Language As A Medium Of Communication/যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ভাষা

Language As A Medium Of Communication/যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ভাষা

Language As a Medium Of Communication||যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ভাষা

BENGALI VERSION||ENGLISH VERSION
Language As A Medium Of Communication
Language As A Medium Of Communication



(*** ENGLISH VERSION FILE BELOW THE ARTICLE BY PDF FORMAT)

যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ভাষা 

BENGALI VERSION -

1. ভূমিকা -

ভাষা হল মানুষের এক অনন্য সুলভ সম্পদ।মানুষ তার সমস্ত ভাব প্রকাশের মাধ্যম হল ভাষা।মানুষ তার মনের তথ্য ও ভাবনার আদান প্রদান যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে করে তাকে যোগাযোগ প্রক্রিয়া বলে।অস্তিত্ব রক্ষার জন্য যেমন মানুষ খাদ্য,জল ও আশ্রয় প্রয়োজন তেমনি মানুষের মানসিক ও আবেগমূলক চাহিদার অনুভব ও প্রকাশের জন্য প্রয়োজন যোগাযোগ প্রক্রিয়া।এই যোগাযোগ প্রক্রিয়া ঘটে চলেছে দেহের ভঙ্গিমায়,মুখের কথায়,সংগীতের সুরে চিত্র আর লেখার।প্রানীকূল শারীরিক আর স্বরযন্ত্র নিঃসৃত শব্দের মাধ্যমে ভাব প্রকাশ করা করেছে।
      একইভাবে মানুষ ও তার বর্ণময় জীবন জগতে সর্বহ্মন যোগাযোগ রক্ষন করে চলেছে।প্রথাগত ও প্রথাহীন জগতে সর্বত্র এই প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

2. যোগাযোগের অর্থ ও সংজ্ঞা - 

যোগাযোগ বা জ্ঞাপনের ইংরেজি প্রতিশব্দ হল 'Communication' শব্দটি এসেছে ল্যাটিন শব্দ ' Communis' থেকে,যার অর্থ সাধারন।যখন কেউ কোনো অনুভব,ভাবনা বা প্রতিক্রিয়া সম্পাদন করে তখন তার প্রাথমিক উদ্দেশ্য হল তার ভাব প্রকাশকে সাধারণ গ্ৰাহ্য করে তোলা। Denis Mac Quail এর মতে,' Communication is a process which increases Communality .'
     যোগাযোগ সম্পন্ন হয় প্রতীকের মাধ্যমে।এই প্রতীক ভাষা হতে পারে, আবার ছবিও হতে পারে,সুর হতে পারে, দেহভঙ্গি হতে পারে।প্রতীক সংস্কৃতি সামাজিক বা গোষ্ঠী পরিপ্রেক্ষিতে তৈরি করে একটি প্রতীকী পরিবেশ।এই প্রতীকী পরিবেশের মধ্যে যে সামাজিক সম্পর্ক তৈরি হয় তাকে Denis Mac Quail বলেছেন মানবীয় যোগাযোগ। শিক্ষণ শিখন প্রক্রিয়া এই রকম একটি মানবীয় যোগাযোগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সংঘটিত হয়।
সংজ্ঞা -
Bernard Berelson এবং Leonard Berkowitz এর মতে " Communication is the transmission of information,ideas, emotions,skills etc by use of symbols."

Colin Cheary এর মতে, "Communication is the transmission of stimuli and the evocation of response."

George Gerbrer এর মতে, "Communication is social Interaction through messages."

Wilbur Schramm এর মতে, "When we Communicate ,we are trying to establish a commoncess with some one,That is we are trying to share information an idea or attitude."

এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিক অনুসারে "যোগাযোগ হল চিহ্ন বা প্রতীক বা ভাষার একটি সাধারণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের মধ্যে অর্থের বিনিময়ে।"
3. যোগাযোগের উপাদান -

যোগাযোগের মূলত 6 টি উপাদান রয়েছে।যথা -

১. উৎস বা প্রেরক -
(যিনি সংকেত বা প্রতীক প্রেরণ করলেন বা যেখান থেকে সংকেত প্রেরিত হল তার প্রেরক নামেও পরিচিত।যেমন শ্রেণিকক্ষে শিক্ষক হলেন উৎস বা প্রেরক।) 
২. বার্তা -
(প্রেরক বা উৎস যা প্রেরন করেন সেটিই হল বার্তা।যেমন,শ্রেণিকক্ষে পঠন-পাঠন চলাকালীন শিক্ষক মহাশয় যা পড়াচ্ছেন তাই হল বার্তা।)
৩. মাধ্যম -
( প্রেরক বার্তা যে উপায়ের দ্বারা তথ্য প্রেরণ করা হয়,সেটিই হল মাধ্যম।যেমন,দেহভঙ্গি,সংকেত ভাষা,অঙ্গভঙ্গি।) 
৪. গ্রাহক -
(উৎস থেকে যিনি তথ্য গ্ৰহন করেন,উপলব্ধি করে তাকে গ্রাহক বলে।যেমন,শিক্ষার্থী।)
৫. প্রতিবার্তা -
(উৎস থেকে যে বার্তা একটি বিশেষ মাধ্যমে দ্বারা গ্রাহকের নিকট পৌঁছায় এবং সেই বার্তা বা উদ্দীপনার পরিপ্রেক্ষিতে যে সাড়া দানের কাজ সম্পন্ন হয়,তাই হল প্রতিবার্তা।যেমন,শ্রেণিকক্ষে শিক্ষক দ্বারা পড়ানো পর শিক্ষার্থীদের প্রুত্যত্তরে বা সাড়া দান কার্যের যথার্থ মূল্যায়নের দ্বারা শিক্ষক প্রতিবার্তার গুণগতমান বা যোগাযোগ প্রক্রিয়ায় সাফল্য নির্ধারণ করতে সমর্থ হন।)
৬. সুবিধাকারী ও বাধা দানকারী বিষয়

৪. যোগাযোগের উদ্দেশ্যাবলী - 
  1. বিদ্যালয় যোগাযোগের মাধ্যমে হিসেবে প্রসারের মুখ্য সমস্যাগুলি চিহ্নিত করা। 
  2. শ্রেণিকক্ষে যোগাযোগের ধারণা বিভিন্ন রূপে এবং কার্যকারিতা সম্পর্কে ধারণা লাভ করে।
  3. শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের যোগাযোগের সমস্যাগুলি নির্বাচন করা এবং কোন উপায়ে তা সমাধান করা যায়,তার উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
  4. যোগাযোগ স্থাপনের ধারণা সম্পর্কে জানার চেষ্টা করা।
  5. যোগাযোগের প্রক্রিয়ায় উপাদান ও যোগাযোগের প্রকারভেদ সম্পর্কে জানতে পারা।
  6. যোগাযোগের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের আচরণের পরিবর্তন ঘটানো।
  7. শিক্ষার্থীদের মধ্যে সৌন্দর্যবোধ বিকাশ সাধন করে।
  8. শিক্ষার্থীদের মধ্যে কল্পনা দক্ষতা বিকাশ পায়।
5. যোগাযোগ প্রক্রিয়ার নীতিসমূহ - 

দ্বিমুখী প্রক্রিয়া হিসেবে যোগাযোগ প্রক্রিয়া কতকগুলি মৌলিক নীতি মেনে চলে।সেই নীতি গুলি হল। -

১. প্রস্তুতি ও প্রেষনার নীতি - 

যোগাযোগ প্রক্রিয়া চলাকালীন প্রেরক এবং গ্ৰাহক উভয়কে যেমন মানসিকভাবে সম্পূর্ণ প্রস্তুত থাকা দরকার তেমনি উভয়কেই উচ্চ প্রেষণার অবস্থান করতে হবে।যদি তাদের মধ্যে ঐকান্তিক আগ্রহ ও উৎসাহ প্রভৃতির অভাব ঘটে তাহলে তা যোগাযোগ প্রক্রিয়া এবং ফলশ্রুতিতে বিরূপ প্রভাব পড়ে।

২. কর্মদক্ষতা ও যোগ্যতার নীতি - 

যোগাযোগ প্রক্রিয়ায় প্রেরক এবং গ্ৰাহক উভয়েরই সম্পূর্ণভাবে সামর্থ্য ও যোগ্যতা থাকতে হবে।প্রেরন সংক্রান্ত দক্ষতা না থাকলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আচরণগত পরিবর্তন আনতে তিনি সক্ষম হবেন না।এজন্য শিহ্মকের তেমন একদিকে তাঁর নিজের বিষয় জ্ঞান পান্ডিত্য থাকার তেমনি যোগাযোগ প্রক্রিয়ার কৌশলগুলির প্রয়োগ করার ক্ষেত্র পারদর্শী বা দক্ষ হবেন। 

৩. অংশগ্রহণ ও মিথস্ক্রিয়ার নীতি - 

যোগাযোগ হল একটি দ্বিমুখী প্রক্রিয়া।এজন্য প্রেরক এবং গ্রাহক উভয়কেই যথেষ্ট সক্রিয় হতে হয়।যোগাযোগ প্রক্রিয়ার সাফল্য নির্ভর করে,প্রেরক এবং গ্রাহক কত খানি আন্তরিকভাবে মিথস্ক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে তার উপর।মত বিনিময় বিনিময়,ভাব বিনিময়,তথ্য বিনিময়ের হার কত বেশি হবে শিহ্মন শিখন প্রক্রিয়ার সাফল্যের হার তত বেশি হবে। 

৪. বিষয়বস্তু উপযুক্ততার নীতি -

যোগাযোগ প্রক্রিয়ার যে বিষয় বস্তু প্রেরন করা হয় তা প্রাসঙ্গিক এবং যথেষ্ট উপযুক্ত হওয়া দরকার। যোগাযোগের বিষয়বস্তু যদি গ্ৰাহক এবং প্রেরকের নিকট যথোপযুক্ত,প্রাসঙ্গিক না হয়।সহজ বোধ তার পরিবর্তে দুর্বোধ্য হয়, তবে প্রেরক যেমন বিষয়বস্তুকে সঠিক ভাবে উপস্থাপিত করতে অসমর্থ হন,গ্ৰাহক ও তেমনি সহজভাবে গ্রহণ করতে পারে না। বিষয়বস্তু যদি শিক্ষার্থীর সামগ্রিক সামর্থ্য,পরিনমন উপযোগী এবং চাহিদার সঙ্গে প্রাসঙ্গিক না হয় তাহলে যোগাযোগ প্রক্রিয়া সফল হতে পারে না।সেজন্য শিহ্মন শিখন প্রক্রিয়ার প্রেরক বা শিহ্মককে এমন বিষয়বস্তু নির্বাচন করতে হবে যাতে গ্ৰাহক সহজে স্বচ্ছন্দে নিজের চাহিদার নিবৃত্তির কারন আন্তরিক ভাবে গ্ৰহন করতে পারে এবং প্রকৃত উদ্দেশ্যের অভিমুখে অগ্ৰসর হতে পারে।

৫. যথাযথ মাধ্যমের নীতি - 

যোগাযোগ প্রক্রিয়া প্রেরক,গ্ৰাহক বা বিষয়বস্তু বা বার্তার  উপর শুধুমাত্র নির্ভরশীল নয়।যোগাযোগের জন্য যে মাধ্যম বা চ্যানেল ব্যবহার করা হচ্ছে তাতে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ।ব্যবহৃত মাধ্যমের উপরও যোগাযোগের সাফল্য নির্ভর করে।শিহ্মন শিখন প্রক্রিয়া যে মাধ্যমগুলি শিহ্মক ব্যবহার করবেন সেগুলি তার কাছে স্বচ্ছন্দ হতে হবে,শিক্ষক Verbal and Non Verbal উভয় ব্যাপারে পারদর্শী ও দক্ষ হতে হবে। 

৬. যথোপযুক্ত ঋদ্ধায়নের নীতি -

শিহ্মন শিখন পরিস্থিতিতে যোগাযোগ প্রক্রিয়া চলাকালীন শিক্ষক যে বিষয় উপস্থাপিত করলেন বা বার্তা প্রেরন করলেন তা যদি শিক্ষার্থীকে যথার্থভাবে উদ্দেশ্যমুখি আচরণ পরিবর্তনের ভূমিকা পালন করে শিক্ষার্থী সঠিকভাবে বিষয়বস্তুর তাৎপর্য উপলব্ধি করতে পারে তাহলে শিক্ষক যখন তাৎক্ষণিকভাবে শ্রেণিকক্ষে  মূল্যায়ন করবেন তখন তিনি শিক্ষার্থীর সঠিকভাবে বিষয়বস্তুর তাৎপর্য উপলব্ধি করতে পারে তাহলে শিক্ষক  যখন তাৎক্ষণিকভাবে শ্রেণীকক্ষে মূল্যায়ন করবেন তখন তিনি শিক্ষার্থীদের ভূমিকা থেকে ঠিকঠিক প্রতিক্রিয়া বা  উত্তর পাবেন।সেক্ষেত্রে তিনি পরিতৃপ্তি লাভ করেন।এই পর্যায়টিকে Feedback নামে পরিচিত।এটি যোগাযোগের শেষ পর্যায়। 

৭. সুবিধাকারী ও বাধাদান কারী বিষয়ের নীতি -

যে কোনো কাজের কিছু সুবিধা ও অসুবিধা থাকে। যোগাযোগ প্রক্রিয়ার এই বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায়। শিক্ষণ শিখন পরিস্থিতিতে শিহ্মককে এই বিষয়গুলি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ও সতর্ক থেকে যোগযোগ প্রক্রিয়া  পরিচালনা করতে হয়।

6. যোগাযোগের প্রকারভেদ -

যোগাযোগকে নানা প্রকার ভাবে ভাগ করা যায়।যথা -

১. উপস্থাপনার ভিত্তিতে যোগাযোগকে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়।সেগুলি হল - 

ক. মুখোমুখি যোগাযোগ - (অর্থাৎ একটি ব্যক্তি বলেন অন্য ব্যক্তি শুনবেন,উদাহরণ সেমিনার,আলোচনা সভা, একে অন্যের সাথে কথোপকথন।)

খ. লিখন - পঠন যোগাযোগ - (এটি মূলত লেখক ও পাঠকের মধ্যে ঘটে থাকে,যেমন - সংবাদপত্র,পড়া, পাঠ বই পড়া।) 

গ. দর্শন পর্যবেক্ষণ যোগাযোগ - (দর্শন পর্যবেহ্মন দ্বারা যোগাযোগের ঘটে,উদাহরণ - নাটক,থিয়েটার।)

২. কর্মসম্পাদন এবং পারস্পরিক ক্রিয়া ভিত্তিতে যোগাযোগকে ছয় ভাগে ভাগ করা যায়।যথা -

  1. আন্তর ব্যক্তিগত যোগাযোগ। 
  2. অন্তর ব্যক্তিগত যোগাযোগ।
  3. হ্মুদ্র / ছোটো দলীয় যোগাযোগ।
  4. বৃহৎ দলীয় যোগাযোগ।
  5. গণ যোগাযোগ।
  6. প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগ।
৩. শ্রেণিকক্ষে যোগাযোগ প্রক্রিয়া -

শিহ্মন শিখন প্রক্রিয়া হল ত্রিমুখী যোগাযোগ প্রক্রিয়া। শিহ্মন শিখন প্রক্রিয়া মুখ্য বিষয় হল শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর মধ্যে পারস্পরিক ক্রিয়া বা মিথস্ক্রিয়া।এই মিথস্ক্রিয়া ঘটে ত্রিমুখী যোগাযোগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে।এর ফলশ্রুতিতে শিক্ষার্থীর আচরণ পরিবর্তন ঘটে।শ্রেনীকহ্মে যোগাযোগের প্রক্রিয়াকে তিন ভাগের ভাগ করা যায়।যথা -

১. শিক্ষক-শিক্ষার্থীর যোগাযোগ -

শ্রেণিকক্ষের যোগাযোগ প্রক্রিয়াই অনেকটাই সামগ্রিক শিক্ষা ব্যবস্থার সাফল্য রচনা করে।শ্রেনীকহ্মে সাধারণত দুই ভাগে শিক্ষক মহাশয় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন। 
         • বাচনিক যোগাযোগ।
         • অ - বাচনিক যোগাযোগ।

• বাচনিক যোগাযোগ - 

বাচনিক যোগাযোগের প্রধান উপাদান হল ভাষা। প্রতিটি মানুষ তার মনের ভাব প্রকাশ করার জন্য ভাষার সাহায্য নেয়।পৃথিবীর সভ্য সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রেই নিজস্ব ভাষায় এক বা একাধিক অস্তিত্ব আছে।ভাষাই তার সমাজ জীবনকে বেঁধে রেখেছে।যে কোনো ভাষার গঠনগত একক হল শব্দ।আবার একাধিক শব্দ সুষমন্বিত ভাবে একটি অর্থবোধের বা ভাবের প্রকাশ ঘটায়, তাকে আমরা বলি বাক্য।এই শব্দ, বাক্য, ব্যাকরণের নিয়মে পালিত হয়,ভাষাকে তিনটি উপায়ে ব্যবহার করা হয়। 
  • মৌখিক উপায়ে।
  • লিখিত উপায়ে। 
  • মৌখিক ও লিখিত সমন্বয়।
• অ - বাচনিক যোগাযোগ -

অনেক সময় ভাষার প্রয়োগ ছাড়াও তখন কোনো চিহ্ন,প্রতীক বা সংকেতের দ্বারা যোগাযোগ প্রক্রিয়া সাধিত হয় তখন তাকে অ - বাচনিক যোগাযোগ বলা হয়।বাচনিক যোগাযোগের পাশাপাশি অ - বাচনিক উপায়ের দ্বারাও যোগাযোগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যায়।
অ - বাচনিক যোগাযোগ প্রক্রিয়ার প্রধান দিকগুলি হল-
  • মুখমন্ডলের অভিব্যক্তি। 
  • চোখের ভাষা।
  • শারীরিক ভাষা।
  • শব্দ সংকেত।
  • প্রতীকী ভাষা।
২. শিক্ষার্থী শিক্ষক যোগাযোগ -

শিক্ষার্থীর দিক থেকে শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ ঘটে প্রধানত মৌলিক ভাষার মাধ্যমে।শিক্ষার্থীরা শিক্ষককে প্রশ্ন করলে কিংবা শিক্ষকের প্রশ্নের উত্তর দিলে তা মৌখিক ভাষার মাধ্যমেই ঘটে। কিন্তু কখনো কখনো লিখিত উত্তর দেওয়া কিংবা শিক্ষকের নির্দেশ মতো ছবি এঁকে দেখালে অন্য প্রকার যোগাযোগ ঘটে।কিন্তু কোনো ক্ষেত্রেই ভাষার প্রসঙ্গে লঘু হয়ে যায় না।

৩. শিক্ষার্থী শিক্ষার্থী যোগাযোগ -

কোনো পাঠ্য বিষয় শিক্ষক নির্দেশমতো দলগত আলোচনা,পরস্পর মত বিনিময় বা অনুরূপ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের নিজেদের মধ্যে যে যোগাযোগ ঘটে তা প্রধানত মৌখিক ভাষা নির্ভর।কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে পাঠ্য বিষয় সম্পর্কিত ও পাঠ্য বহির্ভূত বিষয়ে, শিক্ষার্থীদের মধ্যে ঘটে বা অ - বাচনিক প্রকৃতির। তাঁরা নিজেদের মধ্যে ইশারা বা ইঙ্গিতে নানা ভাব আদান প্রদান করে। উল্লেখযোগ্য বিষয়, শিক্ষার্থীদের, নিজেদের মধ্যে যোগাযোগের ভাষা,ইশারা অনেক সময়ই শিহ্মকের কাছে বোধগম্য হয় না।যা নানাভাবে সমস্যার সৃষ্টি করে। 
8. শ্রেণিকক্ষে যোগাযোগ চক্র -

শ্রেণিকক্ষে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে যেভাবে যোগাযোগ রক্ষিত হয় তাতে দেখা যায় শিক্ষক পাঠের যে বিষয়বস্তু শিক্ষার্থীর নিকট পৌঁছে দেবেন বলে মনে করেন সেটি শিক্ষার্থী গ্রহণ করার পর পুনরায় শিক্ষকের নিকট পৌঁছে যায় প্রতি বার্তা হিসেবে।প্রকৃতপক্ষে সমগ্র প্রক্রিয়াটি চক্রাকারে সম্পন্ন হয়।এই চক্রটি যেভাবে ঘটে থাকে তা নিম্নে সংহ্মেপে উল্লেখ করা হল - 

শিক্ষক (প্রেরক) তার পাঠের বিষয়বস্তুকে তথ্যের আকারে হয় মৌখিকভাবে অথবা দৃষ্টিগ্ৰাহ্য প্রদীপনের মাধ্যমে গ্ৰাহক(শিক্ষার্থী)এর সঞ্চালিত করেন।শিক্ষার্থী প্রকৃত হিসাবে তথ্য রাশিকে শ্রবণ অথবা দর্শন অথবা উভয়েরই দ্বারা গ্রহণ করে।শিক্ষার্থী শিক্ষকের প্রেরিত তথ্য রাশির বা বিষয়বস্তুকে ব্যাখ্যাকরন, সংকেত অর্থোদ্ধারকরন এবং সঞ্চালনের দ্বারা প্রতিক্রিয়াকে বা প্রতি বার্তাকে শিক্ষকের নিকট পৌঁছে দেবার চেষ্টা করে।এই কাজটি হতে পারে মৌখিক ভাবে সাড়া প্রদান, লিখিতভাবে সাড়া প্রদান অথবা অন্য কোনো কর্ম সম্পাদনের দ্বারা।
          সুতরাং, শ্রেণিকক্ষে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর মধ্যে যোগাযোগ এর মধ্যে সমস্ত উপাদানগুলি শর্ত মেনেই সম্পাদিত হয়।
Cycle Of Classroom Communication



9. শ্রেণিকক্ষে কার্যকরী যোগাযোগ গড়ে তোলার উপায় -

১. একমুখী বনাম দ্বিমুখী যোগাযোগ -

শ্রেণিকক্ষে শিহ্মক যখন শিক্ষার্থীদের কোনো প্রশ্ন,ব্যাখ্যা করার সুযোগ,বা সন্দেহ দূরীকরণের কোনো চেষ্টা না করে তাঁর মতো করে একতরফাভাবে বক্তব্য রেখে যান তখন সেটি একমুখী যোগাযোগ বলা হয়।এক্ষেত্রে পারস্পারিক ক্রিয়া বা মিথস্ক্রিয়ার কোনো সুযোগ থাকে না।শিক্ষার্থী এখানে নিষ্ক্রিয় থাকে।কিন্তু শিক্ষক যখন তাঁর বক্তব্য রাখার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের কোনো প্রশ্নের উত্তর দেন,কৌতুহলকে জাগিয়ে তোলার চেষ্টা করেন, ক্রমাগত শিক্ষার্থীদের প্রতিবার্তা বা Feedback এর মাধ্যমে সমৃদ্ধ করে তোলার চেষ্টা করেন।তখন সেটি হয় দ্বিমুখী যোগাযোগ অনেক বেশি কার্যকর ভূমিকা গ্ৰহন করে।

২. ঋদ্ধায়ন এবং কার্যকরী শিখন - 

শ্রেনিকহ্মে ঋদ্ধায়ন বা প্রতিবার্তা এমন একটি বিষয় যা শিক্ষার্থীর বিষয় উপলব্ধিকে সরাসরি সাহায্য করে। শিক্ষক বুঝতে পারেন তার যোগাযোগ সঠিক ভাবে হচ্ছে কিনা।শিহ্মনের বিষয়বস্তু উপলব্ধিতে কোনো ফাঁক থাকলে শিহ্মক সহজেই সেটি পূরণ করার চেষ্টা করতে পারেন। অনেক সময় শিক্ষার্থী কোনো প্রশ্ন করে না ঠিকই কিন্তু তার দেহভঙ্গি বা মুখের ভঙ্গি প্রভৃতি লহ্ম্য করে শিহ্মক বুঝতে পারেন feedback এর মাধ্যমে শিহ্মা প্রক্রিয়াকে কার্যকরী করে তোলার চেষ্টা করতে পারেন।সঠিক যোগাযোগ সম্পন্ন হলে শিহ্মকের সঙ্গে শিহ্মার্থীর দেহভঙ্গিতে একটা সামঞ্জস্য লহ্ম্য করা যায়।

৩. যোগাযোগ স্পষ্টতার নীতি -

শ্রেনীকহ্মে শিহ্মক যখন তার শিহ্মন কার্য বিষয়বস্তু উপস্থাপন করবেন শিক্ষার্থীদের প্রশ্নের উত্তর দেবেন।ঋদ্ধায়ন শিক্ষার্থীদের সংশোধন করবেন তখন তাঁর ভাষায় থাকবে স্পষ্টতা, শিক্ষার্থীদের ভাষা উপলব্ধি করা হ্মমতা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকতে হবে। শিক্ষকের এমনভাবে শব্দ করতে হবে যাতে শিক্ষার্থীরা সহজে এবং স্বচ্ছন্দের তা বুঝতে পারে।শিক্ষক তার বিষয়বস্তুকে সামগ্রিকভাবে এমনভাবে উপস্থাপন করবেন।যাতে শিক্ষার্থীরা বিষয়বস্তুর মূল বক্তব্যকে গ্রহণ করতে পারে।

৪. প্রেষনার নীতি -

শ্রেণিকক্ষে যোগাযোগ প্রক্রিয়া চলাকালীন প্রেরক অর্থাৎ শিক্ষক এবং গ্রাহক অর্থাৎ শিক্ষার্থী উভয়কেই উচ্চ প্রেষনার থাকতে হবে।শিক্ষক যেমন তার শিখন কার্যে ঐক্যন্তিক আগ্রহ ও উৎসাহ দিয়ে আন্তরিকভাবে শিক্ষার্থীদের উপলব্ধির স্তরকে জাগরিত করার চেষ্টা করবেন,তেমনই শিক্ষার্থীদের ঐক্যন্তিক আগ্রহ থাকতে হবে।শিক্ষার্থীদের একান্তভাবে আগ্রহ সহকারে শিক্ষকের উপস্থাপিত বিষয়বস্তুকে উপলব্ধি করার চেষ্টা করে তাহলে পারিপার্শ্বিক অল্পবিস্তর বাধাকে প্রতিহত করতে পারে এবং শ্রেণিকক্ষে যোগাযোগ প্রক্রিয়া সেখানে সাফল্য লাভ করে। 

৫. দৃষ্টি শ্রাব্য প্রদীপনের ব্যবহার -

শ্রেণিকক্ষে যোগাযোগকে উন্নত ও কার্যকরী করে তোলার জন্য বিষয়বস্তুর সঙ্গে প্রাসঙ্গিকতা বজায় রেখে বিভিন্ন দৃষ্টি শ্রাব্য প্রদীপন ব্যবহার করা দরকার।

৬. শিখন দক্ষতা - 

শিহ্মনের বিষয়টি শিহ্মক শিহ্মিকার কোনো একক দহ্মতা নয়।অনেকগুলি মৌলিক দক্ষতার সমন্বয়ে এই শিখন প্রক্রিয়া পরিচালিত হয়।শিহ্মনকে কার্যকরী করতে শিহ্মককে সেই সমস্ত দহ্মতা গুলিকে কার্যকরী করতে শিহ্মককে সেই সমস্ত দহ্মতা গুলিকে‌ শ্রেনীকহ্মে যথাযথভাবে প্রয়োগ করা দরকার।

৭. সর্বোচ্চ শিখনের ব্যবহার - 

শ্রেনিকহ্মে শিক্ষার্থীদের শিখনকে যথাযর্থ ভাবে সফল ও কার্যকরী করে তুলতে হলে শিহ্মককে তাঁর শিহ্মনকার্যে কতকগুলি নিয়ম মেনে চলতে হবে।যেমন -
  • জানা থেকে অজানা।
  • দেখা থেকে না দেখা।
  • সরল থেকে জটিল।
  • বিশেষ থেকে সাধারণ।
  • মূর্ত থেকে বিমূর্ত।
  • সমগ্ৰ থেকে অংশ।
10. যোগাযোগ প্রক্রিয়ার সুবিধা দানকারী ও বাধাদান কারী প্রভাব -  

• যোগাযোগে সুবিধা দানকারী বিষয়সমুহ -
  1. শান্ত এবং নির্জন পরিবেশ যা শিক্ষণ - শিখন পরিস্থিতিকে অনুকূল করে তোলে। 
  2. উদ্বেগহীন বোঝাপড়ার ভিত্তিতে গড়ে ওঠে মিথস্ক্রিয়া যা শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রেরক বস্তুর প্রেরন ও গ্রহণে সহায়তা করে।
  3. উপযুক্ত প্রাকৃতিক পরিবেশ ও জলবায়ুর অবস্থান,যা শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর শরীর ও মনকে উজ্জীবিত রেখে এক মনোরম পরিবেশের কাজ করে। 
  4. যোগাযোগ ব্যবহারযোগ্য বিভিন্ন যান্ত্রিক অবস্থা যা আধুনিক প্রযুক্তি বিদ্যাকে কাজে লাগিয়ে পেরেক কাছে বিষয়বস্তু বা বার্তাকে অনেক বেশি আকর্ষণীয় করে তুলতে পারেন
• যোগাযোগের বাধাদানকারী বিষয়সমূহ - 
  1. চিৎকার ও চেঁচামেচি করা।
  2. বিশৃঙ্খলা।
  3. অনুপযুক্ত প্রাকৃতিক পরিবেশ। 
  4. শিক্ষা সহায়ক সামগ্রীর অভাব। 
  5. মানষিক উদ্বেগ দান্দ্বিক পরিস্থিতি।
  6. অনুপযুক্ত আবহাওয়া।
  7. শিক্ষকের অস্পষ্ট প্রকাশভঙ্গি। 
  8. শব্দ ব্যবহারের বিকৃতি।
  9. নমনীয়তার অভাব।
  10. শিক্ষার্থী বা গ্ৰাহকের অমনোযোগিতা। 
  11. শিক্ষার্থীর আগ্রহের অভাব। 
  12. দুটি আকর্ষণের অভাব।
  13. বার্তা উপস্থাপনা ও প্রকাশের ব্যর্থতার। 
  14. গ্ৰাহক - প্রেরকের মধ্যবর্তী দূরত্ব বা নৈকট্য।
  15. রক্ষণশীল মানষিক। 
  16. গ্ৰাহকের পূর্ব জ্ঞানের অভাব। 
  17. দূষণমুক্ত পরিবেশ। 
  18. শিক্ষার্থী বা গ্রাহকের ইচ্ছা আগ্রহ ও প্রেষনার অভাব।
 
11. যোগাযোগের সমালোচনা মূলক তত্ত্ব ও ভাষার ভূমিকা -

প্রত্যেক ব্যক্তির কাছেই যোগাযোগের জন্য ভাষার ভূমিকা মৌলিক উপাদান বা প্রধান হাতিয়ার হিসেবে গৃহীত হয় না।উত্তর আধুনিক গবেষকরা এই প্রেরক বার্তা মাধ্যম গ্রাহক এর তত্ত্বকে গ্রহণ না করার জন্য অতিরিক্ত কিছু যুক্তি প্রদর্শন করেন।উদাহরণস্বরূপ ভাষা যোগাযোগ না থাকায় মাধ্যম হতে পারে।সেক্ষেত্রে প্রেরক
প্রকৃত পহ্মে যোগাযোগ স্থাপন করতে চায় না এবং ভাষা তার নীরবতাকে প্রশ্রয় দেওয়ার জন্য নানা উপাদান প্রদান করে। 
        সমাজের স্বার্থ ও একটি ব্যক্তি সমষ্টির অন্য ব্যক্তি সমষ্টির উপর যোগাযোগের দ্বারা আধিপত্য স্থাপন। এই দুটি বিষয়ের দ্ধন্ধ যোগাযোগের সমালোচনামূলক তত্ত্বের অন্তর্ভুক্ত এবং সেখানে কখনোই যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ভাষাকে দেখা হয় না।ভাষা এখানে ক্ষমতা কাঠামো আধিপত্যকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য একটি জটিল ও অস্পষ্ট ভূমিকা হিসেবে বর্ণিত এবং একই সঙ্গে ব্যক্তির ও সমষ্টির গঠনগত পরিচিতি হিসেবে স্বীকৃত।

12. উপসংহার -

পরিশেষে বলা যায়, মানুষের মনের ভাব প্রকাশ হয় ভাষা মাধ্যমে আর ভাষার মাধ্যমে যোগাযোগ প্রক্রিয়া স্থাপন করা হয়।শ্রেনীকহ্মে যোগাযোগের অর্থাৎ শিহ্মক শিহ্মার্থী মধ্যে পারস্পারিক মিথস্ক্রিয়ার যোগাযোগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভাষাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়।ব্যক্তি কাছেই যোগাযোগের জন্য ভাষার ভূমিকা হল মৌলিক উপাদান।তাই ভাষার মাধ্যমে যোগাযোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

CLICK HERE -

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post