Unemployment

Unemployment

Unemployment

BENGALI VERSION||ENGLISH VERSION

Unemployment 's Concept, Classification, Reason And social Impact, role of education in eliminating of unemployment
Unemployment

Unemployment 's Concept, Classification, Reason And Social Impact,Role of Education in Eliminating of Unemployment

Assignment Questions -

1. What is Unemployment.

2. Discuss About Classification Of Unemployment.

3. What is Causes or Reasons For Unemployment.

4. Write Down the Impacts of Unemployment in our society.

5. What is the role of education in eliminating of Unemployment.

(*** ENGLISH VERSION FILE BELOW THE ARTICLE BY PDF FORMAT)

Unemployment -

BENGALI VERSION -

1. ভূমিকা -

ভারতে দারিদ্র্যের অন্যতম প্রধান কারণ হল বেকারত্ব। ভারতের পরিকল্পনা রচয়িতারা ধরে নিয়েছিলেন যে অর্থনৈতিক পরিকল্পনা কালে জাতীয় আয় বৃদ্ধির সাথে সাথে কর্মসংস্থান বাড়বে। সমস্ত কর্মহীন ব্যক্তিরা কর্মসংস্থান করা বা দেশের পূর্ণ কর্মসংস্থান বজায় রাখার লক্ষ্যমাত্রা কোনো পরিকল্পনাতেই গ্রহণ করা হয় নি। পরিকল্পনা কালে কর্মসংস্থান বেড়েছে ঠিকই কিন্তু বেকারের সংখ্যা পাল্লা দিয়ে বেড়েছে অনেক। অর্থাৎ, যেভাবে দ্রুতহারে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে কিন্তু অপর দিকে শিল্প উন্নয়নের হার মন্থর।

বেকারত্বের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলা যায়, কাজের ইচ্ছে এবং যোগ্যতা থাকা সত্বেও নিয়মিতভাবে উপার্জনের জন্য কোন কাজ না পাওয়াকে বেকার বলে।

রাম আহুজা মতে, "কোনো ব্যক্তি যদি তার অন্তর্নিহিত ক্ষমতা বা সামর্থ্য অনুযায়ী ইচ্ছা থাকা সত্বেও কোনো পেশা বা চাকুরী পেতে অক্ষম হয়,তখন তাকে বেকার বলে।"

এস.পি.পিগু এর মতে,"যখন কোনো দেশের কর্মক্ষম শ্রমিকেরা প্রচলিত মজুরিতে কাজ করতে ইচ্ছুক হলেও যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ পায় না,তখন এই অবস্থাকে বেকারত্ব বলে।"

Mello(1969) বেকারত্ব হল -"A Condition in which an individual is not in a state of remunerative Occupation despite his desire to do so."

যেখানে বহু সংখ্যক মানুষ প্রচলিত মজুরিতে কাজ করতে আগ্রহী হওয়া সত্বেও যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ পায় না,তখন তাকে বেকারত্ব বলে।আর যদি কেউ কাজ থাকা সত্বেও কাজ না করে,তাকে বেকার বলা যায় না। বেকার হতে গেলে কতগুলি বৈশিষ্ট্য থাকা আবশ্যক। এগুলি হল -

  • কাজ করার ক্ষমতা থাকা।
  • কাজ করার ইচ্ছা থাকা।
  • কাজের অপ্রতুলতা।

2. বেকারত্বের শ্রেণীবিভাগ - 

বেকারত্ব কে অনেক ভাগে ভাগ করা যায়,নিন্মে বর্ণনা করা হল। -

১. মরশুমি বেকারত্ব -

ভারতবর্ষ হল কৃষি প্রধান দেশ, যা আজও নির্ভরশীল বৃষ্টিপাতের উপর। কারণ সেচ ব্যবস্থায় যথেষ্ট সম্প্রসারণ ঘটে নি।তাছাড়া বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়ে চাষের কাজ হয়ে থাকে।এর ফলে কৃষক শ্রমিকদের বেশ কয়েক মাস কর্মহীন থাকতে হয়।এই ধরনের বেকারত্ব কে মরশুমি বেকারত্ব বলা হয়।উপযুক্ত জলসেচের অভাব, পরিপূরক কাজের অভাব,গ্রামাঞ্চলে শিল্প প্রতিষ্ঠা না হওয়া এরূপ বেকারত্বের সৃষ্টি হয়।মৌসুমী বেকারত্ব যে শুধুমাত্র কৃষি ক্ষেত্রে ঘটে তা নয় শিল্পক্ষেত্রে মরশুমি বেকারত্ব লক্ষ্য করা যায়। 

২. প্রচ্ছন্ন বেকারত্ব -

ভারতে কৃষি ক্ষেত্রে প্রচ্ছন্ন বেকারত্ব লক্ষ্য করা যায়। প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি লোক কৃষিতে নিযুক্ত রয়েছে। বেশ কিছু লোককে যদি কৃষিক্ষেত্রে থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় তাহলেও কৃষিক্ষেত্রে উৎপাদন একই থাকবে।কৃষিক্ষেত্রের উৎপাদন একই রেখে যত জন লোককে কৃষি ক্ষেত্র থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় ততজনকে অধ্যাপক নার্কসের মতে প্রচ্ছন্ন বেকার বলা হয়।কৃষি ক্ষেত্র ছাড়াও শিল্পক্ষেত্রে এবং অন্যান্য জীবিকা ও পেশাতেও প্রচ্ছন্ন বেকারত্ব লহ্ম্য করা যায়। 

৩. কাঠামোগত বা প্রযুক্তিগত বেকারত্ব - 

নতুন কৌশলের প্রবর্তন,নতুন দ্রব্য আবিষ্কার,নতুন কলা কৌশল ব্যবহার প্রভৃতির ফলে এই ধরনের বেকারত্ব দেখা দিতে পারে।ভারতে যত বৃহদায়তন শিল্প গড়ে উঠেছে ততই হ্মুদ্র এবং কুটির শিল্প গুলি ধ্বংস হচ্ছে। এর ফলে বেশ কিছু লোক কর্মহীন হয়ে পড়েছে, এদেরকে কাঠামোগত বেকার বা প্রযুক্তিগত বেকার বলে। আবার কৃষিক্ষেত্রে যন্ত্র ব্যবহারের ফলে কর্মহীনতা বাড়ছে। শিল্পক্ষেত্রেও যান্ত্রিক বৈপ্লবিক হওয়ার ফলে বহু মানুষ বেকার সমস্যার বাড়ছে। এই ধরনের বেকারত্ব কে কাঠামোগত বা প্রযুক্তিগত বেকারত্ব বলা হয়। 

৩. বাণিজ্য চক্র জনিত বেকারত্ব -

ধনতান্ত্রিক অর্থনীতির একটি বৈশিষ্ট্য হল এই যে এই ধরনের অর্থনীতিতে নিয়মিতভাবে জাতীয় আয়ে ওঠা নামা লক্ষ করা যায়। কোনো বানিজ্যগত কারনে উৎপাদন হ্রাস ও বৃদ্ধি ঘটে। কোনো শিল্পের মন্দায় সময় দ্রব্য সামগ্রীর চাহিদা কমে যাওয়ার জন্য অনেক দ্রব্য সামগ্রী অবিক্রিত অবস্থায় পড়ে থাকে। সেই সমস্ত দ্রব্যের উৎপাদকরা উৎপাদন কমিয়ে দেয়। উৎপাদন কম করার জন্য কম শ্রমিক নিয়োগ করে। অনেক সময় কলকারখানা বন্ধ হয়ে যায় এবং অনেকে বেকার হয়ে পড়ে।আবার হয়তো দীর্ঘদিন বাদে সেই মন্দার অবস্থা কাটিয়ে উঠলে সেইখানে নিযুক্ত ব্যক্তিদের পুনর্নিয়োগ করা হয়।এই ধরনের মন্দাবস্থার সময় যে বেকারত্ব সৃষ্টি হয়,তাকে বাণিজ্য চক্র জনিত বেকারত্ব বলে।

৪. শিক্ষাগত বেকারত্ব -

বর্তমান সমাজে যা প্রবল আকার ধারণ করেছে এবং সমাজের এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। তা হল শিক্ষাগত বেকারত্ব।সমাজে এমন অনেক মানুষ আছে যারা প্রথাগত শিক্ষায় শিক্ষিত কিন্তু আর্থিক দিক থেকে দরিদ্র পরিবারের সদস্য। তাদের জীবিকা নির্বাহের জন্য কাজের খোঁজ করতেই হয়।সাধারণভাবে এরা কায়িক পরিশ্রম পছন্দ করে না।কায়িক পরিশ্রম ছাড়া সাদা কলারের কাজ পছন্দ করে অথচ পায় না তাদেরকে শিক্ষিত বেকার বলে এবং এই ধরনের বেকারত্বকে শিহ্মাগত বেকারত্ব বলে। ভারতীয় সমাজের শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা কম নয়।

৫. কল-কারখানা সম্পর্কিত বেকারত্ব - 

অর্থনৈতিক মন্দার কারণে যখন বিভিন্ন কলকারখানা, মিল বন্ধ হয়ে যায় তখন সেখানে যারা দীর্ঘকাল ধরে কাজ করেছিল তারা বেকার হয়ে যায়।আবার কখনো কখনো কল-কারখানা উন্নত মানের যন্ত্র ব্যবহারের ফলে শ্রমিকদের ছাঁটাই করে দেওয়া হয়।এর ফলে যে বেকারত্বের সৃষ্টি হয়,তাকে কল-কারখানা সম্পর্কিত বেকারত্ব বলে।

৬. সংঘাত জনিত বেকারত্ব -

কোনো প্রতিষ্ঠানে হঠাৎ বন্ধ হয়ে গেলে সেই প্রতিষ্ঠানে নিযুক্ত শ্রমিকরা বেকার হয়ে পড়ে।সেই প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকরা হয় তো অন্যত্র কাজ পাবে, কিন্তু চাকরি খুঁজে পেতেও কিছু সময় লাগে।এই সময়ের জন্য যে বেকারত্ব দেখা যায় তাকে সংঘাত জনিত বেকারত্ব বলে।এটি একটি সামরিক ঘটনা এবং স্বল্পকালেই দেখা যায়। কোনো কাঁচামালের ঘাটতি বা যন্ত্রপাতি ভাঙ্গনের ফলে বা আকস্মিক দুর্ঘটনার ফলে উৎপাদন ব্যবস্থা ব্যাহত হলেও এই ধরনের বেকারত্ব দেখা যায়।এছাড়া কোনো বন্দরে ডক কর্মীদের ক্ষেত্রে দেখা যায় যে বন্দরে নতুন জাহাজ না আসা পর্যন্ত বন্দর শ্রমিকদের বেকার থাকতে হয়।এই ধরনের বেকারত্বকে সংঘাত জনিত বেকারত্ব বলা হয়।

৭. আকস্মিক বেকারত্ব -

অনেক সময় গ্রামাঞ্চলে খরা ও বন্যা ইত্যাদি প্রাকৃতিক দুর্যোগে চাষাবাদে বিঘ্ন ঘটলে সাময়িকভাবে কাজের অভাব দেখা যায়।শহরাঞ্চলেও অনেক সময় কাঁচামালের অভাবে বা বাজার মন্থার ফলে কলকারখানার কাজ আকস্মিকভাবে বন্ধ হয়ে যায়।এই অবস্থাকে আকস্মিক বেকারত্ব বলে।

৮. মুক্ত বেকারত্ব -

এই ধরনের বেকারত্ব ইচ্ছাকৃত ও অনিচ্ছাকৃত দুই প্রকার হয়।এক্ষেত্রে মানুষ তার নিজের যোগ্যতা থেকে যে কোনো কাজ পেতে পারে তার থেকে আরো উন্নত কাজ পাওয়ার জন্য বসে থাকে।আবার কোনো শিল্পের জন্য যে ধরনের শ্রমিক প্রয়োজন সেই ধরনের শ্রমিক যোগান উদ্বৃত্ত থাকে,তাকে বলে মুক্ত বেকারত্ব।

৯. লুকায়িত বেকারত্ব -

উন্নয়নশীল দেশে কৃষিখাতে পারিবারিক জমিতে যে শ্রম দেওয়া হয় তার এক অংশ লুকায়িত বেকার হয়ে থাকে। এবং এই ধরনের বেকারদের মধ্যে মহিলা শ্রমিকদের সংখ্যা বেশি।

১০. ছদ্মবেশী বেকারত্ব -

সাধারণত এই ধরনের বেকারত্ব কৃষি প্রধান উন্নয়নশীল দেশগুলিতে দেখা যায়। উদ্ধৃত শ্রম শক্তিই এই ধরনের বেকার অবস্থার মূল কারণ।যেমন - কোনো একটি কৃষি খামারে যত জন শ্রমিক কাজ করছে তার মধ্যে থেকে দু'জন বা কয়েকজনকে সরিয়ে দিলেও ওই খামারের উৎপাদন অপরিবর্তিত থাকে, তবে ওই সরিয়ে নেওয়ার শ্রমিকের ওই খামারের উৎপাদন অপরিবর্তিত থাকে, তবে ওই সরিয়ে নেওয়ার শ্রমিকের ওই খামারের কাজে কোনো ভূমিকা থাকে না,এই সংখ্যক শ্রমিক হল ছদ্মবেশী বেকারত্ব।

১১. অপূর্ণ নিয়োগ বেকারত্ব -

এই ধরনের অবস্থা উন্নয়নশীল দেশের গ্ৰাম ও শহর উভয় অঞ্চলে দেখা যায়। এক্ষেত্রে দেখা যায় একজন শ্রমিক কোনো কলকারখানায় সপ্তাহে নিয়ম অনুযায়ী যত সময় কাজ পাওয়া উচিত তার থেকে কম সময় কাজ করে থাকে। তবে এই অপূর্ণ নিয়োগ সম্পর্কিত তথ্য সঠিক পাওয়া কঠিন। 

১২. ইচ্ছাকৃত বেকারত্ব -

যদি কোনো কর্মহ্মম ব্যক্তি বর্তমানে প্রচলিত মজুরির হার অপেক্ষায় অধিক মজুরি সম্পন্ন নিয়োগের ক্ষেত্রে কর্ম প্রাপ্তির আশায় বর্তমানে স্বেচ্ছায় নিয়োগের সুযোগ পরিত্যাগ করে তাকে ইচ্ছাকৃত বেকারত্ব বলা হয়।

১৩. অনিচ্ছাকৃত বেকারত্ব - 

বর্তমানে প্রচলিত মজুরির হারে কোনো কর্মক্ষম এবং যোগ্য ব্যক্তি কর্ম নিযুক্তিতে আগ্রহী হওয়া সত্ত্বেও যদি নিয়োগের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়,তবে তাকে অনিচ্ছাকৃত বেকারত্ব বলে।

১৪. According to NSSO Classification -

এছাড়াও NSSO(National Sample Survey Organisation) অনুযায়ী ভারতবর্ষে বেকারদের ৫ টি ভাগে ভাগ করা যায়। -

  • সাধারণ বেকার - যারা নিয়মিত উপার্জন সহ কোনো কাজে যুক্ত নয়।
  • অর্ধবেকার - যারা মনে করে যোগ্যতা অনুযায়ী তারা কাজ পায় না। তাদের অর্ধবেকার বলে।
  • ঋতু ভিত্তিক বেকার - যারা বছরের বিশেষ কোনো ঋতুতে কর্মহীন হয়ে পড়ে।যেমন - চাষি। এদের বলা হয় ঋতু ভিত্তিক বেকার।
  • সপ্তাহ ভিত্তিক বেকার - যারা সপ্তাহের বেশির ভাগ দিন বেকার থাকে। এদের সপ্তাহ ভিত্তিক বেকার বলে।
  • দিন ভিত্তিক বেকার - যারা বিশেষ দিন বা কোনো কোনো দিন কাজ পায় না, অর্থাৎ বেকার থাকে। এদের দিন ভিত্তিক বেকার বলে। 

3. বেকারত্বের কারণ -

নানা কারণে বেকারত্বের সৃষ্টি হয়, নীচের তার আলোচনা করা হল -

ক. শিক্ষাগত কারন -

অশিক্ষার সঙ্গে বেকারত্বের সম্পর্ক গভীর।শিহ্মিত সংখ্যা হল দেশের বড়ো মানব সম্পদ।শিক্ষাবিহীন জনসংখ্যার হল দেশের বোঝা।তাই অশিক্ষা দারিদ্র্য ও বেকারত্ব সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমাদের দেশের ত্রুটিপূর্ণ শিক্ষাব্যবস্থা বেকার সমস্যার একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ।দেশের শিক্ষার যথেষ্ট প্রসার ঘটলেও তা যুগোপযোগী নয়।কাজের বাজারের উপযোগী নয়।ফলে পাস করে উপযুক্ত চাকুরি লাভে ব্যর্থ হয়।কারণ প্রতিযোগিতা পূর্ণ কাজের বাজারের প্রয়োজন অনুযায়ী জ্ঞান ও দক্ষতা সৃষ্টিতে অক্ষম।শিক্ষাগত কারন গুলি নীচে আলোচনা করা হল -

১. সঠিক পরিকল্পনার অভাব -

সরকারের উপযুক্ত শিক্ষা পরিকল্পনার অভাব বেকারত্বের একটি বড়ো কারণ।জাতীয় জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে (শিক্ষা ও স্বাস্থ্য) এবং অন্যান্য ক্ষেত্রের মানব সমাজের প্রয়োজনীয়তার পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষা ব্যবস্থাকে গড়ে তোলার উপযুক্ত পরিকল্পনা আমাদের দেশে নেই। ফলে প্রয়োজনীয় অতিরিক্ত শিক্ষিত বেকারের সৃষ্টি হচ্ছে। 

২. শিক্ষার গুণগত মানের অবনমন -

শিক্ষার গুণগত মানের অভাব বেকারত্ব সৃষ্টি অন্যতম কারণ। শিক্ষার নিম্নমান ভারতীয় শিক্ষার একটি বড়ো সমস্যা। উপযুক্ত পরিকাঠামোর অভাব,পর্যাপ্ত সরকারি অনুদানের অভাব,উপযুক্ত প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত শিক্ষকের অভাব।যথার্থ ছাত্র-শিক্ষক অনুপাতের অভাব, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কার্যকরী কার্য দিবসের সংখ্যা কমে যাওয়ার প্রভৃতি কারণ শিক্ষার সর্বস্তরে বিশেষ করে উচ্চ শিক্ষার মানের অবনমন ঘটে।ফলে পাস করার পর শিক্ষার্থীরা কাজের বাজারের উপযুক্ত হয়ে গড়ে উঠতে পারছে না। কাজের বাজারে প্রতিযোগিতার থাকতে পারছে না।ফলে বেকারত্ব সৃষ্টি হয়। 

৩. পেশাগত শিক্ষার সুযোগের অভাব -

আমাদের দেশে শিক্ষাব্যবস্থা হল পুঁথিকেন্দ্রিক। কর্মকেন্দ্রিক ও বিশ্ব বাজারের চাহিদা উপযোগী নয়। এখানে সাধারণ শিক্ষার যতটা বিকাশ ঘটেছে,পেশাগত বা বৃত্তিগত শিক্ষার ততটা বিকাশ ঘটতে পারে নি। স্বাধীনতার পরবর্তী কালীন ভারতবর্ষের শিক্ষা বিকাশে ঘটেছে ঠিকই কিন্তু সেই পরিকল্পনাগুলি যথাযথ গুরুত্ব পায় নি।বৃত্তিমুখী ও পেশাগত শিক্ষার উন্নতি না হওয়ায় ফলে শিক্ষিত যুবক যুবতীরা শিক্ষা শেষে কর্মসংস্থানের অভাব ঘটে। ফলে বেকারত্বের সৃষ্টি হয়। 

৪. প্রযুক্তিগত শিক্ষার অভাব - 

বর্তমান যুগ হল প্রযুক্তিবিদ্যার যুগ।বর্তমান বিশ্বে প্রযুক্তির ব্যবহার দ্রুত বেড়ে চলেছে।জীবনে এমন কোনো ক্ষেত্র নেই যেখানে প্রযুক্তির ব্যবহার হয় না। বর্তমান বিশ্বে শারীরিক শ্রমের পরিবর্তে প্রযুক্তিগত দক্ষতা বেশি ব্যবহৃত হয়।কিন্তু সেই তুলনায় ভারতবর্ষে প্রযুক্তিগত শিক্ষাদানের ব্যবস্থা অপ্রতুল।ফলে দহ্ম জনশক্তি গড়ে উঠতে পারছে না।ফলে বেকারত্ব সৃষ্টি হয়।

৫. ভাষাগত সমস্যা - 

ভারতবর্ষে বিভিন্ন প্রদেশের ভাষা বিভিন্ন।এর ফলে সরা  ভারতবর্ষ জুড়ে দেখা যায় ভাষাগত সমস্যা।এক প্রদেশের মানুষ অন্য প্রদেশে চাকুরি গ্ৰহনের ক্ষেত্রে ভাষাগত সমস্যার সম্মুখীন হয়।বিশেষ করে ইংরেজি ও হিন্দি ভাষার দক্ষতার অভাব এক্ষেত্রে সমস্যার সৃষ্টি করে। বর্তমানে বিশ্ব এবং বিশ্বায়নের যুগে ইংরেজি ভাষা হল সংযোগকারী ভাষা এবং এই ভাষার দক্ষতার অভাব চাকুরী লাভের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবক হিসেবে কাজ করে।ফলে বেকারত্ব বৃদ্ধি পায়।

৬. বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিদ্যার উন্নতি - 

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিদ্যার উন্নতির ফলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কলকারখানা,অফিস,কলেজে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ও কম্পিউটার ব্যবহার করা হচ্ছে।ফলে অল্প সংখ্যক শ্রমিকদের দ্বারা ব্যাপক পরিমাণে কাজ সম্পাদিত হচ্ছে। পাশাপাশি বর্তমানে কম্পিউটার ও ইন্টারনেটের যুগে আমরা তাল মিলিয়ে চলতে পারছি না।কারণ আমরা সকলে এখনও কম্পিউটার,ইন্টারনেট ও অন্যান্য প্রযুক্তির ব্যবহার সংক্রান্ত পর্যাপ্ত জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জনে সক্ষম হই নি।

৭. শিক্ষাক্ষেত্রে অপ্রতুল বরাদ্দ -

আমাদের দেশে শিক্ষাহ্মেত্রে বিশেষ করে বৃত্তি বা পেশাগত শিক্ষা ও কারিগরি বা প্রযুক্তিগত শিক্ষাক্ষেত্রে যে পরিমাণ টাকা বিনিয়োগ করা হয়,সেটি যথেষ্ট নয়। ফলে একদিকে যেমন পেশাগত ও প্রযুক্তিগত শিক্ষার বিকাশে বাধা সৃষ্টি করেছে,অপরদিকে শিক্ষার মানোন্নয়ন কে প্রতিহত করেছে।পেশাগত ও প্রযুক্তিগত শিক্ষার সুযোগ দরকার।উদ্যোগ সীমিত সকলে এই শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে দক্ষ জনশক্তি বা মানব সম্পদে পরিণত হতে পারছে না।ফলে বেকারত্বের সৃষ্টি হচ্ছে। 

৮. অদক্ষ কর্মী -

কোনো কোনো সমাজবিজ্ঞানী মনে করেন ভারতবর্ষে বেকার সমস্যার একটি অন্যতম কারণ হল দক্ষ শ্রমিকের অভাব। দেশের প্রায় ২০% - ২৫% মানুষ অশিক্ষিত, অক্ষর জ্ঞান পর্যন্ত নেই। তাদের বৃত্তি বা পেশাগত ডিগ্ৰি নেই।তাই অশিক্ষা ও অদক্ষতা বেকারত্বের একটি বড়ো কারণ।

খ. অন্যান্য কারণ -

১. জনস্ফীতি - 

জনস্ফীতি হল বেকারত্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ।একটি সমাজে যত সংখ্যার মানুষের কর্মসংস্থান সম্ভব জন্মহার তার চেয়ে অনেক বেশি,ফলে বেকারত্ব সৃষ্টি হয়। ভারতবর্ষের যা হারে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে সেই হারে কর্মসংস্থানের সুযোগ হচ্ছে না।ফলে ভারতবর্ষে বেকার সমস্যা ভয়াবহ হয়ে উঠে। 

২. শিল্পে অনগ্ৰসরতা -

কর্মসংস্থান তথা দেশের সামগ্রিক উন্নতির জন্য শিল্প একান্ত দরকার।কারণ পুঁজি এলে শিল্প হয় শিল্প হয়।শিল্প হলেই কর্মসংস্থান বহুগুণ বেড়ে যায় এবং এর ফলস্বরূপ বেকারত্ব হ্রাস পায়।কিন্তু ভারতবর্ষের মতো দেশের তেমন শিল্পায়ন না হওয়ায় বেকারত্বের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

৩. স্থায়ী কাজের অভাব - 

কৃষিব্যবস্থা ভারতীয় অর্থনীতির মূল ভিত্তি।অথচ কৃষি ব্যবস্থা যথেষ্ট উন্নত নয়।গতানুগতি পদ্ধতিতে মাধ্যমে কৃষি কাজ করা হয়।ফলে কৃষি ছাড়াও অনেক কাজ রয়েছে যা সারা বছর ধরে চলে না।বছরের নির্দিষ্ট সময়ে কাজগুলি হয়।বছরের বাকি সময় লোকজন বেকার হয়ে পড়ে।সাধারণত শ্রমিকদের ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা যায়।

৪. ব্যবসার প্রতি অনীহা - 

অর্থনীতির মূল ক্ষেত্র বা স্তম্ভ হল কৃষি,শিল্প,বাণিজ্য এবং চাকুরি বা পরিষেবা ক্ষেত্রে।শিক্ষিত ভারতবাসী ব্যবসা-বাণিজ্য অপেক্ষায় চাকরি ব্যাপারে বেশি আগ্রহী। ব্যবসার প্রতি নেতিবাচক মনোভাব লক্ষ্য করা যায়। শিক্ষিত জনগণের মধ্যে ব্যবসা বাণিজ্যের প্রতিটির চাকুরির সমান আগ্রহ সৃষ্টি হচ্ছে না।চাকুরি নির্ভর ভারতবাসীর মধ্যে বেকারত্বের একটি অন্যতম কারণ।

৫. সরকারি সুপরিকল্পিত কর্মনীতির অভাব - 

সরকারের সুপরিকল্পিত অর্থনীতির বাস্তবায়নের অভাব বেকারত্বের জন্য দায়ী।কেন্দ্রীয় সরকারের পরিকল্পিত নীতি না থাকার ফলে কর্মক্ষেত্র গুলি কর্ম সংযোজনের নীতি গ্রহণ করে চলেছে।ফলে শুধু শিক্ষিত বেকার নয়,অশিক্ষিত কর্মহ্মম ব্যক্তিরা কর্মের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।সরকারের কর্মসংস্থান প্রকল্পগুলি যথাযথভাবে রূপায়িত হয় না। ফলে ভারতবর্ষের বেকারত্ব ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।এছাড়া সরকারি অনেক পথ বিলুপ্তি করে দেওয়ার কর্মক্ষেত্রে ক্রমশ সংকুচিত হয়ে পড়েছে। ফলে বেকারত্ব তীব্র আকার ধারণ করেছে।

4. সমাজের উপর বেকারত্বের প্রভাব -

বেকারত্ব একটি সামাজিক অভিশাপ।বেকার সমস্যা সমাজকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে।মানুষের যে শক্তি সমাজের সম্পদ বৃদ্ধিতে নিয়োজিত হতে পারত তার অপচয়ের ফলে রাষ্ট্রের বিপুল ক্ষতিসাধন হয় হচ্ছে। সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে বেকারত্বের প্রভাব পড়েছে। - 

১. হতাশা সৃষ্টি - 

বেকারত্ব যুব সম্প্রদায়ের মনে গভীর হতাশা বা নৈরাশ্য বোধের জন্ম দেয়। বেকারত্ব কারনে যুবক যুবতীরা তাদের মৌলিক চাহিদা গুলি পূরণে ব্যর্থ হয়। এই চাহিদা গুলির অপূর্ন জনিত অতৃপ্তি থেকে তাদের মধ্যে হ্মোভ, নিরাপত্তাহীন ও হতাশার ভাব সৃষ্টি হয়।অনেক সময় এই  হতাশাজনক মনোভাব থেকে তারা আত্ম হননের পথ বেছে নেয়। 

২. সামাজিক অবক্ষয় -

বেকারত্ব যুব সম্প্রদায়ের মনে সমাজের প্রতি নেতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি করে।সমাজ ব্যবস্থা তথা সামাজিক রীতি নীতি, আদর্শ, মূল্যবোধ, সামাজিক শৃঙ্খলা, নিয়ম কানুন প্রভৃতিকে অমান্য করার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। বেকারদের মধ্যে অবিবেচক কার্যাবলী বৃদ্ধি পায়। বেকার যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে উচ্ছঙ্খলতা অসামাজিক কার্যকলাপে প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। অপরাধ প্রবণতা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পায়। মাদকাসক্তি, যৌন অপরাধ, চোরাচালান, নারী পাচার,ড্রাগ পাচার প্রভৃতি নীতি বহির্ভূত অসামাজিক কাজে লিপ্ত হয়ে পড়ে।এভাবে বেকারত্ব সামাজিক দূষণ সৃষ্টি করেছে। 

৩. দারিদ্রতা বৃদ্ধি -

অনেক সময় রাজনৈতিক নেতারা বেকারদের সামান্য পারিশ্রমিকের বিনিময়ে নানাপ্রকার অপরাধমূলক কাজ করিয়ে নেয়।সামাজিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি এবং তাদেরকে বিপথগামী করে। বেকারত্বের ভয়াবহ পরিণাম হল দারিদ্রতা বৃদ্ধি। দারিদ্র্য জনিত কারণে সমাজে চুরি, ডাকাতি,খুন, হানাহানি প্রভৃতি মতো অপরাধমূলক কাজের মাত্রার বৃদ্ধি পায়।সামাজিক শৃঙ্খলার বন্ধন শিথিল হয়ে পড়েছে। 

৪. সামাজিক ও জাতীয় সংহতিতে বাধা সৃষ্টি -

বেকারত্বের কারণে সাধারণ মানুষের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। সুসম্পর্কের পরিবর্তে মানুষে মানুষে হানাহানি, হিংসা,বিদ্বেষ,মারামারি প্রভৃতি সৃষ্টি হয়।ফলে সামাজিক ও জাতীয় সংহতি বিঘ্নিত হয়। 

৫. পারিবারিক জীবনের উপর প্রভাব - 

বেকারত্ব পারিবারিক জীবনের কালো ছায়া ফেলে, বেকারত্বের কারণে অগণিত শিক্ষিত অশিক্ষিত কর্মক্ষম যুবক যুবতীর উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বপ্ন ভেঙে খান খান হয়ে যায়।অনেক ক্ষেত্রে বেকারত্বের কারণে যুবক যুবতীরা পরিবারে যথাযোগ্য মর্যাদা ও সম্মান পায় না। তারা পরিবারের অবহেলার শিকার হয়।বিশেষ করে যৌথ পরিবারের বেকার কোনো সদস্যের সসম্মানে বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে পড়ে।পরিবারের বিভিন্ন সদস্যদের সঙ্গে সঙ্গতি বিধানের সমস্যা দেখা দেয় ও পারিবারিক ভাবে শিথিল হয়ে পড়ে। 

৬. রাজনৈতিক প্রভাবে - 

বেকারত্বের রাজনৈতিক প্রভাব অপরিসীম।বেকার যুবক যুবতীদের মধ্যে রাষ্ট্রব্যবস্থার বিরুদ্ধে বিভেদ ও অসন্তোষ সৃষ্টি হয়।তাদের মধ্যে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক মনোভাব সৃষ্টি হয়। তারা রাষ্ট্র বিরোধী কার্যকলাপে লিপ্ত হয়।সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে যুক্ত হয়,এমনকি রাষ্ট্রবিপ্লব ঘটাত পিছুপা হয় না।

5. বেকারত্ব দূরীকরণে শিক্ষার ভূমিকা -

বেকারত্ব দূরীকরণে শিক্ষার ভূমিকা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। সেই গুলি হল -

১. সর্বজনীন বিদ্যালয় শিক্ষার প্রসার -

আধুনিক যুগের চাকুরির বাজারে সফলতা অর্জনের জন্য বিভিন্ন রকমের দক্ষতার দরকার হয়।আর সেই দক্ষতা অর্জনের জন্য প্রশিক্ষণ নেওয়া দরকার, আর প্রশিক্ষণের জন্য ন্যূনতম বিদ্যালয় শিক্ষার ডিগ্রী থাকা প্রয়োজন।তাই বেকারত্ব দূরীকরণের জন্য সর্বজনীন বিদ্যালয় শিক্ষার প্রসারের উপর জোড় দেওয়া হচ্ছে।

২. বিজ্ঞানসম্মত শিক্ষা পরিকল্পনা তৈরি -

বেকারত্ব দূরীকরণের শিক্ষা ব্যবস্থা সুষ্ঠুভাবে সংগঠিত হওয়া দরকার।শিক্ষা সম্পর্কিত বিভিন্ন পরিকল্পনা করা হয়।মানব সম্পদকে কেন্দ্র করে যার।ফলে মানব সম্পদের অপচয় হ্রাস করতে এবং বেকারত্ব রোধ করা যায়।বেকারত্ব দূরীকরণের জন্য উচ্চ শিক্ষার ওপর নিয়ন্ত্রণ স্থাপন করা প্রয়োজন,উচ্চ শিক্ষাকে সকলের জন্য উন্মুক্ত করে দিলে প্রতি বছরে উচ্চহারে শিক্ষিত স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর স্তরে উচ্চ শিক্ষিত বেকার সৃষ্টি হবে।যা সামর্থ্য বা যোগ্যতা অনুযায়ী এদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা সম্ভব হবে না। 

৩. শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়ন -

শিক্ষার নিম্নমানের বেকারত্বের একটি বড়ো কারণ।তাই বেকারত্ব মোচনে শিহ্মার সমস্ত স্তরের গুণগত মান উন্নত করা প্রয়োজন,যাতে শিক্ষার্থীরা কাজের বাজারে উপযোগী জ্ঞান ও দহ্মতা অর্জনের করতে পারে এবং নিজেকে কোনো নির্দিষ্ট পেশায় উপযুক্ত করে তুলতে পারে।শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য প্রশিক্ষিত শিক্ষক শিক্ষিকা নিয়োগ উন্নত যুগোপযোগী পাঠক্রমের প্রবর্তন, উন্নত পদ্ধতির অনুসরণ,প্রয়োজনীয় শিখন সম্পদের যোগান ও উপযুক্ত পরিকাঠামো সৃষ্টির প্রতি নজর দিতে হবে। 

৪. বৃত্তি ও পেশাগত শিক্ষার প্রসার - 

বৃত্তি ও পেশাগত শিক্ষার অভাব বেকারত্বের একটি বড়ো কারণ। তাই শিক্ষার্থীদের স্বনির্ভরতা অর্জনের জন্য সরকারের বৃত্তিগত ও পেশাগত শিক্ষা প্রসারে উপর মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন।নতুন নতুন সম্ভাবনাময় পেশাগত শিক্ষার কোর্সের প্রচলন ও বিভিন্ন শিল্পের উপযুক্ত দহ্মতা গড়ে তোলার জন্য প্রশিক্ষণ ধর্মী কোর্সের চালু করা প্রয়োজন।

৫. প্রযুক্তিগত শিক্ষা প্রসার - 

বেকারত্বের একটি কারণ হল প্রযুক্তিগত শিক্ষার অভাব।তাই বেকারত্ব দূরীকরণের জন্য প্রযুক্তিগত শিক্ষার প্রসার ঘটাতে হবে।কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রযুক্তিগত শিক্ষার বিভিন্ন নতুন কোর্সের প্রবর্তন করতে হবে।এই সব কোর্সের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে জনসংখ্যা বৃদ্ধির কুফল সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করা প্রয়োজন।

৬. শিক্ষাখাতে সরকারি অর্থ বরাদ্দ বৃদ্ধি - 

শিক্ষার মানোন্নয়ন সঙ্গে সরকারি ব্যয় বরাদ্দ বা বিনিয়োগের সম্পর্ক অতি ঘনিষ্ঠ।দহ্ম জনসম্পদ সৃষ্টির জন্য দরকার গুণগত মানসম্পন্ন শিক্ষা। আর গুনমান সম্পন্ন শিক্ষার জন্য দরকার পর্যাপ্ত অর্থের।তাই বেকারত্ব দূরীকরণে শিক্ষাগত সরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা দরকার। 

৭. ভাষাগত দক্ষতার বিকাশ সাধন - 

বর্তমানে আমরা একটি বিশ্বায়িত সমাজে বসবাস করি। আমাদের সামগ্রিক জীবন ধারার সঙ্গে বিশ্বের যোগাযোগ অতি নিবিড়।তাই প্রতিযোগিতাপূর্ণ বিশ্ব বাজারে নিজেকে টিকিয়ে থাকতে হবে।ভাষাগত দক্ষতা বিকাশে করে ইংরেজি ভাষা দক্ষতা গুলি একান্ত প্রয়োজনীয়।সরকারি শিক্ষা প্রণেতাদের এই বিষয়টি উপর মনোযোগ দেওয়ার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার। 

৮. শিক্ষাব্যবস্থা সংস্কার -

সময় পরিবর্তনের সঙ্গে কাজের জগতে নতুন নতুন সূযোগ ও সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়।এর জন্য নতুন জ্ঞান ও দক্ষতার প্রয়োজন হয়।তাই পরিবর্তিত আর্থ সামাজিক পরিস্থিতির সঙ্গে সংগতি বিধান করে নতুন কোর্সের প্রবর্তন প্রচলিত কোর্সের আধুনিকীকরণ করা প্রয়োজন।

6. উপসংহার -

পরিশেষে বলা যায় বিরক্ত হল একটি সামাজিক অভিশাপ, যা দেশের যুবসমাজকে হতাশা,অন্ধকারে ও অপমৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে।রাষ্ট্রের উচিত দেশের যুবসমাজকে এই অভিশাপ থেকে মুক্ত করা।যে কোনো দেশের জনগণ তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী কাজে নিয়োজিত থেকে দেশের অগ্রগতিকে যাতে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে সেদিকে দৃষ্টি রেখে কল্যাণকামী রাষ্ট্র ব্যবস্থার বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। শিক্ষাব্যবস্থার আধুনিকীকরণ ঘটলে দক্ষ জনশক্তি গড়ে উঠবে এবং জনগণের কর্মে নিযুক্তির মধ্যে দিয়ে বেকারত্ব দূরীকরণের পাশাপাশি মানুষ উন্নয়ন সুনিশ্চিত হবে, এইভাবে শিক্ষার মধ্যে দিয়ে বেকারত্বের অভিশাপ থেকে দেশের যুবসমাজকে রক্ষা করা সম্ভব হবে।

CLICK HERE -

ENGLISH VERSION PDF FILE







Post a Comment (0)
Previous Post Next Post