বিদ্যালয়ের গ্ৰন্থাগার||School Library

বিদ্যালয়ের গ্ৰন্থাগার||School Library

বিদ্যালয়ের গ্ৰন্থাগার||School Library

BENGALI VERSION||ENGLISH VERSION

School Library
School Library

Assignment Questions -

1. বিদ্যালয়ের গ্ৰন্থাগারের প্রয়োজনীয়তা গুলি কি কি।|| What are the needs of school library.

2. বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গ্ৰন্থাগারের ব্যবহারে শিহ্মক শিহ্মিকার ভূমিকা আলোচনা কর।||Discuss The Role Of Teachers In The Use Of Library By School student's.

3. একজন গ্ৰন্থাকারিকের কাজ কি।||What is The Function Of A Librarian?

4. বর্তমানে মাধ্যমিক স্তরের বিদ্যালয়ে গ্ৰন্থাগারের অবস্থা সম্পর্কে মন্তব্য করুন।||Comment On The Present Condition Of Secondary School Library.

বিদ্যালয়ের গ্ৰন্থাগার -

BENGALI VERSION -

(ENGLISH VERSION FILE BELOW THE ARTICLE BY PDF FORMAT)

1. ভূমিকা -

গ্ৰন্থাগার হল শিহ্মার একটি প্রত্যহ্ম সক্রিয় সংস্থা।গ্ৰন্থাগার ইংরেজি প্রতিশব্দ 'Library',এর উৎপত্তি ল্যাটিন শব্দ 'Liber' থেকে।'Liber' এর অর্থ হল 'পুস্তক'।এই 'Liber' শব্দটি এসেছে 'Libraium' শব্দ থেকে,যার অর্থ হল 'পুস্তক রাখার স্থান'।অনেক সময় শিশুরা বিদ্যালয়ের পাঠ্য পুস্তক অপেক্ষা পাঠ্যাগারের পুস্তক পড়তে বেশি পছন্দ করে থাকে।গ্ৰন্থাগারে ভ্রমণ বৃত্তান্ত, বিজ্ঞান বিষয়ক নানা আবিষ্কারের কাহিনি, নামকরা লেখক সাহিত্যিকের গ্ৰন্থাবলি, কবিতা, উপন্যাস প্রভৃতি গ্ৰন্থের সমাহার।এই পুস্তক গুলির মধ্যে দিয়ে শিশুরা বিশ্বের জ্ঞানভাণ্ডারের সঙ্গে সহজে পরিচিত হয়।মুদালিয়র কমিশনের রিপোর্টে গ্ৰন্থাগার সম্পর্কে বলা হয়েছে,"The Library will be hud and the centre of the intellectual and library life of the recognised schools."এর জন্য শিশুদের কাছে গ্ৰন্থাকার বিদ্যালয় অপেক্ষা অধিকতর শক্তিশালী শিহ্মার মাধ্যমে হয়ে দাঁড়ায়।তাই প্রত্যেক বিদ্যালয়ের একটি গ্ৰন্থাগার থাকা বাঞ্চনীয়।

2. গ্ৰন্থাগারের বৈশিষ্ট্য -

  • গ্ৰন্থাগার আলো বাতাস যুক্ত স্থানে প্রতিষ্ঠিত হওয়া প্রয়োজন।
  • গ্ৰন্থাগারের দেওয়ালের রং এমন হওয়া উচিত যাতে অতিরিক্ত আলো প্রতিফলিত না হয়।
  • গ্ৰন্থাগারের আলমারি, টেবিল,ডেস্ক,চেয়ার প্রভৃতি আসবাবপত্র সৃদৃশ্য এবং মজবুত হওয়া দরকার। এখানে বসে শিক্ষার্থীরা অবসর সময়ে কাজ পাঠ করবে।
  • গ্ৰন্থাগারের একদিকে কিছু খোলা তাক থাকা বাঞ্চনীয় যাতে শিক্ষার্থীরা খোলা তাকের বইগুলি ইচ্ছামতো ব্যবহার করতে পারে।
  • একটি বড়ো টেবিলে দৈনিক সংবাদপত্র,পত্রিকা ইত্যাদি রাখা থাকে।
  • গ্ৰন্থাগার কহ্মে একটি বুলেটিন বোর্ড থাকবে।এই বুলেটিন বোর্ডে নতুন ও পুরাতন সকল পুস্তক সম্পর্কিত তথ্য থাকবে।
  • গ্ৰন্থাগারের গ্ৰন্থাগারিক থাকবে, তাদের বসার এবং কাজের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা থাকবে।

3. বিদ্যালয়ের গ্ৰন্থাগারের উদ্দেশ্য -

  • বিদ্যালয়ের গ্ৰন্থাগারের প্রকৃতপক্ষে শিশু শিহ্মার্থীর বুদ্ধি বিকাশ ঘটে সহায়তা করে।
  • শিক্ষার্থীদের বইএর প্রতি ভালোবাসা গড়ে তোলে এবং বই পড়ার আগ্ৰহ সৃষ্টি করে।
  • মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের গ্ৰন্থাগার শিক্ষার্থীদের শিক্ষা লাভ ও লিহ্মক-শিহ্মিকার শিহ্মাদান করার মতো সব উপাদানের যোগান দিয়ে নিজের বৈশিষ্ট্য গুলি বজায় রাখবে।
  • শুধুমাত্র পাঠ্য বিষয়ের পড়াই নয়, আনন্দের জন্য, সাধারণ জ্ঞান ও মনোরঞ্জনের জন্য পড়া দরকার।
  • শিক্ষার্থীদের মধ্যে অভিজ্ঞতা এবং নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস প্রকাশের সুযোগ পায়।

4. গ্ৰন্থাগারের প্রকারভেদ -

প্রতিটি বিদ্যালয়ের গ্ৰন্থাগারের গুরুত্ব অনেক বেশি।তবে বিদ্যালয়ের গ্ৰন্থাগার চার প্রকারের হয়।

১. কেন্দ্রীয় গ্ৰন্থাগার -

সাধারণত, বিদ্যালয়ের প্রধান গ্ৰন্থাগারটিকে কেন্দ্রীয় গ্ৰন্থাগার বলা হয়।এর বৈশিষ্ট্য গুলি হল -

  • এই গ্ৰন্থাগারে শিক্ষার্থী ও শিক্ষক-শিহ্মিকার জন্য বিভিন্ন ধরনের বই,পত্রিকা এবং অন্যান্য উপকরণ থাকে।
  • এই গ্ৰন্থাগারটি সাধারণত বেশ প্রশস্ত এবং আলো বাতাস যুক্ত কহ্মে বিশিষ্ট হয়ে থাকে।
  • শিক্ষার্থী ও শিক্ষক-শিহ্মিকার জন্য পৃথক পাঠকহ্ম দেখা যায়।
  • পুস্তক গুলির বিষয় অনুযায়ী এবং লেখকের নাম অনুযায়ী তালিকা থাকবে এবং প্রতিটি বই যেন নথিভুক্ত করা হয় সেই দিকে গ্ৰন্থাগারিকের নজর রাখতে হবে।
  • গ্ৰন্থাগারে যাতে কোনো বই বা উপকরণ পোকা মাকড় নষ্ট করতে না পারে তার জন্য কীটনাশক ওষুধ ব্যবহার করা আবশ্যক।

২. শ্রেণি গ্ৰন্থাগার -

কেন্দ্রীয় গ্ৰন্থাগার থেকে বিভিন্ন শ্রেনির জন্য কেবলমাত্র সেই শ্রেনির শিক্ষার্থীদের উপযোগী বই দিয়ে এই ছোটো গ্ৰন্থাগারটি পৃথকভাবে তৈরি করা হয়।একে শ্রেণি গ্ৰন্থাগার বলা হয়।এর বৈশিষ্ট্য গুলি হল -

  • এটি কেন্দ্রীয় গ্ৰন্থাগার অধীনে থাকবে।
  • এটি শ্রেনি শিহ্মক বা শিহ্মিকার পরামর্শ ও নির্দেশনা তৈরি হবে।
  • এই গ্ৰন্থাগারের পরিচালনার দায়িত্ব থাকে শিক্ষার্থীদের উপর।
  • নির্দিষ্ট শ্রেণিকক্ষে জন্য উপযুক্ত পুস্তক রাখা হয়।

৩. বিষয় গ্ৰন্থাগার -

সাধারণত,এক একটি বিষয়ের উপর বিভিন্ন বই নিয়ে তৈরি গ্ৰন্থাগারকে বলা হয় বিষয় গ্ৰন্থাগার।এর বৈশিষ্ট্য হল।-

  • সাধারণত এক একটি বিষয়ের উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়।
  • এই গ্ৰন্থাগারে বিভিন্ন শ্রেণির জন্য বিভিন্ন বিষয়ের অনুযায়ী বই রাখার ব্যবস্থা করা হয়।
  • কেবলমাত্র পাঠ্যবই থেকেই শিক্ষার্থীরা সম্পূর্ণ জ্ঞান লাভ করতে পারে না,তাই অতিরিক্ত জ্ঞান অর্জনের জন্য এই গ্ৰন্থাগারের শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করা হয়।

৪. শিহ্মক-শিহ্মিকা কেন্দ্রিক গ্ৰন্থাগার -

শিহ্মক-শিহ্মিকার জ্ঞানের পরিধি আরও বিস্তৃত করার জন্য এবং বিভিন্ন বিষয়ে আধুনিক তথ্য সম্বন্ধে জানার জন্য শিহ্মক-শিহ্মিকার একটি পৃথক গ্ৰন্থাগার তৈরি হয়।একে শিহ্মক-শিহ্মিকা কেন্দ্রিক গ্ৰন্থাগার বলা হয়।এর বৈশিষ্ট্য হল।-

  • এখানে উন্নততর তথ্য সমন্বিত পুস্তক ও বিভিন্ন জাতীয় জ্ঞান বিজ্ঞানের তথ্য সমৃদ্ধ পত্রিকা থাকবে।
  • এই গ্ৰন্থাগারে মাধ্যমে শিহ্মক-শিহ্মিকার মধ্যে অতিরিক্ত জ্ঞান অর্জনে করবেন।
  • তাঁদের শিহ্মাদান পদ্ধতির উৎকর্ষ সাধিত হবে এবং প্রয়োজনবোধে শিহ্মক শিহ্মিকার গবেষণামূলক কাজ করতে পারেন।
  • তবে পুস্তক সংগ্ৰহের ব্যাপারে শিহ্মক-শিহ্মিকাদের অত্যন্ত সচেতন হতে হবে এবং এর জন্য বিভিন্ন অভিজ্ঞ বিষয় শিহ্মক শিহ্মিকার নিয়ে একটি পুস্তক নির্বাচন কমিটি তৈরি করতে হবে।
  • এই গ্ৰন্থাগারের জন্য সরকারী ভাবে অনুদান,M.L.A. ও M.P. দের ফান্ড,সর্বশিহ্মা অভিযানের ফান্ড থেকে বিদ্যালয় গুলি আর্থিক সহায়তা পায়।
  • এই অনুদানের অর্থের একটি অংশ গ্ৰন্থাগারের জন্য বরাদ্দ করে তার থেকে শিহ্মার্থীদের জন্য উপযোগী নানা ধরনের বই যেমন - জ্ঞান বিজ্ঞান, জীবন কাহিনী,ভ্রমন কাহিনী, দুঃসাহসিক অভিযান, ছোটোদের উপযোগী গল্প, কিশোর উপন্যাস,নাটক প্রভৃতি ক্রয় করা যেতে পারে।
  • গ্ৰন্থাগার পরিচালনা করার জন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি থাকবে।

5. গ্ৰন্থাগারিক -

গ্ৰন্থাগারের কাজকর্ম সুষ্ঠভাবে পরিচালনার জন্য অবশ্যই যোগ্য গ্ৰন্থাগারিক দরকার। তাঁর শিহ্মাগত ও বৃত্তিমূলক যোগ্যতা থাকবে। তাঁর গ্ৰন্থাগার সম্পর্কে জ্ঞান থাকা প্রয়োজন।তিনি গ্ৰন্থাগারে যে সমস্ত কার্য পরিচালনা করেন,তা হল।-

  • তিনি বৈজ্ঞানিক ভিত্তিতে বিষয় অনুসারে তালিকা, ভাষা অনুসারে তালিকা এবং লেখক অনুসারে তালিকা প্রস্তুত করতে হবে।
  • তিনি সংগ্ৰহ খাতা লেখার বিষয়ে অভিজ্ঞ হবেন।
  • গ্ৰন্থাগারের বইগুলির যথার্থ শ্রেনিকরন করবেন।
  • গ্ৰন্থাগারিকদের অন্যতম দায়িত্ব হল গ্ৰন্থাগারে পুস্তক স্টক খাতায় নথিভুক্ত করা এবং নতুন বই ক্রয় করা ইত্যাদি।
  • শিক্ষার্থীদের গ্ৰন্থাগারে পুস্তক প্রদানে সমস্ত কার্য সম্পাদন করবেন।
  • শিক্ষার্থীদের কাছে কোনো পুস্তক দেরি করে গ্ৰন্থাগারে জমা দিলে,তারজন্য ফাইন নির্ধারন করবেন।

6. বিদ্যালয়ের গ্ৰন্থাগারের প্রয়োজনীয়তা -

একটি বিদ্যালয়ের গ্ৰন্থাগার হল শিহ্মার একটি প্রত্যহ্ম সক্রিয় সংস্থা।যা শিহ্মার্থীদের সঙ্গে শিহ্মক-শিহ্মিকার জ্ঞানের রসদ জুগিয়েছে।তাই বিদ্যালয়ের গ্ৰন্থাগারকে বলা হয়েছে দ্বিতীয় শিহ্মক। একটি বিদ্যালয়ের গ্ৰন্থাগারের যে সমস্ত প্রয়োজনীয়তা গুলি রয়েছে, তা হল -

১. শিক্ষার্থীদের জ্ঞানের চাহিদা পূরণ -

বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে সময়ের অভাবের জন্য অনেকহ্মেত্রে শিহ্মক শিহ্মিকার পাঠ্য বিষয়টি বিস্তৃত ভাবে শিহ্মার্থীদের কাছে ব্যাখ্যা করতে পারে না।তার ফলে কোনো সময় শিক্ষার্থীদের কাছে বিষয় বস্তুটির পরিষ্কার হয় না।অবসর সময়ে শিক্ষার্থীরা গ্ৰন্থাগারে নিজেরা একাধিক বই পড়ে বিষয়টি আয়ত্ত করে।পাঠ্য পুস্তকের বাইরেও জ্ঞান লাভের জন্য গ্ৰন্থাগারে রাখা নানান বিষয়ের পুস্তক থেকে তাদের চাহিদা পূরণ করছে।

২. শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্ব শিখনের অভ্যাস গঠন -

গ্ৰন্থাগার হল একটি সার্বজনীন সংস্থা। এখানে প্রত্যেক শিক্ষার্থী বা ব্যক্তি তার পছন্দ ,রুচি এবং হ্মমতা অনুযায়ী পড়ার সুযোগ পায়।এর ফলে তার মধ্যে স্ব শিখনের অভ্যাস গঠিত হয়।

৩. অবসর সময়ে শিক্ষা -

ছুটির দিনগুলিতে শিক্ষার্থীদের অর্থহীন কাছে অনেক হ্মেত্রে সমাজের অপচয় হয়ে থাকে।অবসর সময়ে একটি ভালো বইয়ের মতো এমন সঙ্গী আর নেই। সুতরাং শিক্ষার্থীদের তাদের অবসর সময় কাটতে গ্ৰন্থাগার বিশেষভাবে শিক্ষার্থীদের সাহায্যে করে।

৪. সহ পাঠক্রমিক কাজে সহায়ক -

বিদ্যালয়ের নানাবিধ সহ পাঠক্রমিক কাজ,যেমন - সাহিত্য সভা, আলোচনা চক্র,বির্তক সভা ও বক্তৃতা ইত্যাদি অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।এই সব কাজে অংশগ্রহণ করতে হলে শিক্ষার্থীদের নানা তথ্য সংগ্রহের প্রয়োজন হয়। এজন্য তাদের কাছে গ্ৰন্থাগারের ব্যবহার অপরিহার্য হয়ে ওঠে।

৫. শিক্ষার্থীদের মধ্যে সামাজিক গুণাবলী বিকাশ -

গ্ৰন্থাগারের কতকগুলি বিধি নিষেধ মেনে চলার প্রয়োজন হয়। নিয়মানুবর্তিতা, শৃঙ্খলা বোধ, নীরবতা পালন ইত্যাদি কতকগুলি সামাজিক সু-অভ্যাস শিক্ষার্থীদের মধ্যে তৈরি হয়।

৬. শিক্ষার্থীদের মধ্যে সাংস্কৃতিক কেন্দ্রিক বিকাশ -

বহুহ্মেত্রে বিদ্যালয়ের ন্যায় গ্ৰন্থাগারকে কেন্দ্র করে শহর বা পল্লী অঞ্চলের সাংস্কৃতিক জীবন গঠিত হয়ে থাকে।গ্ৰন্থাগারের প্রর্দশনী শিক্ষামূলক আলোচনা সভা, চলচ্চিত্র প্রদর্শনী ইত্যাদি আয়োজন করার ফলে শিহ্মার্থীদের মধ্যে সাধারণ মানুষের মনে কৃষ্টির প্রতি শ্রদ্ধাবোধ সৃষ্টি হয়।

৭. আধুনিক শিহ্মণ পদ্ধতির সহায়ক -

আধুনিক গতিশীল শিহ্মন পদ্ধতি যেমন ডল্টন পরিকল্পনা, প্রোজেক্ট পদ্ধতি, ওয়ার্কশপ পদ্ধতি, ব্যাটাভিয়া পরিকল্পনা ইত্যাদি উপযুক্ত বিদ্যালয় গ্ৰন্থাগার ছাড়া সার্থক হতে পারে না।এই সকল পদ্ধতিকে সফল করতে হলে গ্ৰন্থাগারের ভূমিকা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ এবং আবশ্যিক।

৮. শিক্ষার্থীদের মধ্যে ঐতিহ্যের বিকাশ -

সাধারণত, এক একটি পুস্তকের মধ্যে সংরহ্মিত হয় বিভিন্ন মানুষের দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টায় যে সমস্ত অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছে সেই সমস্ত বিষয়,তাই বিদ্যালয়ের গ্ৰন্থাগার হল বৃহত্তর মানবজাতির অভিজ্ঞতার সঙ্গে শিহ্মার্থীদের পরিচয় ঘটাতে সহ্মম হয়।এর ফলে শিহ্মার্থীদের দৃষ্টিভঙ্গি প্রসারিত হয় তাদের আগ্ৰহের হ্মেত্রে বিস্তৃত হয় এবং তারা দেশকাল ভেদে মানুষের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে ওঠে।

6. শিহ্মকের ভূমিকা -

  • শিহ্মক শিহ্মিকা মাঝে মাঝে গ্ৰন্থাগারের উপযোগিতা সম্পর্কে নির্দেশ দেবেন।
  • মাঝে মাঝে শিক্ষার্থীদের পঠিত বইয়ের সংখ্যা যদি শিহ্মক-শিহ্মিকার দ্বারা নির্ধারন করেন এবং যেসব শিক্ষার্থীরা কম বই পড়েছে তাদের যদি উৎসাহিত করতে পারেন,তাহলে শিহ্মার্থীরা এ বিষয়ে আগ্ৰহ প্রকাশ করে।
  • গ্ৰন্থাগারে পঠিত বিভিন্ন বইয়ের বিষয়বস্তু সম্পর্কে যদি শিহ্মক-শিহ্মিকার মাঝে মাঝে আলোচনা ব্যবস্থা করেন, তাহলেও শিক্ষার্থীদের মধ্যে আগ্ৰহ বৃদ্ধি পাবে।
  • বিদ্যালয়ের সময় তালিকায় গ্ৰন্থাগার ব্যবহারের নির্দিষ্ট সময় দিতে হবে।
  • শিহ্মক-শিহ্মিকাকে দৈনন্দিন পাঠ পরিচালনার সময় পাঠ্য বিষয়বস্তুর সম্পর্কে আগ্ৰহ সঞ্চার করতে পারেন এবং আলোচনার বিষয়বস্তু কোন বইতে পাওয়া যাবে সে সম্পর্কে জানান তাহলে শিহ্মার্থীরা গ্ৰন্থাগারে ব্যবহারে উৎসাহিত হবে।
  • সুস্থ ও সমাজ সম্মত ভাবে অবসর সময় যাপন মানুষের একটি আদর্শ চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য।এই উদ্দেশ্য বর্তমানে শিহ্মাকে পরিচালিত করা হয়।গ্ৰন্থাগারে অবসর সময়ে বই পড়া একটা ভালো অভ্যাস। বিদ্যালয়ের গ্ৰন্থাগারে শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই অভ্যাস গঠনে সহায়তা করে।
  • বিদ্যালয়ের গ্ৰন্থাগার ব্যবহার করার জন্য কতকগুলি যে নিয়ম মানতে হয়, তার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিয়মানুবর্তিতার মতো, চারিত্রিক গুণের বিকাশ হয়।
  • বিদ্যালয়ের গ্ৰন্থাগারে বইয়ের সঙ্গে বিভিন্ন রকম শিহ্মা সুলভ প্রদ্দীপন সংরহ্মণ করা হয়।শিহ্মক-শিহ্মিকারা এই শিহ্মা সহায়ক উপকরণ ব্যবহার করার সুযোগ পেলে শ্রেণি শিহ্মার বিষয়বস্তুকে আকর্ষনীয় ও ইন্দ্রিয় গ্ৰাহ্য করে তুলতে পারবেন।
  • শিহ্মক-শিহ্মিকাদের নিজেদের প্রস্তুত করতে বিদ্যালয় গ্ৰন্থাগার থেকে এই সংগ্ৰহ করতে পারেন এবং সমসাময়িক বিষয়কে জেনে নেওয়ার সুযোগ করে নিতে পারেন। অর্থাৎ নিজেদের আত্মোন্নতি করতে ও এই বিদ্যালয়ে গ্ৰন্থাগারের গুরুত্ব উপলব্ধি করা যায়।
  • শিক্ষার্থীদের বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ ও বিদ্যালয়ে গ্ৰন্থাগারকে কেন্দ্র করে দেওয়া যায়।যেমন শিহ্মার্থীদের গ্ৰন্থাগার পরিচালনার অংশগ্রহণে সুযোগ দিলে তারা এই কাজের দায়িত্বের সঙ্গে পরিচিত হয়।

7. বর্তমানে বিদ্যালয়ের গ্ৰন্থাগারের অবস্থান -

শিক্ষা ব্যবস্থার গতানুগতিক পদ্ধতি বা রূপের কায়িক পরিবর্তনের ফলে আধুনিক শিখন পদ্ধতি মাধ্যমে মাধ্যমিক স্তরের বিদ্যালয় গুলিতে পঠন পাঠান করানো হয়েছে।তবে এই আধুনিক শিখন পদ্ধতির শিহ্মার্থীদের যে সমস্ত ক্রটি বিচ্যুতি দেখা যাচ্ছে, তার মধ্যে অন্যতম হল গ্ৰন্থাগারের ব্যবস্থা। বর্তমানে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের গ্ৰন্থাগারে অবস্থান খুবই খারাপ।নিন্মে তা বর্ণনা করা হল।-

১. কহ্মের অভাব -

বর্তমানে দেখা যায় যে, অধিকাংশ বিদ্যালয়ের গ্ৰন্থাগারের জন্য পৃথক কোনো কহ্মের অভাব দেখা যায়।

২. গ্ৰন্থাগারের ব্যবহার -

সাধারণত,সরকারী ভাবে বা M.L.A. ও M.P. ফান্ড বা সর্বশিহ্মা অভিযান ফান্ড থেকে প্রাপ্ত অর্থে বিদ্যালয় গুলিতে গ্ৰন্থাগার স্থাপন করা হলেও তা শিহ্মার্থীরা ব্যবহার না করার গ্ৰন্থাগারের গুরুত্ব হ্রাস পায়।

৩. প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত গ্ৰন্থাগারিকের অভাব -

বর্তমানে মাধ্যমিক স্তরের বিদ্যালয় গুলিতে শিহ্মক শিহ্মিকা এবং অন্যান্য শিক্ষা কর্মী নিয়োগ করা হলেও উপযুক্ত প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত গ্ৰন্থাগারিকের অভাব দেখা যায়। সাধারণত এই সমস্ত বিদ্যালয়ে গ্ৰন্থাগারিক না থাকায় গ্ৰন্থাগারের কার্যাবলী গুলি সম্পাদন করা যায় না।

৪. শিক্ষার্থীদের জ্ঞান চাহিদা পূরণের ব্যর্থতা -

মাধ্যমিক স্তরের বিদ্যালয় গুলিতে সাধারনত শিক্ষার্থীদের চাহিদা,রুচি এবং আগ্ৰহ অনুসারে অধিকাংশ গ্ৰন্থাগার গুলিতে বইয়ের ব্যবস্থা নেই।ফলে শিহ্মার্থীদের জ্ঞানে চাহিদা পূরণের ব্যর্থতা হয়।

৫. শিহ্মক শিহ্মিকা উৎসাহে অভাব -

বর্তমান মাধ্যমিক বিদ্যালয় গুলিতে কিছু কিছু শিহ্মার্থীদের গ্ৰন্থাগারের ব্যবহারের প্রতি আগ্ৰহ দেখালেও শিহ্মক শিহ্মিকার উৎসাহের অভাবে তাদের গ্ৰন্থাগারের প্রতি আগ্ৰহ ক্রমশ হ্রাস পায়।

৬. পরিকাঠামোর অভাব -

কোনো কোনো বিদ্যালয়ের ভালো গ্ৰন্থাগার থাকলে বিদ্যালয়ের উপযুক্ত পরিকাঠামো ও ব্যবহারের অভাবে গ্ৰন্থাগার গুলির কোনো গুরুত্বই থাকে না।

৭. শিহ্মাব্যবস্থা ক্রটি -

বর্তমানে বিদ্যালয়ের শিহ্মা ব্যবস্থার শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাঠ্য পুস্তক ছাড়া অন্য কোনো পুস্তকের পঠনের প্রতি বিমুখতা গ্ৰন্থাগারে গুরুত্ব হ্রাস করছে।

৮. শিক্ষার্থীদের অবসর সময় -

বর্তমানে বহু বিদ্যার্থী বিদ্যালয়ের তাদের অবসর সময়ে খেলতে অতিবাহিত করে,ফলে গ্ৰন্থাগারের গুরুত্ব হ্রাস পেয়েছে। এছাড়াও মোবাইল ফোনের ব্যবহার করার ফলে গ্ৰন্থাগারে ব্যবহারে বিমুখতা সৃষ্টি হয়।

৯. বিদ্যালয়ের সময় তালিকায় গ্ৰন্থাগার স্থানের অভাব -

সাধারণত, প্রতিটি মাধ্যমিক স্তরের বিদ্যালয় গুলিতে যে সময় তালিকা রচনা করা হয়,তাতে বিষয় ভিত্তিক পাঠক্রম সহ কর্মশিহ্মা ও শারীরিক শিক্ষা অন্তর্গত করা হলে গ্ৰন্থাগারের জন্য কোনো সুনির্দিষ্ট সময় তালিকা নেই।যা শিহ্মার্থীর মধ্যে সমস্যার সৃষ্টি করে।

১০. গ্ৰন্থাগারের পুস্তকের অভাব -

বর্তমানে অধিকাংশ গ্ৰন্থাগারের সাধারণ পাঠ্য পুস্তকের অভাব আছে। এছাড়াও রেফারেন্স বইয়ের প্রশ্নই ওঠে না ইত্যাদি।এই রূপ বিবিধ অসুবিধা থাকার বিদ্যালয়ের গ্ৰন্থাগার গুলির অবস্থা খুবই শোচনীয় অবশ্য খুব অল্প সংখ্যক নামীদামী বিদ্যালয়ে গ্ৰন্থাগার আছে কিন্তু সংখ্যায় তারা খুবই কম।

8. উপসংহার -

পরিশেষে বলা যায় যে, শিহ্মার্থীদের অভিজ্ঞতাই বিদ্যালয়ের গ্ৰন্থাগারের প্রধান উপজীব্য বিষয়। শিক্ষার্থীদের বৌদ্ধিক বিকাশ ঘটায় এই গ্ৰন্থাগার। শিক্ষার্থীদের এই বৌদ্ধিক প্রত্যাখান মোকাবিলা করার জন্য গ্ৰন্থাগারিককে সর্বদা এ বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে,যাতে শিক্ষার্থীদের উন্নতি ও বিকাশ খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং সেই বিশেষ উদ্দেশ্য সফল করার জন্য গ্ৰন্থাগারকে উপযুক্তভাবে গড়ে তুলতে হবে।তাই রাধাকৃষ্ণান কমিশন এই গ্ৰন্থাগারকে 'বিদ্যালয়ের হৃদয়' বলে প্রশংসা করেছেন ও 'পড়ুয়াদের কারখানা' বা 'পন্ডিতদের ল্যাবরেটরি' বলে উল্লেখ করেছেন।

CLICK HERE -

ENGLISH VERSION PDF FILE

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post