ওজোন গহ্বর||Ozone Hole
BENGALI VERSION||ENGLISH VERSION
Ozone Hole |
Assignment Questions -
1. ওজোন গহ্বর কি।এর সৃষ্টি কারন গুলি বর্ণনা কর।||What Is Ozone Hole? Explain It's Causes.
2. বায়ুমন্ডলের ওজোন স্তরের গুরুত্ব কী।ওজোন গহ্বরের ফলে সৃষ্ট প্রভাব গুলি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা কর।||What Is The Importance Of Ozone Layer In Atmosphere.Briefly Discuss The Effects By Ozone Hole.
ওজোন গহ্বর -
BENGALI VERSION -
(ENGLISH VERSION FILE BELOW THE ARTICLE BY PDF FORMAT)
1. ভূমিকা -
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উন্নয়নের ফলে পৃথিবীতে গ্ৰীণ হাউস গ্যাস ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে যা পৃথিবীর তাপমাত্রাকে ক্রমশ উত্তপ্ত করেছে।আমেরিকা,জার্মানি,ব্রিটেন সহ কয়েকটি দেশের অন্তত তাই অভিমত করেন।জার্মানির বিজ্ঞানীরা অতি সম্প্রতিকালে দেখিয়েছেন যে যেখানে গাছপালা বনজঙ্গল বেশী সেখানে বেশী মিথেন উৎপন্ন হয় এবং এই গ্ৰীণ হাউস গ্যাসের ওজোন গহ্বর তৈরিতে রয়েছে সবচেয়ে বেশী অবদান।উন্নত দেশগুলির সবুজ গাছগাছালির উপরও এতটাই আক্রমণাত্মক যে অন্যান্য গ্ৰীণ হাউস গ্যাস গুলি যেমন CFC ,N2O জলীয় বাষ্প এবং সর্বোপরি কার্বন-ডাই-অক্সাইড এর ওজোন গহ্বর তৈরীতে অবদান ঢাকা পড়ে যাচ্ছে।উন্নত দেশগুলির কলকারখানা থেকে নির্গত নাইট্রাস অক্সাইড, ক্লোরোফ্লুরোকার্বন প্রভৃতি ওজোন স্তর হালকা করার সব চাইতে বেশী ভূমিকা রয়েছে।জমি কর্ষন বা সুবজ গাছগাছালির থেকে নির্গত মিথেনকে ওজোন হ্রাসের কারন হিসাবে দেখানো উন্নত দেশগুলির নিজেদের থেকে সুকৌশলে দৃষ্টি ঘোরানোর একটি সুলভ অথচ সযত্ন চেষ্টা মাত্র।
2. ওজোন গ্যাস -
3. বায়ুমন্ডলে ওজোন গ্যাসের সৃষ্টি -
সূর্য থেকে অনবরত যে আলো পৃথিবীতে এসে পৌঁছাচ্ছে তার সঙ্গে অতিবেগুনি রশ্মি আসছে।এই অতিবেগুনি রশ্মিকে তিনভাগে ভাগ করা যায়।
- UV-A তরঙ্গদৈর্ঘ্য - 315-400nm
- UV-B তরঙ্গদৈর্ঘ্য - 280-315nm
- UV-C তরঙ্গদৈর্ঘ্য - 100-280nm
ভূপৃষ্ঠে ওজোন গ্যাস একটি পরিবেশ দূষক পদার্থ হিসাবে কাজ করলেও স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের ওজোনস্তর পৃথিবীর জীবজগতের প্রানের রহ্মক।ওজোনের একটি পাতলা স্তর সূর্যকিরণ থেকে হ্মতিকর অতিবেগুনি রশ্মির বেশিরভাগ অংশকেই রাসায়নিক বিক্রিয়ায় মাধ্যমে আটকে দেয়। অর্থাৎ ওজোনস্তর পৃথিবীর জীব পরিবেশে প্রাকৃতিক সৌরপর্দা বা ছাতা হিসাবে কাজ করে।কোনো কারণে ওজোনস্তর পাতলা হয়ে গেলে বা ওজোনস্তরের গহ্বর তৈরি হলে পৃথিবীতে হ্মতিকারক UV-B রশ্মির আগমন ঘটবে,ফলে জীবজগতের অস্তিত্ব বিপন্ন হবে।মনে রাখা দরকার পৃথিবী সৃষ্টির বহু কোটি বছর পর পৃথিবীতে প্রাণ এসেছিল মূলত অক্সিজেনহীন, ওজোনস্তরহীন বায়ুমণ্ডলীয় পরিবেশের জন্য। অগভীর সাগরের তলদেশে প্রথম প্রাণ এসেছিল,কারণ জল অতিবেগুনি রশ্মি আটকে দিয়েছিল। পরবর্তীকালে স্বভোজী সবুজ উদ্ভিদের আবির্ভাবে বাতাসে অক্সিজেন জমে ওজোন স্তর সৃষ্টি করেছিল।তারপরই জৈব বিবর্তনে পৃথিবীতে প্রাণের সমারোহ হয়েছিল।
7. ওজোন গহ্বরের প্রভাব -
ওজোনস্তরটি বায়ুমণ্ডলের এমন এক আবরণের সৃষ্টি করেছে যা হ্মুদ্ধমন্ডলের এবং ভূপৃষ্ঠে অতিবেগুনি রশ্মি আগমনে বাধাদান করে।সেই কারণে বর্তমানে বায়ুমণ্ডলের ওজোনস্তরের সংকোচন পৃথিবী এবং জীবমন্ডলকে প্রভাবিত করবে।
১. বায়ুমণ্ডলের উপর প্রভাব -
- ওজোনমন্ডল সূর্য থেকে আগত বিকিরিত অতিবেগুনী তরঙ্গের আগমনে বাধাদান করবার জন্য,ওজোন স্তরের উর্ধ্বসীমায় বায়ুমণ্ডলের সর্বাধিক গড় তাপমাত্রা লহ্ম করা যায়।
- এখানকার গড় তাপমাত্রা ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন বায়ুমণ্ডলের গড় তাপমাত্রায় প্রায় সমান হবে, ফলস্বরূপ বায়ুমণ্ডলে উত্তাপ জনিত প্রভাব গুলি লহ্ম করা যায়।
২. জলবায়ুর উপর প্রভাব -
- ওজোনস্তরে গহ্বরের ফলে ভূপৃষ্ঠে সূর্যের আলো রশ্মি বিকিরণের আগমন বৃদ্ধি পাবে ফলে গ্ৰীণ হাউস প্রভাব বাড়তে পারে।
- গ্ৰীণ হাউস প্রভাবের ফলে ভূপৃষ্ঠের ও নিম্ন বায়ুমণ্ডলের গড় তাপমাত্রা যথেষ্ট বৃদ্ধি পাবে।
- বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রার বিশ্বব্যাপী বৃদ্ধি লহ্ম করা যাবে।যার ফলে জলবায়ুর স্থানীয় ও বিশ্বব্যাপী পরিবর্তন হবে।
- তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে হিমবাহ ও তুষার গলে গিয়ে সমুদ্রতলকে উত্থিত করবে।
- বায়ুমণ্ডলের হাইড্রোজেন পার-অক্সাইডের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে বায়ুমণ্ডলে অ্যাসিড বৃষ্টির পরিমাণ বাড়বে।
- জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে অধঃহ্মেপণের পরিমাণ হ্রাস বা বৃদ্ধি পাবে।
৩. মানুষের উপর প্রভাব -
- ওজোনস্তরের গহ্বরের ফলে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি বায়ুমণ্ডল ভেদ করে মানুষের শরীরে পতিত হলে,চর্মের ক্যানসার বৃদ্ধি পাবে।
- মানুষের শরীরে সংক্রামক রোগ প্রতিরোধের হ্মমতা হ্রাস পায়।
- উচ্চহারে আলোক রাসায়নিক বিক্রিয়ায় জন্য ধোঁয়াশায় পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে মানুষের শ্বাসযন্ত্র হ্মতিগ্ৰস্ত হবে এবং জীবাণু সংক্রমণ প্রতিরোধ হ্মমতা হ্রাস পাবে।
- সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাবে মানুষের অতি অল্প বয়সেই চোখে ছানি পড়তে পারে।
- সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি (UV-B) ফলে মানুষের ত্বকের উপর নানারকম হ্মতিকারক প্রভাব ফেলে।অল্প বয়সেই ত্বক কুঁচকে বয়স্ক মানুষের মতো হতে পারে। কখনো কখনো ত্বক পুড়ে তামাটে বর্ণ ধারণ করে।
- সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির দীর্ঘকালীন প্রভাবে মানুষের অনাক্রম্যতা কমে যায়,ফলে মানুষ খুব সহজেই সংক্রামক রোগের আক্রান্ত হয়।
৪. জীবমন্ডলের উপর প্রভাব -
- ওজোনস্তর বিনষ্ট হবার ফলে উদ্ভিদের সালোকসংশ্লেষের হার ও জল ব্যবহারের দহ্মতা এবং উদ্ভিদের বৃদ্ধির হার উল্লেখযোগ্য মাত্রায় হ্রাস পাবে,এই অবস্থায় কৃষির উৎপাদনের হার কমে যাবে।
- UV-B রশ্মির প্রভাবে উদ্ভিদের পাতা,ফল এবং বীজের বৃদ্ধি ব্যাহত হয়।
- সমুদ্রে উদ্ভিদ প্ল্যাঙ্কটনের উৎপাদন হার হ্রাস পাবে ফলে প্রাণী প্ল্যাঙ্কটন ও অন্যান্য সামুদ্রিক প্রাণীর খাদ্য হ্রাস লহ্ম করা যাবে।
- অধিক অতিবেগুনি রশ্মি বিকিরণের প্রভাবে প্রাণী ও উদ্ভিদ সম্পদ হ্মতিগ্ৰস্ত হবে এবং খাদ্য সরবরাহ হ্রাস পাবে।
- সামুদ্রিক মাছেদের সরবরাহ কমে যাবে এবং ক্রমে তাদের সংখ্যা হ্রাস পাবে।
৫. বাস্তুতন্ত্রের উপর প্রভাব -
- ওজোনমন্ডলের গহ্বরের ফলে বিশ্বব্যাপী বাস্তুতন্ত্রের উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হতে পারে।
- জলবায়ুর পরিবর্তনে জন্য সকল প্রাণী ও উদ্ভিদের শাড়ির ভিত্তিক বৈশিষ্ট্যের যথেষ্ট পরিবর্তন হতে পারে।
- তাপমাত্রার বিশ্বব্যাপী বৃদ্ধির প্রভাবে উদ্ভিদের সালোকসংশ্লেষের হাট হ্রাস পাবে এবং বাস্তব ব্যবস্থার উৎপাদনশীলতা হ্রাস পাবে।
- তাপমাত্রার বৃদ্ধির জন্য জৈবশক্তির চক্রের পরিবর্তন হতে পারে জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে বিশ্বব্যাপী জলচক্রের পরিবর্তন এবং এর জন্য জৈব ভূ-রাসায়নিক চক্র সমূহের পরিবর্তন হতে পারে।
- সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্র হ্মতিগ্ৰস্ত হয়।
8. ওজোন গহ্বরের প্রতিরোধ মূলক ব্যবস্থা -
- ওজোন গহ্বরের প্রতিরোধ ব্যবস্থার জন্য প্রথম বিশ্বব্যাপী উদ্যোগ নেওয়ার উদ্দেশ্যে 1970-এ স্টকহোম বৈঠক CFC উৎপাদন ও ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা শুরু হয়।প্রথম স্ক্যান্ডেনিভিয়ান দেশসমূহ সুগন্ধী অ্যারোসল উৎপাদনে CFC যৌগের ব্যবহার নিষিদ্ধ করে। কিন্তু ইউরোপের অন্যান্য দেশে এবং উত্তর আমেরিকার দেশসমূহ যথারীতি বিশ্বের ক্রমবর্ধমান চাহিদার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে CFC এর উৎপাদন কমানোর পরিবর্তে বাড়িয়ে চলেছে। এরপর 1987 (মন্ট্রিয়াল), 1990(লৃন), 1992(কোপেনহেগেন) তে আবার উদ্যোগ শুরু হয়, এবং ঠিক হয় 1995 খ্রিস্টাব্দে মধ্যে সমস্ত উন্নত দেশে CFC এবং হ্যালোন উৎপাদন সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে হবে।সেই সঙ্গে কার্বন টেট্রাক্লোরাইড এবং মিথাইল ক্লোরোফর্ম এর উৎপাদন ধারাবাহিক ভাবে কমিয়ে আনতে সকলেই সম্মত হয়।সম্মেলনে আরো বলা হয় এই সমস্ত ব্যবস্থা গৃহীত হলে 1995-2005 খ্রিস্টাব্দ অবধি বায়ুমণ্ডলে ক্লোরিনের ঘনত্বের কোনো পরিবর্তন হবে না,2005 খ্রিস্টাব্দের পর স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে ক্লোরিনের ঘনত্ব হ্রাস পাবে। এবং এই ক্লোরিনের ঘনত্ব 2ppb -এ নেমে না আসা পর্যন্ত অর্থাৎ প্রায় 2075 সাল পর্যন্ত নিয়মিত ওজোন গহ্বর দেখা যাবে অ্যান্টার্কটিকায়।
- সারা পৃথিবী জুড়ে অপর যে পদ্ধতির কথা ভাবা হচ্ছে তা হল CFC প্রতিস্থাপন যোগ্য বিকল্প পদার্থের সন্ধান।CFC-11 ও CFC-12 এর বিকল্প হিসেবে যে রাসায়নিক যৌগ পরীক্ষা মূলক ভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে সেগুলি হল HCFC-123,HCFC-123a,HCFC-141b,HCFC-22,HFC-134a ইত্যাদি।এগুলি ক্লোরিনবিহীন হওয়ার ওজোন বিনাশের সম্ভাবনা নেই।তাছাড়া বায়ুমণ্ডলে এরা হ্মণস্থায়ী। সর্বোপরি আরো কতকগুলি প্রযুক্তি বা বিকল্পের সন্ধান পাওয়া গেছে যেগুলি প্রচলিত হলে বায়ুমন্ডলে CFC গ্যাস অবাধে মেশাবার পরিমাণ অনেক কমবে।
- কীটনাশক স্প্রে, ক্লীফ, এজেন্ট প্রভৃতির হ্মেত্রে এতদিন CFC -র বহুল প্রচলন ছিল। বর্তমানে অন্যান্য হাইড্রোকার্বন দিয়ে এই কাজ করার চেষ্টা উন্নত দেশগুলোতে শুরু হয়েছে।
- ফুড প্যাকেজ তৈরিতে মোমের বদলে পিচবোর্ড বা খড়ের মন্ড থেকে তৈরি বা ব্যবহার করা যেতে পারে।তাপনিরোধক পদার্থ হিসাবে CFC -এ বদলে ফাইবার গ্লাসের আরো প্রচলন বাড়ানো যেতে পারে।তবে এখনো CFC -র তুলনায় এই সমস্ত প্রযুক্তি অনেক বেশি দামি এবং সেই কারণে দরিদ্র দেশসমূহের পহ্মে এই সমস্ত প্রস্তাব মানা খানিকটা দুঃসাধ্য ব্যাপার।
CLICK HERE -