Women Education

Women Education

Women Education||নারী শিক্ষা

BENGALI VERSION||ENGLISH VERSION

Indian Women Education
Women Education


Women Education 's Connect, objectives, Importance, Problems And Prospect, Programmes

Assignment Questions -

1. Briefly discusse about Women Education.

2. What is Major Objectives of Women Education.

3. Write Down The Importance Of Women Education.

4. Discuss the problems And Prospects Of Women Education. Explain the various programmes For the expansion of Woman Education.

(*** ENGLISH VERSION FILE BELOW THE ARTICLE BY PDF FORMAT) 

Women Education

BENGALI VERSION -

1. ভূমিকা -

মানব সম্পদ বিকাশ হল শিক্ষার অন্যতম একটি স্তম্ভ। নারী হল জাতীয় জন সম্পদের প্রায় অর্ধেক এবং জাতীর অগ্রগতিতে নারীর একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।তাই সমাজে নারী শিক্ষার গুরুত্ব অনস্বীকার্য।যে কোনো রাষ্ট্রের উন্নতি তখনই হবে যখন সেই দেশের মহিলাদের মধ্যে শিক্ষার আলো পড়বে।কারণ মহিলারাই তাদের শিশুদের এমনভাবে গড়ে তুলবে,যারা ভবিষ্যতে দেশকে অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি পথে নিয়ে যেতে সাহায্য করে।তাই ভারতের সার্বিক উন্নয়নের জন্য নারী শিক্ষার অগ্রগতি একান্ত প্রয়োজনীয়।তাই স্বাধীনতা লাভের পর শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিবর্তন করা হয়েছে,তাতে নারী এবং নারী শিক্ষার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে।

2. নারীশিক্ষার উদ্দেশ্যাবলী - 

১. নিরহ্মরতা দূরীকরণ - 

নারী শিক্ষার মধ্যে দিয়ে দেশের থেকে নিরক্ষরতা দূরীকরণ করা যায়।

২. সচেতনতা বোধ বৃদ্ধি - 

শিক্ষা লাভের মধ্যে দিয়ে প্রত্যেক নারীদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস,আত্মমর্যাদা এবং আত্ম সচেতনতা বোধের সৃষ্টি হয়। 

৩. বিষয়ক সম্পর্কিত ধারনা - 

নারীদের নিজেদের সম্পর্কে (দৈহিক ও যৌনতা বিষয়ক) সঠিক ধারণা বোধ গড়ে তুলতে সাহায্য করে।

৪. সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ - 

কোনো বিষয়ের প্রতি সিদ্ধান্ত নেওয়া ও পারস্পরিক আলোচনা করে কোনো বিষয়ে সম্পর্কে ঐক্যমত্যে পৌঁছানোর ক্ষমতা বিকাশ পায়।

৫. নিজেস্ব অধিকার অর্জন - 

নারীরা নিজেদের অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।

৬. স্বনির্ভতা - 

নারীদের চাকরি বা কাজের বাজারে উপযোগী জ্ঞান,প্রযুক্তিগত দক্ষতা ও কৌশলের অধিকার বোধ গড়ে তুলে স্বনির্ভর হয়ে ওঠে। 

৭. সক্রিয়তা - 

সামাজিক বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও কর্মসূচিতে থেকে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে পারে তার উপযোগী করে গড়ে তুলতে পারে। 

৮. নেতৃত্ব দানের ক্ষমতা - 

মহিলাদের মধ্যে নেতৃত্বদানের উপযোগী সামর্থ্যের বিকাশ ঘটানো যায়।

3. নারী শিহ্মার গুরুত্ব - 

১. সচেতনতা - 

নারী শিক্ষা প্রবর্তনের মূল ও গুরুত্ব হল নারী শিক্ষা আঙিনায় তে নিয়ে আসা, নারী মধ্যে আত্ম সচেতনতা ও সামাজিক সচেতনতা বোধ গড়ে তোলা। শিক্ষার মাধ্যমে নারীর মধ্যে অধিকার সচেতনতা বোধ গড়ে ওঠে। অর্থাৎ নারী শিক্ষার মাধ্যমে তাদের মধ্যে সচেতনতা বোধ গড়ে ওঠে। 

২. নারীর আত্মমর্যাদা বৃদ্ধি - 

শিক্ষার মাধ্যমে নারীরা নিজেদের মধ্যে আত্ম পরিচয় সম্পর্কিত পরিবর্তন ধারণার বদল ঘটায়।শিহ্মার মাধ্যমে নারীদের মধ্যে নিজের ক্ষমতা সম্পর্কে ধারণা, আত্ম বিশ্বাস ও আত্ম মর্যাদা বোধ গড়ে তুলতে সহায়তা করে। শিক্ষা প্রচলিত মূল্যবোধ,ঐতিহ্য,সংস্কার প্রথা যা নারী মর্যাদার বিরোধী তাকে চ্যালেঞ্জ জানাতে বা বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করতে পারে। 

৩. সিদ্ধান্ত গ্ৰহনের হ্মমতা বৃদ্ধি -

নারী শিক্ষার দ্বারা একটি বিশেষ দিক হল সিদ্ধান্ত গ্ৰহনের হ্মমতা।যে নারী যত শিহ্মিত সে তত বেশি এই হ্মমতা উপভোগ করে।শিক্ষা পারিবারিক সিদ্ধান্ত গ্ৰহনের ক্ষেত্রে মেয়েদের কন্ঠস্বরকে অনেক জোরালো করে তোলার হ্মেত্রে এক বিরাট ভূমিকা পালন করে।শিক্ষা নারীকে জাতীয় জীবনের বিভিন্ন হ্মেত্রে সিদ্ধান্ত গ্ৰহনের ব্যাপারে পুরুষের সমহ্মক করে তোলা।

৪. প্রজনন হ্মমতা হ্রাস - 

নারীর প্রজনন হ্মমতা ও শিক্ষা একটি গভীরভাবে সম্পর্কযুক্ত। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে প্রজনন নিয়ন্ত্রনের হ্মেত্রে স্বামীর অপেক্ষা স্ত্রীর শিক্ষা অধিক গুরুত্বপূর্ণ।যত বেশি শিহ্মা গ্ৰহন,তত দেরিতে বিবাহ,সংহ্মিপ্ত প্রজনন কালে কম সন্তান সন্ততি,চাকুরি লাভের ইচ্ছা বা সম্ভাবনা বেশি। স্বাভাবিকভাবে শিক্ষিত মেয়েরা ছোটো পরিবার পছন্দ করে।ফলে জন্ম নিয়ন্ত্রন ও পরিবার পরিকল্পনায় উৎসাহী হয়। 

৫. বাল্য বিবাহ রোধ - 

ভারতবর্ষের একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক কু প্রথা হল বাল্য বিবাহ সমস্যা। ভারতের মতো উন্নয়নশীল অনেক পিতা মাতা মনে করেন মেয়েদের শিক্ষার জন্য অর্থ ব্যয় করা শুধু অপচয়।মেয়েদের বেশি পড়াশোনা করালে পাত্র পাওয়া কঠিন হতে পারে ও পন বেশি দিতে লাগে।একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে ভারতে 61% মেয়ে 16 বছর পেরোনোর আগেই বিয়ে হয়ে যায় এবং গড়ে প্রথম মাতৃত্বের বয়স হল 19.2 বছর(Health Information Of India,MOHRW,2003)ফলে বাল্যবিবাহের ফলে অকাল মাতৃত্ব ও শিশুমৃত্যুর হার বৃদ্ধির সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়,শিশু ও মায়ের জীবনের গুনগত মান নেমে যায়। আবার বর্তমানে প্রেম জনিত কারণে অল্প বয়সে (বিশেষত্ব 15-16 বছর বয়সে) ছাত্রীরা পালিয়ে বিবাহ করে।ফলে তারা অনেকেই পরবর্তী শিক্ষা অল্প বয়স থেকে বঞ্চিত হয়।তাই বাল্যবিবাহ রোধ করতে হলে নারী শিক্ষাকে প্রধান্য দিতে হবে।যাতে সমাজ থেকে বাল্য বিবাহের মতো অভিশাপ থেকে মুক্তি পায়।

৬. মাতৃত্ব কালীন মৃত্যুহার হ্রাস - 

মাতৃত্বকালীন মৃত্যু একটি জাতীয় সমস্যা।পৃথিবীর  ৫টি মাতৃত্বকালীন মৃত্যুর মধ্যে একটি ভারতে ঘটতে দেখা যায় (UNICEF,2009)। মিলেনিয়াম ডেভেলাপমেন্ট গোলস  এর নির্ধারিত লক্ষ্য মাত্রা হল 2015 সালের মধ্যে এটির সঙ্গে কমিয়ে ১০৯ আনতে হবে। শিক্ষিত মহিলারা কম বয়সে বিবাহ ও কম বয়সে সন্তান গ্ৰহনে বিরোধী।তারা যথেষ্ট পরিমাণে স্বাস্থ্য সচেতন।গর্ভ ধারণ থেকে শুরু করে সন্তানের ভূমিকা পর্যন্ত নিজেদের কে সুরহ্মিত রাখার চেষ্টা করে। সমীক্ষা থেকে জানা যায় যে অতিরিক্ত এক বছরের বিদ্যালয় শিক্ষা হাজারে মধ্যে দুই জন নারীকে মাতৃত্বকালীন মৃত্যু থেকে রক্ষা করে।

৭. শিশু মৃত্যুর হার হ্রাস - 

ভারতের একটি বড়ো সমস্যা হল শিশু মৃত্যু।UNICEF (2009) রিপোর্টে বলা হয় প্রতি 15 সেকেন্ডে প্রতিবার যোগ্য রোগে একটি শিশু মারা যায়। 2003-10 এর হিসেবে অনুযায়ী(SRS) বর্তমানে ভারতবর্ষে শিশু মৃত্যুর হার সামগ্রিকভাবে ছেলেদের মধ্যে 46 হয় এবং মেয়েদের মধ্যে 49 হয়। যদি মায়েরা শিক্ষায় শিক্ষিত করা যায় তাহলে শিশুর ব্যাপারে অধিক মাত্রায় যত্নশীল। শিশু পরিচর্যা,পুষ্টি সংক্রান্ত বিষয়, তাদের চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়,পোলিও ও অন্যান্য টীকাকরণ,পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা প্রভৃতি ব্যাপারে শিহ্মিত মায়েরা সচেতন থাকে।ফলে শিহ্মিত মায়েদের সন্তান অপেক্ষাকৃত স্বাস্থ্যবান ও নীরোগ হয় এবং আয়ুস্কার অনেক বেশি হয়। এভাবে শিক্ষা শিশু মরনশীলতার হার কমাতে সাহায্য করে থাকে।

৮. সময়ের যথোপযুক্ত ব্যবহার - 

শিক্ষা নারীকে সময় যথার্থ ভাবে ব্যবহার করতে শেখায়।শিহরিত নারী সময়কে সৃজনশীল ও উৎপাদনশীল কাজে ব্যয়িত করে।গবেষনার প্রকাশ তে শিহরিত মহিলারা সেই সমস্ত কাজে লিপ্ত থাকে সেগুলির সামাজিক স্বীকৃত আছে এবং অর্থনৈতিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত শিহরিত মহিলারা ঘর গৃহস্থালীর কাজ অপেক্ষা অর্থনৈতিক ক্রিয়াকলাপ বেশি অংশগ্রহণ করে।এটি নারীর হ্মমতা ও মর্যাদা বৃদ্ধি করে।

৯. শিশুর স্বাস্থ্য ও শিক্ষার উপর প্রভাব -

মায়ের শিক্ষা ও শিশুর শিক্ষা ওতপ্রোতভাবে জড়িত।একটি শিশু জন্ম হওয়ার পর তার মায়ের কোলে বড়ো হয়,তাই শিশুর শিক্ষা মায়ের শিহ্মার উপর নির্ভরশীল। শুধু শিক্ষা নয়, শিশু তথা পরিবারের পুষ্টি,স্বাস্থ্য,শিশু পরিচর্যা প্রভৃতি বিষয়কেও নারীরা অধিকতর সচেতন ও যত্নশীল। বিভিন্ন গবেষণার প্রকাশ যে উচ্চ শিক্ষিত মায়েরা শিশুর উপর অধিকতর যত্নশীল। 

১০. অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা -

শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নারী মানব সম্পদে পরিণত হয়।নারীর শ্রম দহ্মতা বৃদ্ধি পায়। কাজের বাজারে প্রবেশের সুযোগ পায়। উপার্জন মূলক কাজে নারী নিযুক্ত হয়।বিভিন্ন অর্থনৈতিক সুযোগ সুবিধা গুলি গ্রহণ করতে পারে।তাই নারীদের স্বাক্ষর করে তোলা হয়েছে এবং তার পাশাপাশি যদি পেশাগত প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় তাহলে নারীরা উপযুক্ত পেশায় মাধ্যমে আর্থিক ভাবে স্বনির্ভর হয়ে উঠবে। 

১১. HIV/AIDS রোগ প্রতিরোধ -

শিক্ষা নারীদের বিভিন্ন কারণে রোগ যথা HIV/AIDS  ইত্যাদি সংক্রামক রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে।উচ্চ শিক্ষা লাভ ও চাকুরি গ্ৰহন প্রভৃতির ক্ষেত্রে মেয়েরা ঘর থেকে বাইরে কে হবার সুযোগ পায়।বিভিন্ন জনের সঙ্গে মেলামেশা,পত্র পত্রিকা পাঠ,ও গণমাধ্যম থেকে এই রোগ সম্পর্কে জানতে পারে।এই সব রোগের কারন, লহ্মন, প্রতিরোধ, কৌশল, সুরক্ষিত যৌন জীবনের উপায় সম্পর্কে সচেতন থাকে।এই ভাবে শিক্ষা এই সময়ের মরন ব্যধি থেকে মহিলাদের সুরক্ষিত রাখতে সহায়তা করে।

4. নারী শিক্ষার সমস্যা -

১. সমানাধিকারের প্রয়োগ

শিক্ষা ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমান অধিকারের কথা বলা হয়। কিন্তু বাস্তবে তার প্রয়োগ উল্লেখযোগ্যভাবে হয় নি।

২. বালিকা বিদ্যালয় অভাব - 

প্রয়োজন অনুসারে আঞ্চলিক দূরত্ব বিচার করে মেয়েদের জন্য পৃথক বিদ্যালয় স্থাপন করা সম্ভব হয় নি। বিশেষত্ব গ্রামাঞ্চলের বালিকা বিদ্যালয়ের অভাব রয়েছে।পৃথক বিদ্যালয় না থাকায় মেয়েদের ইচ্ছা থাকা সত্বেও বহুক্ষেত্রে তারা পড়া ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়।

৩. কন্যা সন্তানের তুলনায় পুত্র সন্তানের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব - 

এদেশের অধিকাংশ অভিভাবকেরা কন্যা সন্তানের শিক্ষার অপেক্ষা পুত্রের শিক্ষার উপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়।মেয়েদের শিক্ষা সম্বন্ধে সাধারণ ধারণা যে, মেয়েরা গৃহকর্মের জন্যই উপযুক্ত।তাই মেয়েদের প্রতিভা,সামর্থ্য,ইচ্ছা অনিচ্ছার মূল্য না দিয়ে শুধুমাত্র বিয়ের উপযোগী করে তোলার জন্য তাদের শিক্ষা দেওয়া হয়।এর ফলে সামর্থ্য ও সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও অনেক মহিলা বিয়ের পর আর শিক্ষা লাভ করতে পারেন না। গ্ৰামাঞ্চলে এবং অনুন্নত জাতি উপজাতি দের মধ্যে এই প্রবণতা খুবই বেশি। 

৪. ছাত্রীনিবাসের অভাব - 

গ্রামাঞ্চলের নারী শিক্ষার সবচেয়ে অসুবিধা হল নারীদের জন্য পৃথক ছাত্রীনিবাস নেই। আবার শৌচালয় ব্যবস্থা খুব খারাপ বা নেই বলে চলে।

৫. ক্রটিপূর্ণ পাঠ্যক্রম - 

পাঠক্রম ত্রুটিপূর্ণ হওয়ার ফলে ছেলে ও মেয়েদের সব সময়ই একই পাঠক্রম অনুসরণ করতে হয়।ফলে অনেক সময় মেয়েই তাদের অর্জিত বিদ্যাকে পরবর্তী জীবনে কাজে লাগাতে পারে না।আবার অনেক ক্ষেত্রে এই ধারণা আছে যে,মেয়েরা অঙ্ক ও বিজ্ঞানে দুর্বল।তাই সামর্থ্য থাকলেও সুযোগের অভাবে বৃত্তি ও কারিগরি শিক্ষায় অনেক বেশি যেমন - ইলেকট্রনিক্স,কম্পিউটার ইত্যাদি পড়বার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়।নারীদের উচ্চশিক্ষার জন্য পৃথক পাঠক্রম এখনো তৈরি হয় নি।

৬. উচ্চ শিক্ষার জন্য কলেজের অভাব - 

উচ্চশিক্ষার প্রয়োজনে সর্বত্র মেয়েদের জন্য কলেজ নেই,সহ শিক্ষার সুযোগও অনেক কলেজ নেই। অনেকেই এই মত পোষণ করেন যে, উচ্চ শিক্ষিত মেয়েরা সাংসারিক শৃঙ্খলা মানতে চান না।

৭. অর্থের অভাব - 

আর্থিক অনটন নারী শিক্ষার পথের অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

৮. রহ্মনশীল ও কুসংস্কার মনোভাব -

অনগ্ৰসর সম্প্রদায় ও উপজাতিদের মধ্যে রক্ষণশীলতা এবং কুসংস্কার থাকার নারী শিক্ষার পথে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। 

৯. শিহ্মিকার অভাব -

মেয়েদের জন্য শিক্ষক শিখন কলেজেও কম আছে, ফলে যোগ্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষিকার অভাব রয়েছে।

১০. বাল্য বিবাহ -

বাল্য বিবাহ সম্বন্ধে আইন থাকলেও বহু ক্ষেত্রেই আইন মানা হয় না।ভারতের অঞ্চলে এলাকাতে এখনো বাল্য বিবাহ লহ্ম্য করা যায়।আবার অনেক সময় নাবালক - নাবালিকারা পালিয়ে অল্প বয়সে বিবাহ করে।ফলে বিবাহের পর আর পড়াশুনা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় না প্রায়সই মেয়েদের। 

১১. সচেতনতা অভাব - 

গ্রামের অধিকাংশ মহিলা যাঁরা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জননী তাঁরা নিরহ্মর ফলে তাঁদের মধ্যে মেয়েদের লেখাপড়া শেখাবার বিষয়ে উৎসাহ দেখান না, সাহায্যে ও করতে পারেন না,বর্তমান প্রজন্মের মায়েদের সচেতনতার অভাব হবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মেয়েদের শিক্ষার পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। 

১২. বাসস্থানের ভূমিকা -

বাসস্থান থেকে বিদ্যালয়ের দূরত্ব নারী শিক্ষার পথকে সুগম না করে সংকুচিত করে তুলেছে। 

১৩. পিতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা -

পিতৃতান্ত্রিক সমাজে পুরুষের তুলনায় নারীর সম্মান ও মর্যাদা অপেক্ষাকৃত কম,তাই নারী শিক্ষায় ব্যাহত হচ্ছে।পুরুষের অর্থলাসা ও পনপ্রথা কে কেন্দ্র করে নারীর উপর অত্যাচার ও অবিচার তাদের ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য কে নিষ্ঠুরভাবে অবদমিত করে রেখেছে।

১৪. সামাজিক নিরাপত্তা অভাব - 

সামাজিক নিরাপত্তার অভাব বোধ নারী শিক্ষার প্রতি দুর্গম করে তুলেছে। 

১৫. অনুন্নয়ন -

জন শিক্ষার পথে একটি বিশেষ বাধা হল অনুন্নয়ন। মেয়েদের ক্ষেত্রে এই অনুন্নয়ন খুব বেশি।প্রথম শ্রেনীর ১০০ ছাত্রীর মধ্যে ৩০ জন পঞ্চম শ্রেণীতে এবং ২০ জন অষ্টম শ্রেণীতে পৌঁছায়।অর্থাৎ 80% মেয়েরা নবম শ্রেণীতে পৌঁছানোর আগেই পড়াশোনা ছেড়ে দেয়।

      উপরোক্ত যে সমস্ত সমস্যার কথা বলা হয়েছে সেই গুলিই নারী শিক্ষার বিকাশে পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।

5. নারী শিক্ষার সমস্যার সমাধান - 

১. অভিভাবক ও শিক্ষক শিক্ষিকাদের সক্রিয়তা -

প্রাথমিক শিক্ষা স্তরে নারী শিক্ষার ক্ষেত্রে অনুন্নয়ন ও অপচয় রোধ করতে হবে। অনুন্নয়ন ও অপচয় রোধ করতে হলে অভিভাবক শিক্ষক শিক্ষিকাকে সচেষ্ট হতে হবে। 

২. বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন -

প্রতি গ্ৰামে বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন করতে হবে। বিদ্যালয়ে যাতায়াতের সুবিধা করতে হবে। বিদ্যালয়ে বিনামূল্যের টিফিন সরবরাহের ব্যবস্থা করতে হবে।

৩. শিক্ষা প্রতি অভিভাবকদের সচেতনতা জাগরণ -

পল্লি অঞ্চলে নারী শিক্ষার প্রয়োজনীয় সম্পর্কে অভিভাবকদের সজাগ করতে হবে, সেইজন্য বিদ্যালয়ে বছরে দুই/তিনবার অভিভাবক সম্মেলন করতে হবে এবং আলোচনার ব্যবস্থা করতে হবে।

৪. সমানাধিকার ও স্বনির্ভরতা - 

সমাজে নারী ও পুরুষের সমান মর্যাদা যাতে প্রতিষ্ঠিত  হয় তার ব্যবস্থা করতে হবে। অর্থনৈতিক দিক থেকে নারীরা যাতে স্বনির্ভর হতে পারে তার জন্য নারীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি করতে হবে। 

৫. বাল্য বিবাহ রোধ করা - 

বাল্যবিবাহ কেবল আইনের দ্বারা নিষিদ্ধ করলে চলবে না।নিরহ্মর জন সাধারণকে বাল্যবিবাহের কুফল সম্পর্কে সচেতন করে তুলতে হবে। 

৬. পৃথক পাঠক্রম রচনা -

নারীরা পরবর্তী জীবনে যাতে কাজে লাগাতে পারে, সেদিকে দৃষ্টি রেখে পাঠক্রম রচনা আরও বাস্তব দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয় দিতে হবে।সাধারণ শিক্ষার সঙ্গে সাংসারিক ও পারিবারিক জীবনের প্রয়োজন বিচার করে মেয়েদের জন্য বিভিন্ন পাঠক্রম রচনা করতে হবে। নারীর সামাজিক,পারিবারিক ও ব্যক্তিগত প্রয়োজনের কথা চিন্তা করে বাস্তব দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে পাঠক্রম রচনা করতে হবে। 

৭. বাস্তব জীবনে সঙ্গে শিহ্মার আত্তীকরণ -

প্রয়োজনের সঙ্গে শিক্ষার সাযুজ্য রচনা করতে হবে। বাস্তব জীবনের সঙ্গে শিক্ষার আত্তীকরণ করতে হবে।এ সম্পর্কে শিক্ষক - শিক্ষিকাগণ অভিভাবকদের অবহিত করবেন।

৮. অবৈতনিক শিহ্মার প্রচার -  

অবৈতনিক নারী শিক্ষার সুযোগ সুবিধা সম্প্রসারিত করতে হবে।তাই বর্তমানে সর্বশিহ্মা অভিযানের মাধ্যমে শিহ্মা ব্যবস্থাকে অবৈতনিক করা হচ্ছে।

৯. ছাত্রীনিবাস -

বালিকা বিদ্যালয়ে ছাত্রীনিবাসের ব্যাপক ব্যবস্থা রাখতে হবে। ছাত্রীনিবাস তৈরীর জন্য বিদ্যালয়ে ছাত্রী নিবাসের ব্যবস্থা রাখতে হবে। ছাত্রীনিবাসের তৈরির জন্য বিদ্যালয় গুলিকে আর্থিক সাহায্য দিতে হবে। 

১০. বাধ্যতামূলক স্ত্রী শিক্ষা - 

স্ত্রী শিহ্মাকে বাধ্যতামূলক করতে হবে।পল্লী অঞ্চলে অভিভাবকদের মধ্যে সৃষ্টি করতে হবে। ৫ থেকে ১১ বছরের মেয়েদের শিক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত মেয়েদের স্কুল থেকে ছড়িয়ে আনা চলবে না বা পড়াশোনা বন্ধ করা চলবে না। 

১১. দারিদ্র্য দূরীকরণ -

দারিদ্র দূরীকরণ ও দরিদ্র পরিবারের ছেলেমেয়েদের শিশু শ্রমিক হিসেবে অর্থোপার্জন করতে হবে না এবং তার পরিবর্তে তারা যাতে বিদ্যালয়ে যাতে আকৃষ্ট হয় তার জন্য সরকার ও জনকল্যাণ কারী প্রতিষ্ঠান গুলিকে বিশেষ চেষ্টা করতে হবে। 

১২. মি ডে মিল কর্মসূচি - 

বিদ্যালয়ে মধ্যাহ্নভোজের ব্যবস্থা করতে হবে।যে সব দরিদ্র পরিবারের ছেলেমেয়েরা দুবেলা পেটপুরে খেতে পায় না,তারা যদি বিদ্যালয়ে দুপুরের আহার পায় তাহলে স্বভাবতই বিদ্যালয়ে উপস্থিতির হার বাড়বে এবং তাদের শিক্ষা লাভের পথও সুগম হবে।

6. নারী শিক্ষার প্রতি ভারতীয় বিভিন্ন কমিশন ও কমিটির সুপারিশ - 

নারী শিক্ষার প্রসারের জন্য স্বাধীনতা পরবর্তী কালীন বিভিন্ন কমিশন ও কমিটি গঠন করা হয়।এই সমস্ত কমিশন ও কমিটির মাধ্যমে নারী শিক্ষার প্রতি বিভিন্ন সুপারিশ করা হয়েছে।সেই গুলি হল - 

১. রাধাকৃষ্ণনের সুপারিশ( বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন) - 

  • কো - এডুকেশন কলেজ গুলিতে মেয়েদের জন্য প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করতে হবে।
  • মেয়েদের শিক্ষা লাভের সুযোগ বৃদ্ধি করতে হবে। 
  • নারী ও পুরুষদের শিক্ষার ও ব্যবস্থা করতে হবে। 
  • সমাজে নাগরিক ও নারী হিসেবে মেয়েরা যাতে উপযুক্ত মর্যাদা পায়,সেই দিকে লক্ষ রাখতে হবে। 
  • কো - এডুকেশনাল কলেজে ছাত্ররা যাতে সৌজন্যবোধ ও সামাজিক দায়িত্ব বোধের উপযুক্ত শিক্ষা লাভ করে সেই দিকে লক্ষ রাখতে হবে।
  • শিক্ষিকারা একই প্রকার কাজের জন্য শিক্ষকদের সমান ভাবে বেতন পাবেন। 
২. মুদালিয়র কমিশনের (মাধ্যমিক কমিশন) সুপারিশ -

  • ছেলে মেয়েদের একই প্রকার শিক্ষা দেওয়া প্রয়োজন।মেয়েদের বিদ্যালয় এবং যেখানে সহ শিক্ষার ব্যবস্থা আছে সেখানে মেয়েদের জন্য গার্হস্থ্য বিজ্ঞান পাঠের ব্যবস্থা করতে হবে। 
  • প্রয়োজন অনুসারে রাজ্য সরকারকে মেয়েদের জন্য পৃথক বিদ্যালয় স্থাপনের চেষ্টা করতে হবে। 
  • সহশিক্ষা হয় এমন বিদ্যালয়ে বা মিশ্র বিদ্যালয়ে মেয়েদের ও শিক্ষকদের অসুবিধা গুলি দূর করার চেষ্টা করতে হবে। 
  • মেয়েদের জন্য পাঠ্যসূচিতে সংগীত,কলা ইত্যাদি বিষয় অনুমোদন করার সুপারিশ করা হয়। 
৩. নারী শিক্ষা উপর জাতীয় কমিটির(দূর্গাবাই দেশমুখ কমিটি) সুপারিশ -
  • কেন্দ্রে National Council For The Education Of Girls And Women গঠন করতে হবে। 
  • নারী শিক্ষার দায়িত্বে একজন কেন্দ্রীয় যুগ্ম পরামর্শ দান দানকারী নারীর হাতে দেওয়া উচিত। 
  • প্রত্যেক রাজ্যের Joint Director পদে একজন মহিলা নিযুক্ত হবেন। তাঁর হাতে থাকবে নারী শিক্ষার দায়িত্ব।
  • মেয়েদের শিক্ষার জন্য আরও বেশি অর্থ বরাদ্দ করতে হবে।
  • প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যেখানে শিক্ষিকা নেই সেখানে School Mother নিয়োগ করতে হবে। 
  • প্রাথমিক স্তরে ছেলে ও মেয়েদের একই ধরনের পাঠক্রম থাকবে।কিন্তু মাধ্যমিক স্তরের মেয়েদের পাঠক্রম ছেলেদের থেকে পৃথক হবে। 
  • আংশিক সময়ের জন্য শিক্ষিকা নিয়োগ করা যেতে পারে যাতে গৃহ কাজ ও শিক্ষক তার মধ্যে সামঞ্জস্য বিধান করা সম্ভব হয়। 
  • মেয়েদের জন্য প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে বৃত্তি ও কারিগরি শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে।প্রয়োজন তুলে বৃত্তি শিক্ষার পৃথক প্রতিষ্ঠান স্থাপন করতে হবে। 
  • ছাত্রী নিবাসের ব্যাপক ব্যবস্থা করতে হবে। 
  • বিদ্যালয়ের যাবার জন্য যাতায়াতের সুব্যবস্থা ও বিনামূল্যে টিফিন দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। 
  • বয়স্ক মহিলাদের জন্য স্বল্প সময়ে কোর্স চালু করতে হবে।
৪. হংস মেহেতা কমিটির সুপারিশ -
  • প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহ শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে।ছেলেমেয়েদের সংখ্যাগত পার্থক্য দূর করতে হবে এবং এর জন্য মেয়েদের শিক্ষার সম্প্রসারণ ঘটাতে হবে। 
  • প্রাথমিক স্তরে ছেলেমেয়েদের একই রকম পাঠক্রম থাকবে। 
  • মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরেও ছেলেমেয়েদের পাঠক্রম একই রকম থাকবে।তবে সামর্থ্য অনুসারে ছেলেমেয়েদের বহুমুখী পাঠক্রম থেকে তাদের পছন্দমতো পাঠক্রম বেছে নিতে পারবে। 
  • মেয়েদের জন্য কখনোই সেলাই, গার্হস্থ্য বিদ্যা বা রান্না সংক্রান্ত শিক্ষা আবশ্যিক হবে না।তাদেরও বিজ্ঞান ও গণিত শিক্ষার উৎসাহ দিতে হবে। 
  • মাধ্যমিক স্কুল ও কলেজ স্তরে মেয়েদের জন্য পৃথক বিদ্যালয় বা কলেজে কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় অভিভাবকগণ সিদ্ধান্ত নেবেন। 
  • মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ শিক্ষকের সাথে শিক্ষিকাও নিয়োগ করতে হবে।
  • নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক স্তরে যৌন শিক্ষা দেবার প্রয়োজন আছে। 
৫. ভক্তবৎসলম কমিটির সুপারিশ - 
  • নারী শিক্ষার জন্য জনগণের সাহায্যে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে হবে। 
  • গ্রামাঞ্চলের শিক্ষিকা ও ছাত্রীদের জন্য হোস্টেলের ব্যবস্থা করতে হবে। 
  • শিক্ষিকা হবার জন্য মেয়েদের উৎসাহিত করতে হবে ও চাকুরির অবস্থার উন্নতি ঘটাতে হবে। 
  • সাংসারিক মহিলাদের জন্য গ্রামে আংশিক সময়ের জন্য শিক্ষকতা করার ব্যবস্থা করতে হবে।
  • দরিদ্র ছাত্রীদের বিদ্যালয় থেকে বিনামূল্যে পোশাক ও বই দেবার ব্যবস্থা করতে হবে।
  • প্রাথমিক স্তরে সহশিক্ষার প্রচলন করতে হবে। 
  • বেসরকারি উদ্যোগের সাহায্য নিয়ে বিদ্যালয় গৃহ নির্মাণ করতে হবে। 
  • শিক্ষিকাদের সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি করতে হবে। 
  • নারী শিক্ষা বিষয়ে যাবতীয় কুসংস্কার ও রক্ষন শীলতা দূর করতে হবে। 
  • বিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্যে সম্মেলন,বেতার প্রচার,শিক্ষা সহায়ক উপকরণ সরবরাহ,ছাত্রী সংগ্রহ এসব কাজের জন্য জনকল্যাণ মূলক প্রতিষ্ঠানের সাহায্য গ্রহণ প্রয়োজন। 
  • যে সমস্ত অঞ্চলে দুর্গম পার্বত্য বা অনগ্ৰসর সেখানে অতিরিক্ত বেতন ও ভাতা দিয়ে শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে।
  • গ্রামাঞ্চলের শিক্ষিকাদের শিহ্মন বিদ্যালয়ে বা কলেজে ভর্তির জন্য অগ্রাধিকার দিতে হবে। 
  • বিদ্যালয়ে মহিলা পরিদর্শক নিয়োগ করতে হবে যাতে শিক্ষার মান উন্নত হয় এবং অপচয় ও অনুন্নয়ন হ্রাস পায়। 
  • নারীশিক্ষার যাবতীয় ব্যয়ভার কেন্দ্রীয় সরকারকে গ্রহণ করতে হবে।
  • নারী শিক্ষাকে উৎসাহিত করার জন্য একে অবৈতনিক করতে হবে ও বাধ্যতামূলক করার জন্য রাজ্য সরকারকে কেন্দ্রের সাহায্যে আইন গঠন করতে হবে।
  • শিক্ষিকা যাতে বিদ্যালয়ের কাছাকাছি বিনা ভাড়ায় থাকতে পারেন তার জন্য বাসস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে।
  • সেখানে 300 জনের মধ্যে জনসংখ্যা সেখানে ১ মাইলের মধ্যে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও 1500 জন বসতি অঞ্চলে 3 মাইলের মধ্যে একটি মিডল স্কুল ও পাঁচ মাইলের মধ্যে একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। 
৬. কোঠারি কমিশনের সুপারিশ -
  • আগামী কয়েক বছর মেয়েদের শিক্ষার কর্মসূচির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে ও স্ত্রী পুরুষের শিক্ষার পার্থক্য যথা শীঘ্র কমিয়ে আনতে হবে। 
  • মেয়েদের শিক্ষার ব্যাপারে বিশেষ কতকগুলি পরিকল্পনা নিতে হবে এবং এগুলিকে গুরুত্ব অনুসারে আর্থিক সাহায্য দিতে হবে। 
  • উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষের অনুপাত 1:4। বিভিন্ন ক্ষেত্রে শিক্ষিতা মহিলার চাহিদা বিবেচনা করে ওই অনুপাত কে বৃদ্ধি করে 1:3 করতে হবে। এর জন্য মেয়েদের বৃত্তি দেওয়ার ব্যবস্থা ও হোস্টেলের ব্যবস্থা করতে হবে। 
  • স্থানীয় চাহিদা অনুসারে মেয়েদের জন্য কলেজ প্রতিষ্ঠা করতে হবে স্তরে মেয়েদের জন্য কলেজ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। স্নাতকোত্তর স্তরে মেয়েদের পৃথক ব্যবস্থার প্রয়োজন নেই।একই সঙ্গে ছেলে মেয়েরা পড়াশোনা করবে। 
  • বিজ্ঞান,কারিগরি ও কলা বিভাগের মেয়েদের ভর্তির সুযোগ দিতে হবে।মেয়েদের জন্য গার্হস্থ্য বিদ্যা,নার্সিং শিক্ষা মতো সমাজসেবা ইত্যাদি বিষয় পড়াবার ব্যবস্থার উন্নতি করতে হবে এবং পাঠক্রমকে উন্নত করতে হবে।মেয়েদের জন্য ব্যবস্থা সংক্রান্ত প্রশাসন ও পরিচালন ব্যবস্থা বিষয়ে পড়াবার সুযোগ করে দিতে হবে।
  • মেয়েদের শিক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে গবেষণা করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। 
  • মেয়েদের শিক্ষা ব্যাপারে তত্ত্বাবধান করার জন্য রাজ্য ও কেন্দ্রীয় স্তরে বিশেষ সংগঠন গড়ে তুলতে হবে।এই সংস্থা শ্রী শিক্ষার পরিকল্পনা করবে এবং এই সংক্রান্ত বিভিন্ন কর্মসূচিকে বাস্তবায়িত করবে।
  • মেয়েরা যাতে সাংসারিক কাজকর্ম করার সঙ্গে সঙ্গে আংশিক সময়ের চাকরি পায় তার সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।সেই সঙ্গে মেয়েদের পুরো সময়ের জন্যও কাজের সুযোগ বাড়াতে হবে।শিক্ষকতা, নার্সিং,সমাজসেবা ছাড়াও অন্যান্য ক্ষেত্রে কাজের সুযোগ বৃদ্ধি করতে হবে।
৭. জাতীয় শিক্ষানীতি (1986) - 
  • নারীদের মর্যাদা বৃদ্ধির জন্য শিক্ষাকে কাজে লাগানো হবে।অতীতে পুঞ্জীভূত একটি দূরীভূত করে নারী জাতীয় কল্যাণে শিক্ষার একটি উচ্চ লহ্ম্য মাত্রা স্থিরীকৃত হবে।
  • নারী জাতির শক্তির বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থা একটি ইতিবাচক ভূমিকা যাতে পালন করে সেই দিকে লক্ষ ও নির্দেশ করা হবে।নারীদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে পূর্নগঠনের জন্য পাঠক্রম, পাঠ্যপুস্তক,শিক্ষক - শিহ্মন সিদ্ধান্ত গ্রহণ কারী প্রশাসকদের প্রশিক্ষণ ইত্যাদির মাধ্যমে মেয়েদেরকে উন্নয়নের বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে। 
  • নারীদের উন্নয়ন কার্যকরী কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে নতুন শিক্ষা ব্যবস্থায় যে সমস্ত পাঠ প্রবাহ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে তার মাধ্যমে নারী শিক্ষার উদ্যম ও উৎসাহ তরান্বিত হবে।
  • নারী জাতির নিরক্ষরতা ও প্রাথমিক শিক্ষা লাভের ক্ষেত্রে বাধা এবং সেই শিক্ষা শেষ স্তর পর্যন্ত তাদেরকে শিক্ষারত থাকার অসুবিধা গুলি দূর করার ব্যাপারে অগ্ৰাধিকার দেওয়া হবে। এর জন্য বিশেষ শিক্ষা ব্যবস্থা,সময়সূচি নির্ধারণ অনুকূল ব্যবস্থা গ্রহণ করে,তাদের প্রচলিত পেশাসহ চলিত এবং ক্রমবর্ধমান প্রযুক্তি বিদ্যার দিকে টেনে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
  • মেয়েদের স্বাক্ষর করে তুলতে ও তাদের প্রাথমিক শিক্ষা সম্পূর্ণ করতে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৮. নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি (2020) -
  • নারীদের শিক্ষার জন্য জেন্ডার ইনক্লুশন ফান্ড গঠন করা হয়েছে।
  • ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে এবং বাইরের স্কুলগামী মেয়েদের নিরাপত্তা উপর বিশেষ ফোকাস করবে।
  • নারী শিক্ষার জন্য অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত মেয়েদের বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক প্রদান করা হবে।
  • অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত সকল মেয়ে,SC,ST শিশু এবং দারিদ্র্য সীমার নিচে (BPL) শিশুদের জন্য ইউনিফর্ম প্রদান করা হবে।
  • ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত মেয়েদের জন্য আত্মরহ্মা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়।
  • প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত CWSN মেয়েদের উপবৃত্তি প্রদান করা।
  • মেয়ে শিহ্মার্থী ও শিহ্মিকার জন্য হোস্টেল ও আবাসিক কোয়াটারের ব্যবস্থা করা হবে।
7. নারী শিক্ষার প্রসারে বিভিন্ন কর্মসূচি -
  • মেয়েদের বিনা বেতনে শিক্ষার ব্যবস্থা করা।যেমন সর্বশিহ্মা অভিযান প্রকল্প। 
  • ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের অবৈতনিক শিক্ষার সুযোগ আরো দীর্ঘায়িত করা। 
  • নিম্ন প্রাথমিক স্তরের পর পৃথক বিদ্যালয়ের সুযোগ দেওয়া।যেমন - জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম ও বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছে। 
  • বিদ্যালয় চলাকালীন যে সমস্ত শিক্ষার্থী তাদের ভাইবোনদের নিয়ে আসার অনুমতি প্রদান করা, যাতে ছোটো ছোটো ভাইবোনেরা যাতে শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পায়। 
  • গ্ৰামে বা দুর্গম অঞ্চলে যেসব শিক্ষার্থীরা যোগদান করবে তাদের জন্য বিশেষ সুযোগ সুবিধা দেওয়া উচিত। 
  • বিদ্যালয়ের সন্নিকটেই শিক্ষিকাদের থাকার সুব্যবস্থা করতে হবে। 
  • বালিকারা সহজে বিদ্যালয়ে যাতায়াতের সুবিধার জন্য ভিলেজ কমিউনিটি অনুকূল সামাজিক পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে। 
  • নারী শিক্ষা প্রকল্পে শিশু ও অভিভাবক উভয়ের শিক্ষার ওপর গুরুত্ব আরোপ করা প্রয়োজন।
  • নারী শিক্ষার নারীত্বের চাহিদার উপর গুরুত্ব আরোপ করবে।মাতৃত্বের বৈশিষ্ট্য যেমন শিশুদের যত্ন,অর্থনীতি,শিশুদের লালন পালন ইত্যাদি নারীদের শিক্ষার অপরিহার্য অঙ্গ হবে। 
  • দেশের প্রতিটি অঞ্চলে নারী শিক্ষার প্রসারের জন্য কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা গুলিকে নানা ভাবে সাহায্য করার জন্য হাত বাড়িয়ে দেবে।সরকার নারী শিক্ষাকে প্রসারের নিয়ে দেশের সার্বিক বিকাশের জন্য উদার হস্তে অর্থ বিনিয়োগ করবেন। 
  • মহিলাদের আংশিক সময়ের শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। সামাজিক ও অর্থনৈতিক কারণে বহু মহিলা পূর্ণ সময়ের শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। 
  • শিক্ষা নারীর উপার্জন ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করবে।এর জন্য নারী শিক্ষাকে বৃত্তি মুখী করে তুলতে হবে। মহিলাদের প্রারম্ভিকোত্তর শিক্ষার অন্যতম উদ্দেশ্য হবে সুগৃহিণী,সুমাতা এবং সুনাগরিক গড়ে তোলা।
  • এছাড়াও নারী শিক্ষার প্রসারের জন্য সরকারের তরফ থেকে অপারেশন ব্ল্যাকবোর্ড এবং স্বাক্ষর ভারত মিশন প্রকল্প চালু করা হয়।
8. উপসংহার -

পৃথিবীর উন্নয়নশীল দেশগুলির মধ্যে ভারতবর্ষ হল অন্যতম। তাই ভারতবর্ষের এই ব্যাপারে পিছিয়ে থাকতে পারে না, সমাজের অর্ধেক অংশ হল মহিলা।তাই তাদের কে শিক্ষার আলো আঙ্গিনায় নিয়ে আসা একান্ত প্রয়োজন।কারণ যখন নারী বিকাশ করবে তখন দেশ বিকশিত হবে।

CLICK HERE - 




Post a Comment (0)
Previous Post Next Post