তেজস্ক্রিয় দূষণ||Radioactive Pollution

তেজস্ক্রিয় দূষণ||Radioactive Pollution

তেজস্ক্রিয় দূষণ||Radioactive Pollution

BENGALI VERSION||ENGLISH VERSION

Radioactive Pollution (Concept,Definition, Sources,Causes,effects, Controls,Management,Acts)
Radioactive Pollution

Assignment Questions -

1. তেজস্ক্রিয় দূষণ কি। তেজস্ক্রিয় দূষণের উৎস সম্পর্কে ধারণা দাও।||What is Radioactive Pollution? Give An Idea About The Sources Of Radioactive Contamination.

2. তেজস্ক্রিয় দূষণের কারণ এবং প্রভাব গুলি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বর্ণনা কর।||Briefly Describe The Causes And Effects Of Radioactive Pollution.

3. তেজস্ক্রিয় দূষণ নিয়ন্ত্রণে গৃহীত পদক্ষেপ গুলির সংহ্মিপ্ত বর্ণনা কর। ভারতবর্ষের তেজস্ক্রিয় দূষণ নিয়ন্ত্রণে গৃহীত আইনি পদক্ষেপ গুলি কি কি।||Briefly Describe The Steps Taken To Control Radioactive Contamination. What Are The Legal Measures Taken To Control Radioactive Pollution In India?

তেজস্ক্রিয় দূষণ

BENGALI VERSION

(ENGLISH VERSION FILE BELOW THE ARTICLE BY PDF FORMAT)

1. ভূমিকা -

সৃষ্টির শুরু থেকেই প্রকৃতিতে তেজস্ক্রিয় বিকিরণ রয়েছে। সৌরজগতের থেকে আসা মহাজাগতিক রশ্মি ভূপৃষ্ঠে আপতিত হলে তার থেকে এবং প্রকৃতির বুকে ইউরেনিয়াম, থোরিয়াম, মোনাজাইট প্রভৃতি মৌলের থেকে তেজস্ক্রিয়তা প্রথম থেকেই ছিল।তবে, বর্তমানে কৃত্রিম তেজস্ক্রিয়তার আবিষ্কার, পারমাণবিক অস্ত্রের বিকাশ এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য পারমাণবিক কেন্দ্রের নির্মাণ তেজস্ক্রিয় দূষণকে একেবারে অনিবার্য করে তুলেছে এবং এই দূষণ সমগ্ৰ বিশ্বে আলোচনার এক অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে।পরিবেশের অন্যান্য সকল দূষণের মতো তেজস্ক্রিয় দূষণের হ্মেত্রেও পরিবেশে কোনো অবাঞ্চিত পদার্থের নির্গমন ঘটে এবং এহ্মেত্রে এই অবাঞ্চিত পদার্থ হল তেজস্ক্রিয় দ্রব্য। পরিবেশ জলদূষণ বায়ুদূষণ ও মৃত্তিকা দূষণ ন্যায় এটি একটি অন্যতম দূষণ হলেও জলদূষণ বায়ুদূষণ ও মৃত্তিকা দূষণ সঙ্গে সম্পর্ক যুক্ত। অর্থাৎ তেজস্ক্রিয় বর্জ্য পদার্থের থেকে সৃষ্ট দূষণ জল-বায়ু-মৃত্তিকা সঙ্গে মিশে দূষণ ঘটাছে।

2. তেজস্ক্রিয় দূষণ -

তেজস্ক্রিয় পদার্থের অসচেতনতা মূলক ব্যবহার, প্রক্রিয়াকরণের সময় তেজস্ক্রিয় রশ্মির বিকিরণের ফলে পরিবেশের যে পরিবর্তন হয়,তাকে তেজস্ক্রিয় দূষণ বলে। অর্থাৎ মানুষের হস্তক্ষেপে এবং প্রাকৃতিক উপায়ে পরিবেশে মাত্রাধিক্য তেজস্ক্রিয়তা ঘটাকে তেজস্ক্রিয় দূষণ বলে।ফরাসি বিজ্ঞানী হেনরী ব্যাকারেল সর্বপ্রথম তেজস্ক্রিয়তা আবিষ্কার করেন। তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ গুলি আয়োনিত বিকিরণ ফলে সৃষ্টি হয় এবং পরিবেশে প্রায় 450টি আইসোটোপ দেখা যায়। পারমাণবিক শক্তিকেন্দ্র থেকে নির্গমণ আবর্জনা বা বর্জ্য পদার্থ থেকে তেজস্ক্রিয় উপাদানের সন্ধান পাওয়া যায়।যাদের থেকে তেজস্ক্রিয় বিকিরণ হয়।আর যদি পারমাণবিক শক্তি কেন্দ্রে বিস্ফোরণ হলে তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ে,যার ফলে সৃষ্টি হয় তেজস্ক্রিয় দূষণ। প্রকৃতপক্ষে, প্রাকৃতিক ও মনুষ্যসৃষ্ট কারনে বায়ু,জল এবং সমগ্ৰ পৃথিবীতে তেজস্ক্রিয় পদার্থের নির্গমনকে তেজস্ক্রিয় দূষণ বলে। বর্তমানে তেজস্ক্রিয় দূষণের মাত্রা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে যে হিরোশিমা নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমার বিস্ফোরণ এবং রাশিয়ার চেরনোবিল পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিস্ফোরণ এবং ভারতবর্ষে ভোপাল গ্যাস দুর্ঘটনার ফলে তেজস্ক্রিয় বিকিরণ চারদিকে ছড়িয়ে পড়ায় তেজস্ক্রিয় দূষণ ঘটেছিল।

3. তেজস্ক্রিয় দূষণের উৎস -

তেজস্ক্রিয় দূষণ মূলত তিন প্রকার ভাবে ঘটে থাকে।যথা-

১. প্রাকৃতিক উৎস -

  • মহাশূন্য থেকে ইলেকট্রন,প্রোটন ও কয়েকটি পরমাণু নিউক্লিয়াস প্রায় আলোর বেগে পৃথিবীতে আঘাত হানে। এদেরকে মহাজাগতিক রশ্মি বলে।এই রশ্মি গুলি বৈদ্যুতিক চার্জযুক্ত হয়।এই রশ্মির আইসোটোপান গুলির আয়োনিত বিকিরণের ফলে আলফা,বিটা ও গামা কণায় বিভক্ত হয়।যা প্রাকৃতিকভাবে তেজস্ক্রিয়তা অল্পমাত্রায় বায়ুমণ্ডল ভেদ করে ভূপৃষ্ঠে চলে আসে।সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ভূ-পৃষ্ঠের উচ্চতা যত বেশি হয়,এর মাত্রা ততই বাড়তে থাকে।প্রাকৃতিক উৎসের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে রেডন গ্যাস।এটি বাতাসের থেকে আট গুণ ভারী।এর তিনটি প্রাকৃতিক আইসোটোপ রয়েছে। এগুলি রেডিয়াম, ইউরানিয়াম ও থোরিয়ামের তেজস্ক্রিয়তা থেকে সৃষ্টি হয়।
  • মহাজাগতিক রশ্মি বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের সাথে সাথে এর প্রভাবে স্বল্প মাত্রায় কার্বন-14 ও হাইড্রোজেন-3 উৎপন্ন হয়।যা দ্রুত কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিণত হয় এবং জলে জারিত হয়।আর এই কার্বন-ডাই-অক্সাইড ও জল বায়ুমণ্ডলে ও বারিমন্ডলে প্রবেশ করে।
  • ভূ-ত্বকে বর্তমানে ইউরেনিয়াম ও থোরিয়াম আকরিক থেকে প্রাকৃতিক তেজস্ক্রিয় রশ্মি বিকিরিত হয়। এছাড়াও পটাশিয়াম-40,রুবিডিয়াম-87 থেকে তেজস্ক্রিয়তার সৃষ্টি হয়।
  • এছাড়া প্রাকৃতিকভাবে বিভিন্ন শিলা, সমুদ্র, উদ্ভিদ ও প্রাণী থেকে প্রচুর পরিমাণে রেডিয়াম গ্যাস বায়ুমণ্ডলে রোগ হয়।

২. মনুষ্যসৃষ্ট উৎস -

তেজস্ক্রিয় পদার্থের অন্যতম উৎস হল মনুষ্যসৃষ্ট কারন।যথা -

  • নিউক্লিয়ার চুল্লী
  • পারমাণবিক মারনাস্ত্র কেন্দ্র
  • পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র 
  • শিল্প হ্মেত্রে উৎপাদন বৃদ্ধি ও দ্রব্যের মান যাচাইয়ের জন্য বিভিন্ন কম্পোনেন্ট
  • চিকিৎসার এক্স-রে
  • অন্যান্য বিকিরণ থেরাপি মেশিন

৩. পারিপার্শ্বিক পরিবেশ -

আমাদের চারিপাশের প্রায় প্রত্যেক বস্তু থেকেই কমবেশি বিকিরণ হচ্ছে। আমাদের বাড়িঘর,খাদ্য,পানীয় জল এমনকি আমাদের নিজেদের শরীর থেকে তেজস্ক্রিয় রশ্মির বিকিরণ হচ্ছে।এই বিকিরণ খুবই কম মাত্রায় যা মানুষের জন্য হ্মতিকর নয়।

4. তেজস্ক্রিয় দূষণের কারণ -

  • মহাজাগতিক রশ্মি 
  • নিউক্লিয়ার চুল্লী
  • পারমাণবিক মারনাস্ত্র কেন্দ্র তৈরি
  • পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য
  • শিল্প হ্মেত্রে উৎপাদন বৃদ্ধি ও দ্রব্যের মান যাচাইয়ের জন্য বিভিন্ন কম্পোনেন্ট জন্য
  • চিকিৎসার এক্স-রে
  • অন্যান্য বিকিরণ থেরাপি মেশিন
  • ক্যানসার চিকিৎসায় জন্য
  • পরীহ্মাগার
  • খনি খাত থেকে
  • তেজস্ক্রিয় রাসায়নিক পদার্থের ছিটা
  • পারমাণবিক বর্জ্য হ্যান্ডলিং এবং নিষ্পত্তি
  • পারমাণবিক দুর্ঘটনা

5. তেজস্ক্রিয় বিকিরণের প্রভাব -

তেজস্ক্রিয় বিকিরণের ফলে মানুষ ও প্রকৃতির উপর নানা ধরনের প্রভাব লক্ষ্য করা যায়।যথা -

• মানুষের উপর প্রভাব -

  • বাতাসে ভেসে বেড়ানো তেজস্ক্রিয় পদার্থের কণা ও গ্যাস মানুষের শ্বাসনালীর মধ্যে দিয়ে ফুসফুসের প্রবেশের ফলে হ্মতিগ্ৰস্ত করে।
  • মাতৃগর্ভের শিশুর জীবনের ডি.এন.এ. অনুর মিউটেশন ঘটায়।ফলে মৃত বিকলাঙ্গ শিশুর জন্ম হয়।
  • নারী ও পুরুষের জনন কোষের বিকৃতি ঘটায়।ফলে পরবর্তী প্রজন্মে শিশুর শারীরিক নানা বিকৃতি ঘটতে থাকে।
  • তেজস্ক্রিয় বিকিরণের আলফা কণা সাধারনত মানুষের ত্বকের ভিতরে প্রবেশ করে না।তবে এই কণার উৎস যদি দেহের অভ্যন্তরে থাকে,তবে তা অস্থি এবং ফুসফুসের হ্মতি সাধন করে।
  • তেজস্ক্রিয় বিকিরণের বিটা কণা মানুষের ত্বকের ভিতরে প্রবেশ করলেও টিস্যু গুলির কোনো হ্মতি করে না।তবে ত্বক ও চোখের যথেষ্ট হ্মতিসাধন করে।
  • গামা বিকিরণের মানুষের দেহে অভ্যন্তরে প্রবেশ এবং কোষের গঠনকে বিনষ্ট করে।
  • X- রশ্মির বিকিরণের ফলে মানুষের অস্থি ব্যতীত দেহের অভ্যন্তরস্থ টিস্যু গুলির মধ্য দিয়ে পরিবাহিত হয় এবং কোষের হ্মতি করে থাকে।
  • আয়োডিন-131 এর প্রভাবে মানুষের থাইরয়েডের সমস্যা দেখা যায় এবং সিজিয়াম-137 এর প্রভাবে মানুষের শারীরবৃত্তীয় প্রণালীর বিঘ্নিত হয়।
  • হ্মণস্থায়ী ও তীব্র বিকিরণের প্রভাবে মানুষের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্যানসার ও বিকলাঙ্গতা দেখা যায়

• উদ্ভিদের উপর প্রভাব -

    • উদ্ভিদ UV তরঙ্গের সংস্পর্শ আসার ফলে  স্টোমাটা বাষ্পীভবনে বাধা সৃষ্টি করে।
    • তেজস্ক্রিয় বিকিরণ উদ্ভিদের ক্রোমাজোমে পৌঁছালে উদ্ভিদের প্রজনন হ্মমতা বাধাগ্ৰস্ত পায়।
    • তেজস্ক্রিয় যুক্ত মৃত্তিকাতে জন্মানো যে কোনো উদ্ভিদের দেহে তেজস্ক্রিয় পদার্থ জমা হয়।

    • প্রানীদের উপর প্রভাব -

    • প্রানীদের রেডিয়োনুক্লাইড গুলি তাদের বিপাকীয় চক্র প্রবেশ করে এবং তাদের ডি.এন.এ কে প্রভাবিত করে।

    • পরিবেশ ও বাস্তুতন্ত্রের উপর প্রভাব -

    • তেজস্ক্রিয় বর্জ্যের উপস্থিতিতে মৃত্তিকাকে বিষাক্ত ও অনুর্বর করে তোলে।
    • এই বর্জ্যের উপস্থিতি মৃত্তিকা দূষণের অন্যতম কারণ।
    • তেজস্ক্রিয় দূষণ খাদ্য শৃঙ্খলের মাধ্যমে প্রবাহিত হয়ে হ্মতি সাধন করে। উদাহরণ - উদ্ভিদ - প্রথম শ্রেণীর খাদক - দ্বিতীয় শ্রেণীর খাদক - তৃতীয় শ্রেণীর খাদক।
    • তেজস্ক্রিয় বর্জ্যের পদার্থ জলদূষণ এবং বায়ুদূষণ ঘটাতে সহায়তা করে।
    • বাস্তুতন্ত্রের স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত করে।
    • তেজস্ক্রিয় দূষণের ফলে পরিবেশের উপর একটি দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব লহ্ম করা যায়।

    6. তেজস্ক্রিয় বর্জ্যের পদার্থের ব্যবস্থাপনা -

    তেজস্ক্রিয় বিকিরণ লহ্মাধিক বছর ধরে পরিবেশে দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার, তেজস্ক্রিয় দূষণের প্রভাব যথেষ্ট সুদূরপ্রসারী হয়ে থাকে।এই পরিপ্রেক্ষিতে তেজস্ক্রিয় বর্জ্যের উপযুক্ত ব্যবস্থাপনার জন্য যথাযথ মূল্যায়ন ও গবেষণার উদ্যোগ গ্ৰহন করা প্রয়োজন,যাতে তেজস্ক্রিয় দূষণের প্রভাব কিছুটা অন্তত হ্রাস পায়।এই তেজস্ক্রিয় বর্জ্যের ব্যবস্থাপনার জন্য নিম্নলিখিত চারটি পদ্ধতির প্রয়োগ করা যেতে পারে।-

    1. Geological Disposal -

    এহ্মেত্রে ভূগর্ভে 1000 মিটার গভীর সুড়ঙ্গ খনন করা হয় ও তার নীচে থাকে এমন কিছু কহ্ম, সেখানে তেজস্ক্রিয় বর্জ্য পদার্থ গুলিকে সঞ্চয় করা হয় এবং যতহ্মণ পর্যন্ত এগুলি অবহ্ময়িত না হয়,ততহ্মণ পর্যন্ত ওই কহ্মের মধ্যে বর্জ্য সঞ্চিত অবস্থায় থাকে।1993 সালের আগে মহাসাগর গুলিতে তেজস্ক্রিয় বর্জ্য ডাম্পিং করা হতো,তবে এই ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। 

    2. Transmutation -

    Transmutation প্রক্রিয়ায় তেজস্ক্রিয় বর্জ্য পদার্থ গুলির হ্মতিকারক প্রস্তুত করে সেগুলিকে ব্যবহারের উপযোগী করে তোলা হয়।এটি তেজস্ক্রিয় বর্জ্যের ব্যবস্থাপনার হ্মেত্রে সর্বাপেক্ষা পরিবেশ মিত্র একটি পদ্ধতি,তবে এই পদ্ধতিটি অত্যন্ত ব্যয়বহুল হওয়ায় এর প্রয়োগ অপেক্ষাকৃত কম হয়ে থাকে।

    3. Reuse Of Radioactive Waste -

    তেজস্ক্রিয় বর্জ্যের পুনর্ব্যবহারও এমন একটি পরিবেশ মিত্র পদ্ধতি যার মাধ্যমে পরিবেশে তেজস্ক্রিয় বর্জ্যের পরিমাণ হ্রাস পায়। বিশেষ কিছু তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ,যেমন Strontium-90 এবং Caesium-137 এর বিভিন্ন শিল্পে পুনর্ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

    4. Space Disposal -

    সাধারনত তেজস্ক্রিয় দূষণের মাত্রা হ্রাসের উদ্দেশ্যে স্পেস ডিসপোজাল পদ্ধতির ব্যবহার করা হয় না,কারণ এই পদ্ধতির প্রয়োগের হ্মেত্রে যথেষ্ট সমস্যার সম্ভাবনা থাকে।যেমন - রকেট উৎহ্মেপনের সময় কোনো যান্ত্রিক ক্রটি ঘটলে প্রচুর পরিমাণে তেজস্ক্রিয় পদার্থ বায়ুমণ্ডলে হয়,যা উৎহ্মেপনের স্থান থেকে কয়েক হাজার কিলোমিটারের মধ্যে বসবাসকারী মানুষের স্বাস্থ্যের বিরুপ প্রভাব বিস্তার করে।তাই ভবিষ্যতে এই পদ্ধতিকে কার্যকরী করে তোলা সম্ভব হলেও, বর্তমানে প্রয়োগ করা হয় না।

    7. তেজস্ক্রিয় দূষণের নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা -

    নিম্নলিখিত বিভিন্ন পদ্ধতিগুলি প্রয়োগের মাধ্যমে প্রাকৃতিক ও কৃত্রিম বিকিরণের প্রভাবের মাত্রা কিছুটা হ্রাস পায়।তবে এই পদ্ধতিগুলির কিছু সীমাবদ্ধতা আছে,কারণ এর মাধ্যমে সম্পূর্ণ রূপে তেজস্ক্রিয় দূষণের নিয়ন্ত্রন সম্ভব।-

    1. বায়ুমণ্ডলে পারমাণবিক পরীক্ষামূলক বিস্ফোরণ ঘটানো বন্ধ করতে হবে।
    2. নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টর থেকে তেজস্ক্রিয় বিকিরণের নির্গমন বন্ধ করার জন্য Closed Cycle Coolant System ব্যবহার করা উচিৎ।
    3. তেজস্ক্রিয় বর্জ্যের অপসারণ যথেষ্ট সচেতনভাবে বৈজ্ঞানিক উপায়ে করা প্রয়োজন,যাতে পরিবেশ দূষণের মাত্রা হ্রাস পায়।
    4. বিশেষ প্রয়োজনীয় হ্মেত্র ছাড়া রেডিয়ো আইসোটোপের উৎপাদন এবং ব্যবহার যতটা সম্ভব হ্রাস করা প্রয়োজন। কারণ রেডিয়ো আইসোটোপ উৎপন্ন হওয়ার পর সেগুলিকে ধ্বংস করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে।
    5. তেজস্ক্রিয় দূষকের নির্গমন নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের সংখ্যা কমানো প্রয়োজন। নতুন পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের আগে কেন্দ্রটির জন্য স্থান নির্বাচন, কেন্দ্রটির কর্মপদ্ধতি উৎপন্ন পদার্থ অপসারণের স্থান ও প্রক্রিয়া প্রভৃতি সম্পর্কে যথাযথ সমীক্ষা করা উচিৎ।
    6. Radionuclides মিশ্রিত শিল্পজাত বর্জ্য যথাযথ উপায়ে অপসারণ (যেমন - নির্মিত ট্যাঙ্কের মধ্যে অপসারণ করা যেতে পারে) করতে হবে।
    7. ফিশন বিক্রিয়ার মাত্রা হ্রাস করা প্রয়োজন।
    8. পারমাণবিক খনিতে তেজস্ক্রিয় দূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য Wet Drilling পদ্ধতির ব্যবহার করতে হবে।
    9. যেসব কর্মহ্মেত্রে তেজস্ক্রিয় নির্গমনের সম্ভাবনা আছে, সেখানে উঁচু চিমনি এবং উপযুক্ত বায়ু সঞ্চালনের থাকা আবশ্যক।
    10. যেসব অঞ্চলে ভূগর্ভে রেডন নির্গমনের সম্ভাবনা রয়েছে, সেখানে রেডনের কেন্দ্রীভবনের বিষয়টি নিরীহ্মণ করা এবং রেডনের নির্গমন নিয়ন্ত্রণের জন্য ঘরবাড়ি গুলিতে যথাযথ সুরহ্মামূলক ব্যবস্থা গ্ৰহন করা প্রয়োজন।
    11. তেজস্ক্রিয় পদার্থ ব্যবহার করা হয় এমন কলকারখানার প্রযুক্তিগত উন্নতি ঘটিয়ে তেজস্ক্রিয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
    12. তেজস্ক্রিয়তা প্রতিরোধী পোশাকের সাহায্যে পারমাণবিক চুল্লী বা বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের কর্মীদের তেজস্ক্রিয়তার হাত থেকে রহ্মা করা যায়।
    13. তেজস্ক্রিয় পদার্থের সাথে কাজকর্মের সময় কমিয়ে শ্রমিকদের তেজস্ক্রিয়তার বিপদ থেকে অনেকটা রহ্মা করা যায়।
    14. পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ব্যক্তিগত স্তরে তেজস্ক্রিয়তা বিপদ কমায়।
    15. বিভিন্ন ধরনের টুপি দস্তানা দেহাবরন ব্যবহারের করেও এই দূষণ প্রতিরোধ করা যায়।
    16. তেজস্ক্রিয়তার বিপদ ও সমস্যা সম্বন্ধে জন সচেতনতা বৃদ্ধি করে এই ধরনের দূষনকে পরোহ্মভাবে মোকাবিলা করা যায়।

    8. তেজস্ক্রিয় দূষণের নিয়ন্ত্রণে ভারত সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ -

    1. Atomic Energy Act,1962
    2. Atomic Energy Mines Minerals Prescribed Substance Rules,1984
    3. Environment (Protection) Act,1986
    4. Atomic Energy (Safe Disposal Of Radioactive Wastes) Rules,1987
    5. Atomic Energy Factories Rules,1996
    6. Atomic Energy Radiation Protection Rules,2004
    7. Civil liability For Nuclear Damage Act,2010
    8. Civil liability For Nuclear Damage Rules,2011
    9. Amendments Of Atomic Energy Act,2015

    9. উপসংহার -

    পরিশেষে বলা যায় যে, বর্তমানে বিশ্বায়ন এবং সাম্রাজ্যবাদী পরিস্থিতিতে মানুষ ক্রমশ হিংস্র হয়ে ওঠেছে।তাই নিজেদের সমৃদ্ধ করতে পারমাণবিক শক্তির উপর অধিক গুরুত্ব দিচ্ছে ফলে সৃষ্টি হচ্ছে তেজস্ক্রিয় দূষণ।তাই তেজস্ক্রিয় দূষণ নিয়ন্ত্রণে জন্য বর্তমানে নতুন করে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি না হয় এবং তেজস্ক্রিয় বর্জ্য পদার্থ উৎপন্ন না হয়,সেই দিকে লক্ষ রাখতে হবে। প্রতিটি রাষ্ট্রের জনগণের মধ্যে সচেতনতা বোধ গড়ে তুলতে হবে এবং আইনের মাধ্যমে তেজস্ক্রিয় দূষণকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।যাতে পৃথিবীর বাস্তুতন্ত্রের  ভারসাম্য বিঘ্নিত না হয়।

    CLICK HERE

    ENGLISH VERSION PDF FILE

    Post a Comment (0)
    Previous Post Next Post