মানসিক স্বাস্থ্য||Mental Health

মানসিক স্বাস্থ্য||Mental Health

মানসিক স্বাস্থ্য||Mental Health

BENGALI VERSION||ENGLISH VERSION

Mental Health

Assignment Questions -

1. মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে ধারণা দাও।||Brief Discuss About Mental Health.

2. মানসিক স্বাস্থ্যের স্বরূপ সম্পর্কে ধারণা দাও।||What is The Nature Of Mental Health.

3. মানসিক স্বাস্থ্যের বৈশিষ্ট্য গুলি কী কী।||What are the Characteristics Of Mental Health.

4. উত্তম বা বলিষ্ঠ মানসিক স্বাস্থ্যের বৈশিষ্ট্য গুলি কী||What is the Characteristics Of Good Mental Health.

5. দুর্বল মানসিক স্বাস্থ্যের বৈশিষ্ট্য গুলি কী।||What is the Characteristics Of Poor Mental Health.

6. মানসিক স্বাস্থ্যের উদ্দেশ্য গুলি কী।||What is the Objectives Of Mental Health.

7. মানসিক স্বাস্থ্যের গুরুত্ব বা প্রয়োজনীয়তা গুলি কী।||What is the Importance Or Necessity Of Mental Health.

8. মানসিক স্বাস্থ্যের নির্ধারক গুলি কী কী।||What are the Determinants Of Mental Health.

মানসিক স্বাস্থ্য -

BENGALI VERSION -

(ENGLISH VERSION FILE BELOW THE ARTICLE BY PDF FORMAT)

1. ভূমিকা -

সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে গেলে ব্যক্তির দৈহিক এবং মানসিক উভয় দিক থেকে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হওয়া প্রয়োজন।কেবলমাত্র সুস্থ দেহই যথেষ্ট নয়,সুস্থ মনের ও বহিঃপ্রকাশ থাকলেও তবেই সেই ব্যক্তিকে সুস্থ বলা যায়।মানসিক স্বাস্থ্য হল এমন একটি বিষয়,যা সাধারণত চোখে দেখা যায় না,কিন্তু উৎকর্ষতা ব্যক্তিকে সফল ব্যক্তিত্বময় চরিত্রের অধিকারী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে। মানসিক সংগঠনের সর্বাঙ্গীণ এবং পরিপূর্ণ বিকাশই সুস্থ মানসিক স্বাস্থ্যের লক্ষণ।তাই সকল এবং পরিপূর্ণ বিকাশের ধারার মানসিক স্বাস্থ্য ধারক এবং বাহক হিসেবে কাজ করে।মানসিক সুস্বাস্থ্য যে কোনো ব্যক্তির মানসিক সংগঠনের সুষম বিকাশ ঘটায় ও পরিবর্তনশীল পরিবেশের মানিয়ে নিতে সাহায্য করে।

• সংজ্ঞা - 

নিউ ইয়র্কের White House Conference (1930) এ মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে বলেছিলেন - "Mental Health may be defined as the adjustment of the individuals to them selves and the world at large with a maximum of effectiveness, satisfactory,cheerfulness, and Socially considerate behaviour and the ability or facing and accepting the realities of life." 

Karl Meninger (1957) তার বিখ্যাত বই "The Human Mind" এর মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে বলেন," Mental Health is not just efficiency or contentment or complacent abiding by the rules.It is just adjusting process that involves a maximum of effectiveness and happiness.

J.A. Hadfield মতে," Mental Health is the full and harmonious functioning of the whole personality."

Cutts and Moslay মতে,"Mental Health is the ability which helps us to seek adjustment in the difficult situation in our life."

উপরোক্ত সংজ্ঞা গুলি থেকে মানসিক স্বাস্থ্য বলতে নির্দিষ্ট বা স্থিতিশীল লক্ষ্যে উপনীত হওয়ার থেকে ক্রমোন্নত লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা - এই ব্যাখ্যাটি সব থেকে উন্নততর।

সাধারণভাবে মানসিক স্বাস্থ্য ধারণাকে বুঝতে গেলে তার তিনটি শর্তকে ভালোভাবে বোঝা প্রয়োজন।-

  • ব্যক্তিত্বের চাহিদার পূর্ণ প্রকাশ।
  • চাহিদার সমন্বয় সাধন। 
  • জন্মসূত্রে পাওয়া সম্ভাবনা গুলিকে সার্থক সর্বজনগ্রাহ্য পরিণতির দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।

2. মানসিক স্বাস্থ্যের স্বরূপ -

  • মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ত পরিবর্তনশীল পরিস্থিতির সঙ্গে অভিযোজিত হওয়ার উপযুক্ত প্রয়াস মাত্র।
  • ব্যক্তির মানসিক দ্বন্দ্ব, উত্তেজনা, হতাশা বোধ, হীনমন্যতা প্রভৃতি অপসংগতি গুলিকে দূর করে এবং অন্তর্দৃষ্টির জাগরন ঘটায়। 
  • এটি একটি গতিশীল প্রক্রিয়া।কোনো নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে একে আবদ্ধ করে রাখা বা চাপা দিয়ে রাখা যায় না। 
  • শারীরিক সুস্থতার সঙ্গে এটি সম্পর্কযুক্ত।শারীরিক সমস্যা যুক্ত ব্যক্তির মানসিক স্বাস্থ্য ত্রুটিপূর্ণ হয়। 
  • ব্যক্তির আদর্শ অবয়ব নির্মাণে সুস্থ মানসিক স্বাস্থ্যের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। 
  • সমাজ সংগত আচরণে প্রভূত সহায়তা করে। 
  • সামাজিক এবং ব্যক্তিগত অভিযোজনের ধারার মানসিক স্বাস্থ্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

3. মানসিক স্বাস্থ্যের বৈশিষ্ট্য -

মানসিকভাবে সুস্থ ব্যক্তি ব্যর্থতা হতাশাকে দূরে রেখে পরিবেশ পরিস্থিতি অনুযায়ী মানসিক শক্তি ব্যবহার করে মানসিক চাপ কে কম করে রেখে তার লক্ষ্য অর্জনে এগিয়ে যায়।এই ভাবেই ব্যক্তি সংগতি বিধান করে। উপরোক্ত মানসিক স্বাস্থ্যের সংজ্ঞা গুলি বিশ্লেষণ করে মানসিক স্বাস্থ্যের বৈশিষ্ট্য গুলি আলোচনা করা হল।-

  • কার্যকারী, আনন্দদায়ক ও সমাজ অনুমোদিত ব্যক্তির আচার আচরন যা ব্যক্তির নিজের সঙ্গের এবং সমাজ পরিবেশের সঙ্গে সার্থক সংগতি বিধানে সহায়ক যা মানসিক স্বাস্থ্যের পরিচায়ক।
  • মানসিক স্বাস্থ্য ব্যক্তিকে নিজের সম্পর্কে সচেতন করে,ব্যক্তির সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে সঠিক মূল্যায়ন করতে সাহায্য করে। 
  • বৌদ্ধিক ও প্রাক্ষোভিক পরিণমন মানসিক স্বাস্থ্যের অপর গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য।মনের পরিণমন নিয়মিতভাবে জ্ঞানের প্রসার ঘটায়, দায়িত্ববোধ জাগায়, চিন্তা অনুভূতি প্রকাশের স্পষ্টতা নিয়ে আসে।
  • মানসিক স্বাস্থ্য জীবনে নিয়মানুবর্তিতা, মানসিক ভারসাম্যের একটি আদর্শ তৈরি করে।দৈনন্দিন জীবনে আবার আচরণের মধ্যে সচেতনভাবে একটা সমাজ অনুমোদিত অভ্যাস গড়ে তোলে। 
  • মানসিক স্বাস্থ্যের আর একটি বৈশিষ্ট্য হল মানসিক সম্পর্ক স্থাপন।মানসিকভাবে সুস্থ ব্যক্তি বৈচিত্র্যপূর্ণ সামাজিক জীবনে সবার সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করার ক্ষমতা রাখে, দলের সদস্যদের সঙ্গে গণতান্ত্রিক সম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করে।নিজের সিদ্ধান্ত নিজের নেওয়ার ক্ষমতা রাখে এবং নির্দিষ্ট মাত্রায় মানসিক চাপ সহ্য করেও সেই সিদ্ধান্তে দৃঢ়তার সঙ্গে ধরে রাখার চেষ্টা করে। 
  • মানসিক স্বাস্থ্যের পক্ষে মানসিক বিভিন্ন প্রক্রিয়া গুলির চরম মাত্রায় থাকা অবশ্যই ক্ষতিকর।যেমন অতিরিক্ত রাগ,বেশি সাহসিকতা ইত্যাদি। 
  • ব্যক্তির মে বৃত্তির মধ্যেই জীবন যাপন করুক না কেন,প্রত্যেক ক্ষেত্রেই মানসিক স্বাস্থ্য অপরিহার্য। প্রত্যেক ব্যক্তির পেশায় সন্তুষ্টি তার মানসিক স্বাস্থ্যের পক্ষে এক অপরিহার্য শর্ত। 
  • দায়িত্বশীল নাগরিক হওয়ার সুস্থ মানসিকতার লক্ষণ।দায়িত্বশীল নাগরিক বলতে বোঝায় সকলের স্বার্থের প্রতি সচেতনতা,ব্যক্তির পার্থক্যের প্রতি অনুভূতিশীল হওয়া আইনের প্রতি অনুগত্য থাকা,গণতান্ত্রিক আদর্শের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো ইত্যাদি। 
  • স্বার্থ বা আত্মকেন্দ্রিকতা কে গুরুত্ব না দিয়ে দেশের এবং সমাজের উন্নতির চিন্তা করে এবং সেইসঙ্গে নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সুস্থ মানসিক স্বাস্থ্যের একটি লক্ষণ। 
  • দেহ ও মনের সুন্দর মিলনের ওপরই মানসিক স্বাস্থ্যের সাফল্য নির্ভর করে।যদি দেহের সমস্যা লাঘব না হয়, তাহলে মন ও অসুস্থতার ঢেকে যায়।

3.1. উত্তম/বলিষ্ঠ মানসিক স্বাস্থ্যের বৈশিষ্ট্য -

একজন উত্তম বা বলিষ্ঠ মানসিক স্বাস্থ্যের অধিকারী ব্যক্তিরাই সফল ব্যক্তিত্বের অধিকারী হিসেবে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হন।এই ধরনের কতগুলি বৈশিষ্ট্য হল - 

  • ব্যক্তিগত অভিযোজন সম্পূর্ণরূপে সহ্মম। 
  • আপন ক্ষমতা সম্পর্কে সচেতন এবং তার বিকাশ সাধনে সদা আগ্রহী। 
  • উন্নত ইতিবাচক মানসিকতার অধিকারী। 
  • আত্মপ্রকাশ এবং আত্ম সহ্মমতা বিকাশে সহ্মম।
  • তারা বাস্তবমুখী হয়।
  • অপসংগতি মূলক আচরণ থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে সক্ষম হয়। 
  • সিদ্ধান্ত দেওয়ার এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিশেষ পারদর্শী হয়ে থাকে। 
  • সমস্যার মাধ্যমে ভীত হয় না অর্থাৎ মানসিকতার শিকার হন। 
  • সমস্যা থেকে উত্তরণের পথ খোঁজেন এবং শেষ পর্যন্ত তা থেকে মুক্ত হন। 
  • সংযত আচরণ বোধের দ্বারা নিজেকে বিকশিত করেন। 
  • স্বাধীন চিন্তার অধিকারী হন এবং সৃজনশীল মানসিকতার লক্ষ করা যায়। 
  • সামাজিক যে কোনো পরিস্থিতিতে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রস্তুত থাকেন। 
  • সমাজের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে যথাযথ সম্পর্ক স্থাপনের ওপর ক্ষমতা রাখে। 
  • ব্যক্তির আশাবাদী প্রকৃতির হন।
  • ব্যক্তি তার কর্মক্ষেত্রে পরিতৃপ্তি লাভ করেন।

3.2. দুর্বল মানসিক স্বাস্থ্যের বৈশিষ্ট্য -

মানসিক দিক থেকে দুর্বল ব্যক্তির অভিযোজন গত আচরণ স্বাভাবিক হয় না।তাদের মধ্যে প্রতি রক্ষন কৌশল ব্যর্থ হলে কিন্তু অসঙ্গতিমূলক আচরণ দেখা যায় যা তার মানসিক স্বাস্থ্যকে ব্যাহত করে।এদের মধ্যে যে লক্ষণগুলি দেখা যায় সেগুলি হল - 

  • ব্যক্তি সহজেই হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়ে। 
  • ব্যক্তির আবেগের প্রকাশে অনিয়ন্ত্রিত প্রকৃতির হয়ে পড়ে।
  • আত্মবিশ্বাসের অভাব দেখা যায়। 
  • পরিবেশের সঙ্গে সংগতি বিধানের ক্ষেত্রে অক্ষমতা দেখা যায়। 
  • এদের মধ্যে সহিষ্ণুতার অভাব লক্ষ্য করা যায়। 
  • সিদ্ধান্ত গ্রহণের অক্ষমতা এদের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য। 
  • এই ধরনের ব্যক্তিদের মধ্যে অবাস্তব মনোভাব বেশি দেখা যায়। 
  • এরা সব সময় নিজের কল্পনার জগতে বসবাস করে। 
  • সামাজিক ও ব্যক্তিগত জীবনে অভিযোজন অক্ষম।
  • দুর্বল মানসিকতা প্রবণ হয়।
  • আত্ম বিকাশের চূড়ান্ত অভাব লহ্ম করা যায়।

4. মানসিক স্বাস্থ্যের উদ্দেশ্য -

  • একটি ব্যক্তির মধ্যে উন্নত মানসিক স্বাস্থ্য তার সুসংহত ব্যক্তিত্বের বিকাশ ঘটে।
  • ব্যক্তির আবেগ জনিত আচরণের বিকাশ লাভ করে। 
  • মানুষের অপসংগতি মূলক আচরণকে দূর করে সমাজ জীবন এবং কর্মজীবন উভয়ের বিকশিত করে। 
  • মানসিক স্বাস্থ্য ব্যক্তির নৈতিক বিকাশকে সহায়তা করে। 
  • মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকলে ব্যক্তির দায়িত্ব বোধের বিকাশ লাভ করে। 
  • মানসিক স্বাস্থ্য ব্যক্তির স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে সামাজিক উন্নয়নে পথকে বিকশিত করে।
  • মানসিক স্বাস্থ্য ব্যক্তির কর্ম ক্ষমতাকে বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। 
  • মানসিক স্বাস্থ্য ব্যাক্তি এবং সমাজের মানসিক স্বাস্থ্য রহ্মার সহায়তা করে।
  • শিশুর অন্তর্নিহিত সম্ভাবনা গুলির পরিপূর্ণ বিকাশ সাধন করা প্রয়োজন যাতে সে ইতিবাচক ও নেতিবাচক পরিবেশ চিহ্নিত করতে পারে এবং জীবন অভিজ্ঞতাকে সঙ্গে নিয়ে সার্থক অভিযোজনে সক্ষম হয়। 
  • মানসিক স্বাস্থ্য ব্যক্তির বিশেষ আদর্শ জীবন বোধে উন্মুক্ত করা। 
  • মানসিক স্বাস্থ্য ব্যক্তির অভিযোজন ক্ষমতার বিকাশ ঘটায়।

5. মানসিক স্বাস্থ্যের নির্ধারক - 

বিশেষভাবে পাঁচটি বিষয়কে কেন্দ্র করে ব্যক্তির মানসিক স্বাস্থ্য নির্ভর করে নির্ধারণ গুলিকে চিহ্নিত করা হয়েছে।

১. উন্নত গৃহ পরিবেশ ও সমাজ পরিবেশ - 

গৃহ এবং সমাজ পরিবেশ যদি ত্রুটি যুক্ত হয় তাহলে ব্যক্তির স্বাভাবিক বিকাশ সাধিত হয় এবং শিশুর সুসংহত ব্যক্তিত্ব গঠনের পথ প্রস্তুত হয়।উন্নত পরিবেশই মানসিক স্বাস্থ্যকে শক্তিশালী করে তোলে।গৃহ এবং সমাজ পরিবেশ যদি শিশুর মৌলিক বিকাশে বিশেষভাবে সহায়তা করে,তাহলে শিশুর উৎকর্ষ ব্যক্তিত্বময় চারিত্রিক গুণের অধিকারী হয়।যদি গৃহ এবং পরিবেশের অপসংগতি মূলক আচরণের ধারায় পুষ্ট হয়,তাহলে প্রকৃত অর্থেই শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য ভঙ্গুর প্রকৃতির হয়।

২. পিতা-মাতার এবং পারিবারিক সম্পর্কের গভীরতা -

সম্পর্কের নৈকট্য মানসিক স্বাস্থ্যকে পরিপূর্ণ করে।তাই শিশু যদি পিতা মাতার মানবিক অনুভূতি বা সাহচর্য লাভ করে।তখনই স্বভাবতই সে পারিবারিক সম্পর্কের মেলবন্ধনের মাধ্যমে প্রভৃতি গুণের অধিকারী হয়, যা তার মানসিক স্বাস্থ্যকে উন্নত করে।তাই মানসিক স্বাস্থ্য কে সুস্থ, স্বাভাবিক এবং প্রাণবন্ত রাখতে পিতামাতার সঙ্গে সন্তানের স্বাভাবিক সম্পর্ক বা পারিবারিক সম্পর্কের মূল্য অপরিসীম। 

৩. শারীরিক সক্ষমতা -

মানসিক স্বাস্থ্য অনেকাংশে নির্ভর করে শারীরিক সক্ষমতার ওপর। অর্থাৎ শরীর যদি সুস্থ না থাকে,তাহলে মানসিক স্বাস্থ্যও ভঙ্গুর হয়। কাজেই দৈহিক সুস্থতা মানসিক স্বাস্থ্যকে বিশেষভাবে প্রভাবিত করে।তাই স্বাস্থ্য  সচেতনতা এবং স্বাস্থ্যের সঠিক পরিচর্যা বোধ একান্ত প্রয়োজন।তা যদি না থাকে বা অসম্পূর্ণ হয় তাহলে স্বাস্থ্য পূর্ণ বিকাশের পথে বাধা সৃষ্টি করে।তাই উন্নত মানসিক স্বাস্থ্যের অন্যতম শর্তই হল শারীরিক সক্ষমতা বোধ। 

৪. উন্নত বিদ্যালয় পরিবেশ -

বিদ্যালয়ের পরিবেশ শিশুদের সঠিক মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য সদা সচেষ্ট থাকে।এই চাহিদা গুলি হল - 

  • জ্ঞানের চাহিদা।
  • বিকাশে চাহিদা। 
  • সম্পর্কের মূল্যবোধ। 
  • সহ পাঠক্রমিক শিক্ষার গুরুত্ব প্রভৃতি ।
৫. ব্যক্তিত্বের গঠনে প্রবল আগ্রহ -

মানসিক স্বাস্থ্য যদি সঠিক অর্থে প্রকাশিত ও বিকশিত হয় তাহলে ব্যক্তির গঠন তরান্বিত হয়।ব্যক্তিত্ব গঠনের প্রয়োজনে সমস্যার নেতিবাচক ধারণার পথ থেকে ইতিবাচক ধারণা মাধ্যমে ব্যক্তিত্ব গঠনের প্রবল আগ্রহ মানসিক স্বাস্থ্যের সংলক্ষণ হিসেবেই পরিগণিত হয়। ব্যক্তিত্বের সম্মুখ বিকাশের জন্য এক্ষেত্রে উন্নত মানসিক স্বাস্থ্য একান্তভাবেই প্রয়োজন।

6. মানসিক স্বাস্থ্যের গুরুত্ব বা প্রয়োজনীয়তা -

  • মানুষের ব্যক্তি জীবন এবং সমাজ জীবন এই দুইয়ের ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে মানুষের ব্যক্তিত্ব।এই সুসংহত ব্যক্তিত্ব তখনই বিকশিত হয় যখন ব্যক্তি তার চাহিদা গুলির পরিতৃপ্তি ঘটাতে সহ্মম হয়। মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকলে চাহিদা গুলির পরিতৃপ্তি ঘটাতে সহ্মম হয়। মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকলে চাহিদা গুলির পরিতৃপ্তি ভালো ভাবে ঘটে।
  • ব্যক্তির আবেগ জনিত আচরণের সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যের গভীর সম্পর্ক আছে।ব্যক্তির মানসিক স্বাস্থ্য ভালো হলে তার আবেগের প্রকাশও পরিবেশের উপযুক্ত হয়। আবার তার কোনো কারনে মানসিক অস্থিরতা দেখা দিলে আচরনে সেই আবেগের বহিঃপ্রকাশ দেখা যায়।
  • সুষম ব্যক্তিত্ব যদি সংগঠিত না হয়, তাহলে তা ব্যক্তির নানা প্রকার অসংগতি মূলক আচরণের মধ্য দিয়ে প্রকাশ পায়।কখনো তা প্রকট হয় ওঠে কখনও বা হ্মীনভাবে সামান্য মনোবিকার মূলক আচরণের মাধ্যমে প্রকাশ পায়।এই অসংগতি মূলক আচরণ ব্যক্তির সমাজজীবন এবং কর্মজীবন উভয়েই হ্মতির কারন হয়। জীবনের আনন্দ,রূপ,রস,গন্ধ ব্যক্তির কিছুই উপভোগ করতে পারে না,এ কারনেই সুস্থ দেহের সাথে সুস্থ মন ব্যক্তি জীবনে অপরিহার্য।
  • মানসিক ভাবে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী ব্যক্তি সাধারনত সমাজের নিয়মনীতি মেনে চলে।এরূপ নৈতিকতা তাদের নীতি বিরুদ্ধে কাজে বাধা দেয়। অর্থাৎ মানসিক স্বাস্থ্য ব্যক্তির নৈতিক বিকাশকে সহায়তা করে।
  • ব্যক্তির অসূস্থ মানসিকতা সামাজিক মানসিকতা কেও আঘাত করে।যার ফলে ব্যক্তির সমাজ জীবনও বিষাক্ত হয়ে ওঠে। সামাজিক অনুশাসন বহির্ভূত চিন্তা তার সমাজ জীবনের শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করে। অপরদিকে মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকলে ব্যক্তির দায়িত্ব বোধও বেড়ে যায় এবং ব্যক্তি স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে সামাজিক উন্নয়নে অংশগ্রহণ করে। এভাবেই সমাজ এগিয়ে চলে।বলা যায় সমাজের উন্নয়নের জন্য সমাজের প্রতিটি সদস্যের উন্নত মানসিক স্বাস্থ্য একান্ত প্রয়োজন।
  • ব্যক্তির মানসিক স্বাস্থ্য বিপর্যস্ত হলে তার কর্ম হ্মমতা হ্রাস পায়।কর্ম হ্মমতা কমে গেলে ব্যক্তির পহ্মে পরিবারের দায়িত্ব নেওয়া অসম্ভব হয়ে যায়।ফলে পারিবারিক জীবনে সমৃদ্ধি ও শান্তি বিঘ্নিত হয়।ফলে মানসিক স্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য পরিবারের প্রতি দায়িত্ব পালন করার জন্য,ব্যক্তির পরিবেশের সঙ্গে সংগতি বিধান একান্ত প্রয়োজনীয়। আবার সংগতি বিধানের জন্য ব্যক্তিকে এমন কিছু পদক্ষেপ গ্ৰহন করতে হয় যেখানে মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি একান্ত প্রয়োজনীয়।

পরিশেষে এই কথা বলা যায়,একটি ব্যক্তির তার পারিবারিক এবং সামাজিক জীবনে শৃঙ্খলা বজায় রাখা,শান্তি পরিবেশ তৈরি করা,শিশু কেন্দ্রিক শিক্ষাকে বাস্তব বায়িত করা, জাতির বিকাশকে ত্বরান্বিত করার উদ্দেশ্যে মানব সম্পদের উপযুক্ত ব্যবহারের জন্য সুস্থ মানসিক স্বাস্থ্যের বিকাশ একান্ত প্রয়োজন।

CLICK HERE -

ENGLISH VERSION PDF FILE


Post a Comment (0)
Previous Post Next Post