Swami Vivekananda's Contribution About Educational Thought And Women's Education

Swami Vivekananda's Contribution About Educational Thought And Women's Education

 স্বামী বিবেকানন্দ||Swami Vivekananda

BENGALI VERSION||ENGLISH VERSION

Swami Vivekananda's Contribution About Educational Thought And Women's Education
Swami Vivekananda's Contribution About Educational Thought And Women's Education

Assignment Questions -

1. ভারতে শিক্ষা চিন্তা এবং নারী শিক্ষা প্রসারে স্বামী বিবেকানন্দের অবদান সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও।Give a brief description Of Swami Vivekananda's Contribution to Education Thought And Women's Education India.

2. স্বামী বিবেকানন্দের নারী শিক্ষার প্রসারে সম্পর্কে লেখ।||Write About Expansion Women's Education By Swami Vivekananda.

3. স্বামী বিবেকানন্দের শিক্ষা চিন্তা বিষয়ে সম্পর্কে বর্ণনা দাও।||Described The Swami Vivekananda's Education Thought.

Swami Vivekananda -

BENGALI VERSION -

(ENGLISH VERSION FILE BELOW THE ARTICLE BY PDF FORMAT)

1. ভূমিকা -

উনিশ শতকের যাঁরা দেশবাসীকে নতুন করে ভারত চেতনার সমৃদ্ধ করেছেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন শ্রীরামকৃষ্ণের একান্ত অনুগত স্বামী বিবেকানন্দ। ভারতবর্ষ ও আন্তর্জাতিক হ্মেত্রে স্বামীজি ছিলেন ধর্মীয় নেতা হিসাবেই পরিচিত। শিক্ষার প্রসঙ্গে তাঁর গভীর মতাবাদ এই হ্মেত্রকে সমৃদ্ধ করেছে। তাঁর বিজ্ঞান সম্মত বাস্তব শিহ্মাতত্ত্ব গুলি আজও প্রাসঙ্গিক।স্বামীজি তার শিহ্মা চিন্তাভাবনা প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মধ্যে এক সেতু বন্ধন ঘটাতে চেয়েছিলেন। ভারতবর্ষের পশ্চাৎপদ জনসাধারণের কথা ভেবে তিনি জনশিহ্মার মাধ্যমে 'শূদ্র জাগরনের' কথা বলেছেন। তিনি নারী শিক্ষার প্রসারে জন্য সচেষ্ট ছিলেন। তাঁর শিক্ষা চিন্তার বাস্তবতা প্রমাণিত।

2. জন্ম ও বংশ পরিচয় -

স্বামী বিবেকানন্দ 1863 খ্রিস্টাব্দে 12ই জানুয়ারি উত্তর কলকাতার সিমলা অঞ্চলে জন্মগ্ৰহন করেন। তাঁর পিতা ছিলেন বিখ্যাত আইনজীবি বিশ্বনাথ দত্ত এবং মাতা ছিলেন ভুবেনশ্বরী দেবী। তাঁর বাল্য কালে নাম ছিল নরেন্দ্রনাথ। পরবর্তীকালে সন্ন্যাস গ্রহণের পর তাঁর নাম হলেন স্বামী বিবেকানন্দ। তিনি ছিলেন মেধাবী ও সাহসী এবং অধ্যাত্মিকতার প্রতি ছোটোবেলা থেকেই তাঁর ছিল সহজাত আকর্ষণ।

3. শিক্ষা জীবন -

1871 খ্রিস্টাব্দে তিনি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মেট্রো পলিটন ইনস্টিটিউশনে ভর্তি হন। পরবর্তীকালে তিনি জেনারেল অ্যাসেম্বলি (বর্তমানে Scottish Church) কলেজ থেকে স্নাতক পাস করেন। তিনি অল্প বয়সে Presidency College তে পড়েছিলেন। তিনি ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য, ইতিহাস, দর্শন, ভারতীয় ও পাশ্চাত্য দর্শন ইত্যাদিতে ব্যুৎপত্তি লাভ করেন। তিনি ছিল পাশ্চাত্য যুক্তিবাদী মনন ফলে তিনি বিনা প্রমাণে কিছুই মেনে নিতে রাজি ছিলেন না।

4. কর্মজীবন -

স্কটিশ চার্চ কলেজের পড়ার সময় ইংরেজি ভাষার অধ্যাপক Hestic র কাছে তিনি প্রথম দহ্মিণেশ্বের রামকৃষ্ণ পরমহংসের কথা শোনেন।যদি তিনি ব্রাহ্ম সমাজে কেশবচন্দ্রের সান্নিধ্যে ঈশ্বর সম্বন্ধে শোনার পর  তাঁর সন্দেহ নিরসন হয় নি। রামকৃষ্ণের কাছে প্রথমে অবিশ্বাস ও কিছুটা তাছিল্যের মনোভাবে নিয়ে দহ্মিণেশ্বরে যাতায়াত করার পর তিনি ক্রমশ রামকৃষ্ণের অনুবক্ত হয়ে পড়েন।পিতার মৃত্যুর পর তাঁর উপর মা ও ভাইদের গুরুদায়িত্ব এসে পড়ে।চরম আর্থিক দৈন্য ও বিবাগী মনের দ্বন্ধে শেষ পর্যন্ত দ্বিতীয়টির জয় হল, তিনি রামকৃষ্ণের মৃত্যুর পর অন্যান্য গুরু ভাইদের নিয়ে সন্ন্যাস গ্ৰহন করে স্বামী বিবেকানন্দ হলেন।

      পরিব্রাজক হিসেবে তিনি সারা ভারত ভ্রমন করে কোটি কোটি নিবদ, দরিদ্র,শিহ্মাহীন জনসাধারণের অবর্ণনীয় দুর্দশা প্রত্যেহ্ম করেন। মানসিক মহত্ত্ব বোধে তিনি বহুবার এইসব মানুষ তাঁর জীবন রহ্মা করেছে।এই সময়ই তিনি ভারতীয় নারীদের অবস্থা লহ্ম করেন এবং তাদের সহৃদয় অন্তঃকরণের পরিচয় পেয়ে মুগ্ধ হন।

       1893 খ্রিস্টাব্দে শিকাগোতে বিশ্ব ধর্ম সম্মেলনে যোগদানের জন্য অবর্ণনীয় কষ্ট সহ্য করে সেখানে পৌছান এবং শেষ পর্যন্ত সেই ধর্ম সম্মেলনে থেকেই শুরু হয় তাঁর বিশ্ব জয়। কিন্তু ইউরোপ ও আমেরিকাতে অসংখ্য বস্তুতার তিনি শুধু হিন্দু ধর্মের কথাই বলেন নি ভারতের জনগণের শিক্ষা ও উন্নয়নের জন্য চেষ্টা করে গেছেন।ভারতে ফিরে এসে স্বামী বিবেকানন্দ শ্রী রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন প্রতিষ্ঠা করেন।যার উদ্দেশ্য এক কথায় ভারতীয় জনগন ও জীবনের নবজাগরণ। ইতিমধ্যে অনেক এদেশেও থেকে মান।1902 খ্রিস্টাব্দে তার দেহত্যাগের পর তিনি যে কর্ম যঞ্জের সূচনা করেছিলেন তা আজও বিশ্ব জুড়ে প্রবহমান।

5. বিবেকানন্দের শিহ্মা দর্শন ও শিক্ষা ধারনা -

১. শিক্ষা দর্শন -

বেদান্ত দর্শন ছিল তাঁর শিহ্মা দর্শনের মূল স্তম্ভ।তবে গোঁড়া বৈদান্তিক মতো তিনি বিশ্বাসী ছিলেন না। তাঁর মতে সর্বজীবের মধ্যেই এক ও অদ্বিতীয় ঈশ্বরের প্রকাশ। অর্থাৎ জীবসেবাই হল ঈশ্বর সেবা। সুতরাং দরিদ্র মানুষের সেবাও ঈশ্বর সেবা।সেবা অর্থ শুধুমাত্র তাদের প্রতি কল্পনা বিতরণ নয়, তাদের মধ্যেকার সুপ্ত আত্মবিশ্বাস ও মহত্ত্বকে জাগিয়ে তুলতে হবে,সাহসী ও স্বনির্ভর করে তুলতে হবে। নৈতিক চরিত্রবান মানুষ না হলে ঈশ্বর লাভ হয় না।

২. শিক্ষার জ্ঞান -

বিবেকানন্দের মনে করেন,জ্ঞানের অবস্থান মানুষের মধ্যেই, বাইরের পৃথিবীতে নয়।আপাত অজ্ঞানতার আবরণকে অপসৃত করলে জ্ঞানের এই জগৎ পরিস্ফুট হয়।এটি মনুষ্য ও পরিবেশের মধ্যে ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া জনিত ফল নয়। কাজেই জ্ঞানের অনু অন্বেষণ হবে আত্ম অনুসন্ধানের প্রক্রিয়ার।

৩. মনঃসংযোগ -

মনঃসংযোগ হল জ্ঞান আহরণের প্রকৃষ্ট উপায়।এই হ্মমতাযার মধ্যে বেশি তিনি অনায়াসে অল্প সময়ে বহু বিষয়ের গভীরতায় প্রবেশ করতে পারেন।প্রকৃতপহ্মে একজন মানুষের সাথে অপর জনের জ্ঞানগত পার্থক্যের মূল কারণ এই মনঃসংযোগ করার হ্মমতার পার্থক্য।

৪. ব্রক্ষ্মচর্য -

প্রাচীনকালে ভারতে জীবনচর্চার ও শিক্ষার এটি একটি অপরিহার্য অঙ্গ।যখন ব্যক্তির নিজের অস্তিত্বকে নিয়ত পরমব্রক্ষ্মের সাথে যুক্ত রাখার অবস্থাকে বৃহৎ অর্থে ব্রক্ষ্মচর্য বলা হয়।তাই বিবেকানন্দ শিক্ষার্থীদের উন্নত মানসিক ও আধ্যাত্মিক শক্তির সন্ধান দেয়।

৫. আত্মশিহ্মা -

স্বামী বিবেকানন্দ ফ্রয়েবলের চিন্তাধারার ন্যায় তাঁর চিন্তাধারার প্রকাশ করে। তিনি বলেন,শিহ্মকদের দেওয়া শিক্ষাকে অস্বীকার করা হয়নি তবে আত্মশিহ্মাকেই প্রকৃষ্ট বলে গ্ৰহন করা হয়েছে।শিহ্মক শিক্ষার্থীদের জন্য উপযুক্ত শিক্ষা পরিবেশের আয়োজন করে দেবেন।

৬. ধর্মীয় শিক্ষা -

শিক্ষা ব্যবস্থার অন্যতম উপাদান হল ধর্মীয় শিক্ষা।স্বামী বিবেকানন্দ সর্বধর্ম সারতত্বের সন্ধান দেওয়া জন্য শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে দিয়ে শ্রীরামকৃষ্ণদেবের সর্বধর্ম সমন্বয়ের চিন্তাধারার উল্লেখ করেছেন।বস্তুত ধর্মের বহিঃঅঙ্গের মধ্যেই বিরোধের উপকরণ লুকিয়ে থাকে যা পরিহার করা প্রয়োজন।

৭. লোকশিক্ষা -

লোকশিক্ষা বা জনশিক্ষার প্রয়োজন ভারতবর্ষের একটি আন্ত প্রয়োজন।সমাজের নিম্নবর্গের মানুষ সম্বন্ধে তাঁর মতামত আধুনিক সমাজে তত্ত্বে সমর্থিত হয়েছে।দরিদ্র পদদলিত মানুষদের বাইরের থেকে অর্থ সাহায্যে বা অন্য ধরনের সাহায্যে কোনো কাজে লাগে না। তাদের স্বাবলম্বী করে তোলা , তাদের মানুষ হিসাবে আত্মবিশ্বাসী করে তোলা। শিক্ষা ও সাহস বিস্তৃত বহ্মপট তাদের মধ্যে প্রকৃত মনুষ্যত্বের প্রতিষ্ঠা করবে।তারা নিজেরাই স্থির করে নেবে কোনটা তাদের পহ্মে ভালো বা মন্দ , হিতাহিত তারাই বুঝে নেবে। আধুনিক হ্মমতায়ন তত্ত্বের সম্ভবত এইটিই সারকথা।

৮. অন্তর্নিহিত সম্ভাবনা ও তার বিকাশ - 

স্বামীজি মনে করতেন সব মানুষের মধ্যেই নিহিত আছে নানান সম্ভাবনা আর এই সম্ভাবনা গুলিকে শিক্ষাই পূর্ণতা প্রদান করে এদের প্রকাশিত করবে।সম্ভাবনা গুলি প্রকৃতির দিক দিয়ে বিভিন্ন কাজেই আত্মবিকাশের পথে তাদের প্রকাশ ঘটবে ভিন্ন ধারার।নিছক পুঁথিগত জ্ঞান এ বিষয়ে সহায়ক হতে পারে না, অনুভাবন আত্ম সমীক্ষার মাধ্যমে অগ্রসর হওয়ার প্রয়োজন আছে। সর্বোপরি শিক্ষার মূল কাজ হবে প্রকৃত মানুষ সৃষ্টি করা।

৯. শারীরিক বিকাশ -

স্বামীজি মনে করতেন,পাপ শব্দকে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেছেন - দুর্বলতাই পাপ,এই দুর্বলতা শরীরের হ্মেত্রেও প্রযোজ্য।লৌহদৃঢ়,পেশি,ইস্পাত, সাদৃশ্য স্নায়ুর প্রয়োজন আছে। গীতার আর্দশ সম্যকভাবে বোঝার জন্যও প্রয়োজন সবল দেহের।

১০. শিহ্মকের ধারণা -

স্বামী বিবেকানন্দের মনে করতেন শিহ্মকের চরিত্র হতে হবে চরিত্রবান,কারন একজন শিক্ষক সুচরিত্রবান না হলে তিনি অন্যান্য শিক্ষার্থীদের চরিত্র গঠন করতে পারবেন না।শিহ্মন প্রক্রিয়া শিহ্মককে শুধুমাত্র চরিত্রবান নয় তার সঙ্গে ত্যাগব্রতী,সৎ ও হৃদয়বান হতে হবে। তিনি আরো মনে করতেন শিহ্মকের শুধু উদ্দেশ্য পুস্তকের বাইরের তথ্য শিক্ষার্থী প্রদান করেন প্রকৃত শিক্ষা দেওয়া হয় না।শিহ্মককে নেমে আসতে হবে শিক্ষার্থীদের সমান স্তরে, বন্ধুত্বপূর্ণ আচরনে এবং মায়ের মতো যত্ন ও স্নেহ প্রদানই হল কার্যকরী শিক্ষা।

১১. শিহ্মার্থী - 

শিক্ষার্থীদের চরিত্র গঠনের উপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে তিনি প্রাচীন জীবনের অনুকরণে আবসিক বিদ্যালয়ের কথা বলেছেন।ব্রক্ষ্মচর্য ও ধ্যান,একাগ্ৰতা ও শ্রদ্ধা এই গুলিই শিখনের পন্থা। আত্মোপলব্ধি,চিত্ত শুদ্ধি ও নিজের অন্তর্নিহিত শক্তিকে জাগ্ৰত করার জন্য প্রয়োজন স্বাস্থ্যবান,সাহসী ও সচ্চরিত্র শিক্ষার্থীদের। তার জন্যই ব্রক্ষ্মচর্য পালনের প্রয়োজন। তিনি নিজে ছিলেন কর্মবীর , সেই কারণে সক্রিয়তার মধ্যে দিয়ে শিহ্মার মূল্য তিনি উপলব্ধি করেছিলেন।

6. বিবেকানন্দের শিক্ষার লক্ষ্য -

বিবেকানন্দ শিহ্মার লহ্ম্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলেছেন। -

  • শিক্ষার উদ্দেশ্য হবে চরিত্র গঠন করা। শিক্ষার্থীদের মধ্যে গড়ে তুলতে হবে ইচ্ছাশক্তি, সাহস,শক্তি। সে হবে নির্ভীক। 
  • শিক্ষা গড়ে তুলবে সৌভ্রাতৃত্ব এবং মানব ঐক্য, বস্তুতপক্ষে ঈশ্বর সকলের মধ্যেই বিরাজমান এই সত্যটির উপলব্ধি প্রয়োজন। 
  • শিক্ষার উদ্দেশ্য হবে শিক্ষার্থীর মধ্যে সেবার মনোভাব গড়ে তোলা,নরনারায়ন বোধে সে দরিদ্র,অভুক্ত, অজ্ঞান মানবের সেবার নিজেকে নিয়োজিত করবে। 
  • শিক্ষার্থীর আধ্যাত্মিক বিকাশ সাধন শিক্ষার অন্যতম লক্ষ্য।
  • শিক্ষা শিক্ষার্থীকে আত্মবিশ্বাস প্রদান করবে।

7. বিবেকানন্দের পাঠক্রম -

বিবেকানন্দের বিভিন্ন বক্তৃতা ও লেখার মধ্য দিয়ে প্রকাশিত নানান চিন্তার অনুসরণে একটি পাঠক্রম ধারণা গড়ে তোলা যেতে পারে।ভারতীয় প্রাচীন ধর্ম শাস্ত্র বেদ বেদান্ত উপনিষদ প্রভৃতি পাঠের যৌক্তিকতাকে তিনি স্বীকার করেছেন।এদের গভীরতা ও মৌলিকতাই ভারতীয়দের ভিত্তি।ভারতীয় ঐতিহ্যের সংরক্ষণে এগুলি চর্চার প্রয়োজন আছে। 

বলা বাহুল্য এগুলি পাঠের যোগ্যতা অর্জনের জন্য সংস্কৃত ভাষার ব্যুৎপত্তির প্রয়োজন আছে।তাই তিনি সংস্কৃত ভাষার উপর বিশেষ জোর দিয়েছেন। শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে গনশিক্ষা ও প্রাথমিক শিক্ষা মাতৃভাষায় সবচেয়ে উপযুক্ত। তাঁর অজস্র রচনার বক্তৃতায় বিজ্ঞানের প্রসঙ্গ এসেছে বারে বারে।ধর্মের মূল বিশ্বাস গুলিকে তিনি বিজ্ঞানের তত্ত্বের সাহায্যে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছেন। বিজ্ঞান পাঠে তিনি ছিলেন আস্থাশীল, এছাড়াও তিনি অনুভব করেছিলেন বিজ্ঞানের চর্চা মানুষের কর্ম ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করে। এই কারণে Western Technology এবং Engineering ও তাঁর পছন্দের তালিকায় স্থান পেয়েছে।পাশাপাশি ভারতীয় মাতৃভাষা গুলির  চর্চা, ইতিহাস, ভূগোল ও সাহিত্য পাঠের প্রয়োজনীয়তার কথাও উল্লেখিত হয়েছে। রামায়ণ মহাভারত পাঠের কথাও তিনি বলেছেন।শরীর চর্চা প্রতি তিনি গুরুত্ব দিয়েছিলেন। 

হাতে কলমে কাজের আয়োজনের কথা তিনি বিধিবদ্ধ ও অবিধিবদ্ধ সব ধরনের শিক্ষার ক্ষেত্রেই উল্লেখ করেছেন পাশ্চাত্য বিজ্ঞান ও ভাবধারার সাথে নিজেদের যুক্ত করার জন্য ইংরেজি শিক্ষার গুরুত্বকেও স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে। সর্বজনীন শিক্ষার মধ্যে তিনি আধ্যাত্মিক ও ধর্ম শিক্ষাকে অন্তর্ভুক্ত করার কথাও বলেছেন। ধর্মীয় শিক্ষার আয়োজন আধুনিক শিক্ষা চিন্তার সাথে কোনো বিতর্কের সৃষ্টি করে না কেননা এই ধর্মীয় শিক্ষা জাতপাত সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে,মানবতা ও তার আধ্যাত্মিক উন্নয়ন ও দিব্য জীবনই যার লক্ষ।

8. বিবেকানন্দের শিক্ষা পদ্ধতি -

প্রাচীন ভারতের অনুসৃত শিক্ষা পদ্ধতির কথা স্বামীজি পুনরায় উল্লেখ করেছেন। তিনি আধ্যাত্মিকতা ও ধর্মের প্রতি প্রতিষ্ঠিত।শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের সম্পর্ক এক বিশেষ মাত্রা পেয়েছে, তারা যেন একই পরিবারের সদস্য। স্বামীজীর সর্বাপেক্ষা গুরুত্ব দিয়েছেন মনঃসংযোগ ক্ষমতার উপর, শিক্ষার্থীর মধ্যে তা গড়ে তুলতে পারলে সমগ্র শিক্ষা প্রক্রিয়া সহজ হয়ে ওঠে।

     শিহ্মক তাঁর নিজের জীবনাদর্শ, আচরণকে এমন উচ্চতায় নিয়ে যাবেন যে শিক্ষার্থী তাঁকে অনুসরণ করতে অনুপ্রাণিত বোধ করবে, শিক্ষা পদ্ধতিতে শিক্ষক এক বিশেষ ভূমিকা নেবেন। তাঁর অনুভূতি, উপলব্ধি শিক্ষার্থীতে সরাসরি সঞ্চালন করবেন।যোগ ও ধ্যানের অনুশীলনের মধ্য দিয়ে অশান্ত মন ও বৃত্তি গুলিকে নিয়ন্ত্রণ করার প্রয়োজনীয়তার কথাও তিনি উল্লেখ করেছেন।শিক্ষনীয বিষয় বক্তৃতা আলোচনা সৃজনমূলক কার্যাবলি ও উদ্দেশ্যমূলক ভ্রমণের মাধ্যমে আয়ত্ব করা যেতে পারে। শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে তিনি মাতৃভাষাতে শিক্ষাদানে আগ্ৰহী,সংস্কৃত শিক্ষা প্রয়োজনীয়তা কথা স্বীকার করা হয়েছে।

          ব্রক্ষ্মচর্য ও পবিত্র জীবনযাপনের ফলে চূড়ান্ত মনোসংযোগ হ্মমতা গড়ে তোলা সম্ভব। এবং বিবেকানন্দ পদ্ধতিগত ভাবে স্বয়ংশিহ্মাকে গুরুত্ব দিয়েছেন শিক্ষার্থী তার নিজস্ব নিয়মেই বিকশিত হবে।

9. নারী শিক্ষা -

স্বামী বিবেকানন্দ নারী শিক্ষা প্রসারে ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছিলেন, দেশের মেয়েরা নিজেরা শিক্ষিত না হলে কুসংস্কার দূর করা, সমাজ সংস্কার বা নারী কল্যাণ অসম্ভব বলে তিনি মনে করতেন। শহরে ও গ্রামে নারী শিক্ষা কেন্দ্র গড়ে তোলার কথা তিনি বলেছিলেন।

১. নারীশিক্ষার পরিকল্পনা -

বিবেকানন্দ নারী শিক্ষায় জন্য যে পরিকল্পনা করেছিলেন তার ভিত্তি ছিল সনাতন ধর্ম, নৈতিকতা, আজীবন ব্রত পালনের মতো ঐকান্তিত নিষ্ঠা। তাঁর কাছে আদর্শ হল -সীতা চরিত্র। যিনি অগ্নির মতো পবিত্র। তাঁর ভাষায়- "শিক্ষা বলিতে কতগুলি শব্দ শেখা নহে, আমাদের বৃত্তি গুলি শক্তিসমূহের বিকাশ কেই শিহ্মা বলা যেতে পারে। শিক্ষা বলিতে ব্যক্তিকে এমনভাবে গঠিত করা,যাহাতে তাহার ইচ্ছা সদ্ধিয়ে  ধাবিত হয় ও সফল হয়। এইভাবে শিহ্মিতা হইলে ভারতের কল্যাণ সাধনে সমর্থ, হৃদয় মহিয়সী নারীর অভ্যুদয় হইবে।" স্বামীজি নির্দেশিত নারী শিহ্মা ব্যবস্থা পুরুষদের শিক্ষাব্যবস্থার থেকে বেশ কিছুটা পৃথক। কারণ -

ক. সমস্যা অনেকটা ভিন্ন প্রকৃতির।

খ. গৃহস্থালির উৎকর্ষ বহু পরিমানে স্ত্রীলোকের ওপর নির্ভরশীল।

ভারতের মতো দেশের সমস্যা হল-নারীকেন্দ্রিক অবরোধ প্রথা, পরাধীনতা, পরনির্ভরশীলতা , বিদ্যাসাগর যেমন-নারী সমস্যার সমাধান করতে চেয়েছিলেন আইন প্রনয়নের মাধ্যমে, যেখানে স্বামীজি তাঁর সমাধান সূএ পেয়েছিলেন সাবলম্বী ও পারস্পারিক সহায়তায় মধ্যে দিয়ে। 

২. নারী শিক্ষার পাঠ্যক্রম -

বিবেকানন্দ বলেছেন ইচ্ছাশক্তির বিকাশ এই হল শিক্ষার লক্ষ্য। বাক, চিন্তা, শুদ্ধতাই হল প্রধান শিক্ষা। শুধু মাত্র পুঁথিগত বিদ্যাচর্চা করে প্রচুর তত্ত্ব ও তথ্য কণ্ঠস্থ করাই শিক্ষা নয়। এই শিক্ষা সংকীর্ণতার দ্বারা চরিত্র গঠন ও পূর্ণ মানুষ হওয়া যায় না।স্বামীজি চেয়েছিলেন এমন শিক্ষা যা মানুষকে দেবে লৌহ পেশি ইস্পাতের মতো দৃঢ়  ও প্রবল অনমনীয় মানসিক শক্তি, যার ফলে সে নিখিল বিশ্বের রহস্য উদ্ঘাটন করতে ও সকল বাধা জয় করতে, জীবনের উদ্দেশ্য সাধন করতে পারবে।

ইউরোপীয় জ্ঞান-বিজ্ঞান, শিল্প, সাহিত্য, ইতিহাস, ভূগোল সবই নারীকে শিখতে হবে, নারীসমাজকে র্দুভাগ্যের দাসত্বের থেকে উদ্ধারের জন্য অন্ধকারের অতল থেকে টেনে তুলবার জন্য স্ত্রী শিহ্মায় পাঠ্যক্রমে ধর্মশাস্ত্র, সাহিত্য,  সংস্কৃত ব্যাকরণ, ইংরেজি, বাংলা যেমন থাকবে তেমনি সর্ব সাধারন মেয়েদের জন্য রন্ধন বিদ্যা, সূচি শিল্প, গার্হস্থ্য বিজ্ঞান, সন্তান পরিচর্যা বিদ্যা প্রভৃতি থাকবে।

৩. নারী শিহ্মায় সাম্য প্রসঙ্গে বিবেকানন্দের মতামত -

সাম্যবাদী চিন্তাভাবনার একটি বিশেষ দিক হল লিঙ্গভিত্তিক সমতা সংক্রান্ত ভাবনা। তিনি নারীশক্তির জাগরনের কথা বলেছেন। তিনি নারীর সমান অধিকার, সমসুযোগ,সমমর্যাদা, স্বাধীনতা ও নারী শিক্ষা সম্প্রসারনের উপর জোর দিয়েছেন। পৃথিবীর যে কোনো উন্নত দেশের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে,সে দেশের উন্নতিতে পুরুষদের মতো মেয়েদের ও অবদান রয়েছে। তাঁর মতে, কোনো জাতি প্রগতির শেষ্ট মাপকাঠি হল  নারীদের প্রতি তার মনোভাব,স্ত্রী জাতির অভ্যুদয় না হলে ভারতের কল্যাণ সম্ভব হবে না - এটি স্বামীজির বাণী। আকাশে ওড়ার জন্য পাখির কাছে যেমন দুটি ডানার প্রয়োজনীয়তা সমান ঠিক তেমনই একটি জাতির উন্নতিতে পুরুষ ও নারী দুজনেরই আবশ্যিকতা রয়েছে। তাই ভারতকে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের সমমর্যাদায় আনতে হলে এদেশের নারী সমাজকে অশিক্ষার অন্ধকারে থেকে মুক্ত করে পুরুষদের সঙ্গে সমানতালে চলার সুযোগ করে দিতে হবে। বিনের ভারতবর্ষকে সর্বত্র ভাবে যদি সমৃদ্ধ করতে হয় তবে পুরুষের সঙ্গে সঙ্গে মেয়েদেরও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। তিনি নারীর সমানাধিকার উপর জোর দিয়েছিলেন। শিক্ষা থেকে বঞ্চিত করে অল্প বয়সেই মেয়েদেরকে বিয়ে দিয়ে পুরুষের পদানত রেখে দেওয়ার তিনি সহ্য করতে পারেন নি।তিনি বাল্যবিবাহ অত্যন্ত ঘৃণা করতেন, অর্থনৈতিক কারণে, বিশেষ করে পরিবারের চাপে, অল্প বয়সী মেয়েদের জীবনে যে সর্বনাশ ডেকে নিয়ে আসে স্বামীজি এই সম্পর্কে অবহিত ছিলেন। 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইংল্যান্ডের মেয়েদের শিক্ষা, স্বাধীনতা,সহ্মমতা, মর্যাদায় নারী জাতীকে দেশের উন্নত জীবনযাত্রা ও সংগতি অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা দিয়েছেন এবং এই বিষয়ে বিবেকানন্দ কে মুগ্ধ করেছিল। বিবেকানন্দ চেয়েছিলেন ভারতের নারীরাও এই শিক্ষা, সহ্মমতা, স্বাধীনতা ও মর্যাদার প্রতিষ্ঠিত হোক। বিবেকানন্দ বিশ্বাস করতেন,"জগতের অন্যান্য দেশের মেয়েদের মতো আমাদের মেয়েরাও এ যোগ্যতা লাভের সমর্থ"এটি সম্ভবত হলে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে নারীদের একটি অপরিহার্য ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকবে।

যতদিন না নারীদের অবস্থা উন্নতির হয় ততদিন দেশের প্রভূত কল্যাণ অসম্ভব।"নারীগণ কে যোগ্যতা অর্জন করতেই হবে যাহাতে তাহারা নিজেদের সমস্যা নিজেরাই মীমাংসা করিয়া লইতে পারে।"

বিবেকানন্দ বলতেন-"নারীকে শিক্ষা দিয়ে ছেড়ে দাও তখন তারা নিজেরাই প্রয়োজনীয় সংস্কারের কথা বলবে, নতুন সক্ষমতা অর্জন করতে নারীদের ক্ষেত্রে অসুবিধা হবে না, যদি তাদের শিক্ষিত করে তোলা যায়।"তিনি বলেছেন,"প্রত্যেকে এমন কিছু শিখুক যাতে প্রয়োজন হলে তারা জীবিকা অর্জন করতে পারবে।"

৪. নারী শিক্ষার স্বরূপ ও শিক্ষক -

নারীকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠবে ভবিষ্যতে সমাজ,তাই তাদের আদর্শ জননী হতে হবে। আদর্শ জননী ছাড়া আদর্শ সন্তান লাভ সম্ভব নয়। আবার আদর্শ সন্তান হয় দেশের আদর্শ নাগরিক। নারীর অন্তঃস্থিত পূর্ণতাকে পরিস্ফুট করাই হল নারী শিক্ষার শেষ কথা। দেশের কল্যাণের জন্য, প্রয়োজন ধৈর্যশীল, তেজস্বী, বিশ্বাসী, চরিত্রবান, দায়িত্ববান মানুষের,তারা জাতি প্রথা,কলঙ্ক, সামাজিক অন্যায়,বৈশম্যেয় বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে সৃষ্টি করবে আত্মবিশ্বাস ও আত্মমর্যাদাবোধ। নারী কে হতে হবে নির্ভীক, সাবলম্বী।তাঁর নারীত্ব চরিত্র হবে শালীনতা,নম্রতা, ধৈর্য,কোমলতা তাতে নারীর চিন্তা স্বাধীনতার বিকাশ ঘটবে। তাঁর মতে-নারীদের শিক্ষা দিয়ে ছাড়িয়ে দাও, তখন তাহারাই প্রয়োজনীয় সংস্কারের কথা বলিবেন। তাঁর মতে-"যে শিক্ষায় চরিত্র গঠন হয়" তাকেই তিনি প্রকৃত শিক্ষা বলতেন। স্বামীজি ধর্মকে কেন্দ্র করে নারী শিহ্মায় প্রচারের কথা বলেছিলেন।তাই তিনি ব্রহ্মচারিনী তৈরি করতে চেয়েছিলেন,তারা Mass Education-এ সাহায্যে করবে। তাছাড়া শিহ্মিতা বিধবা রমনীরা ও এই দায়িত্ব নিতে পারবে। বিবেকানন্দের মানস কন্যা মিস মার্গারেট নোবেল এক আদর্শ শিহ্মিকায় ধ্যানমূর্তি দ্বারা নারী শিহ্মায় কাজে নিজেকে নিয়োজিত করেছিলেন। স্বামীজির ইচ্ছা ছিল ছোটো বেলা থেকে মেয়েদের সাহসী,সাবলম্বী ও শিহ্মিত করে গড়ে তোলা হবে।প্রাপ্ত বয়স্ক হয়ে তারা ত্যাগী হয়ে সমাজের উন্নতিকল্পে ঝাঁপিয়ে পড়বে।

৫. নারী শিক্ষা প্রসারে বিদ্যালয় স্থাপন -

ভারতে মেয়েদের শিহ্মাদানের জন্য তিনি ভগিনী নিবেদিতাকে বিশেষ ভাবে অনুপ্রাণিত করেন। বাগবাজারে নিবেদিতা দেশীয় মেয়েদের শিক্ষার জন্য বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন।1898 খ্রিস্টাব্দের 14ই নভেম্বর এই বিদ্যালয়ের কাজ শুরু হয়। ভগিনী নিবেদিতা বিদেশিনী হওয়ার ছাত্রী পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে।

      মেয়েদের শিক্ষার জন্য স্বামীজি বেলুড় মঠের সমান্তরাল একটি মঠ বা সংঘের পরিকল্পনা করেছিলেন। সেখানে মেয়েদের ব্রক্ষ্মচর্য ব্রত অবলম্বন করার কোনো বাধা থাকবে না। মেয়েদের সেবা ব্রতে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করতে পারবে, এগিয়ে যাবে মেয়েদের মধ্যে শিক্ষা বিস্তার করে স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলার মহান ব্রতে। পরবর্তীকালে তাঁর এই স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয় রামকৃষ্ণ সারদা মিশন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার মধ্যে দিয়ে (সারদা মঠ)।সারদা মিশন আজও রামকৃষ্ণ মিশনের মতোই নানা কল্যান মূলক কাজে নিয়োজিত রয়েছে।

10. উপসংহার -

বিবেকানন্দ হলেন ভারত আত্মার জ্যোতির্ময় প্রতীক। ভারতকে তিনি পরিণত করেছেন মহামানবতার পূণ্য পীঠস্থান রূপে। বিবেকানন্দ মূলত সন্ন্যাসী হলেও লোকচহ্মুর অন্তরালে গিয়ে মোহ্মলাভের চেষ্টা করেননি তিনি।দেশ ও দেশবাসীর মধ্যে থেকেই তিনি তাঁর আধ্যাত্মিকতার ফসল তুলেছেন।দেশ এবং জাতির পরাধীনতা মুক্তির জন্য যে মানসিক প্রস্তুতির প্রয়োজন বিবেকানন্দ তাই সরবরাহ করেছেন তাঁর জীবন ও বাণীর মধ্যে দিয়ে।এই মহাসন্ন্যাসী ভারতকে আত্মজ্ঞানের জাগরণের যে বানী শুনিয়েছিলেন, দেশের এই ঘোর দুর্দিনে আমরা যেন শুনতে পাই তাঁর সেই অগ্নিগর্ভ বীরবাণী - "উত্তিষ্ঠত জাগ্রত প্রাপ্য বরান নিবোধত।।"

CLICK HERE -

ENGLISH VERSION PDF FILE

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post