সময় তালিকা||Time Table

সময় তালিকা||Time Table

 সময় তালিকা||Time Table

BENGALI VERSION||ENGLISH VERSION.

Time Table (Concept, Classification,Necessity And Construction)
Time Table (Concept, Classification,Necessity And Construction)

Assignment Questions -

1. বিদ্যালয়ের সময় তালিকা সম্পর্কে ধারণা দাও।||Discuss About Time Table in school.

2. বিদ্যালয়ের সময় তালিকার শ্রেনি বিভাগ কর।||Discuss About classification Of Time Table in school.

3. বিদ্যালয়ের সময় তালিকার প্রয়োজনীয়তা কি।||What is Necessary Time Table in school.

4. বিদ্যালয়ের সময় তালিকা গঠনের পদ্ধতি বা নীতি গুলি কি।|| What is The Processing To Construct Time Table in school.

5. "সময় তালিকা হল বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ঘন্টা" এই উক্তিটি তুমি তোমার ভাষার বিচার করো।|| "Time Table Is The Second Clock Of The School" - Justify The Statement With Your Own View.

সময় তালিকা

BENGALI VERSION -

(ENGLISH VERSION FILE BELOW THE ARTICLE BY PDF FORMAT)

1. ভূমিকা -

সময় তালিকা হল একটি পূর্ব পরিকল্পনা,যার মাধ্যমে বিদ্যালয়ে বহুমুখী কাজ পরিচালনা করা হয়। বিদ্যালয়ের মূল কাজ প্রধানত পাঠ্য বিষয়বস্তু বা পাঠক্রম,শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীর এই তিনটি উপাদানের সক্রিয় সমন্বয়ের মাধ্যমে সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত করা। বিদ্যালয়ের কাজ পরিচালনার জন্য একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা আছে।সুতরাং বলা বাহুল্য প্রাপ্ত সময়ের মধ্যে শিক্ষার তিনটি উপাদানের মধ্যে প্রয়োজনীয় সমন্বয়সাধন আর এই নির্দিষ্ট সময়ের ভিত্তিতে শিক্ষার বিভিন্ন উপাদানের সক্রিয়তা বন্টনের পরিকল্পনাই হল বিদ্যালয়ের সময় তালিকা।

        সময় তালিকাকে এক ধরনের বিবরণ হিসাবে ভাবা যেতে পারে।কারণ বিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত সকল সদস্যদের কাজের বিবরণ থাকে এই সময় তালিকায়, যেমন -বিদ্যালয় কী কী ধরনের কাজ হয় ?,প্রত্যেকটি কাজের সময়সীমা কত ?, কোনো শিক্ষক কখন কোনো কাজ করছেন ?,কোন শিক্ষার্থীরা কখন কি কাজ করছে ?,কোন সময় কোন কক্ষ ব্যবহার করা হচ্ছে? বিশ্রামের সময় কত ? ইত্যাদি যাবতীয় বিবরণ থেকে সময় তালিকা।তাই সময় তালিকাকে অনেক বিদ্যালয়ের হৃদযন্ত্র বা বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ঘড়ি হিসেবে বর্ণনা করেছেন।সুতরাং সময় তালিকা বিদ্যালয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। 

সময় তালিকায় নির্দেশ -

  • বিদ্যালয় দিবসের শুরু থেকে সমাপ্তির সময়।
  • প্রতিটি শ্রেণিকক্ষের প্রতি পর্যায় বা পিরিয়ডের কার্যক্রমকে নিশ্চিত করে।
  • বিষয় এবং তাদের কার্যাবলী নির্দেশ করে।
  • প্রতিটি পিরিয়ডের নির্ধারিত শিহ্মকের নাম এবং তাঁদের প্রত্যেকের নির্দিষ্ট বিষয়।
  • নির্দেশনামূলক কার্যাবলীর সময় পরিসর।
  • প্রতিটি পিরিয়ডের কার্যাবলির প্রকৃতি অর্থাৎ তত্ত্বগত শ্রেণীর বা ব্যবহারিক কার্যাবলী নাকি বহিঃ শ্রেণিমূলক খেলাধূলা সংক্রান্ত কার্যাবলি ইত্যাদি।

2. সময় তালিকার নির্মাণের উদ্দেশ্য -

একটি বিদ্যালয়ের সময় তালিকা গঠনের পেছনে যে সমস্ত উদ্দেশ্যগুলি আছে,সেই গুলি হল - 

  • একটি বিদ্যালয়ের  একটি দিবসের শুরু আর সমাপ্তির সময় নির্দেশ করে। 
  • প্রতিটি শ্রেণির পর্যায় বা পিরিয়ডের কার্য কর্মকে নিশ্চিত করে। 
  • প্রতিটি বিষয় এবং তাদের কার্যাবলীর দিক নির্দেশ করে।
  • প্রতিটি পর্যায়ে বা পিরিয়ডের নির্ধারিত শিক্ষকের নাম এবং তাঁদের প্রত্যেকের নির্দিষ্ট বিষয়কে নির্দেশ করতে সাহায্য করে। 
  • বিদ্যালয়ের নির্দেশনা মূলক কার্যাবলির সময় ব্যবধানকে নির্দেশ করে। 
  • প্রতিটি পর্যায়ে বা পিরিয়ডে কার্যাবলির প্রকৃতি অর্থাৎ তত্ত্বগত শ্রেণী বা ব্যবহারিক কার্যাবলী না কি বহিঃ শ্রেণী মূলক খেলাধুলা সংক্রান্ত কার্যাবলী ইত্যাদি নির্দেশে সহায়তা করে।

3. সময় তালিকার প্রকারভেদ - 

একটি বিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রকৃতির কার্য সম্পাদন করতে হয়।সামগ্রিকভাবে বিদ্যালয়ের বিভিন্ন ধরনের কাজের প্রকৃতির উপর নির্ভর করে সাধারণত তিন ভাগে ভাগ করা যায়।যথা -

১. সাধারণ সময় তালিকা - 

একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সমস্ত শিক্ষক শিক্ষিকা এবং সকল শ্রেণিকক্ষে জন্য যে নির্দেশনামূলক কার্যাবলী জন্য যে তালিকা রচনা করা হয়।তাকে সাধারণ সময় তালিকা বলা হয়।

বৈশিষ্ট্য :-

  1. এই ধরনের সময় তালিকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সমস্ত শিক্ষক শিক্ষিকার এবং সমস্ত শ্রেনীর নির্দেশনা মূলক কার্যক্রমের নির্দেশ থাকে অর্থাৎ সমস্ত শিক্ষকের কাজ একসঙ্গে দেখানো থাকে।
  2. সারা সপ্তাহের প্রতিটি দিনের প্রথম পিরিয়ড থেকে শেষ পিরিয়ড পর্যন্ত একটি সামগ্রিক কর্মসূচির হিসেবে উল্লেখ করা থাকে এই ধরনের সময় তালিকায়।
  3. সময় তালিকায় প্রধান শিক্ষক বা শিক্ষিকা সহ সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকার আবার প্রতিষ্ঠানটির সর্বনিম্ন শ্রেণি থেকে সর্বোচ্চ শ্রেণীর প্রতিটি বিভাগের সুনির্দিষ্ট কর্মসূচির প্রতিফলন এখানে লিপিবদ্ধ করা থাকে।
  4. এটি একটি সুসমন্বিত সামগ্রিক বা একত্রীভূত সময় তালিকা যা অনেক সময় সাধারণ সময় তালিকা হিসেবে বিবেচিত হয়। 

২. শিহ্মক ভিত্তিক সময় তালিকা -

একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বা বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকাদের ভিত্তি করে যে সময় তালিকা রচনা করা হয়,তাকে শিহ্মক ভিত্তিক সময় তালিকা বলে।

বৈশিষ্ট্য : -

  1. এই সময় তালিকায় সামগ্ৰিক ভাবে সমস্ত শিহ্মক ও শিহ্মিকাদের জন্য নির্দিষ্ট কর্মসূচির নির্দেশ করা থাকে।
  2. এই সময় তালিকায় বামদিকে নির্দিষ্ট স্থানে শিহ্মক শিহ্মিকাদের নাম লিপিবদ্ধ করা থাকে।আর ডানদিকে তাঁদের প্রত্যেকের শিহ্মক শিহ্মিকাদের শিখন কর্মসূচির নির্দিষ্ট দায়িত্ব অর্পণ করা থাকে নির্দিষ্ট সময় বা পিরিয়ড ধরে।
  3. প্রধান শিক্ষক বা শিক্ষিকার এবং সহ শিহ্মক /শিহ্মিকার জন্য নির্দিষ্ট কর্ম বন্টনের উল্লেখ থাকে।
  4. এই সময় তালিকায় মাধ্যমে শিহ্মক শিহ্মিকার দৈনন্দিন কতগুলি ক্লাস এবং সারা সপ্তাহের নির্দিষ্ট মোট কতগুলি ক্লাসের হিসেবে করা হয়।
  5. এই ধরনের তালিকায় প্রত্যেক শিহ্মক শিহ্মিকার যেমন তাঁর নির্দিষ্ট কর্মসূচি সম্পর্কে অবহিত করে, দায়িত্ব সচেতন করে তোলে।
  6. এই ধরনের তালিকায় মাধ্যমে প্রধান শিক্ষক বা শিক্ষিকার প্রশাসনিক কাজে বিশেষ করে তত্ত্বাবধানের কাজে বিশেষ ভাবে সহায়কের ভূমিকা পালন করে থাকে।

৩. ব্যক্তিগত সময় তালিকা -

একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিহ্মক বা শিহ্মিকার নিজস্ব মে তালিকা তৈরি করা হয়,তাকে ব্যক্তিগত সময় তালিকা বলে।

বৈশিষ্ট্য :-

  1. সমগ্র প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের জন্য সমস্ত শিহ্মক শিহ্মিকার সময় তালিকার মতো প্রতিটি শিক্ষক বা শিক্ষিকার একটি ব্যক্তিগত সময় তালিকা থাকে।
  2. এই ধরনের সময় তালিকা থেকে শিক্ষক বা শিক্ষিকার তার নিজস্ব ব্যক্তিগত কর্মসূচির পরিচয় পেতে পারেন। 
  3. কোনো একজন শিক্ষক বা শিক্ষিকার সারা সপ্তাহের তাঁর জন্য নির্দিষ্ট ক্লাস গুলির দিন ও সময় ভিত্তিক অবস্থান সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।
  4. সংশ্লিষ্ট শিক্ষক বা শিক্ষিকার নিজস্ব একটি কর্ম পরিকল্পনা তৈরি করতে পারেন,শিহ্মন সংক্রান্ত প্রস্তুতি নিতে পারেন।
  5. এই সময় তালিকার ফলে শিখনের মূল্যায়নের পরিকল্পনা তৈরি করা যায়। 

৩. অস্থায়ী বা অসামরিক সময় তালিকা -

একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আকস্মিক ভাবে বা ঘটনাক্রমে যদি কোনো শিহ্মক বা শিক্ষিকা অনুপস্থিত থাকলে তখন অস্থায়ী ভাবে একটি তালিকা তৈরি করা হয়।তাঁর সাহায্যে এই দিনের কার্য সুচারুভাবে সম্পাদন করা হয়।একে বলা হয় অস্থায়ী বা অসাময়িক সময় তালিকা। 

বৈশিষ্ট্য :-

  1. যদি কোনো দিন কোনো না কোনো শিক্ষক বা শিক্ষিকা অনুপস্থিত থাকেন, তাঁর এই অনুপস্থিতিতে ব্যক্তিগত অথবা প্রতিষ্ঠান গত অথবা পরিস্থিতি গত যে কোনো কারণেই হোক না কেন বা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানটিকে এর জন্য অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়।
  2. এই সমস্ত অনুপস্থিতি শিক্ষক বা শিক্ষিকার জন্য যাতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলা বিঘ্নিত না হয় এবং সংশ্লিষ্ট শ্রেণি গুলির পঠন-পাঠনের কাজ ব্যাহত না হয় তার জন্য তাৎক্ষণিক ভাবে একটি সময় তালিকা প্রস্তুতি প্রস্তুত করতে হয়।
  3. এই সময় তালিকা প্রস্তুতি সময় প্রথমে Provisional Class এর নির্দিষ্ট খাতায় অনুপস্থিতি শিক্ষকদের নাম খাতায় বাম দিকে লেখা হয় এবং সেই দিনের ধার্য ক্লাস এবং বিষয়ে লেখা হয়।
  4. এরপর উপস্থিত শিক্ষক-শিক্ষিকার মধ্যে যার বিষয় বা কম পিরিয়ড আছে এমন কাউকে অনুপস্থিত শিক্ষকের জায়গায় প্রতিস্থাপন করে সেই দিনের সময় তালিকা প্রস্তুত করতে হয়।
  5. এই সময় তালিকা প্রস্তুতি করণ করার প্রয়োজন হয়ে পড়ে কারণ কেউ না কেউ অনুপস্থিত থেকেই যায়।
  6. এই তালিকা প্রস্তুত করার উদ্দেশ্য মূলত শ্রেণি বিশৃঙ্খলা রোধ করা যেতে পাশের শ্রেণিতে পঠন-পাঠনের অসুবিধা সৃষ্টি না হয়।

৪. শ্রেণিভিত্তিক সময় তালিকা -

একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একটি নির্দিষ্ট শ্রেণিকক্ষে পঠনপাঠনে জন্য যে তালিকা তৈরি করা হয়।তাকে শ্রেণিভিত্তিক সযময় তালিকা বলা হয়।

বৈশিষ্ট্য :-

  1. প্রতিদিন কোন বিষয় শ্রেণীতে পড়ানো হবে অথবা কী কর্মসূচি থাকবে তার বিবরণ থাকে এই শ্রেণিভিত্তিক সময় তালিকা। 
  2. প্রত্যেক শ্রেণীর প্রতিদিনের পঠিত বিষয়, শিক্ষকের নাম এবং সময় নির্দেশ থাকে। 
  3. শিক্ষার্থীরা এই ধরনের সময় তালিকা সঙ্গে বেশি পরিচিত।
এছাড়াও আরো তিন ধরনের সময় তালিকা রয়েছে।যথাক্রম -
5. গৃহ কাজ ভিত্তিক সময় তালিকা।
6. সহ পাঠক্রমিক কার্যাবলী সময় তালিকা।
7. খেলা ভিত্তিক সময় তালিকা।

4. সময় তালিকায় প্রয়োজনীয়তা -

একটি বিদ্যালয়ের টাইম টেবিল অতি প্রয়োজনীয়।তাই প্রয়োজনীয়তা হল -

1. অহেতুক পুনরাবৃত্তি বন্ধ করা -

সময় তালিকা অনুযায়ী বিদ্যালয়ের সব কাজ এগিয়ে চললে কোনো কাজের অহেতুক পুনরাবৃত্তি হয় না।শিহ্মক/শিহ্মিকা ও শিহ্মার্থীদের শক্তি অপচয় বন্ধ হয়।

2. সম কর্ম বন্টন করা -

সময় তালিকা অনুসারে কাজ করলে শিহ্মক/শিহ্মিকাদের মধ্যে সমহারে কর্ম বন্টন করা সম্ভব হয়।

3. প্রস্তুতিকরন -

শিহ্মক/শিহ্মিকাদের শিহ্মন কাজ পরিচালনা করার জন্য প্রস্তুত হতে সাহায্যে করে সময় তালিকা।যা শিহ্মক ও শিহ্মিকাদের দায়িত্বশীল বোধ গড়ে তোলেন।কোন সময় কি কাজ করতে হবে তা বুঝতে সাহায্যে করে।সেই অনুসারে তাঁরা প্রস্তুত হয়ে আসতে পারেন।সারা বছর কোনো শ্রেণির জন্য নিজের বিষয়ে কটি পিরিয়ড নির্দিষ্ট আছে তা জেনে শিহ্মক / শিহ্মিকাদের পরিকল্পনা করে শ্রেণিকক্ষের শিক্ষা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন।

4. বিষয়ের প্রতি আনুপাতিক গুরুত্ব বজায় রাখা -

সময় তালিকা পাঠক্রমের বিভিন্ন বিষয় প্রয়োজন মতো বন্টন করে দেয় বলে কোনো বিষয় বাদ পড়ে না। আবার কোনো বিষয়ের পুনরাবৃত্তি রদ করে। অর্থাৎ প্রতিটি বিষয়ের উপর আনুপাতিক গুরুত্ব বজায় রাখা হয়।

5. প্রশাসনিক ও অবেহ্মনের কাজ -

একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের যতজন শিহ্মক ও শিহ্মিকা আছে প্রতিদিনের কর্মসূচির সময় ভিত্তিক নির্দেশ থাকে সময় তালিকা।সেজন্য প্রধান শিক্ষক/শিহ্মিকা  প্রশাসন ও অবেহ্মনের কাজে এই সময় তালিকা বিশেষ সাহায্যে করে।

6. মনোবৈজ্ঞানিক পদ্ধতি গ্ৰহন -

বিদ্যালয়ে দীর্ঘসময় ধরে কাজ করার ফলে অবসাদ,বিরক্তি,একাঘেয়েমি ইত্যাদি মানসিক অবস্থার সৃষ্টি হয়।যা শিখন প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করতে পারে। আদর্শ সময় তালিকা ওই সব অবস্থা বিবেচনা করে প্রস্তুত করা হয়।ফলে শিখন ফলপ্রসূ হতে পারে।

7. নেতৃত্বের প্রভাব -

কাজের প্রকৃতি ও ধরন, প্রতিষ্ঠানের সংস্কৃতি, বিভাগীয় কর্মীদের চাহিদা,সহকর্মীদের প্রভাব কর্মীর ব্যক্তিত্ব ও দহ্মতা ,প্রশাসকের অথবা উর্দ্ধতন ব্যক্তির নেতৃত্বের প্রভাব ইত্যাদি উপাদান কাজে সময়ের ব্যবহারকে প্রভাবিত করে।

8. কর্মের প্রতি অগ্ৰগতি বজায় রাখা -

সময় তালিকাতে পাঠ্য বিষয়বস্তু,শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর এই তিনটি উপাদানের সার্থক সমন্বয়ের মাধ্যমে বিদ্যালয়ের কাজের অগ্রগতি বজায় থাকে।

9. সমস্যার অব্যাহতি রাখা -

শিক্ষকদের যোগ্যতার দিক লহ্ম রেখে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যে শিহ্মা মাপক কর্মসূচিকে যতদূর সম্ভব সমানভাবে সময় তালিকাতে বন্টন করা হয় বলে নানা রকম সমস্যা থেকে অব্যাহতি পাওয়া যায়।

10. নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা -

একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ধরনের কাজের সময়ের ব্যবহারকে প্রভাবিত করে। বিভিন্ন ধরনের কাজের প্রকৃতি ও ধরন প্রতিষ্ঠানের সংস্কৃতি, বিভাগীয় কর্মীদের চাহিদা, সহকর্মীদের প্রভাব,কর্মীর ব্যক্তিত্ব ও দহ্মতা, প্রশাসকের অথবা উধ্বর্তন ব্যক্তির নেতৃত্বের প্রভাব ইত্যাদি উপাদান সময় তালিকার মাধ্যমে কাজের সময়ের ব্যবহারকে প্রভাবিত করে।

11. বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ঘন্টা - 

একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বা বিদ্যালয়ের সময় তালিকা হল বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ঘন্টা। ঘড়ির কাঁটার সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যালয়ের কাজ নির্দিষ্টভাবে এগিয়ে চলে।সময় তালিকা দিকে একবার ভালো করে নজর দিলেই সমস্ত বিদ্যালয়ের কোথায় কি হচ্ছে তার পরিষ্কার চিত্র চোখের সামনে ভেসে ওঠে। সেজন্য সময় তালিকাকে বলা হয় বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ঘন্টা।

6. সময় তালিকার প্রক্রিয়া -

একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বা বিদ্যালয়ের সময় তালিকা রচনার করার জন্য ৪টে প্রক্রিয়া ব্যবহার করা হয়।যথা -
  1. লিপিবদ্ধ করা(Recording)
  2. ব্যবস্থাপনা করা(Managing)
  3. বিশ্লেষণ করা(Analysing)
  4. সংহত করা(Consolidating)
7. সময় তালিকা রচনার নীতি -

সময় তালিকা হল একটি বহুমুখী কাজ এবং এই সময় তালিকা রচনার একটি জটিল কাজ। বিভিন্ন শিহ্মাবিদ ও মনোবিদগন সময় তালিকা রচনার কতকগুলি নীতির কথা উল্লেখ করেছেন। সেগুলি হল -

১. বিদ্যালয়ের ধরন বিবেচনা নীতি -
 
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন ধরনের হতে পারে।যেমন প্রাথমিক বিদ্যালয়,মাধ্যমিক বিদ্যালয়, উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়,গ্ৰামীন বিদ্যালয়,শহুরে বিদ্যালয়, বালকদের জন্য বিদ্যালয়, বালিকাদের জন্য বিদ্যালয় এবং আদর্শ বিদ্যালয়, সাধারণ বিদ্যালয়। এছাড়াও একবেলার বিদ্যালয় ও দুই বেলা বিদ্যালয়। প্রতিটি ক্ষেত্রে দেখা যায় সেখানে সুযোগ সুবিধা,অগ্ৰাধিকার ও কার্যাবলীর তারতম্য ঘটে।তাই প্রতিটি বিদ্যালয়ে পরিচালনা জন্য সময় তালিকায় প্রস্তুতির সময় সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রকৃতি, চাহিদা ও পরিবেশ পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করা উচিৎ।সমস্ত ধরনের বিদ্যালয়ের জন্য একই ধরনের সময় তালিকা হতে হবে তা নয়, কিন্তু একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একটি সময় তালিকা থাকা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

২. ক্লান্তি ও মনোযোগ বিবেচনা নীতি -

মনোবিজ্ঞানীগন ক্লান্তি উৎপাদন হ্মমতা অনুযায়ী বিষয়ের শ্রেণিবিভাগ করেন। বিভিন্ন ঋতুতে ক্লান্তির তারতম্য ঘটে। আবার শিক্ষার্থীদের বয়স, শারীরিক শক্তি,মানসিক প্রবণতা প্রভৃতির সঙ্গে ক্লান্তির নিবিড় সম্পর্ক আছে।ক্লান্তিকর বিষয় গুলি সময় তালিকা যাতে পরপর সন্নিবেশিত না হয় তা দেখা দরকার।এগুলি বিদ্যালয় শুরু হওয়ার পর পর দুটি পিরিয়ডে দেওয়া যেতে পারে যখন শিক্ষার্থীদের মনোযোগ সর্বাধিক থাকে। শেষের দিকের পিরিয়ডের শরীর ও মন ক্লান্ত থাকে।তখন অপেহ্মাকৃত কঠিন বিষয় না রাখাই ভালো। টিফিনের সময় ছেলেমেয়েদের শরীর ও মনের ক্লান্তি দূর হয়।সে কারনে টিফিনের ঠিক পরের পিরিয়ডেই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রাখা হয়।

৩. বিষয় কাঠিন্য ও আপেক্ষিক গুরুত্ব নীতি - 

সময় তালিকা রচনার করার সময় মনে রাখতে হবে কোনো বিষয়ের কাঠিন্য মান কতটা ও আপেক্ষিক গুরুত্ব কতটা,যদিও বিষয়টি কাঠিন্য শিক্ষার্থীদের পরিবর্তিত হয়।তবুও একটি সাধারণ নিয়ম দেখতে পাওয়া যায়। 
   শ্রেণি পঠনে যে বিষয়গুলি অন্তর্ভুক্ত, তাদের কাঠিন্য ক্রম হল - ভাষা,গণিত,বিজ্ঞান,ইতিহাস,ভূগোল,কর্মশিক্ষা শারীর ভিত্তিক শিক্ষা এবং সমাজসেবামূলক কাজ। আবার আপেক্ষিক গুরুত্ব অনুযায়ী আমরা বিষয়গুলির জন্য প্রাপ্ত সময় এভাবে বন্টন করতে পারি।যেমন - ভাষার জন্য 30%,গণিতের জন্য 30%,বিজ্ঞানের জন্য 20%,ইতিহাসের জন্য 7.5%, ভূগোলের জন্য 7.5%,
কর্মশিক্ষা জন্য 5%, শারীর শিক্ষা জন্য 5%, সমাজসেবা জন্য 5%।এই আপেক্ষিক গুরুত্বের নীতিটি অবশ্যই পরিবর্তনশীল।সমাজের চাহিদা,যুগের চাহিদা ও দেশের শিক্ষানীতি অনুযায়ী এগুলি পরিবর্তিত হয়।

৪. বিষয় বৈচিত্র্যের নীতি -

সময় তালিকা রচনার তৃতীয় নীতি হল বিষয় বৈচিত্র্যের নীতি।শিক্ষক/শিহ্মিকা ও শিক্ষার্থীর আগ্ৰহ ধরে রাখার জন্য এবং প্রেষনা সৃষ্টি করার লহ্ম্যে সময় তালিকা মধ্যে বৈচিত্র্য থাকা প্রয়োজনীয়। বৈচিত্র্য রাখতে একদিনে  তালিকাতে বিভিন্ন বিষয়ে অন্তর্ভুক্ত থাকে এবং একই শিক্ষক/শিহ্মিকা যাতে একই শ্রেণীতে পর পর না পড়ান তা দেখা হয়। 

৪. শিহ্মক/শিহ্মিকার উপযুক্ত বিষয়ের নীতি -

একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সময় তালিকা রচনার সময় বিভিন্ন শ্রেনির বিষয় গুলির শিহ্মনের দায়িত্ব এমন শিহ্মক/শিহ্মিকাদের দিতে হবে যেখানে শিহ্মকের/শিহ্মিকার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা এবং অবশ্যই আগ্ৰহ আছে।শিহ্মক/শিহ্মিকার নিজের বিষয়টিতে শিখনের দায়িত্ব নিতে সম্মত থাকলে কাজটি অনেক সহজ হয়।বিষয়গত যোগ্য তার ভিত্তিতে অনেক সময় উপযুক্ত শিহ্মক/শিহ্মিকার অভাব থাকে।সেহ্মেত্রে তাদের সংশ্লিষ্ট বিষয়টিতে পড়ানোর অভিজ্ঞতা এবং আগ্ৰহ থাকলে দায়িত্ব প্রদান করা যেতে পারে। সুতরাং সময় তালিকায় বিভিন্ন শ্রেনিতে বিভিন্ন বিষয়ের শিহরনের দায়িত্ব প্রদানের আগে শিহ্মক/শিহ্মিকার যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা আগ্ৰহ এবং প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনের বিষয় গুলির গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করতে হবে।

৫. পিরিয়ডের ব্যাপ্তিকাল নীতি -

এক একটি পিরিয়ড কতটা সময় ব্যাপী হবে তা চিন্তা করে ঠিক করতে হবে।নিম্ন শ্রেণীর শিশুদের জন্য সময়কাল বেশি করা প্রয়োজনীয়।সব দিক বজায় রেখে একই বিদ্যালয়ে সুষ্ঠুভাবে পাঠ পরিচালনা করতে প্রথম দিকের পিরিয়ড গুলি 40 মিনিট এবং পরের দিকের পিরিয়ড গুলি 35 মিনিট করলে ভারসাম্য বজায় থাকবে।কর্মশিক্ষা ও শারীর শিক্ষার প্রভৃতির জন্য পর পর দুটি পিরিয়ডের কথা মনে রাখতে হবে।

৬. বিরতি নীতি -

সময় তালিকা রচনার করার জন্য একটি মনোবৈজ্ঞানিক চিন্তাভাবনা করে করা হয়েছে।পর পর পিরিয়ড মধ্যে বিরতি অবসাদের কথা মনে রেখে সময় তালিকার বিরতির ব্যবস্থা করা প্রয়োজনীয়।তাই বিদ্যালয়ের সময় তালিকায় দুটি পিরিয়ড হওয়ার পর 10 মিনিটের একটি স্বল্প বিরতি দেওয়া হয়। আবার চতুর্থ পিরিয়ডের পর 30 মিনিটের একটি দীর্ঘ বিরতি রাখা হয়। 

৭. খেলা নীতি - 

পঠনপাঠনের পাশে খেলাকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।তাই খেলাকে অত্যন্ত যত্ন সহকারে বিবেচনা করে সময় তালিকায় স্থান দিতে হবে।দুটি কঠিন বিষয়ের মধ্যবর্তী সময়ে খেলার ক্লাস রাখা যেতে পারে।একই ভাবে সাধারণ বিরতি ছাড়াও হ্মুদ্র পরিসরে বিরতিকে সময় তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা দরকার।প্রতি দুই বা তিনটে ক্লাসের পর দিনের সকালের দিকে বিরতির গুলিকে গুরুত্ব দেওয়া দরকার।
 
৮. সামঞ্জস্য বিধান নীতি -

বিদ্যালয় পরিবেশ,শ্রেণিকক্ষের সংখ্যা,স্থান সংকুলানের ব্যবস্থা,শিহ্মনের জন্য প্রয়োজনীয় শিক্ষা উপকরণ প্রভৃতি ব্যবহারের কথা মনে রেখে সময় তালিকার পরিবর্তনীয় রচনা হওয়া প্রয়োজনীয়। 

৯. নবনীয়তা বা পরিবর্তনশীলতা নীতি - 

একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সময় তালিকা অপরিবর্তনীয় মনে করলে চলবে না।প্রয়োজনের তাগিদে অবশ্যই পরিবর্তন করতে হবে। গ্ৰীষ্মকালে ও শীতকালে পৃথক সময় তালিকা হতেই পারে। কোনো বিষয়ে বেশি এগিয়ে গেলে বা পিছিয়ে পড়লেও সময় তালিকায় পরিবর্তন আনা যায়।সক্রিয়তা ভিত্তিক স্বাধীন পাঠের জন্য সময় তালিকায় পরিবর্তন প্রয়োজনীয়। 

১০. নিরপেক্ষ নীতি -

একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সকল শিক্ষার্থী যাতে শিহরনের পঠনপাঠনে সুযোগ পায়,সেই দিকে লহ্ম্য রেখে সময় তালিকা করতে হবে।গণতান্ত্রিক রীতিতে শিক্ষক/শিহ্মিকা বন্টন, পাঠের সময় বন্টন করা প্রয়োজন। সকল শিক্ষকের/শিহ্মিকার মধ্যে কাজের সমবন্টন ঢ় করা প্রয়োজন।

8. উপসংহার -

পরিশেষে বলা যায় একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সময় তালিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।একটি বিদ্যালয়ের বহুমুখী কার্য পরিচালনার জন্য দরকার একটি সময় তালিকা।এর ভিত্তিতে পাঠক্রম শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর বিদ্যালয়ের একটি দিনের আরম্ভ হয় এবং পরিসমাপ্তি হয়।সময় তালিকার ছাড়া বিদ্যালয়ের কার্য সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা সম্ভব নয়।তাই সময় তালিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় একটি বিদ্যালয়ের।

CLICK HERE -

ENGLISH VERSION PDF FILE

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post