যৌন হেনস্থা বা নির্যাতন||Sexual Harrasment
BENGALI VERSION||ENGLISH VERSION
Concept Of Sexual Harassment And It's Reasons. |
Assignment Questions -
1. What is Sexual Harassment. Discuss The Reasons of Sexual Harassment.||যৌন হেনস্থা বা নির্যাতন কী।যৌন হেনস্তার বা নির্যাতনের মূখ্য কারণ গুলি কী কী।
BENGALI VERSION -
যৌন হেনস্থা বা নির্যাতন -
(ENGLISH VERSION FILE BELOW THE ARTICLE BY PDF FORMAT)
1. ভূমিকা -
ভারতবর্ষ হল একটি জনবহুল রাষ্ট্র(জনসংখ্যার নিরিখে দ্বিতীয়)।ভারতীয় সমাজব্যবস্থার মধ্যে যে সমস্ত সমস্যা দেখা যায়,তার মধ্যে অন্যতম হল যৌন নির্যাতন বা যৌন হেনস্থা।ভারতের মোট জনসংখ্যার অর্ধেক অংশ হল নারী,তা সত্বেও সমস্ত রকম সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও নারীর প্রতি যৌন নির্যাতন বর্তমানে ব্যাপকতম ও সর্ববৃহৎ সামাজিক সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে।যৌন হেনস্থার শিকার হওয়া থেকে নারীদের ও শিশুদের রক্ষা না করলে, তাদের স্বাধীন ও স্বাভাবিকভাবে কাজ করার ক্ষেত্রটি বিস্তৃত না করে দিলে তা হবে এক ধরনের পশ্চাদগামিতা।সুতরাং মানব সভ্যতার অগ্রগতির স্বার্থেই সবাইকে বুঝতে হবে।যৌন নির্যাতন এমন এক অমানবিক ও যন্ত্রনাদায়ক অবস্থা যা নারী ও শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশের নেতিবাচক প্রভাব বিস্তার করে।নারী ও শিশুর যৌন নির্যাতন প্রকৃতি, কারণ এবং তার অবসান ঘটানোর উদ্যোগটি নিয়ন্ত্রণের গুরুত্বপূর্ণ।
2. যৌন নির্যাতন বা যৌন হেনস্থা -
যৌন হেনস্তা বা নির্যাতন একটি ব্যাপক ধারণা যা অনেকগুলি আচরণের একত্রিত নাম। সাধারণভাবে যৌন নির্যাতন বা হেনস্থা বলতে বোঝায় ইচ্ছার বিরুদ্ধে সহবাসে বাধ্য করে তোলা,অশ্লীল কোনো চলচ্চিত্র বা চিত্র বা বস্তু দেখতে বাধ্য করা,মর্যাদা বা সম্মানহানিকর যৌন মন্তব্য করা,যৌন সম্পর্কিত কোনো কাজে বাধ্য করা,মর্যাদা বা সম্মানহানিকর যৌন মন্তব্য করা,যৌন সম্পর্কিত কোনো কার্যে বাধ্য করা,শিশুদের ওপর যৌন নির্যাতন করা ইত্যাদি।
নারীর প্রতি কোনো অবাঞ্ছিত আচরণ যার মধ্যে সরাসরি যৌনতা সূচক ইঙ্গিত বা যৌনতার প্রকাশ ঘটে, অথবা যৌন আবেদন থাকে তাকে বলা হয় যৌন হেনস্থা বা নির্যাতন।আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক অধিকার আইন(Civil Rights Act,1964) অনুযায়ী যৌন নির্যাতন মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী অপরাধ কারণ যৌন নির্যাতন আসলে লিঙ্গ বৈষম্যের প্রকাশ।
আমেরিকায় Child Abuse Prevention And Treatment Act 1974 প্রদত্ত সংজ্ঞা মতে," শিশু নির্যাতন ও অবহেলার অর্থ হচ্ছে শারীরিক অথবা মানসিক ক্ষতিসাধন, যৌন নির্যাতন অথবা প্রবঞ্চনা, অবহেলা মূলক আচরণ এবং শিশুর প্রতি নির্দয় আচরণ করা।"
যৌন নির্যাতন বলতে সাধারণত অপহরন, পাচার, ধষর্ন, অঙ্গভঙ্গি,শ্রম, দৈহিক শাস্তি প্রভৃতিকে বোঝায়।যৌন নির্যাতন, অবাঞ্ছিত যৌন ইশারা,যৌন অনুগ্ৰহ প্রার্থনা এবং অন্যান্য বাচনিক ও শারীরিক আচরণ বা যৌন তাৎপর্যপূর্ণ এবং যা কর্মহ্মেত্রে প্রতিকূল ও আক্রমনাত্মক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে।1997 সালে বিশাখা মামলায় রাজস্থান সরকারের মামলার রায়দান প্রসঙ্গে মহামান্য সুপ্রিমকোর্ট যৌন নির্যাতনের সংজ্ঞাকে আরও স্পষ্ট ও কার্যকর ভাষার ব্যাখ্যা করেছেন,বলা হয়েছে যৌনতাড়িত সেই সমস্ত অবাঞ্ছিত আচরণ (তা প্রত্যক্ষ বা তাৎপর্য বহনে করা কাজ হলেও) যার মধ্যে রয়েছে -
- শারীরিক স্পর্শ বা অভ্যাসজনিত আঘাত।
- যৌন অনুকূল্যের দাবি বা অনুরোধ।
- যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য।
- অশ্লীল চিত্র প্রদর্শন।
- অন্য যে কোনো অমার্জিত দৈহিক অথবা মৌখিক (বাচনিক) ব্যবহার ও ইঙ্গিত।
MBVV -র পরিসংখ্যানে দেখা যায় যে -
নারীর বিরুদ্ধে অপরাধের ঘটনা
Year Case Report
2017 1194টি
2019 1541টি
2021 1775টি
ধর্ষণের ঘটনা
Year Case Report
2017 176
2019 220
POCSO - আইন অধীনে নথিভুক্ত শিশু ধর্ষণ মামলা
Year Case Report
2017 160
2019 191
2021 272
শ্লীলতাহানির ঘটনা
Year Case Report
2017 257
2019 363
2021 414
যৌন নির্যাতন সম্বন্ধে উপরোক্ত সংজ্ঞা থেকে বোঝা যায় যেখানে নারী-পুরুষ একত্রিত, সেখানেই যৌন নির্যাতন ঘটতে পারে। আরও ব্যাপক অর্থে কখনো কখনো সমলিঙ্গের মধ্যেও যৌন নির্যাতন ঘটতে পারে এবং ঘটে। তবে আপাতত আলোচনা সীমাবদ্ধ থাকবে মেয়েদের যৌন হেনস্থার মধ্যে কারণ এইটিই সবচেয়ে বড়ো সমস্যা।
3. যৌন নির্যাতনের কারন -
যৌন নির্যাতনের পেছনে যে সমস্ত কারন গুলি রয়েছে, সেগুলি হল -
১. জাতিগত বৈষম্য -
সমাজের পুরুষের মনে করেন,যে তারাই হলেন জাতিগত শ্রেষ্ঠ।তাই নিজের শ্রেষ্ঠত্ব দাবি নিয়ে উচ্চ নীচ ভেদাভেদের আধিপত্য কে তুলে ধরতে চায়। সেই কারণেই উচ্চ জাতির পুরুষ নিম্ন জাতির নারীর ওপর এই ধরনের নির্যাতন করে।
২. পিতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা -
প্রাচীন কাল হইতে বর্তমান সময় পর্যন্ত আমাদের সমাজব্যবস্থা মূলত পিতৃতান্ত্রিক নির্ভর সমাজব্যবস্থা। পিতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার নারীকে তার নারীত্বের সীমার মধ্যে অবরুদ্ধ রাখতে কিছু পুরুষ যৌন নির্যাতনকে এক ধরনের স্বঘোষিত শাস্তি হিসেবে প্রয়োগ করে।
৩. শৃঙ্খলা রহ্মার অভাব -
শৃঙ্খলা রহ্মা ও শাসন করার নাম করে অনেক সময় শিহ্মা প্রতিষ্ঠানে যৌন নির্যাতনের দৃষ্ঠান্তের পরিচয় পাওয়া যায়।প্রধানত বয়ঃসন্ধিকালীন কিশোরীরা এই ধরনের যৌন নির্যাতনের শিকার হয়।
৪. নারীর স্বাধীন চিন্তা বাধা -
নারী যৌন নির্যাতনের অন্যতম কারন হল স্বাধীন চিন্তাধারার অভাব। গতানুগতিক সমাজ ব্যবস্থা আজও নারীর প্রগতি বা বিকাশ সম্ভব হয় নি। পিতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার আজও নারী শিক্ষা,বিকাশ ও উন্নতি তেমন ঘটে নি।
৫. অর্থনৈতিক বৈষম্য -
জমি ও সম্পত্তির মালিকানা প্রাপ্ত পুরুষ এবং অর্থনৈতিক দিক থেকে সমৃদ্ধ ও কর্তৃত্বের অধিকারী পুরুষ অনেক হ্মেত্রে নিম্ন আর্থ সামাজিক গোষ্ঠীর অন্তর্গত নারীদের ওপর অবাধ যৌন অধিকার প্রত্যাশা ও দাবি করে।
৬. বিনোদনের উপাদান -
অনেক সময় বিনোদনের উপাদান হিসেবে পুরুষ কর্মহ্মেত্রে সহকর্মীদের সঙ্গে যৌন সংক্রান্ত আলোচনা মন্তব্য প্রভৃতিতে অংশগ্রহণ করে যৌনতা উপযোগ করার চেষ্টা করে।এর মধ্যে থাকে অশ্লীল কথাবার্তা, মন্তব্য ও চিত্র প্রদর্শন ইত্যাদি।
৭. ইন্টারনেটে ভূমিকা -
বর্তমানে বিশ্বের ইন্টারনেট ও প্রযুক্তি যত উন্নতি হচ্ছে ততই সুবিধা হয়েছে। ইন্টারনেটে উন্নতি হওয়ার সাথে সাথে যৌন নির্যাতনের মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। উদাহরণ হিসেবে অনলাইন ভিডিও গেম।অনলাইনে হয়রানির উপর 2014 সালে PEW গবেষণার পরিসংখ্যান অনুসারে 25% নারী ও 13% পুরুষ (18 থেকে 24 বছর বয়সী)যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
৮. সামাজিক মাধ্যমে ভূমিকা -
বিশ্বায়নের যুগে যতই ইন্টারনেট উন্নত হচ্ছে ততই প্রযুক্তিগত মাধ্যম বা সামাজিক মাধ্যম হিসেবে বিভিন্ন অ্যাপলিকেশন দেখা যায়।এহ্মেত্রে প্রতি দশজনের মধ্যে আটজন যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন এই সামাজিক মাধ্যম গুলি দ্বারা।ভারতবর্ষে প্রায় 41% মহিলা যৌন নির্যাতনের শিকার হয় সামাজিক মাধ্যমে দ্বারা।একটি সমীক্ষায় বলা হয় যৌন নির্যাতনের প্রধান ধরন গুলির হল অপব্যবহার এবং অপমান, দূষিত গসিপ ও গুজব যা মূলত সামাজিক মিডিয়ার বিদ্বেষপূর্ণ বা একটি সমন্বিত গোষ্ঠীর অপব্যবহারের ফল।
৯. নারীর মনোভাব -
অনেক সময় লহ্ম্য করা যায়,যে সমস্ত নারীরা যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে, তাদের মধ্যে একটা ভয় ও লজ্জার মনোভাব দেখা যায়।ফলে যৌন নির্যাতনের মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
4. যৌন নির্যাতনের শ্রেনীবিভাগ -
1. গৃহ বা পারিবারিক দ্বারা যৌন নির্যাতন।
2. পাড়া বা প্রতিবেশী দ্বারা যৌন নির্যাতন।
3. বিদ্যালয় দ্বারা যৌন নির্যাতন।
4. কর্মহ্মেত্রে যৌন নির্যাতন।
5. অন্যান্য।
CLICK HERE -