Distance Education And Open Education

Distance Education And Open Education

Distance Education And Open Education||দূরাগত শিক্ষা এবং মুক্ত শিক্ষা

BENGALI VERSION ENGLISH VERSION

Distance Education And Open Education
Distance Education And Open Education

Distance And Open Education's Concept, characteristics, Objectives, Advantage And Disadvantages.

Assignment Questions -

1. What is Distance Education. what is the Characteristics And Objectives Of Distance Education.

2. Write Down Advantage And Disadvantages Of Distance Education.

3. What is Open Education.what is the Characteristics And Objectives Of Open Education.

4. Write Down Advantage And Disadvantages Of Open Education.

(*** ENGLISH VERSION FILE BELOW THE ARTICLE BY PDF FORMAT)

Distance And Open Education

BENGALI VERSION -

1. দূরাগত শিক্ষা ব্যবস্থা-

1.1.1. ভূমিকা -

দূরাগত শিক্ষা এক বিশেষ ধরনের শিক্ষা,যা নিরবিচ্ছিন্ন ও সরাসরি শিক্ষকের তত্ত্বাবধানের ঘটে না,যার জন্য বক্তৃতার প্রয়োজন নেই এবং ইলেকট্রনিক মাধ্যমে বা ছাপানো কাগজের মাধ্যমে ঘটে থাকে। 

Distance Education হল শিক্ষকদের দ্বারা পরোক্ষ নির্দেশনা, কারণ এক্ষেত্রে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রত্যক্ষ সংযোগ ঘটে না এবং এটা সম্পূর্ণ প্রযুক্তিগত নিয়মের ওপর নির্ভর করে গড়ে উঠেছে।

অধ্যাপক হোমবাগ দূরাগত শিক্ষার সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলেছেন, "The various forms of study at all level which are not under the continuous, immediate supervision of tutors present with their students in lecture rooms or on the some premises,but which never the less, benefit from the planning, guidance and tuition of a tutorial organisation." 

ডেভিড বাটস্ দূরাগত শিক্ষা সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলেছেন - "Those which offer students measure of fiexibility  and autonomy,to study the programmes of their choice when and where they wish,and at a pace, to suit there circumstances."

• দূরাগত শিক্ষার ধরন -

  • পত্রাচারের মাধ্যমে শিক্ষার্থীর কাছে Course Metrial পৌঁছে দেওয়া হয়।
  • রেডিয়োর মাধ্যমে দূরাগত শিক্ষা সুদুর গ্ৰামাঞ্চলে পৌঁছে দেওয়া যায়।
  • টেলিভিশন সম্প্রচারের মাধ্যমে এই শিহ্মাকে আরও আকর্ষণীয় করা যায়।
  • মুক্তশিক্ষা বর্তমানে দূরাগত শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। উদাহরণ পশ্চিমবঙ্গের ইন্দিরা গান্ধী ও নেতাজি সুভাষ মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়।

1.1.2. দূরাগত শিক্ষার বৈশিষ্ট্য -

দূরাগত শিক্ষার বৈশিষ্ট্যগুলি হল -

১. নমনীয়তা - 
এই শিক্ষায় প্রবেশের ক্ষেত্রে অনেক নমনীয়তা রয়েছে। এই শিক্ষার ক্ষেত্রে সময় বা স্থানের কোনো বাধ্য বাধকতা নেই। শিক্ষার্থী তার সুবিধা মতো স্থানে নিজের সময় মতো অধ্যায়ন করতে পারে। 
২. নন - ফর্মাল শিক্ষা - 
দূরাগত শিক্ষাকে নন - ফর্মাল শিক্ষাও বলা যেতে পারে।কারণ এটি প্রথাযুক্ত শিক্ষা নয়।এটি পত্রাচারের শিক্ষা,মুক্ত শিক্ষা,মুক্ত শিক্ষন, মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদি নামেও পরিচিত।
৩. পরোহ্ম শিক্ষা - 
এটি হল পরোহ্ম শিক্ষা। এক্ষেত্রে মুখোমুখি শিক্ষার ওপর গুরুত্ব নেই। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সহপাঠী ও শিক্ষকের যোগাযোগ মাধ্যমে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে যোগাযোগ ঘটে।
৪. শিক্ষার্থী কেন্দ্রিক শিক্ষা - 
এই শিহ্মার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর চাহিদা ও শিক্ষার্থীর সুবিধার উপর অধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়।
৫. সহজলভ্য - 
যে জায়গায় স্কুল অথবা কলেজ নেই, সেখানকার শিক্ষার্থীরাও দূরাগত শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে।যেসব শিক্ষার্থী শারীরিক ও মানসিক দিক থেকে দুর্বল এবং যারা প্রথাগত শিক্ষা কেন্দ্র যেতে পারে না তারাও এই শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে। 
৬. ডিগ্রির সুযোগ - 
দূরাগত শিক্ষার মাধ্যমে ডিগ্ৰি বা ডিপ্লোমা পাওয়া যেতেও পারে আবার নাও পাওয়া যেতে  
দূরাগত শিক্ষা প্রথাগত শিক্ষার তুলনায় অনেক কম খরচে সম্ভব। 
৭. গণশিক্ষা ও গনমাধ্যমে ব্যবহার - 
দূরাগত শিক্ষাকে গণশিক্ষাও বলা যেতে পারে।কারণ এর মাধ্যমে লহ্ম লহ্ম শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ধরনের শিক্ষার সুযোগ দেওয়া যেতে পারে। গণমাধ্যমের ব্যবহার দূরাগত শিক্ষার বিভিন্ন গণমাধ্যম যথা রেডিও, পত্র-পত্রিকা, টেলিভিশন ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়। 
৮. ভর্তির প্রক্রিয়া - 
ভর্তির ক্ষেত্রে বাঁধাধরা কোনো নিয়ম নেই। 
৯. কর্মরত ব্যক্তিদের সুবিধা - 
চাকুরিরত ব্যক্তিরা তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা বাড়াতে পারেন এই শিক্ষার মাধ্যমে। 
১০. Drop out শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সুযোগ - 
শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষা সম্পূর্ন করতে পারে দূরাগত শিক্ষার মাধ্যমে। 
১১. উন্নয়ন ও দহ্মতা বিকাশ - 
দূরাগত শিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তার মানসিক ও বৌদ্ধিক উন্নয়ন ঘটাতে পারে এবং বিভিন্ন ধরনের দক্ষতা অর্জন করতে পারে।

1.1.3. দূরাগত শিক্ষার উদ্দেশ্যাবলী -

দূরাগত শিক্ষা ব্যবস্থা উদ্দেশ্য গুলি হল -

১. সকলের জন্য শিক্ষা - 

দূরাগত শিক্ষা ব্যবস্থায় মাধ্যমে সকলের জন্য শিক্ষা দানের ব্যবস্থা করা হয়।যেখানে দরিদ্র ও মেধা সম্পন্ন বা অন্যান্য কারণে যারা নিয়ন্ত্রিত পড়াশোন সুযোগ পায় না। তাদেরকে শিক্ষার সুযোগ করে দেয় দূরাগত শিক্ষার মাধ্যমে। 

২. উচ্চশিক্ষার সুযোগ লাভ -

যে সমস্ত ব্যক্তিরা দারিদ্রতা কারনে বা অন্য কোনো কারণে উচ্চ শিক্ষা লাভ করতে পারে না।তারা এই শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে উচ্চ শিক্ষা লাভ করতে পারে। 

৩. কর্মরত ব্যক্তিদের প্রশিক্ষণ -

যে সমস্ত ব্যক্তিরা কর্মরত তারা নিজেদের যোগ্যতা ও দক্ষতা অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় শিক্ষা অর্জনের সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়। 

৪. প্রতিবন্ধীদের জন্য শিক্ষা - 

যে সকল ব্যক্তিরা শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রতিবন্ধী, তারা নিয়ন্ত্রিত শিক্ষা লাভ করতে পারে না।তাদের জন্য এই শিক্ষা ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়। 

৫. জাতীয় সংহতিতে সহায়তা - 

প্রত্যেকটি মানুষের কাছে শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করে শিক্ষার সার্বিক প্রসারের মাধ্যমে জাতীয় সংহতি স্থাপন করে। 

৬. স্বল্প খরচে শিক্ষা - 

প্রথাগত শিক্ষার তুলনায় দূরাগত শিক্ষা খরচ এমনভাবে স্থির করা হয়,যাতে দরিদ্র পরিবারের ছেলেমেয়েরা এই শিক্ষা লাভ করতে পারে। 

৭. প্রত্যন্ত অঞ্চলে শিক্ষার প্রসার -

যে সমস্ত এলাকাতে বিদ্যালয়, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় নেই,সেই খানে এই শিক্ষার প্রসারে মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দানের সহায়তা করে।

1.1.4. দূরাগত শিক্ষার সুবিধা -

দূরাগত শিক্ষার সুবিধাগুলি হল - 

১. সবার জন্য শিক্ষা - 

দূরাগত শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল এই শিক্ষার সবার জন্য উন্মুক্ত।যে কোনো মানের উৎসুক শিক্ষার্থী এই শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে।তবে এর জন্য আলাদা করে কোনো প্রকার শিক্ষাগত যোগ্যতা লাগে না, নির্দিষ্ট বয়সে শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করতে পারে।

২. জাতীয় সম্পদের মূল্য - 

দূরাগত শিক্ষার জাতীয় সম্পদের আর্থিক মূল্য বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।দেশের যে সব মানুষ গতানুগতিক নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার অংশ নিতে পারে না,তারা এই জাতীয় শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে দেশের সম্পদ বৃদ্ধিতে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অংশ নেয়। 

৩. শিক্ষার্থীদের আর্থিক সুবিধা -

দূরাগত শিক্ষার শিক্ষার্থীকে প্রতিটি গতানুগতিক শিক্ষার মতো বিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয় বা বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে হয় না।এর ফলে তারা অবসর সময়ে পঠন-পাঠন করে ডিগ্রি লাভ করতে পারে। 

৪. ব্যক্তিগত স্বাচ্ছন্দ্য - 

দূরাগত শিক্ষার শিক্ষার্থীরা ব্যক্তিগত সুবিধা উপভোগ করে।ফলে শিক্ষার্থীদের কোনো নির্দিষ্ট শৃঙ্খলা মেনে নির্দিষ্ট শিক্ষালয় হাজির হতে হয় না।ফলে তাদের পঠন-পাঠনের সুবিধা হয়। 

৫. শিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধি - 

দূরাগত শিক্ষা মাধ্যমে সেই সমস্ত মেধা সম্পন্ন এবং আর্থিক কারণে নিয়ন্ত্রিত শিক্ষা সহজে গ্রহণ করার সুযোগ প্রদান করা হয়।ফলে এই সকল ছাত্র-ছাত্রীরা এই জাতীয় শিক্ষার দ্বারা ডিগ্রী অর্জন করে জীবনে প্রতিষ্ঠা লাভের সুযোগ পায়।

৬. ব্যক্তিত্ব আত্মোন্নতি - 

দূরাগত শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তাদের আপন ইচ্ছায় নিজস্ব নির্দেশিকা পথে শিহ্মালাভ করে।ফলে তাদের ব্যক্তিত্বে আত্মোন্নতি এবং মানসিক বিকাশ ঘটে।

৭. প্রস্তুত বিষয়বস্তু প্রাপ্তি - 

দূরাগত শিক্ষা ব্যবস্থায় তাদের কোর্সের পাঠ্য বিষয় গুলি ছোটো ছোটো এককের মাধ্যমে প্রস্তুত করে সরবরাহ করা হয়।ফলে শিক্ষার্থীদের পঠন পাঠনের সুবিধা হয়।

৮. স্বল্প ব্যয় -

দূরাগত শিক্ষা ব্যবস্থায় বিশাল ব্যয়বহুল বিদ্যালয়, শ্রেণিকক্ষে,পরীহ্মাগার,ছাত্রাবাস ইত্যাদি কোনো প্রয়োজন হয় না।ফলে স্বল্প ব্যয়ে শিক্ষার্থীরা শিক্ষা লাভ করতে পারে। 

1.1.5. দূরাগত শিক্ষার অসুবিধা -

দূরাগত শিহ্মা ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য গুলির হল -

১. সংস্কৃতিগত পরিবর্তন এবং সামাজিক উন্নতিতে বাধা -

দূরাগত শিক্ষার মানুষের বা শিহ্মার্থীদের মধ্যে সংস্কৃতি পরিবর্তন এবং সামাজিক উন্নতির সুযোগ সুবিধা পায় না।কারণ শিক্ষার্থীরা সাধারণত পরস্পরের সান্নিধ্যে আসার সুযোগ পায় না বললেই চলে।কেবল 'কনট্রাক্ট প্রোগ্রাম' এবং পরীক্ষার সময় শিক্ষার্থীরা একক হওয়ার সুযোগ পায়।

২. ভাব বিনিময়ের অভাব -

এই শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীরা পারস্পরিক ভাব বিনিময় করার সুযোগ পায় না।কেবল পরীক্ষায় স্বার্থে এবং ডিগ্রি অর্জনের লক্ষ্যে যেটুকু প্রয়োজন তাই করে। 

৩. বাস্তব অভিজ্ঞতা নেই -

এই শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীদের বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ তেমন নেই বা খুব কম।

৪. শিক্ষনীয় বিষয়বস্তুর গ্রহণযোগ্যতা - 

এই শিক্ষা ব্যবস্থায় যে সমস্ত শিহ্মনীয় বিষয়বস্তুর শিক্ষার্থীদের কাছে পাঠানো হয়,সেটি তাদের কাছে কতটা গ্রহণযোগ্য হয়েছে, সে বিষয়ের খোঁজ খবর নিয়ে বিষয়বস্তুকে আরও সমৃদ্ধ করার সুযোগ থাকে না।

৫. শিক্ষার্থীদের মধ্যে আন্তঃ ক্রিয়া অভাব - 

এই শিক্ষা ব্যবস্থার চলাকালীন কিছু আলোচনা শোনা ছাড়া প্রকৃত শিক্ষক - শিক্ষার্থীদের মধ্যে আন্তঃ ক্রিয়া বলতে যা বোঝায়।তার সুযোগ এই জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থায় খুব কম থাকে। 

৬. ডাক ব্যবস্থায় গন্ডগোল - 

ডাক ব্যবস্থায় কোনো গন্ডগোল দেখা দিলে শিক্ষার্থীরা সময় মতো শিক্ষনীয় বিষয়বস্তু পায় না।ফলে পঠন পাঠনের খুব অসুবিধা দেখা দেয়।অনেক সময় পরীক্ষার তারিখ, এডমিট কার্ড প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে সময় মতো গিয়ে পৌছাতে পারে না।

৭. ব্যবহারিক বিষয়ে গ্ৰহনযোগ্যতা - 

দূরাগত শিক্ষার ব্যবহারিক বিষয়বস্তুর যথাযথ ভাবে গ্রহণের সুযোগ কম থাকে।দেখা যায় এক সপ্তাহে মধ্যে কোনো রকম ভাবে সংক্ষিপ্তভাবে পাঠ্যসূচির অন্তর্গত বিষয়গুলি অভ্যাস করানো হয়।ফলে শিক্ষার্থীরা ব্যবহারিক দিক গুলি ভালোভাবে শিখতে পারে না।

1.2. মুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থা -

1.2.1. মুক্ত শিক্ষার ভূমিকা -

মুক্ত শিক্ষা দুর শিক্ষার একটি শ্রেণি।মুক্ত শব্দটি ব্যবহারের মাধ্যমে এই শিক্ষার মূল বৈশিষ্ট্যটি প্রকাশ পায়।মুক্ত শিক্ষা বলতে এমন একটি শিহ্মাকে বোঝায় যেখানে বিধিনিষেধের বাঁধন তুলনা মূলকভাবে অনেকটা আলগা।সাধারণ শিক্ষার হ্মেত্রে যেমন প্রবেশ ও প্রস্থানের নিয়ম মেনে চলতে হয়।মুক্ত শিক্ষার ধারণাটি সর্বপ্রথম বিদ্যালয় স্তরে অন্তর্ভুক্ত করা হয় 1968 খ্রিস্টাব্দে 'করেসপন্ডেন্স টিচিং' রূপে।মুক্ত শিক্ষাকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।একদলের মতে, মুক্ত শিক্ষার অর্থ হল করেসপন্ডেন্স শিক্ষা।এই অর্থটি অস্ট্রেলিয়াতে বহুল প্রচলিত। আবার দ্বিতীয় দলের মতে, মুক্ত শিক্ষার অর্থ হল শিক্ষার প্রবেশের ক্ষেত্রে সবথেকে কম বাধ্যবাধকতা বা বিধিনিষেধ আরোপ করা। এই অর্থে আমাদের দেশের মহীশূর এবং মাদুরাই বিশ্ববিদ্যালয় এই শিক্ষার ব্যবস্থা করে। আবার তৃতীয় দলের মতে, মুক্ত শিক্ষার অর্থ হল সমাজের সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে শিক্ষার বিশেষ সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা।চতুর্থ ধারণা অনুযায়ী বলা হয়েছে, মুক্ত শিক্ষা বলতে এমন একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বোঝায়,যেখানে শিক্ষার্থীদের বিষয় নির্বাচনে, মাধ্যমে নির্বাচনে এবং শিখন পদ্ধতি অনুসরণে বা ওই জাতীয় অন্যান্য বিষয়ে স্বাধীনতা থাকে।এই শিক্ষার ক্ষেত্রে বহুমুখী স্তর এবং বহুমুখী শিখন পদ্ধতি অনুসরণের সূযোগ থাকে। বর্তমানে মুক্ত শিক্ষা তৃতীয় এবং চতুর্থ মতের সমন্বয় গড়ে তোলা হয়েছে।

1.2.2. মুক্ত শিক্ষার ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য -

মুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য গুলি হল -

১. সবার জন্য শিক্ষা উন্মুক্ত - 

মুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থার একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য হল সকলের জন্য শিক্ষা উন্মুক্ত করা। শিক্ষার্থীদের নির্দিষ্ট কোনো শ্রেণীতে ভর্তি হবার জন্য কোন যোগ্যতা লাগে না। তাঁরা যে শ্রেণিতে পড়ার শুরু করার পর কোনো কারনে শেষ করতে পারেনি তারা এই শিক্ষার অংশ নিতে পারে।

২. আপন গতি -

মুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীরা আপন গতিতে নিজের সুযোগ সুবিধা মতো পঠন-পাঠন করতে পারে।এর জন্য নির্দিষ্ট দিনে, নির্দিষ্ট সময়ে,শ্রেণীর উপস্থিত হওয়া বাধ্যবাধকতা থাকে না।

৩. ব্যক্তি স্বাতন্ত্র্যতা - 

মুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীরা যে কোর্সের তারা নির্বাচন করবেন,সে ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের স্বাতন্ত্রতা প্রদান করা হয়।

৪. নমনীয়তা -

মুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীরা যে কোর্সে ভর্তি হবে,সেই কোর্সের পাঠ্য পুস্তকের বিষয়বস্তু ছোটো ছোটো এককের প্রস্তুতিকরণ ও সরবরাহ করা হয়। যা তাদের শিক্ষা গ্রহণে সুবিধা হয়।

৫. যোগাযোগ প্রযুক্তি -

মুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা শিখনের জন্য শিক্ষকের উপর নির্ভর করে না,যোগাযোগের সাহায্যকারী প্রযুক্তির সাহায্যে শিক্ষা লাভ করে থাকে। যেমন টেলিভিশন,বেতার,কম্পিউটার এবং বর্তমানে অনলাইন এর মাধ্যমে। 

৬. গৃহ নির্ভর শিক্ষা -

এই শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়,কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত থাকা দরকার পড়ে না।তারা নিজেরা গৃহে বসেই পঠন পাঠন করতে পারে।

1.2.3. মুক্ত শিক্ষার ব্যবস্থার উদ্দেশ্যাবলী -

মুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থার উদ্দেশ্যাবলী গুলি হল -

১. জীবনব্যাপী শিক্ষা -

মুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থার শিক্ষা গ্রহণের সময় নির্দিষ্ট না থাকায় যে কোনো সময়ে এই শিক্ষা লাভের সুযোগ পায়। অর্থাৎ মুক্ত শিক্ষার হল জীবনের যে কোনো সময়ে যে কোনো ব্যক্তি এই শিক্ষা লাভ করতে পারে।

২. উচ্চ শিক্ষার সুযোগ লাভ - 

যে সমস্ত ব্যক্তিরা বা শিহ্মার্থীরা দারিদ্রতার  কারণে উচ্চশিক্ষার সুযোগের অভাবে বা অন্য কোনো কারণে উচ্চ শিক্ষা সুযোগ লাভ করতে পারে নি,তারা এই শিক্ষা মাধ্যমে শিক্ষা লাভ করতে পারে।

৩. কর্মরত ব্যক্তিদের প্রশিক্ষণ -

যে সমস্ত ব্যক্তি কর্মরত তারা নিজেদের যোগ্যতা ও দক্ষতা অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় শিক্ষা অর্জনের সুযোগ সৃষ্টি করা হয়। 

৪. প্রত্যন্ত অঞ্চলে শিক্ষার প্রসার -

দেশের যে সব প্রত্যন্ত অঞ্চলে এখনো পর্যন্ত শিক্ষার আলো পৌঁছাতে পারি নি।অর্থাৎ যে প্রত্যন্ত এলাকায় কোনো বিদ্যালয় বা কলেজ নেই, সেই সকল অঞ্চলের মানুষদের কাছে এই শিক্ষা ব্যবস্থা মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়।

৫. নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার চাপ হ্রাস - 

এই শিক্ষার অন্যতম উদ্দেশ্য হল নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার উপর থেকে চাপ কমানো।বর্তমানে জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে নিয়ন্ত্রিত শিক্ষালয় গুলিতে শিক্ষার্থীদের এত ভিড় যে অনেক সময় বহু মেধাবী শিক্ষার্থীরা ও দরিদ্র শিক্ষার্থীরা ভর্তির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হতে হয়।তবে এই শিক্ষার মাধ্যমে তারা সুযোগ পায়। 

৬. প্রতিবন্ধীদের জন্য শিক্ষা -

যে সকল ব্যক্তিরা শারীরিক এবং মানসিকভাবে প্রতিবন্ধী, তারা নিয়ন্ত্রিত শিক্ষা লাভ করতে পারে না, ফলে তাদের জন্য এই শিক্ষা ব্যবস্থা করা হয়েছে।

৭. গবেষণার সুযোগ সৃষ্টি -

মুক্ত শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য হল জ্ঞানের উৎকর্ষ সাধন ও সম্প্রসারণের জন্য গবেষণার সুযোগ সৃষ্টি করা।

৮. জাতীয় সংহতিতে সহায়তা -

প্রত্যেক ব্যক্তির কাছে শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করে শিক্ষার সার্বিক প্রসারের মাধ্যমে জাতীয় সংহতি স্থাপন করা।

৯. স্বল্প খরচে শিক্ষা - 

প্রথাগত শিক্ষার তুলনায় মুক্ত শিক্ষার খরচ এমনভাবে স্থির করা হয় যাতে দরিদ্র পরিবারের মেধাবী ছেলে মেয়েরা এই শিক্ষা লাভ করতে পারে। 

১০. শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি

দেশের সার্বিক শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধির জন্য মুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। 

১১. পরিপূরক শিক্ষা পদ্ধতি -

মুক্ত শিক্ষার গতানুগতিক নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার পরিপূরক হিসেবে সব মানুষের কাছে শিক্ষার সুযোগ সম্প্রসারিত করে।

1.2.4. মুক্ত শিক্ষার ব্যবস্থার সুবিধা -

মুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থার সুবিধা গুলি হল -

১. শিক্ষাক্ষেত্রে অবাধ প্রবেশাধিকার - 

মুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীদের কোনো শ্রেণীতে ভর্তি হওয়ার জন্য কোন নির্দিষ্ট যোগ্যতা লাগে না।তারা সহজেই পছন্দ মতো শ্রেণী বা কোর্সে ভর্তি হতে পারে।

২. শিহ্মার স্বাধীনতা -

মুক্ত শিক্ষায় শিক্ষার্থীদের যে কোর্স তারা নির্বাচন করবেন,সেই ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের স্বাধীনতা দেওয়া হবে। যাতে সহজেই এবং স্বাধীনভাবে পঠন-পাঠন করতে পারে।

৩. শিক্ষাব্যবস্থার নমনীয়তা - 

মুক্ত শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষার্থীদের যে কোর্সের ভর্তি হবে সেই কোর্সের পাঠ্যপুস্তক গুলি গতানুগতিক নিয়ন্ত্রিত শিক্ষা ব্যবস্থার তুলনা সহজ হবে এবং ছোটো ছোটো এককের বিভক্ত করা হবে।যা শিক্ষার্থীদের কাছে গ্ৰহনে অনেক বেশি নমনীয় হবে। 

৪. গৃহ নির্ভর শিক্ষা -

এই শিক্ষা ব্যবস্থায় পঠন-পাঠনের জন্য শিক্ষার্থীদের কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উপস্থিত থাকার বাধ্যবাধকতা থাকে না।তারা নিজেদের ইচ্ছা অনুযায়ী প্রয়োজনের তাগিদে উপস্থিত হতে পারে বা নাও হতে পারে।মূলত গৃহে বসেই পড়াশুনা করতে পারে। 

৫. যোগাযোগ প্রযুক্তি -

মুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা শিখনের জন্য শিক্ষকের উপর নির্ভর না করে যোগাযোগের সাহায্যে কারী প্রযুক্তির সাহায্য গ্রহণ করে।যেমন - বেতার, দূরদর্শন, টেপরেকর্ডার, কম্পিউটারের সহায়তা গ্ৰহন করা হচ্ছে এবং বর্তমানে অনলাইনের মাধ্যমে মুক্ত শিক্ষা গ্রহণ করা হচ্ছে। 

৬. শিখনের গুণগত মান -

মুক্ত শিক্ষার ক্ষেত্রে শিখনের গুণগত মান খুবই ভালো। কারণ এই শিক্ষা ব্যবস্থার পাঠ্যপুস্তক ও শিখনীয় বিষয়বস্তু গুলি শিক্ষার্থীদের প্রদান করা হয় সেই গুলি দেশের সর্বাপেক্ষা অভিজ্ঞ শিক্ষকদের দ্বারা প্রস্তুত করা হয়ে থাকে।যা শিক্ষার্থীদের কাছে গ্রহণযোগ্য।

৭. শিহ্মার সুযোগ বৃদ্ধি -

মুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থায় যে সমস্ত মেধা সম্পন্ন এবং আর্থিক কারণে নিয়ন্ত্রিত শিক্ষা গ্ৰহন করার সুযোগ পায় না, তাঁরা এই শিক্ষা মাধ্যমে শিক্ষার দ্বারা ডিগ্ৰি অর্জন করে জীবনে প্রতিষ্ঠা লাভের সুযোগ পায়।

1.2.5. মুক্ত শিক্ষার ব্যবস্থার অসুবিধা -

মুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থায় যে সমস্ত অসুবিধা গুলো লক্ষ্য করা যায়,সেগুলি হল - 

১. পাঠ্যপুস্তক প্রস্তুতি কারী অভিজ্ঞ ব্যক্তির অভাব -

মুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীদের পঠন-পাঠনের জন্য যে সমস্ত পাঠ্যপুস্তক ও শিখন বিষয়গুলি দেওয়া হয়,তা প্রস্তুতকারী অভিজ্ঞ শিক্ষক সর্বদা পাওয়া যায় না।যা মুক্ত শিক্ষা একটি অন্যতম অসুবিধা।

২. ব্যবহারিক শিক্ষার অভাব -

মুক্ত শিক্ষা ব্যবহারিক বিষয়গুলি যথাযথভাবে গ্রহণের সুযোগ কম থাকে।দেখা যায় এক সপ্তাহের মধ্যে কোনো রকমে সংক্ষিপ্ত ভাবে পাঠ্যসূচির অন্তর্গত বিষয় গুলিকে অভ্যাস করানো হয়।ফলে শিক্ষার্থীরা ব্যবহারিক দিক গুলি ভালোভাবে শিখতে পারে না। 

৩. শিক্ষক শিক্ষার্থীদের আন্তঃ ক্রিয়া অভাব -

মুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থায় চলাকালীন কিছু আলোচনা শোনা ছাড়া প্রকৃত শিক্ষক শিক্ষার্থী মধ্যে আন্তঃ ক্রিয়া লক্ষ করা যায় না।

৪. বাস্তব অভিজ্ঞতার অভাব -

মুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীদের বিষয়বস্তু ছাড়া বাস্তবিক অভিজ্ঞতা অর্জনের সূযোগ তেমন নেই বা খুব কম। 

৫. শিখনীয় বিষয় বস্তুর গ্রহণযোগ্যতা -

এই শিক্ষা ব্যবস্থায় যে সমস্ত শিক্ষনীয় বিষয় বস্তু শিক্ষার্থীদের কাছে পাঠানো হয়,সেটি তাদের কাছে কতটা গ্রহণযোগ্য হয়েছে সেই বিষয়ের খোঁজ খবর নিয়ে বিষয়বস্তু আরো সমৃদ্ধ করার সুযোগ থাকে না।

৬. প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মীর অভাব - 

মুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মীদের অভাব লক্ষ্য করা যায়।

৭. প্রযুক্তিগত অভাব -

মুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থায় মূলত প্রযুক্তির মাধ্যমে পঠন পাঠনের করানো হয়।প্রযুক্তিগত ক্রটি মুক্ত শিক্ষার একটি বড়ো সমস্যা।

CLICK HERE -

Distance Education And Open Education (ENGLISH VERSION)



Post a Comment (0)
Previous Post Next Post