Place And Relevance Of Education Science As A Social Science In School Curriculum

Place And Relevance Of Education Science As A Social Science In School Curriculum

Place And Relevance Of Education Science As A Social Science In School Curriculum||বিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমের সামাজিক বিজ্ঞান হিসাবে শিক্ষা বিজ্ঞানের স্থান এবং প্রাসঙ্গিকতা

BENGALI VERSION||ENGLISH VERSION

Place And Relevance Of Education Science As A Social Science In School Curriculum||বিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমের সামাজিক বিজ্ঞান হিসাবে শিক্ষা বিজ্ঞানের স্থান এবং প্রাসঙ্গিকতা
Place And Relevance Of Education Science As A Social Science In School Curriculum


(*** ENGLISH VERSION FILE BELOW THE ARTICLE BY PDF FORMAT)

বিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমের সামাজিক বিজ্ঞান হিসাবে শিক্ষা বিজ্ঞানের স্থান এবং প্রাসঙ্গিকতা

BENGALI VERSION -

1. ভূমিকা -

সমাজের বিভিন্ন ও বৈচিত্র্যপূর্ণ বিষয়,যা সমাজ বিজ্ঞানের আওতাভুক্ত। ইতিহাস,ভূগোল,রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সমাজবিদ্যা,অর্থনীতি,পৌরবিজ্ঞান ও শিক্ষাবিজ্ঞান ইত্যাদি সমন্বয় এই সামাজিক বিজ্ঞান গঠিত। সামাজিক বিজ্ঞানে মাজের বহুবিধ ক্ষেত্রকে প্রতিফলিত করে। ইতিহাস,ভূগোল,রাষ্ট্রবিজ্ঞান,শিক্ষাবিজ্ঞান,অর্থনীতি ও পৌর বিজ্ঞান থেকে প্রাপ্ত ব্যাপক সংখ্যক ধারণাকে অন্তর্ভুক্ত করে।এটি অর্থপূর্ণ সামাজিক বিজ্ঞানের পাঠক্রমে উপকরণের নির্বাচন ও সংগঠন যেটি শিক্ষার্থীকে সমাজের সমালোচনা মূলক দৃষ্টিভঙ্গি বিকাশে সহায়তা করবে সেটি অবশ্যই একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ এবং শিক্ষার্থীর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে নতুন নতুন মাত্রা ও ধারণার সংযোজন ঘটানো হয়।একটি নীতিনিষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণ সমাজ গঠনের জন্য সামাজিক বিজ্ঞানের জ্ঞান ও দৃষ্টিভঙ্গি অপরিহার্য। প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের তুলনায় সামাজিক বিজ্ঞানকে কম গুরুত্ব দেওয়া হলেও একটি ক্রম প্রসারিত পরস্পর নির্ভরশীল বিশ্বে মানানসই হয়ে উঠতে প্রয়োজনীয় সামাজিক,সাংস্কৃতিক এবং বিশ্লেষণ দক্ষতা অর্জনের পথ সামাজিক বিজ্ঞানই প্রসারিত করে,তাই এর মূল্য গভীর।সমাজ বিজ্ঞান পাঠের প্রাসঙ্গিকতা অনস্বীকার্য। তাই আমাদের দেশের পরিপ্রেক্ষিতে বিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞানের শিক্ষাকে কেন প্রাসঙ্গিকতা দেওয়া হচ্ছে তা নিম্নে আলোচনা করা হল।

2. সামাজিক বিজ্ঞানের ধারণা -

সামাজিক বিজ্ঞান হল একটি যৌগিক রূপ।যে সমাজবদ্ধ মানুষ, সমাজের সঙ্গে তার সম্পর্কে, আচরণ কৃষ্টি ও সামাজিক বিকাশের নির্ণায়ক শক্তি গুলি সম্পর্কে যা কিছু মানবিক বিষয় আছে এবং তার চর্চার ফলে যে সমস্ত বিদ্যার উদ্ভব হয়েছে তাদের একত্রিত নামই হল সামাজিক বিজ্ঞান। 

        অর্থাৎ, বিজ্ঞানের নিয়ম ও পদ্ধতি অবলম্বন করে মানুষ ও মানুষের সমাজ সম্পর্কিত যাবতীয় বিষয়ের অনুসন্ধান রত সমস্ত একত্রিত বিদ্যার নাম সমাজ বিজ্ঞান।

দুটি পরিভাষার ব্যবহারিক প্রয়োগ প্রায় একই রকম। একটি হল সমাজবিদ্যা - প্রাথমিক ও মাধ্যমিক ক্ষেত্রে এটি সমাজবিদ্যা,ইতিহাস,রাষ্ট্রবিজ্ঞান,অর্থনীতি,ধর্ম, ভূগোল ও নৃতত্ত্ব বিষয়গুলিকে অন্তর্ভুক্ত করে।আর দ্বিতীয়টি হল সামাজিক বিজ্ঞান - আইনশাস্ত্র, শিক্ষা বিজ্ঞান,স্বাস্থ্য,অর্থনীতি,ও শিল্পকলা ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত করে।

3. সামাজিক বিজ্ঞানের পাঠের উদ্দেশ্যাবলী -

সামাজিক বিজ্ঞানের পাঠের উদ্দেশ্যগুলি হল -

  • একটি ন্যায় নিষ্ঠা ও শান্তিপূর্ণ সমাজ স্থাপনের জন্য সামাজিক বিজ্ঞানের জ্ঞান ও দৃষ্টিভঙ্গি অপরিহার্য।
  • একটি ক্রম প্রসারিত পরস্পর নির্ভরশীল বিশ্বের মানানসই হয়ে উঠতে প্রয়োজনীয় সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং বিশ্লেষণ দক্ষতা অর্জন সমাজ বিজ্ঞান সহায়তা করে। 
  • দ্রুত প্রসারণশীল পরিষেবার ক্ষেত্রে এবং বিশ্লেষণাত্মক ও সৃজনশীল দহ্মতা বিকাশের বিভিন্নভাবে সমাজবিজ্ঞান মূল চালিকাশক্তি হয়ে উঠতে সহায়তা করে। 
  • সমাজ বিজ্ঞান প্রধানত স্বাধীনতা,আস্থা, পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং বৈচিত্র্য এই সব মানবিক মূল্যবোধ গড়ে তুলতে সহায়তা করে। 
  • সমাজ বিজ্ঞানের লক্ষ্য হল,শিক্ষার্থীদের মনে একটি যুক্তি নিষ্ঠ নৈতিক ও মানবিক শক্তি জাগাতে সহায়তা করে। 
  • এটি সামাজিক দক্ষতা ও অভিযোজিত সামাজিক মিথস্ক্রিয়া সম্পর্কে শিহরনের দ্বারা বাস্তব জীবনে শিক্ষার্থীদের কাজ করার জন্য সাহায্য করে।
  • শিক্ষার্থীরা যে সমাজে বাস করে সেই সমাজকে এবং তার উত্তরন ও পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে সামাজিক উন্নয়নের পথে চালিত করে অর্থাৎ সামাজিক গবেষণা একটি বিদ্যালয় পাঠ্য বিষয় হিসেবে শিশুদের গণতান্ত্রিক সমাজের একটি সক্রিয় ও দায়িত্বশীল সদস্য হিসাবে বিকশিত করে তোলে।
4. শিহ্মা বিজ্ঞানের ধারণা -

ইংরেজিতে "Education" শব্দটি লাতিন শব্দ "Educatio" থেকে উদ্ভূত হয়েছে। শিহ্মা হল শেখার সুবিধার প্রক্রিয়া,বা জ্ঞান,দহ্মতা,মূল্যবোধ, নৈতিকতা, বিশ্বাস অভ্যাস এবং ব্যক্তিগত বিকাশের অর্জন। শিক্ষামূলক পদ্ধতির মধ্যে রয়েছে শিক্ষাদান,প্রশিক্ষণ, গল্প বলা,আলোচনা এবং নির্দেশিত গবেষণা, শিক্ষাবিদদের নির্দেশনায় সঞ্চালিত হয়।যাই হোক, শিক্ষার্থীরাও নিজেদেরকে শিক্ষিত করতে পারে।শিক্ষা আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিক সেটিংস এবং যে কোনো অভিজ্ঞতা হতে পারে যে ভাবে একজনের চিন্তাভাবনা, অনুভূতি বা কাজ গুলিকে শিক্ষামূলক হিসাবে বিবেচনা করা যেতে পারে তার উপর এটি একটি গঠনমূলক প্রভাব ফেলে।শিক্ষাদানের পদ্ধতিকে শিক্ষাবিজ্ঞান বলা হয়।

5. শিক্ষা বিজ্ঞানের পাঠের উদ্দেশ্যাবলী -

শিক্ষাবিজ্ঞানের পাঠের উদ্দেশ্য গুলি হল -
  • শিক্ষা বিজ্ঞানের দ্বারা শিক্ষার্থীদের নানা বিকাশমূলক দক্ষতা গড়ে ওঠে।
  • শিক্ষার্থীরা সুনাগরিক হয়ে ওঠতে পারে।
  • শিক্ষা বিজ্ঞানে দ্বারা ভাব ও ভাষা সম্পর্কে ধারণা লাভ করে। 
  • বিভিন্ন সামাজিক তাৎপর্য ও উপলব্ধি লাভ করতে পারে। 
  • শিক্ষার্থীদের জীবনাদর্শ ও জীবন গঠনে সহায়তা করে।
6. বিদ্যালয়ের শিহ্মা বিজ্ঞানের প্রাসঙ্গিকতা -

বিদ্যালয়ের শিহ্মা বিজ্ঞানের পঠন পাঠনের প্রাসঙ্গিকতা যুক্তি গুলি হল -

১. প্রথাগত শিক্ষা ও শিক্ষা বিজ্ঞানের প্রাসঙ্গিকতা -

যখন শিক্ষার্থী প্রথাগত শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রবেশ করে তখন সে নিজে সেই বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হয় না,ধীরে ধীরে তা উপলব্ধি স্থানে পৌঁছায়।শিক্ষার লহ্ম্য যে শিক্ষার্থীর ব্যক্তিত্বের সম্পূর্ণ বিকাশ সাধন, মস্তিষ্ক,হৃদয় ও কর্মের দক্ষতার বিকাশ ঘটানো।শিক্ষাবিজ্ঞানের অন্তর্গত পাঠ্যসূচির বিভিন্ন প্রাসঙ্গিক দিক গুলি শিক্ষার্থীর সামগ্রিক পাঠক্রমিক বিষয় গুলির মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করতে এবং বিষয়গুলির প্রকৃত তাৎপর্য উপলব্ধিতে সাহায্য করে।আবার বাস্তব অভিজ্ঞতার বৃদ্ধি ও তাত্ত্বিক জ্ঞান বৃদ্ধির সাথে সাথে শিক্ষার্থীর নিজস্ব চরিত্র গঠন, মূল্যবোধ সৃষ্টি,ভবিষ্যৎ জীবন ও কর্ম সম্পর্কে সজাগ করে তোলার বিভিন্ন দিক গুলিকে শিক্ষা বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীর নিকট স্পষ্ট করে তোলা। অর্থাৎ শিক্ষা বিজ্ঞান প্রথাগত শিক্ষার অন্তর্গত বিভিন্ন বিষয় গুলির মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক নির্ণয় ও সমন্বয় সাধন করে শিক্ষার্থীর নিকট প্রথাগত শিক্ষার তাৎপর্যকে নির্দিষ্ট ও স্পষ্ট করে তোলে।

২. শিক্ষার্থীর জ্ঞানমূলক বিকাশ ও শিক্ষা বিজ্ঞানের প্রাসঙ্গিকতা -

যখন কোনো বিষয় পাঠক্রমে স্থান পায় তখন তার জ্ঞান মূলক দিকটি বিশেষভাবে গুরুত্ব পায়।শিক্ষার্থীর মানসিক ক্ষমতার বিকাশ ঘটিয়ে কীভাবে প্রাসঙ্গিক বিষয়ের জ্ঞান গুলিকে শিক্ষার্থীর মধ্যে আত্মস্থ করা যায়, তার একটি চিন্তা বিষয় শিক্ষক তথা প্রাসঙ্গিক বিষয়টির একটি দায়বদ্ধতা থাকে।শিক্ষার্থীর মানসিক ক্ষমতার স্বরূপ, বৈশিষ্ট্য, কোনো কোনো বিষয়ের বা অবস্থার উপর মানসিক ক্ষমতার বিকাশ নির্ভরশীল।এক কথায় শিক্ষার্থীর মানসিক বিকাশের নানা দিক সম্পর্কে যে ধারণা থাকা দরকার সেই বিষয়ে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থী উভয়ের নিকট গুরুত্বপূর্ণ।মানসিক বিকাশের বিভিন্ন দিক গুলি সম্পর্কে সম্যক ভাবে উপলব্ধি করতে সহায়তা করে থাকে শিক্ষাবিজ্ঞান।বিদ্যালয় শিক্ষা স্তরে শিক্ষা বিজ্ঞানের জ্ঞান মানসিক বিকাশের বিশেষ করে জ্ঞানমূলক বিকাশের নানা দিকের ব্যাপারে শিক্ষক, শিক্ষা প্রশাসক ও শিক্ষার্থী সকলকে সমৃদ্ধ করে।সেই কারণে বর্তমানে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের পাঠক্রমে শিক্ষা বিজ্ঞান একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান গ্রহণ করেছে।

৩. শিক্ষার্থীর ভাব ও ভাষা মূলক বিকাশ ও শিক্ষা বিজ্ঞানের প্রাসঙ্গিকতা - 

ভাষা মানুষের মনের ভাব প্রকাশে সহায়তা করে,তাদের ব্যক্তিত্বে ও চিন্তা ধারাকে প্রভাবিত করে।স্বাভাবিকভাবেই ভাষা একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান পেয়েছে মানুষ শিক্ষা বিজ্ঞানের।এই ভাষার সৃষ্টি,বিবর্তন, কার্যধারা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা দান করে শিক্ষা বিজ্ঞানের জ্ঞান। ভাষার মনোবৈজ্ঞানিক,সামাজিক ও ঐতিহাসিক গুরুত্বকে শিক্ষার্থীর নিকট তুলে ধরে শিক্ষা বিজ্ঞানের ধারণা।
            ভাষা বিকাশ শুরু হয় ব্যক্তির নাম দিয়ে তারপর পরিচয় ও ব্যবহৃত শব্দের সাহায্যে যে তার কথায় মনের ভাব প্রকাশ করে।ভাষা বিকাশের আর একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হল বাক্যের প্রকাশের ক্ষমতার বিকাশ।সার্থকভাবে শব্দ উচ্চারণের ক্ষমতার বিকাশ এই সময়কালের মধ্যেই হয়।
     ভাষা সংক্রান্ত একটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত ও গুরুত্বপূর্ণ স্থান নিয়ে আছে ভারতীয় শিক্ষার ইতিহাসে। কোঠারি কমিশন(1964-66) এর সিদ্ধান্ত বেশ স্পষ্ট। - (১)মাতৃভাষা  অবশ্যই শিক্ষার মাধ্যমে হবে।মহাবিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের স্তর পর্যন্ত অবিলম্বে মাতৃভাষাকে শিক্ষার মাধ্যম করতে হবে।(২)যে সকল বিদ্যালয়ে সর্বভারতীয় ছাত্রছাত্রীদের পড়াবার ব্যবস্থা আছে, সেইসকল বিদ্যালয়ে সাময়িকভাবে ইংরেজিকে শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে রাখতে হবে।ধীরে ধীরে এই সকল বিদ্যালয়ে হিন্দিকে শিক্ষার মাধ্যম করা সম্ভব হবে।(৩) 'Link Language' হিসেবে আন্তর্জাতিক ভাব বিনিময়ের ক্ষেত্রে ইংরেজীর প্রাধান্য রক্ষা করা একান্ত প্রয়োজন।

NCF 2005 - এ ভাষামূলক দক্ষতা বিকাশ অর্থাৎ কথন, শ্রবন, পঠন ও লিখনকে  গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের জ্ঞান লাভের ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকাকে বিশেষভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।আবার ত্রি - ভাষা সূত্রকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে বলা হয়েছে শিশুর শিক্ষার ক্ষেত্রে মাতৃভাষাই শিক্ষার শ্রেষ্ঠ মাধ্যম।সেইসঙ্গে ভারতবর্ষের মতো বহু ভাষাভাষী চরিত্র সম্পন্ন ভারতীয় সমাজ ব্যবস্থাকে বিদ্যালয় শিক্ষার সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করার কথা বলা হয়েছে।ভাষা সংক্রান্ত এই যে বিস্তৃত ধারণা তা পাওয়া সম্ভব শিক্ষা বিজ্ঞানের ধারণা থেকেই।

৪. গনিত ও প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের মূল সূত্র গুলির তাৎপর্য উপলব্ধিতে শিহ্মা বিজ্ঞানের প্রাসঙ্গিকতা -

NCF 2005 অনুসারে গণিত শিক্ষার বলে যে, গণিতের বিভিন্ন ফর্মুলা বা সূত্র এবং যান্ত্রিক প্রক্রিয়া গুলির তুলনায় অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হল গানিতিকরন অর্থাৎ যুক্তিসম্মত চিন্তা করা।গণিতের ফর্মুলা বা সূত্রগুলির উপলদ্ধি এবং বিমূর্ত চিন্তার প্রয়োগ করতে পারার ক্ষমতায় বিকাশ সাধন।
           আবার,বিজ্ঞান শিক্ষার ব্যাপারে বলা হয়েছে বিজ্ঞানের শিখনীয় বিষয়বস্তু পদ্ধতি এবং বিজ্ঞান শিক্ষায় ভাষা অবশ্যই শিক্ষার্থীদের বয়স এবং মানসিক ক্ষমতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে।বিজ্ঞান শিক্ষা শিক্ষার্থীকে বিজ্ঞানের পদ্ধতি ও প্রক্রিয়ার সঙ্গে এমন ভাবে পরিচিত ঘটাবে যাতে শিক্ষার্থীর কৌতুহল,পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা এবং সৃজনী শক্তি ও আবিষ্কারের প্রেরণা কে বিশেষভাবে পরিবেশের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে জাগ্রত করতে পারে। অর্থাৎ শিক্ষা বিজ্ঞানের অন্তর্গত গণিত ও প্রাকৃতিক বিজ্ঞান পাঠ্যসূচির শিখন তত্ত্ব গুলি এই ব্যাপারে শিক্ষার্থীদের উল্লেখযোগ্যভাবে সহায়তা দিতে সক্ষম।

৫.বিভিন্ন সামাজিক বিজ্ঞানের তাৎপর্য উপলব্ধিতে শিহ্মা বিজ্ঞানের প্রাসঙ্গিকতা -

শিক্ষা বিজ্ঞানকে একটি সামাজিক বিজ্ঞান হিসেবে বিবেচনা করা হলে,এটি এককভাবে কোনো মৌলিক বিষয় নয়।এটি একটি Interdisciplinary বা Multi-disciplinary বিষয়।অন্যান্য,সামাজিক বিজ্ঞান গুলির সাথে শিক্ষা বিজ্ঞান গভীরভাবে সম্পর্কিত।দর্শন, মনোবিজ্ঞান, ইতিহাস, ভূগোল, অর্থনীতি, সমাজতত্ত্ব প্রভৃতির মধ্যে মৌলিক বিষয় শিক্ষা বিজ্ঞানকে সমৃদ্ধ ও পরিপুষ্ট করেছে।এছাড়াও জীবন বিজ্ঞান তথা শরীর বিজ্ঞান,রাশি বিজ্ঞানের মতো বিষয় শিক্ষা বিজ্ঞানকে প্রস্তাবিত করেছে অনেকখানি। 
            শিক্ষার্থীর সামাজিক অস্তিত্ব রক্ষার জন্য যে সামাজিক বিজ্ঞানের অন্তর্গত বিভিন্ন বিষয়গুলি,যেমন - ইতিহাস,ভূগোল,রাষ্ট্রবিজ্ঞান,সমাজতত্ত্ব,অর্থনীতি ইত্যাদি। শিক্ষার্থী তার শিক্ষাজীবন কালে বিভিন্ন সামাজিক বিজ্ঞানের বিষয় গুলির মাধ্যমে তা অর্জন করে এবং নতুন নতুন জ্ঞান অর্জন,দহ্মতা লাভ,দৃষ্টিভঙ্গি গঠন, চরিত্র গঠন,নৈতিক মূল্যবোধ গঠন, সৃজনহ্মমতা বিকাশ ও সৌন্দর্য বোধের উপলব্ধি করতে পারে।এই ভাবেই শিক্ষার্থীকে সমাজ জীবনের উপযোগী করে তোলার কাছে শিক্ষা বিজ্ঞানের ভূমিকা অনেকখানি।

৬. শিক্ষার্থীর জীবনাদর্শ ও জীবন গঠনে শিহ্মা বিজ্ঞানের প্রাসঙ্গিকতা -

UNESCO আন্তর্জাতিক শিহরন কমিশনের মূল বক্তব্যই হল যে, শিক্ষা হল মানুষের অধিকার এবং একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ উপকরন যার দ্বারা ব্যক্তি সামর্থ, বিকাশ ও শান্তির লহ্ম্যে পৌঁছতে সমর্থ হয়। কমিশনের সভাপতি জ্যাকস বেলার ও অন্যান্য বিশেষজ্ঞদের গভীর চিন্তনের প্রতিফলন হল এই প্রতিবেদনটি।এই প্রতিবেদনে মতে সমগ্ৰ শিহ্মা ব্যবস্থাটি গড়ে উঠবে চারটি স্তম্ভকে অবলম্বন করে। সেগুলি হল -
  • জানার জন্য শিক্ষা।
  • কর্ম সাধনের জন্য শিক্ষা।
  • এক সাথে বেঁচে থাকার জন্য শিক্ষা।
  • পরিপূর্ণ মানুষ হয়ে ওঠার জন্য শিক্ষা।
     এই উদ্দেশ্য গুলিকে ভিত্তি করে শিক্ষার্থীর জীবন বিকাশের জন্য বিদ্যালয় পাঠক্রমে শিক্ষা বিজ্ঞানকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সেগুলির প্রকৃত উপলব্ধি তাৎপর্য নির্ণয় এবং সর্বোপরি সামান্য লাভের জন্য শিক্ষা বিজ্ঞান অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক।

৭. শিহ্মা ব্যবস্থার ব্যবহারিক দিকের কার্যকারিতা প্রাসঙ্গিকতা -

শিক্ষা বিজ্ঞান শিক্ষা ব্যবস্থায় তাত্ত্বিক দিকগুলির মতো ব্যবহারিক বা প্রয়োগমূলক দিকগুলি গুরুত্বপূর্ণ।এই সমস্ত ব্যবহারিক দিকগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য পাঠক্রমের নির্বাচন, সময় তালিকার প্রস্তুতিকরণ, শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন প্রসঙ্গে,বিদ্যালয় প্রশাসনিক বিষয়, বিদ্যালয় শৃঙ্খলা স্থাপন ইত্যাদি। এগুলির প্রতিটি ক্ষেত্রে শিক্ষা বিজ্ঞানে প্রত্যেহ্ম ভাবে প্রভাব বিস্তার করে।

7. বিদ্যালয়ের শিক্ষা বিজ্ঞান পাঠের প্রয়োজনীয়তা -

বিদ্যালয়ের অন্যান্য বিষয়ের মতো সামাজিক বিজ্ঞান শাখা হিসাবে শিক্ষা বিজ্ঞান পাঠের প্রয়োজনীয়তা হল -
  • জীবন ও জগৎ সম্বন্ধেও শিক্ষার্থীদের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি গঠন করতে সহায়তা করে।
  • বাস্তব জীবনে শিক্ষার্থীর দক্ষতা ও প্রয়োগ ক্ষমতার বিকাশ সাধন করে।
  • সামাজিক,নৈতিক ও চারিত্রিক মূল্যবোধ গঠনের মাধ্যমে সঙ্গতি বিধানে সহায়তা করা।
  • উৎপাদনশীল দৃষ্টিভঙ্গি গঠনের মাধ্যমে অর্থনৈতিক স্বাধীনতার দিকে অগ্রসর ঘটানো।
  • দেশপ্রেম,গণতান্ত্রিক চেতনার উন্মেষ ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি বিশ্বাস ও আস্থা গঠন করা।
  • দেশ ও জাতির উন্নতিতে শিক্ষার্থীর নিজেকে যোগ্যতা সম্পন্ন ব্যক্তিতে পরিণত হতে সহায়তা দান।
  • স্বদেশের সংস্কৃতিকে জানতে ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে উপলব্ধি ও অংশগ্রহণ করতে সহায়তা করে।
  • সার্বজনীন সাক্ষরতার প্রাসঙ্গিকতা এবং শিক্ষার অধিকারের ব্যাপারে সচেতনতা প্রদান করা।
  • রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীর নিজের অবস্থানকে চিহ্নিত করতে সহায়তা করে।
  • জীবন ও পরিবেশ এক অবিচ্ছেদ্য বন্ধন ও সম্পর্কে আবদ্ধ সেই উপলব্ধিকে সহায়তা দান করা।
8. শিক্ষার্থীদের উপর শিহ্মা বিজ্ঞানের প্রভাব -
  • যে সমাজে তারা বসবাস করে সেই সমাজের গঠন ও ব্যবস্থাপনার সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান অর্জন করে।
  • বিভিন্ন পন্থায় সমাজকে পরিবর্তন ও পরিচালনা করা ও শাসন করা।
  • গ্রহনযোগ্য ধারণা,প্রতিষ্ঠান ও অনুশীলন পরীক্ষা নিরীক্ষা করা।
  • সমাজের সক্রিয়,দায়িত্বশীলতা ও সুনাগরিক হিসেবে তাদের বিকশিত করা। 
  • মতাদর্শ, জীবনধারা ও সাংস্কৃতিক অনুশীলনের বিভিন্ন তার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করতে শেখা।
  • উপভোগ্য শিখন উপকরণ প্রস্তুতির মাধ্যমে শিখনের ক্ষেত্রে তাদের উৎসাহ বৃদ্ধি করা। 
  • সামাজিক ও জীবন নির্বাহের দক্ষতাকে বিকশিত করতে কার্যকরী কার্যক্রম গ্রহণ করা এবং এই দক্ষতা যে সামাজিক মিথস্ক্রিয়ার হ্মেত্রে গুরুত্বপূর্ণ সে বিষয়ে তাদের অনুধাবন নিশ্চিত করা।
  • পাঠ্যপুস্তক ও শ্রেণিকক্ষে উপাদান,ভাষা ও চিত্র অবশ্যই প্রদর্শিত হতে হবে এবং একই সঙ্গে সেগুলিকে লিঙ্গ সংবেদনশীল এবং সমাজের সকল স্তর ও অসাম্যের সমালোচনামূলক ভাবধারাকে প্রতিফলিত করতে হবে।

9. উপসংহার -

পরিশেষে বলা যায় যে,প্রচলিত পাঠক্রমে সমাজ বিজ্ঞানের অন্তর্গত বিষয়গুলি ইতিহাস,ভূগোল,অর্থনীতি, পৌরবিজ্ঞান,শিক্ষা বিজ্ঞান ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান ইত্যাদি নামের অধীনে কতকগুলি বিচ্ছিন্ন বিষয় হিসাবে পড়ানো হয়। শিশুর বয়স থেকে সামাজিক বিষয় গুলি সম্বন্ধে যদি ইতিবাচক মনোভাব গড়ে না ওঠে তবে তার প্রকৃত কার্যকারিতা কিছু থাকে না।সেই কারণেই সমাজ বিজ্ঞানের বিষয় হিসেবে ইতিহাস, ভূগোল, অর্থনীতি, পৌরবিজ্ঞান ও রাষ্ট্র বিজ্ঞানকে একটি সংহত বিষয় হিসাবে বিদ্যালয় পাঠক্রমে স্থান দেওয়া উচিত। National Focus Group On Teaching The Social Sciences পাঠ্যপুস্তক প্রসঙ্গে মন্তব্য করেছেন যে পাঠ্যপুস্তক যেন সামাজিক মানবিক মূল্যবোধ - স্বাধীনতা, আস্থা, পারস্পরিক শ্রদ্ধা ইত্যাদি সম্বন্ধে অনুসন্ধিৎসু করে তোলার উপযোগী হয়।শিক্ষার্থীরা যেন শুধুমাত্র সমাজ বিজ্ঞানের বিষয় হিসেবে ইতিহাস, ভূগোল, অর্থনীতি, পৌরবিজ্ঞান,শিক্ষা বিজ্ঞান ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান পাঠের ভবিষ্যৎ গতি প্রকৃতি নির্দেশ করতে সচেষ্ট হয়েছে।এই কারণে যে সামাজিক বিজ্ঞানের বিষয় হিসেবে ইতিহাস,ভূগোল,অর্থনীতি,রাষ্ট্রবিজ্ঞান,পৌর বিজ্ঞান ও শিক্ষাবিজ্ঞান প্রাসঙ্গিকতা যেন আরও বৃদ্ধি পায়।

          সামাজিক বিজ্ঞানের বিষয় হিসেবে ইতিহাস, ভূগোল, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, পৌরবিজ্ঞান, অর্থনীতি ও শিক্ষা বিজ্ঞান শিক্ষায় শিক্ষার্থীদের সামগ্রিক উন্নয়নে একটি আদর্শবাদী ভূমিকা পালন করে এবং এটি সমালোচনা মূলক দৃষ্টিভঙ্গি গঠনে ভীষণ ভাবে সাহায্য করে।তাই শিক্ষার বিকাশে সামাজিক বিজ্ঞানের গুরুত্ব অনস্বীকার্য।

CLICK HERE -

ENGLISH VERSION PDF FILE






Post a Comment (0)
Previous Post Next Post