ভারতবর্ষের জনবিস্ফোরনের কারন ও প্রভাব

ভারতবর্ষের জনবিস্ফোরনের কারন ও প্রভাব

১.বিমূর্তি- 

দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে পরিবেশের উপর চাপ সৃষ্টি করেছে মানব। যেখানে উন্নত দেশগুলো মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে পরিবেশ তথা পরিবেশের সর্ম্পককে রক্ষা এবং দূষণ হ্রাস করা এবং সম্পদ সংরক্ষণ করা, সেইখানে উন্নয়নশীল দেশগুলির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে পরিবেশের ওপর চাপ সৃষ্টি করা, দূষণ বৃদ্ধি করা এবং আর্থ-সামাজিক দিকে বিকাশ করা হ্মতিয়  মাধ্যমে।এই  দেশগুলির চাহিদা জনসংখ্যার বৃদ্ধির সঙ্গে জমির পরিমাণ বৃদ্ধি করা। ফলে দেখা যাচ্ছে অতিরিক্ত জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে, জল দূষিত হচ্ছে, মৃত্তিকা ক্ষয় হচ্ছে, প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহারের ফলে জলবায়ুর মৃত্তিকা তথা পরিবেশের ক্ষতি সাধন করছে। যেখানে মানুষের সুস্থায়ী উন্নয়নের কথা ভবিষ্যতের ভাবনাচিন্তা করা হচ্ছে, এখানে অতিরিক্ত জনসংখ্যা মানুষের জীবন যাত্রার মান হ্রাস করছে। এবং দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং দেশের অর্থনৈতিক বিকাশ হুমকির মুখে ফেলেছে, কৃষি বিস্তৃতি , নগরায়ন, শিল্পের ধ্বংস, দরিদ্র সীমা বৃদ্ধি ও মাথাপিছু আয় কমছে।

বর্তমান কাগজে পরিবেশের সাথে এবং ক্রমবর্ধমান এর সাথে জনসংখ্যার সম্পর্ক পরীক্ষা করেছে, জনসংখ্যা, দরিদ্র ও নগরায়নের পরিবেশ হ্রাস পাচ্ছে। এর কয়েকটি বিশ্লেষণ পরিচালনা করেছেন গত পঞ্চাশ বছর ধরে পরিবর্তন এবং প্রবণতা। সমীক্ষায় প্রকাশিত হচ্ছে যে দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির দেশের সীমিত এবং ক্রমাগত অবনমিত প্রকৃতি  উপর ক্রমবর্ধমান বোঝা চাপিয়ে দেওয়া  রিসোর্স বেস। সংখ্যাগরিষ্ঠ সত্বেও প্রাকৃতিক সম্পদ প্রমাণ চাপের মধ্যে রয়েছে জীবিকা নির্বাহের পর্যায়ে বেঁচে থাকে। আবাদি জমি তে জনসংখ্যার চাপ জনিত অবদান রয়েছে। জনসংখ্যার ক্রমবর্ধমান সংখ্যা এবং ক্রমবর্ধমান সমৃদ্ধির ফলাফল ইত্যাদির মধ্যে তৈরি হয়েছে ভারতের শক্তি উৎপাদন এবং ব্যবহারের দ্রুত বৃদ্ধি। পরিবেশগত প্রভাব পছন্দ ভূগর্ভস্থ জল এবং পৃষ্ঠতলের জল দূষণ এবং গ্লোবাল ওয়ার্মিং ক্রমবর্ধমান, খরচ স্তরের কারণে উদ্বেগ কাগজটি কিছু নীতিমালা দিয়ে শেষ হয় প্রতিচ্ছবি, সামগ্রিক উন্নয়নের লক্ষ্য নীতি অবশ্যই নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টার অন্তর্ভুক্ত করা উচিত জনসংখ্যা ও পরিবেশ দূষণের ক্ষেত্রে।

২.ভূমিকা-

          দেশ                         জনসংখ্যা 

           চীন                         ১.৩৫৪ বিলিয়ন 

        ভারতবর্ষ                    ১.২৭ বিলিয়ন 

  আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র              ৩১৩ মিলিয়ন 

      ইন্দোনেশিয়া                     ২৪৮ মিলিয়ন

          ব্রাজিল                         ১৯৯ মিলিয়ন

দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক বিকাশ পরিবেশকে হুমকির মুখে ফেলেছে,কৃষি বিস্তৃতি ও তীব্রতায় তার মধ্যে দিয়ে নগরায়নের অনিয়ন্ত্রিত বৃদ্ধি এবং শিল্পায়ন এবং প্রাকৃতিক আবাস ধ্বংস। এর অন্যতম প্রধান কারণ ভারতে পরিবেশগত অবনতি জনসংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধির জন্য দায়ী হতে পারে। যা হল প্রতিকূলভাবে প্রাকৃতিক সম্পদ এবং পরিবেশ কে প্রভাবিত করে। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা এবং পরিবেশগত অবনতি, পরিবেশকে ছাড়া টেকসই উন্নয়নের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হ্মতি। অনুকূল প্রাকৃতিক উৎসের অস্তিত্ব বা অনুপস্থিতি এটি সহজতর করতে বা প্রতিরোধ করতে পারে অর্থনৈতিক বিকাশ প্রক্রিয়াকে। ভারতে দরিদ্র পরিবেশগত ক্ষতি সম্পর্ক অবশ্যই দেখতে হবে জনসংখ্যা বৃদ্ধির প্রসঙ্গে ও। পরিবেশের উপর চাপ গুলি প্রতিদিন তীব্র হয়ে উঠেছে জনসংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে মানুষের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি , হতাশা দারিদ্রের সাথে একত্রিত হয় ব্যবহারের ক্রমবর্ধমান স্তর প্রাকৃতিক সম্পদ গ্রাস করেছে যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের নির্ভর করে।

একবিংশ শতাব্দীর শুরুতে মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং মাথাপিছু ব্যবহারের কোন বর্ধমান মাত্রা প্রাকৃতিক সম্পদ হ্রাস করেছে। যদিও সম্পর্কটি জটিল, জনসংখ্যার আকার এবং দ্রুত পরিবেশের উপর এই মানবিক প্রভাব গুলি প্রসারিত ও ত্বরান্বিত করে আরো উদ্বেগজনক বিষয়। অনু সংখ্যা বৃদ্ধির ভবিষ্যতে এতটা বেড়ে যাবে যে এটি সম্পদের সামগ্রিকভাবে ঘাটতি সৃষ্টি করবে। ২.৮ তে বিশ্বের জনসংখ্যা ১৮ শতাংশ ভারতে রয়েছে। এর জমির ক্ষেত্রে শতাংশের সমস্ত প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর প্রচুর চাপ রয়েছে, এর বৃদ্ধি জনসংখ্যাকে উদ্বেগজনক পরিস্থিতির দিকে ঝুঁকেছে। জনসংখ্যা রেফারেন্স ব্যুরো অনুমান করে ২০০১ সালে মাঝামাঝি বিশ্বের জনসংখ্যা ৬.১৪ বিলিয়ন।এই একমাত্র ভারতের অবদান ছিল অনুমান করা হয়েছে ১.৩৩ মিলিয়ন । অনুমান করা হয় যে দেশের জনসংখ্যা বাড়বে ১.২৬ বিলিয়ন ২০১৬ সালে মধ্যে। অনুমানিত জনসংখ্যা ইঙ্গিত দেয় যে ভারত হবে প্রথম সর্বাধিক জনবহুল বিশ্বের দেশ ও চীন দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান থাকবে। ২০৫০ ফলে পরিবেশের উপর প্রভাব বিপর্যয়কর হতে পারে।

ভারতে মাথাপিছু আবাদী জমি প্রাপ্যতা ১৯৫১ সালে ০.৮৯ হেক্টর থেকে হ্রাস পেয়ে ০.০৩ এ দাঁড়িয়েছে, ২০০০ বিশ্বব্যাপি প্রায় ১/৩ কৃষিজমি শস্য এবং আখিয়ন সে নিবেদিত ২/৩ পশু পালনের জন্য চারণভূমিতে নিবেদিত। দরিদ্রতর  গুলিতে চারন ভূমির অভাব ও প্রভাবিত করে পরিবেশকে। ভারতের চারণভূমি ৪০% কৃষি জমি খুব কমই দখল করে আছে। দিও আমাদের কাছে বিশ্বের গবাদি পশু, মহিষ, এবং ছাগলের সংখ্যা ২০% বেশি রয়েছে। সমস্ত সম্প্রদায় ভিত্তিক জমিগুলো কে অত্যাধিক করে তোলা তাদের অনুর্বর জমিতে রূপান্তরিত করেছে। ক্রমবর্ধমান প্রবণতা জনসংখ্যা পরিমাণ এবং স্বরূপ খাদ্যশক্তি এবং আবাসন গুলির চাহিদা যথেষ্ট পরিবর্তিত হয়েছে। ভূমির ব্যবহারে অনুশীলন এবং ফলস্বরূপ খাদ্যশক্তি এবং আবাসন গুলি চাহিদা যথেষ্ট পরিবর্তিত হয়েছে, ভূমি ব্যবহারের অনুশীলন এবং ভারতে বন দর্শনীয় পরিবেশকে মারাত্মকভাবে হ্রাস  করেছে। জনসংখ্যা এবং চারণভূমিতে ব্যয় করে ভূমি সম্প্রসারণ এর পরিমাণ কমিয়েছে এবং এটি বেশিরভাগ উল্লেখ উন্নতির উপর নির্ভর করে যা সমর্থিত কৃষি কত্রে প্রযুক্তিগত বিকাশ দ্ধারা এইচওয়াইডি বীজ,সার , কীটনাশক,ভেষজ নাশক এবং কৃষি সরঞ্জাম। এই সমস্ত অনুশীলনের ফলে অবহ্ময় ও হ্রাস ঘটে,গুন মানের অনুপাত সহ পরিবেশ ।দরিদ্র্য জনসংখ্যা বৃদ্ধির পরিনতির মধ্যে রয়েছে এবং এর লাইফ স্টাইলটি ব্রাশ করতে প্রধান ভূমিকা পালন করা হয়, রান্নার জন্য তার জ্বালানির চাহিদা বা তাদের বেঁচে থাকার জন্য জীবিকা নির্বাহের জন্য। সম্পদের অসম বন্টন এবং সীমিত সুযোগ গুলি দরিদ্র সীমার নিচে বসবাসকারী মানুষের জন্য ধিক্কার এবং চীন ফ্যাক্টর সৃষ্টি করে যা ঘুরে আসে জনসংখ্যার ঘনত্ব এবং পরিবেশের বহু গুণ হের ফের হয়।

                         ৩.মূল বিষয়বস্তু- 

৩.১ভারতের জনসংখ্যা- 

ভারত চীনের পরে বিশ্বের দ্বিতীয় জনবহুল দেশ। যে আরো গুরুতর সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে, গুলির মধ্যে একটি হল জনসংখ্যা। এটি বিশ্বের বিলিয়নের ও বেশি জনসংখ্যার ১.২৬ বিলিয়নের ও বেশি মানুষ।

৩.২ জন-বিস্ফোরণ -

বর্তমান বিশ্বের একটি অন্যতম গুরুতর সমস্যা হল জনসংখ্যার সমস্যা, জনসংখ্যার সমস্যা বলতে মূলত জনসংখ্যা স্ফীতি ও জনসংখ্যা বিস্ফোরন জনিত সমস্যাকেই বোঝায়। ভারতে বর্তমান জনসংখ্যার বিস্ফোরণ বিশ্ব জনসংখ্যা ১৭% অবদান রাখে। এই সমস্ত লোকগুলি আমাদের ভৌগলিক অঞ্চলে ৩.২২ মিলিয়ন বর্গ কিমি দূরে অসমভাবে বিতরন করা হয়েছে। 

 ২০০১ সালে আদমশুমারি অনুসারে উত্তরপ্রদেশ ভারতের সর্বাধিক জনবহুল রাজ্য। যেখানে মোট জনসংখ্যার ১৬৬ মিলিয়ন, অন্যদিকে সিকিম এবং লাক্ষাদ্বীপের মতো রাজ্যের- সিকিমের সর্বনিম্ন জনসংখ্যা হল ৫.০ মিলিয়ন এবং দ্বীপ রাষ্ট্রের লাক্ষাদ্বীপের মাত্র ০০০০০০ জন। দেশের জনসংখ্যা প্রায় অর্ধেকই পাঁচটি প্রধান রাজ্যে মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, বিহার এবং অন্ধ্রপ্রদেশ চারিদিকে কেন্দ্রীভূত। যদিও আকারে রাজস্থান বৃহত্তম রাজ্য,তবেও জনসংখ্যা ভারতের মোট জনসংখ্যার মাত্র ৫.৫ শতাংশ অবদান রাখে।

                অর্থাৎ জনাধিক্যের চরম পরিনাম হল জন বিস্ফোরন।যখন কোনো একটি দেশে অতি অল্প সময়ের ব্যবধান জনসংখ্যা খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায়, তখন তাকে জন-বিস্ফোরন বলে। 

৩.৩ জন-বিস্ফোরণের বৃদ্ধির কারণ- 

উন্নয়ন ও সামাজিক কল্যাণের পথে অধিক জনসংখ্যা প্রধান অন্তরায়। অতিরিক্ত জনসংখ্যার জন্য দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতি প্রবাহ ব্যাহত হয়, মাথাপিছু আয় হ্রাস পায়, দারিদ্রতা বৃদ্ধি পায়, নানাবিধ কারণে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিছু কারণ নিন্মে আলোচিত হল।-

১. দরিদ্র পরিবেশে এবং উন্নত পারিপার্শ্বিকতার অভাব-

উন্নয়নশীল দেশের অধিকাংশ জনগণই দরিদ্র এবং দরিদ্র জনসাধারণের মধ্যে সন্তান লাভের প্রাম্ভিক প্রবনতা বেশি। অর্থাৎ  আয় বৃদ্ধির আশায় দরিদ্র পিতা-মাতার সন্তান সংখ্যা অনিয়ন্ত্রিত রাখা অধিকতর লাভজনক বলে মনে করেন।

২.অনুন্নত জীবনযাত্রা- 

উন্নয়নশীল দেশের দরিদ্র মানুষের জীবনযাত্রা খুবই নিম্নমানের এবং অধিকাংশ কৃষিজীবি। নিজের জমিতে উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য প্রচুর কৃষকও অর্থ প্রয়োজন হয় এবং তারা অধিক সন্তান জন্ম দিয়ে সেই ঘাটতি পূরণ করে।

৩.অজ্ঞাত ও নিম্মমানের শিহ্মাব্যবস্থা- 

উন্নয়নশীল দেশগুলির জনসংখ্যার এক বড়ো অংশ অশিহ্মিত । শিক্ষায় হার কম। এখানে উপযুক্ত শিক্ষায় অভাবে এখনও বহূ গ্ৰামে অধিক সন্তানের জন্ম হচ্ছে।

৪. সামাজিক ও ধর্মীয় কুসংস্কার- 

উন্নয়নশীল দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির একটি প্রধান কারণ হল সামাজিক ও ধর্মীয় কুসংস্কার। বর্তমানে ভারতের অধিকাংশ গ্রাম এখনো কুসংস্কারের বেড়াজালে বন্দি। এর প্রধান কারন শিক্ষার অভাব।

. কর্মসংস্থানের অভাব- 

উন্নয়নশীল দেশের পুরুষ ও মহিলা উভয়ই কর্মসংস্থানের অভাব রয়েছে এবং অধিকাংশই মহিলারা গৃহবধু এবং অশিক্ষিত, ফলে তাদের জনসংখ্যা বৃদ্ধির কুফল সম্পর্কে ধারনা থাকে না। স্বাভাবিক ভাবেই দেশের জনসংখ্যা দ্রুত হারে বৃদ্ধি পায়। 

৬. বৃদ্ধ বয়সে নিরাপত্তার অভাব- 

উন্নয়নশীল দেশের সমাজ ব্যবস্থায় নির্ভরশীল জনসংখ্যার সংখ্যাই বেশি। অনেক পিতা মাতা কি করেন বৃদ্ধ বয়সে সন্তান তাদের ভরণ-পোষণ, দেখা-শোনা করবে। এই উদ্দেশ্যেই একাধিক মেয়ের সন্তান থাকা সত্ত্বেও পুত্রসন্তানের আকাঙ্ক্ষায় বার বার সন্তান জন্ম দেয়। 

৭. অপ্রাপ্ত বয়সে বিবাহ ও বহু বিবাহ- 

বিবাহের জন্য সর্বনিম্ন ছেলের বয়স ২৫ বছর এবং মেয়ের ১৮ বছর নির্ধারণ করা হয়েছে অথচ শহর ও গ্রামে অপ্রাপ্ত বয়সে বিবাহ ও বহুবিবাহ অহরহ ঘটছে এবং এই বয়সে (১২ - ২০ বছর) সন্তান প্রজনন ক্ষমতা বেশি বয়সে (২০ - ৪৫ বছর ) ক্ষমতার অপেক্ষায় এক-চতুর্থাংশ বেশি থাকে।

৮. প্রাকৃতিক পরিবেশ ও আবহাওয়া- 

ভারতের মতন উন্নয়নশীল দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির প্রধান কারণ হলো মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশ ও আবহাওয়া। উষ্ণ জলবায়ু বেশি সন্তান উৎপাদনের সহায়ক।

৯. বহিরাগতদের আগমন- 

ভারতের মতন উন্নয়নশীল দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির প্রধান একটি কারণ হলো বহিরাগত তথা বাংলাদেশীদের ব্যাপকহারে আগমন। আসলে ভারত খুবই সহানুভূতিশীল দেশ। তাই বিভিন্ন ধর্মের মানুষ এখানে আশ্রয়গ্রহণ করে। ফলে অতিরিক্ত জনসংখ্যা সৃষ্টি হয়।

৩.৪ সমাজের উপর জন-বিস্ফোরণ এর প্রভাব- 

বর্তমান ভারতের লোক সংখ্যা ১২১কোটি। জনসংখ্যা দিক থেকে পৃথিবীতে ভারতের স্থান দ্বিতীয় (চীনের পর)। সম্পদ ও সামর্থ্যের তুলনায় জনসংখ্যা অনেক বেশি এবং বৃদ্ধির হার ভয়াবহ। অতিরিক্ত জনসংখ্যার চাপে নিয়তি বিপর্যস্ত। ভারতীয় সমাজে জন-বিস্ফোরনে বিরুপ প্রভাব সংহ্মেপে আলোচনা করা হল।-

১.দারিদ্র্য- 

জন-বিস্ফোরনের অন্যতম পরিনাম হল দারিদ্র্য। সম্পদের তুলনায় জনসংখ্যা বেশি হওয়ায় জনগণের মাথাপিছু আয় কমে যায় এবং তাদের পক্ষে জীবনধারণের ন্যূনতম প্রয়োজন বা চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হয় না। 

২.বেকারত্ব সৃষ্টি- 

জন-বিস্ফোরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ কুফল হলো বেকারত্বের সৃষ্টি। বস্তুতপক্ষে, যে হারে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে সেই হারে কর্মসংস্থানের বৃদ্ধি পায়নি ফলে জনবিস্ফোরণ বেকার সমস্যা প্রকট করে তুলেছে।

৩.শিক্ষার সমস্যা- 

জন-বিস্ফোরণ শিক্ষাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে। এখনো ২.৫% মানুষ শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত। শিক্ষার অগ্রগতি ঘটলেও দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধির জন্য শিক্ষা বৃদ্ধি পাচ্ছে না। শিক্ষাখাতে প্রয়োজন অনুযায়ী অর্থ বরাদ্দ না হওয়ায় বর্ধিত জনসংখ্যার শিক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষক, আনুষাঙ্গিক শিক্ষা উপকরণ ব্যবস্থা করা যাচ্ছে না।

৪.সামাজিক অবক্ষয় / সামাজিক দূষণ বৃদ্ধি-

জন-বিস্ফোরনের ফলে দরিদ্র ও বেকারত্ব বাড়ছে।মানুষ তার মৌলিক চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হচ্ছে । ফলে সমাজে হতাশা, ক্ষোভ ও অস্থিরতা বাড়ছে। মানুষ নৈতিকতা- বিরোধী কাজে জড়িয়ে পড়ছে। ন্যায়-অন্যায় হারিয়ে যাচ্ছে অপরাধ প্রবণতা বাড়ছে বিভিন্ন ধরনের অসামাজিক কার্যকলাপ (চুরি,ডাকাতি, শ্লীলতাহানি, চোরাচালান, মাদক সেবন, নারী নির্যাতন, নারী পুরুষের অবৈধ মেলামেশা) বৃদ্ধি পায়।

৫.জীবনযাত্রা নিম্নমান- 

জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে জীবনযাত্রার মানের সম্পর্ক গভীর। জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও মানুষের আয় বৃদ্ধি পায় না। ফলে স্বল্প আয়ের অধিক সংখ্যক মানুষের ভরণ পোষণ করতে হয়, মানুষ সুন্দর ভাবে ও সন্তোষজনকভাবে জীবন যাপন করতে পারে না। ফলে জীবন যাত্রার মান নিম্নগামী হয়। 

৬. জনস্বাস্থ্যের উপর প্রভাব- 

জনসংখ্যা জনস্বাস্থ্য ও পুষ্টির ওপর প্রভাব বিস্তার করে। ভারতে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাহিদা অনুপাতে স্বাস্থ্য পরিষেবা সংক্রান্ত পরিকাঠামোর উন্নতি ঘটছে না, যৌনস্বাস্থ্য বিঘ্নিত হচ্ছে। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাস করতে বাধ্য হয়। ভালো ও ও পুষ্টিকর খাবারের অভাবে মানুষ নানান রকম রোগ ব্যাধিতে ভুগতে থাকে।

৭. বাসস্থানের সমস্যা- 

জনসংখ্যা বৃদ্ধির একটি গুরুত্বপূর্ণ কুফল হলো বাসস্থানের সমস্যা সৃষ্টি। ফলে বস্তি সমস্যা ও গৃহহীনের সমস্যা বাড়ে। স্বল্প পরিসরে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ঘনবসতির ফলে সুস্থ-স্বাভাবিক বাসস্থান গড়ে তোলা সম্ভব হচ্ছে না। মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়। নাগরিক পরিষেবা গুলি মানুষের কাছে সঠিকভাবে হতে পারে না। অত্যাধিক জনসংখ্যা ও জনবসতির কারণে দূষিত পরিবেশে সর্বদা বিরাজ করেছে। জনবিস্ফোরণ জনস্বাস্থ্যের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। 

৮. অর্থনৈতিক উন্নয়নের ওপর প্রভাব- 

অধিক জনসংখ্যা অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্রক্রিয়া কে প্রভাবিত করে। অধিক জনসংখ্যার চাপে মাথাপিছু জমির পরিমাণ কমে যায়। কৃষি কত্রে উৎপাদন হ্রাস  পায়। দারিদ্রতা ও বেকারত্ব বৃদ্ধি পায় অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতিকে ব্যাহত করে।

৪.জন-বিস্ফোরণ জনিত সমস্যা সমাধানের উপায় গুলি-

• সর্বজনীন বিদ্যালয় শিক্ষার প্রসার।

• বয়স্ক শিক্ষা তথা সমাজ শিক্ষার প্রসার।

• জন শিক্ষা এর প্রসার।

• নারী শিক্ষার প্রসার।

• উপযুক্ত অবসর বিনোদনের শিক্ষার ব্যবস্থা করা। 

• মহিলাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা।

• বাল্যবিবাহ এর কুফল সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করা।

• পরিবার পরিকল্পনায় কর্মসূচিকে জোরদার করা।

• সরকারী পর্যায়ে ছোট পরিবার গঠনে উৎসাহ প্রদান।

• পরিবার পরিকল্পনার স্বপক্ষে গণমাধ্যমে প্রচার করা।

• জন্ম সম্পর্কিত গোঁড়ামি ও কুসংস্কার দূরীকরণ।

• সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির বিস্তার (বৃদ্ধ-বৃদ্ধার জন্য)।

৫.শিক্ষা এবং জনসংখ্যা বিশ্লেষণের মাধ্যমে সম্পর্ক-

জনসংখ্যা কখনোই দেশের বোঝা নয়। দক্ষ জনসংখ্যা দেশের সম্পদ। জনসংখ্যাকে দক্ষ করে তুলতে চাই যুগোপযোগী শিক্ষা। দেশের জনসাধারণকে প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে পারলে একদিকে তারা যেমন সম্পদে পরিণত হয়, অন্যদিকে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমে যায়। শিক্ষিত জনগণ যেমন নিজের সম্পর্কে সচেতন থাকে, দেশ সম্পর্কেও তেমনি সচেতন থাকে। শিক্ষা এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধির পরস্পর সম্পর্কযুক্ত।-

১. যে দেশের  শিক্ষিতের হার বেশি, সেই দেশের জন সংখ্যা বৃদ্ধির হারও খুব কম। উন্নত দেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার খুবই কম, কারণ সবাই শিক্ষিত। তৃতীয় বিশ্বের প্রায় সব দেশেরই শিক্ষার হার কম হওয়াতে এইসব দেশে জনসংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বৃদ্ধি পাচ্ছে। শিক্ষা এবং জনসংখ্যা পরস্পর সম্পর্কযুক্ত।

২. জনসংখ্যা শিক্ষিত হলে বিয়ের বয়স পিছিয়ে যায়। একে বলা হয় লেট ম্যারেজ। এর ফলশ্রুতিতে তারা বেশি সন্তান জন্ম দিতে পারে না। আমাদের দেশে শিক্ষিত লোক এদের মধ্যে এই প্রবণতা লক্ষ করা মতো। তারা সাধারণত ২৫ বছর না হলে বিয়ে করতে পারে না, তাই সন্তান সংখ্যা সীমিত থাকে এবং এতে জনসংখ্যা বিস্ফোরণের সম্ভাবনা কম থাকে।

৩. শিক্ষা জনসংখ্যা বৃদ্ধি রোধে অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। নারী শিক্ষিত হলে তারা সচেতন থাকে এবং সন্তান সংখ্যা সীমিত রাখে। আমাদের দেশে শিক্ষিত নারীদের ক্ষেত্রে এই প্রবণতা লক্ষ করা যায়, সুতরাং নারী শিক্ষার সঙ্গে জনসংখ্যা বৃদ্ধির সম্পর্ক ওতপ্রোতভাবে জড়িত।

৪. নারীদের কর্মক্ষেত্রে প্রবেশের সুযোগ বৃদ্ধি করলে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। যে নারী কর্ম ক্ষেত্রে কাজ করে, তারা সন্তান সংখ্যা কম থাকে। সে চেষ্টা করে কম সন্তান নেওয়ার, এক্ষেত্রেও শিক্ষার ভূমিকা অনন্য। দেশের মহিলাদের কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করানোর জন্য উপযুক্ত শিক্ষা প্রদান জরুরি। তাদের শিক্ষা প্রদান করে দক্ষ করে তুললে তারা কাজে প্রবেশ করবে এবং জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের সম্ভব হবে।

৫.জনসংখ্যা বেশি হলে তাদের শিক্ষা প্রদানে সমস্যা হয়। দেশের সম্পদ স্বল্পতার জন্য অধিক জনসংখ্যাকে শিক্ষিত করা খুবই কষ্টসাধ্য ব্যাপার। সুতরাং দেখা যাচ্ছে যে অধিক জনসংখ্যা শিক্ষার ক্ষেত্রে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে।

৬.অধিক জনসংখ্যা হলে তাদের জন্য বেশি বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দরকার হয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন এবং পরিচালনা করা ব্যয়সাধ্য ব্যাপার। দেশের জনগণের তুলনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কম থাকায় একদিকে অশিক্ষিত জনসংখ্যা বাড়ছে অন্যদিকে তাদের দ্বারা জনসংখ্যা হার বৃদ্ধি পাচ্ছে।

৭.শিক্ষা জনগনকে কুসংস্কারের হতে দূরে রাখে। অনেক কুসংস্কার আছে যা জনগণকে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে নিরুৎসাহিত করে। তারা মনে করে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে কোন প্রয়োজন নেই, যিনি মুখ দিয়েছেন তিনি আহার দেবেন। সব কুসংস্কার এবং ভ্রান্ত ধারণা দূর করে শিক্ষা। যার ফলশ্রুতিতে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে থাকে।

৫. উপসংহার- 

 পরিশেষে বলা যেতে পারে পৃথিবীতে দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধি ঘটেছে, তাতে উন্নত দেশগুলির উন্নয়নশীল দেশগুলি থেকে নিয়ন্ত্রণের কথা চিন্তা ভাবনা করছে। বর্তমানে ভারতবর্ষে জনসংখ্যা হল ১.২৬ বিলিয়ন, পৃথিবীর দ্বিতীয় স্থান ।কিন্তু ভারতবর্ষে দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেছেন আগামী কয়েক বছরের মধ্যে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ভারতবর্ষ স্থান প্রথম হবে। ভারতবর্ষে যতদিন না শিক্ষা ব্যবস্থা উন্নত হচ্ছে, ততদিন জনগণের চেতনা বোধ ও কুসংস্কার মুক্ত হবে না। অল্প বয়সে বিবাহ ও নারী শিক্ষা যতদিন না উন্নতিসাধন ঘটছে ততদিন জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে আসবে না। চীন সরকারের ন্যায় ভারত সরকারকেও "পরিবার নীতি" ও "জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ পরিকল্পনা" দৃঢ় না করলে ভারতবর্ষে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে না। শুধু মাত্র শিক্ষা যা পারে  মানুষের নৈতিক ও সচেতনতা বৃদ্ধি করতে। তাই যতদিন মানুষের পরিবার পরিকল্পনা সম্পর্কে নৈতিক চেতনা বৃদ্ধি বা চিন্তা ধারা বিকাশ না করে মাথাপিছু জাতীয় আয়, তথা মাথা পিছু আয়, উৎপাদন, দেশের অর্থনীতি ও সম্পদ, বিকাশ, মৃত্তিকা- জল-বায়ু তথা পরিবেশ, দারিদ্রতা,বেকারত্ব, কর্মের বিকাশ  ঘটবে না। আরো যত দিন যাবে দেশের আর্থসামাজিক দিক থেকে অনুন্নত হয়ে পড়বে।












Post a Comment (0)
Previous Post Next Post