারস্পরিক যোগাযোগের ভিত্তি মজবুত করতে হবে।
  • শ্রম ও দহ্মতার পরিমাণ বৃদ্ধি করতে হবে।
  • আন্তর্জাতিক সুরহ্মা ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে।
  • সম্পদ ও পণ্যের প্রকৃত মূল্য নির্ধারণ করতে হবে।
  • যুদ্ধবিগ্ৰহ বন্ধ করতে হবে। নিরস্ত্রীকরণ ও বিশ্বশান্তির পথ প্রশস্ত করতে হবে।

খ. পদহ্মেপ -

১. সুস্থায়ী উন্নয়নের জন্য পৃথিবীর উন্নতিশীল দেশের গৃহিত পদহ্মেপ -

  • শ্রম নিবিড় অর্থনৈতিক কার্যক্রম চালু করতে হবে,যাতে অধিকাংশ লোক উপার্জনের সুযোগ পায়।ফলে দারিদ্র্যের তীব্রতা হ্রাস পায়।    
  • নারী ও পুরুষের মধ্যে শিক্ষা ও জীবিকার সমান সুযোগ বৃদ্ধি করতে হবে।
  • স্বাস্থ্য সচেতনতা ও পরিচ্ছন্নতা বৃদ্ধির মাধ্যমে মৃত্যুর হার কমাতে হবে।কলেরা, টাইফয়েড প্রভৃতি রোগের প্রাদুর্ভাব কমাতে হবে। 
  • পরিবার পরিকল্পনার মাধ্যমে জন্মহার দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

২. সুস্থায়ী উন্নয়নের জন্য আন্তর্জাতিক স্তরের গৃহীত পদক্ষেপ -

  • সরল আমদানি রপ্তানি নীতির প্রবর্তন করা।
  • উন্নতিশীল দেশগুলিতে শিল্পায়ন ত্বরান্বিত করার জন্য শুল্ক হ্রাস করা।
  • দ্বি পাহ্মিক ও আন্তর্জাতিক স্তরে বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও ঋণদানের মাধ্যমে মূলধনের জোগান করা।
  • দ্বি পাহ্মিক ও আন্তর্জাতিক স্তরে বিভিন্ন পেশার নিযুক্ত দহ্ম মানুষের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ বৃদ্ধির সুযোগ করা।
  • স্বল্প আয়বিশিষ্ট দেশগুলিতে মূলধনের বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য বীমা এবং অন্যান্য আর্থিক পদহ্মেপ গ্ৰহন করা।
  • উন্নতিশীল দেশগুলির আন্তর্জাতিক ঋনের বোঝা কমানোর জন্য সুদের হার পরিবর্তন,অল্প সুদে দীর্ঘমেয়াদি ঋনের ব্যবস্থা প্রভৃতি।

৩. নাগরিক সম্পদের সুস্থায়ী উন্নয়নের জন্য গৃহীত পদক্ষেপ -

  • শিল্প ও প্রশাসনিক প্রতিষ্ঠানগুলির বিকেন্দ্রীকরণ, যার ফলে শহরমুখী মানুষের স্রোত বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে পড়বে।ফলে কোনো একটি শহর বা শহরের কোন একটি বিশেষ এলাকা জনবহুল হয়ে পড়বে না,এবং শহরের পার্শ্ববর্তী গ্রামীণের এলাকাগুলিতে স্বাস্থ্য,শিক্ষা ও পরিবহন প্রভৃতি পরিকাঠামোগত উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব হবে। 
  • শহরাঞ্চলে বেসরকারি জনসেবামূলক প্রতিষ্ঠান গুলিকে উদ্যোগে সমাজসেবামূলক কাজে উৎসাহ দান করা। 
  • পৌর প্রতিষ্ঠানগুলির মাধ্যমে শহর এলাকায় প্রবর্তিত কর কাঠামোর পরিবর্তন এবং নাগরিক সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির জন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলির মাধ্যমে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা। 
৪. জল সম্পদের সুস্থায়ী উন্নয়নের জন্য গৃহীত পদক্ষেপ -

  • জাতীয় স্তরে জল সম্পদের বন্টন ও জোগানের উপর সমীক্ষা করা।
  • ভবিষ্যৎ চাহিদার কথা মনে রেখে জলের জোগান যাতে নির্ভরযোগ্য করা যায়,সেই মতো ব্যবস্থা গ্রহণ করা। 
  • জলের অপচয় বন্ধ করার জন্য জল কর ব্যবস্থার প্রবর্তন করা। 
  • মাটির নিচে জলাধার তৈরি করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা। 
  • ভৌম জলের ব্যবহার বৃদ্ধি করা। 
  • শস্যের প্রয়োজনীয়তা বা চাহিদা অনুসারে জলসেচের ব্যবস্থা করা।
  • আঞ্চলিক ভাবে নিয়ন্ত্রণযোগ্য জলসেচের ব্যবস্থা প্রবর্তন করা। 
  • অতিরিক্ত সার ও কীটনাশক পদার্থের ব্যবহার জাতের জলকে দূষিত না করে, সেদিকে লক্ষ্য রাখা। 
  • সরল,আধুনিক ও উন্নত মানের জল নিকাশি ব্যবস্থার প্রবর্তন করা। 
  • শিল্পজাত আবর্জনা থেকে জল যাতে দূষিত না হয়, সেই দিকে লক্ষ রাখা। 
৫. জীব বৈচিত্র্যের সুস্থায়ী উন্নয়নের জন্য গৃহীত পদক্ষেপ -
  • জীব বৈচিত্র্যের সুরক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক বোঝাপড়া করা। 
  • জীব বৈচিত্র্যকে সুরক্ষিত করতে অভয়ারণ্য গড়ে তোলার ব্যবস্থা করা। দেশের ন্যূনতম 10 টি এলাকাকে এই কাজের জন্য সংরক্ষিত করা।
  • উন্নতিশীল দেশগুলিতে জীববৈচিত্র্য রক্ষার জন্য উন্নত দেশগুলির আর্থিক ও কারিগরি সাহায্য দান করা। 
  • জীববৈচিত্র্যের সুরক্ষার জন্য জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা। 
  • অভয়ারণ্য এলাকার কাছাকাছি বসবাসকারী মানুষ যাতে বনভূমি ধ্বংস না করে,সেই উদ্দেশ্যে জীবিকার সুযোগ বৃদ্ধি করা। 
  • প্রাণী সম্পদের সুরক্ষার উদ্দেশ্যে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক আইনের কঠোর প্রয়োগ করা। 
৬. বন সম্পদের সুস্থায়ী উন্নয়নের জন্য গৃহীত পদক্ষেপ - 
  • বনভূমি হল পূনর্নবীকরণ সম্পদ।নতুন এলাকায় গাছ লাগানোর জন্য সার্বিক প্রচেষ্টা গ্রহণ করা। 
  • ভূমিক্ষয়,বন্যা, ধস প্রভৃতি প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিয়ন্ত্রণ করার উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা। 
  • নিয়ন্ত্রিত পশুচারণ ব্যবস্থার প্রবর্তন করা।
  • বনসম্পদের সুরক্ষার জন্য জনসচেতন বৃদ্ধি করা।
  • জ্বালানির প্রয়োজনে বনভূমি যাতে ধ্বংস না হয়, সেই জন্য ওই এলাকায় অচিরাচরিত জ্বালানির জোগান করা। 
  • দেশীয় ও আন্তর্জাতিক আইনের কঠোর প্রয়োগ করা।
  • সংরক্ষিত বনভূমি গড়ে তোলার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা। 
  • সামাজিক বনসৃজন,কৃষি বনসৃজন প্রভৃতি ক্ষেত্রে অধিকতর গুরুত্ব দান করা। এই ব্যাপারে আন্তর্জাতিক স্তরে বোঝাপড়া ও কারিগরি সাহায্যের বন্দোবস্ত করা। 
৭. কৃষি সম্পদের সুস্থায়ী উন্নয়নের জন্য গৃহীত পদক্ষেপ -
  • নিম্নমানের জমিতে চাষের বন্দোবস্ত না করে ভালো চাষযোগ্য জমিতে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য চেষ্টা করা। 
  • গ্রামীণ পরিকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে কৃষি ও জলসেচ ব্যবস্থার সম্প্রসারণ করা। 
  • মৃত্তিকা সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় পদহ্মেপ গ্ৰহন করা। 
  • অতিরিক্ত পশুচারণ এবং জুম জাতীয় যাযাবরী ধরনের কৃষিকাজ বন্ধের জন্য প্রচেষ্টা করা। 
  • প্রান্তিক জমিতে কৃষি কাজ বন্ধ করা।
  • বহন ক্ষমতা অনুসারে জমির ব্যবহার সংক্রান্ত বৈজ্ঞানিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা। 
  • জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক কৃষি গবেষণা সংস্থা গুলির মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি করা। 
৮. সমুদ্র প্রাণিসম্পদের সুস্থায়ী উন্নয়নের জন্য গৃহীত পদক্ষেপ -
  • বাস্তুতন্ত্রের সংরক্ষণ নীতি অনুসারে মৎস্য ও জলজ প্রাণী সম্পদের বিকাশের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা। 
  • সমুদ্র জল দূষণ রোধের জন্য প্রচেষ্টা এবং জলাভূমি,প্রবাল প্রাচীর প্রভৃতির সংরক্ষণ করা। 
  • উপকূলবর্তী দেশগুলির মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের উন্নয়ন করা।
  • লন্ডন ডাম্পিং কনভেনশন,ইন্টারন্যাশনাল হোয়েলিং কমিশন,ইউ. এস. এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন এজেন্সি,ওশ্যন ডাম্পিং অ্যাডভাইজারি কমিটি প্রভৃতি বেসরকারি সংস্থা গুলির মতো দেশের পরিকল্পনা ব্যবস্থায় অংশ গ্রহণে সক্ষম এমন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান গঠনের জন্য পদক্ষেপ গ্ৰহন করা। 
  • মৎস্য সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা। 
  • সামুদ্রিক প্রাণী সম্পদের বিকাশের জন্য সরকারি ও বেসরকারি স্তরে বৃহদায়তনে পরিকল্পনা গ্রহণ করা,পরিকল্পনার রূপায়নের এবং এই উদ্দেশ্যে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করা। 
৯. শক্তি সম্পদের সুস্থায়ী উন্নয়নের জন্য গৃহীত পদক্ষেপ -
  • শক্তি সংরক্ষণ ও শক্তি সম্পদের উৎপাদনে দক্ষতা বৃদ্ধি করা।
  • সৌরশক্তি,বাতশক্তি, জলবিদ্যুৎ, গোবর গ্যাস প্রভৃতি পুনর্ভব ও পূরণশীল শক্তি গুলির উন্নয়নে ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
  • অযৌক্তিক ও একতরফাভাবে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে খনিজ তেলের দাম যাতে বৃদ্ধি না পায়, সেদিকে তীক্ষ্ণ নজরদারি ব্যবস্থা করা। 
  • শক্তি উৎপাদনের সময় পরিবেশ দূষণের আশঙ্কা থাকলে সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা। 
১০. খনিজ সম্পদের সুস্থায়ী উন্নয়নের জন্য গৃহীত পদক্ষেপ -
  • খনিজ সম্পদের সমীক্ষা ও অপচয় হীন উৎপাদনের জন্য অর্থ বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলির মাধ্যমে মূলধন বিনিয়োগ করা। 
  • খনিজ সম্পদ আমদানিকারক দেশগুলি যাতে একতরফা ভাবে আমদানি শুল্ক বাড়াতে না পারে, সেদিকে নজর রাখার ব্যবস্থা করা। 
  • আন্তর্জাতিক বাজারে খনিজ দ্রব্যের দাম যাতে খুব ওঠানামা না করে, তার জন্য আধুনিক পরিকল্পনা গ্রহণ ও বিদেশি মুদ্রা ভান্ডার গড়ে তোলার ব্যবস্থা করা। 
  • বিশ্বের উন্নতিশীল দেশগুলিতে খনিজ সম্পদের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য আমদানিকৃত যন্ত্রপাতির উপর শুল্ক মকুব ও কর হ্রাস প্রভৃতি ব্যবস্থা গ্রহণ করা। 
  • পরিত্যক্ত খনি গুলি থেকে যাতে পরিবেশ দূষণ না ঘটে,সে ব্যাপারে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
  • পরিত্যক্ত অব্যবহৃত খনি অঞ্চল গুলিকে বনসৃজন, প্রাণীসম্পদ সংরক্ষণ ও পর্যটনের প্রয়োজনে ব্যবহার করার প্রচেষ্টা করা।
১১. সুস্থায়ী উন্নয়নের ব্যবস্থা পর্যালোচনার জন্য গৃহীত পদক্ষেপ -
  • পরিবেশ ও বাস্তুতন্ত্রের বিভিন্ন সূচক গুলিকে চিহ্নিত করা।যেমন জলবায়ু পরিবর্তন, জৈববৈচিত্র্যর পরিবর্তন, জমির ব্যবহারগত পরিবর্তন ইত্যাদি ব্যাপারে নজর দেওয়া। 
  • G.I.S. বা জিওগ্রাফিক্যাল ইনফরমেশন সিস্টেম ব্যবস্থা গড়ে তোলা।
  • GEMS or Global Environmental Monitoring System অর্থাৎ আন্তর্জাতিক স্তরে পরিবেশ সংক্রান্ত নজরদারি ব্যবস্থা গড়ে তোলা। 
  • সারা পৃথিবীর সব দেশ গুলির মধ্যে সহযোগিতার বাতাবরণ গড়ে তুলে তথ্য আদান-প্রদান ও বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের কাজ জোরদার করা, যার ফলে বন্যা,ধস,ভূমিকম্প,অগ্ন্যুৎপাত,দাবানল,ঝড় প্রভৃতি বিপর্যয় গুলির পূর্বাভাস দেওয়া যায় এবং যথাযথভাবে মোকাবিলা করা যায়। 
১২. জনসাধারণের গৃহীত পদক্ষেপ -
  • শিক্ষা সর্বোচ্চ প্রসার ও জনসচেতনতা গড়ে তোলার জন্য নিরলস প্রচেষ্টা চালান।
  • পরিবেশ সংক্রান্ত বিষয়ে সমাজের প্রতিটি সমাজে প্রতিটি স্তরে মানুষের স্বচ্ছ ধারণার সৃষ্টি। 
  • প্রতিটি পরিকল্পনা বা প্রকল্পের জন্য E.I.A. (Environmental Impact Assessment) বা  পরিবেশের উপর প্রভাব ও সামাজিক আয়-ব্যয়ের হিসাব করা। 
  • সুস্থ জীবনের প্রতিবন্ধকতা গুলি দূর করা। 
  • আন্তর্জাতিক স্তরে বিশেষত উন্নয়নশীল দেশ গুলিতে বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য রাজনৈতিক ও পরিবেশগত সুস্থিরতা তৈরি করা।
  • প্রাকৃতিক বিপর্যয় গুলি নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রকল্প রূপায়ণ করা। 
  • সন্ত্রাসবাদ মুক্ত পৃথিবী গড়ে তোলার জন্য সার্বিক প্রয়াস করা।
CLICK HERE -

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post