Begam Rokeya

Begam Rokeya

বেগম রোকেয়া||Begam Rokeya

BENGALI VERSION||ENGLISH VERSION

Begam Rokeya's Contribution In Women Education And Social Reforms
Begam Rokeya's Contribution

Assignment Questions -

1. Write The Role Of Begam Rokeya In Women Education And Social Reforms.||নারী শিক্ষা ও সমাজ সংস্কারক রূপে বেগম রোকেয়ার সম্পর্কে ধারণা প্রদান কর।

2. Write Down The Contribution Of Begam Rokeya In Women Education And Rights Of Muslim Society.||মুসলিম সমাজে নারী শিক্ষা এবং অধিকার সম্পর্কে বেগম রোকেয়ার অবদান সম্পর্কে ধারণা দাও।

3. Write Down The Short note on Work's life Of Begam Rokeya.||বেগম রোকেয়ার কর্মজীবন সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও।

Begam Rokeya -

BENGALI VERSION -

(ENGLISH VERSION FILE BELOW THE ARTICLE BY PDF FORMAT)

• ভূমিকা -

উনবিংশ শতাব্দীতে দেশের অগ্ৰসর মান শিহ্মা ধারার সুযোগ থেকে মুসলিম সম্প্রদায় ব্যাপক ভাবে গ্ৰহন করেন নি।তার কারণ তাদের একটা বিপুল অংশ প্রাচীন রহ্মনশীল ইসলামিক শিক্ষার প্রতি আকৃষ্ট ছিলেন। সবচেয়ে অবহেলিত হয়েছিল মুসলিম নারীদের শিক্ষা প্রতি।পর্দা প্রথার দরুন মুসলিম মেয়েদের পরিবারের বাইরের শিক্ষা গ্ৰহন করতে যাওয়ার পুরুষতান্ত্রিক বাধা ছিল। আবার অন্তঃপুরে শিহ্মার কোনো ধারাবাহিক সুব্যবস্থা ছিল না।এই পরিস্থিতিতে বেগম রোকেয়ার আবির্ভাব হয়।যার জীবনের প্রধান ব্রত ছিল মুসলিম নারীদের শিক্ষা, সামাজিক উন্নয়ন এবং তাদের অধিকার।

• জন্ম পরিচয় ও শিক্ষা জীবন -

বেগম রোকেয়া 1880 খ্রিস্টাব্দের 9 ই ডিসেম্বর তৎকালীন অবিভক্ত বাংলার রংপুর জেলার মিঠাপুকুর অঞ্চলের পায়রাবন্দ নামক গ্ৰামে জন্মগ্ৰহন করেন। তাঁর পিতা ছিলেন সম্পন্ন জমিদার জাহিরুদ্দিন মহম্মদ আবু আলি হায়দার সবের এবং মাতা রাহাতুন্নেসা।গোঁড়া মুসলিম পরিবারে পর্দা প্রথা ছিল প্রবলভাবে। কিন্তু পরিবার ছিল উচ্চশিহ্মিত।জাহিরুদ্দিন মেয়েদের আরবি ও ফারসি শিক্ষার শিহ্মিত করেছিলেন। কিন্তু রোকেয়ার বড়ো ভাই ইব্রাহিম সবের বোনকে বাংলা এবং ইংরেজী শেখাতেন গোপনে। তিনি পরবর্তী কালে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ (কলকাতার) থেকে পড়াশোনা করেন।

       মাত্র ১৬ বছর বয়সে রোকেয়ার বিবাহ হয় ভাগলপুরের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট খান বাহাদুর সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গে। তিনি ছিলেন উদার ও শান্ত প্রকৃতির মানুষ।তিনি মেয়েদের শিক্ষার প্রতি তাঁর ছিল প্রবল আগ্রহ।কাজেই স্ত্রী বিদ্যাচর্চার তিনি উৎসাহ প্রদান করতেন। তখন থেকেই বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের সাহিত্যে চর্চার সূত্রপাত হয়। তিনি মুসলিম মেয়েদের অধিকার, বঞ্চনার বিরুদ্ধে আজীবন সংগ্ৰাম করে শিহ্মাব্রতী বেগম রোকেয়ার 1932 খ্রিস্টাব্দে 9ই ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন।

• কর্মজীবন -

উনবিংশ শতাব্দীর মুসলমান সমাজের রহ্মনশীল তাকে ভাঙতে চেয়েছিলেন বেগম রোকেয়া। তিনি বিভিন্ন উপন্যাস, কবিতা, ছোটগল্প, কল্পবিজ্ঞান,প্রবন্ধ ব্যাঙ্গ রচনা সব কিছু লিখেছেন। তিনি সওয়াগত, মহম্মদী, নবপ্রভা, মহিলা,ভারত মহিলা।এই ইসলাম নওরোজ বঙ্গীয় মুসলিম সাহিত্য পত্রিকা ইত্যাদি সমকালীন নানা পত্রপত্রিকা নিয়মিত ভাবে লিখেছেন। তাঁর প্রথম রচনা 'পিপাসা'(1902) পরে 'মতিচুর'(1905), 'সুলতানার স্বপ্ন'(1908) তাঁর সর্ব শেষ অসমাপ্ত প্রবন্ধ নারীর অধিকার।

       তিনি 1916 খ্রিস্টাব্দে অঞ্জুমান-এ-খাওয়াতিন-ই-ইসলাম" প্রতিষ্ঠা করেন।এই সংগঠন ব্যাপকভাবে মুসলিম মেয়েদের শিক্ষার সপহ্মে প্রচার ও আন্দোলন সংগঠিত করে।1926 খ্রিস্টাব্দে তিনি 'Bengal Women's Education Conference' এ সভাপতির আসন অলংকৃত করেন এবং সময়োপযোগী মনোজ্ঞ ভাষনে সকলকে মুগ্ধ করেন।বেগম রোকেয়াকে প্রথম নারীবাদী মুসলিম মহিলা বলা হয়।1924 খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত 'পদ্মরাগ' তিনি লিখেছেন বিবাহ করাই মহিলাদের জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য নয়।এই উক্তি সেকালের কোনো মুসলিম মহিলার পহ্মে সত্যিই দুঃসাহসিক। তাঁর প্রথম উপন্যাস 'সুলতানার স্বপ্ন' একটি ব্যঙ্গ রচনা। এখানে একটি কাল্পনিক দেশের কাহিনী বলা হয়েছে যেখানে পুরুষেরা পর্দার আড়ালে থাকে মেয়েদের অধীনে। সেখানে একজন পর্দানসিন পুরুষ আহ্মেপ করে বলেছেন,শুনছি ভারতবর্ষ নামে এক দেশ আছে সেখানে পুরুষরা স্বাধীন। মেয়েদের অধীনে পর্দানসিন।1931 খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত 'অবরোধ বাসিনী' তে তিনি নারী অধিকার প্রতিষ্ঠিত করার জন্য সচেষ্ট ছিলেন।

   বেগম রোকেয়া শুধুমাত্র মুসলমান মহিলাদের শিক্ষা ও অধিকার নিয়ে জীবন অতিবাহিত করেন নি। তিনি সমগ্ৰ নারী জাতির তথা জাতীয়তাবাদী ও মানবতাবাদী নিয়ে ভাবতেন। তিনি বলেছেন "We are not only Hindus or Muslims or Parsis or Christians or that we are not only Bengalee, Tamilian,Marwari or Punjabi but we are Indians too.We are first an Indian and then all others."

     দেশে নারী নির্যাতন ক্রমবর্ধমান।আজও মেয়েদের পুরোপুরি অবরোধ মুক্তি হয় নি। উপরন্তু নানাভাবে সমাজ এখনও অনেকটা পশ্চাৎমুখী। শুধু পার্থক্য এই যে মুসলিম মেয়েদের আজ অনেকটা অগ্ৰসর,আর এই অগ্ৰগতির সূচনা করে বেগম রোকেয়া শিক্ষা ও সামাজিক ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে আছে। বাংলাদেশের রংপুর তাঁর মাসে বিশ্ববিদ্যালয় আছে এবং সেখানে প্রতিবছর তাঁর জন্ম তথা মৃত্যু দিনটিকে (9th December) বেগম রোকেয়া দিবস হিসেবে পালন করা হয়।

• সামাজিক সংস্কার এবং নারীর অধিকার - 

১. মহিলা সংগঠন স্থাপন

1916 খ্রিস্টাব্দে বেগম রোকেয়া কিছু শিক্ষিত মুসলিম মহিলাদের নিয়ে "অঞ্জুমান-এ-খাওয়াতিন-ই-ইসলাম" নামে একটি মহিলা সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি এই সমিতির অবৈতনিক সম্পাদক ছিলেন।এই সংগঠনের মাধ্যমে তিনি মুসলিম মেয়েদের শিক্ষার সপক্ষে ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তোলেন।এই আন্দোলনের বিরুদ্ধে প্রবল বাধা আসা সত্ত্বেও তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে কাজ করে যান। মুসলিম মেয়েদের জন্য শিল্প প্রশিক্ষণ শিল্পজাত দ্রব্যের প্রদর্শনীয় আয়োজন কুমারী ও বিধবা মহিলাদের অর্থনৈতিক সহায়তা প্রদান,সাহ্মরতা অভিযান পরিচালনা প্রভৃতি ছিল সমিতির উদ্দেশ্য। 

২. পর্দা প্রথা এবং বোরখা -

বেগম রোকেয়া হলেন প্রথম মুসলিম নারীবাদী ব্যক্তিত্ব।যিনি প্রতিবাদী কন্ঠস্বর সবচেয়ে বেশি জোরালো হয়েছে পর্দা প্রথার বিরুদ্ধে। তিনি 'বোরখা' নামক প্রবন্ধে তৎকালীন সমাজে পর্দা প্রথার কঠোরতর সমালোচনা করেন। রোকেয়ার মতে,পর্দার অর্থ শালীনতা ও সুরুচি। তিনি মনে করেন পুরুষের ন্যায় মেয়েদের ও সমাজের বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে মেলামেশা ও সামাজিক কার্যাবলিতে অংশ গ্ৰহনের অধিকার থাকা উচিৎ। তিনি আরো বলেন, মুসলিম নারীদের বোরখা পরার অসম্মান বা অসাম্য অনুভব করেন নি। কিন্তু তিনি সবসময় এই কথা বলেছেন যে,বোরখা যেন নারী শিক্ষার কোনো বাধা হয়ে না দাঁড়ায়।

৩. নারীর অধিকার - 

তিনি বিশ্বাস করতেন লিঙ্গানুযায়ী শ্রম বিভাজনের রীতি ভাঙতে পারলেই নারী জাতির জাগরন সম্ভব। ধর্মের দোহাই দিয়ে নারীদের শিহ্মা লাভ থেকে দূরে সরিয়ে রাখাকে তিনি তীব্র ভাবে নিন্দা করেছেন। সমাজে নারীর স্থান, সামাজিক অনুষ্ঠানে নারীর অংশগ্রহণ,বৃত্তি বা পেশা যাই হোক না কেন,যে কোনো প্রকার বৈষম্যের তিনি তীব্র বিরোধিতা করে নারীকে পুরুষের সমমর্যাদার প্রতিষ্ঠিত করার জন্য লড়াই করেছেন।

৪. নারীদের স্বনির্ভরতা অর্জন - 

তিনি সবসময় চেয়েছেন নারীদের যেন তার ইচ্ছা পূরণের জন্য পুরুষের উপর নির্ভরশীল হতে না হয়।নারীরা শিক্ষা দ্বারা শিহ্মিত হয়ে উঠলে তারা নিজেরাই স্বনির্ভর হয়ে উঠবে। এমনভাবে গৃহস্থালী পরিচালনা করবেন যাতে তারা পরিবারের কাছে সমাজের কাছে অপরিহার্য হয়ে ওঠেন।

৫. সামাজিক কুসংস্কার বিরোধিতা -

সমসাময়িক সমাজ সংস্কারকদের মতো তিনিও নারীদের সামাজিক কুসংস্কার ও নিপীড়ন থেকে মুক্ত করার জন্য নিরলস সংগ্ৰাম চালিয়ে গেছেন। তাঁর লেখা বিভিন্ন রচনার নারীজাতির উপর সমাজের চাপিয়ে দেওয়া বিভিন্ন অনুশাসনের বিরুদ্ধে তিনি তীব্র সমালোচনা করেছেন। তৎকালীন সমাজের পুরুষের বহুবিবাহ এবং একচেটিয়া তালাক প্রথার বিরুদ্ধেও তিনি প্রতিবাদ জানিয়েছেন।নারীর অধিকার শীর্ষক প্রবন্ধে বিবাহ বিচ্ছেদের হ্মেত্রে তিনি নারী পুরুষের সমানাধিকারের দাবি জানিয়েছেন। তিনি বাল্য বিবাহের কুফল সম্পর্কে সমাজকে সজাগ করতে চেয়েছিলেন যা তাঁর বিভিন্ন গ্ৰন্থাবলি থেকে জানা যায়।

• নারীদের অর্থনৈতিক অধিকার -

  • ইসলামিক শিক্ষার শিহ্মিত বেগম রোকেয়া নারী পুরুষের সমান অধিকারে বিশ্বাসী ছিলেন। তাই তিনি নারীকে অর্থনৈতিক দিক থেকে স্বাবলম্বী হয়ে আত্ম নির্ভরশীল হওয়ার আহ্বান জানান।
  • তিনি বলেছেন নারীকে যদি পুরুষের সমকক্ষ হতে হয় তাহলে পুরুষের প্রভুত্ব ও নিজের মানসিক দাসত্ব থেকে বেরিয়ে এসে অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী হয়ে ওঠতে হবে।
  • তিনি দেখেছেন জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে এমনকি কর্মহ্মেত্রে একই কাজের জন্য নারীরা পুরুষের থেকে কম পারিশ্রমিক পায়।নারীর এই অবহেলিত অবস্থা এবং নারী পুরুষের বিরুদ্ধে বেগম রোকেয়া প্রতিবাদে গর্জে উঠেছেন। পুরুষদের সমকহ্ম হয়ে ওঠার জন্য বেগম রোকেয়ার মেয়েদের স্বাধীনভাবে জীবিকা অর্জনের উপর বেশি গুরুত্ব আরোপ করেছেন।

• বেগম রোকেয়া মতে নারী শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা -

বাংলার মুসলিম সমাজে নারী মুক্তি আন্দোলনের অন্যতম প্রবক্তা ছিলেন বেগম রোকেয়া। তাঁর উদ্দেশ্য ছিল নারীর জাগরন আর এর জন্য প্রয়োজন নারী শিক্ষার প্রসার ঘটানো। তিনি মনে করতেন,সংসার পরিচালনার জন্য একজন সুগৃহিনীর প্রয়োজন।আর এই সুগৃহিনী হওয়ার জন্য আবশ্যক হল সুশিহ্মা।শিশু পালন থেকে শুরু করে, পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সেবা শুশ্রূষা করা ইত্যাদি যাবতীয় বিষয়ে দৃষ্টি রাখার জন্য সুগৃহিনীর প্রয়োজন।আর এর জন্য চাই শিহ্মা প্রাপ্ত নারী। তিনি আর বলেছেন সংসারের দৈনন্দিন কার্য সুচারুভাবে সম্পাদন করার জন্য বিশেষ জ্ঞান ও বুদ্ধি প্রয়োজন যা কেবলমাত্র শিহ্মিত নারীরাই পারে পরিমিত ব্যয়ে সংসারকে সুন্দর ও পরিপাটি করে রাখতে।

• নারী শিক্ষা প্রসার -

বাংলার মুসলিম সমাজে নারী মুক্তি আন্দোলনের অন্যতম প্রবক্তা ছিলেন রোকেয়া।তাঁর উদ্দেশ্য ছিল নারীর জাগরন আর এর একমাত্র পথ হল নারীর শিক্ষার প্রসার ঘটানো। তাঁর স্বামী নারীশিক্ষার বিশেষত মুসলিম নারীদের শিক্ষা প্রসারে উদ্দেশ্য বিদ্যালয় স্থাপনের জন্য অর্থ সঞ্চয়ের অনুপ্রাণিত করতেন।

  • 1909 খ্রিস্টাব্দে স্বামীর মৃত্যুর পর বেগম রোকেয়া তাঁর স্বামীর স্মৃতি রহ্মার্থে ভাগলপুরের উর্দুভাষী এলাকায় মাত্র 5 জন ছাত্রীকে নিয়ে "সাখাওয়াত মেমোরিয়াল বালিকা বিদ্যালয়" স্থাপন করে। ভাগলপুরের সম্পত্তি নিয়ে পারিবারিক বিবাদ শুরু হলে তিনি 1911 খ্রিস্টাব্দে কলকাতার চলে আসেন এবং বিদ্যালয়টিকে কলকাতায় বাংলাভাষী অঞ্চলে স্থানান্তরিত করেন।প্রায় 2 মুখ ধরে বেগম রোকেয়া তাঁর সর্বশক্তি প্রয়োগ করেছেন বিদ্যালয়টির উন্নয়নের জন্য।আজও সেই বিদ্যালয় সগৌরবে সুনামের সঙ্গে মেয়েদের শিহ্মাদানের কাজ করে চলেছে। বর্তমানে বিদ্যালয়টি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের দ্বারা অধিগৃহিত ও পরিচালিত।
  • এই বিদ্যালয় তাঁর স্বপ্ন ও আদর্শের বাস্তবায়ন। মুসলিম মেয়েদের দুর্দশা প্রতিকারের ব্যবস্থা করাই ছিল এই বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মূল লহ্ম্য।
  • যে যুগে কুসংস্কার ও ধর্মীয় গোঁড়ামির প্রভাবে বাঙালি মুসলিম মেয়েদের বিদ্যালয় যাওয়ার সুযোগ ছিল না,সেই অন্ধকার যুগে রোকেয়া পর্দার আড়াল থেকে নারী শিক্ষা বিস্তারে ব্রতী হয়েছিলেন এবং মুসলিম মেয়েদের মুক্তি লাভের পথ সুগম করেছিলেন।
  • তাঁর প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয় কোরান পাঠ থেকে শুরু করে বাংলা, ইংরেজি,উর্দু,ফারসি,নাসিং,সেলাই, শরীরচর্চা, সংগীত ইত্যাদি সব বিষয়েই শিক্ষা দেওয়া হত।
  • রোকেয়ার মতে, সমাজে নারীদেরও উচ্চশিক্ষা লাভের প্রয়োজন আছে। কারন শিহ্মিত আলোকপ্রাপ্ত নারীরাই পারে পরিমিত ব্যয়ে সংসারকে সুন্দর ও পরিপাটি করে রাখতে।তাই সুগৃহিনী হওয়ার জন্যই উচ্চশিক্ষার প্রয়োজন।
  • বিদ্যালয় পরিচালনা এবং পাঠদানে অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য রোকেয়া বিভিন্ন বিদ্যালয় পরিদর্শন করতেন। তিনি নিজেই বিদ্যালয় শিহ্মিকাদের প্রশিক্ষণ দিতেন। কলকাতায় উপযুক্ত শিহ্মায়িত্রী না পাওয়ায় রোকেয়া মাদ্রাজ,গয়া,আগ্ৰা ইত্যাদি জায়গা থেকে শিহ্মিকা আনার ব্যবস্থা করেছিলেন।
  • তাঁর প্রচেষ্টাতেই 1911 খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় মুসলিম মহিলা ট্রেনিং বিদ্যালয় স্থাপিত হয়। বিদ্যালয়ের জন্য সরকারি সাহায্য ও সামাজিক পৃষ্ঠ পোষকতা আদায়ের জন্য রোকেয়া আজীবন কঠিন পরিশ্রম করেছেন। সামাজিক বিরুদ্ধতা এবং কঠোর সমালোচনা সত্ত্বেও তিনি এই বিষয়েও সাফল্য লাভ করেন।

• বেগম রোকেয়ার বিজ্ঞান মনস্কতা -

বেগম রোকেয়ার সামাজিক ও শিক্ষা চিন্তায় প্রভাব বিস্তারকারী একটি বিশেষ দিক হল তাঁর বিজ্ঞান মনস্কতা। কৃষি বিদ্যায় প্রশিহ্মিত স্বামীর সাহচর্যে রোকেয়ার ছিলেন একমাত্র বাঙালি নারী যার বচনার পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন এবং বিজ্ঞান বিষয়ক সাধারণ জ্ঞানের সরল প্রকাশ ঘটেছিল। তিনি মেয়েদের চিকিৎসা বিজ্ঞানের প্রাথমিক বিষয় গুলি সম্পর্কে জ্ঞান অর্জনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে জেনানা মেডিকেল কলেজ স্থাপনের দাবি উত্থাপন করেছিলেন।

• উপসংহার -

উনিশ শতকের বাঙালি মুসলমান সমাজের নারীর নবজাগরণের অগ্ৰদূত ছিলেন বেগম রোকেয়া। তিনি ছিলেন অনগ্ৰসর মুসলিম সমাজে নারী শিক্ষা বিস্তারের পথ প্রদর্শক। তিনি নারী শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে মুসলিম পুরুষদের সচেতন করতে সহ্মম হয়েছিলেন। মুসলিম নারীদের উন্নতি ও সমাজের সার্বিক কল্যাণমূলক কাজে তিনি নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন। মুসলিম মেয়েদের জন্য বিদ্যালয় স্থাপনের মধ্যে দিয়ে তিনি নারীশিক্ষার হ্মেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছিলেন।আজও মুসলিম মেয়েদের যে অগ্ৰগতি তার সূচনা করে বেগম রোকেয়া শিক্ষা ও সামাজিক ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন।

CLICK HERE -

ENGLISH VERSION PDF FILE

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post