মানসিক স্বাস্থ্যে বিদ্যালয়ের ভূমিকা||Role Of School In Mental Health

মানসিক স্বাস্থ্যে বিদ্যালয়ের ভূমিকা||Role Of School In Mental Health

মানসিক স্বাস্থ্যে বিদ্যালয়ের ভূমিকা||Role Of School In Mental Health

BENGALI VERSION||ENGLISH VERSION

Role Of School In Mental Health
Role Of School In Mental Health

Assignment Questions

1. শিক্ষার্থীদের বা শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য রহ্মার্থে বিদ্যালয়ের ও শিক্ষক শিক্ষিকাদের ভূমিকা আলোচনা কর।||Discuss the role of school and teachers in the mental health of students or children

2. একজন আদর্শ শিক্ষক বা শিক্ষিকার মানসিক স্বাস্থ্য বৈশিষ্ট্য এবং শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য বিকাশে কি ভূমিকা থাকে তা আলোচনা কর।||Discuss the mental health characteristics of an ideal teacher and what role they play in developing students' mental health.

বিদ্যালয়ে মানসিক স্বাস্থ্য -

BENGALI VERSION -

(ENGLISH VERSION FILE BELOW THE ARTICLE BY PDF FORMAT)

1. ভূমিকা -

একটি শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য এবং সুসংহত ব্যক্তিত্ব বিকাশে ও তার রহ্মার জন্য গৃহের ভূমিকা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু শিশুর মনস্তত্ত্বের উপর অধিকাংশ পিতা মাতার জ্ঞান খুবই সীমিত এবং বিহ্মিপ্ত যা শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য বিকাশে কোনো রকম কাজে তো আসেই না।তাই গৃহের পাশাপাশি বিদ্যালয়ে শিশু 6 থেকে 7 ঘন্টা অতিবাহিত করে। শিশুর বিভিন্ন রকম চাহিদা পূরণের মধ্যে দিয়ে বিদ্যালয় তার মানসিক স্বাস্থ্য বিকাশে ও সুস্থ ব্যক্তিত্ব বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিদ্যালয় জাতির অতীত, ঐতিহ্য,কৃষ্টি বা অভিজ্ঞতা গুলিকে সংরহ্মন করে এবং পরিকল্পিত পাঠক্রমের মধ্যে দিয়ে ওইসব অভিজ্ঞতা যথাযথ সঞ্চালন করে থাকে এবং সমাজ জীবনের অগ্ৰগতির ধারাকে বজায় রাখে।S.Chauhan এর মতে,"The School is an institution established by society where the knowledge, skills and attitudes needed in adult life are learned by young ones to equip them with the essential competencies for coping with the problems of life."তাই শিশুদের দ্বিতীয় গৃহ হল বিদ্যালয়। 

2. মানসিক স্বাস্থ্য রহ্মার বিদ্যালয়ের ভূমিকা -

শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য বিকাশে বিদ্যালয়ের ভূমিকা আলোচনা করা হল।-

১. উন্নত বিদ্যালয়ের পরিবেশ -

শিশু বা শিহ্মার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য বিকাশের জন্য বিদ্যালয়ের পরিবেশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিদ্যালয় হল সমস্ত রকমের জাতপাত, ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ বিভেদ মুক্ত স্থান।জাত,ধর্ম,বর্ণ,ধনী গরীব নির্বিশেষে সকলের জন্য সমান একটি প্রতিষ্ঠান।যেখানে হতাশা, ভীতি,চাপ ইত্যাদিকে দূরে সরিয়ে রেখে বিদ্যালয়ে শিখনের উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।তাই বিদ্যালয়ে উন্নত পরিবেশ সৃষ্টি করা একান্ত প্রয়োজনীয়।

উন্নত বিদ্যালয় পরিবেশের লহ্মন গুলি হল -

  • উন্নত মানবিকতা বোধ।
  • চাহিদার পরিপূর্ণতা পর্যাপ্ত উপাদান ও সুযোগ।
  • গনতান্ত্রিক মত প্রকাশের স্বাধীনতা।
  • শ্রেণিকহ্ম এবং তার বাইরে উন্নত স্বাস্থ্য সম্মত পরিবেশ এবং পরিসর সৃষ্টি করা।
  • পাঠক্রমিক এবং সহ পাঠক্রমিক সকল বিষয়ের যথাযথ ব্যবহার।
  • সৃজনশীল বিকাশের উৎসাহ প্রদান করা।
২. বিদ্যালয় এবং শ্রেণিকহ্মের পরিবেশের অবস্থান -
একটি শিশুর বা শিহ্মার্থীর মানসিক স্বাস্থ্য জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে বিদ্যালয় ও শ্রেণিকক্ষের পরিবেশগত অবস্থান।তাই বিদ্যালয় স্থাপন করার জন্য কিছু পরিবেশ গত দিক দেখা যায়।যথা -
  • লোকালয়ের কোলাহল থেকে দূরে শান্ত পরিবেশে পর্যাপ্ত আলো, বাতাস যুক্ত পরিস্কার পরিচ্ছন্ন পরিবেশ।
  • শ্রেণিকক্ষের পরিবেশ ও আসবাবপত্র।
  • খেলার মাঠ ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
যা শ্রেণিকক্ষের গণতান্ত্রিক পরিবেশ শিক্ষার্থীর সক্রিয়তাকে বৃদ্ধি করে,শিখন দহ্মতাকে বাড়িয়ে তোলে।
৩. গনতান্ত্রিক পরিবেশ -
বিদ্যালয়ে গনতান্ত্রিক পথে চলবে। বিভিন্ন কমিটিতে ছাত্র ছাত্রী প্রতিনিধি নিতে হবে যাতে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের সঙ্গে একাত্ম হতে পারে।শিহ্মক ও শিক্ষার্থীদের পারস্পরিক আলোচনার মধ্যে দিয়ে বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে সচেষ্ট হতে হবে।এর ফলে শিক্ষার্থীরা তাদের বক্তব্য তুলে ধরতে পারবে।
৪. শ্রেণিকক্ষে মানবিক সম্পর্ক গঠন -
মানবিক সম্পর্ক গঠনের উপর 'ক্লাস' করা যেতে পারে।এই ক্লাসের মানবিক সম্পর্ক সম্পর্কিত তাত্ত্বিক আলোচনা হবে। পাশাপাশি দৈনন্দিন জীবনের সমস্যাগুলির চরিত্র, সমাধানের পন্থা ইত্যাদি উপর আলোচনা করা হবে।
৫. শ্রেণিকক্ষে ব্যক্তি বৈষম্যের নীতি অনুসরণ করা -
প্রতি বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে ব্যক্তি বৈষম্যের নীতি অনুসরণ করে চলা উচিৎ।তাই প্রত্যেক শিশুর সহ্মমতা অনুযায়ী শিক্ষার ব্যবস্থা করা উচিৎ।জাতি, ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ,আর্থ-সামাজিক মর্যাদা, প্রতিবন্ধী প্রভৃতি বিভিন্ন শ্রেণির ছেলেমেয়েদের বিদ্যালয়ে আসে। বর্তমানে অন্তর্ভুক্তি শিক্ষার নীতি অনুযায়ী প্রত্যেক শিশুর প্রয়োজন অনুযায়ী তাকে শিক্ষা দিলে তার মানসিক স্বাস্থ্য অহ্মুন্ন থাকে। শিশুর অন্তর্নিহিত সম্ভাবনা, সামর্থ্য, রুচি,আগ্ৰহ ও প্রবণতা অনুযায়ী পাঠ্যক্রম রচনা করতে হবে যাতে প্রত্যেকেই তার চাহিদা ও হ্মমতা অনুযায়ী তাতে অংশগ্রহণ করতে পারে।তবেই মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটবে।
৬. শিশুর মৌলিক চাহিদা পূরণ -
শিশুর অন্তর্নিহিত সত্তার পরিপূর্ণ বিকাশে সাহায্যে করাই হল মানসিক স্বাস্থ্য বিকাশ করার মূল চাবিকাঠি।আর এই বিকাশে সাহায্যে করার অর্থ হল শিশুর বিকাশ কালীন বিভিন্ন মৌলিক চাহিদার যথাযথ পূরণে সচেষ্ট হওয়ার।এই চাহিদা গুলি জৈবিক বা সামাজিক বিভিন্ন ধরনের হতে পারে।এই চাহিদা গুলির পরিতৃপ্তির ওপর শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষ ভাবে নির্ভর করে।তাই শিশুর এই চাহিদা গুলি পরিতৃপ্তি যাতে ঘটে তার জন্য বিদ্যালয়ের যথেষ্ট লহ্ম করা প্রয়োজনীয়।
৭. বক্তব্য প্রকাশে শিক্ষার্থীদের স্বাধীনতা -
বিদ্যালয়ে ছাত্র ছাত্রীদের নিজের বক্তব্য প্রকাশে শিক্ষার্থীদের স্বাধীনতা দিতে হবে।তারা যাতে নির্ভয়ে সব কথা বলতে পারে তার পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।তাই প্রতিটি বিদ্যালয়ে বর্তমানে শিক্ষার্থীদের নিজস্ব মত প্রকাশের নানা মাধ্যমে যেমন - বিতর্ক,ম্যাগাজিন, আলোচনা সভা করা হচ্ছে ভবিষ্যতে যাতে শিক্ষার্থীরা আদর্শ নাগরিক হতে পারে।
৮. শিশু কেন্দ্রিক পাঠক্রম -
বিদ্যালয়ে শিহ্মা ব্যবস্থা পাঠক্রম শিহ্মক কেন্দ্রিক ছিল, যা বর্তমানে শিক্ষার্থীদের কল্যার্ণাথে শিহ্মার্থী কেন্দ্রিক বা শিশু কেন্দ্রিক করা হয়েছে।যার প্রকৃত উদ্দেশ্য হল শিশুর ব্যক্তিত্ব গঠনের সাহায্যে করা।তাই শিক্ষার্থীদের বয়স ও মানসিক বিকাশ অনুযায়ী পাঠক্রম শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য সংরহ্মনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও বিদ্যালয়ে শিশুর ব্যবহার শিহ্মার পারদর্শিতা, সহপাঠীদের সঙ্গে আচরণ, বিদ্যালয়ে নানাবিধ গঠনাত্মক কাজকর্ম শিহ্মার্থীর মানসিক স্বাস্থ্যের বিকাশে বিশেষ প্রভাব বিস্তার করে।
৯. সহ পাঠক্রমিক কার্যাবলী -
শিহ্মার্থীদের বদ্ধ আবেগ গুলি যাতে যুক্ত হতে পারে সেজন্য বিদ্যালয়ে বিভিন্ন সহ পাঠক্রমিক কার্যাবলির ব্যবস্থা করতে হবে।যেমন - খেলাধুলা, গানবাজনা, অভিনয়, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সমাজ সেবামূলক কাজ,বির্তক সভা, শিক্ষামূলক ভ্রমন ইত্যাদি শিশুদের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের আগ্ৰহ বা চাহিদার পরিতৃপ্তি ঘটায় এবং সৃজনী শক্তির বিকাশ ঘটায়।তাই বিদ্যালয়ে সহ পাঠক্রমিক কার্যাবলির যথাযথ ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।
১০. শিশুদের বিভিন্ন দিকে আগ্ৰহ দান -
শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য বিকাশের জন্য শিশু শিহ্মার্থীদের খেলাধুলা, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও সমাজ সেবামূলক কাজ এবং বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ ও উদ্দ্যোগের উপর আগ্ৰহ দিকে নজর দেওয়া।এই বিকাশের শিক্ষার্থীদের শিহ্মক শিক্ষিকাদের আগ্ৰহ শিক্ষার্থীদের বিকাশে সচেষ্ট করেন।
১১. সৃজনমূলক কাজে উৎসাহ দান -
বিদ্যালয়ের পরিবেশে শিশুরা যদি বিভিন্ন সৃজনমূলক কাজে যেমন - শিল্প ও সাহিত্য সৃষ্টির মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা মানসিক চাপ থেকে মুক্ত হতে পারে। সেজন্য বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা এই ধরনের সৃজনমূলক কাজে উৎসাহ দেওয়া প্রয়োজন।
১২. নীতি এবং যৌন শিক্ষার ব্যবস্থা -
শিহ্মার্থীদের বয়ঃসন্ধিকালের অধিকাংশে সমস্যাই নৈতিকতা ও যৌনতা সম্পর্কিত অন্তঃদ্বন্দ্বের ফল। এগুলি সুস্থ মানসিক স্বাস্থ্যের অন্তরায়।তাই বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের নৈতিকতা ও যৌনশিক্ষা প্রতি বিশেষ কার্যকর।
১৩. নির্দেশনা দান -
বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য রহ্মার জন্য নির্দেশনা দান করা হয়।শিহ্মার্থীদের স্বার্থে বিদ্যালয়ে নির্দেশনা কর্মসূচি সংগঠন করতে হবে।
১৪. সুসম্পর্ক স্থাপন -
বিদ্যালয়ে শিক্ষক শিহ্মিকা ছাড়াও অশিহ্মক কর্মচারী, অভিভাবক ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে পারস্পরিক সুসম্পর্ক স্থাপন শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য গঠনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
১৫. শিহ্মক শিহ্মিকার ভূমিকা -
শিশুর সার্বিক বিকাশ সাধন করাই বিদ্যালয়ের লহ্ম্য।তাই মানসিক স্বাস্থ্য রহ্মা করেই আদর্শ বিদ্যালয় পরিবেশ এবং শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য গঠিত হয়।তাই শিহ্মক বা শিহ্মিকার সুস্থ মানসিক স্বাস্থ্যের কয়েকটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য হল। -
  • একজন আদর্শ শিক্ষক বা শিক্ষিকার প্রধান বৈশিষ্ট্য হল শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার সমন্বয় হতে হবে।
  • কর্মের প্রতি আন্তরিকতা পূর্ণ হতে হবে।
  • আত্ম সচেতনতা আদর্শ শিক্ষক বা শিক্ষিকার অন্যতম মানসিক স্বাস্থ্যের সুলহ্মন।
  • বাস্তবতা বোধ আদর্শ শিক্ষক বা শিক্ষিকার মানসিক স্বাস্থ্যকে উৎকর্ষতা পৌঁছে দেয়।
  • আশাবাদী বা ইতিবাচক মানসিকতার অধিকারী হওয়ার একজন আদর্শ শিক্ষক বা শিক্ষিকার মানসিক স্বাস্থ্যের লহ্মন।
  • একজন আদর্শ শিক্ষক বা শিক্ষিকার মানসিক স্বাস্থ্য ভগ্ন প্রকৃতির হয় না, বরং তিনি উন্নত এবং প্রভূত ক্ষমতার অধিকারী হন।
  • সমস্ত ক্ষেত্রে সকল অভিযোজন করার ক্ষমতা আদর্শ শিক্ষক বা শিক্ষিকা মানসিক স্বাস্থ্যকে উদ্বুদ্ধ করে।
  • একজন আদর্শ শিক্ষক বা শিক্ষিকার মানসিক স্বাস্থ্য সুষম প্রকৃতির হয় এবং তা প্রশংসার দাবি রাখে।
  • আদর্শ শিক্ষক বা শিক্ষিকা মানসিক স্বাস্থ্য সংগতিপূর্ণ হয়।অর্থাৎ ব্যক্তি উদ্বেগ,হতাশা,দ্বন্দ্ব, হীনমন্যতা প্রভৃতি অপসংগতি মূলক আচরণ থেকে দূরত্ব বজায় রেখে শিক্ষক-শিহ্মিকার সান্নিধ্যে এসে।
  • একজন আদর্শ শিক্ষক বা শিক্ষিকার মানসিক স্বাস্থ্য আপন শক্তির প্রতি পূর্ণ আস্থা,নিজের ক্ষমতা সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান বা সম্পর্ক স্থাপনের মানবিক গুনে গুণান্বিত হয়।
3. বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য রহ্মার শিহ্মক শিহ্মিকার ভূমিকা -
১. একজন আদর্শ শিক্ষক বা শিক্ষিকার শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য যাতে সম্পূর্ণভাবে বিকশিত হয় সে বিষয়ে বিশেষ করে নজর দিতে হবে।
২. শিক্ষার্থীদের নানা রূপ অপসংগতি দূর করে তাদের ব্যক্তি জীবন থেকে সমাজ জীবনে সংগত ও বিধিবদ্ধ আচরণে শিক্ষক বা শিক্ষিকার ভূমিকা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।
৩. মানসিক স্বাস্থ্য যাতে কোনোভাবে বিঘ্নিত না হয় তার সুবন্দোবস্ত করা একজন শিক্ষক বা শিক্ষিকার অন্যতম কাজ।
৪. মানসিক সুস্বাস্থ্য রক্ষা করার ক্ষেত্রে একজন আদর্শ শিক্ষক বা শিক্ষিকার ইতিবাচক নির্দেশনা বিশেষ ভূমিকা পালন করে। 
৫. মানসিক স্বাস্থ্য যাতে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জীবনকে উচ্চতার শিখরে পৌঁছে দিতে পারে,সে বিষয়ে শিক্ষক বা শিক্ষিকা সদা সচেষ্ট থাকেন। 
৬. মানসিক স্বাস্থ্যের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে নৈতিকতা এবং ব্যক্তিত্বের পরিপূর্ণ বিকাশ সাধন করা একজন শিক্ষক বা শিক্ষিকার অন্যতম লক্ষ্য। 
৭. মানসিক স্বাস্থ্য কোনো ভাবেই নষ্ট হতে না দিয়ে তা সংরক্ষণ এবং বিবর্তনের ধারায় পরিপূর্ণতা প্রদানে আদর্শ শিক্ষক বা শিক্ষিকার বিশেষ ভূমিকা গ্ৰহন করেন।
৮. একজন আদর্শ শিক্ষক বা শিক্ষিকার শিক্ষার্থীদের প্রতি সহানুভূতি সম্পন্ন এবং আন্তরিকতা পূর্ণ আচরণ করবেন। 
৯. সহকর্মী ও অন্যান্য শিক্ষাকর্মী, অভিভাবকদের সকলের সাথে মানবিক সম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করবেন।অর্থাৎ তার সঙ্গে শিক্ষার্থী ও সহকর্মী এবং অভিভাবকদের সম্পর্ক হবে গণতান্ত্রিক। 
১০. বিদ্যালয়ের গতানুগতিক পাঠক্রমের সঙ্গে সহ পাঠক্রমিক কার্যাবলী যেমন খেলাধুলা,গান,আবৃত্তি, নাটক ও সমাজসেবা মূলক কাজ প্রভৃতির প্রতি একজন আদর্শ শিক্ষক বা শিক্ষিকার আগ্ৰহ থাকবে।
১১. নিয়মানুবর্তিতা, শৃঙ্খলাবোধ, দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে সর্বদা সচেতন থাকবেন।বিদ্যালয় যেহেতু একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান সেহেতু জাতির,কৃষি,সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের লালন পালন করার মতো মানসিকতা গড়ে তুলবেন।
১২. পরিবর্তনশীল সমাজ পরিবেশ ও সমসাময়িক জ্ঞান ভান্ডারের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার মানসিকতার অধিকারী হবেন। 
১৩. একজন শিক্ষক বা শিক্ষিকার পক্ষে বিশেষ রসবোধ থাকা বাঞ্ছনীয়, কিন্তু শিক্ষার্থীদের ব্যর্থতার জন্য উপহার করা থেকে বিরত থাকবেন।শিক্ষার্থীরা যাতে ব্যর্থতা কাটিয়ে উঠে শিক্ষাক্ষেত্রে ভালো ফল করতে পারে সে দিকে শিহ্মক বা শিহ্মিকাকে নজর দিতে হবে।
১৪. শিহ্মক বা শিহ্মিকার যদি কোনো প্রকার সৃজনমূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন তাহলে তার অবরূদ্ধ প্রহ্মোভ মুক্ত হতে পারে ওই কাজের মধ্য দিয়ে।সৃজনমূলক কাজের মধ্য দিয়ে ব্যক্তির আচরণ প্রতিষ্ঠার চাহিদাটি পূর্ণ হয় এবং মানসিক তৃপ্তি আসে।
১৫. শিক্ষামূলক পরিবেশে উন্নত মানসিক স্বাস্থ্যের অধিকারী হওয়ার জন্য শিশুকে ভালো করে বোঝা দরকার এবং একই সঙ্গে যে সমাজে তিনি কাজ করবেন।সেই সমাজের সংগঠন, প্রয়োজন ও প্রত্যাশার সঙ্গে পরিচিত হওয়া প্রয়োজন।
১৬. বিদ্যালয়ের অন্যান্য কর্মী ও সহ কর্মীদের সঙ্গে কাজ করার হ্মমতা থাকা প্রয়োজন যাতে তিনি সবসময় তার অভিজ্ঞতা গুলিকে সবার সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকেন।
১৭. বিদ্যালয়ের পরিস্কার পরিচ্ছন্ন এবং বাগান নির্মানে শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করতে শিক্ষক বা শিক্ষিকার বিশেষ ভূমিকা পালন মানসিক স্বাস্থ্য উন্নতিতে সহায়তা করে।

4. মানসিক স্বাস্থ্য রহ্মার্থে বিদ্যালয় ও শিহ্মক শিহ্মিকার বিভিন্ন পদ্ধতি -
বিদ্যালয় এবং শিক্ষক শিক্ষিকার ইতিবাচক ভূমিকা শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য বিকাশ ও ব্যক্তিত্ব বিকাশের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।এই প্রসঙ্গে আমেরিকার যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য বিকাশে কতগুলি কর্মসূচির কথা উল্লেখ করা হয়েছে।-

১. আলোচনা পদ্ধতি - 
এই ব্যবস্থার শিক্ষার্থীদের অভিযোজন সংক্রান্ত সমস্যা আলোচনার জন্য সময় নির্দিষ্ট করা থাকে।সকল শিক্ষক ও শিক্ষিকা,অধ্যক্ষ, সামাজিক কর্মী উপস্থিতিতে শিক্ষার্থীর সমস্যা সংক্রান্ত তথ্যাদি উপস্থাপন করা হয়।বিশ্লেষণ করার পর সমস্যা সমাধানের পন্থা সম্পর্কে সুপারিশ করা হয়।
২. ডেলওয়ারে মানব সম্পর্ক স্থাপনের জন্য ক্লাস -
সপ্তম,অষ্টম ও নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য H E.Bullis এই পরিকল্পনাটি করেন।সপ্তাহে একদিন শিক্ষক বা শিক্ষিকা শ্রেণীতে আবেগগত সমস্যার উপর একটি গল্প বলবেন।এই গল্পের উপর স্বাধীনভাবে শিক্ষার্থীদের আলোচনা করতে উৎসাহ দেওয়া হয়।তারা গল্পটিকে বিশ্লেষণ করে। এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হল গল্পে ব্যক্ত সমস্যার সদৃশ কোনো ঘটনা শিক্ষার্থীদের নিজের জীবন থেকে তুলে ধরার চেষ্টা করে।এর মূল উদ্দেশ্য হল আবেগগত সমস্যা থেকে শিহ্মার্থীকে মুক্ত করে আনা এবং সমস্যাকে গভীরভাবে বুঝতে সাহায্য করা।
৩. টুলশা মানবিক সম্পর্কের উপর কোর্স - 
এই কোর্সটি বয়ঃসন্ধিকালের শিক্ষার্থীদের জন্য নির্দিষ্ট করা হয়।শ্রেণিকক্ষে নিম্নলিখিত ভাবে সাধারণ সমস্যা গুলি আলোচিত হয়।
  • শিহ্মার্থীরা তাদের ব্যক্তিগত সমস্যা গুলির তালিকা প্রস্তুত করে।
  • যে সব আচরন গুলি দেখা যায় সেগুলির উপর আলোচনা হয়। 
  • ফিল্ম ও স্লাইড দেখানো হয়।
  • সংশোধনের উপর 'ক্লাস' হয়।সমস্যা সংক্রান্ত শিক্ষার্থীরা এই ক্লাসে অংশগ্রহণ করে ।
5. উপসংহার -
পরিশেষে এই কথা বলা বাহুল্য যে,শিশু বয়স থেকেই পারিপার্শ্বিক চাপের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ মোকাবিলায় শিহ্মাদান, বিদ্যালয়ের ও শিহ্মক শিহ্মিকার অন্যতম কর্তব্য। বৌদ্ধিক দিক থেকে একজন শিক্ষার্থীকে তৈরি করার পাশাপাশি তার ভবিষ্যৎ জীবনের সমস্যা গুলিকে সকলের সঙ্গে সমাধান করতে শিক্ষা দেবেন।তার জন্য প্রয়োজন মতো শিক্ষক বা শিক্ষিকার দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন প্রয়োজন। শিশুর বুদ্ধি,প্রহ্মোভ ও ব্যক্তিগত চাহিদার কথা স্মরণ রেখে শিহ্মার্থীর জ্ঞান সম্পূর্ণ করার সঙ্গে তার পূর্ণ ব্যক্তি সত্তা যাতে সুসংহত ভাবে গঠিত হয়, সেই দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। তবেই ভবিষ্যতে শিশুর মানসিক দ্বন্দ্ব এড়ানো সম্ভব হবে এবং শিশুর ব্যক্তিগত ও সামাজিক সংগতিবিধানে সমর্থ হবে।বিদ্যালয়ের অভিজ্ঞতা শিশুর কাছে যেন তৃপ্তিকর হয়, নির্ভরযোগ্য ও উপভোগ হয়, সেই দিকে খেয়াল রাখতে হবে যাতে শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য বিকশিত হয়।

CLICK HERE -

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post