ক্রিয়া অনুশীলনের নির্দেশাবলী||Guidelines For The Practice Of Kriyas

ক্রিয়া অনুশীলনের নির্দেশাবলী||Guidelines For The Practice Of Kriyas

ক্রিয়া অনুশীলনের নির্দেশাবলী||Guidelines For The Practice Of Kriyas

BENGALI VERSION||ENGLISH VERSION

ক্রিয়া অনুশীলনের নির্দেশাবলী||Guidelines For The Practice Of Kriyas
ক্রিয়া অনুশীলনের নির্দেশাবলী||Guidelines For The Practice Of Kriyas 

ক্রিয়া অনুশীলনের নির্দেশাবলী

BENGALI VERSION

(ENGLISH VERSION PDF FILE BELOW THE ARTICLE)

1. ভূমিকা -

ক্রিয়া শব্দটির আহ্মরিক বা অভিধানিক অর্থ হল 'পুরো কর্ম'(Whole Action) বা 'সম্পূর্ণ কর্ম'(Complete Action)।ক্রিয়ার শৌচ,নাড়ি শুদ্ধি, ঘটশুদ্ধি,চিত্তশুদ্ধি ইত্যাদি কিছু সুপরিচিত বিষয় যা শোধনের ধারনা বর্ণনার জন্য ব্যবহৃত হয়।শোধন শব্দটির আহ্মরিক অর্থ হল অভ্যন্তরীণ শোধন বা পরিশোধন।যৌগিক ক্রিয়ার অন্যান্য নাম গুলি হল শুদ্ধিক্রিয়া, শৌচ, শুদ্ধিকরণ, ঘটক্রিয়া, ঘটকর্ম ইত্যাদি।যোগ শাস্ত্রে ক্রিয়ার অর্থ হল একটি ভঙ্গিমা বা ব্যায়ামের একটি সিরিজ বা ক্রম,যা শ্বাস প্রশ্বাসের ধরন,বন্ধ এবং মন্ত্রের সঙ্গে বা মন্ত্রছাড়া একাগ্ৰতার একত্রীকরণ অবস্থা। অর্থাৎ ক্রিয়া যোগ হল মন্ত্র,ধ্যান এবং জীবন বল নিয়ন্ত্রন এবং শরীর ও মনের উপর ধৈর্যশীলতা ও নিয়ন্ত্রন আনয়নের জন্য বিভিন্ন কৌশলসহ একটি সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া।এর লহ্ম্য হল বিশুদ্ধ চেতনার (ঈশ্বরের) সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হওয়া।যেহেতু বিশুদ্ধ সচেতনতা হল ব্যক্তির মূল শর্ত,তাই যোগ শাস্ত্রে ক্রিয়াকে স্ব-সচেতনতা হিসেবে অভিহিত করা হয়।যোগ শাস্ত্রে প্রতিটি ক্রিয়ার জন্য যেখানে একটি নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য এবং তার ক্রমাগত অনুশীলনের মাধ্যমে সঠিক ফলাফল লাভ করা যায়,যা ব্যক্তির তিনটি স্তরের উপর কার্যকর হয়।যথা -

  • ব্যক্তির শরীর।
  • ব্যক্তির মন।
  • ব্যক্তির আত্মা।

2. যোগ শাস্ত্রের ক্রিয়ার অনুশীলনের নির্দেশাবলী -

যোগ শাস্ত্রে আসন, প্রাণায়াম,ধ্যান ও মুদ্রার মতো ক্রিয়া অনুশীলনের জন্য একটি নির্দিষ্ট নির্দেশাবলী রয়েছে।নিম্নে তা বর্ণনা করা হল।-

১. ক্রিয়া অনুশীলনের স্থান -

ক্রিয়া অনুশীলনের স্থানটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন,শান্ত এবং বায়ু চলাচলের উপযুক্ত হতে হবে।যেখানে কোনো স্যাঁতসেঁতে বা খারাপ গন্ধ থাকবে না।সেই স্থানটিতে আসবাবপত্র এবং অন্যান্য বস্তু দ্বারা বিশৃঙ্খল মুক্ত হওয়ার উচিৎ। প্রতিদিন ক্রিয়া অভ্যাস একটি মেষচর্ড বা কম্বলের উপর বসতে হবে।যদি পিছনে দিকে নীচে নিতম্ব বা পায়ের টান অনুভব হয়,তবে একটি বালিশ বা কুশান ধ্যান বা বসা ভঙ্গিমার সময় ব্যবহার করা যেতে পারে।

২. ক্রিয়া অনুশীলনের সময় -

সাধারণত যোগ অধ্যায়নের শ্রেষ্ঠ সময় হল ভোরবেলা।তবে হালকা জল খাবার করার 2-3 ঘন্টা পরে কিংবা সন্ধ্যা বেলায় ক্রিয়া অনুশীলন করা যেতে পারে।

৩. ক্রিয়া অনুশীলনের স্থিতিকাল -

একটি নির্দিষ্ট সময় ধরে এবং সঠিক ক্রম অনুসারে ক্রিয়া অভ্যাস করতে হবে। হঠাৎ করে খুব বেশি সময় কমানো বা বাড়ানো উচিৎ নয়।

৪. ক্রিয়া অনুশীলনের পোশাক -

ক্রিয়া অনুশীলনের সময় ব্যক্তিকে আরামদায়ক ঢিলেঢালা পোশাক এবং শীতকালে একটি প্রাকৃতিক ফাইবারের মস্তকের আচ্ছাদন (যেমন - পট্টি,টুপি) পড়তে হবে। এছাড়া একটি শাল বা কম্বল শিথিলকরন এবং ধ্যানের সময় নিজেকে আবৃত করতে হবে।

৫. ক্রিয়া অনুশীলনের অন্যান্য নিয়ম -

  • ক্রিয়া অনুশীলনের সময় যে ক্রিয়াটি অভ্যাস করা হবে তার বৈশিষ্ট্য বা বিভিন্ন দিকগুলি সম্বন্ধে যেন ব্যক্তির পরিষ্কার ধারণা থাকতে হবে।
  • কুন্ডলিনী যোগ হল সচেতনতার যোগ। অর্থাৎ শরীরের কথা শুনতে হবে এবং সেই মতো কাজ করতে হবে
  • নিজের মনকে প্রসারিত করতে হবে ঠিক অতীতে যাইহোক না কেন। অর্থাৎ উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যে, একজন ব্যক্তি মনে করেন শুধুমাত্র একটি ব্যায়াম এক মিনিট সময়ে করতে সহায়তা পারবেন,তা এক মিনিট দশ সেকেন্ডের জন্য চেষ্টা করতে হবে।
  • কোনো উষ্মীভবন, ক্রিয়া বা ধ্যান,আরম্ভের পূর্বে আদি মন্ত্র বা ভজন 'অং নমঃ গুরুদেব নমঃ' তিনবার উচ্চারণ করতে হবে।
  • ক্রিয়া অনুশীলনের মধ্যে প্রয়োজনে জল পান করা যেতে পারে।
  • ব্যক্তির নিজের শারীরিক,প্রাহ্মোভিক এবং মানসিক দিকে নজর দিতে হবে।
  • দীর্ঘ গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস এবং রাজকীয় কিছু ভঙ্গির অভিজ্ঞতা জীবনের বাকি দিনগুলিতে বয়ে নিয়ে যেতে হবে।

৬. ক্রিয়া অনুশীলনের উপকারিতা -

  • ব্যক্তি ক্রিয়া অভ্যাসে ফলে আধ্যাত্মিক বৃদ্ধি ঘটে।
  • ব্যক্তির বুদ্ধিবৃত্তিক এবং ব্যক্তিত্ব বিকাশের সহায়তা করে।
  • ব্যক্তির অজীর্ণ,অম্ল ও সর্দি কাশি ইত্যাদি রোগের হ্মেত্রে ক্রিয়া বিশেষভাবে সহায়তা করে।
  • ব্যক্তির রক্ত পরিশোধন, শরীরের বিষ দূরীকরণ এবং হজম শক্তির উন্নতিতে ক্রিয়া সাহায্য করে।
  • ব্যক্তির অ্যালার্জি এবং চর্মরোগ দূর করতে সাহায্য করে।
  • ব্যক্তির শরীরের বিভিন্ন জীবাণু ধ্বংস করে দেহকে রোগ থেকে মুক্ত রাখে।
  • ক্রিয়া অনিদ্রা দূর করতে সাহায্য করে।
  • এটি শারীরিক, মানসিক ও স্নায়বিক স্থায়িত্ব উন্নত করতে পারে।

৭. ক্রিয়া অনুশীলনের সীমাবদ্ধতা -

  • মহিলাদের মাসিক ঋতুস্রাবের গুরুতম (এক থেকে তিন দিন) সময়ে শ্রমসাধ্য যোগ ব্যায়াম এড়িয়ে চলতে হবে।এই সময়ে বিশেষ করে ধনুক ভঙ্গি, প্রসারিত ভঙ্গি,উটের ভঙ্গি, পঙ্গপালের ভঙ্গি, ষটক্রিয়া মতো শ্রমসাধ্য পা তোলা ইত্যাদি করা উচিত নয়।
  • গর্ভবতী মহিলারা শ্রমসাধ্য ক্রিয়া করা উচিত নয়।
  • খাবার গ্রহণ করার পর ক্রিয়া করা উচিত নয়।
  • ক্রিয়া অনুশীলনের সময় কোনো সেল ফোন, পেজার্ড ও অন্যান্য ব্যাঘাত জনিত উপকরণ ব্যবহার করা যাবে না।
  • যে সমস্ত ব্যক্তিদের উচ্চ রক্তচাপ, হৃৎপিণ্ডের অসুখ ইত্যাদি ব্যাধি ভুগছেন তাদের কিছু কিছু ক্রিয়া অনুশীলন করা উচিৎ না।
3. উপসংহার -
যোগ শাস্ত্রে ক্রিয়ার অপর নাম হল শুদ্ধি বা শোধন। বর্তমানে মানুষেরা যেমন তাদের বাহ্যিক পরিচ্ছন্নতার জন্য সর্বদা গর্বিত হয় এবং প্রতিদিন তারা শরীরের বাইরের দিকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার যত্ন নেয়। কিন্তু তাদের ভিতরের পচন ধরে ও তাদের মুখ থেকে ভয়ংকর দুর্গন্ধ বের হয়, চামড়ার রং ধূসর এবং চোখে মুখে গভীর বলিরেখা প্রকাশ পায়।তবে মানুষের বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করতে ক্রিয়া অনুশীলন করছে,যা তাদের শরীর ও মনকে বিশুদ্ধ করতে ক্রিয়া সহায়তা করছে।তাই স্বাস্থ্য রক্ষায় বর্তমানে যোগ শাস্ত্রে ক্রিয়াকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

CLICK HERE -

ENGLISH VERSION PDF FILE

Assignment Questions -

1. ক্রিয়া সম্পর্কে ধারণা দাও।||Give An Idea About The Kriyas.

2. যোগ শাস্ত্রে ক্রিয়া অনুশীলনের নির্দেশাবলী গুলি সংহ্মেপে বর্ণনা কর।||Briefly Describe The Guidelines For The Practice Of Kriyas In The Yogas.

Read More......

ক্রিয়া অনুশীলনের নির্দেশাবলী||Guidelines For The Practice Of Kriyas

আসন অনুশীলনের নির্দেশাবলী||Guidelines For The Practice Of Asanas

প্রাণায়াম অনুশীলনের নির্দেশাবলী||Guidelines For The Practice Of Pranayama

ধ্যান অনুশীলনের নির্দেশাবলী||Guidelines For The Practice Of Meditation


Post a Comment (0)
Previous Post Next Post