Analysis Of School Curriculum At Different Stages

Analysis Of School Curriculum At Different Stages

Analysis Of School Curriculum At Different Stages||

BENGALI VERSION ||

Analysis Of School Curriculum At Different Stages Practicum
Analysis Of School Curriculum At Different Stages


BENGALI VERSION -

Analysis Of School Curriculum At Different Stages

1. ভূমিকা - 

ভাষার সাহায্যে আমরা অন্যের কাছে নিজেদের মনোভাব প্রকাশ করি,কোন বিষয় সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা ও বিচার-ভাবনা ও বিচার-বিশ্লেষণ করি এবং জ্ঞান-বিজ্ঞানের চর্চা করি।লেখাপড়া শিখে যখন আমরা জ্ঞান-বিজ্ঞানের চর্চা করি তখন আমরা ভাষায় লিখিত রূপের সঙ্গে পরিচিত হই,তখনই পঠনের প্রয়োজন হয়। পঠনের সাহায্যে মানুষ তার জ্ঞানের ভান্ডারকে সমৃদ্ধ করে তোলে।তাই পঠনের গুরুত্ব অপরিসীম। আর এই পঠনকে সর্বজনীন করে তোলার জন্য প্রয়োজন হয় পাঠক্রমের। Encyclopaedia Britannica - তে পাঠক্রম সম্পর্কে বলা হয়েছে - পাঠক্রম হলো একটি শিক্ষাক্রম,যা বিশ্ববিদ্যালয়,বিদ্যালয় অথবা ব্যাপক অর্থে কোনো নির্দিষ্ট মানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের জন্য ধার্য করা হয়। পেইনির মতে, শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিত্বের বিকাশ এবং আচরণ পরিবর্তন ঘটানোর জন্য শিক্ষালয়ে যে সব কর্মসূচি গ্রহণ এবং সচেতন ভাবে রূপায়ণ করা হয় তাদের সমবায়ই হল পাঠক্রম।

                    শিক্ষার যোগ্যতম বাহন হল পাঠক্রম বা Curriculum.পাঠক্রম গড়ে ওঠে মূলত জ্ঞান অনুভূতি, কর্ম অভিজ্ঞতা, এবং বিদ্যার্থী ও সমাজের চাহিদাকে ভিত্তি করে।পাঠক্রম রচনাকারী কে লক্ষ্য রাখতে হবে যেন পাঠক্রম সমাজের ও শিশু চাহিদা পূরণ করতে পারে। আবার,সেটি জীবন দর্শনের মূর্ত প্রতীক হয়ে ও উঠতে পারে।

2. পাঠক্রমের ধারণা -

শিক্ষার একটি অপরিহার্য উপাদান হল পাঠক্রম।লাতিন 'Currere' শব্দটি থেকে ইংরেজি 'Curriculum' শব্দের উৎপত্তি হয়েছে।লাতিন 'Currere' শব্দের অর্থ দৌড়। নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য দৌড়ের যে পথ তাই পাঠক্রম বা Curriculum. অর্থাৎ পাঠক্রমের বুৎপত্তিগত অর্থ হল বিশেষ লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য দৌড়ের পথ।

বিভিন্ন শিক্ষাবিদ্ পাঠক্রমের সংজ্ঞায় বিভিন্নভাবে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। এখানে কয়েকটি সংজ্ঞা দেওয়া হল - 

পেইনি এর মতে -  " শিক্ষার্থী ব্যক্তিত্বের বিকাশ ও আচরণের পরিবর্তন ঘটানোর জন্য শিক্ষাপতিষ্ঠানে যে সমস্ত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয় এবং সচেতন ভাবে পরিকল্পনা করা হয় তাদের সামগ্রিক যোগফল হল পাঠক্রম।"

ফ্রয়েবেলে মতে - " পাঠক্রম হলো মানবজাতির সামগ্রিক জ্ঞানের ক্ষুদ্র সংস্করণ।"

কিলপ্যাট্রিক এর মতে -" পাঠক্রম হলো এমন একটি উপাদান যার মধ্যে দিয়ে বাস্তব জীবনের প্রতিফলন ঘটে।"

মুদালিয়ার কমিশনের মতে -" পাঠক্রম বলতে শুধু বিদ্যালয়ের যে সমস্ত গতানুগতিক পাঠ্য বিষয় গুলি পরীক্ষাগারে, কর্মশালায়, বিতর্ক সভায়, খেলার মাঠে এবং শিক্ষক-শিক্ষিকার সংস্পর্শে ও পারস্পরিক ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়া মধ্যমে যে সমস্ত অভিজ্ঞতা অর্জন করে, তার সমষ্টি হল পাঠক্রম।"

3. পাঠক্রমের উদ্দেশ্য -

পাঠক্রমের উদ্দেশ্য গুলি হল -

১.একটি ব্যক্তি কোনো বিষয়ে জ্ঞান অর্জনে করে পাঠক্রমের সাহায্যে। তাই পাঠক্রমের প্রধান উদ্দেশ্য হল মানুষের জ্ঞানের ভান্ডার কে বৃদ্ধি করতে সাহায্যে করে।

২.শিহ্মার্থীর বৌদ্ধিক,ব্যক্তিগত, সামাজিক এবং শারীরিক বিকাশ ঘটাতে পাঠক্রম সাহায্যে করে।

৩. শিক্ষার্থীর ব্যক্তি চাহিদা এবং নাগরিক লক্ষ্য পূরণ করা পাঠক্রমের অন্যতম উদ্দেশ্য।

৪. ব্যক্তির মূল্যবোধ, বিকাশের প্রত্যাশা বৃদ্ধিতে পাঠক্রমের গুরুত্ব অপরিসীম।

৫. পাঠ্যক্রমের মাধ্যমে শিশুর সম্পূর্ণ বিকাশ ঘটাতে পারে।

৬. সমাজ পরিবর্তন এবং সমাজ নিয়ন্ত্রণের প্রধান শক্তিশালী হাতিয়ার হল পাঠক্রম।

৭. আত্ম উপলব্ধি বিকাশের মাধ্যমে পাঠ্যক্রম শিক্ষার্থীকে ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে সাহায্য করে।

৮. ভবিষ্যতের জীবনের সঠিক জীবিকা নির্বাহের জন্য পাঠকম শিক্ষার্থীকে সক্ষম করে তুলতে সহায়তা করে।

৯.প্রগতি পথে মূল্যায়নের জন্য পাঠক্রম সঠিক প্রতি সংকেত প্রদান করা পাঠক্রম অন্যতম উদ্দেশ্য।

১০. শিক্ষার্থীর নিজের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বিদ্যালয়ের ভেতরে ও বাইরে তার বিকাশ ঘটানো,পাঠক্রমের একটি অন্যতম উদ্দেশ্য।

4. পাঠক্রমের গুরুত্ব -

a. শিক্ষক এবং শিক্ষাবিদরা মনে করেন যে, পাঠক্রমে ভাষার তাত্ত্বিক উন্নয়নে বহুলাংশে নির্ভর করে পঠনের উপর। পাঠক্রমে পঠনের উদ্দেশ্য মুখি ব্যবহারের উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয় এবং সম্পূর্ণ পাঠক্রম শিক্ষার্থীর উন্নয়নের ওপর প্রভাব বিস্তার করে।

b. শিক্ষার্থীদের নিয়মানুগ শিক্ষার গ্রহণের জন্য পাঠক্রমের পতনের ভূমিকা অস্বীকার করা যায় না।

c. পাঠক্রমে পর্টনের মাধ্যমে আমাদের জ্ঞানের পরিধি বিস্তৃত হয় এবং আমাদের বৃদ্ধি বৃত্তি ও মননশীলতার বিকাশ ঘটে। পঠনের অভ্যাস আমাদের আত্মবিশ্বাস ও ব্যক্তিত্ব গঠনের বিশেষ ভাবে সাহায্য করে।

d. পঠন দক্ষতা বিকাশের মাধ্যমে পাঠক্রম সামঞ্জস্যপূর্ণ হয় ও আর্থক পঠনের প্রয়াসের পাঠক্রম নির্মাণের মূল নীতিগুলি সু-সম্পন্ন হয়ে থাকে।

e. পাঠক্রমে পঠনের দ্বারা শিক্ষার্থীদের সবর পাঠ ও নীরব পাঠের সু-অভ্যাস গড়ে ওঠে।ছাত্র-ছাত্রীদের সঠিকভাবে পড়াবার ক্ষমতার পরীক্ষা করা যায় পঠনের দ্বারা।শিক্ষার্থীদের সঠিক উচ্চারণ রীতি শিখতে পারে এবং তাদের উচ্চারণে কোনো ত্রুটি থাকলে শিক্ষক তা সংশোধন করে দিতে পারেন। সঠিক উচ্চারণ রীতি ছাড়াও পাঠক্রমে সবর পাঠের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সঠিক বাচন ভঙ্গি ও কথন শৈলী ও শিক্ষা দেওয়া যায়।

f. যে কোনো বিষয় প্রাথমিক ভাবে জানার পর পাঠক নিজস্ব ভাবনার দ্বারা তা উপলব্ধি করেন।পাঠক্রমে পঠনের দ্বারাই এই উপলব্ধি সম্ভব পর হয়ে ওঠে। বিশেষ করে সাহিত্যে রচনার ব্যবহৃত শব্দের পেছনে লেখকের যে ভাবে বা অনুভূতি থাকে সার্থক পঠনের মাধ্যমের তা শ্রোতার মনে সঞ্চারিত করে দেওয়া যায়,এক্ষেত্রে সবর পাঠ শিল্প সুষমাখন্ডিত হয়ে ওঠে।

g. পাঠক্রমের অন্তর্গত পঠনের মাধ্যমে পাঠকের মূল্যবোধ এবং বিষয় সংশ্লিষ্ট নৈতিকতার সমৃদ্ধি ঘটে। সামগ্রিক ভাষা জ্ঞানের প্রসার ঘটে।

h. পঠনের অন্তর্গত যাবতীয় উদ্দেশ্য পূরণে সেগুলির প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে শিক্ষার্থীর তথা পাঠকের আগ্রহ,মনোযোগ,চাহিদা এবং সৃজনশীলতা চরিতার্থ করে থাকে।

i. পাঠক্রমে পঠনের বিষয়বস্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সামাজিক চাহিদা পূরণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের জীবনমুখী এবং নেতিবাচক করে তোলে।

j পাঠক্রমে পঠনের বিষয়বস্তু বেশিরভাগ হ্মেত্রে সামাজিক চাহিদা পূরণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীকে জীবন মুখী এবং ইতিবাচক করে তোলে।

k. পাঠক্রম পঠন বিন থাকলে শিহ্মার্থীদের মধ্যে পাঠের দক্ষতা সৃষ্টি করা যায় না।পাঠ্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত কোনো বিষয়ই তারা আয়ত্ত করতে সক্ষম হবে না।পাঠের দক্ষতা অর্জন করার পর শিক্ষার্থীদের পাঠের অভ্যাস গঠন করা প্রয়োজন হয়।এই পাঠের অভ্যাস আমাদের সারাজীবন ধরে বিভিন্ন জ্ঞান অর্জনে সাহায্য করে।

অতএব শিক্ষা ক্ষেত্রে পাঠক্রমের পঠনের গুরুত্ব অনস্বীকার্য।

5. পাঠক্রমের প্রয়োজনীয়তা -

. শিক্ষা হল একটি উদ্দেশ্য মুখি প্রক্রিয়া।এর কতগুলি লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য আছে।আধুনিক শিক্ষার লক্ষ্য হলো শিক্ষার্থীর সার্বিক বা সুষম বিকাশ।পাঠক্রম হল এ লক্ষ্যে পৌঁছানোর পথ। অর্থাৎ পাঠক্রম শিক্ষার্থীর সার্বিক বিকাশে সহায়তা করে।

২. পাঠক্রম হলো কতকগুলি সু-নির্বাচিত বিষয়বস্তুর  সমষ্টি বা তালিকা।এই বিষয়বস্তু চর্চার মাধ্যমে শিক্ষার্থীর জ্ঞান লাভ করে।শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাস্তব জীবন সম্বন্ধে বোধ জাগ্রত হয়।পরবর্তীকালে শিক্ষার্থীরা এই জ্ঞান বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করে সফলতা লাভ করে।

৩. পাঠক্রম শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কতকগুলি বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করে। শিক্ষার পদ্ধতি কি হবে, কি ধরনের শিক্ষন সহায়ক উপকরণ ব্যবহার করবেন,কি ধরনের কার্যকলাপ নির্বাচন করা হবে, মূল্যায়ন পদ্ধতি কি হবে - প্রভৃতি ব্যাপারে পাঠক্রম শিক্ষক-শিক্ষিকাকে নির্দেশনা দান করে থাকে।এক কথায় পাঠক্রম শিক্ষক-শিক্ষিকাকে পাঠ পরিকল্পনার সহায়তা করে।

৪. শিক্ষার একটি সামাজিক প্রেক্ষাপট আছে। সামাজিক চাহিদা,সামাজিক আদর্শ,সামাজিক মূল্যবোধ,সামাজিক ঐতিহ্য প্রভৃতি শিক্ষাব্যবস্থার প্রতিফলিত হয়।সমাজ গতিশীল, সামাজিক গতিশীলতা শিক্ষাকে গতিশীল করে তোলে। এর ফলশ্রুতি হিসেবে পাঠক্রমের গতিশীল বা পরিবর্তনশীল হয়।বস্তুতপক্ষে সামাজিক গতিপ্রকৃতি, নতুন ধারা শিক্ষার,নতুন ধারা প্রবণতা সমস্যা প্রভৃতি দিক পাঠক্রমে প্রতিফলিত হয়।ফলে পাঠক্রমের মধ্যে দিয়ে সমাজের গতি প্রকৃতি ও শিক্ষার সাম্প্রতিক অবস্থা  বা প্রবণতা সম্বন্ধে জানা যায়। 

৫. পাঠক্রম বিভিন্ন শিখন ও শিহ্মন কার্যাবলী উল্লেখ করা থাকে। এটি পরোহ্ম নির্দেশ দেয় যে এই পাঠক্রমটি চালু করতে হলে কি ধরনের শিক্ষক-শিক্ষিকা প্রয়োজন, এদের শিহ্মাগত যোগ্যতা ও পেশাগত কেমন হওয়া উচিত,কি ধরনের অভিজ্ঞতা থাকা বাঞ্ছনীয়। শুধু তাই নয়,এটি শিক্ষক-শিক্ষিকার ভূমিকা সম্বন্ধে ও নির্দেশ দান করেন।

৬. শিক্ষার একটি বড়ো কাজ হলো মূল্যায়ন।পাঠ্যক্রম মূল্যায়নের জন্য কোন পদ্ধতি ও কৌশল অনুসরণ করা যাবে সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে শিক্ষক-শিক্ষিকাকে সাহায্য করে থাকে। 

৭. প্রত্যেক স্বাধীন জাতির একটি শাসনতন্ত্র বা সংবিধান আছে। সংবিধানের একটি দার্শনিক ভিত্তি আছে প্রত্যেক স্বাধীন রাষ্ট্রের সংবিধান কতকগুলি স্বাধীন জাতীয় মূল্যবোধের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন,যেমন ভারতীয় সংবিধানের 'সাম্য','স্বাধীনতা','ধর্মনিরপেক্ষতা' প্রভৃতি মূল্যবোধের উপর জোর দেয়।বস্তুতপহ্মে, শিক্ষার মাধ্যমে তথা পাঠক্রমের মধ্য দিয়ে মূল্যবোধ গড়ে তোলা যায়। অর্থাৎ পাঠক্রম শিক্ষার্থীদের মধ্যে জাতীয় বা সাংবিধানিক মূল্যবোধ গড়ে তুলতে সাহায্য করে।

৮.  প্রত্যেক জাতি বা রাষ্ট্রের নিজস্ব একটি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য আছে। এই সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য জাতির স্বাতন্ত্র্যের পরিচয়।একটি দেশব্যাপীকে স্বাতন্দ্র্য জাতীর পরিচয় প্রদান করে।জাতীয় শিক্ষা বা জাতীয় পাঠক্রম এই সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে এবং শিক্ষার পাঠক্রমের মাধ্যমে।এই জাতীয় সাংস্কৃতিক সংরক্ষণের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মধ্যে সঞ্চালন ও উন্নতি ঘটে। 

৯. শিক্ষা জাতীয় অগ্রগতিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে থাকে।কোঠারি কমিশনের যথার্থই বলেছেন যে - The distiny of the nation is being shaped in her classroom.এই কারণে শিক্ষাকে সামাজিক, অর্থনৈতিক,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হিসাবে বিবেচনা করা হয় এবং এর কাজ পাঠক্রমের মাধ্যমে সম্পাদিত হয়।পাঠক্রমের মধ্যে দিয়ে শিশু বা শিক্ষার্থীকে বা জাতি সম্পর্কে ধারণা গড়ে ওঠে এবং জাতীয় উন্নয়নে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সক্রিয় অবদান রাখে।

১০. শিক্ষা শিক্ষার্থীকে গণতান্ত্রিক জীবন যাপনের প্রশিক্ষণের প্রক্রিয়া শিক্ষা তথা পাঠক্রম ব্যক্তি তথা শিক্ষার্থীকে গণতান্ত্রিক জীবনযাপন প্রণালী সম্পর্কে সচেতনতার দায়িত্বশীলতা নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলে।

১১. পাঠক্রম দেশের নাগরিকদের মধ্যে জাতীয় ঐক্যের ধারণা বিকাশের সহায়ক।পাঠক্রমের মাধ্যমে শিক্ষার্থীকে গণতান্ত্রিক ঐতিহ্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল মনোভাব গড়ে ওঠে। এভাবে পাঠক্রম শিক্ষার্থীদের মধ্যে জাতীয় সংহতির পথ প্রশস্ত করে।

১২. শিক্ষা বা পাঠক্রম জনগণের জীবনের গুনগত মান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।যুক্তিগত বা পেশাগত কোর্সের মাধ্যমে ব্যক্তি জীবনে অর্থনৈতিক উন্নতি ও শ্রীবৃদ্ধি ঘটে।বেকারত্ব দূরীভূত হয়।এভাবে কর্মমুখী কোর্সের মাধ্যমে জনগণের মাধ্যমে জনগণের অর্থনৈতিক উন্নতি ও জীবনের মান উন্নয়নে সহায়তা করে।

6. বিদ্যালয়ের পাঠক্রমের শ্রেণীবিভাগ - 

জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত যে কোনো মানুষের জীবনধারা ভালো-মন্দ মিশিয়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে রয়ে চলে। জীবনের এই স্রোতকে কয়েকটি বিভিন্ন অংশে ভাগ করা যায় না। তবুও জীবনে বিভিন্ন পর্যায়ে দৈহিক ও মানসিক বৈশিষ্ট্যকে অবলম্বন করে পরস্পর সংযুক্ত কয়েকটি পর্যায়ে জীবন কে বিবেচনা করা যায়।মনোবিজ্ঞানীদের মতে অনুসারে জন্ম থেকে ৫ বছর পর্যন্ত সময়কালকে বলা হয় শৈশবকাল।৫ বছর থেকে ১১/১২ বছর পর্যন্ত বাল্যকাল,১১/১২ বছর থেকে ১৬/১৮ বছর (ছেলে মেয়ে উভয় ভেদে)পর্যন্ত বয়ঃসন্ধিকাল বলে ও ১৮/১৯ বছরের উপরে পূর্ণবয়স্কতা বলে। 

             শিক্ষার নিরিখে প্রথম স্তর কে প্রাক-প্রাথমিক স্তর,দ্বিতীয় স্তর কে প্রাথমিক শিক্ষা স্তর,তৃতীয় স্তর হলো মাধ্যমিক শিক্ষা স্তর, চতুর্থ স্তর হল উচ্চ-মাধ্যমিক স্তর। পঞ্চম শিক্ষা স্তর হলো উচ্চ শিক্ষার স্তর,সবশেষে মৃত্যু পর্যন্ত চলে বয়স্ক শিক্ষার। তবে বিদ্যালয়ের পাঠক্রম শ্রেণীবিভাগের মূলত প্রারম্ভিক প্রাথমিক শিক্ষা স্তর(প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণী),প্রাথমিক শিক্ষা স্তর(তৃতীয়,চতুর্থ,পঞ্চম শ্রেণী),উচ্চ-প্রাথমিক শিক্ষার স্তর(ষষ্ঠ,সপ্তম,অষ্টম শ্রেণি), মাধ্যমিক শিক্ষা স্তর(নবম ও দশম শ্রেণি), উচ্চ-মাধ্যমিক শিক্ষা স্তর(একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণী) নিয়ে গঠিত।বিদ্যালয়ের শিহ্মার এই পাঁচটি স্তরের পাঠক্রম ও পাঠ্যসূচির সমন্বয় আলোচনা করা হলো। -

ক। প্রারম্ভিক প্রাথমিক শিক্ষা স্তর (প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণি) -

শিক্ষার গোড়ার কথা হলো প্রারম্ভিক প্রাথমিক শিক্ষা। এই শিক্ষা বিষয়টি দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে সবচেয়ে বৃহত্তম ও গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের দেশে একটি বুনিয়াদি শিক্ষা নামে খ্যাত। এটি শিক্ষার গণতান্ত্রিক মৌলিক অধিকার। প্রারম্ভিক প্রাথমিক শিক্ষা স্তরে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর কথা বলা হয়। এখানে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর জন্য পৃথক এবং বিষয়ভিত্তিক পাঠ্যপুস্তক নেই। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর জন্য কতগুলি ভাবমূলক ক্ষেত্র চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর জন্য সমন্বিত পাঠ্যপুস্তক রয়েছে। এখানে বিভিন্ন ধারনা গুলির মধ্যে সংযোগ ঘটিয়ে ভাবমূলক তৈরি করা হয়েছে। প্রথম শ্রেণীর জন্য এইরকম কুড়িটি ও দ্বিতীয় শ্রেণীর 17 টি ভাবমূলক পাঠ্যক্রম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

শ্রেণি ও পাঠক্রম -

নং          প্রথম শ্রেণী                       দ্বিতীয় শ্রেণী

১.  আমি অর্থাৎ প্রত্যেক শিশু       আমার পরিবার

২.   আমার পরিবার                            ঋতু     

৩.   দেহের অংশ                                প্রানী

৪.   প্রাণী                                          পাখি

৫.   রং                                              ফুল

৬.   আকার                                       ফল

৭.   ঘরবাড়ি                                     আকার

৮.   গাছপালা                                     রং

৯.    জল                                           খাদ্য

১০.  আমাদের খাদ্য                      সমাজ সহায়ক

১১.  ফুল                                           পরিবহন

১২.  পরিষ্কার পরিছন্নতা                      ঘরবাড়ি

১৩.   শাকসবজি                                গাছপালা

১৪.   ফল                                         শাকসবজি

১৫.   পাখি                                          পোশাক

১৬.   পরিবহন                             সংস্কৃতি ও উৎসব

১৭.   সমাজ সহায়ক         প্রাত্যহিক প্রত্যক্ষ জীবনে

১৮.   পোশাক

১৯.   ঋতু

২০.   সংস্কৃতি ও উৎসব সমূহ

খ। প্রাথমিক শিক্ষা স্তর(তৃতীয়,চতুর্থ,পঞ্চম শ্রেণী) -

এই স্তরে জন্য পৃথক পৃথক এবং বিষয়ভিত্তিক পাঠ্যপুস্তক আছে।

• তৃতীয় শ্রেণী, চতুর্থ শ্রেণী,পঞ্চম শ্রেণী -

১। প্রথম ভাষা (বাংলা)

২। দ্বিতীয় ভাষা (ইংরেজি)

৩। গণিত বা অংক

৪। আমাদের পরিবেশ

৫। স্বাস্থ্য ও শারীর শিক্ষা                       

গ। উচ্চ-প্রাথমিক শিক্ষার স্তর (ষষ্ঠ,সপ্তম,অষ্টম শ্রেণি) -

উচ্চ প্রাথমিক শিক্ষার স্তর বলতে ১২ থেকে ১৪ শিক্ষার্থীর জন্য শিক্ষা ব্যবস্থা করা হয়। কারণ দিক শিক্ষা দুটি স্তর প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিক। ষষ্ঠ হইতে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্তরের অন্তর্গত।

• ষষ্ঠ শ্রেণি -

১. প্রথম ভাষা (বাংলা)

২. দ্বিতীয় ভাষা (ইংরেজি)

৩. গণিত

৪. পরিবেশ ও বিজ্ঞান

৫. ভূগোল

৬. ইতিহাস

৭. স্বাস্থ্য শিক্ষা

৮. শিক্ষা ও শরীর শিক্ষা

৯. কলা শিক্ষা 

• সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণী -

১. প্রথম ভাষা (বাংলা)

২.দ্বিতীয় ভাষা (ইংরেজি)

৩. তৃতীয় ভাষা (সংস্কৃত/হিন্দি/আরবি)

৪. গণিত

৫. ভূগোল

৬. ইতিহাস

৭. পরিবেশ ও বিজ্ঞান

৮. স্বাস্থ্য শিক্ষা

৯. শিক্ষা ও শারীর শিক্ষা

১০. কলা শিক্ষা

ঘ। মাধ্যমিক শিক্ষা স্তর(নবম ও দশম শ্রেণি) - 

শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তর হলো মাধ্যমিক শিক্ষার স্তর। মাধ্যমিক শিক্ষার স্তর বলতে নবম ও দশম শ্রেণীর শিক্ষাকে বোঝানো হয়। বর্তমানে মাধ্যমিক শিক্ষার প্রচলিত কাঠামোটি তুলে ধরা হলো। -

• নবম শ্রেণী -

১.প্রথম ভাষা (বাংলা) (১০০)

২.দ্বিতীয় ভাষা (ইংরেজি) (১০০)

৩. গণিত (১০০)

৪. জীবন বিজ্ঞান (১০০)

৫. ভৌত বিজ্ঞান (১০০)

৬. ইতিহাস (১০০)

৭.ভূগোল (১০০)

• দশম শ্রেণি -

১.প্রথম ভাষা (বাংলা) (১০০)

২.দ্বিতীয় ভাষা (ইংরেজি) (১০০)

৩.গণিত (১০০)

৪.জীবন বিজ্ঞান (১০০)

৫.ভৌত বিজ্ঞান (১০০)

৬.ইতিহাস (১০০)

৭.ভূগোল (১০০)

৮. বাধ্যতামূলক ঐচ্ছিক বিষয় - কর্মশিক্ষা (১০০)

ঙ। উচ্চ-মাধ্যমিক শিক্ষা স্তর (একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণী) -

একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণী (১৫-১৭বছর) নিয়ে উচ্চ-মাধ্যমিক শিক্ষা স্তর। এই স্তরটি+২ স্তর নামে অভিহিত করা হয়। এ স্তরের পাঠক্রমের তিনটি অংশ,যথা ১.বাধ্যতামূলক বিষয়,২. ঐচ্ছিক বিষয়,৩.অতিরিক্ত বিষয় থাকে।

• একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণী -

১. বাধ্যতামূলক বিষয় - a. প্রথম ভাষা (বাংলা)(১০০),b. দ্বিতীয় ভাষা (ইংরেজি)(১০০).

২. ঐচ্ছিক বিষয় -৩টি (১০০)+(১০০)+(১০০)

৩. অতিরিক্ত বিষয় - ১টি(১০০)

7. পশ্চিমবঙ্গে বিদ্যালয় স্তরে পাঠক্রম -

বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে বিদ্যালয় স্তরে পাঠক্রমে বেশ পরিবর্তন হয়েছে।যেমন,-

ক। প্রাথমিক শিক্ষার পাঠ্যক্রম স্তর -

প্রাথমিক শিক্ষার পাঠক্রম কে প্রধানত চারটি ভাগে ভাগ করা যায়।

১. খেলাধুলা ও শরীরচর্চা -

দেহের সুষম বিকাশের জন্য বয়স ও পরিবেশের উপযোগী ছন্দবদ্ধ অঙ্গ সঞ্চালন ও সাধারণ খেলাধুলা এবং স্বাস্থ্যবিধি অনুশীলন।

২. উৎপাদনশীল ও সৃজনশীল কাজ -

বয়সে সামর্থ্য ও পরিবেশের অনুযায়ী আধুনিক সমাজের উৎপাদন ব্যবস্থার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ উৎপাদনশীল ও সৃজনশীল কাজ কর্ম।

৩. প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা মূলক কাজ -

বিদ্যালয় জীবন যাপন, নানা ধরনের উৎসব পালন, সমাজ ও প্রাকৃতিক পরিবেশের সঙ্গে প্রত্যক্ষ যোগাযোগমূলক কাজকর্ম।

৪. পঠন-পাঠন সংক্রান্ত কাজ -

এই বিভাগে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যেমন -

a. মাতৃভাষা -

সহজ ও সরল ভাবে মাতৃভাষা অনুশীলন। আর মাতৃভাষার মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয় সংক্রান্ত জ্ঞান ধারণা ও মূল্যবোধ গড়ে তুুলতে হবে।

b. গণিত - 

গণিতের সরল প্রক্রিয়া সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা গঠন এই স্তরে পাঠক্রমের অপরিহার্য অঙ্গ। গাণিতিক রাশির সাহায্যে চিন্তন এর যোগ্যতা বৃদ্ধি এবং ব্যবহারিক জীবনের অনুশীলন আবশ্যিক শিক্ষাক্রম।

c. পরিবেশ পরিচিতি

প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীতে প্রাকৃতিক ও সামাজিক পরিবেশের পরিচিতি পাঠ।

 তৃতীয় শ্রেণি থেকে ধীরে ধীরে চারটি সুনির্দিষ্ট শাখা রূপে পঠন-পাঠনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যথা ইতিহাস, ভূগোল, প্রাকৃতিক বিজ্ঞান ও শারীর বিজ্ঞান পঞ্চম শ্রেণীতে। এই বিভাজন যাতে সুস্পষ্ট রূপ পায় তার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

খ। মাধ্যমিক শিক্ষা পাঠক্রম স্তর -

সাধারণত প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষা সমাপ্তির পর বিদ্যার্থীর দল মাধ্যমিক স্তরের আসে ১১/১২ বছরের মধ্যে। মাধ্যমিক শব্দটির মধ্যে নিহিত রয়েছে এই স্তরের অবস্থান। এটি শিক্ষার জীবনের মধ্যম স্তর।১৬ বছর পর্যন্ত চলে মাধ্যমিক পাঠ্যক্রম।

        বহু বিতর্কের পর পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ কোঠারি কমিশনের সুপারিশ অনুসরণ করে এক পাঠক্রম রচনা করে। এই পাঠক্রম 1974 খ্রিস্টাব্দে জানুয়ারি মাস থেকে পশ্চিমবঙ্গের সব মাধ্যমিক বিদ্যালয় গুলিতে কার্যকর করা হয়।পরবর্তী কালে এই পাঠক্রম বিষয় ভিত্তিক পাঠ্যসূচির পরিবর্তন ও পূণ্য বিন্যাস হয়েছে। কিন্তু মূল কাঠামো আজও প্রায় একই রকম রয়েছে।তা হলো -

A. ভাষা বিভাগ -

১. প্রথম ভাষা বা মাতৃভাষা বা আঞ্চলিক ভাষা।

২. দ্বিতীয় ভাষা ইংরেজি

৩. তৃতীয় ভাষা যেকোনো প্রাচীন ভাষা কেবল সপ্তম অষ্টম শ্রেণীর জন্য আবশ্যিক। ষষ্ঠ শ্রেণীতে অনাবশ্যক এবং নবম ও দশম শ্রেণীতে ঐচ্ছিক বিষয় অন্তর্গত।

B. সমাজবিজ্ঞান বিভাগ -

১. ইতিহাস

২. ভূগোল

C. বিজ্ঞান বিভাগ -

১. ভৌত বিজ্ঞান - পদার্থবিদ্যা এবং রসায়ন বিদ্যা একত্রে।

২. জীববিজ্ঞান - প্রাণিবিদ্যা,উদ্ভিদবিদ্যা ও শারীর বিদ্যা একত্রে।

৩. গণিত

D. কর্মশিহ্মা বিভাগ - 

১. কর্মশিক্ষা ,২. শারীর শিক্ষা,৩. সমাজসেবা

E. অতিরিক্ত বিষয় - 

পাঠ্যক্রম একটি অতিরিক্ত বিষয় রাখা হয়েছে। তর্কবিদ্যা,সংস্কৃত,জীবনবিজ্ঞান,মৎস্যচাষ, রসায়ন,গণিত,পদার্থবিদ্যা,রাশিবিজ্ঞান,কম্পিউটার সায়েন্সের ব্যবহারিক প্রয়োগ,গান ইত্যাদি বিষয় গুলির মধ্যে যে কোনো একটি নেওয়া যেতে পারে।সমস্ত বিষয় গুলির মধ্যে ভাষা বিভাগের ৩৩.৩৩%, বিজ্ঞান বিভাগের ৩৩.৩৪%, সামাজিক বিজ্ঞান ২২.২২% এবং কর্মশিহ্মা বিভাগের ১১.১১% গুরুত্ব পেয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গে মধ্যশিহ্মা পর্ষদ দশম শ্রেণীর শেষের যে মাধ্যমিক পরীক্ষা গ্ৰহন করে তাতে মোট ৮০০ নম্বরের বিভাজন আছে।

                  ভাষা বিভাগ - ৩০০ নম্বর 

               বিজ্ঞান বিভাগ - ৩০০ নম্বর 

সামাজিক বিজ্ঞান বিভাগ - ২০০ নম্বর 

              অতিরিক্ত বিষয় - ১০০ নম্বর 

গ। উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা পাঠক্রম স্তর -

১. ভাষার স্তর -

এই ক্ষেত্রে দুটি স্তর রয়েছে। বিভাগ a. বাংলা,ইংরেজি, হিন্দি,তেলেগু,মালায়ালাম সহ ভারতের আধুনিক ভাষা গুলি। b. হিন্দি,ইংরেজি,বিকল্প ইংরেজি 

      উচ্চ মধ্যমিক শিক্ষা স্তরে বিদ্যার্থীদের মোট দুটি ভাষা আবশ্যিক পাঠ। যেমন যাদের মাতৃভাষা বাংলা, তারা 'ক' বিভাগে থেকে প্রথম আবশ্যিক ভাষা নেবে বাংলা। আর 'খ' বিভাগ থেকে বাংলা ছাড়া যেকোনো একটি ভাষা বিদ্যার্থীরা যদি 'ক' বিভাগ থেকে ইংরেজি নেয়, তবে তাকে 'খ' বিভাগ থেকে হিন্দি বাংলা বিকল্প ইংরেজি নিতে হবে।

প্রতিটি ভাষার জন্য মোট ধার্য নম্বর ১০০। এবং মোট ভাষা বিভাগে ধার্য নম্বর ২০০।

২. আবশ্যিক ঐচ্ছিক বিষয় সমূহ -

এই অংশে আছে মোট 41 টি বিষয়। বিষয়গুলিকে মৌলিক দুটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

a. পরীক্ষাগার ভিত্তিক বিষয়।

b. পরীক্ষাগার হীন বিষয়।

a. পরীক্ষাগার ভিত্তিক বিষয় -

যেমন পদার্থবিদ্যা,রসায়ন বিদ্যা, জীব বিদ্যা, ভূতত্ত্ব, ভূগোল,পুষ্টিবিদ্যা,চারুকলা ও হস্তশিল্প ও সঙ্গীত ইত্যাদি।

b. পরীক্ষাগার হীন বিষয় -

এই অংশে অন্তর্গত ভাষাসমূহ -

• প্রাচীন ভাষা - i. সংস্কৃত,ii. পালি,iii.আরবি,iv. ফরাসি ভাষা।

• আধুনিক ভারতীয় ভাষা - i.বাংলা,ii.হিন্দি,iii. উর্দু,iv. নেপালি,v. সাঁওতালি,vi. উড়িয়া,vii. অসমীয়া ভাষা।

•আধুনিক বিদেশি ভাষা - i. ফরাসি,ii. জার্মান,iii. রাশিয়ান,iv. চৈনিক ভাষা।

    উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের দুটি ভাষা শিক্ষার কথা বলা হয়েছে,মাতৃভাষা বা আঞ্চলিক ভাষা,ইংরেজি,যে কোনো আধুনিক ভারতীয় ভাষা, যেকোনো বিদেশি ভাষা, যেকোনো প্রাচীন ভাষা - এদের মধ্যে যেকোনো দুটি। যে কোন তিনটি ঐচ্ছিক বা Eleetive বিষয় বেছে নিতে হবে,- অংক,রাশিবিজ্ঞান,অর্থনীতি,রাষ্ট্রবিজ্ঞান,ইতিহাস, দর্শন,ব্যবসায় সংগঠন,হিসাব শাস্ত্র,অর্থনৈতিক ভূগোল, শিক্ষাতত্ত্ব,সমাজবিদ্যা ইত্যাদি।

৩. অতিরিক্ত ঐচ্ছিক বিষয় -

i.বিদ্যার্থী নিজের ইচ্ছা মতন উপরোক্ত ঐচ্ছিক বিষয় গুলি থেকে যেকোন রূপে বেছে নিতে পারে।

ii. কোঠারি কমিশনের পরামর্শ মতে প্রতিটি বিষয়ের পাঠ্যসূচিকে দুটি পর্যায়ে সংগঠিত করা হয়েছে। যথা সাধারণ পর্যায় ও উন্নত পর্যায়।

৪. সহপাঠক্রমিক কার্যাবলী -

প্রতিটি বিদ্যা থেকে নিম্নরূপ যেকোনো একটি সহপাঠ্যক্রমিক কর্মের অংশ নিতে হবে।

•কর্মশিক্ষা

•শারীর শিক্ষা

•National Cadet Corps

•সমাজসেবা

অবশ্যই এই সমস্ত কার্যক্রমের জন্য বহিঃপরীক্ষার ব্যবস্থা নেই।

8. উপসংহার -

শিক্ষার লক্ষ্যে পৌঁছানোর মাধ্যম হল পাঠক্রম। পাঠক্রম হলো শিক্ষার প্রক্রিয়ার মূল প্রাণ। শিক্ষার প্রক্রিয়া কার্যকারিতা পাঠ্যক্রমের ওপর নির্ভরশীল। দেশের জাতীয় শ্রীবৃদ্ধি এবং মানব সম্পদের উন্নয়নের মুখ্য ভূমিকা পালন করে পাঠক্রম। আমাদের রাজ্যে প্রাথমিক উচ্চ প্রাথমিক মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত সমস্ত পাঠক্রম বেশ যত্ন সহকারে ও বিচক্ষণতার সঙ্গে তৈরি করা হয়েছে। তবে পাঠ্যক্রম তীর কে এমন ভাবে বিন্যস্ত করতে হবে যাতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিজ্ঞানভিত্তিক প্রবণতা তৈরি হয়। শিক্ষার্থীরা যাতে বেশি করে বিজ্ঞান শিক্ষার প্রতি আগ্রহী হয় এবং বিজ্ঞানের শক্তিকে ভর করে বিজ্ঞান ভবিষ্যতের সমাজ গঠনের ব্রতী হয় তার জন্য বিজ্ঞানের পাঠক্রম কে নমনীয় গতিশীল এবং প্রাসঙ্গিক করে গড়ে তুলতে হবে।






















Post a Comment (0)
Previous Post Next Post