সমস্যামূলক শিক্ষার্থী||Problem Learner

সমস্যামূলক শিক্ষার্থী||Problem Learner

সমস্যামূলক শিক্ষার্থী||Problem Learner

BENGALI VERSION||ENGLISH VERSION

Problem Learner (Concept, Characteristics And different types Of Problem in Classes)
Problem Learner

Assignment Questions -

1. সমস্যামূলক শিক্ষার্থী কাকে বলে।ইহার বৈশিষ্ট্য গুলি লেখ।||What is Meant By Problem Learner.Write Down The Characteristics Of Problem Learner.

2. সমস্যামূলক শিক্ষার্থীর উদ্ভাবনের কারন গুলি বর্ণনা কর।||Describe The Causes Of Problem Learner.

3. শ্রেণিকক্ষে সাধারণত যে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখতে পাওয়া যায়,সেগুলির উল্লেখ করো।||Mention The Different Types Of Problems Usually Found in Classroom.

সমস্যামূলক শিক্ষার্থীর ধারনা, বৈশিষ্ট্য এবং বিদ্যালয়ে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা 

BENGALI VERSION

(ENGLISH VERSION FILE BELOW THE ARTICLE BY PDF FORMAT)

1. ভূমিকা -

যে সমস্ত শিহ্মার্থীরা শ্রেণি শিখনের জ্ঞানমূলক,অনুভব মূলক এবং সঞ্চালন মূলক উদ্দেশ্য অর্জনে সম্পূর্ণরূপে সমর্থ হয় না এবং যাদের পারদর্শিতা স্বাভাবিক মাত্রায় নীচে অবস্থান করে তাদের সমস্যামূলক শিক্ষার্থী বলা হয়। অর্থাৎ যখন কোনো শিক্ষার্থীর আচরণ বিদ্যালয়ের বিধিবদ্ধ নিয়মবহির্ভূত হয় তখন বিদ্যালয়ে সেই শিক্ষার্থীর আচরণটিকে গ্ৰহনযোগ্য হয় না এবং শিহ্মার্থীকে সমস্যামূলক শিক্ষার্থী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।Quirk এর মতে,"A Learner with academic performance that is significantly below performance potential because of a specific affective, Cognitive and Structural or Interpersonal."

বহুভাবে সমস্যামূলক শিক্ষার্থীকে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে।যথা -

দৈহিক, মানসিক, সামাজিক এবং প্রাহ্মোভিক বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে যে সমস্ত শিহ্মার্থী স্বাভাবিক শিক্ষার্থীদের থেকে পৃথক তাদের সমস্যামূলক শিক্ষার্থী বলা হয়।আবার,শিহ্মা মনোবিজ্ঞানে বুদ্ধ্যাঙ্কের (IQ) দিক থেকে যারা স্বাভাবিক শিক্ষার্থীদের থেকে পৃথক তাদের সমস্যামূলক শিক্ষার্থী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।সমস্যামূলক শিহ্মার্থীদের অনেক সময় Annoying Students,Difficult Students বা Stressed Student হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।এমন কি শিখনের অসমর্থ শিশুদের সমস্যামূলক শিহ্মার্থী রূপে অভিহিত করা হয়।

স্বাভাবিক সম্ভাবনার লেখচিত্রে যদি একদল শিহ্মার্থীকে যে কোনো বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে শ্রেণিকরণ করা যায়, তাহলে যারা বন্টনের মাঝখানে থাকে তাদের বলা হয় স্বাভাবিক,আর যারা মাঝখানের অংশের বাইরের দুদিকে অবস্থান করে তাদের বলা হয় সমস্যামূলক শিক্ষার্থী।

2. শ্রেণিকক্ষে সমস্যামূলক শিক্ষার্থীদের বৈশিষ্ট্য -

  1. শ্রেণিকক্ষে এই সমস্ত শিহ্মার্থীরা অমনোযোগী প্রকৃতি হয়।
  2. সমস্যামূলক শিক্ষার্থীরা,শ্রেণি শিখনে সংগতি বিধানে ব্যর্থ হয়।
  3. এই সমস্ত শিহ্মার্থীরা চঞ্চলা প্রকৃতি হয়।
  4. শিহ্মাগত পারদর্শিতার দিক থেকে এই সমস্ত শিহ্মার্থীরা অন্যান্য শিহ্মার্থীদের থেকে পিছিয়ে থাকে।
  5. এই ধরনের শিহ্মার্থীদের মধ্যে গৃহ কাজ যথাযথ ভাবে না করার প্রবণতা লহ্ম্য করা যায়।
  6. এই সমস্ত শিহ্মার্থীদের মধ্যে পরীহ্মার প্রতি ভীতি এবং অসৎ উপায় অবলম্বন করে।
  7. সমস্যামূলক শিক্ষার্থীরা শিহ্মক-শিহ্মিকার নির্দেশনা অনুসরণ করে না।
  8. এই সমস্ত শিহ্মার্থীদের মধ্যে উপস্থিতির হার কম হয়।
  9. বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে টিফিনের পর শ্রেণিকক্ষ থেকে পালানোর প্রবৃত্তি লহ্ম্য করা যায়।
  10. এই সমস্ত শিহ্মার্থীরা হীনমন্যতা ও একাকিত্ব বোধ ভোগে।
  11. এই সমস্ত শিহ্মার্থীদের মধ্যে সামাজিক ভাব বিনিময়ে ব্যর্থ হয় এবং এদের মধ্যে বিভিন্ন রকমের শিখন অসামঞ্জস্যতা লহ্ম্য করা যায়।
  12. এই সমস্ত শিহ্মার্থীদের কোনো ধরনের সহ পাঠক্রমিক কার্যাবলিতে অংশ গ্ৰহন করতে আগ্ৰাহী নয়‌।
  13. এদের মধ্যে নানা রকম আচরনগত,প্রজ্ঞামূলক, অনুভবমূলক, সঞ্চালন মূলক এবং প্রাহ্মোভিক সমস্যার দেখা যায়।
  14. এই সমস্ত শিক্ষার্থীরা বদ অভ্যাসে আসক্ত হয়।যথা - দেওয়ালে অশ্লীন কথা লেখা,অন্যের বইখাতা চুরি করা ইত্যাদি।
  15. এই সমস্ত শিহ্মার্থীদের মধ্যে শ্রেণিকক্ষে মারামারি করা এবং ভাঙচুর করা মতো প্রবৃত্তি লহ্ম্য করা যায়।
3. সমস্যামূলক শিক্ষার্থীর সমস্যার সৃষ্টির কারন -

বিদ্যালয়ের প্রতিটি শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই সমস্যাগুলির সৃষ্টির পেছনে যে সমস্ত কারন গুলি রয়েছে, তা বর্ণনা করা হল। -
১. গতানুগতিক পাঠক্রম -
শিহ্মাব্যবস্থার গতানুগতিক তত্ত্বে ভরা বৈচিত্র্যহীন পাঠক্রম যা শিশুর সবরকম চাহিদার পরিতৃপ্তি ঘটাতে পারে না।শিশুরা পঠন ও পাঠনের মনোযোগে না দিয়ে শ্রেণিকক্ষে নানা সমস্যামূলক আচরনের সৃষ্টি হয়।
২. শ্রেণিকক্ষে পরিবেশ -
বিদ্যালয়ের কম আলো,বাতাস যুক্ত শ্রেণিকক্ষ বসবার স্থান সংকুলানের অভাবে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সমস্যা মূলক আচরণের সৃষ্টি হয়।
৩. শিহ্মকের কঠোর আচরণ -
অনেক সময় দেখা যায়, বিদ্যালয়ে শিক্ষক বা শিক্ষিকার কঠোর শাসন শিক্ষার্থীদের মনে অনেক সময় বিদ্যালয় ত্যাগ করার মনোভাব সৃষ্টি হয়।যার জন্যে সুযোগ পেলেই বিদ্যালয় থেকে পালানোর প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়।
৪. শিহ্মক-শিহ্মিকার শিখন প্রতি ক্রটি -
অনেক সময় শ্রেণিকক্ষে কিছু কিছু শিহ্মক বা শিহ্মিকা তার শিখন প্রক্রিয়ার ক্রটির জন্য শিহ্মার্থীদের মধ্যে সমস্যামূলক পরিস্থিতি উদ্ভব হয়।
৫. শ্রেণিকক্ষে ব্যক্তি বৈষম্য -
বিদ্যালয়ের বিভিন্ন কাজে ব্যক্তি বৈষম্যের গতিকে অনুসরন না করার ফলে শিহ্মার্থী কেন্দ্রিক সমস্যার উদ্ভব হয়।
৬. শিক্ষার্থীর মধ্যে হীনমন্যতা বোধ -
আর্থিক অসংগতি অনেক সময় শিহ্মার্থীর মধ্যে হীনমন্যতা বোধের সৃষ্টি করে।যার ফলস্বরূপ শিক্ষার্থীদের মধ্যে অপরাধমূলক কাজে প্রবৃত্ত হতে দেখা যায়।
৭. শিক্ষার্থী প্রতি শিক্ষক-শিহ্মিকার আচরন -
অনেক সময় শিহ্মক-শিহ্মিকারা কোনো শিক্ষার্থীকে সমস্যা প্রবণ হিসাবে বিবেচনা করে সর্বদা তার সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করে থাকেন।এই ধরনের বিরূপ মন্তব্য শিক্ষার্থীর অপরাধ প্রবণতাকে বাড়িয়ে তোলে এবং সমস্যার সৃষ্টি করে।
৮. সহ শিক্ষার্থীদের প্রভাব -
সব শ্রেণিতেই একটি বা দুটি শিহ্মার্থী থাকে,যাদের প্রবণতা হল নিজেও অমনোযোগী হয়ে থাকবে এবং অন্যদের অমনোযোগী করা।এর ফলে শিহ্মক শিহ্মিকারা শ্রেণিতে বাধার সম্মুখীন হন এবং শিখনের অমূল্য সময় নষ্ট হয়,যার ফলে সমস্যার উদ্ভব হয়।
৯. শিক্ষার্থীদের জন্মগত ত্রুটি -
অনেক সময় দেখা যায়, শিক্ষার্থীদের মধ্যে জন্মগত কারণে দৃষ্টি বা শ্রবণে বা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু শ্রেণিকক্ষে থাকার ফলে সমস্যার উদ্ভব হয়।
উপরোক্ত এই সমস্ত কারন গুলি ছাড়াও সামাজিক এবং বিদ্যালয় পরিবেশ ঘটিত কারন গুলি দায়ী।

4. বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা  -

কোয়ারি এবং তার সহযোগীগন আচরণ সংক্রান্ত সমস্যা গুলি বহু প্রচলিত একটি শ্রেণি তালিকা প্রকাশ করেছেন।
সমস্যামূলক শিক্ষার্থীকে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
  1. প্রজ্ঞাজনিত সমস্যামূলক শিক্ষার্থী
  2. গঠনগত বা সঞ্চালন জনিত সমস্যামূলক শিক্ষার্থী
  3. অনুভব জনিত সমস্যামূলক শিক্ষার্থী
1. প্রজ্ঞাজনিত সমস্যামূলক শিক্ষার্থী আবার কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে।যথা -
  • প্রতিভাবান শিহ্মার্থী
  • হ্মীণবুদ্ধি সম্পন্ন শিক্ষার্থী
  • অনগ্ৰসর বা ধীরগতি সম্পন্ন শিক্ষার্থী
  • শিখনে অসমর্থ শিহ্মার্থী
  • মনোযোগ হীনতা
2. গঠনগত বা সঞ্চালন জনিত সমস্যামূলক শিক্ষার্থীর কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে।যথা -
  • সংবেদন প্রতিবদ্ধকতা
    • দৃষ্টি প্রতিবন্ধকতা
    • শ্রবণ প্রতিবন্ধকতা
  • সংবেদন সঞ্চালন মূলক প্রতিবন্ধকতা
  • দৈহিক ও স্নায়বিক প্রতিবন্ধকতা
3. অনুভব জনিত সমস্যামূলক শিক্ষার্থীর কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে,যথা -
  • প্রাহ্মোভিক প্রতিবন্ধকতা
  • সামাজিক প্রতিবন্ধকতা
  • অটিজম
তাই পিতামাতার,শিহ্মক শিহ্মিকা এবং শিহ্মার্থীর জীবন, ইতিহাস এবং নির্দিষ্ট প্রশ্নাবলির উত্তর ইত্যাদি সাহায্যে বেশ কয়েকটি শিহ্মার্থীর বিশৃঙ্খলা সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে এবং পরিসংখ্যান কৌশল প্রয়োগ করে,আচরণ সংক্রান্ত সমস্যার শ্রেণিকরন করা হয়েছে।একটি বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে যে সমস্ত সমস্যা দেখা যায়,তা নিন্মে বর্ণনা করা হল।-
১. আচরণ গত সমস্যা -
অনেক সময় দেখা যায়, কিছু কিছু শিহ্মার্থীদের আচরণগত সমস্যা লহ্ম্য করা যায় শ্রেণিকক্ষে।এই সমস্ত শিহ্মার্থীরা আক্রমণাত্মক, আতঙ্কিত,হতাশাগ্ৰস্ত,অশ্লীন মন্তব্য, মারামারি করা, ভাঙচুর করা,বই পত্র চুরি করা, মেজাজ গত পরিবর্তন প্রভৃতি আচরণ লহ্ম্য করা যায়।যা শিহ্মার্থীর ব্যক্তিত্বের হ্মতিসাধন করে এবং শ্রেণিকক্ষে সমস্যা দেখা যায়।
২. সামাজিক সমস্যা -
সমাজ পরিবেশ যদি শিশু শিহ্মার্থীর স্বাভাবিক প্রবণতাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পহ্মে বাধাকারক হয় তাহলেও নানাবিধ সমস্যার সৃষ্টি হয়।একটি শিক্ষার্থীর চরিত্র গঠন, মূল্যবোধ গঠন বা সুনাগরিক হওয়ার হ্মেত্রে সমাজের গঠনমূলক ভূমিকাকে অস্বীকার করা যায় না। সমাজ যদি বিশৃঙ্খল হয় কিংবা সার্থক সংগতি বিধানে সহযোগিতা পূর্ণ পরিবেশ প্রণয়নে অহ্মম হয়।ফলে শিহ্মার্থীদের সামাজিক রীতিনীতি,নিয়ম, মূল্যবোধ ইত্যাদি থেকে বিচ্যুতি ঘটে,যা সমস্যার সৃষ্টি করে।
৩. প্রাহ্মোভিক সমস্যা -
প্রতিটি ব্যক্তির ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সমাজজীবনে আবেগ হল একটি মূল্যবান সম্পদ। অনুরূপভাবে, একজন শিহ্মার্থীর অন্যদের প্রতি ভালোবাসা,অপরের সুখ-দুঃখের অংশীদার হয়ে সহযোগী মনোভাব নিয়ে সুস্থ ভাবে থাকাই হল আবেগ। কিন্তু অনেক হ্মেত্রে অনিয়ন্ত্রিত আবেগ যেমন রাগ,হ্মোপ,দুঃখ, হীনমন্যতা, হতাশা প্রভৃতি প্রাবল্য কখনো কখনো শিক্ষার্থীদের বিবেচনা কে আচ্ছন্ন করে ফেলে।তখন তারা সঠিক পদহ্মেপ নিতে ব্যর্থ হয় ও পথভ্রান্ত হয়ে পড়ে।যার ফলে শ্রেণিকক্ষে সমস্যার দেখা যায়।
৪. শিক্ষার্থীদের মনোভাব এবং আচরণ -
একটি শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের আচরণ এবং মনোভাব ভিন্ন ভিন্ন হয়।যথা ব্যাঘাতমূলক, অশান্ত এবং অসামাজিক হওয়ার কারণে শিহ্মণ এবং শেখার প্রক্রিয়ার একটি নেতিবাচক প্রভাবিত করেছে।যা শ্রেণিকক্ষে সমস্যা দেখা যাচ্ছে।
৫. সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ এবং সামাজিক ভূমিকা -
বিদ্যালয় সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক জীবনকে প্রভাবিত করে। আবার, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক জীবন বিদ্যালয়কে প্রভাবিত করে।একজন ব্যক্তির লিঙ্গ বা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সামাজিক জীবন বিকাশ কেও প্রভাবিত করে।এটি আত্মসম্মান,একাডেমিক কৃতিত্ব, কলঙ্ক এবং মনোসামাজিক কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করে।যদি কোনো শিক্ষার্থীর বিদ্যালয়ে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অংশ থেকে দুরে থাকে তাহলে শিহ্মার্থীর মধ্যে সমস্যা দেখা যায়
৬. অভিভাবকদের সক্রিয়তা -
বিদ্যালয়ের মধ্যে যে প্রাথমিক প্রস্তুতি আনয়ন করে, তাকে কার্যকরী স্থায়ী রূপদানের জন্য অভিভাবকদের দায়িত্ব নিতে হবে। এইভাবে বিদ্যালয় ও অভিভাবকদের সমাবেত প্রচেষ্টায় শিহ্মার্থীর শিহ্মা পূর্ণতা পাবে। অনেক সময় অভিভাবকেরা ভ্রান্ত ধারণার বশবর্তী হয়ে বিদ্যালয়ের কাজের সমালোচনা করেন এবং শিহ্মক শিহ্মিকার উপর দোষারোপ করেন।এই ভূল বোঝাবুঝির প্রভাব শিহ্মার্থীদের উপরও এসে পড়ে। আবার অনেক সময়, অভিভাবকেরা শিক্ষার্থীর উপর নজর দেয় না।ফলে অভিভাবকদের সহযোগী হীনতা শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীর সমস্যার দেখা যায়।
৭. শ্রেণিকক্ষের আয়তন -
Right To Education Act অনুসারে বলা হয়েছে যে,প্রতিটি বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষের 1:30 অনুপাতে শিহ্মক/শিহ্মিকা ও শিহ্মার্থীর অনুপাত থাকতে হবে। কিন্তু আহ্মরিক অর্থে দেখা যায় শ্রেণিকক্ষে 1:30 অনুপাতকে মানা হয় না।একটি শ্রেণিকক্ষে 30 এর বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থী দেখা যায়। অতিরিক্ত শিক্ষার্থীদের থাকার ফলে শিহ্মক বা শিহ্মিকার প্রত্যেক শিক্ষার্থীর প্রতি নজর দিতে পারে না।এর ফলে শ্রেণিকক্ষে সমস্যামূলক শিক্ষার্থীর আচরন দেখা যায়।
৮. পাঠক্রম সম্পর্কিত সমস্যা -
আমাদের শিহ্মা ব্যবস্থার গতানুগতিক তত্ত্বে ভরা বৈচিত্র্যহীন পাঠক্রম যা শিশুর শিক্ষার্থীর সবরকম চাহিদার পরিতৃপ্তি ঘটাতে পারে না। শিশুর শিক্ষার্থীদের পঠন ও পাঠনের মনোযোগ না দেওয়া ফলে শ্রেণিকক্ষে নানা সমস্যামূলক আচরন দেখা যায়।
৯. প্রযুক্তি -
বর্তমানে শিক্ষা ব্যবস্থার প্রযুক্তি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।তাই শ্রেণিকক্ষে তথ্য প্রযুক্তি ব্যাপক ব্যবহার ও বিকাশে শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি সাধন হয়েছে। কিন্তু যে সমস্ত বিদ্যালয়ে প্রযুক্তি গত ব্যবস্থা নেই,সেই বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীর সমস্যা মূলক আচরণ দেখা যায়।
১০. দারিদ্রতা -
একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে,আর্থ-সামাজিক অবস্থা পরিবারের একটা নৈতিক মান তৈরি করে।সেটার এই পরিবারের শিশুর মধ্যে লহ্ম্য করা যায়। স্বাভাবিক ভাবেই দারিদ্রতা কারনে শিশুর অতৃপ্ত চাহিদা মধ্যে সমস্যার দেখা যায়।
১১. ব্যবহারিক শিক্ষার অভাব -
আমাদের শিহ্মা ব্যবস্থার যে সমস্ত পাঠক্রম গুলি গ্ৰহন করা হয়েছে,তা মূলত বেশির ভাগ গতানুগতিক এবং তত্ত্ব নির্ভর এবং বৈচিত্র্যহীন।পাঠক্রম গুলির তাত্ত্বিক হওয়ার ব্যবহারিক অংশকে অবহেলা করা হয়।যা শিহ্মার্থীর পঠন ও পাঠনের আকর্ষন করে না। আবার, কিছু কিছু বিষয়ে তত্ত্ব ছাড়া কোনো ব্যবহারিক শিক্ষা নেই এবং পাঠক্রম গুলির বাস্তবিক জীবনে তেমন ব্যবহার না থাকার শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সমস্যার দেখা যায়।
১২. পরীক্ষা জনিত সমস্যা -
বর্তমানে শিক্ষা ব্যবস্থার পরীক্ষা পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়,তা মূলত রচনাধর্মী।তাই পরীহ্মার দিন গুলিতে শিহ্মার্থীদের মধ্যে একটি চাপ সৃষ্টি হয়।ফলে শিহ্মার্থীদের মধ্যে সৃষ্টি হয় উদ্বেগ বা দুশ্চিন্তা,যে তারা পরীহ্মার প্রস্তুতি হতে বাকী বা উপযুক্ত ভাবে প্রস্তুত নয়,এমনকি পাশ না করার আশঙ্কা প্রভৃতি।এই দুশ্চিন্তা বা উদ্ধেগে তারা পড়াশোনা করতে পারে না।ফলে শ্রেণিকক্ষে সমস্যার দেখা যায়।
১৩. পারিবারিক কারন -
একটি আর্দশ গৃহ পরিবেশ একটি শিশুর বিকাশ অত্যন্ত জরুরি।যেমন পিতামাতার সুস্থ সম্পর্ক,শিশু প্রতি সঠিক মনোযোগ, নৈতিক আচরন সম্পর্ক একটি শিশুর পহ্মে ভালো হয়।যদি এই গুণগুলি একটি গৃহ পরিবেশে লহ্ম্য করা না যায় তাহলে শিশুর শিহ্মার্থীর মধ্যে আক্রমণাত্মক,উদ্ধেগ,ভীতি মতো মনোভাব গড়ে ওঠে যা শ্রেণিকক্ষে সমস্যার সৃষ্টি করবে।
১৪. পারিবারিক গতিবিদ্যা -
গৃহ হল শিশুদের বিকাশ ও প্রকাশের অন্যতম বিশ্বাসযোগ্য আশ্রয়স্থল। কিন্তু যদি এই গৃহ পরিবেশ ক্রটিপূর্ণ হয়,তাহলে শিশুর আচরণের তার প্রভাব দেখা যায়।গৃহের গঠন বা পরিবেশ অর্থে সম্পর্কে সু-সমন্বয় পারস্পরিক বোঝাপড়া বোধ,সমর্মিতা বোধ প্রভৃতি যদি ভগ্ন প্রকৃতির হয়, তাহলে শিশুর আচরণগত বৈকল্য লহ্মিত হয়। এছাড়াও পারিবারিক শ্রীবৃদ্ধি বা চাহিদা সম্পাদন বাধাপ্রাপ্ত হওয়া ঠিক নয়।গৃহগত মতান্তর, কলহ কিংবা পারিবারিক অনুশাসনের প্রাবল্য শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীর মধ্যে সমস্যার সৃষ্টি করে,যা শিহ্মার্থীদের মধ্যে নেতিবাচকতা আনতে পারে।
১৫. সহপাঠীদের প্রভাব -
একটি শিশু তার গৃহ এবং অভিভাবক ছাড়াও দিনের ৬ থেকে ৭ ঘন্টা সময় অতিবাহিত করে বিদ্যালয়ে, তার সহপাঠীদের সঙ্গে।তাই সহপাঠীদের সহযোগিতা,উৎসাহ, কিংবা প্রেরণা শিশুর সংগতি বিধানে বিশেষ সহায়ক করে।যদি কোনো শিক্ষার্থী তার সহপাঠীর কাছ থেকে ঘৃণা, বিদ্রুপ, অবহেলা প্রভৃতির দ্বারা আক্রান্ত হয়, তাহলে শ্রেণিকক্ষে এই শিহ্মার্থীর মধ্যে নানা প্রকার সমস্যা দেখা যায়।
১৬. অনুপ্রেরণা এবং উৎসাহের অভাব -
শ্রেণিকক্ষে কোনো শিক্ষার্থীর পঠন পাঠনের প্রতি অনুপ্রেরণা এবং উৎসাহ দান শিহ্মক শিহ্মিকার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কিন্তু শিহ্মক বা শিহ্মিকার তার কর্তব্য পালন না করে,তাহলে শিহ্মার্থীদের মধ্যে অনুপ্রেরণা এবং উৎসাহের অভাব দেখা যাবে,যা শ্রেণিকক্ষে সমস্যার দেখা যায়।
১৭. একাগ্ৰতা বোধ -
প্রায় সব বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষতেই একটি বা দুটি শিহ্মার্থী লহ্ম্য করা যায়,যাদের মধ্যে একাগ্ৰতা বোধের অভাবে রয়েছে।ফলে এই সমস্ত শিহ্মার্থীদের মধ্যে নানা ধরনের সমস্যা দেখা যায়।
১৮. হোম সিকনেস -
অনেক সময় লহ্ম্য করা যায়, শিক্ষার্থীদের বাড়ি ছেড়ে বিদ্যালয় যাওয়ার সময় বারংবার বাড়ির কথা চিন্তা করে,বা মনে করে বাড়ি হারিয়ে যাওয়ার ঘটনা শিক্ষার্থীকে আরো উদ্ধেগ বাড়িয়ে দিচ্ছে এবং ক্রমশ শিক্ষার্থীর মেজাজের পরিবর্তন করেছে। হোম সিকনেস একটি মানসিক উদ্বেগ যা শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীর একাগ্ৰতা ও মনোযোগ কে হ্রাস করে,পঠনের প্রতি বিমুখতা সৃষ্টি করেছে।যা ফলে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সমস্যার দেখা যায়।
১৯. শিক্ষার্থীর বিদ্যালয় ত্যাগ -
শিহ্মক শিহ্মিকার কঠোর শাসন বা ভীতির জন্য অথবা কু-সঙ্গে পড়ে বহু শিহ্মার্থীর বিদ্যালয়ে আসে না বা বিদ্যালয়ে ছুটির আগে পালিয়ে যায় বা টিফিন সময় পালিয়ে যাওয়ার মনোভাব লহ্ম্য করা হয়।যার ফলে শিহ্মার্থীর মধ্যে সমস্যার সৃষ্টি হয়।
২০. স্বাস্থ্যের অবস্থা -
একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, শিশুর অপুষ্টি ও খাদ্যভ্যাস শুধুমাত্র শারীরিক বিকাশকেই প্রভাবিত করে না, তার মানসিক বিকাশে বাধা সৃষ্টি করে। শিশু শিহ্মার্থীর পঠনের প্রতি মনোযোগ,পঠনের প্রতি অহ্মমতা এবং ঘনঘন অসুস্থতার জন্য বিদ্যালয় অনুপস্থিত লহ্ম্য করা যায়।
২১. মানসিক স্বাস্থ্য -
বিদ্যালয়ের কার্যাবলিতে শিক্ষার্থীদের সুষ্ঠ মানসিক স্বাস্থ্য বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব বিস্তার করে। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ব্যবহার,শিহ্মার পারদর্শিতা, সহপাঠীদের সঙ্গে আচরণ,বিদ্যালয়ে নানাবিধ গঠনাত্মক ক্রিয়াকর্ম শিশু শিহ্মার্থীর মানসিক স্বাস্থ্য বিকাশে বিশেষ ভাবে প্রভাব বিস্তার করে। বিদ্যালয় পরিবেশে শিশু শিহ্মার্থীর যদি বিভিন্ন সৃজনমূলক কাজে সক্রিয় অংশগ্রহণ না করে তাহলে শিশুর শিহ্মার্থীর মানসিক স্বাস্থ্যের যথেষ্ট অবনতি লহ্ম্য করা যায়,যার ফলে শ্রেণিকক্ষে সমস্যার দেখা যায়।

উপরোক্ত এই সমস্ত দিক ছাড়াও আরো অনেক দিক রয়েছে যা একটি শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সমস্যার দেখা যেতে পারে।তবে একজন শিক্ষক বা শিক্ষিকার উচিৎ সকল দিক থেকে শিক্ষার্থীদের প্রতি নজর দেওয়া।যাতে শিক্ষার্থীদের সার্বিক বিকাশ ঘটে।

CLICK HERE -

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post