Community Based Activists- FIRST AID

Community Based Activists- FIRST AID

Community Based Activists - FIRST AID

BENGALI VERSION||ENGLISH VERSION

Community Based Activists FIRST AID
FIRST AID

(*** ENGLISH VERSION FILE BELOW ARTICLE BY PDF FORMAT)

FIRST AID 
BENGALI VERSION -

1. ভূমিকা -

সাধারণভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা বলতে বোঝায় কোনো দুর্ঘটনাগ্রস্ত ব্যক্তিকে ডাক্তার দেখানোর পূর্বে সাধারণ অথচ প্রয়োজনীয় দ্রুত কিছু চিকিৎসা ও সেবা করার মধ্যে দিয়ে তাকে সামরিক স্বস্তি প্রদান করা।প্রাথমিক চিকিৎসার ইংরাজি প্রতিশব্দ হল " FIRST AID "।

            প্রাথমিক চিকিৎসা হল চিকিৎসার একটি অংশ ও প্রাথমিক পদক্ষেপ।প্রাথমিক চিকিৎসার স্রষ্টা হলেন ডাক্তার ফ্রেডিক এডমার্ক।তিনি ছিলেন একজন মার্শাল চিকিৎসক।তিনি প্রথম মনে করেন যে কোনো দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তিকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়ার আগে যাতে রোগীর কোনো স্বাস্থ্যের অবনতি না ঘটে তার জন্য প্রাথমিক চিকিৎসা করা প্রয়োজন।

2. FIRST AID এর অর্থ -

FIRST AID শব্দটির অর্থ বিশ্লেষণ করা হল -

F - FAST(দ্রুত বা তাড়াতাড়ি)

I - INVESTIGATION (দ্রুত দুর্ঘটনাগ্রস্ত ব্যক্তির ক্ষতস্থান পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা) 

R - RELIEF (আহত ব্যক্তিকে সামরিক স্বস্তি প্রদান করা) 

S - SYMPTOM(আঘাতের লক্ষণ নির্ধারণ করা)

T - TREATMENT (আঘাতের লক্ষণ অনুযায়ী চিকিৎসা করা)

A - ARRANGE (চিকিৎসার বন্দোবস্ত করা)

I - IMMEDIATE(অতি দ্রুত চিকিৎসার সূচনা করা)

D - DISPOSAL (আহত ব্যক্তিকে চিকিৎসালয়ে নিয়ে যাওয়ার বন্দোবস্ত করা)

3. প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ -

১. প্রাথমিক চিকিৎসা যিনি করছেন তিনি ডাক্তার নাও হতে পারেন।তাই প্রয়োজনীয় চিকিৎসা অতি দ্রুত শেষ করতে পারে বা হবে।

২. প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদানকারী ব্যক্তির উপস্থিত বুদ্ধি থাকা জরুরী।

৩. প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদানকারী ব্যক্তির ধীর ও স্থির মনোভাব হওয়ার প্রয়োজন। 

৪. দুর্ঘটনাগ্রস্ত ব্যক্তিকে মানসিকভাবে সুস্থ রাখতে হবে।

৫. আঘাতের লক্ষণ অনুযায়ী যেটুকু চিকিৎসা প্রয়োজন সেটুকু বাঞ্ছনীয়।

৬. আহত ব্যক্তির মূল চিকিৎসার যাতে কোনো রকমের সময় নষ্ট বা গাফিলতি না হয় সেই দিকে সতর্ক সৃষ্টি রাখতে হবে। 

৭. যত দ্রুত সম্ভব আহত ব্যক্তিকে চিকিৎসালয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

4. FIRST AID BOX -

বাড়িতে বা বিদ্যালয়ে আমাদের হাতের কাছে সাধারণত দুর্ঘটনার কথা মাথায় রেখে প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র ও অন্যান্য সামগ্রী যে বাক্সের মধ্যে রাখা হয়,তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা বা First Aid Box বলে।

                 সাধারণত এই বাক্সের থাকে তুলো, গজ, রোলার,ব্যান্ডেজ,টুর্নিকেট,ছুরি,কাঁচি,ব্লেড,লিউকোপ্লাস্ট,ডেটল,বেঞ্জিন,আয়োজিন,রেক্টিফায়ড স্পিরিট, ভিক্স, আয়োডেক্স,পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট লোশন, মারকিউরোক্রোম লোশন, বার্নল, সুথল, বোরোলিন, সাবান,দড়ি, পরিষ্কার কাপড়ের টুকরো ইত্যাদি দ্রব্য। প্রাথমিক চিকিৎসার বাক্সের উপরে ও পাশের দিকে লাল রঙের যোগ চিহ্ন বা রেড ক্রস দিয়ে রাখতে হয়।

5. প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ ও তার ব্যবহার -

১. তুলো - সাধারণত ক্ষতস্থান পরিষ্কার করার জন্য ও ড্রেসিং,ব্যান্ডেজ করার জন্য প্রয়োজন। 

২. গজ - ক্ষতস্থান চাপা দেওয়ার জন্য এটি প্রয়োজন।এটি দেখতে চৌকো আকারের। 

৩. রোলার ব্যান্ডেজ - আহত স্থানটি ভালোভাবে বাঁধার জন্য ব্যবহৃত করা হয়। 

৪. ব্যান্ডেজ - ক্ষতস্থানকে ধূলো-বালি থেকে রক্ষার জন্য এটি ব্যবহৃত করা হয়। 

৫. টুর্নিকেট - রক্তপাত বন্ধ করার জন্য বা সাপের কামড়ের স্থানের উপর রক্ত চলাচল বন্ধ করার জন্য এই উপকরণটি ব্যবহৃত হয়। 

৬. ছুরি,কাঁচি ও ব্লেড - গজ,ব্যান্ডেজ,দড়ি ইত্যাদি কাটার জন্য এই উপকরণগুলি ব্যবহৃত হয়। 

৭. লিউকোপ্লাস্ট - অল্প ক্ষতস্থানে তুলো,গজ বা ব্যান্ডেজ কে সঠিকভাবে আটকে রাখার জন্য লিউকোপ্লাস্ট ব্যবহার করা হয়।অনেক সময় মচকানো স্থানে বিশেষত আঙ্গুলে সরাসরি ব্যথা প্রশমনের জন্য লিউকোপ্লাস্ট জড়িয়ে রাখা হয়।

৮. ডেটল/স্যাভলন/সুথল - সাধারণত কাটা বা ছড়ার ক্ষতস্থানে পরিষ্কার করার জন্য তুলো বা গজের সাহায্যে এই উপকরণ গুলির যে কোনো একটি ব্যবহার করা হয়।

৯. বেঞ্জিন ও আয়োডিন - কাটা জায়গায় এটি ব্যবহৃত করা হয়।

১০. বার্নল - সাধারণত দেহের কোনো অংশ পুড়ে গেলে পোড়া স্থানে ব্যথা উপশমের জন্য বার্নল লাগানো হয়।

১১. পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট লোশান/ মারকিউরোক্রোম লোশান/ রেক্টিফায়েড স্পিরিট - এই উপকরণ গুলির ব্যবহারে ক্ষতস্থানে জীবাণু প্রতিরোধে করা সম্ভবপর হয়। 

১২. সাবান - ক্ষতস্থানে পাশে ধুলোবালি পরিষ্কার করার জন্য অল্প হ্মার যুক্ত সাবান ব্যবহার করা হয়।

১৩. দড়ি - সপদংশন চিকিৎসার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।

6. কয়েকটি প্রাথমিক চিকিৎসার সাধারণ পরিচয় -

১. সাধারণ কাটা/ সাধারণ হ্মত - 

অনেক সময় আমরা নিজের অসাবধানতায় ফলে পড়ে গিয়ে কেটে বা ছুঁড়ে যায়।সেই স্থানটিকে বলা হয় ক্ষতস্থান।আসলে মানবদেহের যে সমস্ত শিরা বা উপশিরায় আছে,তা কোনো একটি আঘাতপ্রাপ্ত হলে উৎপত্তি হয় এবং রক্তপাত হতে শুরু করে।দ্রুত রক্তপাত বন্ধ করতে না পারলে রোগ জীবাণু শরীরে প্রবেশ করে ধুলো বালি জমে পচন ধরতে পারে। 

• হ্মতের প্রকারভেদ -

সাধারণত আমাদের দেখা কয়েক রকম - 

  1. ইনসাইজড - ব্লেড,ছুঁড়ি,কাঁচি,কাচ ইত্যাদির আঘাত প্রাপ্ত হ্মত 
  2. কনটিউসড - হোঁচট খাওয়া বা থেঁতলে যাওয়ার আঘাত প্রাপ্ত হ্মত। 
  3. ল্যাসেরেটেড - জন্তু, জানোয়ারের বা মানুষের আঁচড়ে বা কামড় জনিত ক্ষত। 
  4. নাংচারড - লোহার শিক বা পেরেক জাতীয় দ্রব্যের আঘাত প্রাপ্ত হ্মত।
• প্রতিবিধান -

  • প্রথমে ক্ষতস্থানটি চেপে ধরে রক্তপাত বন্ধ করতে হবে। 
  • পরে ডেটল/সুথল/স্যাভলন বা রেক্টিফায়েড স্পিরিটে তুলো বা গজ ভিজিয়ে হ্মত স্থানটি পরিষ্কার করা।
  • যদি হ্মত স্থানের সংক্রমণ আটকানোর জন্য এরপর বিভিন্ন প্রকার অ্যান্টিসেপ্টিক ক্রিম বা লোশন হ্মত স্থানে লাগিয়ে দিতে হবে। 
  • তারপর যদি ক্ষতস্থানের রক্তপাত বন্ধ না হয় তাহলে গজ বা তুলো দিয়ে ক্ষতস্থানটি চাপা দিয়ে ব্যান্ডেজ বাঁধতে হবে। 
  • যদিও তারও সমস্যার সমাধান না হয় তাহলে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসালয়ে স্থানান্তরের ব্যবস্থা করতে হবে। 
অনেক সময় গ্রাম্য অঞ্চলে রক্তপাত বন্ধের জন্য ক্ষতস্থান পরিষ্কার জল দিয়ে ধুয়ে গাঁদা পাতার রস বা দুর্বার রস ক্ষত স্থানে লাগিয়ে দেওয়া হয়। 

২. রক্তক্ষরণ -

দেহের কোনো অংশ যদি গভীর ভাবে কেটে যায় বা রক্তবাহী নালী (রক্তজালিকা,শিরা,ধমনির) যদি সংযোগ ছিন্ন হয় তবে ক্ষতস্থান দিয়ে বেগে রক্ত বার হয়।এই রক্তহ্মরণ অতিদ্রুত বন্ধ করার দিকে নজর দিতে হবে।

• রক্তক্ষরণের প্রকারভেদ -

১.দেহের রক্ত জালিকা কাটলে কাটলে রক্ত চুঁইয়ে চুইয়ে পড়ে।

২.দেহের শিরা কাটলে লাল কালচে রক্ত গল গল করে বের হয়।

৩.ধমনি কাটলে উজ্জ্বল লাল রক্ত ফিনকি দিয়ে বের হয়। 

• প্রতিবিধান - 

  • প্রথমে হ্মতস্থানটি আঙুল দিয়ে চেপে ধরতে হবে বেশ কিছুক্ষণ,একে প্রত্যহ্ম চাপ দেওয়া বলা হয়।
  • প্রত্যক্ষ চাপে রক্তক্ষরণ বন্ধ না হলে সংশ্লিষ্ট অঙ্গকে নিশ্চল রেখে অর্থাৎ প্রেশার পয়েন্ট এ পরোক্ষ চাপ দিতে হবে। 
  • প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ চাপে রক্তক্ষরণ বন্ধ না হলে ক্ষত স্থানের কিছু উপরে টুর্নিকেট বাঁধন দেওয়া যেতে পারে। 
  • ক্ষতস্থানে জীবাণু সংক্রমণ রোধ করার জন্য অ্যান্টিসেপটিক ক্রিম বা লোশন ব্যবহার করে ক্ষতস্থানটি ভালো ভাবে ড্রেসিং করে দিতে হবে।
  • অত্যাধিক রক্তক্ষরণ হলে রোগীকে তৎক্ষণাৎ চিকিৎসালয়ে নিয়ে যাওয়া ও প্রতিষেধক দেওয়া বন্দোবস্ত করতে হবে। 
  • রক্তপাতের স্থানে বরফ ব্যবহার করতে হবে।
৩. মচকে যাওয়া - 

মূলত আমাদের নিজেদের অসাবধানতায় জন্য দেহের কোনো অঙ্গ বা প্রত্যঙ্গ স্বাভাবিক সঞ্চালনের পরিবর্তে মোচড় খেয়ে গেলে ওই স্থানটিতে ব্যথার সৃষ্টি হয়।এই বিষয়টিকেই মচকে যাওয়া অর্থে ধরে নেওয়া হয়। সাধারণত হাত বা পায়ের আঙ্গুল কবজি,গোড়ালি ইত্যাদি মচকে যায়। 

• লক্ষণ -

  1. আঘাত স্থানে ব্যথা অনুভূত হবে। 
  2. সন্ধিস্থল ফুলে যাবে।
  3. আহত স্থল বিবর্ণ হয়ে নীল বা লাল আকার ধারণ করবে।
  4. স্বাভাবিকভাবে নড়চড় করলে ব্যথা অনুভূত হবে।
• প্রতিবিধান - 

  • আহত স্থানটিতে বরফ বা ভিজে কাপড় বা ন্যাকরা লাগাতে বা জড়িয়ে রাখতে হয়। 
  • আহত স্থানটিতে চুন-হলুদ গরম করে লাগালে ব্যথার উপশ্রম ঘটে। 
  • হাতের কাছে ব্যথা উপশ্রমকারী স্প্রে বা মলম ব্যবহার করতে হবে। 
  • মচকানো স্থানটি যতটা সম্ভব বিশ্রাম পায় সেদিকে অবশ্যই বিশেষ নজর রাখতে হবে। 
  • এগুলির সাহায্য নিয়ে ব্যাথা প্রশমন না ঘটলে বিষয় সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের পরামর্শ রাখতে হবে।
৪. হাড় সরে যাওয়া বা স্থানচ্যুতি -

অসাবধানতায় পড়ে গেলে দেহের কোনো স্থানে হাড় সরে গেলে বা ভেঙে গেলে প্রচন্ড যন্ত্রণা হয় এবং স্থানটি সঙ্গে সঙ্গেই ফুলে ওঠে।  

• প্রতিবিধান -

  1. সামরিক শক্তির জন্য আহত স্থানটি কিছুহ্মন বরফ দিতে হবে ।
  2. স্থানটি যাতে একেবারেই আনড়ে থাকে সেজন্য ক্রেপ ব্যান্ডেজ বেঁধে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসালয়ে স্থানান্তরিত করতে হবে। 

৫. অজ্ঞান অবস্থায় -

কোনো ব্যক্তির দৈহিক বা মানসিক আঘাতের লাগার ফলে অথবা অন্য কোনো অভ্যন্তরিন বা বাহ্যিক কারণে সামরিক অচৈতন্য অবস্থা হয়।সাধারণভাবে একই আমরা অজ্ঞান হয়ে যাওয়া বলি।এহ্মেত্রে মানুষের মস্তিষ্ক সহ অন্যান্য অঙ্গ প্রত্যঙ্গের স্থায়ীর কাজ সাময়িক স্তব্ধ হয়ে যায়।

• প্রতিবেদন - 

  • রোগীকে যতটা সম্ভব খোলা জায়গায় চিৎ করে শুইয়ে রাখতে হবে।
  • তার জামাকাপড় যতটা সম্ভব আলগা করে দিতে হবে।
  • রোগীর চোখে মুখে ঠান্ডা জলের ঝাপটা দিতে হবে।
  • রোগীর চারিপাশে অযথা ভিড় করা চলবে না।
  • দ্রুত রোগীকে চিকিৎসালয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

৬. বৈদ্যুতিক শক - 

কোনো ব্যক্তি নিজের অসাবধানতায় বা অন্য কোনো কারণবশত যদি ইলেকট্রিক তার শরীরে সরাসরি স্পর্শ করে,তাহলে তাকে আমরা শক খাওয়া বলে থাকি।

• প্রতিবিধান -

  • ঘটনাস্থলে উপস্থিত অন্য কোনো ব্যক্তি প্রথম কর্তব্য হল বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া। 
  • কোনো কারণে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা না গেলে বড়ো এবং শুকনো লাঠির আঘাতে সেই ব্যক্তিকে বিদ্যুতের কবল থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিতে হবে।
  • আহত ব্যক্তির দেহে কোনো বাঁধন থাকলে তা যতটা সম্ভব আলগা করে দিতে হবে।
  • এরপর আক্রান্ত ব্যক্তিকে গরম চা,কফি,দুধ ইত্যাদি খাওয়াতে হবে।
  • এরপর চিকিৎসালয় নিয়ে গিয়ে আহত ব্যক্তির দ্রুত সেবার ব্যবস্থা করতে হবে।

৭. সর্পদংশন -

নিজের অজানতে বা জানতে কোনো সাপের সামনাসামনি হলে বা অসাবধানতার দরুন সর্পদংশন হয়। 

• লক্ষণ - 

সাপের দংশন মূলত দু'রকমের হয়।

  1. যদি কোনো বিষধর সাপে দংশন করে তাহলে দুই সেন্টিমিটার অন্তর দুটি ক্ষতচিহ্ন দেখতে পাওয়া যায়। 
  2. আবার যদি কোনো বিষহীন সাপে দংশন করে তাহলে কামড়ানো স্থানের উপর নিচে একাধিক ক্ষতচিহ্নের দেখা যায়। 
• প্রতিবিধান -

  • সাপের কাটা রোগীর ক্ষতস্থানের উপরের দিকে অন্তত একহাত দুরত্বে তিনটি বাঁধন দিতে হবে।
  • এরপর বাঁধনের নীচের দিকে কোনো স্থানের নতুন ধারালো ব্লেড বা ছুঁরি দিয়ে কেটে দিতে হবে। 
  • বিষহীন সাপে কামড়ালে স্থানটি ভালোভাবে ডেটল জল দিয়ে বা পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট গোলা জল দিয়ে ধুয়ে ক্ষতস্থানে মারকিউরোক্রোম লাগানো যেতে পারে। 
  • বিষধর সাপে কামড়ালে টুর্নিকেট বাঁধন দিয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে স্থানান্তরিত করতে হবে। 
  • স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার মধ্যবর্তী সময় প্রয়োজনে বাঁধন আলগা করে বা বাঁধনের স্থান  পরিবর্তন করে দিতে হবে।
  • সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রোগীকে কখনোই ঘুমাতে দেওয়া যাবে না এবং তাকে সাহস জুগিয়ে যেতে হবে। 

৮. আগুনে পোড়া -

আমাদের অসাবধানতায় অনেক সময় জামা কাপড়ে আগুন লেগে শরীরের অংশ বিশেষ পুড়ে বা ঝলসে যায়। 

• প্রতিবিধান -

  • প্রথমে ছোটাছুটি বা দৌড়াদৌড়ি না করে আগুন নেভানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
  • দ্রুত গায়ে মোটা কম্বল বা লেপ জাতীয় কিছু চাপা দিয়ে অথবা তাকে মাটিতে শুইয়ে গড়াগড়ি দিয়ে আগুন নেভাতে হবে। 
  • সাবধানে গায়ে জামাকাপড় খুলে দিতে হবে। জামাকাপড়ের কোনো অংশ গায়ে লেগে থাকলে জোর করে না তুলে আস্তে আস্তে তুলে দিতে হবে।
  • গায়ের ফোসকা পড়লে তা কখনোই গেলে দেওয়া যাবে না। 
  • অল্প পোড়া হলে চুনের জল বা নারকেল তেল বা আলুবাটার রস লাগানো যেতে পারে।
  • পোড়া একটু বেশি হলে বার্নল বা স্পিরিট  লাগালে উপকার হয়। 
  • পোড়াস্থানে বাতাস লাগানো উচিত নয়, তাই ওই স্থানটি হালকা কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে অথবা হালকা ব্যান্ডেজ বেধে দিতে হবে। 
  • এরপর রোগীর দ্রুত আরোগ্যের জন্য চিকিৎসালয়ে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে। 

৯. অন্যান্য -

  1. গরম জল,তেল বা ভাতের গরম ফ্যানে হওয়া ফোসকা - সাধারণত কোনো ব্যক্তির উপর গরম জল,তেল বা ভাতের গরম ফ্যান শরীরের কোনো অংশে পড়লে ফোসকা দেখা যায়।তাহলে পূর্বোক্ত পদ্ধতি (আগুনে পুড়ে গেলে) অনুসরণ করে প্রাথমিক চিকিৎসা করতে হবে।
  2. অ্যাসিড পোড়া - কোনো মানুষের শরীরে অসাবধানতায় অ্যাসিড পড়ে পুড়ে গেলে পোড়া স্থানে খাবার সোডা জলে গুলে লাগিয়ে দিতে হয়। কিন্তু কোনো ব্যক্তি যদি নিজের ইচ্ছা অ্যাসিড খেলে অবিলম্বে তাকে নিকটবর্তী চিকিৎসালয়ে নিয়ে যেতে হবে। 
  3. হ্মারে পুড়া - কোনো মানুষের শরীরের উপর হ্মারে পুড়ে গেলে সাধারণত ভিনিগার বা লেবুর রস হ্মত স্থানে লাগিয়ে দেওয়া হয়।এতে বেশ আরাম বোধ হয়। 

১০. জলে ডোবা -

সাধারণত কোনো ব্যক্তি জলে ডুবে গেলে তার ক্ষেত্রে যে সমস্ত প্রাথমিক চিকিৎসা করা হয়।

• প্রতিবিধান -

  • প্রথমে সেই ব্যক্তিকে পেট থেকে জল বের করতে হবে, এক্ষেত্রে পা ধরে মাথা নিচের দিকে ঝোলানো যায় অথবা কোমর ধরে মাথা ও হাত একদিকে পা একদিক ঝুলিয়ে ধরলে ও জল বেরিয়ে আসে।
  • উপরের পদ্ধতি দুটি সম্পন্ন করতে না পারলে রোগীকে উপুর করে শুইয়ে পেটের নীচে বালিশ চাপা দিয়ে নিচে চাপ দিলে মুখ থেকে জল বেরিয়ে আসে। 
  • পেট থেকে জল বেরিয়ে এলে বেরিয়ে এলে রোগীর কৃত্রিম শ্বাস প্রশ্বাস চালানোর ব্যবস্থা করতে হবে। 
  • তার ভিজে জামা কাপড় জামা কাপড় ছাড়িয়ে শুকনো জামা কাপড় পরাতে হবে এবং সারা দেহে কম্বল দিয়ে ঢেকে দিতে হবে।প্রয়োজনে হাত বা পায়ের তলায় গরম সেঁক দেওয়া হয়।
  • এরপর নিকটবতী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রোগীকে স্থানান্তরিত করতে হবে।

১১. চোখে কিছু পড়লে - 

চোখ মানুষের অমূল্য সম্পদ।নানা কারণে চোখ দুর্ঘটনার কবলে পড়তে পারে,চোখে ধুলো বালি পড়তে পারে।কাজ করার সময় কিছু ছিটকে এসে চোখে বিঁধতে পারে, কোনো রাসায়নিক পদার্থ চোখে পড়তে পারে। 

• প্রতিবেদন -

  • কখনোই চোখ কচলানো যাবে না। 
  • চোখে জলের ঝাপটা দিতে হবে। 
  • রোগীকে আলোর দিকে মুখ করে বসিয়ে আলতোভাবে চোখের দুটি পাতা খুলে দেখতে হবে।চোখে কোনো বস্তু লেগে থাকলে রুমালের কোনো ভিজিয়ে আলত ভাবে ব্রাশ করার মতো লাগিয়ে বস্তুটিকে তুলে নিতে হবে।
  • রাসায়নিক কিছু চোখে পড়লে দুধ দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। 
  • তাড়াতাড়ি ডাক্তার বা হাসপাতালে পাঠাবার ব্যবস্থা করতে হবে। 

১২. কানে কিছু গেলেে -  

কোন ব্যক্তি বা মানুষের অজানতে তার কানে পোকামাকড় ঢুকতে পারে। 

• প্রতিবিধান - 

  • প্রাথমিকভাবে কানে পোকামাকড় ঢুকে গেলে সরিষার তেল বা অলিভ অয়েল অল্প পরিমাণ ঢেলে দিলে পোকা মরে যায় এবং বের হয়ে আসে।
  • তাছাড়াও যদি মার্বেল জাতীয় কোনো কিছু ঢুকে গেলে নড়াচড়া না করে দ্রুত ডাক্তারের নিকট বা হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

7. বিদ্যালয়ে স্তরে প্রাথমিক চিকিৎসার উদ্দেশ্য -

  • শিক্ষার্থীদের মধ্যে সচেতনতা বোধ জাগ্রত করা।
  • শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে জ্ঞান প্রদান করা। 
  • শিক্ষার্থীদের মধ্যে বুদ্ধিমত্তা,সাহস প্রত্যুৎপন্নমতিত্ব ধারণার বিকাশ ঘটাযনো। 
  • শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘবদ্ধভাবে কাজ করার মানসিকতা সৃষ্টি করা। 
  • শিক্ষার্থীদের মধ্যে নেতৃত্ব দানের ক্ষমতা গড়ে তোলা। 
  • শিক্ষার্থীদের মধ্যে চেতনা ও মূল্যবোধের ধারণার জাগ্রত করা। 
8. বিদ্যালয় স্তরে প্রাথমিক চিকিৎসার উপযোগিতা -

  1. প্রাথমিক চিকিৎসার যে কোনো মানুষের যে কোনো সময় প্রয়োজন হতে পারে।তাই শিক্ষার্থীদের এই বিষয়ে সচেতন করা প্রয়োজনীয়। 
  2. প্রাথমিক চিকিৎসা বিদ্যালয়ের আনুষঙ্গিক সমাজ ভিত্তিক কার্যাবলীর একটি আবশ্যিক অঙ্গ হিসেবে বিবেচিত হয়। 
  3. বিদ্যালয়ে কিংবা বাড়িতে যে কোনো স্থানে দুর্ঘটনা হতে পারে।সেক্ষেত্রে প্রাথমিক চিকিৎসার জ্ঞান থাকা জরুরি। 
  4. বিপদের বন্ধুই প্রকৃত বন্ধু।এই সামাজিক কাজের বহিঃপ্রকাশ ঘটে শিক্ষার্থীদের মধ্যে। 
  5. সামগ্রিক কর্মের মধ্যে দিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে চেতনা ও মূল্যবোধের জাগ্রত হয়। 
  6. বিভিন্ন ডাক্তারি উপকরণ ও ওষুধ ব্যবহারে শিক্ষার্থীরা পারদর্শিতা লক্ষ্য করা যায়। 
  7. দুর্ঘটনাগ্রস্ত ব্যক্তির বা রোগীর সেবার মধ্যে দিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সহানুভূতি ও সাম্যের মনোভাব প্রকাশ পায়। 
  8. শিক্ষার্থীদের শৃঙ্খলিত করতে সাহায্য করে।
  9. শিক্ষার্থীরা অতিদ্রুত অথচ শান্ত মস্তিষ্কে এবং বিনা দ্বিধায় যদি প্রাথমিক চিকিৎসার কাজটি সম্পন্ন করতে পারে,তবে তাদের বুদ্ধিমত্তা,সাহস প্রত্যুৎপন্নমতিত্ব ইত্যাদি গুনাবলী বিকশিত হয়।
  10. বিপদের সময় মাথা ঠান্ডা রেখে কাজ করার প্রয়োজনীয় শৃঙ্খলিত শিহ্মা শিক্ষার্থীর এর মাধ্যমেই পেয়ে থাকে।
9. উপসংহার -

পরিশেষে বলা যেতে পারে একটি বিদ্যালয়ে অনেক শিহ্মার্থী পঠন-পাঠন করতে আসে।প্রতিদিন বিদ্যালয়ের আরম্ভ থেকে শেষ পর্যন্ত তারা একসাথে পড়া,খেলা ও খাওয়া করে থাকে।বিদ্যালয় কিংবা বাড়িতে যে কোনো স্থানে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।তাই প্রতিটি বিদ্যালয় স্তরে প্রাথমিক চিকিৎসার বাক্স থাকা উচিত।শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের আঘাতের জন্য নয়,তাদের প্রকৃত জ্ঞান পাওয়ার জন্য থাকা উচিত।যাতে কোনো বিপদে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর যাতে প্রাথমিক চিকিৎসার মাধ্যমে সাময়িক স্বস্তি প্রদান করতে পারে আহত ব্যক্তিকে।

CLICK HERE -

ENGLISH VERSION PDF FILE








Post a Comment (0)
Previous Post Next Post