Identification of Core, Hidden,Null And Latent Curriculum In Textbooks||পাঠ্যপুস্তকে কেন্দ্রীয় বা মুখ্য, লুক্কায়িত বা গুপ্ত, নেতিবাচক বা বাতিল পাঠক্রমের চিহ্নিতকরণ
Identification Of Core,Hidden,Null And Latent Curriculum In Textbooks
BENGALI VERSION -
পাঠ্যপুস্তকে কেন্দ্রীয় বা মুখ্য, লুক্কায়িত বা গুপ্ত, নেতিবাচক বা বাতিল পাঠক্রমের চিহ্নিতকরণ
1. ভূমিকা -
শিক্ষক একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল পাঠক্রম। শিক্ষার্থীদের আচরণের ধারাকে কাঙ্খিত পথে পরিচালনা করার জন্য, তার সামগ্রিক বিকাশের ধারা কে এগিয়ে নিয়ে যেতে প্রয়োজনীয় অংশ হল পাঠক্রম। সেদিক থেকে বলা যায় পাঠক্রম হল শিক্ষার্থীর লক্ষ্যকে বাস্তবায়িত করার জন্য একটি উপায়।
আধুনিক ধারণার পাঠ্যক্রম কতগুলি গতানুগতিক বিষয় নয়, এর পরিধি ও কার্যকারিতা ব্যাপক। পাঠক্রমে কখনোই কেবল বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে বাইরে তা বিস্তৃত থাকে। বিদ্যার্থীর দল, শ্রেণিকক্ষে,পরীক্ষাগারে,খেলার মাঠে এবং শিক্ষকদের সঙ্গে সাধারণ মেলামেশা মধ্যে দিয়ে যেসব অভিজ্ঞতা অর্জন করে,তারই সমন্বয় হল পাঠক্রম।মাধ্যমিক শিক্ষা কমিশনের প্রতিবেদনে(1952 - 1953) পাঠ্যক্রম সম্পর্কে এই রকম ধারণাই দেওয়া হয়েছে। বৃহত্তম অর্থে পাঠক্রম শিক্ষার লক্ষ্য ও লক্ষ্য সাধনের উপায় - উভয়কে অন্তর্ভুক্ত করে।
2. পাঠক্রমের ধারণা -
শিক্ষার একটি অপরিহার্য উপাদান হল পাঠক্রম।লাতিন 'Currere' শব্দটি থেকে ইংরেজি 'Curriculum' শব্দের উৎপত্তি হয়েছে।লাতিন 'Currere' শব্দের অর্থ দৌড়। নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য দৌড়ের যে পথ তাই পাঠক্রম বা Curriculum. অর্থাৎ পাঠক্রমের বুৎপত্তিগত অর্থ হল বিশেষ লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য দৌড়ের পথ।
বিভিন্ন শিক্ষাবিদ্ পাঠক্রমের সংজ্ঞায় বিভিন্নভাবে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। এখানে কয়েকটি সংজ্ঞা দেওয়া হল -
পেইনি এর মতে - " শিক্ষার্থী ব্যক্তিত্বের বিকাশ ও আচরণের পরিবর্তন ঘটানোর জন্য শিক্ষাপতিষ্ঠানে যে সমস্ত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয় এবং সচেতন ভাবে পরিকল্পনা করা হয় তাদের সামগ্রিক যোগফল হল পাঠক্রম।"
ফ্রয়েবেলে মতে - " পাঠক্রম হলো মানবজাতির সামগ্রিক জ্ঞানের ক্ষুদ্র সংস্করণ।"
কিলপ্যাট্রিক এর মতে -" পাঠক্রম হলো এমন একটি উপাদান যার মধ্যে দিয়ে বাস্তব জীবনের প্রতিফলন ঘটে।"
মুদালিয়ার কমিশনের মতে -" পাঠক্রম বলতে শুধু বিদ্যালয়ের যে সমস্ত গতানুগতিক পাঠ্য বিষয় গুলি পরীক্ষাগারে, কর্মশালায়, বিতর্ক সভায়, খেলার মাঠে এবং শিক্ষক-শিক্ষিকার সংস্পর্শে ও পারস্পরিক ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়া মধ্যমে যে সমস্ত অভিজ্ঞতা অর্জন করে, তার সমষ্টি হল পাঠক্রম।"
3. পাঠক্রমের বৈশিষ্ট্য -
পাঠক্রমের বৈশিষ্ট্য গুলি হল -
- পাঠক্রম হল একটি প্রক্রিয়া মূলক।
- পাঠক্রম হল একটি পরিকল্পনা মূলক।
- পাঠক্রম হল গতিশীল মূলক।
- আদর্শ পাঠক্রম হল তত্ত্ব ও প্রয়োগের সমন্বয়ে গঠন।
- পাঠক্রম হবে সুবোধ্য ও বাস্তবোচিত।
- পাঠক্রম হবে শিক্ষার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ভিত্তিক মূলক।
- পাঠক্রম হল অংশগ্রহণকারী প্রক্রিয়া।
4. পাঠক্রমের শ্রেণীবিভাগ -
বিধিবদ্ধ বা অবিধিবদ্ধ যে কোনো শিক্ষা কার্যক্রমেরই একটি নিজস্ব লক্ষ্য থাকবে। পরিবর্তনশীল সমাজ ব্যবস্থা ও জীবন আদর্শের পেক্ষাপটে এই শিক্ষা কার্যক্রমে লক্ষ ও বিষয়বস্তু নানান বিবর্তন ঘটেছে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে ও চাহিদা অনুযায়ী গড়ে উঠেছে বিভিন্ন রকমের পাঠ্যক্রম।
শিক্ষার বিভিন্ন স্তর,বিভিন্ন উদ্দেশ্য,বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ এবং সংস্কৃতির বিভিন্নতা অনুযায়ী পাঠ্যক্রমের শ্রেণীকরণ করা হয়েছে। প্রধান প্রধান শ্রেণীকরণ সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো। -
- কেন্দ্রীয় বা মুখ্য পাঠক্রম (Core Curriculum)
- অব্যক্ত লুক্কায়িত পাঠক্রম(Hidden curriculum)
- লিখিত বা অভিব্যক্ত পাঠক্রম(Written curriculum)
- নেতিবাচক বা বাতিল পাঠক্রম(Null curriculum)
- ব্যবহৃত পাঠক্রম(Curriculum in use)
- গ্রহণযোগ্য পাঠক্রম(Received curriculum)
- অন্তর্মুখী পাঠক্রম(Internal curriculum)
- ইলেকট্রনিক পাঠক্রম(Electronic curriculum)
নিম্নে কেন্দ্রীয় পাঠক্রম,লুক্কায়িত বা সুপ্ত পাঠক্রম, নেতিবাচক বা বাতিল পাঠক্রম সম্পর্কে বর্ণনা করা হলো।
5. কেন্দ্রীয় বা মুখ্য পাঠক্রম -
5.1. ধারণা -
কেন্দ্রীয় পাঠক্রম হল কতকগুলি নির্বাচিত অভিজ্ঞতার সমন্বয়,যার মাধ্যমে বিদ্যার্থী জ্ঞানের বিস্তৃতি ক্ষেত্রগুলি সম্পর্কে প্রাথমিক ধারন গঠন করতে পারে। মানুষের সাধারণ ধর্মী চাহিদা পরিপূরণের রচিত যে পাঠ্যক্রম বিদ্যার্থী অনুশীলন করা একান্ত আবশ্যক, তাকে কেন্দ্রীয় বা মুখ্য পাঠক্রম বলে।
আসলে বিদ্যার্থী মধ্যে বহুমুখী অনু রাগের সঞ্চয় করাই হল কেন্দ্রীয় পাঠক্রমের অন্যতম উদ্দেশ্য।বিশেষ ধর্মীয় জ্ঞান পরিবেশন নয়, শিক্ষার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের বিদ্যার্থীদের সাধারণ কিছু অপরিহার্য জ্ঞান কে মুখ্য কেন্দ্রীয় পাঠ্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
অর্থাৎ সাধারণত একটি বিদ্যালয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পঠন-পাঠন ক্ষেত্রে যে ধরনের পাঠক্রম ব্যবহৃত হয় তাই হলো কেন্দ্রীয় পাঠক্রম।
5.2. বৈশিষ্ট্য -
- শিক্ষার্থীদের বৌদ্ধিক ক্ষমতা,যেমন - পঠন, লিখন, কথন, শ্রবণ,জটিল চিন্তা-ভাবনা এবং কম্পিউটার সাক্ষরতা পরিমাপের ক্ষেত্রে এই কেন্দ্রীয় পাঠ্যক্রম খুবই উপযোগী। সাধারণত পরীক্ষার্থীরা বিদ্যালয় আসে এই সমস্ত দক্ষতা বা সামর্থ্য অর্জন ও অনুশীলনের জন্য। পরবর্তীকালে এই দক্ষতায় শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ জীবনে বিভিন্ন পেশায় নিযুক্ত হতে পারে নির্বাচন করতে সাহায্য করে থাকে।
- বিদ্যালয় স্তরে প্রথম সামর্থ্য বলতে বোঝায় শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন পঠনীয় বিষয় বিশ্লেষণ বা মন্তব্য করনের দক্ষতা। ইতি আদর্শ কেন্দ্রীয় পাঠক্রম শিক্ষার্থীদের সামনে বিষয়গুলিকে সাধারণ ও বিশেষ পদ্ধতির মাধ্যমে বিশ্লেষণের সুযোগ এনে দেয়।
- কেন্দ্রীয় পাঠক্রম শিক্ষার্থীদের যথাযথ শব্দের ব্যবহার,বাক্যের গঠন,ব্যাকরণের সঠিক প্রয়োগ সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের সঠিক ধারণা দিয়ে থাকে,যা শিক্ষার্থীদের শিখন দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে থাকে।
- কথন দক্ষতা ব্যক্তিদের সঠিক ভাবে যোগাযোগ করার ক্ষেত্রে সহায়তা করে।এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা অভিজ্ঞতার সঙ্গে ভাষাকে যথেষ্টভাবে ব্যবহার করে থাকে।
- কোনো বক্তব্যকে বিশ্লেষণ করার জন্য পরিমাণ গত ও গুনগত উভয় ধরনের দক্ষতার প্রয়োজন। এমনই একটি দক্ষতা হল সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা।কেন্দ্রীয় পাঠক্রম শিক্ষার্থীদের জটিল চিন্তাভাবনা বিকাশে সহায়তা করে।
- শিক্ষার্থীদের চিন্তাভাবনার উন্মেষ ঘটায়।
- নৈতিক আচরণ ও মূল্যবোধের বিকাশ ঘটায়।
- শিক্ষার্থীদের মধ্যে সৌন্দর্যবোধ জাগিয়ে তোলে।
5.3. উদ্দেশ্য -
- সাধারণ শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীদের লিখনের উদ্দেশ্যে এই পাঠক্রমে ব্যবহৃত হয় অর্থাৎ এই পাঠক্রমের সকলের উদ্দেশ্যে প্রযোজ্য।
- গতানুগতিক পাঠক্রমের উদ্দেশ্যহীনতা ও অমনোবৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি বিষয়ের এই সমস্ত ত্রুটিগুলি প্রতিবাদ হিসেবে কেন্দ্রীয় পাঠক্রমের উৎপত্তি।
- শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয় স্তরে সাধারণধর্মী জ্ঞান প্রদানের জন্য এবং বিষয়বস্তুকে মনোবৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে পরিবেশন করা হয় কেন্দ্রীয় পাঠক্রমের মাধ্যমে।
- শিক্ষার্থীদের মধ্যে আদর্শ অভ্যাস,কর্মদক্ষতা জীবনদর্শন গঠনে সহায়তা করে।
- শিক্ষার বিভিন্ন স্তরে শিক্ষার্থীর চাহিদা অনুযায়ী পরিবেশন করা হয়ে।
5.4. উপযোগিতা -
- এই পাঠক্রমের শিশু সামাজিক জীবনের মৌলিক জ্ঞানগুলি অর্জন করে।
- এই পাঠক্রম শিশুদের উচ্চশিক্ষার সহায়ক।
- শিক্ষার্থীদের মধ্যে বহুমুখী অনুরাগের সঞ্চায় করে এই পাঠক্রমে মাধ্যমে।
- এই পাঠক্রমের অনুবন্ধ নীতির ব্যবহার করা যায়।
- এই পাঠক্রম হল সাধারণধর্মী অর্থাৎ সকলের কাজ গ্রহণীয়।
5.5. নির্দেশিকা -
- বিজ্ঞান,গণিত,সমাজবিদ্যা ও ভাষা শিক্ষার পাঠক্রম থেকে কোনো একটি নির্বাচিত বিশেষ শ্রেণীর জন্য মুখ্য ধারণাগুলি চিহ্নিত করা।
- কেন্দ্রীয় ধারণার সম্প্রসারনের জন্য এবং বিদ্যার্থীর কাছে স্বাভাবিক কৌতূহল উদ্দীপক প্রশ্নগুলি করুন।যত বেশি ও বৈচিত্র্যপূর্ণ প্রশ্ন হবে ততই ধারনাটি নানা দিক উন্মোচিত হবে।
- প্রশ্নগুলি এমনভাবে হবে যেন তা অনুসন্ধান যোগ্য এবং মুখ্য ধারণার সঙ্গে যুক্ত অভিজ্ঞতা নানাদিক উন্মুক্ত করতে পারে।
- সম্ভাব্য সক্রিয়তাগুলি কী কী শিক্ষার্থীর সামাজিক পটভূমি অনুযায়ী তা চিহ্নিত করতে চেষ্টা করুন।
5.6. সীমাবদ্ধতা -
- এই পাঠক্রম কোনো বিশেষধর্মী জ্ঞান পরিবেশন করে না।
- এক্ষেত্রে বিষয়কেন্দ্রিক জ্ঞানের সীমা শিক্ষক বা কোনো বিশেষজ্ঞ নির্ধারণ করে থাকেন।
- এই পাঠক্রমের প্রবেশের পূর্বে শিক্ষার্থীর পূর্ব জ্ঞান থাকা বাঞ্ছনীয়।
- এই পাঠক্রমের দ্বারা শিক্ষার্থীর ব্যক্তিগত চাহিদা পূরণ হয় না।
- এই পাঠক্রমে সমাজ সামাজিক চাহিদা ছাড়া অন্যান্য চাহিদাকে গুরুত্ব দেওয়া হয় না।
5.7.উদাহরণ -
এই ধরনের পাঠক্রমে উদাহরণ হল ভাষা,গণিত বিজ্ঞান,সমাজবিদ্যা ইত্যাদি।তবে কেন্দ্রীয় পাঠক্রমের উদাহরণ হল যে কোনো শ্রেণীর কোনো নির্দিষ্ট বিষয় সম্পর্কিত কোনো পাঠ্য পুস্তক।যেমন - সপ্তম শ্রেণীর গণিত বই।
- এই পাঠক্রমটি কোনো একটি নির্দিষ্ট বোর্ডের(WBBSE,CBSE) নির্দিষ্ট শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
- এটি সাধারণ উদ্দেশ্য সংবলিত।
- বিদ্যালয়ের মাধ্যমে সুনির্দিষ্টভাবে পরিচালিত হয়।
- সমন্বয় মূলক।
- শিক্ষার্থীদের চাহিদা অনুযায়ী এই পাঠক্রম গঠিত হয়।
- অভিজ্ঞতা ভিত্তিক এবং শিক্ষার্থী চাহিদা ভিত্তিক।
6. লুক্কায়িত বা গুপ্ত পাঠক্রম -
6.1. ধারণা -
লুক্কায়িত পাঠক্রম বলতে এমন পাঠক্রম কে বোঝানো যা যা অপ্রথাগতভাবে বিদ্যালয়ের কর্ম পরিধির মধ্যে শিক্ষার্থীদের শিখে থাকে।এর অন্তর্ভুক্ত হলো আচার-ব্যবহার,প্রবণতা,মনোভাব,চিন্তাভাবনা ইত্যাদি যা শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয় থাকার সময় আয়ত্ত করে থাকে। প্রথাগত পাঠক্রমের সঙ্গে এটি যুক্ত থাকে।এই লুক্কায়িত পাঠ্যক্রমের সূচনা হয় শিশুশিক্ষার প্রথম স্তর থেকেই। শিক্ষার্থীরা তাদের সহপাঠী এবং পরিবেশ থেকে ধারণা, অভিজ্ঞতা অর্জন করে থাকে।যেমন - বিদ্যালয় কি ধরনের আচরণ করা উচিত।এছাড়াও তারা শিখে থাকে যে তাদের নিকট থেকে কী চাওয়া হচ্ছে।যেমন - পারদর্শিতার অভীক্ষা প্রাপ্ত স্কোরের মাধ্যমে অভিজ্ঞতা অর্জন।
Hidden Curriculum শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেন P.W.Jackson (1940) তাঁর লিখিত গ্রন্থ Life In Classroom - এ। Hidden Curriculum এই শব্দটি ব্যবহার করার পূর্বে বিভিন্ন অভিজ্ঞ সমাজতান্ত্রিক মনোবৈজ্ঞানিক শিক্ষা পরিকল্পনাকারীরা তাঁদের ধারণাকে ব্যক্ত করেছিলেন।এই সম্পর্কিত বিভিন্ন গবেষণায় এই শব্দটির বিকাশ সাধনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।এদিক থেকে বিভিন্ন ব্যক্তি Hidden Curriculum সম্পর্কে তাদের মতামত দিয়েছিলেন-
Bloom (1981)-এর মতে, লুক্কায়িত পাঠক্রম লিখিত ও অলিখিত পাঠক্রমের সঙ্গে যুক্ত। তাঁর মতে পাঠ্যক্রম এমন একটি প্রক্রিয়া এবং ফলাফল যা দৃশ্য যুক্ত, লুক্কায়িত ও কার্যকরী এবং আচরণ যুক্ত হয়ে থাকে।
Portelli(1993)তাঁর লিখিত Article The Logic Of Hidden Curriculum -এ বলেছেন যে Hidden শব্দটির বিভিন্ন অর্থ বহন করে।যেমন -
১.এটি লুকানো অবস্থায় বিভিন্ন শিক্ষামূলক কাজে সক্রিয় থাকে।
২.পরিষ্কার করে উল্লিখিত নয় কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ অর্থ বহন করে থাকে।
Eisner (1994)-এর মতে লুক্কায়িত পাঠক্রম হল একটি শিক্ষণীয় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে অবস্থা বিষয় সম্পর্কিত এবং কৃষ্টি ও পরিবেশ সংক্রান্ত কিছু তথ্য দিয়ে থাকে।
Ausbrooks (2000) -এর মতে, লুক্কায়িত পাঠ্যক্রম হল সেই জ্ঞান যা শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয় থাকাকালীন বিভিন্ন সম্পাদনের মাধ্যমে আয়ত্ত করে থাকে।
6.2. বৈশিষ্ট্য -
- এই পাঠক্রমে সবটাই অলিখিত।কিন্তু বিদ্যালয় পাঠ পরিক্রমার সেই শিক্ষার উপযোগী উপাদান গুলি বিদ্যার্থীর মধ্যে সহজেই সঞ্চারিত হয়।
- বিদ্যার্থীরা এর উপকরণগুলি সম্পর্কে অবহিত না থাকলেও শিক্ষক বা বিদ্যালয় লুক্কায়িত পাঠক্রমের উপাদানগুলি সম্পর্কে অবগত থাকে।
- বিদ্যালয়ের দৈনন্দিন কার্যক্রমের মাধ্যমে এই পাঠক্রমের উপকরণগুলি অনুসূত হয়ে থাকে।
- শিক্ষক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দৃষ্টিভঙ্গি ও পরিচালনার মধ্যে দিয়ে শিখন মূলক পরিস্থিতিতে এই ধরনের পাঠক্রমের প্রকৃতি ও সংগঠনের পরিস্ফুটন ঘটে।
- লিখিত পাঠক্রমের উপজাত ফল হল অলিখিত পাঠক্রমের উপাদান।সবশেষে অলিখিত পাঠ্যক্রম সচেতনভাবে অনুষ্ঠিত হয় না।
উদ্দেশ্য -
- শিক্ষার্থীর মধ্যে মূল্যবোধ গঠন করা।
- শিক্ষার্থীর মধ্যে নৈতিক শিক্ষার বৃদ্ধিকরণের সহায়তা করা।যেমন - বয়স্কদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, মনোভাব প্রদর্শন,সততা,ন্যায় সংগত ইত্যাদি।
- সামাজিক গুনাবলির বিকাশে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
- শিক্ষার্থীদের মধ্যে কৃষ্টি মূলক বিকাশে, দেশাত্মবোধক গঠন, নান্দনিক দিকের বিকাশ সাহায্য করে।
6.4. উপযোগিতা -
বিদ্যার্থীর পুর্ন প্রকাশের যেমন লিখিত পাঠ্যক্রম অপরিহার্য তেমনি একে সম্পূর্ণতা দানের জন্য অলিখিত বা অব্যক্ত পাঠ্যক্রমের ভূমিকা ও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়।এর উপযোগিতা গুলি হল -- ক্লাসরুমের ভেতরে বা বাইরে অলিখিত পাঠ্যক্রম শিক্ষার্থীদের সর্বাঙ্গীণ বিকাশে সহায়তা করে। শিক্ষকের আদর্শ আচরণ বিদ্যার্থীর আচরণকে অনুপ্রাণিত করে থাকে।ফলে তাদের সু-চরিত্র গঠনের পথ প্রশস্ত হয়।
- শিক্ষকের ব্যক্তিত্ব বিদ্যার্থীর মূল্যবোধ গঠনের বিশেষ ভাবে সাহায্যে করে। বিদ্যালয়ের পরিবেশ এবং শিক্ষকের আনন্দ দায়ক ব্যক্তিত্ব বিদ্যার্থীর মূল্যবোধ বিকাশে কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে পারে।লিখিত পাঠক্রমে বিদ্যালয় পরিবেশ বা শিক্ষকের ব্যক্তিত্ব কীরূপ হবে,তার উল্লেখ থাকে না।এগুলি অলিখিত পাঠক্রমের উপকরণ।তাই মূল্যবোধের উন্নয়নের অলিখিত পাঠক্রমের অতিগুরুত্বপূর্ণ।
- অলিখিত পাঠক্রমের মাধ্যমে বিদ্যার্থীদের নৈতিক শিক্ষা দেওয়া সম্ভব। বিদ্যালয়ে নৈতিকতার প্রশ্নে যে দিকগুলি জড়িয়ে আছে,তা হল বয়স্কদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল মনোভাব প্রদর্শন,সত্য,সংযত,শিষ্ট ও ন্যায়সংগত আচরণের অভ্যাস গঠন, বিদ্যালয়ের নিয়ম শৃঙ্খলা মেনে চলা,চৌর্যবৃত্তি থেকে বিরত থাকা,চিন্তায় বাক্যে ও কর্মে হিতকর প্রিয় কথন ইত্যাদি।নৈতিকতার এই দিকগুলি অবশ্যই অলিখিত বা লুক্কায়িত পাঠক্রমের উপাদান। বিদ্যার্থীর কিছু নীতিকথা শেখে যা নৈতিক নিয়ম গঠন করে।নানা গুণাবলী ও বিভিন্ন আচরণ আয়ত্ত করে না।এসবই পাঠক্রমের অব্যক্ত রূপ।
- সামাজিক গুণাবলীর বিকাশে অলিখিত পাঠক্রমের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। Cornbleth এর মতে,- Curriculum is Contextually Shaped. তিনি বিদ্যালয়ের সামাজিক সম্পর্কে উপর বিশেষ জোর দিয়েছেন -The Nature Of Teacher Student Relationship The Organization Of Classes, Streaming And Soon. Philip.W.Jackson -এর কথায়,এই উপাদানগুলিকে Hidden Curriculum নামে অভিহিত করা হয়।
6.5. নির্দেশিকা -
- পাঠক্রমের কোনো একটি বা একাধিক ধারণাকে বেছে নিয়ে তার অন্তর্গত উপধারাগুলি প্রথমে চিহ্নিত করতে হবে।
- ধারণা গুলির সঙ্গে সম্ভাব্য সক্রিয়তা ও অভিজ্ঞতা গুলি চিহ্নিত করতে হবে।
- প্রতিটি ক্ষেত্রে সম্ভাব্য অনুভূমিক ও উল্লম্ব সম্প্রসারণ কী কী হতে পারে তা লিখতে হবে।
- সম্প্রসারণ যেন সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীদের শ্রেনী,বয়স, সামাজিক ও অর্থনৈতিক পটভূমির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়।অর্থাৎ গ্রাম-শহর,জাতি- উপজাতি,ছেলে-মেয়ে,সম্পন্ন-সাধারণ ইত্যাদি কথা মনে না রাখলে সম্ভাব্য কোন কোন অভিজ্ঞতা শিক্ষার্থীরা অনায়াসে লাভ করতে পারে তা চিহ্নিত করা কঠিন।
6.6. সীমাবদ্ধতা -
- পাঠক্রমের অভিজ্ঞতা সমুহ অলিখিত বলে বিদ্যার্থীদের প্রতি তেমন আগ্রহ দেখায় না।
- অলিখিত পাঠক্রম সম্পর্কে বিদ্যার্থীদের কোনো স্পষ্ট ধারণা থাকে না।
- লিখিত পাঠক্রমের প্রতি অধিক গুরুত্ব দেওয়ার ফলে পাঠ্যক্রম প্রণেতা ও অব্যক্ত পাঠক্রমের প্রতি তেমন সচেতন থাকেন না।
- অলিখিত পাঠক্রম বিদ্যার্থীদের মধ্যে কোনো কোনো ধরনের আচরণের পরিবর্তন সাধন করে, তার মূল্যায়নের কোনো ব্যবস্থা নেই।
- এই ধরনের পাঠক্রমের লক্ষ্য ব্যাপক হওয়ার ফলে বিষয়বস্তু নির্বাচন খুব সহজ সাধ্য নয়।
6.7. উদাহরণ -
এখানে Hidden Curriculum সম্পর্কিত যে উদাহরণ গুলি দেওয়া হল তা কোনো পাঠ্যপুস্তককে অবলম্বন করে হয় নি।সর্বসম্মতভাবে উদাহরণ দেওয়া হল যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন পাঠ্যপুস্তক থেকে লুক্কায়িত পাঠ্যক্রমকে যথেষ্ট চিহ্নিত করতে পারবে।
(i) শিক্ষার্থীর বয়স ৬ - ১০ বছর -
- সাধারণ সৌজন্যবোধ।
- Table Manners।
- বিভিন্ন অনুষ্ঠানের অংশগ্রহণের জন্য সঠিক পোশাক-পরিচ্ছদ।
- অন্য শিশুদের সঙ্গে কথা বলার ধরন।
- ভাষার সঠিক ব্যবহার।
- সামাজিক নিয়ম পদ্ধতি।
- কোনো ব্যক্তি বন্ধু হওয়ার যোগ্য।
- সঠিক আচারণ।
- কিভাবে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বন্ধুদের আমন্ত্রণ জানাতে হয়।
(ii) শিক্ষার্থীদের বয়স ১০ - ১৩ বছর -
- খাবার খাওয়ার ধরন বোঝা।
- কিভাবে কোনো কর্মসূচীর পরিকল্পনা করা হয়।
- কিভাবে ব্যক্তিগত ও দলীয় ভাবে কাজ করতে হয়।
- কিভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ভাবে থাকা যায়।
- কোনো ব্যক্তির কাছ থেকে কিছু গ্রহণ করার পর ধন্যবাদ জানানো।
- কিভাবে বন্ধুত্ব বজায় রেখে চলতে হয়।
- সামাজিক সৌন্দর্যবোধ উপলব্ধি করা।
- অপরকে সাহায্য করা।
- যোগাযোগ করার সঠিক দক্ষতা।
- বিদ্যালয়ে বিভিন্ন কার্যাবলীতে অংশগ্রহণ।
- অপরকে শ্রদ্ধা জানানো।
- পোশাক-পরিচ্ছদ পরার পদ্ধতি।
- বিভিন্ন পরিস্থিতিতে বিভিন্ন আচরণ করার পদ্ধতি।
- নীতিবোধ।
- সমস্যার সঙ্গে মোকাবিলা করার পদ্ধতি।
- সামাজিক কৃষ্টি ও রীতিনীতি।
- বয়স অনুযায়ী আচরণ করা।
- সঠিক আচার-আচরণ।
7. নেতিবাচক বা বাতিল পাঠক্রম -
7.1. ধারণা -
প্রথাগত পাঠক্রম আমাদের কৃষ্টি সংস্কৃতি থেকে নির্বাচিত বিষয়সমূহের একটি সমন্বিত রূপ - Eelectic Selection From Our Culture. সংস্কৃতি এই নির্বাচনকালে অনেক বিষয় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব হয়ে ওঠে নি,বাদ পড়ে যায়।এই বাদ পড়া অংশটিকে 'বাতিল বা নেতিবাচক পাঠক্রম' বলা হয়ে।
তবে পাঠক্রম থেকে বাদ পড়া বা বাতিল হওয়ার অংশ সর্বদাই অর্থহীন বা কম গুরুত্বপূর্ণ হবে একথা বলা যায় না।কিন্তু সাধারণ মানুষের কাছে এই বার্তা দেয় যে, বাতিল পাঠক্রম অন্তর্ভুক্ত হওয়ার মতো উন্নত মানের নয়, অর্থাৎ পাঠক্রম থেকে বাদ পড়া অংশ যথেষ্ট গুনমানসম্পন্ন নয়।
অনেক স্কুলে ব্যবহৃত পাঠ বিষয়গুলিকে গুরুত্বপূর্ণ স্থান দেওয়া হয়।অথচ হস্তশিল্প,শারীর শিক্ষা, নৃত্যগীত ইত্যাদি ক্ষেত্রে চরম অবহেলা দেখা যায়।Eisner(1994) বলেছেন, স্কুল অথবা শিক্ষক পাঠক্রমের যে অংশটি অবহেলা করে বা আদৌ পড়ার না সেই অংশটিকে বলা হয় নেতিবাচক বা বাতিল পাঠক্রম। তার অর্থ নেতিবাচক পাঠক্রম কোনো একটি বিশেষ ধরনের পাঠক্রম নয়। স্কুলের পঠন পাঠনের দুটি নির্ধারক আছে - 'পরীক্ষা' এবং 'শিক্ষকদের নিজস্ব ধারণা ও বিবেচনা'। কোনো শিক্ষকই পাঠক্রমের প্রতিটি খুঁটিনাটি অংশ সমান গুরুত্ব সহকারে পড়ার না এবং শিক্ষার্থীও পড়ে না।সুতরাং শিক্ষক যে অংশটিকে তত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন না সেই অংশটি শেষ পর্যন্ত নেতিবাচক পাঠক্রমে পরিণত হয়।পরীক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ নয়,এমন সিদ্ধান্ত এক্ষেত্রে একই পরিণতি ঘটায়।তাই শ্রেণিকক্ষের পরিপ্রেক্ষিত ছাড়া নেতিবাচক পাঠক্রম চিহ্নিত করা কঠিন।তবে শিক্ষার্থীদের নিজস্ব অভিজ্ঞতার পরিপ্রেক্ষিতে কোনোটি অবহেলিত হতে পারে সেই সম্ভাবনা চিহ্নিত করার চেষ্টা করে দেখা যেতে পারে।
7.2. বৈশিষ্ট্য -
- পাঠক্রম রচনার প্রয়োজনীয় অংশ ছাড়া অপ্রয়োজনীয় অংশ কে বাদ দেওয়া।
- জ্ঞানের বিকাশ সাধন করা,যেমন - চিন্তা,বিশ্লেষণ, সংশ্লেষণ,যুক্তি ইত্যাদির মাধ্যমে প্রকাশ পায়।
- পাঠক্রমের যে অংশ শিক্ষক-শিক্ষিকা পড়ান না সেই সমস্ত এই পাঠক্রমের অন্তর্গত হয়।
- সামাজিক ও শিক্ষার দিক থেকে এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ।
7.3. উদ্দেশ্য -
- কোন ধরনের পদ্ধতিতে শিক্ষা গ্রহণের পক্ষে আদর্শ এবং আদর্শ নয় সেই সম্পর্কে অবগত করা।
- কোন ধরনের বিষয়বস্তু সমাজের উপর ঋনাত্মক প্রভাব ফেলেছে তা চিহ্নিতকরণ করা।
- পাঠক্রম পরিকল্পনাতে সাহায্য করা।
- কোন ধরনের লিখন দক্ষতা উপযোগী অর্থাৎ গতানুগতিক না সৃজনাত্মক তা জানতে সাহায্য করে।
7.4. উপযোগিতা -
- সমাজের পক্ষে কোনটি তাৎপর্যপূর্ণ এবং কোনটি তাৎপর্যপূর্ণ নয়,তা চিহ্নিত করে দেয়।
- জ্ঞানের বিকাশ সাধন,বোধগম্যতার বিকাশ সাধন, গ্রহণযোগ্যতা এবং সমন্বয়ধর্মীতা জানা যায়।
- সহপাঠক্রমিক কার্যাবলী চিহ্নিতকরণ করে শিক্ষার্থীদের সাহায্য করে।
- পাঠ্যক্রম পরিকল্পনার সময় নেতিবাচক বা বাতিল পাঠক্রম প্রয়োজনীয়।
7.5.নির্দেশিকা -
- একই প্রক্রিয়াতে ধারণাগুলিকে চিহ্নিত করা যেতে পারে।
- ধারণার অন্তর্গত উপধারনাগুলিকে চিহ্নিত করা যেতে পারে।
- কোনোটি কোনোটি এড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে সেগুলিকে লিখতে হবে এবং কেন বাদ যেতে পারে বা অবহিত হতে পারে তা লিখিত হবে।
- যে ধরনের প্রয়োজনীয় সংস্কার করলে নেতিবাচক অংশ সর্বনিম্ন হতে পারে তা লিখিত হবে।
7.6. সীমাবদ্ধতা -
- শ্রেনী কহ্মের পরিপ্রেক্ষিতে বাইরের নেতিবাচক বা বাতিল পাঠক্রম চিহ্নিত করা মুশকিল।
- পাঠক্রমে কোন অংশ গুরুত্বপূর্ণ তাই সবসময় শিক্ষার্থীরা বুঝে উঠতে পারে না।
7.7. উদাহরণ -
নেতিবাচক বা বাতিল পাঠক্রমের হিসেবে আমরা সেই সমস্ত ঘটনা ধারণা বা বিষয়ের কথা উল্লেখ করতে পারি যা আমাদের সমাজ ব্যবস্থার উপর ঋণাত্মক প্রভাব ফেলে।যেমন - লিঙ্গ গত বৈষম্য, জাতিগত বৈষম্য, গতানুগতিক চিন্তাধারা ও মনোভাব ইত্যাদি।
8. পাঠ্যপুস্তকে পাঠক্রম শনাক্তকরণের নির্দেশিকা -
বিদ্যালয়ে পাঠ্যপুস্তকে কেন্দ্রীয় বা মুখ্য পাঠক্রম, লুক্কায়িত বা গুপ্ত পাঠক্রম নেতিবাচক বা বাতিল পাঠক্রম সনাক্তকরণের জন্য নির্দেশিকা গুলি হল -
- নির্ধারিত কাজটির যে কোনো একটি স্তরের কোন শ্রেণীর বিষয় ভিত্তিক একটি উপযুক্ত পাঠ্যপুস্তক নির্বাচন করতে হবে।
- নির্ধারিত পাঠক্রম টি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পড়তে হবে।
- নির্ধারিত পাঠ্যক্রম বিষয়বস্তু উপলব্ধি করার চেষ্টা করতে হবে।
- পাঠক্রমের সমগ্র অংশটি যথাযথভাবে বিশ্লেষণ করতে হবে।
- পাঠক্রমটি অন্য একটি মডেল তৈরি করতে হবে।
- পাঠক্রমের মুখ্য বা কেন্দ্রীয় পাঠক্রম,লুকায়িত বা সুপ্ত পাঠক্রম,নেতিবাচক বা বাতিল পাঠক্রমগুলি নিন্মলিখিতভাবে তালিকাবদ্ধ করতে হবে।
• মডেল -
পাঠ্যপুস্তকে কেন্দ্রীয় বা মুখ্য পাঠক্রম,লুক্কায়িত বা গুপ্ত পাঠক্রম,নেতিবাচক বা বাতিল পাঠক্রম সনাক্তকরণের জন্য মডেল তৈরি।
পাঠ্য পুস্তকের নাম -
শ্রেণীকহ্ম -
পর্ষদ/সংসদ -
পাঠ্যপুস্তকে ভাষা -
পাঠক্রমের কোনো কোনো অংশ কারন
শ্রেণী নির্ণয় এই শ্রেনীতে পড়ে বর্ননা
মুখ্য বা কেন্দ্রীয়
পাঠক্রম
লুক্কায়িত বা গুপ্ত
পাঠক্রম
নেতিবাচক বা
বাতিল
পাঠক্রম
(***কোনো কোনো অংশ এই শ্রেণীতে পড়ে ও কারন বর্ননাটি নিজ নিজ বিষয়ে বুঝে লিখতে হবে,তে টি সম্পূর্ণ নিজের বিষয় হিসাবে করতে হবে)
9. উপসংহার -
পরিশেষে পাঠক্রমের ও তার শ্রেণীবিভাগ সম্পর্কে জানার পর যে অংশগুলি বর্ণনা করা হয়েছে তার মূলত খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যেমন - কেন্দ্রীয় পাঠক্রমের কোনো স্থির জ্ঞানে বস্তু নয়, অর্থপূর্ণ জীবন-যাপনে কৌশল আত্তীকরণ প্রক্রিয়ার একটি নকশা। সব দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় কেন্দ্রীয় পাঠক্রম এর সাধারণ, কিন্তু অপরিহার্য জ্ঞান সমূহ প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। জাতীয় শিক্ষানীতি জাতীয় পাঠক্রমের রূপরেখার ১০টি সাধারণ উপাদান ও সংবিধানে ১০টি মৌলিক কর্তব্য দ্বারা এই পাঠক্রম কে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
আবার Hidden/ Latent Curriculum সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও আমাদের স্বীকার করতে হবে যে অলিখিত শিখন সবটাই নেতি মূলক নয়, শিক্ষক সুদুর প্রসারী লক্ষ্য পূরণে অলিখিত পাঠ্যক্রমই বাস্তবোচিত ভূমিকা নিতে পারে এবং বর্তমান পরিস্থিতিতে লুক্কায়িত বা সুপ্ত পাঠক্রমের গুরুত্ব অপরিসীম।
আবার নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কোনো শ্রেণিকক্ষে শিক্ষক বা শিক্ষিকা শিক্ষার্থী সমস্ত কিছু উপরে উঠতে পারে না। তাই শিক্ষাব্যবস্থায় পাঠক্রম গঠনে নেতিবাচক বা বাতিল পাঠক্রমের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।
অর্থাৎ এক কথায় বলা যেতে পারে যে, পাঠক্রমে কেন্দ্রীয় বা মুখ্য পাঠক্রম,লুক্কায়িত বা গুপ্ত পাঠক্রম, নেতিবাচক বা বাতিল পাঠক্রম খুবই গুরুত্বপুর্ণ যা অস্বীকার করা যায় না।
ENGLISH VERSION PDF FILE
Identification Of Core,Hidden,Null And Latent Curriculum In Textbooks