ব্যতিক্রম ধর্মী শিশু এবং তার শ্রেনিবিভাগ||Exceptional Children And It's Classification

ব্যতিক্রম ধর্মী শিশু এবং তার শ্রেনিবিভাগ||Exceptional Children And It's Classification

ব্যতিক্রম ধর্মী শিশু এবং তার শ্রেনিবিভাগ||Exceptional Children And It's Classification

BENGALI VERSION||ENGLISH VERSION

ব্যতিক্রম ধর্মী শিশু এবং তার শ্রেনিবিভাগ||Exceptional Children And It's Classification

ব্যতিক্রম ধর্মী শিশু এবং তার শ্রেনিবিভাগ

BENGALI VERSION

(ENGLISH VERSION PDF FILE BELOW THE ARTICLE)

1. ভূমিকা -

প্রতিটি শিশুর মধ্যে কিছু কিছু নিজস্বতা আছে,ভিন্ন ভিন্ন বৈশিষ্ট্য এবং গুণাবলী আছে,যা একটি শিশুর ব্যক্তিত্ব গড়ে তুলতে সহায়তা করে।একই বয়সের একদল শিশুর মধ্যে শারীরিক ও মানসিক কিছু সাধারণ বৈশিষ্ট্য থাকে,যা তাদের সবার জন্য সমধর্মী। আবার ওই শিশুদের বৈশিষ্ট্যের মধ্যে থাকে ভিন্নতা যা শিশুর ব্যক্তি স্বাতন্ত্র্যকে চিহ্নিতকরণ।সমবয়স্ক একদল শিশু যখন ছবি দেখে চিনতে পারে, রং দেখে নাম বলতে পারে বা খেলার সময়ে নিয়মাবলী বুঝতে ও মানতে পারে, তখন বোঝা যায় এগুলি ওই শিশুদের সমধর্মী বৈশিষ্ট্য। আবার ওই শিশুর দলের মধ্যে কেউ থাকে সক্রিয়,চঞ্চল,কেউ থাকে নিষ্ক্রিয়,চুপচাপ ইত্যাদি।

এইসব বৈশিষ্ট্য পূর্ণ শিশুদের মধ্যে এমন শিশুদের দেখা যায় যাদের কোনো বিষয়ে সক্ষমতার অভাব আছে, কোনো শারীরিক অক্ষমতা আছে বা মানসিক অনগ্রসরতা আছে।অর্থাৎ এমন কিছু দেখা যায়,যে কথা বলতে ও বুঝতে,মেলামেশা করতে সক্ষম,কিন্তু তার দৃষ্টি শক্তি হ্মীণ। কোনো শিশুর আবার হাত, কোমর,পা সচল নয়, কিন্তু তার বুদ্ধির বিষয়ে কোনো ঘাটতি নেই।এখন শিশুও নজরে আসে যারা প্রখর বুদ্ধিমান,অল্প সময়ে তাদের করণীয় কার্যগুলি করে,বড়ো কাজের জন্য উৎসুক ও আগ্ৰহী থাকে।এক কথায় এই সব ভিন্ন ভিন্ন সহ্মমতাযুক্ত শিশু বা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু বা ব্যতিক্রম ধর্মী শিশু বলে চিহ্নিত করা যায়। বর্তমানে ব্যতিক্রম ধর্মী শিশু বা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ইত্যাদি শব্দাবলি বেশি প্রচলিত।

2. ব্যতিক্রম ধর্মী শিশুর ধারনা ও সংজ্ঞা -

ব্যতিক্রম শব্দটি প্রায়ই মানুষ বা বস্তুর অস্বাভাবিক, অনন্য বা অসামান্য গুনাবলী বর্ণনা করতে ব্যবহৃত হয়।তবে এই হ্মেত্রে ব্যতিক্রম শব্দটির দ্বারা এমন একটি শিশুকে বোঝায়,যার বেশিরভাগ অন্যদের থেকে আলাদাভাবে শেখে এবং বিকাশ করে বা যাদের অসাধারণ শেখার শেলী,ব্যতিক্রমী প্রতিভা বা ব্যতিক্রমী আচরণ রয়েছে।

শিশুর হ্মমতা কোনো দিকে সাধারণ বা গড় থেকে নির্দিষ্ট মাত্রার কম বা অধিক হলে, তাকে ব্যতিক্রমী শিশু বলে। মনস্তাত্ত্বিক Barbe এহ্মেত্রে সুন্দরভাবে ব্যতিক্রম ধর্মী শব্দটি ব্যবহার করেছেন। তাঁর মতে,ব্যতিক্রম ধর্মী বলতে সেই সমস্ত শিশুকে বোঝায় যার সাধারণ যা স্বাভাবিক শিশুদের অপেক্ষায় নির্দিষ্ট মাত্রার ভিন্ন।এই ভিন্নতার কারণে তাদের জন্য বিদ্যালয়ে বিশেষ শিক্ষার ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।

Crow & Crow (1945) এর মতে,"The term typical or exceptional applied to a trait or to a person possessing the trait if the extent of deviation from normal possession of that trait is so great that because of it the individual Warrents or receives special."

S. A. Krik এর মতে,"An Exceptional Child is he who deviates from normal or average children is mental physical and social characteristics to such an extent that he requires a modification of school practices or special educational services or supplementary instruction in other to develop to his maximum capacity."

W. M. Crulchshank(1974) এর মতে,"An Exceptional Child is he who deviates physically, intellectually and socially so marked by from normal growth and development that be cannot be benefited from regular classroom programme and needs special treatment in school.

Telford & Sawrey(1977) এর মতে,"The term Exceptional Children refers to those children who deviate from the normal in physical, mental, emotional or social characteristics to such a degree that they require special social and educational services to develop their maximum capacity. 

বর্তমানে WHO ব্যতিক্রম ধর্মী শিশু শব্দটি বিভিন্নভাবে ব্যবহৃত করেছেন।যথা - ব্যাহত(Impaired),অহ্মম (Disabled), এবং প্রতিবন্ধী(Handicapped)।এই শব্দ তিনটি ভিন্নধর্মীর প্রতিশব্দ হলেও ধারনাগত কিছু পার্থক্য দেখা যায়।

১. ব্যাহত(Impaired) -

প্রধানত দৈহিক গঠন,ইন্দ্রিয় সংক্রান্ত বিষয় অঙ্গ সঞ্চালন গত বা পেশিগত অসুবিধা বোঝানো হয়। তাকে ব্যাহত (Impaired) বলে।

২. অহ্মম (Disabled) -

শারীরিক গঠন,ইন্দ্রিয় সংক্রান্ত,অঙ্গ সংক্রান্ত এবং পেশিগত নামতার অভাবে যদি কোনো শিশু বা ব্যক্তির দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন কাজে অসুবিধা সৃষ্টি হয়,তখন তাকে বলা হয় অহ্মম(Disabled)।

৩. প্রতিবন্ধী(Handicapped) -

অহ্মমতার ফলে কোনো ব্যক্তি বা শিশু যখন পরিবেশের সঙ্গে স্বাভাবিক ক্রিয়া প্রতিক্রিয়ার হ্মেত্রে অনতিক্রম্য বাধার সম্মুখীন হয়।তখনই তাকে প্রতিবন্ধী (Handicapped) বলে।  

3. ব্যতিক্রম ধর্মী শিশুর বৈশিষ্ট্যাবলী -

ব্যতিক্রম ধর্মী শিশুদের যে সমস্ত বৈশিষ্ট্য গুলি দেখা যায়, তা হল -

  1. ব্যতিক্রম ধর্মী শিশুর স্বতন্ত্রতা নিম্নলিখিত এক বা একাধিক মাত্রায় লহ্ম্য করা যেতে পারে,যথা- দৃষ্টিশক্তি, শ্রবণশক্তি, নড়াচড়া,উপলদ্ধি,মোটর যোগাযোগ, সামাজিক,মানসিক এবং বুদ্ধিমত্তা।
  2. ব্যতিক্রম শিশুর স্বতন্ত্রতা নেতিবাচক দিক বা ইতিবাচক দিক হতে পারে।
  3. ব্যতিক্রম ধর্মী শিশু তারা যাদের জন্য অভিন্ন শিক্ষামূলক প্রোগ্ৰাম যথেষ্ট হতে পারে না।তাই তাদের বিশেষ নির্দেশনামূলক প্রোগ্ৰাম বা আনুষঙ্গিক পরিষেবা বা উভয়ই প্রয়োজন।
  4. তারা গড়পড়তা শিশুদের থেকে শারীরিক মানসিক বা সামাজিক ইতিবাচক ও নেতিবাচক উভয় দিকেই বিচ্যুত হয়।এই বিচ্যুতি গুলি এতটাই তাৎপর্যপূর্ণ যে কিছু পরিস্থিতিতে স্বাভাবিকের সাথে তাদের সামঞ্জস্য করা কঠিন হয়ে পড়ে।
  5. ব্যতিক্রম ধর্মী শিশুর বাড়িতে প্রাপ্ত পূর্ববর্তী অভিজ্ঞতার পরিমাণ এবং গুন মানের সাথে সম্পর্কিত প্রদান করে।
  6. তারা ক্রটির কারণে এবং কখনও কখনও তাদের উচ্চতর গুনাবলীর কারনে স্বাভাবিক সেটিংসে শেখার অনৈক্যের সম্মুখীন হয়।
  7. ব্যতিক্রম ধর্মীতা গুনগত চেয়ে বেশি পরিমানগত।
  8. এটির দিক ও তীব্রতা রয়েছে।
  9. ব্যতিক্রম ধর্মী এমন কর্মহ্মমতা দ্বারা প্রকাশিত হয় যা গড় শিশুদের তুলনায় উচ্চতর বা নিকৃষ্ট।
  10. ব্যতিক্রম ধর্মী শিশুদের ব্যপ্তি ও প্রস্থ দ্বারাও চিহ্নিত করা হয়। বিস্তৃতি ডিগ্ৰী দ্বারা নির্দেশিত হয় যে প্রাথমিক বিচ্যুতি একজনের ব্যক্তিত্ব এবং আচরনের অন্যান্য দিক গুলিকে প্রভাবিত করে।

4. ব্যতিক্রম ধর্মী শিশুর প্রকারভেদ -

ব্যতিক্রম ধর্মী শিশুদের বিভিন্ন প্রকার বর্ণনা করার দুটি প্রচলিত প্রথা আছে।যথা -

  • শ্রেনিগত পদ্ধতি।
  • শ্রেনি বিহীন পদ্ধতি।
• শ্রেনিগত পদ্ধতি -
শ্রেনিগত পদ্ধতিতে ব্যতিক্রম ধর্মী শিশুদের বিশেষ চাহিদাকে প্রাধান্য দিয়ে শ্রেনি বিভাজন করা হয়।যেমন - দর্শনগত প্রতিবন্ধী শিশু,শ্রবনগত প্রতিবন্ধী শিশু ইত্যাদি।
• শ্রেনি বিহীন পদ্ধতি -
শ্রেনি বিহীন পদ্ধতিতে শিশুদের ক্রটির হ্মেত্রটিকে প্রাধান্য না দিয়ে কতটা হ্মতিগ্ৰস্ত তা বলা হয়। তখন বিশেষ চাহিদার মতো অনুসারে শ্রেনির নামকরণ হয়,যেমন - মৃদু,মধ্যম,গুরুতর এবং চূড়ান্ত মাত্রা ইত্যাদি।
বাস্তব প্রয়োজনে ব্যতিক্রম ধর্মী শিশুদের শিক্ষা পরিকল্পনা প্রস্তুত করার জন্য বিশেষ চাহিদার হ্মেত্র ও মাত্রা দুটিরই উল্লেখ করা প্রয়োজন।
এই বিশ্লেষণকে মেনে নিলে ব্যতিক্রম ধর্মী শিশুদের স্থূলভাবে নিম্নলিখিত ভাগে ভাগ করা যায়।যথা -
Exceptional Children -
  1. Physically Handicapped.
  2. Mental Retardation.
  3. Gifted.
[ Source: Exceptional Children their Psychology and education, Chintamani Karl 2004,P-2]

অপর একটি শ্রেনিবিভাগ অনুসারে ব্যতিক্রম ধর্মী শিশুদের বিভাজন করা হল।-
ব্যতিক্রম ধর্মী শিশু
  • শারীরিক প্রতিবন্ধী(Physical Impairment)
    • দৃষ্টিগত প্রতিবন্ধী(Visually Impaired)
    • শ্রবণগত প্রতিবন্ধী(Hearing Impaired) 
    • অস্থিগত প্রতিবন্ধী(Orthopaedically Impaired)
    • স্নায়বিক প্রতিবন্ধী(Neurologically Handicapped) 
  • মানসিক প্রতিবন্ধী(Mental Retardation) 
    • শিক্ষাদান যোগ্য মানসিক প্রতিবন্ধী (Educable MR) 
      • মৃদু মাত্রায় মানসিক প্রতিবন্ধী(Mild MR) 
      • মাঝারি মাত্রায় মানসিক প্রতিবন্ধী(Moderate MR) 
    • প্রশিক্ষণ যোগ্য মানসিক প্রতিবন্ধী(Trainable MR)
      • গভীর মাত্রায় মানসিক প্রতিবন্ধী
    • তত্ত্বাবধান যোগ্য মানসিক প্রতিবন্ধী(Custodial MR)
      • চূড়ান্ত মাত্রায় মানসিক প্রতিবন্ধী(Profound MR)  
  • বুদ্ধিদীপ্ত শিশু(Gifted Children)
    • মাঝারি মাত্রায় বুদ্ধিদীপ্ত(Moderately Gifted) 
    • উচ্চ মাত্রায় বুদ্ধিদীপ্ত(Highly Gifted) 
    • ব্যতিক্রমধর্মী বুদ্ধিদীপ্ত(Exceptionally Gifted) 
    • চূড়ান্ত মাত্রায় বুদ্ধিদীপ্ত(Profoundly Gifted) 
  • সৃজনশীল শিশু(Creative Children)
আবার,ব্যতিক্রম ধর্মী শিশুদের একটি সরল ও বাস্তবিক শ্রেনিবিভাগ নীচে উল্লেখ করা হল।-
ব্যতিক্রম ধর্মী শিশু -
  • বৌদ্ধিক প্রতিবন্ধকতা
    • বুদ্ধিদীপ্ত শিশু 
    • সৃজনশীল শিশু
    • মানসিক প্রতিবন্ধী
      • শিহ্মাদান যোগ্য মানসিক প্রতিবন্ধী
      • প্রশিক্ষণ যোগ্য মানসিক প্রতিবন্ধী
      • তত্ত্বাবধানযোগ্য মানসিক প্রতিবন্ধী
  • শিখন প্রতিবন্ধকতা
  • ইন্দ্রিয় প্রতিবন্ধকতা
    • দর্শনগত প্রতিবন্ধী
    • শ্রবণগত প্রতিবন্ধী
    • অস্থিগত প্রতিবন্ধী
    • স্নায়বিক প্রতিবন্ধী
  • আবেগগত/প্রাহ্মোভিক প্রতিবন্ধকতা
  • সামাজিক অনগ্ৰসরতা
  • বহুবিধ অহ্মমতা
  • অটিজম
ব্যতিক্রম ধর্মী শিশু তিন প্রকারের ভাগের মধ্যে সরল ও বাস্তবিক শ্রেনিবিভাগটির সম্পর্কে সংহ্মেপে আলোচনা করা হল।যথা -
A. বৌদ্ধিক প্রতিবন্ধকতা -
মে সমস্ত শিশুদের জ্ঞানমূলক দহ্মতার দিকের উপর ভিত্তি করে প্রতিবন্ধকতা নির্ণয় করা হয়,তাকে বৌদ্ধিক প্রতিবন্ধকতা বলে।এই প্রতিবন্ধকতা মূলত তিন প্রকার হয়।যথা -
১. বুদ্ধিদীপ্ত শিশু -
যে সমস্ত শিশুদের জ্ঞানমূলক দহ্মতার দিক থেকে অতি উচ্চ মান সম্পন্ন হয় অর্থাৎ I.Q. নির্ণয়ের মাধ্যমে প্রাপ্ত স্কোরের ভিত্তিতে করা হয়।এই সমস্ত শিশুদের বুদ্ধিদীপ্ত শিশু বলা হয়।এই সমস্ত শিশুদের I.Q. এর মান 130 এর বেশি হয়।
• বৈশিষ্ট্য -
  • এই সমস্ত শিশুরা সহজে জটিল সমস্যার সমাধান করতে পারে।
  • এই সমস্ত শিশুদের মধ্যে প্রহ্মোভগত দিক, উদ্দেশ্যমুখী আচরণ, বিশ্লেষণী ক্ষমতা,সংরহ্মণ কর্মের হ্মিপ্রতা দহ্মতার অধিকারী হয়।
  • এই সমস্ত শিশুদের মধ্যে ভাষাগত দক্ষতা এবং শারীরিক দিক থেকে চূড়ান্ত সহ্মমতার অধিকারী হয়।
  • এরা দ্রুত শেখার হ্মমতা রয়েছে।
  • এদের স্মৃতি শক্তি প্রবল হয়, দীর্ঘ সময় মনে রাখতে হবে।
  • এই সমস্ত শিশুরা স্বাভাবিক পরিবেশে,গৃহে বা বিদ্যালয়ে সার্থক নিজেদের অভিযোজিত করতে পারে না।
  • এই সমস্ত শিশুদের জন্য উপযুক্ত উন্নত পরিবেশ দরকার।
২. সৃজনশীল শিশু -
ব্যতিক্রম ধর্মী শিশুদের মধ্যে একটি বিশেষ প্রকার হল সৃজনশীল শিশু।এই সৃজনশীলতার কোনো সার্বজনীন সংজ্ঞা দেওয়া যায় না।Berk (2002) সৃজনশীলতার এই রূপ সংজ্ঞা দিয়েছেন,"Creativity is ability to produce work that is original but still appropriate and useful."মূলত সৃজনশীলতার বিভিন্ন দিক রয়েছে।এই ধরনের শিশুদের I.Q. কোনো নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। সৃজনশীলতা এমন একটি হ্মমতা যা নতুনত্ব সৃষ্টি করতে পারে এবং নতুন কোনো সম্পর্ক স্থাপন করতে পারে।
• বৈশিষ্ট্য -
  • এই সমস্ত শিশুদের I.Q. এর কোনো নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়।
  • তবে এমন শিশু বা ব্যক্তি পাওয়া মুশকিল যে সমস্ত দিক দিয়ে সৃজনশীল।
  • এই সমস্ত শিশুদের সৃজনশীল কাজের জন্য একটি সামাজিক ও নান্দনিক মূল্য থাকবে।
  • সৃজনশীল শিশুদের শিক্ষার ক্ষেত্রে অনেক অসুবিধা দেখা যেতে পারে।
  • এই সমস্ত শিশুদের জন্য উপযুক্ত বিশেষজ্ঞ শিহ্মক-শিহ্মিকা, সামাজিক সহযোগিতা এবং পারিবারিক সাহায্যে একান্ত কাম্য না হলে শিশু সৃজনশীলতা উপযুক্ত পরিবেশে অভাবে সঠিকভাবে বিকশিত হতে পারে না এবং চিরতরে হারিয়ে যেতে পারে।
৩. মানসিক প্রতিবন্ধী -
1927 খ্রিস্টাব্দে ইংল্যান্ডে "Mental Deficiency Act" নামে একটি আইন পাশ হয়।এতে বলা হয়,একটি শিশু জন্মগত কারণে বা অসুখবিসুখ বা দুর্ঘটনা জনিত কোনো কারনে 18 বছর বয়সের পূর্বে মানসিক বিকাশের অসম্পূর্ণতাকেই বলা হয় মানসিক প্রতিবন্ধকতা। আবার WHO এর মতে মানসিক প্রতিবন্ধকতা হল বিকাশকালীন সময়ে গ্ৰহনযোগ্য বা পরিবর্তনশীল আচরণের হ্মেত্রে অসম্পূর্ণতা যা রোধমূলক ক্রিয়া প্রতিক্রিয়াকে তাৎপর্য পূর্ণভাবে প্রভাবিত করে। অর্থাৎ মানসিক প্রতিবন্ধকতাও এই ধরনের মানসিক বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয়।
• বৈশিষ্ট্য -
  • মানসিক বৌদ্ধিক ক্রিয়ার নিম্নমুখী মান।
  • জীবনের বিকাশ কালীন সময়ে মানসিক প্রতিবন্ধকতার প্রকাশ।
  • নানা ধরনের দৈহিক সমস্যা।
  • অনিয়ন্ত্রিত আচরণ।
  • অভিযোজন করার অহ্মমতা।
  • শিহ্মাগত পারদর্শিতার অভাব রয়েছে।
এই মানসিক প্রতিবন্ধী শিশুদের আরো তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে।তা নিম্নে আলোচনা করা হল।-
i. শিহ্মাদান যোগ্য মানসিক প্রতিবন্ধী -
মানসিক প্রতিবন্ধকতা শ্রেণি বিভাজন মূলত I.Q. নির্ণয়ের মাধ্যমে প্রাপ্ত স্কোরের ভিত্তিতে করা হয়।এই সমস্ত শিশুদের শিহ্মাদান যোগ্য মানসিক প্রতিবন্ধী শিশু বলা হয়।এই সমস্ত শিশুদের I.Q. এর মান 35-69 পর্যন্ত হয়।
• বৈশিষ্ট্য -
  • এই সমস্ত শিশুদের মস্তিষ্কের অভ্যন্তরীন কোনো সংগঠনে অসম্পূর্ণতা থাকলে বা কোনো অজ্ঞাত কারণে যদি স্বাভাবিক ক্রিয়া করতে পারে না।
  • শিশুর সাধারণ বয়স বুদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক, প্রাহ্মোভিক আচরনগত বিভিন্ন বিকাশ সাধিত হয় না।
  • এদের I.Q. এর মান 35-69 পর্যন্ত হয়।
  • এদের ইন্দ্রিয় জনিত সমস্যা দেখা যায়।
  • এরা ধীরে ধীরে শেখে এবং শিখনে স্পষ্টতা ও উৎকর্ষতা অভাব দেখা যায়।
ii. প্রশিক্ষণ যোগ্য মানসিক প্রতিবন্ধী -
মানসিক প্রতিবন্ধকতা শ্রেণি বিভাজন মূলত I.Q. নির্ণয়ের মাধ্যমে প্রাপ্ত স্কোরের ভিত্তিতে করা হয়।এই সমস্ত শিশুদের প্রশিক্ষণ যোগ্য মানসিক প্রতিবন্ধী শিশু বলা হয়।এই সমস্ত শিশুদের I.Q. এর মান 25-34 পর্যন্ত হয়।
• বৈশিষ্ট্য -
  • এই সমস্ত শিশুদের পরিনত বয়সেও বিশেষ বৃদ্ধির বিকাশ হয় না।
  • এই সমস্ত শিশুদের I.Q. এর মান 25-34 পর্যন্ত হয়।
  • এই সমস্ত শিশুরা শুধুমাত্র নিজের প্রতি যত্ন নেওয়া এবং মৌখিক ভাব বিনিময়ের কৌশল আয়ত্ত করতে পারে।
  • এদের সারা জীবনব্যাপী যত্ন নিতে হয়।
  • এই সমস্ত শিশুদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কিছু মাত্রায় স্বাবলম্বী করে তোলা যায়।
  • এই সমস্ত শিশুদের পরিবারের সার্বিক সহায়তার এবং বিশেষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রশিহ্মিত করা যায়।
iii. তত্ত্বাবধানযোগ্য মানসিক প্রতিবন্ধী -
মানসিক প্রতিবন্ধকতা শ্রেণি বিভাজন মূলত I.Q. নির্ণয়ের মাধ্যমে প্রাপ্ত স্কোরের ভিত্তিতে করা হয়।এই সমস্ত শিশুদের তত্ত্বাবধানযোগ্য মানসিক প্রতিবন্ধী শিশু বলা হয়।এই সমস্ত শিশুদের I.Q. এর মান 24 এর কম হয়।
• বৈশিষ্ট্য -
  • এই সমস্ত শিশুদের দৈহিক বিকাশ,বাচন হ্মমতার বিকাশ, নিজের পরিচর্যা এবং বৌদ্ধিক বিকাশের দিক থেকে নানা রকমের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়।
  • এই সমস্ত শিশুদের I.Q. এর মান 24 এর কম হয়।
  • এরা মূলত আত্মনির্ভরশীল হয়।
  • এদের সামান্য যোগাযোগ দহ্মতা লহ্ম করা যায়।
  • এদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা দ্বারা স্বাবলম্বী করে তোলা যেতে পারে।
B. শিখন প্রতিবন্ধকতা -
লিখিত বা পাঠ্য আকারে ভাষা প্রকাশের হ্মেত্রে কিছু কিছু শিশুর হ্মেত্রে বিভিন্ন প্রকার সমস্যা দেখা যায়। এদের বলা হয় শিখন প্রতিবন্ধী শিশু।
• বৈশিষ্ট্য -
  • এই প্রতিবন্ধিতা তাদের কোনো বিষয়ে শোনার হ্মেত্রে,চিন্তনের হ্মেত্রে,কথা বলার হ্মেত্রে এবং কখনো কখনো অঙ্ক কষার হ্মেত্রে বিশেষ অসুবিধার সৃষ্টি হয়। 
  • এই ধরনের প্রতিবন্ধিতা প্রাথমিক ভাবে দর্শন, শ্রবন, মানসিক,প্রাহ্মোভিক বা পরিবেশগত কোনো সমস্যার জন্য ঘটে না।
  • এই সমস্ত শিশুরা গড় মেধাসম্পন্ন হয়।
  • এই সমস্ত শিশুরা আবেগ প্রবণ এবং বিহ্মিপ্ত চিন্তনে অহ্মম হয়।
  • এরা ভাষা ও জ্ঞানের দিক থেকে দুর্বল হয়।
  • তবে এরা অতি সক্রিয় এবং কখনো কখনো Hipoactive হয়।
  • এই সমস্ত শিশুদের মূলত গঠন সমস্যা বা প্রাহ্মোভিক সমস্যা দেখা দেয়।
  • এই সমস্ত শিশুরা অধিকাংশ ক্ষেত্রে তারা অন্যদের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে।
C. ইন্দ্রিয় প্রতিবন্ধকতা -
মানুষের দেহে পাঁচটি ইন্দ্র চোখ,কান,নাক, জিহ্বা এবং ত্বকের মধ্যে যদি একটি ইন্দ্রেয় অসম্পূর্ণ জনিত কারণে যে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়, তাকে ইন্দ্রিয় প্রতিবন্ধকতা বলে।এই প্রতিবন্ধকতা মূলত চার প্রকারের হয়ে থাকে।যথা -
১. দর্শনগত প্রতিবন্ধী -
সাধারণত যারা চোখের দেখতে পায় না, তাদের আমরা দৃষ্টিহীন বলে। দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধকতা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা গঠন করার জন্য বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেওয়া সংজ্ঞা গুলি উল্লেখ করা প্রয়োজন।
"International Association For the Prevention of Blindness" দৃষ্টিহীন সম্পর্কে সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলা হয়েছে,ব্যবহারিক দিক থেকে যে ব্যক্তির দৃষ্টিশক্তি স্বাভাবিক দৃষ্টি শক্তি 1/20 ভাগের কম,বা যে ব্যক্তি দেড় মিটার দূরত্ব থেকেও আঙ্গুল গুনতে পারে না, তাকে দৃষ্টিহীন বা ব্যাহত দৃষ্টিসম্পন্ন বলা হয়।
আমেরিকার Social Security Act(1935) যে সংজ্ঞাটিকে মান্যতা দেয় তা হল-
"Blindness is visual acquity for distant vision of 20/200 or less than in better eye with best correction or visual acquity of more than 20/200 if the widest diameter of field of vision subsends an angle not greater than 20 degrees." অর্থাৎ অপেক্ষাকৃত ভালো চোখে চশমা ব্যবহারের পর ব্যক্তির দৃষ্টির তীক্ষ্ণতা যদি 20/200 বা তার কম হয় বা ব্যক্তির তীক্ষ্ণতা 20/200 এবং বেশি কিন্তু তার ভালো চোখে দৃষ্টির হ্মেত্র 20° কোনের বেশি নয়, তাদের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী বলা হয়।
"Rehabilitation Council Of India(RCI) Act" 1992 অনুসারে কোনো ব্যক্তি দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হবে তখনই যখন নিজের যে কোনো এক বা একাধিক সীমাবদ্ধতা মধ্যে থাকবে।
ক. সম্পূর্ণ দৃষ্টিহীন।
খ. চোখে লেন্স ব্যবহারের পরও ভিস্যুয়াল অ্যাকুইটি বা দৃষ্টি প্রখরতা 6/60 (মিটার এককে) বা 20/200 (ফুটে এককে) এর বেশি হবে না।
গ. দৃষ্টিহ্মেত্র 20° বা তার চেয়ে কম।
K. C. Panda (1997) বলেছেন,"Visual handicap is defined in terms of visual acquity, field of vision and visual efficiency."অর্থাৎ দৃষ্টির তীক্ষ্ণতা দৃষ্টির হ্মেত্র এবং দৃষ্টিগত পারদর্শিতার সাহায্যে দৃষ্টি প্রতিবন্ধকতার সংজ্ঞা দেওয়া হয়।
• বৈশিষ্ট্য -
  • শিশুর ঘন ঘন চোখ লাল হওয়া। 
  • চোখ থেকে জল পড়া। 
  • চোখ পিটপিট করা। 
  • শ্রেণিকক্ষে ব্ল্যাকবোর্ডের লেখা দেখতে না পাওয়া।
  • দৃশ্য বস্তুর কথা অন্যকে জিজ্ঞাসা করে জানার চেষ্টা করা।
  • কোনো উজ্জ্বল দিনের আলোতে আলোর অনুভূতি না হওয়া।
  • চোখে ঝাপসা দেখা। 
  • চলাফেলার পদে পদে বাধা পাওয়া এবং স্পর্শ করে চলার পথে নির্ণয়ের চেষ্টা করা। 
  • উদ্দেশ্যহীন দৃষ্টি।
  • সামাজিক প্রতিক্রিয়া ও আচরণে অক্ষমতা ইত্যাদি।
Read More....... CLICK HERE
২. শ্রবণগত প্রতিবন্ধী -

জন্মের পর কানের মাধ্যমে শব্দ শিশু মস্তিষ্কে প্রবেশ করে।শব্দের সংযোগে পরিবেশের সঙ্গে শিশু সম্পর্কে সূচিত হয়।শব্দ প্রয়োগের করে শিশু নিজেকে নিজেকে প্রকাশ করতে পারে এবং শব্দ শুনে অপরের মনোভাব বুঝতে পারে। এইভাবে শব্দ ব্যবহার পারস্পরিক ভাব বিনিময়ের যোগ সূত্রে হয়ে ওঠে।যদি শ্রবনেন্দ্রিয় অঙ্গের কার্যকারিতার হ্মেত্রে কোনো বাধা সৃষ্টি হয়, তাহলে শিশুটির পরিবেশের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যাহত হয়। শিশুটির পরিবেশের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে এবং তাতে শিশুটি শ্রবণ প্রতিবন্ধী হয়।

বংশগতি বা পরিবেশের কারণে শ্রবণের হ্মেত্রে বাধা বা Impairment তৈরি হয়।এই বাধা কারনে শিশুরা তাদের শ্রবণ দহ্মতাকে কাজে, লাগাতে পারে না। শ্রবণের হ্মেত্রে সমস্যা বা বাধা এই শিশুদের শ্রবণ অহ্মম করে তোলে।অথবা এই শিশুদের বাধার কারণে শ্রবণ সীমাবদ্ধতা দেখা যায়। অপরদিকে শ্রবণ প্রতিবন্ধকতা বলতে বোঝায় এমন অসংগতি বা অতিক্রম করা যায় না বা সংশোধনযোগ্য নয়।UNESCO বিশেষজ্ঞ কমিটি (1985) যে সংজ্ঞাটিকে মান্যতা দিয়েছেন,তা হল - ".....deaf are those children whose spontaneous speach and language development have been very much retarded or is completely absent....." অর্থাৎ তারাই বধির শিশুর যাদের স্বতঃস্ফূর্ত ভাষার বিকাশ বা দহ্মতা অতিমাত্রায় বাধা প্রাপ্ত বা অনুপস্থিত বললেই চলে।

• বৈশিষ্ট্য -
  • শ্রবণের মাত্রা অনুযায়ী ভাষার বিকাশ,কথা বলার ধরন,শব্দ ও বাক্য ব্যবহারের প্রকৃতি নির্ভর করে।প্রায়ই কম কথা বলে,বিকৃত উচ্চারণ ও বধিরতা থাকলে শারীরিক ভাষা (ইশারা,ইঙ্গিত ইত্যাদি) বেশি ব্যবহার করে।
  • সামনের দিকে ঝুঁকে শোনার চেষ্টা করে এবং কানে হাত দিয়ে শোনার চেষ্টা করে।
  • শ্রেণিকক্ষে অমনোযোগী হয়।
  • শ্রেণিকক্ষে অন্য শিক্ষার্থীদের কথায় অর্থ বোধ হয় না।
  • বধির শিশুদের মধ্যে সামাজিক আচরণ সমস্যা দেখা যায়।
  • কখনো কখনো প্রহ্মোভ জনিত সমস্যা(অতি কুদ্ধ আচরণ) দেখা দিতে পারে।
  • লেখা ও দেখার উপর বেশি নির্ভরশীল।
  • অন্যের ঠোঁট নাড়া দেখে বুঝতে চেষ্টা করে।
  • পাঠ্য বিষয়ের স্মৃতি কম কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে সামগ্ৰিকভাবে স্মৃতি দুর্বল।
Read More............. CLICK HERE 
৩. অস্থিগত প্রতিবন্ধী -
যে সমস্ত শিশুরা দৈহিক ও পেশিগত প্রতিবন্ধকতা ফলে শিহ্মালাভের সমস্যা সৃষ্টি করে,সেই সমস্ত শিশুদের অস্থিগত প্রতিবন্ধী বলা হয়।এই অস্থিগত প্রতিবন্ধী বোঝানোর জন্য ইংরেজিতে বিভিন্ন শব্দ ব্যবহার করা হয়।যেমন Crippled,Locomotor Handicap, Neuromuscular Disorder ইত্যাদি।যে সমস্ত ব্যক্তির বা শিশুর অস্থি,পেশি এবং সন্ধিস্থলে ক্রটি থাকে, তাঁরাই এই শ্রেনিভূক্ত।
Crippled বলতে বোঝায় সেই সমস্ত শিশুদের যাদের পা বা অন্য কোনো অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ক্রটি থাকে।
Locomotor Handicap বলতে তাদেরকেই বোঝানো হয় যাদের নিম্নাঙ্গের বা স্নায়বিক বা কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে কোনো সমস্যার কারণে চলাফেরার সমস্যা তৈরি হয়।একটি পা কিংবা উভয় পায়ের অভাবে যাদের হ্মেত্রে এই সমস্যা তৈরি হয় তারাও এই পর্যায়ভূক্ত।
Neuromuscular Disorder বলতে সেই সমস্ত শিশুকে বোঝায়,যাদের সুনির্দিষ্ট স্নায়বিক অসুস্থতার কারণে সমস্যা তৈরি হয়।
এইভাবে অস্থিগত প্রতিবন্ধী শিশু বলতে অস্থি,পেশি ও সন্ধিস্থল এবং স্নায়বিক সমস্যায় আক্রান্ত সকল প্রকার শিশুদেরকেই বোঝানো হয়। এছাড়াও পোলিও আক্রান্ত, যক্ষ্ণা,বাতজ জ্বর,হাঁপানি,পহ্মাঘাত গ্ৰস্ত, দুর্ঘটনায় অঙ্গহানি, জন্মকালীন অসাবধানতার অঙ্গহানি ইত্যাদি শিশুরা এই ধরনের প্রতিবন্ধকতা অন্তর্গত।
• বৈশিষ্ট্য -
  • এটি জন্মগত বা পরিবেশগত কারণে ঘটে থাকে।
  • শিশুর দেহের গঠনে ক্রটি জন্য।
  • স্বাভাবিক ভাবে হাঁটতে পারে না।
  • বসতে ও দাঁড়াতে সমস্যা হয়।
  • নড়াচড়া করতে জড়তা দেখা যায়।
  • কোনো বস্তু ধরা,তোলা বা রাখার হ্মেত্রে সমস্যা দেখা যায়।
  • এই প্রতিবন্ধকতা আক্রান্ত শিশুদের পড়াশোনা বিশেষ ভাবে হ্মতিগ্ৰস্ত হয়।
৪. স্নায়বিক প্রতিবন্ধী -
শিহ্মাগত দিক থেকে স্নায়বিক প্রতিবন্ধকতার অন্তর্গত হল সেই সমস্ত শিশু যাদের কারনে বিভিন্ন প্রতিবন্ধিতার সৃষ্টি হয়।যা তাদের মধ্যে পেশিগত দুর্বলতা ,পহ্মাঘাত ইত্যাদি সৃষ্টি করে।এই সমস্ত শিশুদের শিক্ষার পাশাপাশি বিশেষ চিকিৎসার প্রয়োজন হয়।
• বৈশিষ্ট্য -
  • এই ধরনের প্রতিবন্ধকতা জন্মগত বা আকস্মিক দুর্ঘটনায় ফলে সৃষ্টি হয়।
  • এই সমস্ত শিশুদের মধ্যে হাত পা ফুলে যায়।
  • হাঁটা চলা করতে সমস্যা হয়।
  • শিহ্মাহ্মেত্রে নানা সমস্যা সৃষ্টি হয়।
  • কোনো বস্তু ধরা, তোলা বা রাখার হ্মেত্রে সমস্যা হয়।
D. আবেগগত/ প্রাহ্মোভিক প্রতিবন্ধকতা -
যে সমস্ত শিশু তাদের সহপাঠী বা বন্ধুদের কাছ থেকে তাদের কাজের যোগ্যতার স্বীকৃতি পায় না বা কেউ যদি কোনো কারনে অন্যদের কাছে গ্ৰহনযোগ্য না হয়,সেহ্মেত্রে আবেগগত বা প্রহ্মোভমূলক প্রতিবন্ধিতা দেখা যেতে পারে।
• বৈশিষ্ট্য -
1969 সালে বিজ্ঞানী ব্রোওয়ার প্রাহ্মোভিক প্রতিবন্ধকতার কয়েকটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করেছেন। সেগুলি হল -
  • যে সকল বিষয় শেখার জন্য বুদ্ধির প্রয়োগ, ইন্দ্রিয় বা অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ব্যবহার প্রয়োজন তা পারে না।
  • সহপাঠী বা শিক্ষক-শিহ্মিকার সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করতে পারে না।
  • মানসিক শান্তি থাকে না বা হতাশায় আক্রান্ত হয়।
  • কোনো সমস্যার সম্মুখীন হলে ভয়ে প্রকাশ ঘটায়।
  • এদের মধ্যে মাত্রাগত তারতম্য থাকে।
  • এই ধরনের সমস্যা দীর্ঘদিনের ধরে চলতে থাকলে তাদের শিহ্মাকে প্রভাবিত করতে পারে।  
E. সামাজিক প্রতিবন্ধিতা -
সাধারণত নিম্ন আর্থ-সামাজিক পরিকাঠামো থেকে আসা শিশুরা বিভিন্নভাবে মানসিক দৈন্যতায় ভোগে।এই সমস্ত শিশুদের সামাজিক প্রতিবন্ধিতা বলে।
• বৈশিষ্ট্য -
  • এই সমস্ত শিশুদের মধ্যে সর্বদা এক অন্তর্দ্বন্দ্ব কাজ করে।
  • এই সমস্ত শিশুরা বিভিন্ন বোধ ও শিহ্মামূলক হ্মেত্রে নানা সমস্যার ভোগে।
  • এদের মধ্যে শিহ্মাহ্মেত্রে অপচয় ও অনুন্নয়ন লহ্ম করা যায়।
  • এদের মধ্যে আচরণগত সমস্যা লহ্ম করা যায়।যেমন - আত্মবিশ্বাসের অভাব,সঠিক মনঃসংযোগের অভাব,প্রেরণা অভাব ইত্যাদি লহ্ম করা যায়।
F. বহুবিধ প্রতিবন্ধিতা -
যখন কোনো ব্যক্তির/শিশুর মধ্যে একাধিক প্রতিবন্ধিতা দেখা যায়, তখন সেই ব্যক্তি বা শিশুকে বহুমুখী প্রতিবন্ধিতা বলা হয়।
• বৈশিষ্ট্য -
  • সাধারণত মানসিক প্রতিবন্ধী শিশুদের মধ্যে এই ধরনের প্রতিবন্ধিতা দেখা যায়।
  • আবার একই শিশুর বা ব্যক্তির মধ্যে মানসিক, শারীরিক, বাচনিক, সামাজিক,স্নায়বিক এবং অন্যান্য প্রতিবন্ধিতা দেখা যায়।
  • এই সমস্ত শিশুদের মধ্যে আচরনগত পার্থক্য লহ্ম করা যায়।
  • এই ধরনের বহুমুখী প্রতিবন্ধীদের শিক্ষার জন্য বহুমুখী বিশেষ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
G. অটিজম -
অটিজম একটি জটিল স্নায়ু আচরণগত অবস্থা যা সামাজিক আদান প্রদান এবং অনমনীয় পুনরাবৃত্তি মূলক আচরণের সঙ্গে মিলিত বিবর্তনশীল ভাষা এবং যোগাযোগ দহ্মতা ইত্যাদির বিকলতা।অটিজমে আক্রান্ত শিশুর কোনো কিছুর সঙ্গে যোগাযোগ করতে সমস্যা হয়।তারা কষ্ট করে বুঝতে পারে অন্যান্য মানুষ কী মনে করছেন এবং কী ভাবছেন।কিন্তু সেটি তারা প্রকাশ করতে পারে না,শব্দ উচ্চারণ করে হোক বা ভঙ্গি মুখের প্রকাশভঙ্গি বা স্পর্শ দ্বারা।এটি তাদের কাছে ভীষণ কষ্টকর ব্যাপার।
বহুজনের মতে, অটিজমে আক্রান্ত শিশু ধারণাগত বা জ্ঞানগত ভাবে একটি প্রতিবন্ধকতা লহ্ম করা যায়।এই অধিক প্রথাগত জ্ঞানীয় বৈকল্য তার সবদিকের বিকাশকে বিলম্ব করে।
• বৈশিষ্ট্য -
  • এই সমস্ত শিশুদের সামাজিক আদান প্রদান অস্বাভাবিক হয়।
  • এদের বাচনিক ও অবাচনিক যোগাযোগ অস্বাভাবিক হয়।
  • এদের আচরণ পুনরাবৃত্তিমূলক।
  • এই সমস্ত শিশুদের বৌদ্ধিক হ্মমতা নেই।
  • এরা অঙ্গ সঞ্চালনমূলক সমন্বয় সাধন অসুবিধা হয়।
  • এদের মনোযোগ হ্মমতা নেই।
  • এদের নিদ্রাজনিত অসুবিধা হয়।
  • এদের হজমজনিত অসুবিধা হয়।
CLICK HERE -


Assignment Questions -
1. ব্যতিক্রম ধর্মী শিশু কাকে বলে।ব্যতিক্রম ধর্মী শিশুদের বৈশিষ্ট্য গুলি কী কী।||What Are Exceptional Children? What Are The Characteristics Of Exceptional Children?
2. ব্যতিক্রম ধর্মী শিশুদের শ্রেনিবিভাগ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা কর।||Discuss In Detail About The Classification of Exceptional Children.

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post