Three Language Formula

Three Language Formula

Three Language Formula||ত্রি - ভাষা সূত্র

BENGALI VERSION||ENGLISH VERSION
Three Language Formula/ত্রি ভাষা সূত্র practicum
Three Language Formula



(*** ENGLISH VERSION FILE BELOW THE ARTICLE BY PDF FORMAT)

ত্রি ভাষা সূত্র

BENGALI VERSION -

1. ভূমিকা -

তৎকালীন ভারতবর্ষের শিক্ষা ব্যবস্থা ছিল চিরাচরিত ও প্রথাগত।শিক্ষা ব্যবস্থার পরিবর্তনের জন্য বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কমিশন প্রস্তাবিত করেছিলেন। যেমন বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন, মুদালিয়ার কমিশন ও কোঠারি কমিশন ইত্যাদি।শিহ্মা কমিশনের মাধ্যমে ভাষার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল।মাধ্যমিক শিক্ষা কমিশনের সুপারিশ করেন, সমগ্র মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা বাহন বা মাধ্যম হবে মাতৃভাষা ও আঞ্চলিক ভাষা। অর্থাৎ মুদালিয়ার কমিশন দ্বি - ভাষা সূত্র সুপারিশ করে। কিন্তু পরবর্তীকালে শিক্ষা ব্যবস্থা পরিবর্তন সাধন করা হয়েছিল।কোঠারি কমিশনের ত্রি - ভাষা সূত্র নীতি প্রবর্তনের কথা বলা হয়েছিল। এতে হিন্দি,ইংরেজি ও আধুনিক ভারতীয় ভাষা বা আঞ্চলিক ভাষার প্রতি জোর দেওয়া হয়েছিল।এই ত্রি - ভাষা সূত্রকে ভাষা শিক্ষার ক্ষেত্রে যথেষ্ট প্রাধান্য দিতে হবে।
2. ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট -

1948-49 খ্রিস্টাব্দে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশন একটা ত্রি - ভাষা নীতির জন্যে প্রথম সুপারিশ করেছিল।তাতে নেদারল্যান্ডস এবং সুইজারল্যান্ডের উদাহরণ দিয়ে ভারতের শিক্ষা ব্যবস্থার তিনটি ভাষা শিক্ষার ব্যাপারটি কোনো অপচয়ের মধ্যে পড়ে না।কমিশনের দূরদৃষ্টি হল হিন্দি পরিনামে ইংরেজির বিকল্প হিসেবে কাজ করে যাতে প্রত্যেক অঙ্গরাজ্যে প্রজাতন্ত্রে কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারে। 
        পরবর্তীকালে 1965-66 খ্রিস্টাব্দের শিক্ষা কমিশন পরিবর্তিত এবং মাত্রাঙ্কিত ত্রি - ভাষার সূত্রের সুপারিশ করে।কিছু বিতর্কের পর,আসল ত্রি - ভাষা সূত্রটা 1968 খ্রিস্টাব্দে ভারতীয় সংসদ দ্বারা গৃহীত হয়েছিল।যা 1986 খ্রিস্টাব্দের জাতীয় শিক্ষানীতিতে 1968 খ্রিস্টাব্দের সূত্রের পুনরাবৃত্তি করা হয়েছিল।
         1972 খ্রিস্টাব্দে উর্দু ভাষার উন্নতি বর্ধনে ইন্দ্র কুমার গুজরালের সভাপতিত্বে সরকার একটি কমিটি গঠন করে।1975 খ্রিস্টাব্দে কমিটির রিপোর্ট সুপারিশ করা হয় যে,বিশেষত( যা 10 শতাংশের বেশি) উর্দু ভাষাভাষী সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা,তার সঙ্গে উর্দুকে নির্দেশিকা এবং কার্যালয়ের ব্যবহৃত ভাষা হিসেবে রাখা।যা 1984 খ্রিস্টাব্দে রাজ্য সরকার গুলির উপর পাস হয়।
         1990 খ্রিস্টাব্দের গুজরাল কমিটির সুপারিশ গুলো কার্যকর করার পরীক্ষা করতে বিশেষজ্ঞদের এক নতুন কমিটি গঠিত হয়,যার সভাপতি ছিলেন আলি সর্দার জাফরি।নতুন কমিটি এই বলে ত্রি - ভাষা সূত্র পরিবর্তন করার সুপারিশ করে যে - 
• হিন্দি ভাষাভাষী রাজ্যগুলিতে - 
ক.হিন্দি (যৌগিক নিয়মের অংশ হিসেবে সঙ্গে সংস্কৃত)।
খ.উর্দু অথবা অন্য যে কোনো আধুনিক ভারতীয় ভাষা।
গ.ইংরেজি অথবা অন্য যে কোনো ইউরোপীয় ভাষা।
• অ - হিন্দি ভাষাভাষী রাজ্যগুলিতে -
ক. স্থানীয় ভাষা। 
খ. হিন্দি উর্দু অথবা অন্য যে কোনো আধুনিক ভারতীয় ভাষা ' ক ' এবং ' খ ' ছাড়া। 
গ. ইংরেজি অথবা অন্য যে কোনো আধুনিক ইউরোপীয় ভাষা।

3. ত্রি ভাষা সূত্র -

1968 খ্রিস্টাব্দে তৎকালীন শিক্ষা মন্ত্রক বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য গুলির সাথে আলাপ-আলোচনা করে ভারত সরকার দ্বারা শিক্ষার জন্য ত্রি - ভাষা সূত্র সূত্রায়িত হয়েছিল। এই সূত্রটিতে বলা হয়েছিল জাতীয় নীতি প্রস্তাবে 1968 খ্রিস্টাব্দে,যাতে শিহ্মা সংস্থানের কথা বলা হয়েছে " হিন্দি ভাষী রাজ্যগুলিতে হিন্দি,ইংরেজি এবং আধুনিক ভারতীয় ভাষা (পছন্দ অনুযায়ী দক্ষিণ ভারতীয় ভাষা গুলির মধ্যে একটা) এবং অ - হিন্দি ভাষী রাজ্য গুলোতে হিন্দি, ইংরেজি এবং আঞ্চলিক ভাষা। 
                  দক্ষিণ ভারতের অ - হিন্দি রাজ্যগুলো যেমন কর্ণাটক,অন্ধ্রপ্রদেশ এবং প্রধানত তামিলনাড়ু, এদের দাবিতে সাড়া দিয়ে এই ত্রি - ভাষা সূত্রটা সূত্রায়িত হয়েছিল। সাম্প্রতিক কালে তামিলনাড়ুর প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সি.এন.আন্নাদুরাই এর প্রচেষ্টায় এই রাজ্যে তিন ভাষা পদ্ধতি মানা হয় নি।
4. কোঠারি কমিশনের দৃষ্টিভঙ্গি - 

কোঠারি কমিশনের ভাষা শিক্ষা এবং শিক্ষার মাধ্যমে হিসাবে ভাষা সম্পর্কে নিন্মরূপ সুপারিশ গুলি হল - 
  1. শিক্ষার মাধ্যমে হিসাবে বিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্তরে এমনকি কলেজেও আঞ্চলিক ভাষা ব্যবহার করা হবে।উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রেও মাধ্যমে হিসাবে আঞ্চলিক ভাষা ব্যবহৃত হবে।
  2. কমিশন ভাষা শিক্ষার ক্ষেত্রেও মাধ্যমে ত্রি - ভাষা সূত্র প্রবর্তন করার সুপারিশ করেন। এই সূত্রটি হল কমিশনের মতে, হিন্দি কেন্দ্রীয় স্তরে সরকারি ভাষা রূপে গৃহীত হওয়ার মাতৃভাষার পরই হিন্দিকে গুরুত্ব দিতে হবে। কাজ চালানোর মতো ইংরেজি জ্ঞান শিক্ষার্থীর পহ্মে একটি অতিরিক্ত সম্পদ বলে গণ্য হবে। 
              ভাষা শিক্ষার প্রকৃষ্ঠ সময় হচ্ছে নিম্ন মাধ্যমিক স্তর(VIII - X)।এই সময় ভাষা শিক্ষা দেওয়া কম শ্রমসাধ্য।দুটি বেশি ভাষা একই সঙ্গে শেখানো হবে না। ধাপে ধাপে তার প্রবর্তন করা হবে। কোনো স্তরেই চারটি ভাষা বাধ্যতামূলক করা হবে না।
 
5. ত্রি ভাষা সূত্র - 

ক. প্রথম ভাষা - মাতৃভাষা বা আঞ্চলিক ভাষা।

খ. দ্বিতীয় ভাষা - কেন্দ্রীয় সরকারি ভাষা বা যতদিন পর্যন্ত সহযোগী কোনো ভাষা থেকে সেই ভাষা,যেমন -
i. হিন্দি ভাষা রাজ্যে অন্য কোনো ভারতীয় ভাষা বা ইংরেজি 
ii. অ - হিন্দিভাষী রাজ্যগুলিতে হিন্দি বা ইংরেজি।  

গ. তৃতীয় ভাষা - 'ক' ও 'খ' এর মধ্যে নেই এমন একটি আধুনিক বা ইউরোপীয় ভাষা যা শিক্ষার মাধ্যম রূপে  ব্যবহৃত হয় নি।যেমন - 
i. হিন্দি ভাষী রাজ্যগুলিতে ইংরেজি অথবা একটি আধুনিক ভারতীয় ভাষা বা শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয় ভাষা হিসাবে পড়ে নি। 

কমিশন বিদ্যালয়ে এবং উচ্চশিক্ষার ভাষা শিক্ষার ক্ষেত্রে নিম্নরূপ সুপারিশ করেন।
১. প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণি(I - IV) নিন্মে প্রাথমিক পর্যায়ে সাধারণভাবে একটি ভাষা মাতৃভাষা বা আঞ্চলিক ভাষা।
২. পঞ্চম থেকে সপ্তম শ্রেণি(V - VII) উচ্চ প্রাথমিক স্তরে দুটি ভাষা 
ক. মাতৃভাষা বা আঞ্চলিক ভাষা।
খ. সরকারি ভাষা বা সহযোগী ভাষা।
৩. অষ্টম থেকে দশম শ্রেণি(VIII - X)এই স্তরে তিনটি ভাষা যেমন - 
ক. মাতৃভাষা বা আঞ্চলিক ভাষা। 
খ. সরকারি ভাষা বা সহযোগী ভাষা।
গ. একটি আধুনিক ভাষা অথবা একটি আধুনিক বিদেশি ভাষা যা 'ক' বা 'খ' এর মধ্যে নেই।
৪. একাদশ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি(XI - XII) উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে দুটি ভাষা বাধ্যতামূলক ভাবে শেখানো হবে।যেমন - 

a. নিম্ন মাধ্যমিক স্তরের তিনটি ভাষার মধ্যে যে কোনো দুটি ভাষা। 
b. নিম্নের যে কোনো একটি বা তিনটি গ্রুপের মধ্যে দুটি হল -
i.  আধুনিক ভারতীয় ভাষা।
ii. আধুনিক বিদেশী ভাষা। 
iii.প্রাচীন ভাষা স্বেচ্ছামূলক ভাবে সংস্কৃত,আরবি,পারসি প্রভৃতি প্রাচীন ভাষা শিখতে ছেলেমেয়েদের উৎসাহিত করা হবে।অষ্টম শ্রেণির পূর্বে শুরু হবে না।
 
6. ত্রি ভাষা সূত্রের প্রয়োজনীয়তা -
  1. কোঠারি কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে ভাষা শেখা শিশুর জ্ঞানীয় বিকাশের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। 
  2. প্রাথমিক লক্ষ্য হল বহুভাষিকতা এবং জাতীয় সম্প্রীতি প্রচার করা।
  3. ভাষার ব্যবধান পূরন মাধ্যমিক পর্যায়ে রাজ্য সরকার গুলিকে ত্রি - ভাষা সূত্র গ্রহণ করতে হয়েছিল। 
  4. বহুভাষিকতার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে জাতীয় ঐক্যের প্রসার ঘটবে।
 
7. ত্রি - ভাষা সূত্রের প্রয়োগ ও বাস্তবতা -

• প্রয়োগ - 
কোঠারি কমিশন বিশ্ববিদ্যালয় স্তরেও ত্রি - ভাষা সূত্র চালু করার পক্ষে অভিমত ব্যক্ত করেছেন।তবে কমিশন মনে করেন যে বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে শিক্ষার্থীদের উপর যদি ভাষার বোঝা চাপানো হয় তাহলে উচ্চশিক্ষার বিষয়গুলি তারা ভালো করে শেখার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে।এর ফলে শিক্ষার মানের অবনতি ঘটবে।তবে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে ইংরেজি ভাষা শিক্ষা ও চর্চার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। 

• বাস্তবতা -
ত্রি - ভাষা সূত্র ভারতের শিক্ষাক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রদেশে প্রযুক্ত হয়েছে এবং অনুসূত হচ্ছে। কোনো কোনো প্রদেশে এটি যথার্থ সার্থকতা লাভ করেছে।আবার কোথাও কোথাও এটি কাঙ্ক্ষিত ফল পায় নি।কমিশন কোনো একটি সুপারিশ যখন সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হয় না তখন তার কিছু পরিবর্তন করা অবশ্যই দরকার। কোঠারি কমিশন প্রস্তাবিত ত্রি - ভাষা সূত্র এই জন্য পরবর্তীকালে অনেক প্রদেশে কিছু পরিবর্তন করে ব্যবহৃত হচ্ছে।সেই সঙ্গে এটাও স্মরণ রাখা দরকার কোনো সুপারিশ বাস্তবতা ও কার্যকারিতা তখনই যখন স্থান - কাল - পাত্র ভেদে সুপারিশ গুলি সঠিক ভাবে কার্যকর হয়। পরিবর্তিত ত্রি - ভাষা সূত্রের সুফল আগামী দিনে আরও কার্যকর হবে বলে আশা করা যায়।

8. জাতীয় শিক্ষানীতি 2020 ত্রি - ভাষা সূত্রের সম্পর্ক -
  1. শিক্ষার মাধ্যমে যেখানেই সম্ভব,কমপক্ষে গ্ৰেড 5 পর্যন্ত শিক্ষার মাধ্যম,তবে বিশেষত গ্ৰেড 8 এবং তার পরে, হোম ভাষা/মাতৃভাষা/স্থানীয় ভাষা/ আঞ্চলিক ভাষা হবে। 
  2. বহুভাষিকতার পাশাপাশি জাতীয় ঐক্যের প্রসারের প্রয়োজনের কথা মাথায় রেখে ত্রি - ভাষার সূত্রটি বাস্তবায়ন অব্যাহত থাকবে। 
  3. জাতীয় শিক্ষানীতি জানিয়েছে, যে ত্রি - ভাষা সূত্রে একটি বৃহত্তর নমনীয়তা থাকবে এবং কোনও রাজ্যের উপর কোনেও ভাষা চাপিয়ে দেওয়া হবে না। 
  4. শিশুদের শেখা তিনটি ভাষা রাজ্য,আঞ্চলিক এবং অবশ্যই শিক্ষার্থীদের নিজের পছন্দ হবে, যতক্ষণ না তিনটি ভাষার মধ্যে অন্তত দুটি ভারতের স্থানীয় হয়।
 
9. সমালোচনা -
  1. তৎকালীন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী সি. এন. আন্নাদুরাই মনে করেছিল যে ' তিন ভাষা সূত্র হিন্দিকে অ - হিন্দি রাজ্যের প্রবর্তনের একটি চক্রান্ত ছিল এবং এটি বাস্তবায়ন কে প্রতিহত করেছিল।
  2. তামিলনাড়ু একটি দ্বি - ভাষা সূত্র গ্রহণ করেছিল - তামিল এবং ইংরেজী। হিন্দিভাষী রাজ্যগুলি দক্ষিণ ভারতীয় গ্রহণ করেনি।
  3. তারাও দ্বি - ভাষা সূত্রের পহ্মে গিয়েছিলেন। হিন্দিভাষী রাজ্য গুলির যেমন দক্ষিণ ভারতীয় ভাষার প্রয়োজন নেই তেমনই দহ্মিন ভারতীয় রাজ্য গুলির হিন্দি ভাষার প্রয়োজন নেই। 
  4. অনেক ভাষাতাত্ত্বিক কর্মী ও শিক্ষাবিদ পর্যবেক্ষণ করেন যে অ - হিন্দি ভাষার শিক্ষকের অভাবের কারণে ছাত্রদের হিন্দি শিখতে বাধ্য হবে।
  5. কেন্দ্র হিন্দি বিকাশের জন্য 50 কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে, অন্য ভাষা গুলিতে এই জাতীয় কোন তহবিল দেওয়া হয় না।
 
10. উপসংহার -

বর্তমানে শিক্ষা ব্যবস্থা বেশ পরিবর্তন সাধন করা হচ্ছে। ভারতে শিক্ষানীতিতে ত্রি - ভাষা সূত্র টি কে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।ভারতবর্ষে বহুভাষিকতার স্বীকৃতি প্রয়োজন।আঞ্চলিক ভাষা, মাতৃভাষা,ইংরেজি ভাষা প্রতি জোর দেওয়া হয়েছে।যাতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভাষা জানা প্রতিবন্ধকতা দূর হয়। শিক্ষার্থীদের ভাষা দহ্মতার মান বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দেওয়া সময় এসেছে।

CLICK HERE - 


Post a Comment (0)
Previous Post Next Post