Role Of Language In Children's Intellectual Development And Learning

Role Of Language In Children's Intellectual Development And Learning

Role Of Language In Children's Intellectual Development And Learning

BENGALI VERSION||
Role Of Language In Children's Intellectual Development And Learning
Role Of Language In Children's Intellectual Development And Learning

Role Of Language In Children's Intellectual Development And Learning

BENGALI VERSION||

1. ভূমিকা -

একটি মানব শিশুর জন্মের পর থেকে সময় অতিক্রম এর সঙ্গে সঙ্গে তার বিভিন্ন দিকের বিকাশ প্রক্রিয়া চলতে থাকে। শিশুর জন্মের পর প্রথমে বড়োদের অনুকরনে কিছু কথা বলতে চেষ্টা করে,ধীরে ধীরে একটি দুটি করে কথা বলতে শুরু করে। শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ঘটতে থাকে। শিশুর মধ্যে নানান বিকাশের লক্ষণ দেখা যায়। এইসব বিকাশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো বৈদিক বিকাশ বা মানসিক বিকাশ শিশুর সংবেদন ও প্রত্যক্ষণের বিকাশ ধারণার বিকাশ যুক্তি শক্তির বিকাশ স্মৃতি ও কল্পনার চিন্তার বিকাশ বুদ্ধি ও সৃজনশীলতার বিকাশ প্রভৃতি। শিশুর বিভিন্ন বিকাশে বৌদি বিকাশ একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক এবং ভাষা বিকাশ ও শিখনের গুরুত্ব অপরিসীম।

2. বৌদ্ধিক বিকাশ -

শিশুদের জন্মের পর থেকে বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তারা প্রকৃতি,বাবা-মা,আত্মীয়-স্বজন,প্রতিবেশী,বন্ধু-বান্ধব, শিক্ষক-শিহ্মিকা প্রমুখের কাছ থেকে বিভিন্ন অভিজ্ঞতা লাভ করে এবং এর ফলে তাদের মধ্যে ধীরে ধীরে বিভিন্ন বিকাশ গড়ে ওঠতে শুরু করে। শিশুর মধ্যে সংবেদন ও প্রত্যক্ষণের বিকাশ,ধারনার বিকাশ,যুক্তি শক্তির বিকাশ, স্মৃতি ও কল্পনা বিকাশ,চিন্তনের বিকাশ,বুদ্ধি ও সৃজনশীলতার বিকাশ প্রভৃতি। এই সমস্ত বিকাশকেই একত্রে বৌদ্ধিক বিকাশ বলে।পিয়াজেঁর মতে জ্ঞান মূলক সংগঠনের একক স্কিমার বিস্তারই হল বৌদ্ধিক বিকাশ।

3. শিশুর ভাষা -

একটি শিশুর জন্মের পর থেকে ভাষা অর্জনে শিক্ষালাভ করে।প্রতিটি শিশু তার মাতৃভাষায় মাধ্যমে যোগাযোগ স্থাপন করে,নিজের অনুভূতি প্রকাশ করে ও সামাজিক ভাবে সংযুক্ত হতে পারে।চার বছরের একটি শিশু তার ভাষাজাত ধ্বনির প্রতিফলন সম্পর্কে সচেতন থাকে এবং তার ভাষার মাধ্যমেই সে তার বাস্তবকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।এমনকি এও পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে যে একটি তিন বা চার বছরের শিশু একই সঙ্গে দুটি বা তিনটি ভাষার সমান সাবলীল,এমনকি তারা সেই ভাষা কোন কোন নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হবে সে সম্পর্কে সজ্ঞাত এবং বিভিন্ন ভাষাকে পৃথকীকরণ করার বিষয়ে সক্ষম।

4. শিশুর বৌদ্ধিক বিকাশে ভাষার ভূমিকা -

দুটি গ্ৰন্থের ধারণার আলোচনার,ব্যতিরেকে  শিশু বৌদ্ধিক বিকাশে ভাষার ভূমিকা সম্পর্কে আলোচনা অপূর্ণ থেকে যায়।প্রথম বইটি হল - জাঁ পিয়াজেঁর রচিত " The Language and Thought of Child(1926) ও দ্বিতীয় বইটি লেভ ভাইগটস্কি রচিত " Thought and Language (1962)।পিয়াজেঁ ও ভাইগটস্কি উভয়েই শিশুর কার্যক্রম,মানসিকতা সম্পর্কে গবেষণা করেছেন, পর্যবেক্ষণ করেছে এবং শিশুর জ্ঞানীয় ও ভাষা উন্নয়ন সম্পর্কে তাদের বিশ্লেষণ প্রকল্পিত করেছেন।দুটি বই এ শিশুর ভাষার বিকাশের উপর একটি ধাতুগত ধারণাকে ব্যক্ত করে এবং দুটি বই একই শিক্ষাগত পরিকল্পনা ও বিনিময়ের উপর একটি দীর্ঘকাল ব্যাপী প্রভাব বিস্তৃত রয়েছে।

5. শিশুর বৌদ্ধিক বিকাশের ভাষার বিভিন্ন দিক -

একটি শিশুর বৌদ্ধিক বিকাশের ভাষার ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শিশুর বৌদ্ধিক বিকাশের বিভিন্ন দিককে কীভাবে ভাষা প্রভাবিত করে তা উল্লেখ করা হল -

১. চিন্তা শক্তির বিকাশ -

ভাষা ও চিন্তাশক্তি দুই হল পরিপূরক।ভাষা মাধ্যমে চিন্তা শক্তির বিকাশ পায় আবার চিন্তা শক্তির মাধ্যমে ভাষার বিকাশ পায়। 

২. কল্পনা শক্তির বিকাশ -

শিশুর শিক্ষার যে কোনো দিক তা সে সাহিত্য হোক, কিংবা বিজ্ঞান হোক বা সমাজবিজ্ঞানী হোক সমস্ত দিকেই একটি কল্পনার জগৎ আছে।শিক্ষার্থীর স্বাধীন কল্পনার জগৎকে তার নিজের মন দিয়ে গড়ে তুলতে চায়। এক্ষেত্রে ভাষা হচ্ছে তার অন্যতম প্রধান অবলম্বন।

৩. আত্মশক্তির বিকাশ - 

একটি ব্যক্তি তার ব্যক্তিত্ব প্রকাশ পায় আত্মশক্তি বিভিন্ন উপাদান গুলির বিকাশের মধ্যে দিয়ে।শিক্ষার্থী তার শিখনকে যথার্থ ভাবে গড়ে তুলতে সক্ষম হয় আত্মশক্তির দ্বারাই।তার মুক্ত চিন্তা,যুক্তিপূর্ণ ভাবনা ও তার উপস্থাপনাকে সার্থক করে তুলতে সক্ষম হয় ভাষার মাধ্যমেই। 

৪. সৃজনশীলতার বিকাশ ও প্রতিষ্ঠা -

শিশু শিক্ষার্থী ভাষার মাধ্যমেই তার নিজের মধ্যে সৃজনশীল হ্মমতাকে জাগিয়ে তোলা, বিকশিত করে তোলা। 

৫. শিক্ষার্থী শ্রবণ,কথন,পঠন ও লিখনের সহায়তা দান -

মানুষের ভাব প্রকাশ ও শিক্ষার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যমেও হল ভাষা।স্বাভাবিকভাবে শিক্ষার্থীর নিকট ভাষাগত দক্ষতা অর্জনটি একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য।শিক্ষার্থীর ভাষাগত দক্ষতার হ্মেত্রে চারটি উল্লেখযোগ্য দিক হল - শ্রবণ,কথন,পঠন ও লিখন। নিয়মিতভাবে ভাষা চর্চার মাধ্যমে শিক্ষার্থী ধীরে ধীরে ভাষাগত দক্ষতা অর্জন করে থাকে।ভাষাগত দক্ষতা ক্ষেত্রে অনুসৃত নীতিগুলি এই প্রসঙ্গে উল্লেখ করা হল -

i. শ্রবণ দক্ষতা অর্জন -

কোনো বক্তব্য শোনার জন্য শিক্ষার্থীর ধৈর্য,আগ্রহ, মনোযোগ,আন্তরিকতা ও সহানুভূতি সহকারে শ্রবণ প্রয়োজন।বক্তাকে কথা বলার মধ্যে কোনো রূপ বাধা প্রদান না করার কর্তব্য।শিক্ষার্থী শ্রোতার মনোযোগের সঙ্গে সঙ্গে বক্তার বৃক্ততায় থাকতে হবে স্পষ্টতা, সংক্ষিপ্ততা,সহজ সরল উপস্থাপনা।শুদ্ধ ও স্পষ্ট উচ্চারণ,ধ্বনি সমষ্টির যথাযথ প্রয়োগ,উপযুক্ত শব্দ চয়ন ও শব্দ প্রয়োগ বাঞ্ছনীয়।

ii. কথন দক্ষতা অর্জন -

কথা বলার ক্ষেত্রেও দক্ষতা অর্জন শিক্ষার্থীর নিকট জরুরি।সাধারণভাবে চলিত ভাষায় সঠিকভাবে উচ্চারণের দ্বারা স্পষ্টভাবে কথা বলতে পারা,ব্যক্তিগত অনুভূতি,অভিজ্ঞতা বা কোনো ঘটনার বর্ণনা দিতে পারা,অন্যের সঙ্গে সাবলীল ভাবে কথা বলা,নিজের ভাবনাকে অন্যের নিকট যথার্থভাবে তুলে ধরতে পারাকে কথা বলার দহ্মতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।কথা বলার ক্ষমতা বা কথন দক্ষতা শিক্ষার্থীকে সহজেই সামাজিক পরিবেশের সাথে অভিযোজিত হতে সাহায্য করে।

iii. পঠন দক্ষতা অর্জন -

সহজ স্বচ্ছন্দভাবে পাঠের বিষয়বস্তুকে উপস্থাপিত করা বা সাবলীলভাবে পাঠ করতে পারাও শিক্ষার্থীর শিক্ষার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য।পঠন দহ্মতা অর্জন বলতে বোঝায় শিক্ষার্থীর পাঠ্যপুস্তক বা অন্য কোনো লিখিত বিষয়কে শুদ্ধভাবে,স্পষ্ট উচ্চারণ করতে পারে,স্বাভাবিক স্বচ্ছন্দ গতিতে আবৃত্তি করতে পারা,গঠিত বিষয়বস্তুকে সাধারণ শ্রবণ যোগ্য করে অন্যের নিকট প্রকাশ করতে পারা,পঠন দক্ষতা অর্জনের দ্বারা শিক্ষার্থী তার শিখনের কাজকে অনেক বেশি ত্বরান্বিত ও কার্যকরী করে তুলতে পারে।

iv. লিখন দক্ষতা অর্জন - 

শিখনের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শর্ত হলো লিখন দক্ষতার অর্জন করা।লিখন দক্ষতা বলতে বোঝায় শুদ্ধভাবে,স্পষ্ট ও পরিচ্ছন্ন ভাবে লিখতে পারা, সঠিক ভাবে বাক্যের নির্দিষ্ট স্থানে যতি চিহ্ন ব্যবহার করতে পারা ও পাঠ্যপুস্তকে ব্যবহৃত শব্দ ও বাক্যকে শুদ্ধ বানানে অথবা অন্য কোনো বিকল্প পরিচিতি শব্দ দিয়ে লিখতে পারা।শ্রুতি লিখনে স্বচ্ছন্দ হয়ে ওঠা লিখন দক্ষতার অন্তর্ভুক্ত বলে বিবেচনা করা হয়। 

6. শিশুর বৌদ্ধিক বিকাশের ভাষার তত্ত্ব -

১. আচরণবাদী তত্ত্ব -

এই তত্ত্ব অনুসারে ভাষার বিকাশ ঘটে প্রবলনের ফলে। বড়োরা যখন ছোটোদের সঙ্গে কথা বলে তখন শিশুরা তার অনুকরণ করতে চেষ্টা করে।যখন শিশুর উচ্চারণ করা শব্দটি বড়োরা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অনুমোদন করে তখন তা স্থায়ী আচরণে রূপান্তরিত হয়।শিশুরা কথা বলার সময় সহজ ও শিশুদের উপযোগী ভাষা প্রয়োগ করা হয়।এর ফলে শিশুরা কথা শেখা সুবিধাজনক হয়।কিন্তু অনেক গবেষনা সত্ত্বেও এই মতের সত্যতা নিশ্চিত ভাবে প্রমাণিত হয় নি।তাছাড়াও এই মত অনুযায়ী বৌদ্ধিক বিকাশের সঙ্গে ভাষার কোনো সম্পর্ক পাওয়া যায় না। 

২.  নোয়াম চমস্কির সহজাত ভাষা আত্তীকরণ প্রক্রিয়া -

এই তত্ত্বের অনুসারে ভাষা ব্যবহার মানুষের একটি অনন্য ক্ষমতা।প্রত্যেক মানুষ জন্মগতভাবে বা জিনগতভাবে সহজাত ভাষা আয়ত্ত করার এক ধরনের কৌশল নিয়ে জন্মায়।সেইজন্য জন্মের পর থেকেই শিশুরা শব্দের প্রতি আকৃষ্ট হয় এবং অবিলম্বে অন্যদের কথা বলার শব্দকে অন্য সমস্ত শব্দ থেকে বিচ্ছিন্ন করে শুনতে চেষ্টা করে এবং দ্রুত শিশুদের ভাষার দক্ষতা বিকাশ লাভ করে। তবে এই তত্ত্ব অনুযায়ী বৌদ্ধিক বিকাশ ও ভাষার বিকাশ প্রত্যক্ষভাবে সম্পর্কিত নয়। 

৩. পিয়াজেঁর প্রজ্ঞামূলক বিকাশের তত্ত্ব -

পিয়াজেঁর তাঁর তত্ত্বে দেখিয়েছেন জন্মের পর থেকে উত্তর কৈশোর কাল পর্যন্ত কিভাবে চিন্তা ও ধারণার বিকাশ ঘটে।বাইরের জগৎকে জানা এবং বোঝার জন্য প্রতিটি শিশুর ব্যবহৃত কৌশল চারটি পর্যায়ের মধ্যে দিয়ে অগ্রসর হয়।প্রথম দিকে মূর্ত বস্তু ও সক্রিয় তার ভিত্তিতে শুরু হয়ে ধাপে ধাপে শেষ পর্যন্ত যৌক্তিক চিন্তা শিশুকে বাইরের জগৎ সম্পর্কে ধারণা গঠন ও ব্যাখ্যা করতে সহায়তা করে।ভাষা ও চিন্তা বিকাশ সমান্তরাল ব্যক্তি যে ধারনার যৌক্তিক সংগঠন গড়ে তোলে তার সঙ্গে ভাষার সম্পর্ক গভীর।সুতরাং পিয়াজেঁর তত্ত্ব অনুযায়ী শিশুর প্রজ্ঞামূলক বিকাশ তথা বৌদ্ধিক বিকাশ ও ভাষা বিকাশের সঙ্গে সম্পর্কিত। 

৪. লিও বাইগটস্কির সামাজিক বিকাশ তত্ত্ব - 

তার মতে প্রজ্ঞামূলক বিকাশ ঘটে বিশেষ একটি কৃষ্টির প্রেহ্মাপটে সামাজিক মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে।প্রজ্ঞামূলক বিকাশের প্রাথমিক বিকাশ ঘটে সমাজায়ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এবং পরে তা ব্যক্তিগত প্রজ্ঞায় পরিণত হয়। যেহেতু ভাষা সামাজিক আদান প্রদানের প্রধানতম বাহন এবং নানা কুষ্টির ভেসে এই আদান-প্রদানের রকমফের ঘটে, সেহেতু ভাষা বিকাশের ক্ষেত্রেও কুষ্টিগত ও ব্যক্তিগত তারতম্য হয়।

                         তার মতে প্রথমত ভাষা শিশুর কাছে বিষয় যা শুধুমাত্র সামাজিক আদান প্রদানের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।কিন্তু ক্রমশ ভাষা তার নিজের ব্যক্তিগত আচরণ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য নিজের মনে কথা বলার মাধ্যমে একটি বিশেষ হাতিয়ার হয়ে ওঠে।ক্রমশ এই আত্মলম্বন নিজের মনে নিজের আচরণ নিয়ন্ত্রণ ও ইচ্ছা অনিচ্ছা প্রকাশ করার ক্ষেত্রেও ব্যবহার হতে থাকে। ক্রমশ আত্মকথন শিশুর চিন্তাশক্তির বিকাশ ঘটায় কারণ শিশুর চিন্তা আর আত্মকথন প্রায় সমার্থক। এইভাবে সামাজিক প্রেক্ষাপট থেকে ভাষার মাধ্যমে শিশুর বৌদ্ধিক বিকাশ পরিণত হয়।শিহ্মার ক্ষেত্রে এই তত্ত্বের গুরুত্ব বাইগটস্কির মৃত্যুর 60 বছর পর ধীরে ধীরে স্বীকৃতি পেতে শুরু করে।

৫. মিথস্ক্রিয়া মূলক তত্ত্ব -

এই তত্ত্বের মতে তাত্ত্বিকরা মনে করেন,ভাষা সঠিকভাবে ব্যবহার করলে যে প্রতি সংকেত পাওয়া যায় তার ফলে শিশু তার স্মৃতিতে কথাটি তথ্য জারনের কৌশল (যেমন Rehearsal প্রয়োগ করে সংরক্ষন করে এবং ধীরে ধীরে সমস্ত সংরক্ষিত ভাষা সংঘটিত হয়ে ভাষা ব্যবহারের ভিত্তি তৈরি করে)।

       মিথস্ক্রিয়া মূলক তত্ত্বের আর একটি মত, সামাজিক কথোপকথনের মাধ্যমে অর্থাৎ কথার সঙ্গে শিশুর প্রতিক্রিয়া এবং তার প্রতিক্রিয়া আরও কথা।এই ধারাবাহিকতায় ভাষার বিকাশ ঘটে।সুতরাং ভাষার সামাজিক মিথস্ক্রিয়ার সফল।এই কারণে স্বল্পভাষী মায়ের শিশুর চেয়ে যে মা শিশুর সঙ্গে বেশি কথা বলেন তার ভাষার বিকাশ ঘটে।এই মতের সমর্থনে প্রমাণ অপেক্ষাকৃত বেশি।

7. শিশুর ভাষার বিকাশ ও শিখন সম্পর্ক ও শিহ্মাগত তাৎপর্য -

ভাষা হল শিখন ও শিহ্মনের প্রধানতম বাহন।একটি শিশুর ভাষার সঙ্গে বৌদ্ধিক বিকাশের যে সম্পর্ক আলোচনা করা হল, তার শিক্ষাগত তাৎপর্য অবহেলা করার মতো নয়।

  • প্রথাগত বিদ্যালয় শিক্ষা নিম্নতম স্তর থেকে শুরু করে ভাষার ও বাচনিক বিকাশকে ত্বরান্বিত করে। তার কারণ বিদ্যালয়ে প্রচলিত কথ্য ভাষা এবং বাড়িতে ব্যবহৃত ভাষার পরিবর্তে মান্য ভাষা ব্যবহারের সূত্রপাত ঘটে।
  • বাড়িতে একটি শিশুর মেলামেশা সীমিত,কিন্তু বিদ্যালয়ে বহুসংখ্যক সম বয়স্ক শিশুর সঙ্গে মেলামেশার সুযোগ থাকে।সামাজিক আদান-প্রদান যা মা-বাবা ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যর মধ্যে কয়েকটি নির্দিষ্ট বিষয়ের মধ্যে আবদ্ধ হয়েছিল তা ক্রমশ মুক্তি পায় এবং সামাজিক আদান-প্রদানের পরিধি সম্প্রচারিত হয়।শিশুদের শব্দভান্ডার দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং বাক্য গঠন রীতি সমৃদ্ধ হয়। 
  • লিখিত এবং পড়তে শেখার মধ্যে দিয়ে এমন কিছু ধারনার সঙ্গে পরিচিতি ঘটে যা সাধারণভাবে দৈনন্দিন সামাজিক অভিজ্ঞতার সঙ্গে সম্পর্কহীন অক্ষরমালা বা সংখ্যামালা শেখায় মাধ্যমে ভবিষ্যতের চিন্তার ভিত্তি স্থাপিত হয় যা শিশু বৌদ্ধিক বিকাশের সহায়ক। 
  • শিহ্মকের সঙ্গে এক ধরনের প্রথাগত সামাজিক আদান প্রদান শুরু হয়় বিদ্যালয়ে যা শিক্ষার্থীর সামাজিক  আচরনকে পরিশীলিত করতে সাহায্য করে।এই ধরনের সামাজিক আদান-প্রদান নতুন নতুন ভাষা ব্যবহারের পথ খুলে দেয়।এর ফলে পরোক্ষভাবে শিশুর ভাষা সমৃদ্ধতর হয়ে ওঠে।
  • বাড়িতে যে সামাজিক আচরণে শিশু অভ্যাস তার উপর বিদ্যালয়ের শিক্ষকের অদৃশ্য প্রভাব কার্যকর থাকে এবং ভাষা বিকাশকেও প্রভাবিত করে। 
  • বিদ্যালয়ে উচ্চতর স্তরগুলিতে বিভিন্ন বিষয়ের পঠন-পাঠনের ক্ষেত্রে ভাষা ও তৎসহ বৌদ্ধিক বিকাশের গতি ভিন্ন মাত্রা পায়।এই বিষয়ের প্রতিটি শিহ্মকেই সচেতন থাকা প্রয়োজন।তাদের নিজেদের ভাষা ব্যবহারের দক্ষতা শিক্ষার্থীর সঙ্গে আদান-প্রদানের এবং ভাষার শুদ্ধতা বজায় রাখা সামগ্রিক ভাবে শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। 

8. শিশুর বৌদ্ধিক বিকাশের ভাষা শিখনের হ্মেত্রে পিতা-মা ও শিহ্মক-শিহ্মিকার ভূমিকা -

একটি শিশুর জন্মের পর থেকে উত্তর কৈশোর কাল পর্যন্ত নানা ধরনের বৌদ্ধিক বিকাশ ঘটে এবং ভাষা শিখনের হ্মেত্রে প্রাথমিক ভাবে গৃহতে মা-পিতা ও বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিহ্মিকার একটি বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে।সেই নিন্মের বর্ননা করা হল -

  • শিশুর প্রতি ভালো করে পর্যবেক্ষণ করতে হবে।
  • শিশুর প্রতি মনোযোগের দিকে দৃষ্টিপাত করতে।
  • শিশুরা কীভাবে শব্দ উচ্চারণ করেছে তাই মনোযোগ সহকারে শোনা।
  • শিশুর উচ্চারিত শব্দগুলি কতটা শক্ত লাগছে তা অনুধাবন করা।
  • শিশুরা সাধারণ নিদের্শগুলি বুঝতে পারছে কিনা তার দেখা।
  • শিহ্মক তখন পাঠ করেছেন তখন শিশু আগ্ৰহ দেখাচ্ছে কিনা।
  • শিশুর মধ্যে নতুন চিন্তা ধারার উদ্ভব হয়েছে কিনা লহ্ম করা।
  • শিশুদের মধ্যে নতুন নতুন সৃজনশীলতা লহ্ম করবেন।

9. উপসংহার -

ভাষা যেহেতু বুদ্ধিমান ও আবেগ সম্পন্ন মনের প্রতিফলন, সেই কারণে দেখা দরকার যেন কোনো অবস্থাতেই ভাষা যান্ত্রিক হয়ে না পড়ে।বাক্যগুলির পরিবর্তন,পরিমার্জন,পুনরাবর্তন শুধু নয়।নতুন শব্দ ও বাক্য উদ্ভাবনের কৌশলটিকেও শিক্ষার্থীকে রপ্ত করা দরকার।বস্তুত শিক্ষার্থী যদি তার সমগ্র বিষয়কে যথার্থ ভাবে প্রকাশ করতে চায় তাহলে তার শিখনের সবক্ষেত্রেই বিষয়বস্তুর সঙ্গে সঙ্গে ভাষাকেও গুরুত্ব দিতে হবে।










Post a Comment (0)
Previous Post Next Post