SOCIAL SCIENCE AS AN AREA OF STUDY PRACTICUM

SOCIAL SCIENCE AS AN AREA OF STUDY PRACTICUM

SOCIAL SCIENCE AS AN AREA OF STUDY||অধ্যয়নের ক্ষেত্র হিসেবে সামাজিক বিজ্ঞান 

BENGALI VERSION||ENGLISH VERSION

Social science as an area of study practicum
SOCIAL SCIENCE AS AN AREA OF STUDY

**(BENGALI VERSION AND ENGLISH VERSION PDF FILE BELOW THE ARTICLE)

অধ্যয়নের ক্ষেত্র হিসেবে সামাজিক বিজ্ঞান

1. ভূমিকা -

মানব জীবনের মানুষের দুটি প্রধান সত্তা হল ব্যক্তিসত্তা এবং সামাজিক সত্তা। শিক্ষার মাধ্যমে ব্যক্তি বা শিক্ষার্থী তার এই ব্যক্তিসত্তা ও সামাজিক সত্তার বিকাশ ঘটে। শিক্ষার্থীর সামাজিক অস্তিত্ব রক্ষার জন্য যে সামাজিক সত্তা বিকাশ সংঘটিত হয় তাতে সহায়তা করে সমাজ বিজ্ঞানের অন্তর্গত বিষয়গুলি, যেমন - ইতিহাস,ভূগোল, রাষ্ট্রবিজ্ঞান,সমাজতত্ত্ব, অর্থনীতি, মনোবিজ্ঞান,নৃ-বিজ্ঞান ইত্যাদি। মানবজাতির সামগ্রিক পরিবেশ ও সাংস্কৃতিক উপলব্ধি এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের বিষয়গুলি মানব শিশুর যেহুতু বংশগত বস্তু হিসেবে পূর্বপুরুষ থেকে অর্জন করতে পারে না। তাকে তার নিজের জীবনের অস্তিত্ব প্রচেষ্টা সংস্কৃতির বিভিন্ন দিক গুলি অর্জন ও উপলব্ধি করতে হয় শিক্ষার মাধ্যমে। শিক্ষার্থী তার শিক্ষাজীবন কালে বিভিন্ন সমাজবিজ্ঞানের বিষয়গুলি মাধ্যমে তা সম্ভব করে তোলে। নতুন নতুন জ্ঞান অর্জন, দক্ষতা লাভ, দৃষ্টিভঙ্গি  গঠন, চরিত্র গঠন, নৈতিক মূল্যবোধ, সৃজনী ক্ষমতার বিকাশ, সৌন্দর্যবোধের বিকাশ, ও উপলব্ধি সবি ঘটে উপরোক্ত বিষয়গুলি চর্চার মাধ্যমে। সমাজ বিজ্ঞানের এই গুরুত্বের কথা স্বীকার করে বিষয় এবং বিষয় গুচ্ছ হিসেবে সমাজ বিজ্ঞান কে আমরা এই অধ্যায়ে আলোচনা করার চেষ্টা করব।

2. সমাজবিজ্ঞানের ধারণা -

মানুষ যাযাবর জীবন ছেড়ে সমাজবদ্ধ হয়ে নির্দিষ্ট ভূখণ্ডে বসবাস করা শুরু করেছিল নানা কারণে। বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে তার ভিন্ন ভিন্ন ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। যেমন একটি সহজ ব্যাখ্যা গোষ্ঠীবদ্ধ যাযাবর সমাজের আকার বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে শুধুমাত্র প্রাকৃতিক খাদ্য নির্ভর হয়ে জীবনযাপন হয়ে উঠেছিল। তার ফলে কৃষির সূত্রপাত এবং কৃষি প্রয়োজনে স্থিতিশীল সমাজ তৈরি হয়েছিল। আবার জৈবিক বাস্তুতান্ত্রিকদের মতে মানুষ বিক্ষোভ শাখা ছেড়ে মাটিতে বসবাস করতে শুরু করলে বিবর্তনের পরবর্তী ধাপে তাদের হাত দুটি মুক্ত হয়ে পড়ে এবং দুই পায়ের উপর ভর করে সোজা হয়ে চলাফেরা করার উপযোগী অঙ্গ সঞ্চালন গত পরিবর্তন ঘটে। এর ফলে গর্ভধারণকাল কমে যায় এবং অন্যান্য প্রাণীর তুলনায় অনেক পরিণত ও অসহায় অবস্থায় মানব শিশু জন্ম হওয়ার ফলে মেয়েরা মাতৃত্বের দায়ে এক স্থানে বসবাস করতে বাধ্য হয়। এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে নানা বিবর্তনের মধ্যে দিয়ে সমাজ ব্যবস্থার উদ্ভব হয়।

           কিন্তু যে কারণেই হোক সমাজ ব্যবস্থার উদ্ভব হলেও তা কখনোই চর্চার বিষয় হয়ে ওঠেনি। আদিম মানুষ আত্মরক্ষার প্রয়োজনে প্রকৃতির নানা বিষয় সম্বন্ধে কৌতুহলী হলেও তাদের গোষ্ঠীবদ্ধ জীবনের ক্ষেত্রে তার প্রয়োজন ছিল না। এমনকি প্রাচীন সভ্যতা গুলিতে যে রাষ্ট্র ব্যবস্থার উদ্ভব হয়েছিল, সেই রাষ্ট্র ব্যবস্থা সম্বন্ধে ও নির্দিষ্ট বিদ্যাচর্চার কোন প্রমাণ নেই। রাষ্ট্র ব্যবস্থায় রাষ্ট্রের গঠন ও নীতি সম্পর্কে প্রথম নীতিগত ও তাত্ত্বিক সিদ্ধান্তের প্রাচীন গ্রিক সভ্যতার অবদান। এথেন্স Plato র "Academy"-তে তার শ্রেষ্ঠ প্রতিভাবান শিষ্য অ্যারিস্টটলের নামই এই প্রসঙ্গে বলা যায়। সুতরাং সমাজতত্ত্ব সূচনা হবার পূর্বে এবং সমাজতত্ত্ববিদ সমাজবিজ্ঞানের কেন্দ্রীয় বিষয় হওয়ার পূর্বে সমাজবিজ্ঞান সম্পর্কে কোন সংজ্ঞা দেওয়া প্রশ্ন আসে নি। কারণ সমাজ গঠিত হলেও সমাজ যে একটি চর্চার বিষয় হতে পারে সেই ধারণা অনেক পরে আসে।

       সমাজ বিজ্ঞানের বিষয় গুলি তালিকা থেকে একটা কথা স্পষ্ট যে, সমাজবদ্ধ মানুষ সমাজের সঙ্গে তার সম্পর্কে আচরণ কুষ্টি ও সামাজিক বিকাশের নির্ণায়ক শক্তিগুলি সম্পর্কে যা কিছু মানবিক বিষয় আছে এবং তার চর্চার ফলে যে সমস্ত বিদ্যার উদ্ভব হয়েছে তাদের একত্রিত নামই সমাজবিজ্ঞান। সুতরাং সমাজবিজ্ঞানের সংজ্ঞা -

   " বিজ্ঞানের নিয়ম ও পদ্ধতি অবলম্বন করে মানুষ ও মানুষের সমাজ সম্পর্কিত যাবতীয় বিষয়ের অনুসন্ধানের  সমস্ত একত্রিত বিদ্যার নামই সমাজবিজ্ঞান। (All the the disciplines engage into the investigation of all aspects of man and human society using scientific rules and methods are unified under the name of Social Science)"

সামাজিক বিজ্ঞান মানুষ ও সমাজের সম্পর্কে চর্চাকারী বিষয়গুলির সংমিশ্রণ। সামাজিক বিজ্ঞানের মূল ভাবগুলি নিচে সংক্ষিপ্তভাবে বর্ণনা করা। -

ক। এটি মানবিক সম্পর্কের পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা করে ও অতীত এবং বর্তমানের ঘটনাকে পূর্ণ ব্যাখ্যায়িত করে।

খ। এটি মানবিক ক্রিয়া-কলাপ, সংস্কৃতি ও স্থানিক মিথস্ক্রিয়ার অনুসন্ধান করে।

গ। এটি মৌলিক সামাজিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন সম্পর্কে আলোচনা করে। 

ঘ। সামাজিক বিজ্ঞানের বিষয় গুলি ব্যক্তির রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান সম্পর্ক সঙ্গে জড়িত।

ঙ। এটি সামাজিক প্রকৃতি ও মানুষের পরস্পরের মধ্যে মিথস্ক্রিয়াকে তুলে ধরে।

3. সমাজবিজ্ঞানের উপাদান -

সমাজবিদ্যা হল অনেকগুলি বিষয়ের যৌগিক ফল। বিভিন্ন বিষয় একত্রিত হয়ে গঠিত হয়েছে সমাজবিদ্যা। সমাজকে বিভিন্ন সময়ের প্রেক্ষিতে এবং স্থানের প্রেক্ষিতে বিবেচনা করার জন্য গড়ে উঠেছে সমাজবিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখা।সমাজবিজ্ঞানের অন্তর্ভুক্ত বিষয় গুলি হল সমাজ বিজ্ঞানের উপাদান।এই উপাদান গুলি হল -

  • ইতিহাস
  • ভূগোল
  • রাষ্ট্রবিজ্ঞান
  • শিক্ষাবিজ্ঞান
  • পৌরবিজ্ঞান
  • অর্থনীতি
  • সমাজতত্ত্ব ইত্যাদি।

 মানুষের সাথে প্রাকৃতিক পরিবেশের সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করে ভূগোল।অর্থনৈতিক জীবন নিয়ে আলোচনা করে অর্থনীতি।সামাজিক মূল্যবোধ, গণতান্ত্রিক জীবনের আদর্শ রাজনীতি নিয়ে আলোচনা করে পৌরবিজ্ঞান। এই সমস্ত উপাদান নিয়ে গঠিত হয় সমাজবিদ্যা।

4. সমাজবিজ্ঞানের  উদ্দেশ্যাবলী -

1. সমাজবিজ্ঞানে সাধারণভাবে নাগরিকদের সামাজিক সচেতনতা বোধ তৈরি করাই হল এর অন্যতম উদ্দেশ্য।

2. সামাজিক বিভাজনের অবসান ঘটাতে সহায়তা করে।

3. প্রত্যেকটি কুষ্টি অপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে উঠতে সহায়তা করে।

4. ব্যক্তির নিজের ঐতিহ্য কৃষ্টি ও আত্ম পরিচিতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল সহায়তা করা। 

5. রাষ্ট্রব্যবস্থা,অর্থনীতি,সমাজব্যবস্থা,আইন,ইতিহাস এগুলিকে প্রকৃত সামাজিক অভিজ্ঞতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করে নিয়ে শিখতে পারবে। 

6. প্রান্তীয় সমাজের সমস্যা ও প্রকৃতি সম্বন্ধে অবগত হয়ে তার প্রতিকার করতে পারবে।

7.শান্তি ও মানবাধিকারের অনুকূল জীবন-যাপনে সহায়তা করা।

8. বিশ্বায়নের সুপ্রভাব কাজে লাগিয়ে কুপ্রভাব ঠেকাতে সচেষ্ট করা সমাজ বিজ্ঞানের অন্যতম উদ্দেশ্য।

9. সাংস্কৃতিক আধিপত্যবাদ সম্বন্ধে সচেতন হয়ে উঠবে, শুধু গ্রহণ নয় নিজেরটাও বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে চেষ্টা করা সমাজ বিজ্ঞানের অন্যতম উদ্দেশ্য। 

5. চর্চার ক্ষেত্র হিসাবে সমাজবিজ্ঞানের -

সমাজবিজ্ঞানের বিষয়গুলি সম্বন্ধে যে সংক্ষিপ্ত পরিচয় দেওয়া হয়েছে এবং বিষয়গত প্রকৃতি হিসেবে সমাজবিজ্ঞানের সম্পর্কিত যে আলোচনা করা হয়েছে,তা থেকে একথা স্পষ্ট যে সমাজবিজ্ঞানের ক্ষেত্র গুলি আলাদা আলাদা নামে পরিচিত হলেও একদিকে যেমন তার ব্যপ্তি বিশাল তেমনি তাদের মধ্যে অন্তর্নিহিত একটি সংহতি ও বর্তমান।

• সমাজবিজ্ঞান চর্চা - 

সমাজবিজ্ঞান চর্চার একটি প্রধান উদ্দেশ্য স্বচ্ছ ও নৈর্ব্যক্তিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সমাজ, মানুষ,রাষ্ট্রব্যবস্থা,অর্থনীতি ইত্যাদি নানা পারস্পরিক সম্পর্কিত বিষয় সম্বন্ধে জানা এবং ব্যক্তি হিসাবে সমাজের প্রতি নিজস্ব কর্তব্য পালন করা।বর্তমানকালে মানুষ সম্বন্ধে অনেক অভিযোগ করেন যে,তারা বড়ো বেশি আত্মকেন্দ্রিক হওয়ার যথেষ্ট সমাজ সচেতন নয়। সমাজ সচেতনতা নিজস্ব ক্ষত্র গণ্ডির মধ্যে আবদ্ধ থাকলে মানুষ শুধুমাত্র নিজের দিকে তাকিয়ে সমস্ত কাজ করে,বিচার করে এবং সিদ্ধান্ত নেয়।এর ফলে যে বিচ্ছিন্নতা তৈরি হয় তা সমাজের সৃষ্টির উদ্দেশ্যকেই পদে পদে ব্যর্থ করে দেয়।শিক্ষকরাও তার ব্যতিক্রম নয় তবে সম্ভবত এই ধারণা সর্বাংশে সত্য নয়।সুতরাং এই নেতিবাচক ধারণা পরিত্যাগ করে চর্চার ক্ষেত্রে হিসেবে সমাজবিজ্ঞানের বিচার করে দেখতে হবে।

• দৃষ্টিভঙ্গি সম্প্রসারণ - 

শিশু জন্ম গ্রহণ করার পর সামাজিক ও অসামাজিক কোনটাই থাকে না।তখন তাকে বলা হয় সমাজ নিরপেক্ষ।কিন্তু এই অবস্থা নিত্যন্ত স্বল্পস্থায়ী।তার কারণ জন্মের পর থেকেই পরিবারের অন্যান্য ব্যক্তির সান্নিধ্যে শিশুর প্রতি তাদের আচরণ, প্রাক্ষোভিক প্রতিক্রিয়া এই সমস্ত বিষয় এবং শিশু প্রতি যত্ন তার আরাম,নিরাপত্তা ও চাহিদার পরিতৃপ্তি সবমিলিয়ে শিশুর সামাজিক চেতনা জাগ্ৰত হতে শুরু করে।

       স্বাভাবিক নিয়মে পরিবার, বিদ্যালয়,বৃহত্তম সমাজ, দেশ,আন্তর্জাতিক ঘটনাবলি,পর্যায়ক্রমে সবকিছুই সামাজিক চেতনার সম্প্রসারণ ঘটায়।সামাজিক চেতনার পাশাপাশি ব্যক্তির বৌদ্ধিক বিকাশ ও দ্রুত গতিতে অগ্রসর হয়। বৌদ্ধিক সক্ষমতা ব্যক্তির মধ্যে যে বিচার বোধের জন্ম দেয় তার সাহায্য শুধুমাত্র চেতনার স্তরে সক্রিয়তার স্তরে ও সমাজ স্থান করে নেয়।অর্থাৎ সামাজিক আচরণ,সামাজিক আচরণের বঞ্চিত মান,ভালো-মন্দ,ন্যায় নীতি সমস্ত কিছুই আত্মস্থ হয় এবং তার ফলে প্রত্যেকটি ব্যক্তির সমাজ সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গি ক্রমশ সম্প্রসারিত হয়।

            লক্ষ করলে দেখা যায় যে,উপরোক্ত সম্প্রসারণ প্রক্রিয়ার মধ্যে সামাজিক বিজ্ঞানের নানা দিক কোনো না কোনো ভাবে ব্যক্তির ধারণার অঙ্গ হিসাবে সংঘটিত হয়ে যায়।যেমন-সামাজিক ন্যায়-নীতি,রাষ্ট্রীয় আইন ভিত্তি, সঙ্ঘবদ্ধ জীবনের জন্য ব্যক্তি,পরিবার ও সমাজ সম্পর্কিত ধারণা ইত্যাদি।

• সামাজিক বিভাজন -

মানুষের সমাজের বিভাজনের ক্ষেত্রে শেষ নেই,আদিম সমাজে গোষ্ঠীভুক্ত জীবনে এত বিভাজন ছিল না। গোষ্ঠীপতি ও অন্যরা অথবা গোষ্ঠীপতি,পঞ্চায়েত সভা বিভিন্ন সমাজ পরিচিত অন্যান্যরা একই রকম একটি সরল স্তর বিভাজন প্রচলিত ছিল অধিকাংশ ক্ষেত্রে।কিন্তু ক্রমশ জটিল সমাজ ব্যবস্থার গড়ে ওঠার পর নানা ধরনের স্তর বিভাজন সৃষ্টি হয়।ধনী-দরিদ্র,উচ্চবর্ণ-নিম্নবর্ণ,শাসক-প্রজা এবং তার মধ্যেও অসংখ্য স্তর বিভাজন প্রত্যেকটি সমাজে বর্তমান।স্তর বিভাজনের প্রকৃতি দেশ ও কাল ভেদে কিছুটা ভিন্ন হলেও স্তর বিভাজন আছেই।সামাজিক বিভাজনের একটি প্রধান কারণ ও ফল এক শ্রেণির মানুষের অন্য শ্রেণির তুলনায় শ্রেষ্ঠত্বের দাবি,যার অবশ্যই কুফল বঞ্চনা ও শোষণ। অর্থাৎ সামাজিক ন্যায়বিচার সমাজের সকলের ক্ষেত্রে সমান ভাবে কার্যকর নয়।

           ব্যক্তি মানুষ সমাজ সম্বন্ধে সচেতন হলেও অনেক সময় বিনা বিচারে সমাজে প্রচলিত বিভাজনকে স্বীকার করে নিয়ে সেটিকে স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করে অন্যরা নানা স্বার্থ আরও বিভাজন তৈরী করতে চেষ্টা করে। সমাজ বিভিন্ন পাঠের মধ্যে দিয়ে এইরকম সামাজিক বিভাজনের ঐতিহাসিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপট সম্বন্ধে জানা যায়।রাষ্ট্রব্যবস্থা ও অর্থনীতির সঙ্গে বিভাজনের সম্পর্ক নির্ণয় করা যায়।ভৌগলিক অবস্থান সহ কৃষ্টিগত সমস্যাগুলি চর্চা করা যায়। সুতরাং সমাজবিজ্ঞান আমাদের সামাজিক বিজ্ঞানের মূল্য পৌঁছাতে সাহায্য করে যা রাষ্ট্রনীতি থেকে শুরু করে দৈনন্দিন সম্পর্কের পর্যন্ত মধ্যে দিয়ে সবকিছুতে প্রভাবিত করতে পারে।

• কৃষ্টিগত পরিপ্রেক্ষিত -

সমাজ বিজ্ঞান চর্চার প্রসঙ্গটি কৃষ্টিগত পরিপ্রেক্ষিতে ও বিচার করা প্রয়োজন।বর্তমান পৃথিবীতে অধিকাংশ দেশ বা রাষ্ট্র কৃষ্টিগত বহুত্ববাদকে মেনে নিয়েছে।কারণ কোন দেশে একটি মাত্র জাতির মানুষ বসবাস করে না। আমেরিকাতেও তিনটি প্রধান কৃষ্টির মানুষ - আমেরিকান, হিসপ্যাসিক এবং এশিয়ান প্রবলভাবে উপস্থিত।তার মধ্যেও আছে নানা উপ কৃষ্টিভুক্ত নাগরিক। আমাদের দেশে প্রাচীনকাল থেকে নানা দেশের নানা জাতির মানুষ স্থায়ীভাবে বসবাস করতে শুরু করে। ভারতের আদি জনগোষ্ঠী নানা উপজাতি (আর্য-অনার্য)। এই রকম অনেক অনেক কৃষ্টি ভুক্ত মানুষ বসবাস করার ফলে প্রাচীনকাল থেকে নানা কৃষ্টি সংমিশ্রণ, কোনো কোনো কৃষ্টির বিলোপ একের প্রভাবে অন্যের রীতিনীতি প্রথার পরিবর্তন ইত্যাদি কতকিছুই প্রত্যেক মানুষ তার কৃষ্টিগত পরিচিতি সম্পর্কে বিশেষভাবে সংবেদনশীল হওয়া সত্বেও অনাকৃষ্টির প্রতি সহনশীলতার অভাব দেখা যায়।অর্থাৎ নিজের কৃষ্টির শ্রেষ্ঠ এই তার কাছে প্রধান, অন্য কৃষ্টির মূল্য গৌণ। অথবা নিজের কৃষ্টির প্রতি সংবেদনশীল হলে অন্যের প্রতি সংবেদনশীল নয়।এই জাতীয় মনোভাব আমাদের ব্যক্তিগত জীবন,সামাজিক জীবন,জাতীয় সংহতি সবকিছুর উপর প্রভাব বিস্তার করে।

           সমাজবিজ্ঞান পাঠের মধ্য দিয়ে কৃষ্টির প্রকৃতি ও বৈশিষ্ট্য,ভিন্ন ভিন্ন কৃষ্টির যা কিছু ভালো তার প্রতি শ্রদ্ধা, ঐতিহ্যের প্রতি শ্রদ্ধা এবং শিক্ষার ব্যবস্থা ইত্যাদির ক্ষেত্রে কৃষ্টির প্রভাব সম্পর্কিত যে বোধ জন্মায় তার গুরুত্ব অপরিসীম।বহুকৃষ্টি মূলক শিক্ষা ও শিহ্মন বর্তমান পৃথিবীর একটি উল্লেখযোগ্য শিক্ষাব্যবস্থা।আবার সাংস্কৃতিক ও আধিপত্যবাদ বর্তমান পৃথিবীর একটি প্রধান নিরাপদ বিপদ।

• ব্যক্তি সমাজ ও বিশ্বায়ন - 

বিষয় হিসাবে সমাজবিজ্ঞানের প্রয়োজনীয়তা বা গুরুত্বের প্রসঙ্গে বর্তমান কালে বিশ্বায়নের কথা এড়িয়ে যাওয়া কঠিন।ব্যক্তির চাহিদা,আশা-আকাঙ্ক্ষা আজ আরও শুধুমাত্র ব্যক্তিগত বৈশিষ্ট্য এবং সক্ষমতার ভিত্তিতে নির্ধারিত হয় না।উন্নত ও দ্রুত যোগাযোগ তথ্যের বিপুল সরবরাহ,পেশা ও জীবিকার মধ্যে পরিবর্তন বিশ্বায়ন অর্থনীতি,এই সবকিছুই জটিল সমাহার বর্তমান বিশ্বায়নের অবশ্যই ফল হিসাবে পরিগণিত। তবে কিছু ভালো এবং কিছু কুপ্রভাব সামগ্রিক ভাবে ব্যক্তি জীবনে যেমন পরিবর্তন নিয়ে এসেছে।তেমনি সামাজিক প্রক্রিয়া গুলির পরিবর্তন নিয়ে এসেছে,যেমন প্রযুক্তির অস্থিরতা অর্থাৎ অতি দ্রুত পরিবর্তনশীল সম্পর্কে উপর এমন ধরনের পরিবর্তন নিয়ে এসেছে,যে কিছু কিছু সামাজিক প্রতিষ্ঠান তার প্রভাব এড়াতে পারছে না কিন্তু অধিকাংশ মানুষ এই বিষয়টি সম্বন্ধে সচেতন নয়,তাতে তাদের কাছে যা তাৎক্ষণিকভাবে ঘটেছে সেটাই প্রধান।বৃহত্তর সামাজিক প্রেক্ষাপটের চিন্তা করার পরিবর্তে তাৎক্ষণিক বিচারের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ফলে দেখা দেয় দ্বন্দ্বের নিরসন করতে ব্যর্থ হয়ে পড়েছে।  

        বিশেষ দৃষ্টিকোণ থেকে সমাজ বিজ্ঞান পাঠ করা হলে এবং শিক্ষকরাও সেইভাবে পঠন-পাঠন মূল্যায়নের প্রতি দায়বদ্ধ হলে,শিক্ষা ব্যক্তি,সমাজ ও বিশ্বায়নের মধ্যে সমন্বয় সাধন করতে পারবে।আবার বিশ্বায়নের বিপদ গুলি সমন্বয় ও সচেতনা সৃষ্টি করে তার কুপ্রভাব এড়াতে পারবে।

• প্রান্তীয় মানুষ ও সমাজ -

যুগ যুগ ধরে কিছু কিছু সমাজ,গোষ্ঠী ও তাদের সদস্যরা মূল সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় ধীরে ধীরে প্রান্তবর্তী মানুষের পরিণত হয়।এবং জীবিকার জন্য কোথায় কোথায় মূল সমাজের সেবায় নিয়োজিত আবার কোথায় কোথায় সেই টুকুও নেই।শুধুমাত্র বেঁচে থাকার অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রাম। রাষ্ট্রের এদের উপেক্ষা করতে পারে না ঠিকই, কিন্তু রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় প্রকৃত প্রস্তাবে হয়ে দাঁড়ায় বেঁচে থাকার লড়াই সামান্য কিছু সামরিক সাহায্য করা। এই সাহায্যও অপ্রতুল এবং সকলের কাছে সহজলতা নয়।কখনো কখনো মধ্যবর্তীদের হাতে পীড়ন ও শোষণের শিকার হওয়ার দরুন সম্পন্ন প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত হয়।ফলে যে প্রান্তবর্তীই থেকে যায়। সাধারণভাবে প্রান্তীয় সমাজগুলি শিক্ষার ব্যাপারে কিছুটা নিষ্পত্তি হয়ে উঠতে বাধ্য হয়। তার কারণ উপার্জনের তাগিদে এবং আরও নানা নানা কারণে বিদ্যালয়ের পড়া শেষ হয় না। অন্য সমাজের মানুষের সব সময় এদের সম্বন্ধে সচেতন থাকেন না।বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা একেবারই নয়।শিহ্মক দের ক্ষেত্রেও প্রথম থেকেই দেখা যায় এদের সম্বন্ধে অবমূল্যায়নের মনোভাব নিয়ে আরও প্রান্তের দিকে ঠেলে দেন।

6. চর্চার ক্ষেত্র হিসেবে সমাজবিজ্ঞানের নির্ধারণ -

NCF (2005) এবং NCERT (2006) সামাজিক বিজ্ঞানের পাঠক্রম ও শিহ্মনের কোনো কোনো বিষয় সমাধান করা প্রয়োজন সেগুলি নির্ধারণ গুলি হল -

১. বিষয়টির উপাদান হল একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং যশপাল কমিটি ও NCFSE (2000) এর পরামর্শ এই প্রেক্ষিতে গ্রহণযোগ্য তথ্যের প্রাচুর্য অন্তর্ভুক্তি করনের পরিবর্তে সামাজিক সমস্যাগুলির ধারণাই মূল কেন্দ্র হওয়া উচিত এবং সামাজিক রাজনৈতিক বাস্তবতা বিশ্লেষণের সক্ষমতার উন্নয়নই একমাত্র লক্ষ্য হওয়া উচিত।ধীশক্তি ছাড়া স্মরণশক্তির উপর আলোকপাত করা কখনোই উচিত নয়। 

২. পাঠক্রমকে জাতি ও জাতীয় ঐক্য সম্পর্কিত সমস্যাকে প্রতিফলিত করতে হবে।একই সঙ্গে সেটিকে স্থানীয় বিষয় ও প্রেহ্মিত কেও প্রতিফলিত করতে হবে,যাতে স্থানীয় মানুষ জাতি ও জাতির উন্নয়নের নিজেদের সংযুক্ত করতে পারে।

৩. সামাজিক বিজ্ঞানের পাঠ্য পুস্তক সমূহ নির্দেশ মূলক ভাবে না হয় পরামর্শমূলক ভাবে লিখিত হতে হবে।এটি জ্ঞানের একমাত্র না হলেও অন্যতম উৎস।সামাজিক ঘটনাক্রমে অনুধাবন করতে শিক্ষার্থীরা এই ধরনের পাঠ্যক্রমের মাধ্যমে পাঠ্য পুস্তকের অতিরিক্ত পড়াশোনা করতে উৎসাহী হয়।

         আমাদের মতো বহুত্ববাদী সমাজে পাঠ্য পুস্তক সমূহ সমাজের বিভিন্ন বিভাগ থেকে বিভিন্ন বিষয়ে প্রতি ফলিত করে,যার ফলে শিক্ষার্থীরা ভারতীয় সমাজের বৃহত্তর প্রেক্ষিতে সঙ্গে পরিচিত হয়।

৪. এটি পূর্বেই উল্লিখিত হয়েছে যে সামাজিক বিজ্ঞান 'উন্নয়নমূলক' বিষয় বা সমস্যার উপরই বেশি গুরুত্ব দেয়। দাবি করা হয়েছে উপযোগীতা বাদী দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সাম্যবাদী দৃষ্টিভঙ্গিতে একটি মূল কেন্দ্র বিন্দুর স্থানান্তর প্রয়োজন।

৫. একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন হল নামকরন। ব্রিটিশ যুগে 'অনুগত্যহীনতা' হ্রাস করার উদ্দেশ্য পৌরনীতি প্রচলন শুরু হয়। রাষ্ট্রবিজ্ঞান এর নতুন নামকরণ করা হয় এবং এটি গতিশীলতার দ্বারা বৈশিষ্ট্যায়িত করা হয় এবং এই বিষয়ের অধ্যায়ন পৌর সমাজের জন্ম দেয় যা তথ্য সম্পর্কে অবগত ও দায়িত্বশীল নাগরিকদের নিয়ে গঠিত হবে।

৬. এই সকল দাবিসমূহ লিঙ্গ বৈষম্যের বিষয়টিকে  দূরীভূত করতে চায় ও পাঠ্যক্রমে সচেতনার অন্তর্ভুক্তির জন্য সুপারিশ করে। এটি শুধুমাত্র খ্যাতিসম্পন্ন কয়েকজন নারীর অবদানের উদাহরণই তুলে ধরে না, এটি সামাজিক বিজ্ঞানের শিখনের মাধ্যমে পুরুষতান্ত্রিক সমাজের পরিবর্তন সূচিত করে।

7. সমাজবিজ্ঞানের শিহ্মন - 

NCF সামাজিক বিজ্ঞানের শিহ্মন পদ্ধতি বিষয়ে অনেকগুলি প্রস্তাব পেশ করে।সৃজনশীলতা ও সমালোচক চিন্তা ধারা বিকাশের জন্য মিথস্ক্রিয়া পদ্ধতি হলো সর্বাপেক্ষা উপযুক্ত।কখনোই কেবলমাত্র তথ্য  পরিবেশনা নয়,বরং এটি বিতর্ক ও আলোচনার উপর নির্ভরশীল।শিক্ষার্থীর নিজস্ব অভিজ্ঞতার মাধ্যমেই এই ধারনা সম্পূর্ণভাবে পরিশীলিত হয়।প্রকল্প ব্যবহার সামাজিক বিজ্ঞানের কার্যকারী মাধ্যম হলেও NCF বাজার চলতি নিমির্ত প্রকল্প গুলির ব্যবহারকে স্বীকৃতি দেয় না। 

        কর্ম নিযুক্ত ও প্রাক্-কর্ম নিযুক্ত শিক্ষার্থীর প্রশিক্ষণ সামাজিক বিজ্ঞানে কার্যকারী শিক্ষার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ।NCF শিক্ষকের প্রশিক্ষণের অভাবকে স্বীকার করে। কেবলমাত্র কার্যকারী শিহ্মণই আত্মমর্যাদা বৃদ্ধি, পাঠক্রমের বোঝা দূরীকরণ।সমালোচনা মূলক দৃষ্টিভঙ্গির বিকাশে ও মুখস্তবিদ্যার পরিবর্তে ধারণা আয়ত্তকরণে সাহায্য করে।

        এটিকে কেবল মাত্র একটি জীবিকা হিসাবে ভাবলে ভুল হবে।বরং একটি বিশ্লেষণমূলক ও সৃজনমূলক মানসিকতা বিকল্প বিকাশের ক্ষেত্রে এটি মাইল ফলক। এটি অনুমান করা হয়েছিল যে প্রাকৃতিক ও ভৌত পরিপ্রেক্ষিতে 'বৈজ্ঞানিক' অনুসন্ধানের পথে পরিচালনা করে তাদের বৈজ্ঞানিক বৈজ্ঞানিক প্রকৃতি জন্য এবং মানবিক বিজ্ঞান তা করতে ব্যর্থ।কিন্তু পরবর্তীকালে বোঝা যাচ্ছে যে সামাজিক বিজ্ঞান প্রাকৃতিক ও ভৌত বিজ্ঞানের বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের পথে চালিত করে।

      সামাজিক বিজ্ঞান এক ধরনের আদর্শবাদী দায়িত্ব বহন করে,যেমন মানবিক মূল্যবোধ,স্বাধীনতা,বিশ্বাস, পারস্পরিক শ্রদ্ধা,ঐক্যের প্রতি শ্রদ্ধা ইত্যাদিকে।এর ফলে সামাজিক বিজ্ঞান শিহ্মন মূলত শিশুর নৈতিক ও মানসিক চেতনা বৃদ্ধি করার লক্ষ্য স্থির যাতে যে নিজের ব্যক্তিত্বকে বিনা স্বাধীনভাবে চিন্তা করতে ও অশুভ শক্তি অর্থাৎ যে শক্তিগুলি এই মূল্যবোধকে ক্ষতিগ্রস্ত করে তাকে দূরীভূত করতে সক্ষম হয়ে ওঠে।সামাজিক বিজ্ঞান শিখন এই বিষয়টি অর্জন করতে পারে শিক্ষার্থীদের সামাজিক বিষয়সমূহকে প্রতিফলনের উদ্যোগ গ্রহণের সক্ষমতা দূরীকরণের মাধ্যমে যা মূলত ব্যক্তিগত সুখ ও সার্বজনীন সুখের মধ্যে সৃজনশীল অস্তিত্বের উপর নির্ভরশীল। সমালোচক বৃন্দ প্রাক্ - অনুমান করেন একটি সর্বাঙ্গনী পাঠ্যক্রম কে যেখানে শিক্ষার্থী হিসেবে শিহ্মক ও শিশু উভয়েই জ্ঞান পরিচালনে অংশগ্রহণ করবে।এটি কেবলমাত্র অ-দমনমূলক ও অংশগ্রহণমূলক প্রন্থাতেই সম্ভব যেখানে শিশু ও শিক্ষক উভয়েই শিখন ও শিক্ষণ প্রক্রিয়াকে উৎসাহ ও আনন্দদায়ক করে তুলতে পারে।

        NCF (2005) এই স্কুল শিক্ষার নানা স্তরে সামাজিক বিজ্ঞানের পাঠক্রম বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে।প্রাথমিক পর্যায়ে সাধারণ বিজ্ঞান ও সমাজবিজ্ঞান,পরিবেশ বিজ্ঞান হিসেবে একত্রিত হয়। শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন প্রাকৃতিক বিষয়বস্তু ও সামাজিক সমস্যা গুলি পর্যবেক্ষণ ও চিহ্নিতকরণ করতে উৎসাহিত হয়। তারা সামাজিক বিভেদ,বিচ্ছিন্নতা ও লিঙ্গ বৈষম্য এই বিষয়গুলির প্রতি সংবেদনশীল।সামাজিক বিজ্ঞানের শিক্ষা তাদের সামাজিক ও প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের সম্পর্কে অনুধাবন করতে সাহায্য করে।উচ্চ প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা তাদের অঞ্চল ও দেশ সম্পর্কে শিক্ষাপ্রাপ্ত হয় এবং দারিদ্র্য অশিক্ষা শিশুশ্রম স্থানীয় ও রাজ্য সরকারের কার্যক্রম ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে জানতে শুরু করে।

মাধ্যমিক পর্যায়ের এই সমস্ত সমস্যা সম্পর্কে শিক্ষার্থীরা বিশ্লেষণ ও সমালোচনা মূলক দৃষ্টিভঙ্গি গঠন করতে শেখে। তাদের পাঠ্যক্রমে সমসাময়িক বিষয় হিসেবে সামাজিক ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ গুলিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ভূগোল বিষয়ের ক্ষেত্রে সম্পদ, উন্নয়ন ও সংরক্ষণ সম্পর্কে আলোচনা করা হয়। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের যে সমস্ত মূল্যবোধ সংবিধানে প্রতিফলিত হয় যেমন সাম্য, স্বাধীনতা, ন্যায় বিচার, ভ্রাতৃত্ববোধ, বহুত্ববাদ ও শোষণ থেকে মুক্তি ইত্যাদির উপর আলোকপাত করা হয়। এই পর্যায়ে অর্থনীতি অন্তর্ভুক্ত হয় এবং এক্ষেত্রে পরিসংখ্যানের উপর গুরুত্ব না দিয়ে জনগণের পরিপ্রেক্ষিতে অর্থনীতিকে মূল গুরুত্ব দেয়া হয়। শিক্ষার্থীরা অর্থনীতি প্রতিষ্ঠান কার্যাবলী সম্পর্কে জ্ঞান লাভও করে এই পর্যায়ে। মাধ্যমিক পর্যায়ে সামাজিক বিজ্ঞানের অসংখ্য বিষয়ের মধ্যে শিক্ষার্থীরা বিষয় পছন্দ করার সুযোগ পায়। এখান থেকে অধ্যায়ন মূলক বিশেষীকরণ শুরু হয়।

     সামাজিক বিজ্ঞানের শিহ্মন পদ্ধতির ক্ষেত্রে NCF কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব দেয়। সৃজনশীলতা ও সমালোচনামূলক দৃষ্টিভঙ্গি গঠনে আলাপচারিতা পদ্ধতি হলো সর্বাপেক্ষা উৎকৃষ্ট পদ্ধতি। এখানে শিক্ষা দানের মাধ্যমে নয়, মূলত বিতর্ক ও আলোচনা মধ্যে জ্ঞান অর্জন হল কেন্দ্রবিন্দু। ব্যক্তি ও সমাজের চাক্ষুষ অভিজ্ঞতার মাধ্যমে ধারণা স্পষ্ট হওয়া প্রয়োজন। যদিও সামাজিক বিজ্ঞান শিক্ষার প্রকল্প একটি সক্রিয় কার্যক্রম, কিন্তু NCF এর বিরোধিতা করেছে এই কারণেই যে বাজার চলতি বহু উপকরণ প্রকল্পের জন্য পাওয়া যায় ব্যবহার শিহ্মন ও জ্ঞানের উপযোগী নয়।

         সামাজিক বিজ্ঞানের কার্যকারী শিক্ষাদানে জন্য শিক্ষকদের শিহ্মন ও প্রাক্-শিহ্মন শিক্ষণ অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।NCF ইতি মেনে নিয়েছেন যে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ এই বিষয়ে অপর্যাপ্ত গুরুত্ব দেওয়া হয়। শুধুমাত্র কার্যকারী শিক্ষাই সমালোচনামূলক চিন্তা ধারা ও উন্নয়নের উপর আলোকপাত করে।

8. উপসংহার -

পরিশেষে বলা যেতে পারে যে, সমাজ বিজ্ঞান সমাজবিদ্যা একত্রিত যৌগিক ফল।বিভিন্ন বিষয় সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে সমাজবিজ্ঞানের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। মানুষ প্রকৃতি-পরিবেশ এবং অঞ্চল,কাল নিরিখে সমাজবিজ্ঞানকে গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে।আধুনিক যুগ সূচনা থেকে সামাজিক বিজ্ঞানকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্ব প্রদান করে এবং সেই সম্পর্কে বিভিন্ন তত্ত্ব,আলোচনা, বিতর্ক করা হয়েছে। তবে বিজ্ঞানের সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যায় যে চাকরির বাজারে সামাজিক বিজ্ঞান পঠন-পাঠনের মূল্যবোধ অনেকটাই কম।প্রতিভাবান শিক্ষার্থীরা গ্রহন যোগ্যতা অনুযায়ী এটিকে প্রয়োজনীয়তা হল সামাজিক বিজ্ঞান ও বিজ্ঞানের মত অনুসন্ধান নির্ভর এদের পদ্ধতিতে।কেবলমাত্র কিছু ভিন্নতা আছে চাকরির ক্ষেত্রে শ্রম বিবর্তিত পরিষেবা ক্ষেত্রে।যদিও বর্তমানে সামাজিক বিজ্ঞানের যথাযথ বৃদ্ধি পড়েছে কিন্তু এর পরিবর্তে বৃষ্টির সম্ভাবনা সম্পর্কের জগতে কে সচেতন করা অনেক বেশি প্রয়োজনীয়,কারণ এর মাধ্যমে সমালোচনা মূলক বিশ্লেষণ ঘটতে পারে।

CLICK HERE TO DOWNLOAD -

         BENGALI VERSION PDF LINK 

         ENGLISH VERSION PDF LINK











-


Post a Comment (0)
Previous Post Next Post