শিশুদের উপর Wi-Fi এর প্রভাব||Effects of Wi-Fi on Children
BENGALI VERSION||ENGLISH VERSION
শিশুদের উপর Wi-Fi এর প্রভাব
BENGALI VERSION
(ENGLISH VERSION PDF FILE BELOW THE ARTICLE)
1. ভূমিকা -
Wi-Fi শব্দটির উৎপত্তি 'Wireless Fidelity' শব্দটি থেকে,যা সংহ্মেপে Wi-Fi নামে পরিচিত।এই Wi-Fi হল এমন একটি প্রযুক্তি যা বেতার তরঙ্গ ব্যবহারের মাধ্যমে কম্পিউটার, ল্যাপটপ স্মার্ট ফোন বা অন্যান্য Wi-Fi ব্যবহার যোগ্য যন্ত্রের সঙ্গে ইন্টারনেট সংযুক্তি প্রদান করে। Wi-Fi একটি নির্দিষ্ট এলাকার মধ্যে উপস্থিত যন্ত্র সমুহের মধ্যে ইন্টারনেট সংযুক্তি প্রদান করতে সহ্মম।একে প্রযুক্তিগত পরিভাষা WLAN(Wirless Local Area Network) বলা হয়। সাম্প্রতিক কয়েক বছরগুলিতে বহনযোগ্য ছোটো কম্পিউটার বা ল্যাপটপের ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে।এর ফলে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ল্যাপটপ একটি অপরিহার্য ডিভাইস রূপে পরিগণিত হয়েছে। Wi-Fi থেকে প্রেরিত রেডিয়ো সংকেতের সাহায্যে মানুষ বিভিন্ন কার্য সম্পন্ন করে থাকে। Wi-Fi এর রেডিয়ো ফ্রিকোয়েন্সি ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক তরঙ্গের মাধ্যমে বহনযোগ্য ছোটো কম্পিউটার অর্থাৎ ল্যাপটপ ব্যবহার করে বন্ধ্যাত্বের সৃষ্টি হয়েছে।
প্রতি নিয়ত Wi-Fi ব্যবহারের ফলে শিশুদের উপর একটি নেতিবাচক প্রভাব লহ্ম করা যাচ্ছে।শিশুরা এই রেডিয়ো ফ্রিকোয়েন্সি ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক তরঙ্গ বেশি শোষন করে।কারণ তারা এখনও শারীরিক ভাবে বেড়ে উঠেছে এবং বিকাশ করছে। তাদের মস্তিষ্কের টিস্যু বেশি শোষক এবং তাদের মাথায় গুলি প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় অনেক পাতলা।এই কারণে শিশুদের উপর Wi-Fi এর একটি নেতিবাচক প্রভাব লহ্ম করা যায়।এই প্রসঙ্গে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ড. অ্যান্টনি মিলার একটি উপদেষ্টা বলেন যে,শিশুরা রেডিও তরঙ্গের এক্সপোজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ভোগ করতে পারে।
2. শিশুদের উপর Wi-Fi প্রভাব -
শিশুদের উপর Wi-Fi এর প্রভাব গুলি হল।-
১. অনিদ্রা -
যে সমস্ত বাড়িতে Wi-Fi রয়েছে,সেই সমস্ত বাড়ির শিশুরা যদি Wi-Fi এর কাছাকাছি ঘুমালে প্রায়ই দেখা যায় যে তাদের ঘুমের অভাব লহ্ম করা যায়। Wi-Fi এর রেডিয়ো ফ্রিকোয়েন্সি ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক তরঙ্গ শিশুর ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায় এবং এই বিকিরনের ধ্রুবক এক্সপোজার অবশেষে ব্যাঘাত ঘটায়।
২. শৈশবে মস্তিষ্কের বিকাশের বাধা -
রেড়িয়ো ফ্রিকোয়েন্সি ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশনের এক্সপোজার কোষের বৃদ্ধির হারকে প্রভাবিত করতে পারে এবং এর ফলস্বরূপ শিশুদের বিকাশ বিলম্বিত হয়। বিরক্তিকর বা অনিয়মিত মস্তিষ্কের ক্রিয়াকলাপ গুলিও প্রতিবন্ধী শেখার বা অন্যান্য মানসিক বা আচরণগত সমস্যার কারণ হতে পারে।
৩. শারীরিক সমস্যা -
রেডিয়ো ফ্রিকুয়েন্সি ইলেকট্রোম্যাগনেটিক তরঙ্গের বিকিরণের ফলে যে এক্সপোজারের দেখা যায়,তার ফলে শিশুদের কার্ডিয়া সমস্যা দেখা যায়।একইভাবে অন্যান্য অনেক স্বাস্থ্য বা শারীরিক সমস্যা যেমন মাথা ঘোরা, চোখ ও মাথা যন্ত্রণা,চাপের অনুভূতি এবং ক্লান্তি প্রভৃতি এই তরঙ্গের অধীনে হওয়ার জন্য দায়ী করা যেতে পারে।
৪. অ-মনযোগিতা -
দীর্ঘ সময় ধরে কোনো শিশু Wi-Fi এর মাধ্যমে ল্যাপটপ বা মোবাইল ব্যবহার করার ফলে তাদের মানসিক বিকাশ হয় না। এছাড়াও তারা যে কোনো কাজের প্রতি মনোযোগী দিতে পারে না।
৫. আচরণগত সমস্যা -
Wi-Fi এর ব্যবহারে একদিকে শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশে বাধা ঠিক অন্যদিকে তাদের আচরণগত সমস্যার লহ্ম করা যায়।যেমন শিশুদের মধ্যে একঘেয়েমি, জেদি মনোবৃত্তি, আকস্মিক ক্রোধ বা ভয়ে পাওয়া মতো বিভিন্ন আচরণের বহিঃপ্রকাশ ঘটে।
৬. হিংসাত্মক মনোঃপ্রকৃতি -
একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, শিশুরা যে সমস্ত অনলাইন ও অফলাইন গেমস্ ল্যাপটপ বা মোবাইল ফোনে খেলে তা মূলত মারামারি বা হিংসাত্মক প্রকৃতি হয়।যা তাদের মধ্যে একটি প্রভাব ফেলে যায়। শিশুদের মধ্যে হিংসাত্মক মনোঃপ্রকৃতি প্রকাশ পায়।
৭. গেমসে্র আসক্তি মনোঃপ্রকৃতি -
শৈশবকালে Wi-Fi মাধ্যমে মোবাইল বা কম্পিউটারে অনলাইন বা অফলাইন গেমস্ এর প্রতি একটি আসক্ত লহ্ম করা যায়,যা শিশুর বিকাশে পথে বাধা সৃষ্টি করে।
৮. সামাজিক মাধ্যমে প্রতি আকৃষ্ট -
বর্তমানে লহ্ম করা যাচ্ছে যে, বড়োদের ন্যায় শৈশবকালে শিশুরা অস্বাভাবিক ভাবে সামাজিক মাধ্যমে প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ে,যা তাদের মধ্যে একটি নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
3. প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা -
শিশুদের উপর Wi-Fi এর যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে,তা প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্ৰহন করা উচিত।যথা -
- ঘুমের সময় মোবাইল বা ল্যাপটপ বা ট্যাব কে বিছানায় থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে হবে।
- রাতে মোবাইল ফোন এয়ারপ্লেন মোডে রাখতে পারেন।
- রাউটারটি শিশুদের খেলার জায়গা থেকে দূরে এমন একটি ঘরে বা কোনে রাখতে হবে।
- রাতে বাড়িতে রাউটার বদ্ধ করাতে হবে।
- ল্যাপটপটি কোলে না রেখে ডেস্কে রাখতে হবে।
- শিশুদের পকেটে বা বুক পকেটে ফোন রাখার পরিবর্তে ব্র্যাক প্যাকে ফোন রাখতে উৎসাহ করতে হবে।
- সামাজিক মাধ্যমে গুলি থেকে শিশুদের দূর রাখতে হবে।