Policy Issues And Language At School||বিদ্যালয়ের ভাষা নীতি ও ভাষা শিখন

Policy Issues And Language At School||বিদ্যালয়ের ভাষা নীতি ও ভাষা শিখন

Policy Issues And Language At School||বিদ্যালয়ের ভাষা নীতি ও ভাষা শিখন

BENGALI VERSION||ENGLISH VERSION

Policy Issues And Language At School||বিদ্যালয়ের ভাষা নীতি ও ভাষা শিখন
Policy Issues And Language At School


(*** ENGLISH VERSION FILE BELOW THE ARTICLE BY PDF FORMAT)

Policy Issues And Language At School

BENGALI VERSION -

1. ভূমিকা - 

বিদ্যালয় হল সমাজের একটি ক্ষুদ্র সংস্করণ।আবার সমাজের সকল স্তরের মানুষের সংযোগে যেহেতু ভাষার প্রাণ সঞ্চারিত হয় তাই ভাষার একটি সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা আছে।ভাষায় সমাজ সচেতনতা সর্বদাই বর্তমান।অন্যদিকে সমাজের একটি বৃহত্তর রূপ হল দেশ বা রাষ্ট্র। তাই কোনো একটি রাষ্ট্রীয় নিয়ম নীতিই হল ভাষা নীতি। শিক্ষা ব্যবস্থাতে ভাষা একটি গুরুত্ব রয়েছে আর এই ভাষা নীতি গুরুত্ব অপরিসীম।

2. ভাষা -

প্রত্যেক প্রাণীই ভাষার ব্যবহার করে।কিন্তু মানুষের ভাষার ব্যবহার উন্নত মানের।জন্মের পরেই মানুষের সম্পূর্ণ ভাষার বিকাশ হয় না।আস্তে আস্তে ভাষার বিকাশ হয়।ভাষা হল কিছু চিহ্ন বা প্রতীকের সমষ্টি।যার প্রত্যেকটির কিছু নির্দিষ্ট অর্থ রয়েছে এবং যার উদ্ভব হয় সমাজ থেকে।Baron - এর মতে,ভাষা হল - "A System of symbols, plus rules for combining them,used to communication information. J. W. Santrock তাঁর বই "Educational Psychology " তে ভাষার সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলেছেন - " Language is a form of communication whether spoken, written or signed that is based on a system of symbols."

3. ভাষা শিক্ষার উদ্দেশ্যাবলী -

  • ভাষা যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে।
  • ভাষা বিকাশ ও চর্চা এবং বৌদ্ধিক বিকাশ ঘনিষ্ঠ ভাবে সম্পর্কিত। 
  • ভাষা চিন্তার বাহন। 
  • ভাষা নিজেকে প্রকাশ করার হাতিয়ার। 
  • ভাষা মানুষের প্রহ্মোভজনিত উত্তেজনা থেকে মুক্তির উপায়।
  • ভাষার সৃজনশীলতার তার পরিপোষক। 
  • ভাষা মানুষের সৌন্দর্য চেতনার পরিপোষক।

4. ভাষা নীতি ধারণা ও সংজ্ঞা -

কোনো একটি রাষ্ট্রের শিক্ষাব্যবস্থায় ও রাষ্ট্রীয় কার্য পরিচালনার ব্যাপারে একটি নির্দিষ্ট ভাষা ব্যবহারের অনুসৃত রাষ্ট্রীয় নীতিকে ভাষা নীতি নামে বিবেচনা করা হয়।

সংজ্ঞা -

Kaplan এবং Baldauf (1997) এর মতে,"একটি ভাষা নীতি হল সমাজ,গোষ্ঠী বা সিস্টেমের পরিকল্পিত ভাষা পরিবর্তন অর্জনের উদ্দেশ্য ধারণা,আইন,প্রবিধান,নিয়ম এবং অনুশীলনের একটি অংশ।"

McCarty(2011) ভাষা নীতিকে 'একটি জটিল সামাজিক,সাংস্কৃতিক প্রক্রিয়া সংজ্ঞায়িত করেছেন,মানুষের মিথস্ক্রিয়া,আলোচনা এবং ক্ষমতার সম্পর্কে মধ্যস্থতার উৎপাদনের পদ্ধতি।এই প্রক্রিয়া গুলির নীতি তাদের ভাষা নিয়ন্ত্রক ক্ষমতার মধ্যে থাকে।অর্থাৎ যে উপায়ে তারা বৈধ এবং অবৈধ ভাষার কর্ম এবং ব্যবহার সম্পর্কে আদর্শিক দাবি প্রকাশ করে, যার ফলে ভাষার মর্যাদা এবং ব্যবহার গুলি নিয়ন্ত্রণ করে।'

5. ভাষা নীতির উদ্দেশ্যাবলী - 

  • ভাষা নীতির মাধ্যমে ভাষার বানান নীতি গঠনে সহায়তা করে।
  • রাষ্ট্রের চিন্তা ও কল্পনা শক্তি বিকাশে সহায়তা করে। 
  • রাষ্ট্রের সাংস্কৃতিক বিকাশের ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। 
  • শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে ভাষা অপরিহার্যতার দিকটি উল্লেখ করা থাকে। 
  • ভাষা নীতিতে জাতীয় ভাষা ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত নির্দেশনা দেয়।

6. ভারতীয় শিক্ষা ব্যবস্থার ভাষা নীতির ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট -

প্রাচীন ভারতের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে,জনগণের শিক্ষা মাতৃভাষার সম্পন্ন হলেও উচ্চ শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে ছিল সংস্কৃত ভাষা। মধ্যযুগের ইতিহাসেও উচ্চ শিক্ষার বাহন হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে সংস্কৃতি,আরবি অথবা ফারসি,লৌকিক বা কথ্য ভাষা হিসেবে হিন্দি ও উর্দুকে বিবেচনা করা হলেও যে সময় গণশিক্ষার বাহন ছিল সংস্কৃত ও আরবি।ইসলামিক শাসন শেষ হওয়ার সাথে সাথে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তিত হলে ইংরেজি ভাষার প্রধান্য বিস্তৃত হতে থাকে।

7. প্রাক্ স্বাধীনতা কালীন ভারতীয় শিক্ষা ব্যবস্থার ভাষা নীতি -

ভাষা শিক্ষা সম্পর্কিত প্রথম বিতর্ক সৃষ্টি হয় যখন 1813 খ্রিস্টাব্দে East India Company - র সনদ অনুযায়ী ভারতীয়দের শিক্ষার জন্য বাৎসরিক এক লক্ষ টাকা ব্যয়ে করা হবে তা স্থির করতে না পেরে খোলা বিতর্কের সূচনা হয়।

       1835 খ্রিস্টাব্দে লর্ড মেকলের সুপারিশ ক্রমে বেন্টিঙ্ক ইংরেজি ভাষাকে শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।1884 খ্রিস্টাব্দে উডের ডেসপ্যাচে বলা হয় মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষা দেওয়া হলেও ইংরেজিকে আবশ্যিক ভাষা হিসেবে গুরুত্ব দিতে হবে।1882 খ্রিস্টাব্দে হান্টার কমিশন প্রাথমিক স্তরে শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে মাতৃভাষাকে স্বীকৃতি দানের কথা জানালেন "Primary Education be regarded as the instruction of the Masses through the Vernacular......". 

      1917 - 1919 স্যাডলার কমিশন বা কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে মাতৃভাষাকে স্বীকৃতি দানের কথা বলা হয়।এ প্রসঙ্গে আশুতোষ মুখোপাধ্যায় মাতৃভাষা সপহ্মে অভিমত দিলে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষাদানের সুপারিশ করা।উচ্চতর শিক্ষার ক্ষেত্রে অবশ্যই ইংরেজি শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে গৃহীত হয়।1940 খ্রিস্টাব্দের বিদ্যালয় স্তরে শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে মাতৃভাষাকে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়েছিল।

8. স্বাধীনতা পরবর্তী কালীন ভারতীয় শিক্ষা ব্যবস্থায় ভাষা নীতি -

স্বাধীন ভারতের শিক্ষার পূর্ন গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। স্বাধীনতার পর হিন্দিকে জাতীয় ভাষা হিসেবে গ্রহণ করা হয়।ফলে সরাসরি হিন্দি ভাষাকে বিদ্যালয় পাঠক্রমের সঙ্গে যুক্ত করার প্রয়াস শুরু হয়।এই প্রসঙ্গে আরও একটি বিষয় উল্লেখ করা দরকার যে ভারতীয় সংবিধানে একদিকে যেমন হিন্দিকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়,তেমনি অন্যদিকে ইংরেজি ভাষাকে আরও 15 বছরের জন্য রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।শিক্ষার ব্যবস্থায় বিভিন্ন কমিশন ও জাতীয় শিক্ষা নীতির প্রস্তাবিত করা হয়েছিল। - 

১. রাধাকৃষ্ণন কমিশন বা বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন(1948) -

রাধাকৃষ্ণন কমিশনের রিপোর্টে মাধ্যমে শিক্ষা ব্যবস্থা প্রথাগত দিক পরিবর্তন করা হয়েছিল।রাধাকৃষ্ণন কমিশনের রিপোর্টের সুপারিশ গুলি হল -

  1. যুক্তরাষ্ট্রীয় ভাষা বিভিন্ন উৎস থেকে সংগৃহীত শব্দের আত্তীকরণ ও ধারণা এর মাধ্যমে সেগুলিকে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন উৎস থেকে ভারতীয় ভাষার অন্তর্ভুক্ত স্বাতন্ত্রের সমস্যাকে উপেক্ষা করে। 
  2. আন্তর্জাতিক প্রযুক্তিগত ও বৈজ্ঞানিক পরিভাষা গৃহীত হবে,আগত শব্দ সঠিকভাবে অঙ্গীভূত হবে, তাদের উচ্চারণ ভারতীয় ভাষার ধ্বনিতাত্ত্বিক ব্যবস্থাপনার অন্তর্ভুক্ত হবে এবং তাদের বানান ভারতীয় লিপির শব্দ বিন্যাসের অনুসারী হবে।
  3. উচ্চ শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে ইংরেজির পরিবর্তে ভারতের সর্বাধিক ব্যবহৃত ভাষার ব্যবহার আশু প্রয়োজন।কিন্তু অত্যাধিক জটিলতার কারণে কখনোই সংস্কৃত ভাষা ব্যবহৃত হবে না। 
  4. (i).বিশ্ব বিদ্যালয় ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাক্ষেত্রের ছাত্র-ছাত্রীদের তিনটি ভাষা হবে।-আঞ্চলিক ভাষা,যুক্তরাষ্ট্রীয় ভাষা এবং ইংরেজি(ইংরেজি ভাষায় পাঠ্যবই পঠনের যোগ্যতা অর্জনের জন্য ইংরেজি)এবং (ii).উচ্চ শিক্ষা আঞ্চলিক ভাষার বিকল্প সহ তার যান্ত্রিকতার মাধ্যমে পরিচালিত হয় এবং একইসঙ্গে কয়েকটি বিষয় বা সবকটি বিষয়ে নির্দেশনা দানের মাধ্যমে হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রীয় ভাষাকে ব্যবহার করা হবে। 
  5. যুক্তরাষ্ট্রীয় ভাষার জন্য দেবনাগরী হরফ গ্রহণ করা হবে এবং তার কিছু জটিলতা দূরীভূত করা হবে। 
  6. নিম্নলিখিত ধাপগুলি যুক্তরাষ্ট্রীয় ও আঞ্চলিক ভাষার বিকাশে আশু প্রয়োজন - (i) সকল ভারতীয় ভাষার কাছে গ্রহণযোগ্য এমন শব্দের বৈজ্ঞানিক শব্দভাণ্ডার প্রস্তুতিকরণের জন্য বৈজ্ঞানিক ও ভাষাবিদ সহযোগে একটি পর্ষদ গঠিত হবে। (ii).উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রতি শ্রেণি,ডিগ্রী কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে যুক্তরাষ্ট্রীয় ভাষার পরিচিত করণে প্রাদেশিক সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
২. মুদালিয়ার কমিশন (1952 - 1953) - 

মাধ্যমিক কমিশন বা মুদালিয়র কমিশনের মাধ্যমিক শিক্ষা স্তরে ভাষা শিক্ষা সম্পর্কে যে সমস্ত বিষয়গুলি সুপারিশ করে,সেগুলি হল - 

  • ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত মাতৃভাষা তথা আঞ্চলিক ভাষাকে শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করতে হবে।মাতৃভাষা ছাড়া আরও দুটি ভাষা শিক্ষার্থীদের শিখতে হবে।সেই দুটি ভাষা হবে হিন্দি ও ইংরেজি।অবশ্য দেখা দরকার যাতে দুটি ভাষা একই বছরে না শেখানো হয়। 
  • মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা স্তরে যে ভাষাটি অবশ্যই লিখিত হবে সেটি হয় মাতৃভাষা অথবা আঞ্চলিক ভাষা। 
  • উচ্চতর মাধ্যমিক স্তরে থাকবে বাধ্যতামূলক দুটি ভাষা।
  • প্রাচীন ধ্রুপদী ভাষা (যেমন - সংস্কৃতি) ঐচ্ছিক বিষয় হিসেবে পড়ানো যেতে পারে।
  • ভাষাগত সংখ্যালঘুদের ভাষাকে অবহেলা করা যাবে না।
৩. কেন্দ্রীয় শিক্ষা উপদেষ্টা সংস্থা(Central Advisory Board Of Education/CABE) - 

উপরোক্ত দুটি শিক্ষা কমিশনের সুপারিশ বা সিদ্ধান্তের উপর ভিত্তি করে কেন্দ্রীয় শিক্ষা উপদেষ্টা সংস্থা 1956 খ্রিস্টাব্দে ভাষা সংক্রান্ত কয়েকটি প্রস্তাব গ্রহণ করেন। এখানেও ত্রি - ভাষা সূত্র গৃহীত হয়।1961 খ্রিস্টাব্দে রাজ্য মুখ্যমন্ত্রীদের সম্মেলনে এই ত্রি - ভাষা সূত্র স্বীকৃত হয়। এরপর 1963 খ্রিস্টাব্দে "ভাষা বিল" - এ ত্রি - ভাষা নীতি বা সূত্র গৃহীত হয়। এই ত্রি - ভাষা নীতিতে বলা হয় - শিক্ষার্থীরা মাধ্যমিক স্তরে তিনটি ভাষা শিখবে।এই ব্যাপারে তিনটি প্রস্তাব হল - 

  1. মাতৃভাষা বা কোনো আঞ্চলিক ভাষা শিখবে।
  2. হিন্দি ভাষা,কিন্তু যাদের মাতৃভাষা হিন্দি সেই সমস্ত শিক্ষার্থীরা অন্য যে কোনো আধুনিক ভারতীয় ভাষা শিখবে। 
  3. ইংরেজি অথবা অন্য কোনো বিদেশী ভাষা শিখবে।
৪. কোঠারি কমিশন (1964 - 1966) -

ভারতীয় শিক্ষা কমিশন বা কোঠারি কমিশন একটি সুসমন্বিত ভাষা নীতি কথা উল্লেখ করেন।ভাষা সম্পর্কে কমিশনের মতামত গুলি হল -

  • শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে অবশ্যই মাতৃভাষাকে গুরুত্ব দিতে হবে।মহাবিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা স্তরে ও মাতৃভাষাকে শিক্ষার মাধ্যমে হিসেবে মর্যাদা দিতে হবে।
  • যে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সর্বভারতীয় শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দানের ব্যবস্থা আছে,সেই সমস্ত শিক্ষার প্রতিষ্ঠানে সাময়িক ভাবে ইংরেজিকে শিক্ষার মাধ্যমে হিসেবে রাখতে হবে। পরে ধীরে ধীরে এই সব প্রতিষ্ঠানেও শিক্ষার মাধ্যমে হিসেবে হিন্দিকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
  • উপযুক্ত পরিভাষার অভাব ও বিভিন্ন ভারতীয় ভাষার গণিত,বিজ্ঞান,কারিগরি,চিকিৎসা, কৃষি প্রভৃতি বিষয়গুলি শেখার মতো গ্ৰন্থ না থাকার জন্য উচ্চশিক্ষায় ইংরেজিকে মেনে নিতে হবে এবং তাতে প্রাধান্য দিতে হবে।
  • দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে হিন্দি না ইংরেজিকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে তা নির্ভর করবে স্থানীয় চাহিদার উপর ভিত্তি করে। 
  • শিক্ষার কোনো স্তরেই চারটি ভাষা শিহ্মাকে বাধ্যতামূলক করা যাবে না।সাধারণভাবে বলা যেতে পারে,একটি ভাষাকে শিখতে হবে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত, পঞ্চম শ্রেণি থেকে দুটি ভাষা শিখতে হবে এবং অষ্টম শ্রেণী থেকে তিনটি ভাষা শিখতে হবে।

৫. জাতীয় শিক্ষানীতি 1968 খ্রিস্টাব্দ -

1968 খ্রিস্টাব্দে 17ই জুলাই কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ড. ত্রিগুনা সেনের নেতৃত্বে জাতীয় শিক্ষানীতি ঘোষিত হয়। সেখানে যেভাবে নীতি গ্রহণ করা হয়েছিল তা মূলত ত্রি ভাষা নীতি।যদিও এর সঙ্গে ভাষার উন্নয়নের প্রসঙ্গটি যথার্থ গুরুত্ব পায়।ভাষা সংক্রান্ত যে দিকটি উল্লেখযোগ্য সেগুলি হল নিম্নরূপ -
  • ভাষা উন্নয়ন প্রসঙ্গে নীতিটি ছিল ভারতীয় সংস্কৃতির উন্নয়নের জন্য ভাষার উন্নয়ন ঘটাতে হবে,বিশ্বের করে ভারতীয় ভাষা ও সাহিত্যের উন্নতি ঘটাতে হবে এবং প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের মতো বিশ্ব বিদ্যালয় শিক্ষা স্তরে আঞ্চলিক ভাষাকে শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে।
  • ত্রি ভাষা নীতিকে কার্যকরী করার জন্য রাজ্য গুলিকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।হিন্দি ভাষী রাজ্যের ক্ষেত্রে হিন্দি/ইংরেজি ও একটি আধুনিক ভারতীয় ভাষা। অ - হিন্দি ভাষী রাজ্যের থাকবে আঞ্চলিক ভাষা সহ হিন্দি ও ইংরেজি বিশ্ব বিদ্যালয় ও কলেজ গুলিতে হিন্দি ও ইংরেজিতে উন্নত মানের শিক্ষা দেওয়ার কথা বলা হয়। 
  • হিন্দি ভাষার যাতে দ্রুত উন্নতি সংঘটিত হয় তার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা করতে হবে।যোগাযোগের ভাষা হিসেবে হিন্দিকে উন্নত করার চেষ্টা করতে হবে। 
  • বিশ্ব বিদ্যালয়ের স্তরে সংস্কৃত ভাষা শেখানোর জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
  • ইংরেজি এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক ভাষা শিক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

৬. জাতীয় শিক্ষা নীতি 1986 -

1986 - র শিক্ষার জাতীয় নীতি নিম্নলিখিত পন্থায় 1968 খ্রিস্টাব্দের দৃষ্টিভঙ্গি সঙ্গে মিশ্রিত হয়েছে -

" 1968 খ্রিস্টাব্দের জাতীয় শিহ্মার নীতি বিস্তারিত ভাবে ভাষার উন্নয়নের প্রশ্নটি পর্যলোচনা করেছে,তাঁর আবশ্যিক বিধান গুলি খুব সামান্যই পরিবর্তিত হয়েছে এবং যেভাবে এটি আগে প্রাসঙ্গিক ছিল বর্তমানে তার পরিবর্তন হয় নি।1968 খ্রিস্টাব্দের নীতি এই অংশের প্রয়োগ যেভাবেই হোক বিষয় মাত্রিক হয়েছে।এই নীতি গুলি আরও উদ্দেশ্য প্রনোদিত ভাবে এবং অনলস ভাবে প্রযুক্ত হবে।"

1968 খ্রিস্টাব্দের শিক্ষার জাতীয় নীতি এবং 1986 খ্রিস্টাব্দে শিক্ষার জাতীয় নীতি এই ত্রি ভাষিক সূত্রের গুরুত্ব উপলব্ধি করে এবং এর গ্ৰহন যোগ্যতার সুপারিশ করে।এই সূত্র অনুযায়ী প্রতিটি শিশু নিম্নলিখিত বিষয়ে শিক্ষা লাভ করবে। -

  • প্রথম ভাষা - প্রথম ভাষা মাতৃভাষা বা আঞ্চলিক ভাষার মাধ্যমে শিক্ষা গ্রহণ।
  • দ্বিতীয় ভাষা - হিন্দি ভাষী রাজ্য গুলিতে দ্বিতীয় ভাষাটি অন্য কোনো আধুনিক ভারতীয় ভাষা বা ইংরেজি হবে।অন্য ভারতীয় ভাষার মধ্যে কোনো দহ্মিনী ভাষা অগ্ৰগন্য।অ - হিন্দি ভাষী রাজ্য গুলিতে দ্বিতীয় ভাষা হবে হিন্দি বা ইংরেজি।
  • তৃতীয় ভাষা - হিন্দি ভাষী রাজ্য গুলিতে তৃতীয় ভাষা হবে ইংরেজি বা অন্য কোনো ভারতীয় ভাষা যেটি দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে গৃহীত হয় নি। আর অ - হিন্দি ভাষী রাজ্য গুলিতে একই ভাবে তৃতীয় ভাষা হবে ইংরেজি বা আধুনিক ভারতীয় ভাষা যেটি দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে গৃহীত হয় নি।

৭. জাতীয় শিক্ষা নীতি 2020 -

নতুন শিক্ষানীতি 2020 ত্রি ভাষিক নীতিকে সমর্থন করেছে। নীতিতে বলা হয়েছে -

  • শিক্ষার মাধ্যমে হিসেবে যেখানেই সম্ভব কমপক্ষে গ্ৰেড 5 পর্যন্ত শিক্ষার মাধ্যম তবে বিশেষত গ্ৰেড 8 পর্যন্ত এবং তার পরেও হবে মাতৃভাষা/স্থানীয় ভাষা/আঞ্চলিক ভাষা।
  • বহু ভাষিকতার প্রচারের পাশাপাশি জাতীয় ঐক্যের জন্য ত্রি ভাষার সূত্রটি কার্যকর করা অব্যাহত থাকবে।
  • NEP বলে যে তিন ভাষা সূত্রে আরও নমনীয়তা থাকবে। রাষ্ট্রের উপর কোনো ভাষা চাপিয়ে দেওয়া হবে না।
  • তিনটি ভাষার শেখার জন্য রাজ্য অঞ্চল এবং শিক্ষার্থীদের নিজের পছন্দ হবে,যতহ্মন না তিনটি ভাষার মধ্যে অন্তত দুটি ভারতের স্থানীয় হয়।
  • H.R.D শিক্ষা মন্ত্রকের মতে,ত্রি ভাষা সূত্রটি বৃহত্তর নমনীয়তার সাথে বিদ্যালয়গুলিতে প্রয়োগ করা অব্যাহত থাকবে।তবে কোনো রাজ্যের উপর কোনও ভাষা চাপিয়ে দেওয়া হবে না।

10. উপসংহার - 

ভারতবর্ষ একটি বহুত্ববাদী ও বহুভাষিক রাষ্ট্র। তবুও ভারতবর্ষে শিক্ষাব্যবস্থায় বহুত্ববাদী ও বহুভাষিক তত্ত্ব দুর্বল।সংবিধান কর্তৃক প্রদত্ত অঙ্গীকার অনুযায়ী সংখ্যালঘু ভাষাগুলি কিন্তু তাদের সম্পূর্ণ মর্যাদা লাভ করে নি।সকল সংখ্যালঘু ভাষাই শিক্ষাদানের মাধ্যম হিসেবে গন্য হয় নি। 

         বিদ্যালয়ে ভাষার এই সমস্যাটি বহু বিতর্কের মাঝে বর্ধনশীল।ত্রি ভাষিক সূত্র তার সঠিক গতিপথে প্রযুক্ত হতে পারছে না,সম্ভবত পরিবর্তনশীল পরিস্থিতির কারণেই। ফলে নয়া ভাষা নীতির দ্বারা শিক্ষাব্যবস্থাকে সুসজ্জিত করার সময় উপস্থিতি যে নীতিটি জাতীয় ঐক্য ও বিশ্ব জননী দাবিকে কোনো রকম আপস না করেই ভারতবর্ষের বহুভাষিক সত্তাকে সংরক্ষণ করবে। 

CLICK HERE -

ENGLISH VERSION PDF FILE







Post a Comment (0)
Previous Post Next Post