Relationship Of Mathematics With Other Subjects

Relationship Of Mathematics With Other Subjects

Relationship Of Mathematics With Other Subjects||গনিতের সঙ্গে অন্যান্য বিষয়ের সম্পর্ক

BENGALI VERSION||ENGLISH VERSION

Relationship Of Mathematics With Other Subjects
Relationship Of Mathematics With Other Subjects


BENGALI VERSION-
গণিতের সঙ্গে অন্যান্য বিষয়ের সম্পর্ক

1. ভূমিকা - 

গণিত বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে যে দৈনন্দিন জীবনের ঘটনাক্রমে থেকে গণিত বিষয়টি বিচ্ছিন্ন নয় এবং বিদ্যালয়ের পড়ানো হয় এমন প্রতিটি বিশেষ মানব উন্নয়ন ভিত্তিক জ্ঞানকেই প্রতিফলিত করে।গণিত বিষয়ে অদক্ষ হলে অস্তিত্ব রক্ষা করা প্রায় অসম্ভব।

রজার বেকন -এর মত অনুসারে - "গণিত হল বিজ্ঞানের দ্ধার এবং চাবিকাঠি।"গণিতকে অবহেলা করার অর্থ সকল জ্ঞানের বিকাশকে স্তদ্ধ করে দেওয়া।একজন ব্যক্তি যখনই গণিতকে অবহেলা করেন বা এড়িয়ে চলেন তখনই তিনি জগতের অন্যান্য সকল বিষয়বস্তু ও বিজ্ঞান সম্পর্কে অজ্ঞাত থাকেন।এমনকি কোনো ভুল বা খারাপ কাজ বা ধারণা সম্পর্কেও তিনি অজ্ঞাত থাকেন এবং তার প্রতিকার করতেও অক্ষম হন। অর্থাৎ পাঠক্রমের অন্যান্য ক্ষেত্রসমূহও কোনো না কোনোভাবে গণিতের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। 

স্কুলে গণিত শিক্ষার বিভিন্ন লক্ষ্যসমূহ - 

ক। শিক্ষার্থীদের জ্ঞান অর্জন ও গণিত বিষয় সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করা।

খ। গণিত যে সব বিষয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত সেই সকল বিষয়ে শিক্ষার্থীদের জ্ঞান বৃদ্ধি ও অনুধাবনের সাহায্য করা।

        যাই হোক স্কুলে যেসব বিষয়ে শিক্ষাদান করা হয় গণিত তার প্রায় সবকটির সঙ্গেই সংযুক্ত। কয়েকটি স্কুল পাঠ্য বিষয়ের সঙ্গে গণিতের সম্পর্ক বর্ণনা করা হল।

2. গণিতের অর্থ ও সংজ্ঞা - 

• অর্থ -

গণিতর ইংরেজি প্রতিশব্দ হল 'Mathematics'।এই 'Mathematics' শব্দটির দুটি গ্রিক শব্দ 'Mathein' এবং 'Mathemata' থেকে উৎসারিত।'Mathein' শব্দটির অর্থ হল শিক্ষন করা এবং 'Mathemata' শব্দটির অর্থ হল শিহ্মনীয় বিষয়।'শিক্ষনীয় বিষয়' বলতে বোঝায় যা শেখার যোগ্য,যা শিখতে হয়, স্বাভাবিকভাবেই শেখার অঙ্গ হিসেবে যে গুলিকে আমরা গুরুত্ব দিই অর্থাৎ চিন্তা করতে পারা,বিচার বিশ্লেষণ করতে পারা,যুক্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারা ইত্যাদি। গণিতের মধ্যে সেই গুনগুলি বর্তমান।প্রাচীন গ্রিস সহ বেশ কিছু দেশ এগুলিকে গুরুত্ব দিতে গিয়েই 'গণিত' কে যেমন ভালবাসতে পেরেছিলেন তেমনি গণিত বিষয়ে তাঁদের চিন্তা-চেতনার অবদান রাখতে সমর্থ হয়েছিলেন। অ্যারিস্টটল বলেছিলেন যে "গণিত হলো পরিমাণের বিজ্ঞান"। ভারতের জাতীয় শিক্ষানীতিতে (1986) সেই কথা প্রতিধ্বনিত হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে -

"Mathematics should reason, analyse, articulate, logically, a part from being a specific subject it should be treated as a concomitant to any subject involving analysis and meaning."

• সংজ্ঞা -

Locke গণিতের সংজ্ঞা দিয়েছেন "Mathematics is away to settle in the mind of children a habit of reasoning."

Marshall H Stone এর মতে, "Mathematics is the study of abstruct system built of abstract elements.These elements are not described in concrete fashion."

গণিতবিদ অধ্যাপক Voss এর মতে, " Our entire civilization depending on the intellectual penetration and utilisation of Nature has it's real foundation in the mathematical sciences."

Klein এর মতানুসারে," Mathematics in general is fundamentally the science of self evident things."

গণিতের একটি আধুনিক সংজ্ঞা - " সংখ্যা,প্রতীক, বিভিন্ন মাত্রিক আকার বিমূর্ত ধারণার অবকাঠামো ও তাদের পারস্পরিক সম্পর্ক,গতি এবং কালের বিজ্ঞানই হল গণিত।"

৩. গণিতের বৈশিষ্ট্য -

সমসাময়িক গণিতের একটি বৃহৎ সংখ্যক বৈশিষ্ট্যাবলি বর্তমান।তার মধ্যে পাঁচটি বৈশিষ্ট্যকে আমরা এহ্মেত্রে আলোচনা করতে পারি -

১. প্রয়োগযোগ্যতা ও কার্যকারিতা - 

গণিতের বহু গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যর মধ্যে সাধারণ প্রয়োগ যোগ্যতা হল সর্বোত্তম কারণ আরও ভালোভাবে অনুধাবন করার জন্য গাণিতিক সত্য প্রয়োগ করার স্বতন্ত্র ক্ষেত্র ও পরিলক্ষিত বর্তমান।সুতরাং বিশ্ব সম্পর্কে উপলব্ধি থেকে শুরু করে দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি বিষয়বস্তুর অন্তর্দৃষ্টি অনুধাবনের ক্ষেত্রে এর ব্যবহার পরিলক্ষিত হয়।এর বৃহত্তর ব্যবহার তার সর্বব্যাপী প্রকৃতির কারণেই সম্ভব।গণিতের ব্যবহার মানবিক অভি প্রায়ের প্রতিফলনযা ব্যাখ্যাকে গ্রহণ করতে, সাধারণীকরণে উন্নতি হতে এবং তার জ্ঞানের সংগঠনকে প্রতিষ্ঠা করতে অনেক বেশি সাহায্য করবে।এই কারণে বৃহৎ সংখ্যক পৃথক বিষয়েই তাদের নিজস্ব জটিল সমস্যা সমাধান করার সময় গুলিতে সাহায্য নেয়।

২. বিমূর্ততা ও সাধারনীকৃত প্রকৃতি - 

বিমূর্ততার অর্থ হল কোনো বিষয়ের সারমর্ম অনুধাবন করা ও সাধারণীকরণের অর্থ হল সারমর্মকে কেন্দ্র করে বিষয়টির নির্দিষ্ট উপাদানের সংগঠন অর্থাৎ এক্ষেত্রে একটি পরিচালনাকারী কাঠামো উন্মোচিত হয়।এই ধারণাগত কাঠামো বৈচিত্র্যময় দৃষ্টান্ত গুলিকে ঐক্যবদ্ধ করে। গণিত-ই একমাত্র সেই কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত করে।গাণিতিক বিমূর্ততা এই বিষয়গুলি সরলীকৃত করে যাতে তাদের সহজে ব্যবহার,নিয়ন্ত্রণ ও অধিগত করা যায় এবং বিষয়গুলি অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠে। 

৩. সারল্য -

গণিতের বৈশিষ্ট্য হিসেবে সারল্য এই ধারনাটি গ্রহণ বা বিশ্বাস করা খুবই কঠিন।কিন্তু একজন গণিতজ্ঞ সারল্যকে গণিতের বৈশিষ্ট্য গুলির মধ্যে স্থান দেন।সারল্যের অর্থ হল গাণিতিক বিশেষজ্ঞরা সবসময় সবচেয়ে সহজ সরল সম্ভাব্য একটি মাত্র ব্যাখ্যা গ্রহণ করতে চান। বিমূর্ততার প্রক্রিয়া চলার কারণেই উচ্চতর পর্যায়ে আরও অতিরিক্ত কিছু পরিভাষা ও যাম্রিকতা বিশেষজ্ঞদের ব্যাখ্যাটি নির্মাণ করতে সাহায্য করে। সমসাময়িক গণিতে,এই আপাত সারল্যের উচ্চতর ব্যাখ্যার উদ্ভাস বর্তমান। 

৪. যৌক্তিকশিক্ষা ও সর্বজনগ্রাহ্য ব্যবস্থাপনা -

যৌক্তিক শিক্ষা ও সর্বজনগ্রাহ্য ব্যবস্থাপনার ধারণা প্রাচীন গ্রিক ঐতিহ্য থেকে প্রাপ্ত যখন ইউক্লিডের দ্ধারা সেলিস ও পিথাগোরাস জ্যামিতিক উপস্থাপনা করেন। পূর্বে ব্যবহৃত গণিত সংখ্যা (পরিমাণ), স্থান(রূপরেখা), সময় এবং পরিবর্তন (রূপ-রূপান্তর)এর মানসিক অনুমানের উপর নির্ভরশীল ছিল।কিন্তু পরবর্তীকালে গণিত গবেষণামূলক প্রকৃতি থেকে ক্রমে বিমুর্ত বিজ্ঞান হয়ে উঠেছে।সাম্প্রতিককালে এটি একটি সর্বজনবিদিত বিজ্ঞান হিসেবে প্রতিফলিত।যাই হোক,বর্তমানে গণিতের সঙ্গে বাস্তবতার কোনো সংযোগ নেই - এটিও বলা যায় না।এটি সাধারণভাবে বোঝার যে বাস্তব অভিজ্ঞতার সঙ্গে এর সম্পর্ক প্রয়োজনীয় হলেও অনিবার্য নয়।

৫. দ্ধ্যর্থহীনতা,যথার্থতা -

প্রায় হাজার বছরের ও পূর্বে আবিষ্কৃত গণিতের ভাষা গাণিতিক সমীকরণ, অন্বেষণ ও পূর্ণগঠনের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জাম। যখন গাণিতিক ভাষা কার্যকারী ভাবে ব্যবহৃত হয় তখন এটি দ্ধ্যর্থহীন,সংহ্মিপ্ত ও যথার্থ হয়ে পড়ে অন্যান্য অনেক ভাষার মতোই এটি সঠিক ও দুর্বল উভয়ভাবেই ব্যবহার করা যেতে পারে।

4. গণিতের উদ্দেশ্যাবলি - 

  • গণিতের অর্থ উপলব্ধি করা যায়।
  • গণিতের স্বরূপ জানা যায়। 
  • গণিতের ইতিহাস সম্পর্কে ধারণা জানা যায়।
  • গণিতের গুরুত্ব সম্পর্কে জানা যায়। 
  • গণিতের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে পারি।
  • দৈনন্দিন জীবনে গণিতের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে জানা যায়।
  • গণিতের সঙ্গে অন্যান্য বিষয়ের সম্পর্কের উপলব্ধি করতে পারি।

5. গণিতের সাথে অন্যান্য বিষয়ের সম্পর্ক -

গণিত হল একটি স্বতন্ত্র বিষয়। কিন্তু গণিতের সঙ্গে অন্যান্য বিষয়ের একটি সম্পর্ক রয়েছে। যদিও বিজ্ঞান, বাণিজ্য, কলা এবং সমাজবিজ্ঞান স্বতন্ত্র বিষয় হলেও ব্যাখ্যা করতে এবং পঠনের সুবিধাতে গণিতের ব্যবহার করা হয়। নিম্নে বিজ্ঞান,বাণিজ্য,কলা ও সমাজবিজ্ঞান এর সঙ্গে গণিতের সম্পর্ক বর্ণনা করা হল।

১. গণিতের সঙ্গে পদার্থবিদ্যার সম্পর্ক -

ভৌত বিজ্ঞানের একটি দিক হল 'পদার্থবিদ্যা'।এই পদার্থ বিদ্যার সঙ্গে গণিত অতি ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কযুক্ত। শিক্ষার্থীদের পদার্থবিদ্যার মূল বিষয়বস্তুকে সঠিকভাবে অনুধাবন করতে গণিত ভীষনভাবে সাহায্য করে।গণিত বিষয়ের সমীকরণ,অবকল সমীকরণ,আংশিক অবকল সমীকরণ প্রভৃতি পদার্থবিদ্যাকে স্পষ্ট, নির্ভূল ও সহজ করে উপলব্ধি করতে সাহায্য করে।গণিতের জটিল সংখ্যা,জটিল বিশ্লেষণ,সম্ভাব্যতার তত্ত্ব,বুলিয়ান বীজগণিত পদার্থবিদ্যার জ্ঞান লাভের ক্ষেত্রে অনেক বেশি অগ্রবর্তী করে তুলেছে।আধুনিক পদার্থবিদ্যার বিকাশ ও বিবর্তনে উল্লেখযোগ্য ভাবে সাহায্যে করেছে। গণিতের Tensor কলনবিদ্যা,গ্রুপতত্ত্ব এবং অন্তরকল জ্যামিতি প্রভৃতি। বস্তুতপহ্মে, পদার্থবিদ্যার জ্ঞানের বিষয়বস্তুর প্রায় 50% হল গণিত।

২. গণিতের সঙ্গে রসায়নবিদ্যা সম্পর্ক - 

গণিতের সঙ্গে রসায়ন বিদ্যার একটি ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক যুক্ত। রসায়ন বিদ্যার চিহ্ন,সংকেত,নিখুঁত এবং সহজবোধ্য ভাবে প্রচলন ও উপস্থাপন সম্ভব হয়েছে গাণিতিক ভিত্তির সহায়তায়। রসায়ন বিদ্যার অনেক নিয়ম, সূত্র, তত্ত্ব, রাসায়নিক বিক্রিয়া সমুহ গণিতের জ্ঞানের দ্বারা সহজভাবে উপস্থাপন ও উপলব্ধি করা সম্ভব। রসায়নের বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পাদিত করে তার সূক্ষ্ম বিচার বিশ্লেষণ সম্ভব হয় গণিতের সাহায্যে।

৩. গণিতের সঙ্গে জীববিদ্যা সম্পর্ক -

গণিতের সঙ্গে জীববিদ্যার সম্পর্ক যুক্ত। জীববিদ্যার কতকগুলি গুরুত্বপূর্ণ দিক যেমন - শারীর বিজ্ঞান, সুপ্রজনন বিদ্যা,বিবর্তন, বাস্তুতন্ত্র ইত্যাদির সমস্যা গুলিকে সমাধান করে সংশ্লিষ্ট বিষয়বস্তুর সঠিক ধারণা তৈরি করতে গণিতের বিভিন্ন পদ্ধতি ও কৌশলকে ব্যাপকভাবে গ্ৰহন করা হয়েছে।মালথাস,ডারউইন, আলফ্রেড রাসেল,মেন্ডেল প্রমুখ জীব বিজ্ঞানী গাণিতিক ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে বা গণিত শাস্ত্রের জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে তাঁদের আপন আপন সূত্রগুলি তথা তত্ত্বকে প্রতিষ্ঠা করেছে।

         আজকের দিনে বহু নতুন নতুন শাখা এমনকি স্বতন্ত্র বিষয় হিসেবে সেগুলি প্রতিষ্ঠা পাচ্ছে। সেগুলির ভৌগোলিক ভিত্তির অন্যতম উপাদান হল গণিত।এই সমস্ত নতুন বিষয়গুলির অন্যতম হল জীব পদার্থবিদ্যা, জীব রসায়ন,জীব গণিত ইত্যাদি।

৪. গণিতের সঙ্গে কম্পিউটারের সম্পর্ক - 

গণিতের সঙ্গে কম্পিউটারের সম্পর্কযুক্ত।কম্পিউটারের বিভিন্ন এপ্লিকেশন,অ্যানিমেশন, তত্ত্ব ও তার সূত্র গণিতের ভিত্তিতে করা হয়ে থাকে।

৫. গণিতের সঙ্গে সমাজ ও প্রযুক্তির সম্পর্ক -

গাণিতিক প্রয়োগ প্রযুক্তির বিকাশের একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধন করেছে যেটি মানবিক সভ্যতার অবদানের প্রমাণ রাখে।প্রযুক্তিতে গণিতের ব্যবহার যে কয়েকটি পদ্ধতিতে প্রদর্শিত হয় তা হল -

  • MRI ও CAT এই চিত্রণ গুলির ক্ষেত্রে অখন্ড স্থানান্তর ও জ্যামিতি প্রযুক্ত হয়। 
  • ইন্টারনেট সংযোগে রেখাচিত্র,রৈখিক বীজগণিত,তরঙ্গ ইত্যাদি ব্যবহার হয়।
  • ব্ল্যাক স্কুল মডেল বা মন্টি কালো কৃত্রিমতা এর উপর অর্থনৈতিক মূল্য নির্ধারণ নির্ভর করে।
  • বিশ্বব্যাপী প্রাথমিক নিরীহ্মনের ক্ষেত্রে গণিতের সিগন্যাল প্রক্রিয়া,চিত্রন প্রক্রিয়া ও তথ্য উত্তোলন সাহায্য করে।
  • সংখ্যাতত্ত্ব,ক্রিপ্টেলিজ সমন্বয়ে গোপনীয়তা ও অখন্ডতার ব্যবহৃত হয়।
  • বায়ুমণ্ডল ও মহাসাগরের বিষয়গুলি ক্ষুদ্র তরঙ্গ, পরিসংখ্যান ও সংখ্যাসূচক বিশ্লেষণের উপর নির্ভরশীল। 
  • মানবিক জিনোম তথ্য উত্তোলন,প্যাটান চিহ্নিতকরণ ও বিমূর্ত অ্যালগোরিদমের সাহায্যে বিশ্লেষিত হয়। 
  • তথ্য উত্তোলন ও পরিসংখ্যান তত্ত্ব যৌগিক ভাবে ওষুধের নকশা নির্মাণে সাহায্যে করে।
  • অ্যানিমেশন ডিজিটাল বিনোদনে সংকেত প্রক্রিয়াকরণ,জ্যামিতিক ও গ্রাফিক অ্যালগরিদম প্রযুক্ত হয়। 
  • বিমান সংক্রান্ত গতিশীলতার নকশা বহুবিধ সমীকরণ ও নিখুঁত বিশেষ করে এর দ্ধারা নির্মিত হয়।
  • ভূমিকম্পের পূর্বাভাসের বিশ্লেষণ পরিসংখ্যান, গতিশীলতার প্রক্রিয়া ইত্যাদি ব্যবহারে করে।
ল্যাবরেটরি বা পার্শ্ববর্তী পরিবেশে গণিতের প্রয়োগের উদাহরণ অনুসন্ধান করতে শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করা হয়।

৬. গণিতের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক -

বাণিজ্যিক বিনিময় ও এই ধরনের ধারণার গাণিতিক উপস্থাপনই হল একাউন্টস ও এই সম্পর্কিত বিষয়সমূহ। প্রায় সকল বাণিজ্যিক বিষয়গুলি গণিতের বিশেষ ফলিত শাখা প্রশাখা এবং একই সঙ্গে সেগুলি গণিতের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত।

৭. গণিতের সঙ্গে ইতিহাসের সম্পর্ক - 

বিভিন্ন বিষয়ের মতো ইতিহাসের সঙ্গে গণিতের নিবিড় সম্পর্ক আবদ্ধ।ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ আলোচিত বিষয় হল ঐতিহাসিক ঘটনাসমূহ।এই সমস্ত ঐতিহাসিক ঘটনাগুলি কালের বুকে এক একটি বিন্দুর মতো অবস্থান করে। এগুলি ইতিহাসের তারিখ হিসেবে বিবেচিত হয়।আবার কালের বুকে এক একটি ঘটনা যেন এক একটি মাইলস্টোন হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকে,যাকে আমরা অর্থবহ করে তুলি সন-তারিখের প্রেক্ষিতে। ইতিহাসের এই সময় চেতনার জন্য প্রয়োজন হয় গাণিতিক সাহায্যে। ইতিহাসের সময় চেতনা সৃষ্টিতে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হল -

  • সংস্থাপন বা নির্দিষ্ট সময় চিহ্নিতকরণ
  • দূরত্ব
  • ব্যাপ্তি
ইতিহাস শিক্ষকের একটি প্রধান কাজ হল শিক্ষার্থীর মধ্যে সময় চেতনা সঠিক ভাবে গড়ে তোলা।শিক্ষার্থীর মধ্যে সময় চেতনার সৃষ্টি করতে হলে গণিতের জ্ঞানকে কাজে লাগানো দরকার হয়। গাণিতিক বিভিন্ন হাতিয়ার বা Tool কে এজন্য যথাযথভাবে ব্যবহার করতে হয়।এই সমস্ত হাতিয়ার গলি অন্যতম হল - 

• সময় রেখা -এর মধ্যে আছে -

  • উল্লম্ব সময়রেখা 
  • অনুভূমিক সময়রেখা 
  • দুই বা তার বেশি সমান্তরাল রেখা
  • বৃত্তাকার ডায়াগ্রাম ইত্যাদি। 
সময় লেখচিত্রের মধ্যে আছে -

  • রেখা লেখচিত্র 
  • স্তম্ভ লেখচিত্র 
  • বৃত্তাকার লেখচিত্র 
  • চিত্রমূলক লেখচিত্র 
             উপরোক্ত হাতিয়ার সমূহ প্রস্তুতির জন্য যে সমস্ত রেখচিত্র ও লেখচিত্র অঙ্কনের প্রয়োজন হয় তার জন্য অবশ্যই গণিতের জ্ঞান বিশেষ করে বিভিন্ন জ্যামিতিক চিত্র গুলির ধারণা এবং পাটিগণিতের জ্ঞান থাকা দরকার।স্বাভাবিক ভাবেই ইতিহাসের সঙ্গে গণিতের সম্পর্ক কতখানি গভীর তা সহজেই অনুমেয়।

৮. গণিতের সাথে ভূগোলের সম্পর্ক -

গণিত এবং ভূগোল শাস্ত্র ঘনিষ্টভাবে সম্পর্কিত।ভূগোল নামক বিষয়টি একটি স্বতন্ত্র বিষয় হলেও গণিতের মতোই সামগ্রিক ভাবে তার বিষয়বস্তু বহুদূর বিস্তৃত। ভূগোলের নানান শাখা বর্তমান যেমন - প্রাকৃতিক ভূগোল,অর্থনৈতিক ভূগোল,আঞ্চলিক ভূগোল,মানবিক ভূগোল ভূগোলের এই শাখা গুলির বিভিন্ন সূত্র,তত্ত্ব এবং ধারনা সমূহ সঠিক ভাবে উপলব্ধি করার জন্য গণিতের জ্ঞান অবশ্যই দরকার। ভূগোলের এই শাখাগুলিতে জ্ঞানের বিকাশ ও উন্নয়নে গণিতের ব্যাপক প্রয়োগ দেখা যায়।প্রাকৃতিক ভূগোলের বিষয়বস্তু হিসেবে পৃথিবীর গঠন,অক্ষাংশ,দ্রাঘিমাংশ,সময় ও দ্রাঘিমা নির্ণয়ের প্রসঙ্গ,স্থানীয় সময় ও প্রমাণ সময়ের ধারণা গঠনে,সমুদ্র স্রোত ও নদীর স্রোত,সমুদ্রের গভীরতা,ভূগর্ভে বিভিন্ন খনিজ পদার্থের অস্তিত্ব গভীরতা ও বিস্তার প্রভৃতি জানতে হলে গণিতের ধারণা ছাড়া সম্ভব নয়।কোনো স্থানের অবস্থান,শহর,নগর বন্দর ও বিভিন্ন দেশের আয়তন প্রভৃতির ধারণা লাভের জন্য এবং বিভিন্ন প্রাকৃতিক ঘটনাবলি যেমন -চন্দ্র-সূর্য অবস্থান,দিন-রাত্রির সংঘটন,সুনামি,টর্নেডো,টাইফুন,সাইক্লোন ইত্যাদির গতি প্রকৃতি ব্যাখ্যা করতে হলে গণিত ছাড়া সম্ভব নয়।আবার ভূগোলের একটি অতি আবশ্যিক প্রসঙ্গ হল মানচিত্র। স্বাভাবিক কারণেই ভূগোল শিক্ষকের সঙ্গে সঙ্গে ভূগোল শিক্ষার্থীর নিম্নলিখিত বিষয়গুলি সম্পর্কে ধারণা থাকা দরকার।যেমন -

  • বীজগণিতের ধারণা 
  • জ্যামিতির ধারণা 
  • কার্ভ বিশ্লেষণ ও ডিটারমিনাটম এর ধারণা
  • ত্রিকোণমিতির ধারণা 
  • সম্ভাবনার তত্ত্ব 
  • বিশ্লেষণমূলক জ্যামিতিক ধারণা।

৯. গণিতের সঙ্গে ভাষার সম্পর্ক -

ভাষা ও গণিতের ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্ক যুক্ত। গণিত ও ভাষার উভয়ই যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। যে কোনো বিষয়ে অনুধাবন করতে যেমন কোনো একটি ভাষাকে যোগাযোগকারী হিসেবে ব্যবহার করা হয়, তেমনি গনিতও যোগাযোগে মাধ্যম হিসেবে কাজ করে, ভাষা তাই গণিতকে বলা হয় "Mathematics is the language of Science." 

         এটা ঠিক যে,প্রতীক দ্বারা গঠিত গণিতের একটি নিজস্ব উপলব্ধিগত বর্তমান,তারা অনেকখানি স্পষ্ট, অর্থপূর্ণ এবং ক্রিয়াশীল হয়ে ওঠে।কিন্তু এগুলি আরো বেশি সহজবোধ্য হয়ে ওঠে যখন সহজ ভাষায় তা ব্যাখ্যা করা হয়। গণিতের তত্ত্ব ও সূত্রগুলিকে সহজ,সরল ও স্পষ্টভাবে বোধগম্য করতে হলে স্বাচ্ছন্দ্য প্রয়োজন হয়, সুতরাং সেক্ষেত্রে ভাষার সাহায্য নিতে হয়।

১০. গণিতের সঙ্গে সাহিত্যের সম্পর্ক -

সাহিত্য সাথে গণিতের একটি নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। সাহিত্য রচনা ও চর্চার সঙ্গে গণিত অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। গণিত শিক্ষার্থীকে কবিতার মাত্রা, কতকগুলি শব্দ একটি লাইনে ব্যবহৃত হবে তার সংখ্যা এবং পাঠকের মনে কবিতার ছন্দের প্রভাব কীভাবে পড়বে তার অনুধাবনে সাহায্যে করে।

          নিম্ন পর্যায়ে গণিত শিক্ষার্থীকে সাহিত্য পড়তে ও সে সম্পর্কে লিখতে সময় পরিচালনা করতে সাহায্য করে থাকে।গণিত বিষয়টি শিক্ষার্থীকে লিখতে সময় পরিচালনা করতে সাহায্য করে থাকে।গণিত বিষয়টি শিক্ষার্থীদের মনে রৈখিক যৌক্তিক চিন্তার বিকাশ ঘটাতে সহায়তা করে যে চিন্তা কেবলমাত্র গাণিতিক সমস্যা সমাধানের মাধ্যমেই অর্জিত হয়।

১১. গণিতের সঙ্গে মনোবিজ্ঞান সম্পর্ক -

মনোবিজ্ঞানের সঙ্গে গণিতের গভীর সম্পর্ক বর্তমান। মনোবিজ্ঞান এবং গণিত উভয়েই মানুষকে কেন্দ্র করে একে অন্যের পরিপূরক হিসেবে কাজ করে।আধুনিক শিক্ষার তাৎপর্য উপলব্ধিতে মনোবিজ্ঞান এবং গণিত উভয় বিষয়ই সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।শিক্ষার কেন্দ্রীয় চরিত্র হল শিশু।আধুনিক শিক্ষার তাৎপর্য অনুসারে মূল বক্তব্যই হল শিশুর নিজস্ব ক্ষমতা, চাহিদা,ইচ্ছা-অনিচ্ছা,প্রবণতা অনুযায়ী তার শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে।আবার প্রতিটি শিশুই অন্য শিশুর থেকে আলাদা।ব্যক্তি বৈষম্যের এই নীতি মেনে শিক্ষার ব্যবস্থা করার কথা বলেছে মনোবিজ্ঞান।বৈজ্ঞানিক ভিত্তিতে অনুশীলনের মাধ্যমে শিশু শিক্ষায় এই ব্যবস্থাপনার ধারণা এসেছে মনোবিজ্ঞান ধারণা থেকে। শিশুর মানসিক প্রক্রিয়ার বিশ্লেষণ, শ্রেণীবিন্যাস,গতি প্রকৃতি, নিয়ম,কার্যকরণ সম্পর্কে নির্ণয় করে মনোবিজ্ঞান।মনোবিজ্ঞানের এই বিষয়গুলির অনুশীলন এবং কার্য সম্পাদনের ক্ষেত্রে গণিতের জ্ঞান বিশেষভাবে দরকার।

       মনোবিজ্ঞানের চর্চার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক বিভিন্ন ধরনের হাতিয়ার বা Tools।এই সমস্ত Tools তৈরির বিভিন্ন ধাপে গণিতের জ্ঞান থাকা বাঞ্ছনীয়।পরিসংখ্যান বিদ্যার সঙ্গে সমন্বয়ে গণিত আজ মনোবিজ্ঞানের কার্যকলাপকে একদিকে যেমন বৈজ্ঞানিক ভিত্তিকে মজবুত করেছে তেমনি নির্ভুল ও নিখুঁত করে তুলেছে।

১২. গণিতের সঙ্গে কৃষি সম্পর্ক -

কৃষিতে গণিতের গুরুত্ব রয়েছে।কৃষিতে বীজ রোপণ থেকে বিক্রয় পর্যন্ত হিসেব-নিকেশ সমস্তই গণিতের মাধ্যমে করা হয়।এছাড়া কীটনাশক ও সার প্রয়োগের সময় কত শতাংশ ব্যবহার বা উৎপন্ন ফসলের পরিমাণ এবং বিক্রয় করা হয় সমস্তই গণিতের সাহায্যে।

১৩. গণিতের সাথে কর্মশিক্ষার সম্পর্ক -

কর্মের প্রতি যথাযথ শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে।কর্মের প্রতি ভালোবাসা তৈরি করে শিক্ষার্থীরা যাতে তাদের কর্মের অভিজ্ঞতা নিজেদের জীবন চর্চার কাজে লাগাতে সক্ষম হয় সেটিই হল কর্মশিক্ষার মূল উদ্দেশ্য।কর্মশিক্ষার জ্ঞান অর্জন ও কর্ম দক্ষতার বিকাশে গণিত অতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।হিসেবের জন্য পাটিগণিতের জ্ঞান, বিভিন্ন ধরনের নকশা বা ডিজাইন করার জন্য পরিমিত ও জ্যামিতি ধারণা বিশেষভাবে সহায়তা করে।কর্মশিক্ষা বিষয় এমন অনেক সময় হয় যখন বিভিন্ন উৎপাদন মূলক কাজের দ্বারা অর্থনৈতিক উপার্জন বা লাভের ব্যাপারটি বুঝতে হয়।লাভ-ক্ষতির এই অর্থনৈতিক ধারণা, কয় বিক্রয় প্রভৃতি সব কিছু ক্ষেত্রে সচেতনতা লাভের জন্য পাটিগণিতের ধারণা বিশেষভাবে উপযোগী।

১৪. গণিতের সত্যের নন্দনতত্ত্ব সম্পর্ক -

গণিতকে প্রায়শই যান্ত্রিক,ঠান্ডা ও অকাল্পনিক বলে অভিহিত করা হয়।এই মূলত এমন একটি বিষয় যা সূত্র, সমীকরণে মনে রাখা ও সংখ্যার যান্ত্রিক পরিচালনা এর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত।তাই গনিত ও নন্দনতত্ত্বকে সম্পর্কিত করা অত্যন্ত কঠিন বিষয়।কিন্তু তবুও গণিতের নান্দনিক তাৎপর্যকে অনেক গণিতজ্ঞই নির্ধারণ করতে পেরেছেন। গণিতে নিজস্ব জাদু এবং সৌন্দর্য রয়েছে, যেমন -G.H.Hardy বলেছেন - একজন  অঙ্কন শিল্পী বা কবির মতো একজন গণিতজ্ঞ ও ধাঁচ নির্মাণকারী হিসেবে পরিগণিত। তাই সেই সকল কাঠামো বা ধাঁচকেও সৌন্দর্য্যপূর্ণ হতে হবে। অঙ্কন ও কাব্যে যথাক্রমে রং বা শব্দের মতো গণিতের ধারণাকেও একটি ছন্দবদ্ধ উপায়ে সঙ্গবদ্ধ করতে হবে।নান্দনিকতার পথে গণিতকে চালিত করে তারই সৌন্দর্য।

১৫. গণিতের সঙ্গে অর্থনীতির সম্পর্ক -

বর্তমানে অর্থনীতি বিষয়টি অনেক বেশি গাণিতিক হয়ে পড়েছে।অর্থনীতিতে অর্থনৈতিক তত্ত্ব ও সমস্যা গুলি বিশ্লেষণের উপস্থাপনার জন্য গাণিতিক অর্থনীতি হল গাণিতিক পদ্ধতির একটি প্রয়োগ।গণিত অর্থনীতিবিদদের যে সমস্ত বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে পর্যাপ্ত প্রকাশ করা যায় নি,সে সমস্ত বৃহত্তর ও জটিল বিষয়ের একটি অর্থবহ ও পরীক্ষিত বর্ণনা গঠন করতে সাহায্য করে।অর্থনীতিবিদগণ বিতর্কিত ও বাদানুবাদপূর্ণ  বিষয়গুলি সম্পর্কে স্পষ্ট,নির্দিষ্ট ও ইতিবাচক ফলাফল নির্ণয় করতে পারেন যেটি গণিত ছাড়া অসম্ভব। অধিকাংশ অর্থনৈতিক তত্ত্বই বর্তমানে গাণিতিক অর্থনৈতিক মডেলের দ্বারা উপস্থাপিত হয়।এই গাণিতিক অর্থনৈতিক মডেল হল বিন্যাসিত ও সরলীকৃত গাণিতিক সম্পর্ক যা অনুমান ও প্রভাবকে স্পষ্ট করে।অর্থনীতিতে গণিতের প্রয়োগ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাকেও অন্তর্ভুক্ত করে লহ্ম্যে সাম্যাবস্থা,গতিশীলতা বিশ্লেষণ ইত্যাদির জন্য।

১৬. গণিতের সঙ্গে কলা বিদ্যার সম্পর্ক -

কলাবিদ্যা সঙ্গে গণিতের সম্পর্ক নিবিড়।চারুকলা, নাটক, নৃত্যকলা গণিতের সঙ্গে সম্পর্কিত। হস্তশিল্প ও চারুকলা উভয়েই জ্যামিতির সঙ্গে বহুমাত্রার সংশ্লিষ্ট।

১৭. গণিতের সঙ্গে সঙ্গীতের সম্পর্ক -

গণিতের সঙ্গে কমিক সংগীতের সম্পর্ক খুবই নিবিড়। সংগীতের ছন্দ জটিল গাণিতিক গননায় ও সিরিজের সঙ্গে সম্পর্কিত।শিক্ষার ক্ষেত্রে যে কোনো কাজের পরিমাপই গণিতের উপর নির্ভরশীল।

১৮. গণিতের সাথে সামাজিক বিজ্ঞানের সম্পর্ক -

ইউনিট শেষ হওয়ার পরে শিশু গ্ৰাফগুলি পড়তে,ব্যাখা করতে এবং আঁকতে পারে গণিতের সাহায্যে। উদাহরণ স্বরূপ জনসংখ্যার তুলনা করতে শিহ্মার্থীরা বার গ্ৰাফ, বিভিন্ন দেশের জনসংখ্যার ঘনত্ব, মাথাপিছু আয় ইত্যাদি আঁকতে পারে।

১৯. গণিতের সাথে শিল্পের সম্পর্ক -

শিল্পকর্মে গণিত ব্যবহৃত হয়। উদাহরণস্বরূপ বুনন, আসবার তৈরি, চামড়ার কাজ, রং এবং সার তৈরি ইত্যাদি সমস্ত কাজ এবং ব্যয় গণনা করার জন্য গাণিতিক গণনা প্রয়োজন।

২০. গণিতের সাথে সূক্ষ্ম শিল্পের সম্পর্ক -

সাদৃশ্য স্কেল প্রশংসা, ভারসাম্য এবং প্রতিসাম্য তৈরি করার সময় আকার, অনুপাত এবং অনুপাত স্থির করে, স্কুলে প্রশংসা, ভারসাম্য এবং ,কাপড় এবং কাগজে চিত্র অঙ্কন,সংগীতে ছন্দ ইত্যাদি।

২১. গণিতের সাথে ইঞ্জিনিয়ারিং এর সম্পর্ক -

গণিত ছাড়াই ইঞ্জিনিয়ারিং ঠিক যেন জল ছাড়া সমুদ্রের মতো। ইঞ্জিনিয়ারিং প্রতিটি শাখায় সাথে গণিতের খুব দৃঢ় সম্পর্ক রয়েছে।ইলেক্ট্রনিক্স, বৈদ্যুতিক, যান্ত্রিক, আর্কিটেক্ট, সিভিল কেমিক্যাল কম্পিউটার ইত্যাদি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রতিটি শাখায় গণিত ব্যবহার করা হয় যে কোনও ইঞ্জিনিয়ারিং স্ট্রমে ভর্তি হতে শিক্ষার্থীকে অবশ্যই ক্লাস ১২ পর্যন্ত সাবজেক্ট হিসেবে গণিত পড়তে হবে।

২২. গণিতের সাথে আইসিটি এর সম্পর্ক -

আইসিটি গণিতের সাথে দৃঢ় ভাবে সম্পর্কযুক্ত। কম্পিউটার প্রোগ্ৰাম, অ্যাপ্লিকেশন, সফটওয়্যার এবং গণিত ব্যতীত বিভিন্ন ভাষা পরিচালনা এবং অনুসরণ করা অসম্ভব। শিক্ষার্থীরা কেবল গণিতের জ্ঞানের কারনে কম্পিউটার গণনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ সফটওয়্যার সরবরাহ করে যেমন SPSS Software গবেষণা কাজের জন্য দীর্ঘ পরিসংখ্যান গণনার ব্যবহৃত।

২৩. গণিতের সাথে জ্যোর্তিবিদ্যায় সম্পর্ক -

নহ্মত্র এবং গ্ৰহের গণনা সমস্ত গ্ৰহের চাঁদ/ উপগ্ৰহের সংখ্যা।গ্যালাক্সিতে তারার সংখ্যা,নিজস্ব কহ্মপথে ঘুরতে সময়। সেতুর গঠন,নহ্মত্রের জীবন,গ্যালাক্সি ইত্যাদি এবং দুটি গ্ৰহের মধ্যে দূরত্ব।

২৪. গণিতের সাথে শারীরিক শিহ্মার সম্পর্ক -

শরীরের কাঠামো,রক্তচাপ,উচ্চতা,ওজন, গেমসের নিয়ম ইত্যাদি পরিমাপের জন্য গণিত ব্যবহার করা হয় সাধারণ মানুষের দেহের তাপমাত্রা, খেলার মাঠের আকার,বুট বলের মতো আদর্শ এবং গেমের মান,হকি, ক্রিকেট,ভলিবল,টেনিস,কুস্তি, বক্সিং ইত্যাদি।

২৫. গণিতের সাথে অন্যান্য বিষয়ের সম্পর্ক -

উপরোক্ত বিষয়গুলি ছাড়াও ভূ-বিজ্ঞান, যুক্তি, দর্শন, ব্যবস্থাপনা বিজ্ঞান,পরিবেশ বিজ্ঞানের সঙ্গে গণিতের সম্পর্ক নিবিড়। প্রতিটি বিষয়গুলি ক্ষেত্রে সূত্র এবং তত্ত্ব গণিতের সাহায্যে ব্যাখ্যা করা সম্ভব।এই সকল বিষয়গুলিতে গণিতের অবদান কম নয়।

6. উপসংহার -

আজকের আধুনিক যুগে গণিতকে একটি স্বতন্ত্র বিষয় হিসেবে ধরা হলেও প্রকৃতপক্ষে গণিত এমন একটি বিষয় যা বিভিন্ন বিষয় এবং বিষয়বস্তুর সাথে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে সম্পর্কিত। বিদ্যালয়ের পাঠক্রমে অনেকগুলি বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকে।অনেক ক্ষেত্রেই প্রতিটি স্বতন্ত্র বিষয়কে অন্য বিষয় থেকে বিচ্ছিন্ন করে পাঠদানের চেষ্টা করা হয়।এতে শিক্ষার্থীর জ্ঞানের অখন্ডতা,সামগ্রিকতা,উপলব্ধি করার মাধ্যমে যে প্রজ্ঞার বিকাশ ঘটানোর কথা তা কার্যত বিকশিত করা সম্ভব হয় না।এর ফলশ্রুতিতে শিক্ষার মধ্যে কৃত্রিমতা,বিমুখতা, বিচ্ছিন্নতা ও খন্ড জ্ঞানের অবাঞ্চিত অনুপ্রবেশ ঘটে। বিষয়ের মধ্যে বিশেষীকরনকে মর্যাদা দিয়েও অন্যান্য বিষয়ের সম্পর্ককে খুঁজে বের করে।বিষয় বিচ্ছিন্নতাকে দূরীকরণ করা দরকার।জ্ঞানের সমস্ত শাখার মধ্যে যে একটি নিবিড় যোগাযোগ ঘনিষ্ঠতা রয়েছে তা শিক্ষার্থীকে উপলব্ধি করার সুযোগ দিতে হবে।এক বিষয়ের জ্ঞান অন্য বিষয়ের জ্ঞানকে উপলব্ধি করার ক্ষেত্রে পরিপূরক হিসেবে কাজ করে,কখনোই বাধা দান করে না।বিভিন্ন বিষয়ের জ্ঞান মধ্যে সামঞ্জস্য বিধান করে একটি সুসংহত ও অর্থপূর্ণ উপলব্ধিই হল শিক্ষার যথার্থ সার্থকতা।



Post a Comment (0)
Previous Post Next Post